ইলম ও আত্মশুদ্ধিপ্রবন্ধ-নিবন্ধবই ও রিসালাহবালাকোট মিডিয়ামিডিয়া

মুজাহিদের আত্মশুদ্ধি – ০২ || মাসুলদের প্রতি যথাযথ শ্রবণ ও আনুগত্য প্রদর্শন -উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্ল

 

বালাকোট মিডিয়া
পরিবেশিত

মুজাহিদের আত্মশুদ্ধি – ০২

মাসুলদের প্রতি যথাযথ শ্রবণ ও আনুগত্য প্রদর্শন
-উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহ

মুজাহিদের আত্মশুদ্ধি – ০২ || মাসুলদের প্রতি যথাযথ শ্রবণ ও আনুগত্য প্রদর্শন -উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্ল

অনলাইনে পড়ুন
https://justpaste.it/3l7nz

ডাউনলোড করুন
pdf

https://banglafiles.net/index.php/s/gAFzsS9sQcbAeqW
https://archive.org/download/SrobonO…nOAnugotto.pdf
https://www.dropbox.com/s/2m9e5i49xw…gotto.pdf?dl=0

word

https://banglafiles.net/index.php/s/gR4Yij5WbjdyKZt
https://archive.org/download/SrobonO…nOAnugotto.doc
https://www.dropbox.com/s/yzxgd2fgs9…gotto.doc?dl=0

————————————

অনলাইনে ছড়িয়ে দিন- https://justpaste.it/3jmcd

মুজাহিদের আত্মশুদ্ধি – ০২

মাসুলদের প্রতি যথাযথ শ্রবণ

ও আনুগত্য প্রদর্শন

-উস্তাদ আহমাদ যাকারিয়া হাফিজাহুল্লাহ

ইন্নাল হামদালিল্লাহ ওয়াসসালাতু আসসালাম আলা রাসুলিল্লাহ।

আলহামদুলিল্লাহ আরেকটি তাজকিয়া মজলিশে আল্লাহ বসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আজকের আলোচনার বিষয় – “মাসুলদের প্রতি যথাযথ শ্রবণ ও আনুগত্য প্রদর্শন”।

আল্লাহ আমাদেরকে আদেশ করেছেন – আল্লাহ, তাঁর রাসুল এবং আমাদের মধ্য থেকে যারা আমির তাদের আনুগত্য করতে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আমাদেরকে এই একই আদেশ দিয়েছেন। এতটুকু পর্যন্ত আমরা আলহামদুলিল্লাহ সবাই জানি। আমরা আজ বিষয়টা আরেকটু গভীরভাবে এবং জীবনের সাথে মিলিয়ে বাস্তবতার আলোকে দেখার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

আমাদের মধ্যে সবাই এক রকম না। কেউ সাদা, কেউ কালো, কেউ লম্বা, কেউ বেঁটে, কেউ মোটা, কেউ পাতলা। কারো মধ্যে হয়ত নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা আছে, কারো মধ্যে নাই। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে নেতৃত্ব বিষয়টা আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামত। এটা সবাই পারেনা। এটার অনেক উদাহরণ দেয়া যায়। আপাতত একটা উদাহরণ দিচ্ছি। যেমন ধরেন খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু)এর কথা। আল্লাহ উনাকে তৈরিই করেছেন যুদ্ধের কমান্ডার হিসেবে। খালিদ (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) মানেই যেন যুদ্ধ। উনার মন মেজাজ, শরীর, চলন-বলন, উঠা-বসা, ধ্যান-ধারণা  সব কিছুই ছিলো যুদ্ধ এবং ঘোড়া নিয়ে। আল্লাহু আকবার! এর বাইরে আল্লাহু আলাম, উনার চিন্তা ভাবনা কেমন ছিলো আমরা তা খুব বেশী জানতে পারিনা। এমন না যে উনি ইসলাম গ্রহণের পরে এমন হয়েছেন, বরং উনার সিরাত থেকে আমরা জানতে পারি যে – উনি ছোট বেলা থেকেই এমন ছিলেন। যুদ্ধ, ঘোড়া, যুদ্ধ কৌশল এগুলোই ছিলো তাঁর নেশা। উহুদের সময় মুসলিম আর্মির মধ্যে দুর্বলতাটা তিনিই খুঁজে বের করেছিলেন। খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) উনার জমানায় এমন অগুনিত যুদ্ধের নতুন কৌশল আবিষ্কার করেছেন – যা ঐ সময়ে অন্য কোন সামরিক পরাশক্তির জানা ছিলো না। সুবহান আল্লাহ। এই কৌশল গুলো খালিদ (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু)এর নিজে আবিষ্কার করা! তাহলে আমি কি বলতে চাচ্ছি তা বোঝা যাচ্ছে কি? বলতে চাচ্ছি যে, সবাই খালিদ (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) বা সালাহউদ্দিন আইয়ুবী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হতে পারবে না, এটা সম্ভবও না।

এবার আসেন আমাদের বাস্তব হাল আমলে। আমরা একটি আয়াত উল্লেখ করেছি এবং সহিহ বুখারির একটি হাদিসের দিকে ইঙ্গিত করেছি। এবার আসি আরেকটি উসুল এর দিকে – আনুগত্য করা কী? মুস্তাহাব? নাকি ওয়াজিব? আনুগত্য করা – ওয়াজিব। এটাও আমরা জানি আলহামদুলিল্লাহ।

আসুন এবার আমরা দেখি আনুগত্য কেন দরকার? এটার জন্য অনেক কারণ আছে – যে কারণগুলোকে ফিকহি এবং শরয়ী দুইভাবেই ব্যাখ্যা করা যায়। আবার কিছু কারণ আছে এমন, যেগুলো একেবারে আম ভাবে বলা যায়। আমি আম ভাবে যেগুলো সামনে আসে সেগুলোই বলি ইনশাআল্লাহ। আনুগত্য দরকার কারণ –

১. এটার খেলাফে শয়তান তার প্রথম সুযোগ পায় আমাদেরকে আক্রমন করার। আনুগত্যের খেলাফ ছিলো শয়তানের প্রথম পাপ – সে সাজদা দিতে অস্বীকার করেছিলো।

২. এটার খেলাফে আমাদের মধ্যে নফস শক্তিশালী হয়।

৩. এটার খেলাফে আমাদের মধ্যে শুবুহাত তৈরি হয়।

৪. এটার খেলাফে আমাদের মধ্যে ইখতিলাফ তৈরি হয়।

৫. এটার খেলাফে শত্রু আমাদের উপরে বিজয়ী হয়।

এরকম আরো অনেক …।

যে কোন একটি দলের জন্য এটি খুব জরুরী যে, সেই দলটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের অধীনে চলবে। এটি দুনিয়ার যে কোন দল, সামরিক/বেসামরিক সবার জন্য প্রযোজ্য। একই ভাবে তা জিহাদি দলের জন্যও প্রযোজ্য। আমি যখন কোন একটি দলকে একটি নিয়মের অধীনে চালাতে চাইবো তখন আমার দরকার হবে তাদের মধ্যে থেকে কিছু নেতা যারা সেই নিয়মগুলো অন্যদের উপরে প্রয়োগ করবে। আর এটা এজন্য যে – এই দলটি যেন সুনির্দিষ্ট নিয়মের অনুসরণের মাধ্যমে সামনে অগ্রসর হতে পারে, নিজেদের সফলতা অর্জন করতে পারে এবং শত্রুর মোকাবেলায় দৃঢ়পদ থাকতে পারে।

এবার আসুন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নেই। ঈমান আনার পরে ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরজ কোনটি? উত্তর হচ্ছে ‘সলাত’।

দ্বীনের বিধান সমূহের মধ্যে ঈমান আনার পরে ফরজ হুকুম – ‘সলাত’। যখন জিহাদ ফারদুল আইন তখনও সলাত ফরজ, যখন জিহাদ ফারদে কিফায়া তখনও সলাত ফরজ। সলাত হচ্ছে দ্বীনের একমাত্র হুকুম যে ব্যাপারে আল্লাহ বিধান দেয়ার জন্য আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে সরাসরি আল্লাহর কাছে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। এই সলাতের হুকুম আল্লাহ নিজে সরাসরি জানিয়েছেন। আল্লাহ সলাতের এই হুকুম মুসা (আলাইহিস সালাম)কেও দিয়েছিলেন, সরাসরি কথা বলার মাধ্যমে! এটিই দ্বীনের একমাত্র হুকুম যা আল্লাহ সরাসরি জানিয়েছেন, কোন মাধ্যম ছাড়াই।

আমার পয়েন্টটি হচ্ছে – আল্লাহ এই সলাতের জন্য নিয়ম করে দিয়েছেন। একজন ইমাম থাকবে এবং সবাই তাকে অনুসরণ করবে। ইমাম যখন রুকুতে যাবেন কেউ যদি তখন মনে করে আমি সাজদায় যাবো – হবে না। ইমাম সাজদা থেকে উঠে গেছেন – কেউ ভাবলো আমি আরো ১০ বার তাসবিহ পড়বো – সাজদাতেই থাকবো – হবে না।

আর এখানে সলাতের বিষয়টি উল্লেখ করার কারণ হচ্ছে, আনুগত্যের বিষয়টি আমাদের জীবনে নতুন না কিংবা এটি শুধু জিহাদের সাথেই জড়িত না। বরং আনুগত্যের শিক্ষা আমরা অনেক আগে থেকেই সলাতের মাধ্যমে পেয়েছি – হয়ত সেভাবে খেয়াল করা হয়নি।

এবার আরেকটি উসুল – বাইয়াত করা ওয়াজিব, জামাতবদ্ধ থাকা ওয়াজিব। আর যখন আমরা বাইয়াত দিয়ে দিলাম – তা একটি চুক্তির মত। তখন আমার উপরে যদি কোন মুবাহ কাজের আদেশও আসে তা ওয়াজিব হয়ে যায়। যেমন – জিকির করা একটি নফল ইবাদত। কিন্তু আমির যদি আদেশ করেন – আপনি আগামিকাল আসরের সময় ১০০ বার ইস্তেগফার করবেন – এটি তখন পালন করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। আত্মীয়ের সাথে সু সম্পর্ক রাখা উত্তম কাজ। কিন্তু আমির যদি বলেন,  ‘আপনি বাসায় ফোন দিবেন না’ – তখন এটি পালন করা ওয়াজিব হয়ে যায়।

এবার আমরা আজকের আলোচনার সবচেয়ে শেষ অংশটি আলোচনা করব ইনশা আল্লাহ।

মাসুল কি? মাসুল হচ্ছেন আমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন নিয়োগপ্রাপ্ত জিম্মাদার – যার দ্বীনের ব্যাপারে কিছু জিম্মাদারি আছে, ব্যাস – এতটুকুই।

মামুর কি? মামুর আলাদা কিছু না, মামুর হচ্ছেন মাসুল এর মতই আল্লাহর একজন সৈনিক। পার্থক্য হচ্ছে মামুরের জিম্মাদারি মাসুলের চেয়ে কিছু কম। মাসুল এবং মামুর এই বিষয়কে এর চেয়ে জটিল কোন রূপ বা চেহারা দেয়া উচিৎ নয়।

আমাদের মত একটি জিহাদি তানজিমের জন্য শ্রবণ এবং আনুগত্যের গুরুত্বের কথা বলে বুঝানো কঠিন। ভাই আমার, এখন থেকে কথা গুলো মনোযোগের সাথে খেয়াল করবেন, দ্বীনের আরেক নাম হচ্ছে – ‘আত্মসমর্পণ’।

আল্লাহ বলেছেন –

فَهَلْ أَنتُم مُّسْلِمُونَ [٢١:١٠٨]

বল, এবার কি তাহলে তোমরা মুসলিম হবে? (অর্থাৎ সমর্পনকারী হবে?)

(সূরাঃ আম্বিয়া-১০৮)।

আমি, আপনি, আমরা যেই হইনা কেন, দ্বীনের জন্য এই আনুগত্য অনেক জরুরী। আনুগত্য ছাড়া দ্বীন নাই!

আপনি হয়ত আছেন – এই দেশের উত্তর কোণায়, আপনার মাসুল আছেন এই দেশের দক্ষিন কোণায়। এখন আমাদের এই দুইজনের মধ্যে আছে অনলাইন যোগাযোগ। যার ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। আপনি মামুর হয়ে বিশ্বাস করেন যে, আপনার মাসুল আপনার উপরে জুলুম করবে না। আর আপনার মাসুল বিশ্বাস করেন যে, আপনি আপনার জিম্মাদারির খেয়ানত করবেন না। এর মাঝে কিন্তু আর কিছু নাই। এখন এই দুই পক্ষের যেই সীমালঙ্ঘন করবে সেই আসলে নিজের উপরে জুলুম করবে এবং একই সাথে এই জুলুমের বিপদ খুব সম্ভব অন্যদের উপরেও চলে আসবে। কারণ আল্লাহর সুন্নাহ এমনই – একজনের কল্যান থেকে যেমন অনেকে উপকৃত হয়, তেমনি একজনের পাপ থেকে অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। (আল্লাহর পানাহ)

আসেন দেখি একজনের পাপের কারণে অন্যদের ক্ষতিগ্রস্থ হবার ঘটনা কিভাবে ঘটে?

মনে করেন, মাসুল তার কোন একজন কাটঅফ বা মার্কড মামুর ভাইকে বলেছেন – “ভাই আপনি আমাকে না জানিয়ে বাসায় ফোন দিবেন না, কারো সাথে দেখা করবেন না, এটি একটি আদেশ”। প্রথম প্রথম সব ভালোই চলছিলো। কিন্তু দেখা গেল ৬ মাস পরে – মামুর ভাই চিন্তা করলেন, ‘এতদিনে তো কিছু হয়নি – সব ঠান্ডা হয়ে গেছে ইনশাআল্লাহ’। এরপর মামুর ভাই হয়তো কোন দোকান থেকে বাসায় একটা ফোন দিলেন। মনোযোগের সাথে লক্ষ্য করেন ভাইয়েরা আমার – একটা ফোন। মাত্র একটা ফোন – হয়ত ৩ মিনিট সময়, ৫ টাকা খরচ। অল্প কিছু কথা সেরে ভাই চলে আসলেন। মাসুল ভাই কিছুই জানেন না। বেশ কিছুদিন পার হয়ে গেল, কিছুই হলোনা।

প্রথম যখন আমানতের খেয়ানতটা হল, সেখানে খেয়ানতের সাথে আর কি কি হল সেটা আপনাদেরকে এখন দেখাই। যখন দেখা গেলো বাসায় ফোন দেয়ার পরেও তেমন কিছুই হয়নি তখন ভাই চিন্তা করলেন – আচ্ছা আরেক বার ফোন দেই। এখানে যা ঘটেছে জিম্মাদারি খেলাফ এর সাথে আরো একটা বিষয়ের অনুপ্রবেশ ঘটেছে – সেটা হচ্ছে ‘শয়তানের প্ল্যান’। আপনি যতক্ষণ মাসুলের কথা মত চলেছেন শয়তান কোন সুযোগ পায়নি। কিন্তু আপনি যেদিন প্রথম আমানতের খেলাফ করেছেন শয়তান সেদিন আপনার উপরে জয়ী হয়ে গেছে। যদিও সেটা আপনি হয়ত এখনো ধরতে পারেননি, কিন্তু একটু পরেই পারবেন।

শয়তান প্রথমদিনেই তার উপস্থিতিতি জানান দেয়না। শয়তান প্রথমে আপনাকে দলিল দিয়ে খেলাবে, ২য় দিন সে প্ল্যান দিবে। বলবে, দেখা যাচ্ছে কিছুই হয়নি, শুধু শুধুই মাসুল ভাইরা এমন কঠিন আচরণ করেন! মনে হয় পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়ে গেছে। আপনি ২য় দিন ফোন দিতে গেলেন, এরপরে আবার গেলেন ৩য় দিন। এভাবে যা হয় তা হচ্ছে – মাসুল নির্দেশের অধীনে থাকার ফলে আপনার ভিতরে যে সতর্কতা, সাবধানতা, সকাল সন্ধ্যার আজকার এসব ব্যাপারে সচেতনতা ছিলো (যেহেতু আপনি বিশ্বাস করতেন আপনার উপরে আল্লাহর হুকুমে কিছু পরীক্ষা আসছে) সেই সতর্কতা গুলো আস্তে আস্তে কমে যাবে। কারণ, আপনি যখন দেখলেন আরো ২/৩ বার ফোন দিলাম কিছুই তো হয়নি। এরফলে আপনার ভিতর থেকে প্রতিরক্ষার প্রথম কিংবা দ্বিতীয় স্তর সাবধানতা, সতর্কতা এগুলো নষ্ট হয়ে যাবে কিংবা হারিয়ে যাবে। আপনি ভাবছেন সব ঠিকই আছে। কিন্তু আপনি যা জানেননা তা হচ্ছে – তাগুতেরা বিগত ৬ মাস থেকে আপনার পরিবারের মোবাইলের উপরে নজরদারি করে আসছিলো। অথচ আপনি ভাবলেন সবই তো ঠিক আছে।

এরপর আপনি ভাবলেন যে, বড় ভাইতো পাশেই থাকে একটা মিট করে ফেলি। অনলাইনে যোগাযোগ করে মিট ঠিক করে মিটও করে ফেললেন। আপনি যা লক্ষ্য করেননি তা হচ্ছে আপনার ভাইকে ফলো করে তাগুত আপনার পর্যন্ত চলে আসলো এবং আপনাকে ধরে ফেললো। এরপর হয়ত আপনার যোগাযোগ মাধ্যম থেকে আপনার মাসুলকে মিট এর জন্য নিয়ে এসে তাকেও অ্যারেস্ট করে ফেললো। আপনার মাসুলের মাধ্যমে তারা আরো ৫ জন কাটঅফ ভাইকে আরেস্ট করে ফেললো। এবার আপনি যদি পিছনে তাকিয়ে দেখেন এই সব কিছুরই মূলে কিন্তু খুব বড় কিছু ছিলোনা। শুধু ছিলো আপনার প্রথম জিম্মাদারির খেলাফ, ৩ মিনিটের একটা কল যার দাম ৫ টাকা।

 আপনি সেদিন জানতেন না এসব হবে। জানলে আপনি কখনই এমন কাজ করতেন না। কিন্তু আপনি মনে করেছিলেন – কিছু হবে না। আমি আপনাদেরকে এই – “আমি মনে করি” এর ব্যাপারে সতর্ক করছি। এই বিষয়টি এত হালকা যা ধরাই যায় না। কিন্তু এর বিপদ মারাত্মক। শয়তানের ধ্বংসের শুরু ছিলো এটাই যে, “আমি মনে করি”। শয়তান বলেছিলো – “আমি মনে করি আমি তার (আদম আলাইহিস সালাম এর)চেয়ে শ্রেষ্ঠ”। তার এই মনে করাই তার ধ্বংসের কারণ হয়েছিলো। আর আমি যে উদাহরণ আপনাদেরকে দিলাম তা কাল্পনিক না, বাস্তব উদাহরণই দিয়েছি।

তাই – আপনি যদি মামুর হোন, আপনার জন্য আমার নাসিহা – নিজেকে শুধু এটাই বলবেন, আমি এখানে আসছি কামলা খাটতে। আমি এখানে জান্নাতের জন্য কামলা খাটতে আসছি। “আমি কি মনে করি” – এটা জান্নাতে যাবার আগ পর্যন্ত অফ থাকবে। হ্যা, যখন মাশোয়ারা চাওয়া হবে সেটার কথা ভিন্ন। আপনি নিজেকে বলবেন – আমার কাজ দুইটা, মাত্র দুইটা – শুনা এবং মান্য করা।

আর মাসুল ভাইদের জন্য নাসিহা – নিজেদের মামুরদের সাথে বুঝা-পড়া পরিষ্কার রাখা। একজন মাসুলের জন্য তার প্রত্যেক মামুর হচ্ছেন টেস্ট। আপনার সাথে যদি ১০ জন ভাই থাকেন মনে রাখবেন আপনার টেস্ট আসার চান্স আছে ১০ দিক থেকে। আপনার জিম্মাদারি ১০ জনের জন্য। আপনার অধীনে যদি ২০ জন থাকে আপনার জিম্মাদারি আরো বেড়ে গেলো !!! আল্লাহ আমাদের জন্য সহজ করুন।

আরেকটি কথা – আমাদের এটা স্মরণ রাখতে হবে, মাসুল যা বলবেন তা দ্বীনের জন্যই। আর মামুর যা শুনবেন তাও দ্বীনের জন্যই। আর এখানেই আবার সেই আয়াত টি আসে – “ফাহাল আনতুম মুসলিমুন?”। আল্লাহ আমাদের জন্য দ্বীনের উপরে জমে থাকা এবং সেই অনুযায়ী আমল করা সহজ করুন। আমিন।

একটা শেষ কথা বলে আজকের মত শেষ করব ইনশা আল্লাহ …

সেটা হচ্ছে – তাফাক্কুর বা তাদাব্বুর। আমরা কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আমাদের জিন্দেগীতে অনেক কিছু শুনি। বয়ান, লেকচার, রিসালাহ, ভিডিও এরকম অনেক কিছু। এগুলো কি জানেন? এগুলো হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য রিমাইন্ডার। বিষয়টা কেমন? চলুন একটু বিস্তারিত শুনি।

হযরত নুহ আলাইহিস সালাম তার কওমকে প্রায় ৯০০ বছর ধরে দাওয়াত দিয়েছিলেন। এত দীর্ঘসময় ধরে দাওয়াত দেওয়ার পরও হযরত নুহ আলাইহিস সালাম এর কওম তার দাওয়াতকে কোন মূল্যই দিলোনা। এরপর নুহ আলাইহিস সালাম আল্লাহর কাছে অভিযোগ জানালেন। আল্লাহ বললেন, “তাদের জন্য রিমাইন্ডার শেষ, আর কোন রিমাইন্ডার নাই”। আল্লাহ নুহ আলাইহিস সালামকে নৌকা বানাতে বললেন। কী হল ঘটনাটা? আল্লাহ সেই কওমকে ধ্বংস করে দিলেন। আমাদের প্রত্যকের জন্য এমন রিমাইন্ডার আল্লাহর পক্ষ থেকে আসতেই থাকবে যতক্ষণ আল্লাহ চাইবেন। কিন্তু একটা সময়ে আর আসবে না। আর তা হলে আমাদের জন্য খুব বিপদ হয়ে যাবে।

তাই যখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে যে কোন রিমাইন্ডার আমাদের সামনে আসবে – তা নিয়ে তাফাক্কুর করা – এটা কেন আমার সামনে আসলো? আল্লাহ চেয়েছেন তাই। তাহলে দেখা যাক আমার হাল কী? এই রিমাইন্ডারের সাথে সাথে সাথেই নিজের হাল চেক করে নেয়া। এভাবে করতে পারলে ইনশাআল্লাহ আমরা এসব নাসিহা, রিমাইন্ডার থেকে উপকৃত হতে পারব। না হলে দেখা যাবে রিমাইন্ডার আসবে যাবে, কিন্তু আমাদের হাল যেমন ছিলো তেমনই থেকে যাবে (আল্লাহর পানাহ) ।

আলহামদুলিল্লাহ – আজ এ পর্যন্তই।

আল্লাহ আমার কথার অনিচ্ছাকৃত কোন ভুল থেকে আমাকে এবং আমাদের সবাইকে হেফাযত করুন, আর যা কিছু কল্যান তা আল্লাহর পক্ষ থেকেই।

সমস্ত সম্মান শুধুই আল্লাহর জন্য, সমস্ত প্রসংশা শুধুই আল্লাহর জন্য। সালাম এবং দরুদ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর পরিবার বর্গের উপরে।

ওয়াস সালাম।

——————————–

Related Articles

৬ Comments

      1. আমি একজন তালেবান মুজাহিদ হতে চাই । আমাকে কি করতে হবে ‌। আমি মুজাহিদ ট্রেনিং করতে চাই আমাকে কোথায় জেতে হবে । আমি সৌদি আরবে প্রবাসী থাকি । আমি তালেবান মুজাহিদ হতে চাই করন আল্লাহ কাছে হিসাব দিয়ে জান্নাতে মেতে পারবোনা । তাই শহীদ হয়ে জান্নাতে যেতে চাই । আপনার একটু আমাকে সাহায্য করুন প্লিজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 8 =

Back to top button