pdf/doc উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার ।। আমরা কি চাই! ।। ২য় পর্ব ।।
pdf/doc উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার ।। আমরা কি চাই! ।। ২য় পর্ব ।।
مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
تحریک جہاد برصغیر…حقیقت و حقانیت! – الحوار الخاص مع استاد اسامه محمود حفظه الله-٢
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার
উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!(দ্বিতীয় পর্ব)
কাশ্মীর জিহাদ পথ এবং গন্তব্য
কাশ্মীরের ভাইদের প্রতি একটি আহ্বান
Exclusive Interview with Ustad Usama Mahmud Hafizahullah (Part-2)
“The Path and Destination of Kashmir Jihad
A Call to Our Brothers in Kashmir”
للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading
লিংক-১ : https://justpaste.it/kashmir_jihad_poth
লিংক-২ : https://mediagram.me/6fe4754dd5238273
লিংক-৩ : https://noteshare.id/t2Hyl8h
روابط بي دي اب
PDF (674 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৬৭৪ কিলোবাইট]
লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/2oi6HjiTxo8Wn5G
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/6MAjTrJtrK2XZbT
লিংক-৩ : https://archive.org/download/ustad-osama-mahmud-sakkhatkar-part-2/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part%202.pdf
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/i8w2c95f11d7cde864683a4a16f9ce1c63f66
লিংক-৫ : https://share.eu.internxt.com/d/sh/file/1a8e6fcf-93d2-4f16-830c-7fbba4cee442/f3a077493d4550ffce47a4b829298cf35186d89538e27f17416d532ae52667a2
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/c26peruanq77yst/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part+2.pdf/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/TVhyiYiT#qJfKXiA5kxJWxDvcEsK1jcSURLeT3mjpnaFy6cdkOSw
روابط ورد
Word (323 KB)
ওয়ার্ড [৩২৩ কিলোবাইট]
লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/Zxqx48S5wpHg2Gt
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/eRDwQYAwboR34zr
লিংক-৩ : https://archive.org/download/ustad-osama-mahmud-sakkhatkar-part-2/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part%202.docx
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/i8w2c56e9a09000d14ddd9593407368a36601
লিংক-৫ : https://secure.internxt.com/d/sh/file/0e99151e-6bc3-4a26-992e-2023185b1253/0168bc18d684ecfc16637f1759d75283fdfe3729a74342223dd0c4d0c3b97fa8
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/7lxnuywc84wbn1i/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part+2.docx/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/OEZHlIyZ#IvWI53vAYOX7SWLggFUzFi3sgGgmIThRMqPTt1nt4S4
روابط الغلاف- ١
book Cover [602 KB]
বুক কভার ডাউনলোড করুন [৬০২ কিলোবাইট]
লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/bPwqWRjNG9nM8ZW
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/RbsTEpHJHKzyW2r
লিংক-৩ : https://archive.org/download/ustad-osama-mahmud-sakkhatkar-part-2/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part2%20Cover.jpg
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/i8w2cb2951ea5239f4d4298baf5fdb2746e87
লিংক-৫ : https://share.eu.internxt.com/d/sh/file/0decdd2f-a223-4d11-ab3f-208ac47d6d8a/38fcf42dc551d5d3a948d49f4a5d8cebee4a6ec58e9a694f18825972d148ad2e
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/escp6lcw4qs81f9/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part2+Cover.jpg/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/XFBmnQQA#TQ74_GmvMEMwkzQbioUjq_VJvziDTdWXfa-EEG54F0A
روابط الغلاف- ٢
Banner [508 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৫০৮ কিলোবাইট]
লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/HDJi6Qm2w8nqW2Z
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/fGpi3q5HBqjBqHH
লিংক-৩ : https://archive.org/download/ustad-osama-mahmud-sakkhatkar-part-2/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part2%20BennarHQ.jpg
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/i8w2c800c5ecc9c484b6d80f277d197e00aa1
লিংক-৫ : https://share.eu.internxt.com/d/sh/file/b6a2c536-96ac-4f5f-b24e-c6335b82ee27/aac6515d4cd24d4feb63cf0874ab3bb58969fc977d1e40f306a326bde9e1efbd
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/fi413aa9zq6idcx/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part2+BennarHQ.jpg/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/6B5Unbhb#E9375VSYHEpdzWgU2LsdFy_KMdPy9Q4XFym4EDdqtts
সংশোধিত সংস্করণ
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার
উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!
(দ্বিতীয় পর্ব)
কাশ্মীর জিহাদ পথ এবং গন্তব্য
কাশ্মীরের ভাইদের প্রতি একটি আহ্বান
অনুবাদ
আন নাসর অনুবাদ টিম
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার
উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা! (দ্বিতীয় পর্ব)
কাশ্মীর জিহাদ পথ এবং গন্তব্য
কাশ্মীরের ভাইদের প্রতি একটি আহ্বান
অনুবাদ: আন নাসর অনুবাদ টিম
প্রথম প্রকাশ: যুলহিজ্জাহ ১৪৩৮ হি. | নভেম্বর ২০১৭ ইং
দ্বিতীয় প্রকাশ: রজব ১৪৪৬ হি. | জানুয়ারি ২০২৫ ইং
স্বত্ব: সকল মুসলিমের জন্য সংরক্ষিত
প্রকাশক: আন নাসর মিডিয়া
(আল কায়েদা উপমহাদেশ, বাংলাদেশ হালাকা)
যোগাযোগ
জিও নিউজ: https://talk.gnews.to/channel/an-nasr-media-or-mussh-alnsr
চারপওয়্যার: https://chirpwire.net/nasrmedia
নোট: এই প্রকাশনাটি ‘আল কায়েদা উপমহাদেশ’ এর অফিসিয়াল মিডিয়া আউটলেট ‘আস সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ’ কর্তৃক যুলহিজ্জাহ ১৪৩৮ হিজরি মোতাবেক নভেম্বর ২০১৭ ইং সালে প্রকাশিত উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার ‘তেহরিকে জিহাদ বাররে সাগির … হাকিকত ও হাক্কানিয়াত’ (تحریک جہاد برصغیر…حقیقت و حقانیت! – الحوار الخاص مع استاد اسامه محمود حفظه الله) এর দ্বিতীয় পর্বের বাংলা অনুবাদ। এটি আল কায়েদা উপমহাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া উইং ‘আস সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ’ থেকেই একই সাথে খোরাসান থেকে অনূদিত হয়েই প্রকাশিত হয়েছিল। এখন এটির সংশোধিত সংস্করণ ‘আন নাসর মিডিয়া’ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে।
স্বত্ব
এই বইয়ের স্বত্ব সকল মুসলিমের জন্য সংরক্ষিত। পুরো বই, বা কিছু অংশ অনলাইনে (পিডিএফ, ডক অথবা ইপাব সহ যে কোন উপায়ে) এবং অফলাইনে (প্রিন্ট অথবা ফটোকপি ইত্যাদি যে কোন উপায়ে) প্রকাশ করা, সংরক্ষণ করা অথবা বিক্রি করার অনুমতি রয়েছে। আমাদের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। তবে শর্ত হল, কোন অবস্থাতেই বইয়ে কোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন করা যাবে না।
– কর্তৃপক্ষ
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার
উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!
(দ্বিতীয় পর্ব)
কাশ্মীর জিহাদ পথ এবং গন্তব্য
কাশ্মীরের ভাইদের প্রতি একটি আহ্বান
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। সম্মানিত উস্তাদ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আজ ইনশাআল্লাহ আপনার সাথে সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব হবে। এই পর্বে ইনশাআল্লাহ কাশ্মীর, কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং কাশ্মীর জিহাদের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ের উপর আলোচনা হবে। কাশ্মীরে বিগত দিনগুলোতে অনেক দ্রুত অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এই সময়ে একদিকে যেমন ভারতীয় সামরিক বাহিনী কাশ্মীরের মুসলমানদের উপর পর্বতসম নির্যাতন করেছে অপরদিকে কাশ্মীরের মুসলমানেরাও নায়কোচিত সাহসিকতা এবং ঈমানি চেতনার মহৎ দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে। কাশ্মীর ইস্যু যদিও এই অবস্থার আগেও উপমহাদেশে অনেক গুরুত্বের দাবি রাখত, কিন্তু বর্তমান অবস্থার পরে এর গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে। আশা করি আপনার সাথে আজ এই আলোচনায় কাশ্মীরের ব্যাপারে আল-কায়েদার অবস্থান জানার সৌভাগ্য হবে।
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ সবার আগে আমি আমার কাশ্মীরের ভাই, বয়োজ্যেষ্ঠ, মা এবং বোনদের প্রতি এখানে খোরাসানের সমস্ত মুজাহিদের এবং আমাদের জামাআতের পক্ষ থেকে সালাম জানাচ্ছি, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আল্লাহ তাআলা এই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতিকে দৃঢ়তা এবং অবিচলতা দান করুন, তাঁদের ভালো কাজগুলোকে নিজের দরবারে কবুল করুন, তাঁদেরকে এবং তাঁদের অবিরাম কুরবানীকে দৃষ্টান্ত বানিয়ে দিন। আল্লাহ শয়তান এবং তার বাহিনী থেকে এই জাতিকে এবং এর জিহাদকে হেফাযত করুন। আমি তাঁদের উদ্দেশ্যে বলছি –
আল্লাহর কসম! আপনারা সত্যিকার অর্থেই এক মহান জাতি, আপনারা পুরো উপমহাদেশের জন্য ঈর্ষা করার মতো কার্যকর দৃষ্টান্ত, এই দীনের জন্য আপনারা লাখো শহীদ, অসংখ্য কুরবানী পেশ করেছেন। হিন্দু ও মুশরিকের বিরুদ্ধে আপনাদের দৃঢ়তা ও অবিচলতা গাযওয়ায়ে হিন্দের এমন এক সোনালি অধ্যায় যা পড়ে সবসময় ইসলামের প্রতি ভালোবাসা এবং স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা অন্তরে জন্ম নিবে। এই সুযোগে কাশ্মীরের সমস্ত মুজাহিদ ভাইকেও আমরা সালাম জানাচ্ছি, মূর্তি ও গরুর পূজারি হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে প্রতিরোধ গড়ে তোলার যে সৌভাগ্য আল্লাহ আপনাদের দিয়েছেন, এজন্য আপনাদেরকে মোবারকবাদ। আপনারা সৌভাগ্যবান কারণ, আল্লাহ আপনাদেরকে জিহাদের মতো বড় ইবাদত, কাশ্মীরের মতো এই মহান ময়দান প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ দিয়েছেন। আল্লাহ আপনাদেরকে এর উপর দৃঢ় থাকার তাওফীক দিন, প্রত্যেক পদক্ষেপে আপনাদের সাহায্য করুন এবং আপনাদের জিহাদ, পুরো উপমহাদেশে ইসলামের বিজয় এবং কুফরের পরাজয়ের মূল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করুন। কাশ্মীরে আমাদের যেসব প্রিয় মুজাহিদ ভাই ‘হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত’ এর মহান শ্লোগান বুলন্দ করেছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যেও আমি বলছি, আল্লাহর কসম! আপনারা আমাদের অন্তরের অন্তস্থলে রয়েছেন আর দোয়াতেও আমরা আপনাদের মনে রাখি। আল্লাহ আপনাদের নির্দেশনা দিন, প্রত্যেক পদক্ষেপে আপনাদের সাহায্য করুন এবং আল্লাহ আপনাদেরকে কাশ্মীরের সকল মুজাহিদের … এবং এই নির্যাতিত জাতির জন্য রহমত ও বরকতের কারণ বানিয়ে দিন। আমীন।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমীন। বলা হয়ে থাকে কাশ্মীরের সমস্যা ভারত এবং পাকিস্তানের মাঝে বিরাজমান এক পারস্পরিক সমস্যা। আর এটাও বলা হয় যে, এটা একটা রাজনৈতিক সমস্যা এবং দুই পক্ষের অথবা তিন পক্ষের মাঝে আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান বের করা উচিত। এ সম্পর্কে আপনার মতামত কি?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীরের সমস্যাকে রাজনৈতিক হিসেবে আখ্যা দিয়ে যদি দীন ও শরীয়তের দৃষ্টিতে ফরয থেকে পালানোর রাস্তা খোঁজা হয় তাহলে এই অর্থে এটা মোটেই রাজনৈতিক হবে না। এটা একটি দীনি এবং শরীয়তি মামলা। এটা সুস্পষ্ট যে, হিন্দু ও মুসলমানদের আলাদা করার কারণ দেশ, ভাষা, বংশ অথবা জাতীয়তা নয়; এর কারণ আকীদা ও দীন, যা হিন্দু ও মুসলমানদেরকে আলাদা করে। এরপর এরকম কথা যে, এটা দুইটি রাষ্ট্রের মাঝে সমস্যা এবং এরাই অধিকার রাখে যেভাবে ইচ্ছা এই সমস্যা সমাধান করার; এমন কথা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। এই সমস্যা দুইটি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নয়, এটা দুইটি উম্মত, দুইটি জাতি, মুসলিম জাতি এবং কাফের জাতির মাঝে সমস্যা। কাশ্মীরি জাতি মুসলিম উম্মতের একটি প্রধান ব্রিগেড এবং তাঁরা বাকি উম্মতের চেয়ে হিন্দুদের মোকাবেলায় অগ্রগামী, তাঁরা হিন্দুদের মোকাবেলায় দৃঢ় আছে। বাস্তবতা হলো উপমহাদেশের বরং সমস্ত মুসলমান উম্মত এই ব্যাপারে শরীয়তের উপর ভিত্তি করে তাঁদের অংশীদার। এটা প্রত্যেক ঐ ব্যক্তির সমস্যা, যে তাওহীদের কালেমা পড়েছে এবং যে নিজেকে এই উম্মতের একজন মনে করে। এখন কোনো মুসলমানের এই অনুভূতি হোক অথবা না হোক কিন্তু কুরআনের আয়াত তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কাশ্মীরের মুসলমানদের সাহায্যের জন্য প্রত্যেক মুসলমানকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন … কাশ্মীরের জখম উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্য একটা অগ্নি পরীক্ষা। কাশ্মীরি জাতি তো সৌভাগ্যবান যে, আল্লাহ তাঁদেরকে হিন্দুদের সামনে এই বরকতময় জিহাদের জন্য নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে, এই মহান জাতির মাধ্যমে উপমহাদেশের সব মুসলমানের আজ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের জখম, রক্তাক্ত ও একাকী অসহায় অবস্থা দেখে আমাদের সব মুসলমানের উপর আজ দলীল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
আবার এটাও আল্লাহর নিশানা যে, শরীয়ত এবং প্রাকৃতিক দুই দৃষ্টিকোণ থেকে আজ সুস্পষ্ট যে, এই পরীক্ষায় শুধু তখনই আমরা সফল হতে পারবো, যখন এর সাথে আমাদের আচরণ শরীয়ত মোতাবেক হবে। আল্লাহ ফলাফলকে বিশেষ কারণের সাথে যুক্ত করেছেন, স্বাধীনতা এবং সফলতা যদি আমরা চাই, জুলুম বন্ধ করা যদি আমাদের উদ্দেশ্য হয়, তবে আল্লাহ একে এই শরীয়তের অনুসরণের সাথে শর্তযুক্ত রেখেছেন।
وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ ﴿١٣٩﴾
অর্থাৎ “আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না; যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।” [সূরা আলে ইমরান, ৩:১৩৯]
একইভাবে আল্লাহর বাণীঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تَنصُرُوا اللَّهَ يَنصُرْكُمْ
অর্থাৎ “হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন।” [সূরা মুহাম্মাদ, ৪৭:৭]
ঈমান এবং আমল ঠিক হবে, শরীয়তের উদ্দেশ্যের সাথে শরীয়ত মোতাবেক সফর হবে তাহলে লক্ষ্যে পৌঁছা যাবে, এটা আল্লাহর সুন্নাত এবং এই সুন্নাত কখনও পরিবর্তন হয় না। শরীয়ত বলে কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। আর জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ ওটাই যা আল্লাহর কালিমাকে সুউচ্চ করা, আল্লাহর দীনের বিজয় এবং মাজলুমদের সাহায্যের জন্য করা হয়ে থাকে। কিন্তু যদি আমরা সব সময় বাহ্যিক লাভ দেখি, প্রবৃত্তির অনুসরণের মাধ্যমে কাজ করি এবং এই মামলার দীনি বাস্তবতাকে অস্বীকার করি, এর বদলে অন্য নাম রাজনৈতিক, স্বাদেশিক, জাতীয় অথবা অন্য কোনো নাম ব্যবহার করে এই মামলার সাথে দীনের সম্পর্ক অস্বীকার করি, এরপর শরীয়ত বহির্ভূত শ্লোগানের সাথে শরীয়ত বহির্ভূত পথেও চলতে শুরু করি তাহলে এসবের মাধ্যমে কি আল্লাহর মাপকাঠি পরিবর্তন হয়ে যাবে? বাস্তবতা কি পরিবর্তন হয়ে যাবে? অত্যাচারের রাস্তা কি বন্ধ হয়ে যাবে এবং কাশ্মীর স্বাধীন হয়ে যাবে? কখনও না, আল্লাহর সুন্নাত এটা নয়। কুফর পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং আমরা মনের মতো শরীয়ত বহির্ভূত পথে চলে এই আশা করব যে, আমরা সফল হয়ে যাব; তো এর অর্থ এটাই যে, আমরা বাস্তবতা থেকে চোখ বন্ধ করে আছি। কুরআনের আয়াত, পূর্ববর্তী উম্মতদের ইতিহাস এবং বর্তমান সময়ের নিদর্শন থেকে, এগুলো থেকে কি আমরা কোনো শিক্ষা নিতে চাই না?
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ তাহলে কাশ্মীরে জিহাদের জন্য কি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর প্রতি চেয়ে থাকা উচিত? পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কি কাশ্মীরের সমস্যা সমাধান করতে পারবে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী সমাধান নয়, বরং এই সমস্যার কারণ। শরীয়তের শত্রু এবং বৈশ্বিক কুফরী শক্তির গোলাম এই সামরিক বাহিনী, এর অতীত এবং বর্তমান দেখার পরও এর দিকে চেয়ে থাকা নিজেকে ধোঁকা দেওয়া এবং বাস্তবতার সামনে চোখ বন্ধ করে রাখার শামিল। এটা সুস্পষ্ট যে, যেই সামরিক বাহিনী নিজেদের স্বার্থ দেখে অগ্রসর হয় এবং নিজেদের ক্ষুদ্রতর লোকসান অথবা বিশ্ব গুণ্ডাদের শুধু ইশারা দেখেই জয় করা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আসে। এই যাদের অবস্থা- তারা মাজলুমদের সাহায্যের জন্য কাফেরদের সামনে কি প্রতিরোধ করবে? এটা অসম্ভব … কিভাবে ২০০৩-২০০৪ সালে ভারতের চাপের মুখে এই সামরিক বাহিনী কাশ্মীরি মুজাহিদদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল, কাশ্মীরি মুজাহিদদের মানসেহরা এবং মুজাফফরাবাদের ক্যাম্পে নজরবন্দী করে রাখে এবং কাশ্মীরি মুসলমানদের যুদ্ধের ময়দানের ভেতরে হিন্দুদের দয়া ও করুণার জন্য ছেড়ে দিয়ে আসে এবং এভাবে কাশ্মীর জিহাদের পিঠে ছুরি বসিয়ে দেয়, সেই সকল ঘটনা আমাদের সামনে আছে। আবার এটা কোনো প্রথম ঘটনাও নয়; ১৯৬৫, ১৯৭১ এবং কারগিলেও এই সামরিক বাহিনীর এই কৌশলই ছিল। বাস্তবতা এটাই যে, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বেতনভাতা, ফ্ল্যাট এবং ক্যারিয়ারের উন্নতির জন্য লড়াই করে। স্বার্থপরতা এবং বাহ্যিক ফায়দার নাম হলো সামরিক বাহিনীর চাকুরি। এই সামরিক বাহিনীই আমেরিকান ডলারের বিনিময়ে উম্মতের মুজাহিদদের এবং নিজ মুসলিম জনসাধারণের রক্ত ঝরিয়ে যাচ্ছে। যে কাবায়েল (উপজাতীয় অঞ্চলের গোত্রসমূহ) হিন্দুদের থেকে কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের হাতে সোপর্দ করেছিল, সেই কাবায়েলের উপর আমেরিকার দাসত্ব চাপিয়ে দিতে গিয়ে আগুন ও বারুদের বৃষ্টি বর্ষণ করে এই পাক বাহিনী। আজ তাদের নীতিতে ভারত, আমেরিকা, ইসরায়েল অথবা কোনো কাফের রাষ্ট্র এই বাহিনীর শত্রু নয়, বরং জিহাদের ফরয আদায়কারী দীনের অনুসারীদেরকে এই বাহিনী শত্রু মনে করে। সুতরাং যে সামরিক বাহিনীর কাছে না মসজিদ মাদরাসা হেফাযত থাকে আর না মুসলমানদের বসতবাড়ি হেফাযত থাকে, এমন সামরিক বাহিনী কিভাবে হিন্দুদের মোকাবেলা করতে পারবে?
আমাদের অবস্থান হলো জিহাদি আন্দোলনকে এই তাগুতদের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করা ছাড়া জিহাদ কখনও সফল হতে পারবে না। যদি আজ ইসলামী ইমারত আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইয়েমেন ও সোমালিয়া এবং মালি ও আলজেরিয়া পর্যন্ত জিহাদি আন্দোলনের সফল হচ্ছে, যেখানেই সব প্রতিবন্ধকতার পরও আল্লাহ মুজাহিদদের বিজয় দিচ্ছেন এবং জিহাদি আন্দোলন গন্তব্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তো এর একটা বড় কারণ হলো তাগুতী সামরিক বাহিনীর প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করা।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমাদের পরিসরের কেউ কেউ আজও কাশ্মীরের ব্যাপারে জাতিসংঘের কাছে আশা রাখে, আপনার দৃষ্টিতে জাতিসংঘ কি কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান করতে পারবে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ দেখুন, জাতিসংঘ জালেম, বলপ্রয়োগকারী এবং কাফেরদের বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থার নাম, এর ইতিহাস ইসলাম এবং আহলে ইসলামের বিরুদ্ধে অপরাধে পরিপূর্ণ। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের উপর ইসরায়েলের দখলদারিত্বের ব্যাপারে সম্মতি আছে, ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধে আমেরিকার প্রতি সাহায্য আছে। কাশ্মীর থেকে ফিলিস্তিন ও সিরিয়া পর্যন্ত মুসলমানদের রক্ত ঝরানোর জন্য জালেমদের প্রতি সাহায্য আছে। এর ইতিহাসে কোথাও এমন একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে না, যেখানে কাফের ও জালেমদের মোকাবেলায় মুসলমানদের ইসলামী অধিকার দেওয়া হয়েছে।[1] জাতিসংঘ হলো অপরাধী ও জালেমদের এমন এক জোট, যেখানে শক্তি ও জুলুমের ভিত্তিতে প্রত্যেককে ক্ষমতা দেওয়া হয়। ভেটো দেওয়ার অধিকার সম্পন্ন পাঁচ শক্তি, পাঁচ স্বৈরাচারের এখানে সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব। এদের প্রত্যেকের নিজ দখলে নিজের কাশ্মীর আছে এবং প্রত্যেকের হাত মুসলমানদের রক্তে রঙিন। রাশিয়া চেচনিয়ার উপর চেপে আছে, চেচেন মুসলমানদের উপর অত্যাচারের এক লম্বা ইতিহাস আছে এই রাশিয়ার। চীন ইসলামী তুর্কিস্তানের উপর চেপে আছে, এখানকার মুসলমানরা চীন থেকে স্বাধীনতা চায়। ইসলামী তুর্কিস্তানের মুসলমানদের উপর চীন পর্বতসম অত্যাচার করে যাচ্ছে। এই বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী তুর্কিস্তানি মুসলমানরা ইসলামী নাম রাখতে পারবে না, নেকাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, দাঁড়ি রাখা নিষিদ্ধ, রমযান মাসে রোযা রাখা পর্যন্ত নিষিদ্ধ। একইভাবে ফ্রান্সের অত্যাচারের কারণে ইসলামি মাগরেব অঞ্চলে ও আফ্রিকায় মুসলমানদের রক্ত ঝরছে। আজ এই কারণেই সব অপরাধী মিলে আফগানিস্তান থেকে সিরিয়া ও ইয়েমেন পর্যন্ত মুসলমানদের রক্ত প্রবাহিত করছে। সুতরাং যদি জাতিসংঘকে নাক গলানোর সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে এ থেকে এটাই আশা করা যেতে পারে যে, কাশ্মীরের মাটি হিন্দুদের সাথে সাথে এই বৈশ্বিক অপরাধীদেরও পাশবিকতার বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হবে।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আপনি বলেছেন কাশ্মীরের ব্যাপারে জাতিসংঘের দিকে চেয়ে থাকা যাবে না। আবার পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর কাছ থেকেও ভালো কোনো আশা নেই। তাহলে আপনার মতে কাশ্মীরের সমস্যার কার্যকর সমাধান কি?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ সমাধান বলতে যদি এমন কোনো ফর্মুলা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, যাতে কোনো কুরবানী, কষ্ট ও ক্লেশ ছাড়াই দুই তিন বছরের মধ্যেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে, তো আমরা মনে করি এমন কোনো সমাধান সম্ভব নয়; বরং সত্য এটাই পুরো উম্মত আমাদের এইসব সমস্যার কারণ। আজ পর্যন্ত আমরা এমন কোনো সমাধান খুঁজেছি যাতে রক্ত প্রবাহিত হওয়া ছাড়াই, হিজরত ও জিহাদের কষ্ট কাঠিন্য সহ্য করা ব্যতীত, দৈনন্দিন জীবনে কোনো বাঁধা-বিঘ্নহীন এবং শান্তিপূর্ণ সাময়িক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে যাব। আসলে আজ এমন সমাধানের সন্ধানই মুসলিম উম্মতের অবনতির কারণ।
বাস্তবতা এটাই যে, সমাধান আল্লাহর ইচ্ছাধীন। নুসরত ও বিজয় আল্লাহর হাতে। আর আমরা, আমরা তো আল্লাহ প্রদত্ত রাস্তা অর্থাৎ শরীয়তের অনুসরণে বাধ্য এবং এ ব্যাপারেই আমরা জিজ্ঞাসিত হবো। এ পথ অনুসরণ করে যদি বিজয় পাওয়া যায়, তাহলে আল্লাহর শুকরিয়া, এটি আল্লাহর নেয়ামত। আর যদি বিজয় পেতে বিলম্ব হয়, তাহলে এমন বাস্তবতাকেও আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাময় এবং আমাদের জন্য কল্যাণকর গণ্য করবো । এমন অবস্থায় আবার ব্যক্তি, জামাআত ও জাতি হিসেবে আমরা সফল হবো, কারণ আল্লাহর আনুগত্যের ফলে আল্লাহর কাছে সম্মান ও সফলতা পাওয়া যাবে, যা আমাদের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা। এটা আলাদা কথা যে, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে, যখন আমরা উম্মত হিসেবে সরল পথের অনুসরণ করবো, তো ইনশাআল্লাহ ভালো ফলাফলই দেখা যাবে।
এজন্য প্রথম করণীয় এটাই যে, আমরা শরীয়তের অনুসারী হয়ে যাই। শরীয়ত বলে কুফরের আধিপত্য থেকে পরিত্রাণের রাস্তা হলো জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ। এজন্য আমাদের ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক পর্যায়ে জিহাদকে দাঁত দিয়ে যেন আঁকড়ে ধরতে পারি, হিন্দু সামরিক বাহিনী এবং শাসকদের সাথে আমরা তলোয়ারের ভাষায় কথা যেন কথা বলি। গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষতা অথবা ‘কিছু নিন কিছু দিন’ সহ সব এমন পথ ও পন্থাকে নিজেদের জন্য হারাম মনে করি, যা শরীয়ত বহির্ভূত এবং যাতে কুফরী শাসনব্যবস্থা প্রাধান্য পায় অথবা একে সহযোগিতা করার জন্য অংশ নেওয়া হয়।
দ্বিতীয়ত, এই জিহাদের লক্ষ্য যেন আমাদের সবার সামনে থাকে—শরীয়তের শাসন এবং মাজলুমদের সাহায্য। এ-ই জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহর বুনিয়াদি উদ্দেশ্য হওয়া জরুরি। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো সামনে রেখে আমরা অগ্রসর হই অর্থাৎ শরীয়তের শাসন আমাদের গন্তব্য হোক এবং শরীয়তের অনুসরণ আমাদের রাস্তা হোক।[2]
তৃতীয়ত, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীসহ সমস্ত তাগুতি সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রভাব থেকে নিজেদের আন্দোলনকে মুক্ত রাখা।
চতুর্থত, কাশ্মীরের জনগণ একা একা এই যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়ী হতে পারবে না। কারণ, এটা সব মুসলমানের সমস্যা, সবার উপর এই জিহাদ ফরযে আইন। তাই পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারতসহ পুরো উপমহাদেশের মুসলমানদের এই যুদ্ধে নিজের ফরয আদায় করা জরুরি। ভারতের বিরুদ্ধে পুরো উপমহাদেশে জিহাদি আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করা অত্যাবশ্যকীয়। কাশ্মীরি জাতির সাহায্য কেবল তখনই সম্ভব, যখন এই জিহাদি আন্দোলন উপমহাদেশের পর্যায়ে শক্তিশালী হবে এবং পুরো উপমহাদেশের মুসলিম জনসাধারণ কাশ্মীরের জনগণের পিছনে দাঁড়িয়ে যাবে। উপমহাদেশের পর্যায়ে এই জিহাদি আন্দোলনের তিনটি দায়িত্ব– কাশ্মীরি জনগণকে সাহায্য করা প্রথম দায়িত্ব। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীসহ সব তাগুতি ষড়যন্ত্র ও আগ্রাসনের মোকাবেলায় জিহাদি আন্দোলনের প্রতিরক্ষা করা দ্বিতীয় দায়িত্ব। আর তৃতীয় দায়িত্ব হলো, ভারতীয় সামরিক বাহিনী এবং হিন্দু প্রশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিধি পুরো উপমহাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া … কাশ্মীরের ছোট এলাকাতেও ভারত ছয় লক্ষ সৈন্য মোতায়েন করে নিজেকে সুরক্ষিত করে রেখেছে। ভারতকে কলকাতা, ব্যাঙ্গালোর এবং দিল্লীসহ পুরো উপমহাদেশে টার্গেট বানালে তখন এর উচিত শিক্ষা হবে। আমেরিকার দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে, যেভাবে আমেরিকার জন্য দুনিয়া জুড়ে নিজেকে নিরাপদ রাখা মুশকিল হয়ে গেছে, একইভাবে ভারতীয় বাহিনী এবং হিন্দু শাসকদের জন্যও নিরাপদ দুনিয়াকে যুদ্ধের ময়দান বানানো জরুরি।
পঞ্চমত, যা গুরুত্বের দিক থেকে প্রথম, তা হলো উল্লেখিত চারটি বিষয়ের দিকে উপমহাদেশের সমস্ত মুসলমানের নিয়ে আসা। অর্থাৎ দাওয়াত ও জিহাদের নবুওয়্যাতি মানহাজের উপর দাঁড় করানো এবং এর পূর্বে আখিরাতের চিন্তা, তাকওয়া এবং আল্লাহ তাআলার জন্য সব– এরকম প্রকৃত পথের সম্বল দিয়ে তাদের অলংকৃত করা … এসব ঐ পথ যা আমাদের দৃষ্টিতে আল্লাহর অনুমতিক্রমে কাশ্মীরসহ এই পুরো উপমহাদেশে জুলুম ও কুফরের প্রতিপত্তিকে শেষ করার কারণ হতে পারে। আর আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ কার্যক্ষেত্রে কাশ্মীরের জিহাদে আল-কায়েদা কিভাবে নিজের ভূমিকা পালন করছে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ এ ব্যাপারে কিছু কথা কাশ্মীরি ভাইদের সামনে শুরুতে রাখতে চাই; এখানে খোরাসানে আমাদের এই কাফেলায় অধিকৃত কাশ্মীর থেকে আসা বেশকিছু মুজাহিদ ও মুহাজির ভাই ছিলেন এবং এখনও আলহামদুলিল্লাহ আছেন। এরা সেসব ভাই যারা জিহাদের জন্য পাকিস্তানে হিজরত করেছিলেন। কিন্তু যখন পাকিস্তানি বাহিনী নিজেদের কৌশল পরিবর্তন করে, তখন এই বাহিনী ও এদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাঁদেরকে জিহাদ ছেড়ে দেওয়া এবং পাকিস্তানে চাকুরি করার জন্য বাধ্য করে। আল্লাহর এই সিংহরা— আলহামদুলিল্লাহ— এই হীনতা মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং এখানে খোরাসানে এসে আল-কায়েদায় যোগ দেয়। এরপর এখানে এই কাশ্মীরি ভাইয়েরা আমেরিকা ও এর মিত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে অংশ নেন এবং এখন পর্যন্ত রত আছেন … সেই সাথে কাশ্মীর উপত্যকা থেকেও তাঁদের দৃষ্টি কখনও সরে যায়নি! তাঁরা ভারতের বিরুদ্ধেও প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এঁদের মাঝে কিছু এমনও কাশ্মীরি ভাই আছেন, যারা আমেরিকার হামলায় এখানে শহীদ হয়ে গেছেন। আল্লাহ তাঁদের শাহাদাত কবুল করুন এবং তাঁদের উপর রহম করুন …
এমন ভাইদের তালিকা লম্বা, মুজাহিদ ভাইয়েরা এবং নেতারাও এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত। এঁদের মাঝে এমনও আছেন যারা অধিকৃত কাশ্মীর থেকে এসেছেন, আবার এমনও আছেন যারা পাকিস্তানি কাশ্মীর থেকে এসেছেন। শায়খ এহসান আযীয (রহিমাহুল্লাহ) আমাদের মুরব্বী এবং উস্তাদ ছিলেন। আমি নিজে এর সাক্ষী যে, কাশ্মীরের ভেতর এখানে খোরাসান থেকে জিহাদ চালু করার জন্য তিনি অনেক চেষ্টা করেছিলেন এবং অনেক কাশ্মীরি মুহাজির ভাইকে তিনি এখানে প্রস্তুত করেছিলেন। একইভাবে শায়খ ইলিয়াস কাশ্মীরি (রহিমাহুল্লাহ)! … তিনি কাশ্মীর জিহাদের বিখ্যাত নেতা ছিলেন। তিনি কাশ্মীরে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু কৌশল পরিবর্তনের পরে পাকিস্তানি বাহিনী শায়খ ইলিয়াস (রহিমাহুল্লাহ) কেও থামাতে চেয়েছিলেন। তিনি কথা মানেননি ফলে তাঁকে টর্চার সেলে পাঠানো হয়, তাঁর উপর কঠোর নির্যাতন করা হয়। মুক্ত হওয়ার পরে তিনি সোজা খোরাসানে চলে আসেন। এখানে এসে আল-কায়েদায় যোগ দেন এবং এরপর আল-কায়েদার অধীনে তিনি দুই সমরক্ষেত্রেই মনোযোগ দেন, আমেরিকা ও এর মিত্রদের সাথেও লড়াই করেন। আল্লাহ তাঁর কাছ থেকে অনেক কাজ নেন। শায়খ উসামা (রহিমাহুল্লাহ) এর অ্যাবোটাবাদে পাওয়া চিঠিতেও তাঁর কথা উল্লেখিত ছিল। সেই সাথে অন্য সমরক্ষেত্র কাশ্মীরের জন্যও তিনি এখানে প্রস্তুতি অব্যাহত রাখেন … এবং এখানে খোরাসান থেকে ভারতে তিনি কয়েকটি সফল অপারেশন পরিচালনা করেন আলহামদুলিল্লাহ।
সুতরাং উদ্দেশ্য হলো আমরা এখানে খোরাসানে, জিহাদের ময়দানে থেকেও কাশ্মীর জিহাদে অংশ নেওয়া ফরয মনে করি … আমাদের কাফেলার প্রত্যেক মুজাহিদ- হোক সে কাশ্মীরি, পাকিস্তানি, বাংলাদেশি অথবা ভারতীয়- প্রত্যেকের মন কাশ্মীরের ভাইদের সাহায্য করার জন্য ছটফট করে। কাশ্মীরের ভেতরেও আল্লাহ যেন আমাদের জন্য রাস্তা খুলে দেন, আল্লাহ যেন আমাদের তাওফীক দেন, তাহলে ইনশাআল্লাহ আমাদের কাশ্মীরি ভাইদের সাথে আমরাও যুদ্ধক্ষেত্রে থাকবো। এরপর কাশ্মীরের বাইরে পুরো দুনিয়াতে … ভারতীয় সরকারের স্বার্থ এবং ভারতীয় হিন্দু শাসকদের টার্গেট বানানো আমাদের প্রচেষ্টা। এ দিকে আমরা দাওয়াত দেই, আমাদের প্রচেষ্টায় আল্লাহ বরকত দিন, সাহায্য করুন।
جَاهِدُوا الْمُشْرِكِينَ بِأَلْسِنَتِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ
অর্থাৎ “তোমরা মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করো তোমাদের কথার মাধ্যমে এবং জীবনের মাধ্যমে।” [রিয়াযুস সালিহিন, হাদিস: ৪৩৭]
উপরের হাদীসটিকে সামনে রেখে কথার মাধ্যমে যতটা সম্ভব, আর আমরা একে লজ্জার কিছু মনে করি না, বরং নিজেদের ভাইদের কল্যাণের জন্য এখানে এই জিহাদের ময়দান থেকে ঐ ময়দানের দিকে ডাকি, অন্তর থেকে অন্তরে বাহবা দেবো এবং নিজের ভাইয়ের নুসরতের জন্য হিন্দু ও মুশরিকদের বিরুদ্ধে যতটুকু আমরা করতে পারি, এই জিহাদে নিজেরা অংশগ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ!
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ কাশ্মীরে আল-কায়েদার হস্তক্ষেপের ফলে কি কাশ্মীর জিহাদের ভিত্তির কোনো ক্ষতি হবে না? কেউ কেউ বলেন এতে আমেরিকা অভিযান চালানোর বৈধতা পাবে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ প্রথম কথা হলো কাশ্মীরের মুসলমানদের রক্ত ঝরানো থেকে আমেরিকার ভূমিকা কবে মুক্ত ছিল যে, আজ মার্কিন অভিযান চালানোর কথা বলে ভয় দেখানো হচ্ছে? অত্যাচার এবং বলপ্রয়োগের সাথে আমেরিকার ভূমিকা এখানে সব সময় ছিল। প্রশ্ন হলো একদিকে যখন দক্ষিণ সুদান এবং পূর্ব তিমুরে খ্রিস্টানরা মুসলমানদের থেকে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে তখন আমেরিকা সাথে সাথে সক্রিয় হয়ে যায় এবং তাদের স্বাধীন করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। কিন্তু অন্যদিকে বিগত সত্তর সাল থেকে এখানে কাশ্মীরি মুসলমানরা আগুনে জ্বলছে, আমেরিকার টনক নড়েনি, বরং মুসলমানদের হত্যাকারী ভারতকে শক্তিশালী করছে। বাস্তবতা এটাই যে, কাশ্মীরি মুসলমানদের উপর চালানো প্রত্যেকটি জুলুমের পিছনে আমেরিকার সাহায্য ও পৃষ্ঠপোষকতা আছে।
আমেরিকার পক্ষ থেকে ভারতকে সাহায্য করার বিষয়টা বর্তমান বা নিকট অতীতের কোন বিষয় নয় যে, এ থেকে এটা বলা যাবে— কাশ্মীরে কোনো জামাআতের জিহাদের কারণে এসব হচ্ছে … আমেরিকা ভারত পারমাণবিক চুক্তি, একে অপরের সামরিক ঘাটি ব্যবহারের চুক্তি, মহাশূন্যভিত্তিক কার্যক্রমে ব্যাপক সহযোগিতা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং এমন অন্যান্য যুদ্ধক্ষেত্রে সাহায্য, এসব কিছু আল-কায়েদার কথা আসার আগেই হচ্ছিল … এরপর ইসরায়েলের সাথে ভারতের ঘনিষ্ঠতা, সামরিক সহযোগিতা, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা এবং অস্ত্র কারখানা ভারতে স্থানান্তরিত করা … এসব সহযোগিতা বিশেষ কোনো সংগঠন বা জামাআতের বিরুদ্ধে অথবা এরকম কোনো কারণে নয়, এটা মুসলিম উম্মতের বিরুদ্ধে! একইভাবে, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ২০০৩-২০০৪ সালে আমেরিকার নির্দেশে যেসব কাশ্মীরি জামাআতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তো ঐ সংগঠনগুলোর মাঝে আল-কায়েদা ছিল না! … অতীতে আল-মায়েদা নামে এক সাংবাদিক পাকিস্তানি শাসক এবং জেনারেলদের মাঝে হওয়া এক মিটিং ফাঁস করেন, যাতে উল্লেখ আছে আমেরিকাকে খুশি করার জন্য পাকিস্তানে থাকা কাশ্মীরি নেতাদের হত্যা করার ব্যাপারে পরামর্শ হয়েছিল, এই কাশ্মীরি নেতারাও তো আল-কায়েদার কেউ ছিলেন না! এসব বলার উদ্দেশ্য হলো, আমেরিকা এবং ভারত আগেও একসাথে ছিল এবং ভবিষ্যতেও ইসলামের বিরুদ্ধে একসাথে থাকবে। الکفر ملۃ واحدۃ অর্থাৎ “সব কাফেররা আসলে একই ধর্মের অনুসারী।” ইসলাম এবং মুসলমানদের মোকাবেলায় যুদ্ধক্ষেত্রে ভূমিকা যাই হোক না কেন- এদের সবার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ইসলামের প্রতি শত্রুতা হয়ে থাকে।
এটাও উল্লেখ করতে চাই, দুনিয়ার সব জালেম ও কাফের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ, তাহলে কেন কাশ্মীরি মুসলমানদের উপর নির্যাতনের বিষয়ে মুসলিম উম্মত নীরব দর্শক হয়ে থাকবে এবং উম্মাহর মুজাহিদ সন্তানেরা নিজেদের ভাইদের ডাকে সামনে আগাবে না? বাস্তবতা হলো দুনিয়া জুড়ে মুসলমান এক উম্মত আর কাফেরদের এবং তাদের এজেন্টদের প্রচেষ্টা হলো মুসলমানদেরকে তাদের টেনে দেওয়া লাইনের ভেতরেই সীমাবদ্ধ করে রাখা, আল্লাহর ইবাদতের জায়গায় দেশ ও রাষ্ট্রের প্রতিমার সামনে ঝুঁকিয়ে রাখা, যাতে জুলুম ও কুফরের এই বিজয় টিকে থাকে। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ, এটা আল্লাহর নেয়ামত এবং জিহাদি আন্দোলনের বরকত যে, মুসলমান আজ উম্মত হয়ে দেশ ও রাষ্ট্রের এই প্রতিমাকে পদদলিত করে কুফরের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আজ কাশ্মীর জিহাদ যে দিকে অগ্রসর হচ্ছে তাতে আপনার কি মনে হয় এটা আমেরিকা এবং এর মিত্রদের জন্য কষ্টের কারণ হতে পারে?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমেরিকা এবং এর মিত্রদের তো নিশ্চিতভাবে কষ্ট হচ্ছে এবং হওয়াও উচিত। এই কষ্টের কারণ কাশ্মীরি জনসাধারণের এমন জিহাদের দিকে অগ্রসর হওয়া, যা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রভাবমুক্ত এবং যার উদ্দেশ্য শরীয়ত ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা। এমন জিহাদ না আমেরিকার পছন্দ, আর না পাকিস্তানের আর না ভারতের। অর্থাৎ ভারতও যখন ‘জিহাদ শেষ করতে পারবে না’ এটা বুঝতে পারে, তখন এর জন্য শেষ উপায় হলো নিয়ন্ত্রিত জিহাদ, যাতে যখন চায় আমেরিকা ও পাকিস্তানের মাধ্যমে একে দুর্বল করে দিতে পারে।
সত্য এটাই যে, মাজলুমদের নুসরত এবং শরীয়তের শাসনের জন্য জিহাদ আল-কায়েদার নামে হোক অথবা অন্য কোনো নামে, এমন জিহাদ যেহেতু মুসলমানদের স্বাধীনতা, সম্মান এবং প্রতিরক্ষা দেয়; এজন্য সব শয়তানই সম্মিলিতভাবে এর রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা দিবে … কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ কাশ্মীরি মুসলমান আজ বন্ধু ও শত্রু চিনে। তাঁরা স্বাধীনতার পথ আজ জেনে গেছে এবং এখন তাঁরা হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত থেকে সরে অন্য কোনো ঠিকানায় ইনশাআল্লাহ যাবে না।
এখানে আমি যারা আমেরিকার ভয় দেখায় তাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, আমেরিকা কোন তীর নিক্ষেপ করেছে, কোন দুনিয়াতে জিহাদ শেষ করেছে যে, এখন কাশ্মীরি মুসলমানদেরকেও চুপ করিয়ে দেবে? আমেরিকা যেখানে এসেছে, উম্মতের মুজাহিদরা পূর্ব ও পশ্চিম থেকে তার পিছনে ধাওয়া করেছে এবং এরপর আলহামদুলিল্লাহ মুজাহিদরা তো ময়দানে আছে কিন্তু আমেরিকা পালাচ্ছে। আল্লাহর অনুগ্রহে আজ উম্মত এবং এর মুজাহিদেরা বিজয়ী, অন্যদিকে আমেরিকা এবং তার পূজারিরা হতাশা ও উদ্বেগের উপর দাঁড়িয়ে আছে।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ এখানে কাশ্মীরি মুজাহিদদের জন্য আপনি কি কোনো বার্তা দিতে চান?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীরের আমাদের মুজাহিদ ভাইয়েরা, আল্লাহর কসম, আপনাদের প্রত্যেক মুজাহিদ ভাই আমাদের প্রিয় ভাই ও ভালোবাসার পাত্র, জামাআত ও সংগঠনের রাস্তা থেকে ঈমান ও ইসলামের রাস্তা বেশি শক্তিশালী, বেশি গুরুত্বপূর্ণ! এই শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার কারণে আজ আপনাদের উদ্দেশ্যে বলছি!
আমাদের এই অনুরোধ কাশ্মীরের প্রত্যেক নেতা-কর্মী, সব মুজাহিদ এবং সব বয়োজ্যেষ্ঠের উদ্দেশ্যে, আপনারা একে খোরাসান থেকে আপনাদের ভাইদের ডাক মনে করুন! এটাকে কাশ্মীরি শহীদদের পক্ষ থেকে আমানতও মনে করুন, যারা কাশ্মীরের স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে এখানে খোরাসানে শায়িত আছেন।
প্রথম অনুরোধ এটাই … মুশরিক হিন্দুদের বিরুদ্ধে এই জিহাদ একটি অত্যন্ত বড় ইবাদত! এই বড় ইবাদত ও বড় সৌভাগ্যের জন্য আপনাদেরকে মোবারকবাদ! আবেদন হলো, আমরা এই মোবারক জিহাদে যেন শরীয়তকে দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরে সামনে অগ্রসর হই। আমাদের উদ্দেশ্য, পদ্ধতি, সফর ও ঠিকানা, শুরু থেকে শেষ—সব শরীয়ত মোতাবেক যেন হয়! শরীয়ত আল্লাহর রাস্তা, আল্লাহর এই রাস্তার উপর যেন আমরা চলি এবং আল্লাহর এই শরীয়তকে শাসক বানানোর জন্য যেন আমরা পা ফেলি! … এটাই জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ! রাসূল (ﷺ) এর বাণী –
مَنْ قَاتَلَ لِتَكُونَ كَلِمَةُ اللَّهِ هِيَ الْعُلْيَا فَهُوَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ
“যে ব্যক্তি আল্লাহর কালিমাকে সুউচ্চ করার জন্য যুদ্ধ করে, সেই যুদ্ধই ফী সাবীলিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায়।” [সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৪৬৩৬]
এর মাধ্যমেই প্রত্যেক জুলুম ধ্বংস হবে, জুলুম জুলুমের মাধ্যমে ধ্বংস হয় না। বরং জুলুমের ধ্বংস হয় ন্যায়পরায়ণতার মাধ্যমে; আর ন্যায়পরায়ণতা হলো শরীয়ত। শরীয়তের বিপরীতে প্রত্যেক ন্যায়পরায়ণতা আসলে জুলুম! কাজেই শরীয়তের শাসনের জন্য লড়াই করুন! এই অত্যাচারী শাসনব্যবস্থার বিপরীতে খেলাফত প্রতিষ্ঠার বরকতময় উদ্দেশ্য নিজেদের সামনে রাখুন! এর মাধ্যমেই আল্লাহর সাহায্য আসবে! আলহামদুলিল্লাহ, এটাই আমাদের বুরহান ওয়ানী (রহিমাহুল্লাহ)-এর রাস্তা ছিল এবং এটাই এই বৈশ্বিক জিহাদি আন্দোলনের দাওয়াত ও মানহাজ।[3]
দ্বিতীয়ত, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর নেয়ামত যে, কাশ্মীরের স্বাধীনতার আন্দোলন আজ নিজ পায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আজ এই জিহাদি আন্দোলন প্রতিবেশী কোনো গোয়েন্দা সংস্থা অথবা সামরিক বাহিনীর হাতে নেই ইনশাআল্লাহ! গোয়েন্দা সংস্থা এবং সামরিক বাহিনীর প্রতারণায় আপনারা দংশিত। আপনাদের ঈমানী গভীরতার উপর আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও আপনারা নিজেদের এই বরকতময় জিহাদকে এই প্রতারকদের উপর নির্ভরশীল এবং এদের অধীন বানাবেন না। রাসূল (ﷺ) এর বাণী –
لاَ يُلْدَغُ الْمُؤْمِنُ مِنْ جُحْرٍ وَاحِدٍ مَرَّتَيْنِ.
অর্থাৎ “মুমিন একই গর্ত থেকে একাধিকবার দংশিত হয় না।”[4] [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১৩৩]
এই সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাশ্মীরে আমাদের এই বরকতময় জিহাদকে নিজেদের কর্তৃত্বাধীন দেখতে চায়। কিন্তু আপনারা আপনাদের এই কাফেলাকে শুধু আল্লাহর গোলাম বানান! আপনাদের জিহাদ, আপনাদের ইখলাসের উপর দাঁড়িয়ে থাকা এই মহান আন্দোলন এবং আপনাদের কুরবানীর এই লম্বা ইতিহাস এদের কাছে খেলা। এটা এদের কাছে রাজনীতি এবং নোংরা ব্যবসা! এসব এদের নিজেদের স্বার্থের কয়েদি; লোভ ও স্বার্থের দাস। আল্লাহর কসম! এরা আপনাদের কুরবানীকে নিজেদের ফায়দা ও স্বার্থের বলি বানাতে পারে। এরা বদমায়েশদের হাতে আপনাদের কুরবানী তো বেঁচে দিতে পারে। জালেমদের মোকাবেলায় এরা আপনাদের প্রতিরক্ষা করবে? এটা অসম্ভব।
এজন্য, আমাদের আবেদন হলো, আল্লাহর পরে শুধু আল্লাহর মুমিন বান্দাদেরকে আপনারা আপনাদের আনসার মনে করুন! তাঁদের প্রতি আস্থা রাখুন! ঐসব মুমিন বান্দা- যারা বেতন-ভাতা, প্লট, ক্যারিয়ারের উন্নতি এবং কোনো জাগতিক স্বার্থের জন্য লড়াই করে না! বরং তাঁরা আল্লাহর জন্য ভালোবাসে, আল্লাহর জন্য ঘৃণা করে, তাঁরা আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব করে, আল্লাহর জন্য শত্রুতা করে এবং তাঁরা আল্লাহর সামনেই জবাবদিহিতার ভয়ে নিজেদের কাশ্মীরি মাজলুম মা, বোন ও ভাইদের সাহায্য করা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে। আল্লাহ তাআলার বাণী –
وَالْمُؤْمِنُونَ وَالْمُؤْمِنَاتُ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ
অর্থাৎ “মুমিন ও মুমিনাহ একে অপরের বন্ধু ও রক্ষক হয়ে থাকে” [সূরা তাওবা, ৯:৭১]
আর এর উল্টা দেখুন –
وَإِنَّ الظَّالِمِينَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَاللَّهُ وَلِيُّ الْمُتَّقِينَ
অর্থাৎ “জালেমরা একে অন্যের আউলিয়া (বন্ধু) আর আল্লাহ মুত্তাকীদের আউলিয়া।” [সূরা জাসিয়াহ, ৪৫:১৯]
মুমিন কাশ্মীরের ভেতরে থাকুক, পাকিস্তান, ভারত অথবা আফগানিস্তানের ভেতর থাকুক, সে আপনাদের বন্ধু; সে আপনাদের ব্যথা অনুভব করে! আর জালেম পাকিস্তানের ভেতর হোক, অথবা ভারত বা আফগানিস্তানের ভেতর, সে জালেম; সে আপনাদের ব্যথা কী ই বা বুঝবে না … সে স্বার্থপর, সে যেকোনো সময় আর্তনাদপূর্ণ কঠিন অবস্থায় আপনাদেরকে ছেড়ে চলে যেতে পারে। সে আপনাদের পিঠে ছুরি বসিয়ে দিতে পারে এবং কাল কোনো না কোনো সুযোগে আপনাদের সমস্ত গোপনীয়তা নিজেদের দুনিয়াবি স্বার্থের জন্য আপনাদের শত্রুদের হাতে তুলে দিতে পারে … বরং যেকোনো সময় সে আপনাদের প্রকাশ্য শত্রুতেও পরিণত হতে পারে!
দেখুন আল্লাহর মুমিন বান্দারা খোরাসান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারত—এই পুরো ভূখণ্ডে আলহামদুলিল্লাহ অসংখ্য, এরাই আপনাদের আনসার হবেন, এরাই ইনশাআল্লাহ জালেম ভারতের হাত কাটবেন! আর এঁদের সাথে আপনাদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া, তাঁদেরকে আপনাদের সাহায্যের জন্য দাঁড় করানো এবং দাঁড় করিয়ে রাখা … আমরা … আল-কায়েদা উপমহাদেশের আপনাদের ভাইয়েরা … নিজেদের দায়িত্ব মনে করি … আল্লাহ আমাদের এই কাজের তাওফীক দিন এবং আল্লাহ আমাদেরকে সত্যের জন্য একে অপরের বন্ধু ও সাহায্যকারী বানিয়ে দিন!
আবার দেখুন আমাদের মুজাহিদ ভাইয়েরা! জিহাদি আন্দোলন এভাবে প্রতিষ্ঠা করা অবশ্যই কঠিন, কিন্তু অবশ্যই অসম্ভব নয়। আর এটাও বাস্তবতা যে, জিহাদি আন্দোলনের জন্য আমরা যদি এই পন্থা অবলম্বন না করি, এই জালেম এবং দীনের শত্রু পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী থেকে রক্ষা না করি, তাহলে এই অন্ধকার রাত শেষ হবে না, আমরা গোলকধাঁধার মাঝেই ঘুরতে থাকবো। স্রোতেই ভাসতে থাকবো, রক্ত প্রবাহিত করতে থাকবো কিন্তু গন্তব্য এবং সফলতা … কখনও পাওয়া যাবে না, এজন্য আল্লাহর উপর ভরসা করা জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ وَكِيلًا …
অর্থাৎ “আপনি আল্লাহর উপর ভরসা করুন। কার্যনির্বাহীরূপে আল্লাহই যথেষ্ট।” [সূরা আহযাব, ৩৩:৪৮]
ومن يتوكل على الله فهو حسبه
অর্থাৎ “যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট” [সূরা তালাক, ৬৫:০৩]
وَكَفَى بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا
অর্থাৎ “আপনার জন্যে আপনার পালনকর্তা পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে যথেষ্ট” [সূরা ফুরকান ২৫:৩১]
স্ট্র্যাটেজি বলার জন্য এবং পথ দেখানোর জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। এজন্য আমরা যেন আল্লাহর উপর ভরসা করি, জিহাদি আন্দোলনের স্বাধীনতা, আত্মনির্ভরশীলতা এবং শরীয়তসম্মত রাস্তার উপর প্রতিষ্ঠিত রাখার জন্য সামনে এগিয়ে যাই, নিঃসন্দেহে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সাহায্য করবেন…[5]
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনে জনতার ভূমিকা আজ সবার সামনে, এই ব্যাপারে আপনি কি কিছু বলতে চান?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীরি জনতার ভূমিকা পুরো উম্মতের জন্য অনুসরণীয়, আজ তাদের এই বরকতময় জিহাদে পুরোপুরি অবদান আছে, আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই — আপনাদের মুজাহিদদের রক্ষার জন্য বিক্ষোভ মিছিল করা, লাঠি, পাথর এবং গুলি পর্যন্ত খাওয়া, আপনাদের দেহকে ঢাল বানিয়ে মুজাহিদদের রক্ষা করা, সৈন্যদের উপর বৃষ্টির মতো পাথর মারা, একইভাবে মুজাহিদদের খাবার খাওয়ানো, আশ্রয় দেওয়া এবং দোয়া দেওয়া — এসব জিহাদের নুসরত, মহান ইবাদত। এই রাস্তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকুন। আজ আপনারা যে কষ্ট করছেন, যে কুরবানী দিচ্ছেন, তার প্রতিদান আপনাদের রবের কাছে পাবেন। এখানে আমি মুজাহিদদের কাছেও আবেদন করবো যে, এই মহান জনতার হেফাযত এবং কল্যাণকামিতা আমাদের উপর ফরয। এজন্য, তাঁদের হেফাযতকে নিশ্চিত করুন, তাঁদের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য সব রকম জায়েয পন্থা অবলম্বন করুন এবং এমন সব পদক্ষেপ থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকুন যার কারণে জনতার ক্ষতি হয়। মুসলিম জনতার এই সহযোগিতা অত্যন্ত বড় নেয়ামত; এটা ছাড়া কোনো জিহাদি আন্দোলন চলতে পারে না। এই সহযোগিতার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার শুকরিয়া আদায় করুন এবং জনতার প্রতিও সবসময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। আল্লাহ আপনাদের সাথে এই মুজাহিদ জনতার ভালোবাসা ও আস্থার সম্পর্ক সবসময় প্রতিষ্ঠিত রাখুন।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ কাশ্মীরে যেসব মুজাহিদ ভাই ‘হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত’-এর শ্লোগান তুলেছেন, সেই ভাইদের জন্য আপনি কি কোনো বিশেষ বার্তা দিতে চান?
উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ কাশ্মীর জিহাদের মহান নেতা শহীদ আফজাল গুরু (রহিমাহুল্লাহ) এবং তরুণ নেতা শহীদ বুরহান ওয়ানী (রহিমাহুল্লাহ)-এর হে উত্তরাধিকারীরা, আল্লাহর কসম, আপনারা আমাদের প্রাণের স্পন্দন এবং আশার কেন্দ্রস্থল। আল্লাহ, আপনি এঁদের সাহায্য করুন, এঁদের অন্তরকে আপনার নূর দিয়ে আলোকিত করুন এবং এঁদেরকে ধৈর্য্য ও দৃঢ়তা দান করুন, আমীন।
আমি আমার এই ভাইদের কাছে আবেদন করছি, অবশ্যই আমি নিজেকে আপনাদের মতো মহান ভাইদের উদ্দেশ্যে নসীহত করার মোটেও যোগ্য মনে করি না, কিন্তু যেহেতু একে অপরের কল্যাণ কামনা ওয়াজিব, এজন্য আপনাদের সামনে নসীহতের জায়গা থেকে কিছু জানা জিনিস মনে করিয়ে দিতে চাচ্ছি!
প্রিয় ভাইয়েরা, উপমহাদেশ বরং পুরো উম্মতের মুজাহিদদের এবং মাজলুম মুসলমানদের দৃষ্টি আপনাদের উপর, আপনাদের জিহাদের উপর এবং আপনাদের এই বরকতপূর্ণ শ্লোগান ‘হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত’-র উপর। এই শ্লোগানকে বুলন্দ করা যেমন অনেক বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার, তেমনি এটা অনেক ভারি দায়িত্বও বটে। কারণ, এই রাস্তা শরীয়তের অনুসরণ দিয়ে শুরু হয়, শরীয়তের অনুসরণের সাথে সাথে চলতে থাকে এবং শরীয়ত প্রতিষ্ঠা অথবা শহীদী মৃত্যুর মাধ্যমে শেষ হয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের এই শ্লোগানের হক আদায় করার তাওফীক দান করুন।
সুতরাং, প্রিয় ভাইয়েরা, কাশ্মীরের ভেতরে আমরা মুমিনদের এই গুণের বাস্তবরূপ হয়ে যাই “اشداء علی الکفار” (তাঁরা কাফেরদের জন্য অত্যন্ত কঠোর) “رحماء بینھم” (পরস্পরের প্রতি অত্যন্ত নম্র)। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর প্রতি চরম পর্যায়ের কঠোরতা এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ফরয। অন্যদিকে মুসলমানদের প্রতি নম্র ও স্নেহশীল হওয়া আবশ্যক … আজ আপনাদের সামনে দুইটি ক্ষেত্র আছে, একটি মুশরিক হিন্দুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও কিতালের ক্ষেত্র ; অন্যটি হলো কাশ্মীরে থাকা অন্য মুজাহিদদেরকে, সব কাশ্মীরি মুসলমানকে ‘হয়তো শরীয়ত নয়তো শাহাদাত’-এর এই মহান মানহাজের দিকে ডাকা, তাদেরকে এর উপর প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্র। নিজেদের পারস্পরিক সহযোগিতার এই ক্ষেত্র দাওয়াতি ক্ষেত্র। আর এতে অনেক বেশি নম্রতা, ভালোবাসা, কল্যাণকামিতা এবং ধৈর্যের প্রয়োজন। আপনাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা—আপনারা কিতাল ও দাওয়াতের এই দুইটি ভিন্ন কর্মক্ষেত্রের দিকে—যে দুইটির প্রয়োজনীয়তা ও চর্চার ধরন সম্পূর্ণ ভিন্ন—খেয়াল রাখবেন। আপনারা কাশ্মীরে থাকা প্রত্যেক মুজাহিদ, প্রত্যেক আলেম এবং প্রত্যেক এমন নেতাকে সম্মান করবেন, যাদের কাশ্মীরের স্বাধীনতার এই মহান আন্দোলনে অবদান আছে। কাশ্মীরের মুসলমানরা সবাই আমাদের ভাই, হোক সে আপনাদের জামাআতের সদস্য অথবা অন্য কোনো দীনি জামাআতের। চিন্তা-ভাবনা ও মতামতে আপনাদের সাথে মিল থাকুক বা না থাকুক, প্রত্যেক অবস্থায় এঁরা আমাদের ভাই। সুতরাং, তাঁদেরকে আমরা যেন তাড়াহুড়া অথবা কোনো ভুলের মাধ্যমে নিজেদের থেকে দূরে সরিয়ে না দিই। আজ কাছের ও দূরের সব শত্রুদের পরিপূর্ণ ষড়যন্ত্র হলো তারা আপনাদেরকে মুসলিম জনসাধারণ ও অন্য মুজাহিদ ভাইদের থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া, যাতে আপনাদের বরকতপূর্ণ আওয়াজ, বরকতপূর্ণ মানহাজ শুরুতেই মুখ থুবরে পড়ে। তাই, আপনাদের কাছে প্রত্যাশা হলো আপনারা প্রত্যেক এমন ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিবেন। আপনারা জানেন যে, আমরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে জিহাদ ও শরীয়ত প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রামে শুধু তখনই সফল হতে পারবো, সাংগঠনিক ও দলীয় সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে সব কাশ্মীরি মুজাহিদ ও সব মুসলমানের সাথে ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার সম্পর্ক রাখতে পারবো। আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জতের বাণীঃ
وَأَطِيعُوا اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَا تَنَازَعُوا فَتَفْشَلُوا وَتَذْهَبَ رِيحُكُمْ وَاصْبِرُوا إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
অর্থাৎ “আর আল্লাহ তাআলার নির্দেশ মান্য কর এবং তাঁর রাসূলের। তাছাড়া তোমরা পরস্পরে বিবাদে লিপ্ত হইও না। যদি তা করো, তবে তোমরা ব্যর্থ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব চলে যাবে। আর তোমরা ধৈর্যধারণ কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা রয়েছেন ধৈর্যশীলদের সাথে।”
সুতরাং, এই সব বিষয় যদি আমরা আঁকড়ে ধরতে পারি তবেই আল্লাহ খুশি হবেন, আল্লাহর সাহায্য আসবে এবং নিজ মাজলুম জাতির দুঃখ ও দুশ্চিন্তারও আরোগ্য হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আপনাদের পথ দেখান এবং সাহায্য করুন। কবুল করুন হে রাব্বুল আলামীন;
، أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكُم، وَأَمَانَتَكُم، وَخَوَاتِيمَ أَعْمَالِكُم…
আল্লাহ আপনাদের উত্তম প্রতিদান দিন।
আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমীন। দর্শকবৃন্দ এখানে এই পর্বের সমাপ্তি ঘোষণা করছি। ইনশাআল্লাহ পরবর্তী পর্বে পাকিস্তানের ভেতরে জিহাদের বিষয়ে কথা হবে। ঐ পর্বে চেষ্টা হবে পাকিস্তান জিহাদের প্রকৃত বাস্তবতার উপর কথা বলার এবং এর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সামনে নিয়ে আসার। সেই সময় পর্যন্ত অনুমতি চাইছি।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
[1] শহীদ শায়খ আফজাল গুরু রহিমাহুল্লাহ কাশ্মীর জিহাদের মহান নেতা ও রাহবার ছিলেন। তিনি কাশ্মীরে একটি জিহাদী জামাতের সাথে যুক্ত ছিলেন। অতঃপর ইন্ডিয়ান পার্লামেন্টে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার হন এবং তাঁকে শহীদ করে দেয়া হয়। তিনি বন্দি অবস্থায় ‘আয়না’ নামে বই লিখেছেন, যা তার শাহাদাতের পর আল্লাহর অনুগ্রহে প্রকাশিত হয়েছে। কাশ্মীর জিহাদকে শরীয়তের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করা এবং এমন পন্থা থেকে বাঁচানো শায়খের আকাঙ্ক্ষা ছিল, যার দ্বারা জিহাদের ক্ষতি হতে পারে এবং মহান কাশ্মীরি জাতির আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে। এখানে আমরা তাঁর উক্ত গ্রন্থ থেকে কয়েকটি উদ্ধৃতি তুলে ধরবো। এর দ্বারা আমরা দেখাতে চাই, যেই পথ ও পন্থার দিকে মুজাহিদরা তাঁদের ভাইদেরকে আহ্বান করে যাচ্ছেন, তা কোনো আজনবি নবউদ্ভাবিত বিষয় নয়। এটা এমন প্রত্যেক মুজাহিদের হৃদয়ের কথা, যিনি জিহাদী আন্দোলনকে লক্ষ্যস্থিত, সফল এবং মুজাহিদদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত দেখতে চান। শহীদ আফজাল গুরু রহিমাহুল্লাহ কাশ্মীর উপত্যকার সন্তান। তিনি এখানে লালিত-পালিত হয়েছেন, বেড়ে উঠেছেন। স্বজাতির ব্যথা অনুভব করেছেন। সেই ব্যথা বেদনার প্রতিকার সাধনকে নিজের জীবনের উদ্দেশ্য বানিয়েছেন। তাঁর সেই মহান উদ্দেশ্য ও একনিষ্ঠতার ব্যাপারে একদিকে যেমন তাঁর প্রবাহিত রক্ত সাক্ষ্য দিচ্ছে অপরদিকে তাঁর কিতাবের প্রতিটি লাইন কাশ্মীরের মুসলমানদের জখমের এমন উপশম প্রস্তাব করছে, যা শরীয়তের দৃষ্টিতে, বুদ্ধিজাত যুক্তির বিচারে এবং ঐতিহাসিক সাক্ষ্য প্রমাণের দিক থেকে বাস্তবসম্মত উপশম ও চিকিৎসা। কোনোভাবেই এই চিকিৎসা-পন্থা আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। শায়খ রহিমাহুল্লাহ আয়না নামক তাঁর কিতাবে লিখেছেন:
“জাতিসংঘ, আমেরিকা এবং তাদের কেনা গোলাম সংস্থাগুলো জিহাদ ও আল্লাহর দুশমন। আমরা যদি আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আল্লাহর শত্রুদের দিকে চেয়ে থাকি, তাহলে আল্লাহর সাহায্য কিভাবে আমাদের কাছে আসবে? বরং তার উল্টোটা হবে। আল্লাহ না করুন! আল্লাহর গজব, ক্রোধ ও আযাবের উপযুক্ত যদি আমরা হয়ে যাই তখন কি হবে?! ইরাক থেকে নিয়ে আফগানিস্তান পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ মুসলমান হত্যাকারী গোষ্ঠী কাশ্মীরের মুসলমানদের ত্রাণকর্তা কেমন করে হতে পারে? এ বিষয়টা বোঝার ভাবার এবং গভীরভাবে উপলব্ধি করার প্রয়োজন রয়েছে। বাস্তবতা থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখলে আমরা আরো বেশি দাসত্ব ও বিপথচারিতার অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবো।”
[2] মহান নেতা শায়খ আফজাল গুরু রহিমাহুল্লাহ বলেছেন:
“আমাদের গোলামি ও অবমাননাকর লাঞ্ছনাকর জীবন থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হলো জিহাদ। সেটা এমন জিহাদ, যার বিধি বিধান, নীতি ফর্মুলা, আইন কানুন, কলাকৌশল, লক্ষ্য উদ্দেশ্য সবকিছুকে শুধুমাত্র আল-কুরআন, সুন্নাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের জীবন আচার থেকে গ্রহণ করতে হবে। নাম সর্বস্ব যে জিহাদের লাগাম জাতিসংঘ অথবা আমেরিকার হাতে, এমন জিহাদ আসলে কোনো জিহাদ নয় বরং তা জিহাদের অবমাননা। জিহাদের আইন হলো কুরআন সুন্নাহ। জিহাদের জন্য ঈমানদার নেতা ও নেতৃত্ব থাকা উচিত। জিহাদের জন্য ঈমানদার মুজাহিদ হতে হবে, হওয়া উচিত।”
[3] শহীদ বুরহান ওয়ানি রহিমাহুল্লাহ এক অডিও বয়ানে নিজের জিহাদের উদ্দেশ্য কিছুটা এভাবে ব্যক্ত করেছেন:
“নিজের ঘর বাড়ি ত্যাগ করে, মা বোন ও প্রিয় মানুষদেরকে ছেড়ে, দুনিয়ার সমস্ত আরাম-আয়েশ এবং নিজের ভবিষ্যৎ কুরবানী করে এই ময়দানে এজন্যই আসতে হয়েছে, আমার কওমের মা বোনদের ইজ্জত-আব্রু যেন নিরাপদ থাকে, আমার এই কাশ্মীরে যেন খেলাফতের শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং আমরা কাশ্মীরে তো বটেই গোটা দুনিয়াতে যেন খেলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করে তবেই ক্ষান্ত হই।”
[4] শহীদ শায়খ আফজাল গুরু রহিমাহুল্লাহ বলেছেন:
“আই এস আই এবং পাকিস্তানি শাসকরা কার্যতভাবে আমেরিকার গোলাম। প্রতিরোধ আন্দোলনে (কাশ্মীর জিহাদে) তাদের উপর নির্ভর করা জিহাদের অবমাননার নামান্তর। জিহাদ নিজস্ব চাহিদা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। জিহাদের স্বতন্ত্র নীতিমালা, মূলনীতি সমষ্টি, শর্ত সমূহ, বিধি-বিধান, আইন কানুন ও কলাকৌশল রয়েছে যার প্রধান একমাত্র উৎস হলো আল্লাহর দীন। এগুলো অনুযায়ী জিহাদ পরিচালনা করার দ্বারা জিহাদের কাঙ্ক্ষিত সুফল দেখা দেয়। জিহাদ অস্বীকার করা অনেক বড়ো গুনাহ। কিন্তু জিহাদের অবমাননা ও অসম্মান জ্ঞাপন তার থেকে বড়ো গুনাহের বিষয়। দয়াশীল ক্ষমাশীল আল্লাহর কাছে আমাদের ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত” [আয়না, পৃষ্ঠা নং- ১০০]
[5] শহীদ আফজাল গুরু রহিমাহুল্লাহ লিখেছেন:
“কাশ্মীরের জিহাদকে এখন এমন সব উপায় অবলম্বন চিন্তাধারা কর্ম পন্থা কৌশল ইত্যাদি থেকে পৃথক করতে হবে, যা এই পবিত্র ফরজের শান মোতাবেক নয়। অপবিত্র, ইসলাম বহির্ভূত, ফিতরত বিরুদ্ধ উপায় অবলম্বন এবং কর্মপন্থার দ্বারা শুধুমাত্র জিহাদের ফলাফল ও কার্যকারিতাই নষ্ট হয় না বরং এগুলো জিহাদ ও দীনের অবমাননাও বটে, যা অনেক বড়ো গুনাহ। এর দ্বারা উম্মত লাঞ্ছিত হয়। এই অবমাননা যেতে যেতে এক পর্যায়ে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এমন কাজ রিসালাত, নবুয়ত এবং কুরআনের অবমাননার শামিল। আমাদের ভেবে দেখা উচিত, দীন ও জিহাদের পতাকা উত্তোলনকারীদের উপরে কত বড়ো, কতটা স্পর্শকাতর দায়িত্ব অর্পিত হচ্ছে। দীনের মান রক্ষা করা, শান শওকত বড়ত্ব ধরে রাখা, মর্যাদা হেফাজত করা, মাহাত্ম্য প্রকাশ করা—এ বিষয়গুলো তো সত্যপন্থী উলামায়ে কেরাম, আহলে তাকওয়া বা আল্লাহ ভীরু, জ্ঞানী, মরদে মুজাহিদ বান্দাগণই জানবে। এগুলো আমেরিকা ও দাজ্জালের গোলাম, তাদের ভাড়াটে সৈনিক ও এজেন্সির লোকেরা কিভাবে জানবে? পাকিস্তানি মুজাহিদদের একনিষ্ঠতা, নিজেদের চেয়ে অন্যদেরকে প্রাধান্য দেয়া, আত্মত্যাগ ইত্যাদি বিষয়গুলো এবং পাকিস্তানি ১০ হাজারের অধিক শহীদের পবিত্র রক্ত কাশ্মীরের শীতল ভূমিকে এক আধ্যাত্মিক বিপ্লবের দ্বারা উষ্ণ করে দিয়েছে। এই পবিত্র রক্তের সাথে সততা বিশ্বস্ততা এভাবেই রক্ষা হতে পারে যে, কাশ্মীরের জিহাদকে এজেন্সি সমূহ এবং পাকিস্তান সরকারের পলিসিগুলো থেকে পৃথক করতে হবে।”
*****************************************************
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent
*****************************************************