আল-ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশনকাশ্মীর আর্কাইভপিডিএফ ও ওয়ার্ডবই ও রিসালাহ

কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি বার্তা || আমির গাজী খালিদ ইবরাহীম হাফিযাহুল্লাহ ||


আল ফিরদাউস
Al Firdaws

پیش کرتے ہیں
পরিবেশিত
Presents

بنگالی ترجمہ
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation

عنوان:
শিরোনাম:
Titled:

مسلمانان کشمیر کے نام پیغام
কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি বার্তা
Message to Muslims of Kashmir

از امیر غازی خالد ابراھیم حفظہ اللہ
আমির গাজী খালিদ ইবরাহীম হাফিযাহুল্লাহ
By Ameer Ghazi Khalid Ibrahim

কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি বার্তা || আমির গাজী খালিদ ইবরাহীম হাফিযাহুল্লাহ ||

 

 

ڈون لوڈ كرين
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading

লিংক-১ : https://mediagram.me/8ea15e7eb2f65543
লিংক-২ : https://web.archive.org/web/20210426…er_proti_barta

 

پی ڈی ایف
PDF (406 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৪০৬ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/WjFF4EyNkaCdTrp
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/iraLQG4NGLmXkq
লিংক-৩ : https://archive.org/download/kashmirer_muslimder_proti/Kashmirer%20Muslimder%20Proti.pdf
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/gmqtj408e21265c814b4abfecdbb7f86c580c
লিংক-৫ : https://secure.eu.internxt.com/d/sh/file/21e7f6dd-b9e6-4be5-a783-e2bb21a7eebe/d076dd39722e83b05526b5f9a8844270cd9e658e427168402c7580dd8e604460

 

ورڈ
WORD (501 KB)
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৫০১ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/gPR8KfBXxBqzpr7
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/y2SzH79q5xqkksX
লিংক-৩ : https://archive.org/download/kashmirer_muslimder_proti/Kashmirer%20Muslimder%20Proti.docx
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/gmqtjb1db76fc28654134ba06951029bafd42
লিংক-৫ : https://share.ue.internxt.com/d/sh/file/97fa1274-8eed-47b3-b772-069bf8253ecb/04eaab010480b60d93330a75ec450fa80a428b1798d72ecb360ff9ae0387f047

 

غلاف
book cover [998 KB]
বুক কভার [৯৯৮ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/Q2eofJ5wRPbedDr
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/5mxetCtcjT4g5f4
লিংক-৩ : https://archive.org/download/kashmirer_muslimder_proti/Kashmirer%20Muslimder%20Proti%20Cover.jpg
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/gmqtja21825cc08234b458842cb28b02baba3
লিংক-৫ : https://share.ue.internxt.com/d/sh/file/34b137cd-9e67-4ff2-be09-83f24b2a44b3/f50a2a306ba5d1efed99e0454e01342ccd9f3c8b8ecead0f3c8e49e63596ccd1

 

بينر
banner [2 MB]
ব্যানার [২ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/CCa8w7Lm7BpxQWn
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/wPZ5abs5eQD5DbM
লিংক-৩ : https://archive.org/download/kashmirer_muslimder_proti/Kashmirer%20Muslimder%20Proti%20Banner.jpg
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/gmqtj8d6ceef6e3be47ddbe9239d5ddc80001
লিংক-৫ : https://share.eu.internxt.com/d/sh/file/41b69763-0fc3-4d4d-9842-dcec091678c0/a37fda40c90cbca06e8e54fd0a125b721e7733ebd7a9f0a25f73b8185df980ac

 

—————————————-

কাশ্মীরের মুসলিমদের প্রতি বার্তা

আমির গাজী খালিদ ইবরাহীম হাফিযাহুল্লাহ

 

এই বার্তা ঐ সকল ইসলাম প্রিয় ভাই-বোনদের প্রতি, যারা ভগ্নহৃদয় নিয়ে উম্মাহর চিন্তায় বিভোর…

এই বার্তা ঐ সাথীদের প্রতি, যারা এ সকল মহান শহীদদের সু-মধুর আওয়াজ শুনেছে এবং এখনো তাদের অন্তরে সে আওয়াজের প্রতিধ্বনি হচ্ছে…

এই বার্তা ভারত উপমহাদেশের সকল ইমানদার মুসলিমদের প্রতি, যাদের ফরিয়াদ হলো; হে আল্লাহ! আমাদেরকে যালেমের যুলুম এবং কুফরি মতবাদ থেকে মুক্ত করে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় দিন।

এই বার্তা ঐ সকল মহান শহীদদের পরিবার-পরিজন ও মাতা-পিতার প্রতি, যারা তাদের সন্তানদের এমনভাবে গড়ে তুলেছেন, যার ফলে যে কোন কঠিন পরিস্থিতিতেও তারা আল্লাহ তায়ালার কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা করতো।

এই বার্তা ঐ সকল মহীয়সী মায়েদের প্রতি, যারা এই মহান মুজাহিদদের পথ চলতে  এবং দ্বীনের শত্রুদের সামনে সত্যের উপর অটল থাকা শিখিয়েছেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُم مَّن قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا

“মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। কেউ কেউতো (আল্লাহর সাথে) কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। আর কেউ কেউ সুযোগের প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।“ (সূরা আহযাব ৩৩:২৩)

আলহামদুলিল্লাহ, হাফেজ মুজাম্মেল মানজুর তান্ত্রে (হাফেজ মুস্তফা আব্দুল কারীম ভাই), ইমতিয়াজ আহমাদ শাহ (হারুন ভাই), আদেল আহমাদ লোন (ইকরামা সোপিয়ানী ভাই), বাসেত ইসমাইল বখশী (উসামা ভাই), যায়েদ আহমাদ কৌকা (মুহসীন খাত্তাব ভাই), ইউনুস আহমাদ খান্ডে (খুবায়েব সিবগাতুল্লাহ ভাই) এবং কাশেফ বশীর মীর (ঈসা ভাই) নিজেদের অঙ্গিকার পূর্ণ করেছেন এবং দুটি ভিন্ন ভিন্ন যুদ্ধে শাহাদাতের সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

আমি আপনাদেরকে এই মহান মুজাহিদদের শাহাদাতের সু-সংবাদ জানাচ্ছি, যারা নিজেদের জিহাদি সফরের প্রতিটি দিন-রাত, প্রতিটি সকাল-সন্ধ্যা শুধু আল্লাহর রাস্তায় অতিবাহিত করেছেন। তাদের শাহাদাত বরণ আমাদের ব্যথিত করলেও বাস্তবতা হচ্ছে তারা আল্লাহ তায়ালার সাথে কৃত অঙ্গীকার যথাযথ মর্যাদার সাথে পূর্ণ করেছেন।

আমি ব্যথিত হৃদয়ের অধিকারী সকল ভাইদেরকে মহান রবের এই কালামটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-

وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ وَكِيلا

অর্থ: “এবং ভরসা করুন আল্লাহর উপর। অভিভাবক হিসাবে এক আল্লাহ তায়ালাই যথেষ্ট।“ (সূরা আন-নিসা ৪:৮১)

আমাদের শহীদ মুজাহিদ ভাইগণ অনন্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন এবং দ্বীনের প্রতি তাদের ছিল অপরিসীম ভালোবাসা। এ সকল সাথীরা শুধু কথার মুজাহিদ নয় বরং রণাঙ্গনের বাস্তব মুজাহিদ ছিলেন।

তাদের মধ্যে হাফেজ মুস্তফা আব্দুল কারীম (আল্লাহ তার শাহাদাত কবুল করুন) দীর্ঘ চার বছর জিহাদের ময়দানে কাজ করেছেন এবং তার তরবিয়ত স্বয়ং জাকির মুসা রহিমাহুল্লাহ এর তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছিল। এক বছর তিনি শহীদ রায়হান খান এবং উমর মানসুর ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। অত:পর তিনি রণাঙ্গনের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন একজন দায়ী মুজাহিদ। রণাঙ্গনে আসার পর তিনি অনেক সাথীদের তরবিয়ত করেছেন এবং দাওয়াতের ময়দানে জিহাদের অনন্য খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছিলেন।

হাফেজ মুস্তফা আব্দুল কারীম ভাইয়ের মেহনতের এক ঝলকতো আপনারা তখন দেখেছেন যখন আসেফ গুনাই ও আরিফ মুস্তাকীম ভাই শত্রুর বেষ্টনীতে পড়েও জীবনের শেষ লগ্নে “হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত” এই আহবানে সাড়া দিয়ে ছিলেন।

আমি মুস্তাকীম ভাইয়ের পরিবার-পরিজনকে তার শাহাদাতের সু-সংবাদ জানাচ্ছি এবং আমি তার পরিবারের উদ্দেশ্যে এটাও বলতে চাই যে, হাফেজ শহীদ এবং আমি কিছুদিন পূর্বে মুস্তাকীম ভাইয়ের জন্য এই দোয়া করেছিলাম যে, আল্লাহ তায়ালা যেন তাকে সীরাতে মুস্তাকীমের উপর অবিচল রাখেন।

হাফেজ মুস্তফা আব্দুল কারীম ভাইয়ের আরেকটি সফল মেহনত ছিল যে, গত মাসে মানিহাল সোপিয়ান অঞ্চলের শহীদ হওয়া রইস আহমাদ বাট, আমের শফী মীর, রাকিব আহমেদ মালেক, আফতাব আহমাদ ওয়ানী শাহাদাতের একদিন পূর্বে “হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত” এই মহান আহবানে সাড়া দিয়েছিলেন অর্থাৎ বাইআত গ্রহণ করেছিলেন।

হারুন এবং মুহসিন খাত্তাব ভাই (আল্লাহ তাদের কবুল করুন) – এই দুই ভাইয়ের তরবিয়ত করেছিলেন আবু হামাস রহিমাহুল্লাহ এবং শহীদ শাকের ভাই। অত:পর রণাঙ্গনের জন্য প্রথমে হারুন ভাই নির্বাচিত হন এবং গত এক বছর যাবত তিনি আনসার গাযওয়াতুল হিন্দের ‘ত্রাল’ অঞ্চলের জিম্মাদারি পালন করেন। গত বছর মুহসিন খাত্তাব ভাইয়ের রণাঙ্গনে আসার সিদ্ধান্ত হয়।

ইকরামা ভাই রণাঙ্গনে আসার পূর্বে একটি সংগঠনের এজেন্সি হয়ে কাজ শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিন পরই তিনি লোকমান ভাই রহিমাহুল্লাহ এর সাথে “হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত” এই মহান ডাকে সাড়া দেন এবং শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত এই অঙ্গীকারের উপর অবিচল ছিলেন।

উসামা ভাইয়ের (আল্লাহ তাঁকে কবুল করুন) তরবিয়ত এক বছর পর্যন্ত হাফেজ মুস্তফা ভাই এবং উমর মানসূর ভাই করেন। এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর তিনি রণাঙ্গনের জন্য নির্বাচিত হন এবং প্রিয় সাথীদের সাথে একত্রিত হন।

খুবাইব ভাইয়ের (আল্লাহ তাঁকে কবুল করুন) তরবিয়ত হয়েছিলো এক বছর। তার জিম্মাদার ছিলেন হারুন ভাই। তরবিয়ত শেষে গত বছর খুবাইব ভাই রণাঙ্গনের জন্য নির্বাচিত হন।

ঈসা ভাইয়ের (আল্লাহ তাঁকে কবুল করুন) তরবিয়ত প্রথমে আবু বকর সোপিয়ানী ভাই করেন তারপর করেন হারুন ভাই। তরবিয়ত পূর্ণ হওয়ার পর এই সাহসী যুবক শহীদ হবার মাত্র তিন সপ্তাহ পূর্বে রণাঙ্গনে এসেছিলেন।

আল্লাহ তায়ালার কাছে কামনা এই যে, তিনি যেন এই শহীদ ভাইদেরকে তাঁর খাঁটি বান্দা বানিয়ে নেন এবং তাদেরকে জান্নাতের আরামদায়ক স্থান দান করেন। বিশ্ব জাহানের প্রতিপালকের নিকট কামনা এটাই যে, তিনি যেন এই শহীদদের দেহকে নূর দ্বারা পূর্ণ করে দেন, আবাদি ও অনাবাদি ভূমিতে আদায় করা তাদের ইবাদতগুলো কবুল করে নেন এবং তাদের পরিবার পরিজন ও সাথীদের – এই ভাইদের মত ঈমান ও ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করেন। আমীন।

হে প্রিয় সাথী ও বন্ধুগণ!

আমি এসকল শহীদদের বিস্তারিত জিহাদি জীবনী লিখতে গেলে বসন্তকাল হেমন্তকালে রূপান্তরিত (আনন্দ বেদনায়) হবে তবু তাদের এই মহান কীর্তি বলে শেষ করা যাবে না। এই মহান সাথীরা জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর জন্য যে চেষ্টা করেছেন, তার দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তারা জিহাদের কাজকে দৃঢ় করার জন্য এমন সময়ও চেষ্টা মেহনত অব্যাহত রেখেছিলেন, যখন তাদের অবস্থান ছিল এমন পাহাড়-জঙ্গলে যেখানে বাজ পাখিকেও উড়তে দেখা যেত না!

আল্লাহর সাহসী বান্দারা হিমশীতল রাতেও জিহাদের এই মহান কাজকে প্রতিষ্ঠিত করতে কখনো কখনো এমন গুহায় আশ্রয় নিতেন যেখানে পানিগুলো বরফ হয়ে যেতো। আর তখনো তারা প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতেন। আল্লাহর রাস্তায় বিলিয়ে দেয়া শহীদদের এ জীবনের উপর আমাদের ঈর্ষা হয়। এমন জীবন তো প্রতিটি আল্লাহওয়ালাদের স্বপ্ন। তাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহ তায়ালার এমন এমন সাহায্য এসেছে যা দেখে একজন মানুষ হতভম্ব হয়ে যেতে বাধ্য।

এই সাথীরা আল্লাহর রাস্তায় প্রতিদিন দীর্ঘ কয়েক মাইল সফর করতেন। কখনো সফর করতেন অন্ধকারাচ্ছন্ন ঝড়তুফানের রাত্রে, সামনে থাকতো এমন পর্বতমালা, যা দিনের আলোতেও অতিক্রম করা অসম্ভব ছিল। তো সাথীরা এমতাবস্থায় অনেকবার অনুভব করতো যে তাদের সাহায্যের জন্য ফেরেশতাদের আগমন ঘটতো ফলে তাঁরা পর্বতমালাগুলো চোখের পলকেই পার হয়ে যেতেন! আল্লাহু আকবার!! ঐ সকল সাথীরা নিজেদের জীবনে আল্লাহ তায়ালার এমন অনেক সাহায্য পেয়েছেন এবং এমন অসংখ্য অগণিত ঘটনা তাদের জীবনে ঘটেছে যা ছিলো মানুষের কল্পনার ঊর্ধ্বে।

 

প্রিয় সাথীগণ!

বর্তমান সময়ে পুরো কাশ্মীর জুড়ে জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর যে আওয়াজ উঠেছে তা এই মহান শহীদদের প্রচেষ্টারই ফসল। তাদেরই প্রচেষ্টায় কাশ্মীরের প্রতিটি অঞ্চলে “হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত” এ শ্লোগান পৌঁছে গেছে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমেরই ফসল এই যে, আজ ‘আনসার গাযওয়াতুল হিন্দ’ এর দাওয়াত প্রতিটি মানুষের অন্তরে গেঁথে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ।

আমি খালিদ ইবরাহীম সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ঐ সকল শহীদরা জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর জন্য তাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ব্যয় করেছেন। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তারা সত্যবাদী ছিলেন। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, যখন আল্লাহর এই সাহসী বান্দাদেরকে ঘিরে ফেলা হয়েছিল, তখন তাদের প্রথম শব্দ ছিল ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং এ বলেই তারা কাফেরদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করেছিলেন।

আমি শহীদদের পরিবার সমীপে আরজ করছি যে, তারা আপনাদের নিয়ে অনেক চিন্তা করতেন এবং সর্বদা আপনাদেরকে স্মরণ করতেন। কিন্তু নিরাপত্তার স্বার্থে আমি তাদেরকে আপনাদের সাথে সাক্ষাতের অনুমতি দিতাম না। এজন্য আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী।

হারুন ভাই অধিকাংশ সময় তার মাতা-পিতা এবং ভাইকে স্মরণ করতেন এবং তার বোনের সুস্থতার জন্য দোয়া চাইতেন। কঠিন থেকে কঠিন মুহূর্তে হারুন ভাইয়ের আনন্দঘন থাকা এবং হাসিমুখে কথা বলা আমাদের অন্তরে এমন প্রশান্তি এনে দিতো যে, অনেক কঠিন পরিস্থিতিও আমাদের কাছে সহজ মনে হত।

ইকরামা সোপিয়ানী ভাই তার অসুস্থ মায়ের সাথে কথা বলার সুযোগ বেশি পাননি। আমি ইকরামা ভাইয়ের মায়ের কাছে ক্ষমা প্রার্থী যে, এমন মুহূর্তে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তবে আমি আপনাকে নিশ্চিত ভাবে বলছি, আপনাদের ছেলে আদেল (যাকে আমরা ইকরামা বলে ডাকতাম) তিনি আপনাকে সীমাহীন ভালোবাসতেন। অনেক সময় তিনি আমাকে বলতেন যে, ‘যদি আমি আমার মায়ের সাথে সামান্য কথা বলতে পারি তাহলে তার শারীরিক অবস্থার অনেক উন্নতি হবে’। ইকরামা ভাইয়ের মায়ের কাছে আমি এতটুকু বলতে চাই যে, আপনার ছেলে আদেল ছিল এক মহান ব্যক্তিত্ব এবং তিনি ছিলেন আপনার আনুগত্যশীল।

আমি সোপিয়ান এলাকার মুমিন ভাইদের লক্ষ্য করে এ আবেদন করবো যে, মসজিদে উসমান গনি ভাইয়ের উপর কাফেরদের যে গুলি ও আঘাতের চিহ্ন লেগেছিল তা যেন স্ব-অবস্থায় বহাল রাখেন। এই পবিত্র মসজিদের জানালা ব্যতীত আর কোন কিছু যেন মেরামত না করা হয়। যাতে এই মসজিদ শহীদদের সর্বশেষ লড়াইয়ের সাক্ষী হিসেবে থাকে।

এ মসজিদ এ কথারও সাক্ষী যে, সেখানে আল্লাহ তায়ালার সিংহরা তাদের কৃত ওয়াদা “হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত” – এই মহান আহবানের বাস্তবায়ন করে ছিলেন। ঐ মসজিদের বাহিরে-ভিতরে হামলার যে নিদর্শন রয়েছে সেটি সকল পথিকের জন্য একটি পথ নির্দেশক হবে। তাই আমার আবেদন হলো, আপনারা এই মসজিদকে আবাদ রাখবেন সাথে এই মসজিদের সাক্ষ্য চিহ্ন গুলোও আবাদ রাখবেন।

প্রিয় ইমানদার ভাইয়েরা!

‘আনসার গাযওয়াতুল হিন্দ’ শুধুমাত্র একটি সংগঠনের নাম নয়, বরং এটি একটি অঙ্গীকার। অতীত সাক্ষী যে, ঐ সকল ব্যক্তিবর্গের শাহাদত বরণ (যারা “হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত” এই মহান ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন) এর মাধ্যমে এ অঙ্গীকার কখনো দুর্বল হয়নি। বরং তাদের শাহাদাত বরণ এই অঙ্গীকারেরই একটি অংশ – যা এই অঙ্গীকারকে দৃঢ় ও মজবুত করেছে। শহীদদের এই রক্ত চিরকাল আমাদের উপর ঋণ হয়ে থাকবে। এই কাফেলা আবু দুজানা, রায়হান খান ও জাকির মুসা রহিমাহুল্লাহ এর শাহাদাত দ্বারা শেষ হয়ে যায় নি, আর না আমি খালিদ ইবরাহীম এর শাহাদাত দ্বারা শেষ হয়ে যাবে। এ জন্য সাথীদেরকে বলবো আপনারা নিজেদেরকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখুন এবং আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে থাকুন।

আমি হৃদয় ভেঙ্গে যাওয়া ঐ সকল সাথীদের উদ্দেশ্যে বলছি যারা – এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত যে একই দিনে সাতজন সাথী কিভাবে শহীদ হয়ে গেলেন? এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া আমার জন্য মুনাসিব হবে না। তবে এতটুকু বলবো যে, মনে হয় আল্লাহ তায়ালার মর্জি এমনই ছিল যে, এ অঞ্চলের অধিবাসীরা তাদের শাহাদাত এবং সাহসিকতার সাক্ষী থাকুক।

এ সকল সাথীবর্গ এমন অনাবাদি স্থানকে নিজেদের বাসস্থান বানিয়েছিলেন যেখানে সাধারণ মানুষ থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণে এই সাথীবর্গকে এই জনপদে আসতে হয়েছিলো। আল্লাহ তায়ালাই উত্তম পরিকল্পনাকারী। আর এসকল সাথীদের শাহাদাত জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহর জন্যও কল্যাণকর হবে ইনশাআল্লাহ।

সর্বশেষ আমি আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া করি, তিনি যেন শহীদদের সকল ইবাদতকে কবুল করে নেন এবং তাদের যখমগুলোকে নূর দ্বারা পূর্ণ করে দেন। আমাদেরকে তাঁর খাঁটি বান্দা হিসাবে কবুল করে নেন এবং আমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ করার তাওফিক দান করেন। আর তিনি আমাদের নৈকট্যশীল বান্দা হিসেবে কবুল করেন এবং তিনি আমাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين

আপনাদের দোয়াপ্রার্থী ইসলামের খাদেম

খালিদ ইবরাহীম

এপ্রিল ২০২১, শাবান ১৪৪২

 

 


****************************
اپنی دعاؤں میں ہمیں یاد رکھيں
اداره الفردوس براۓ نشر و اشاعت
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশন
In your dua remember your brothers of
Al Firdaws Media Foundation

***********************************

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + eighteen =

Back to top button