আন-নাসর মিডিয়ানির্বাচিতনির্বাচিত প্রকাশনাবার্তা ও বিবৃতি [আন নাসর]বাংলা প্রকাশনা

pdf/doc উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার ।। আমরা কি চাই! ।। ১ম পর্ব ।।

مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media

تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents

الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation

بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:

تحریک جہاد برصغیر…حقیقت و حقانیت! – الحوار الخاص مع استاد اسامه محمود حفظه الله

উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার (প্রথম পর্ব)

আমরা কি চাই?
উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!

Exclusive Interview with Ustad Usama Mahmud Hafizahullah (Part 1)

What Do We Want?
Jihadi Movements Based in the Subcontinent – The Real Reality!

pdf/doc উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার ।। আমরা কি চাই! ।। ১ম পর্ব ।।

 

 

للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/Amra_ki_chai_porbo_1
লিংক-২ : https://mediagram.me/d5a0c6c834dcbda1
লিংক-৩ : https://noteshare.id/1hDI8Ob
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20241224090452/https://justpaste.it/Amra_ki_chai_porbo_1
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20241224090554/https://mediagram.me/d5a0c6c834dcbda1
লিংক-৬ : https://web.archive.org/web/20241224090943/https://noteshare.id/1hDI8Ob

 

روابط بي دي اب
PDF (594 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৫৯৪ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/7s74YC6Xtbgk92L
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/Acrm7jzxR2tKjjL
লিংক-৩ : https://archive.org/download/amra-ki-cai-part-1/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part%201.pdf
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/0y3ad74dee2e7f91e456bb3bb95d27585acfd
লিংক-৫ : https://secure.ue.internxt.com/d/sh/file/32611f8d-c77b-4dcf-b77b-91a70f127ccb/88856974fe0b676804fc1413b981548caa447c6248266b493ee4abe6c09b99f1
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/1h1o42bd88i4dx6/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part+1.pdf/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/8z0GBYzD#TySlKW4FsBeohnqBFCgfGtjnfTpzDSFLskqHTLGsw0Y
লিংক-৮: https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=d1m3q3d9l2

 

روابط ورد
Word (325 KB)
ওয়ার্ড [৩২৫ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/BRTyPCAwpKkjLT7
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/4qL7ae7ESLwcxRE
লিংক-৩ : https://archive.org/download/amra-ki-cai-part-1/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part%201.docx
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/0y3adff168d7560c34a44b98abc00442be297
লিংক-৫ : https://secure.internxt.com/d/sh/file/b231ab6d-9d5a-4af3-8c75-eec2045e3f60/9406100c3018cbaaec560c5ea7922c196b1090a0d591d720c260fa707f8a0352
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/l2xjcvau9dgkumr/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part+1.docx/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/U7FQSIjY#u0WhCwriyZmvm4t5f06tki2ial45x8MrqkgVu7L-uTw
লিংক-৮ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=l8v3t4f2i3

 

روابط الغلاف- ١
book Cover [511 KB]
বুক কভার ডাউনলোড করুন [৫১১ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/pWKWxRrAESrRi2x
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/gfLqmctSqsGkpE6
লিংক-৩ : https://archive.org/download/amra-ki-cai-part-1/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part%201%20Cover.jpg
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/0y3ada977b87d68544eaa9487130f83668ecb
লিংক-৫ : https://secure.ue.internxt.com/d/sh/file/031edc00-a0d1-4912-9b6a-f9f0b41fb3db/9e5b5a7652eb52ead6a581e534931ca6e58e955b2ab5798349f097bf84088106
লিংক-৫ : https://www.mediafire.com/file/yk5a4w13wg3yrex/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part+1+Cover.jpg/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/YycnBa7K#C3bXgdTI2YgNFaKazRgDtwp-YGXRHtNfCSJlYhp06GA
https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=t0s6z2a3c8

روابط الغلاف- ٢
Banner [224 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [২২৪ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/mDDkqkt5ieQkeSe
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/nypXRLSzQGae6Hj
লিংক-৩ : https://archive.org/download/amra-ki-cai-part-1/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part%201%20Web.jpg
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/0y3ad5e8b8c48405f4739a15096ed97090ae6
লিংক-৫ : https://secure.internxt.com/d/sh/file/ab25f71f-f0af-4967-b0ba-42281c896388/c7ec10474dbcdbc5c028b4e06f9cff035a17238846847eb5d14bf7b3562c9811
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/5sngur5hetzy3op/UstadOsamaMahmudSakkhatkar-Part+1+Web.jpg/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/ZylHlKDL#RDU45_Ceh5SIskeqSrUbybGqZJEdBLnIEH42Qgqaq0s
লিংক-৮ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=r0o0f7s4j6

 

********************************

সংশোধিত সংস্করণ

 

উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার

(প্রথম পর্ব)

  

আমরা কি চাই?

উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!

 

অনুবাদ

আন নাসর অনুবাদ টিম

উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার (প্রথম পর্ব)

আমরা কি চাই?

উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা!

 

অনুবাদক: আন নাসর অনুবাদ টিম

 

প্রথম প্রকাশ: যুলহিজ্জাহ ১৪৩৮ হি. | নভেম্বর ২০১৭ ইং

দ্বিতীয় প্রকাশ: জুমাদাল আখিরাহ ১৪৪৬ হি. | ডিসেম্বর ২০২৪ ইং

স্বত্ব: সকল মুসলিমের জন্য সংরক্ষিত

প্রকাশক: আন নাসর মিডিয়া

 (আল কায়েদা উপমহাদেশ, বাংলাদেশ হালাকা)

যোগাযোগ

জিও নিউজ: https://talk.gnews.to/channel/an-nasr-media-or-mussh-alnsr

চারপওয়্যার:  https://chirpwire.net/nasrmedia

 

নোট: এই প্রকাশনাটি ‘আল কায়েদা উপমহাদেশ’ এর অফিসিয়াল মিডিয়া আউটলেট ‘আস সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ’ কর্তৃক যুলহিজ্জাহ ১৪৩৮ হিজরি মোতাবেক নভেম্বর ২০১৭ ইং সালে প্রকাশিত উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার ‘তেহরিকে জিহাদ বাররে সাগির … হাকিকত ও হাক্কানিয়াত’ (تحریک جہاد برصغیر…حقیقت و حقانیت! – الحوار الخاص مع استاد اسامه محمود حفظه الله) এর প্রথম পর্বের বাংলা অনুবাদ। এটি আল কায়েদা উপমহাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া উইং ‘আস সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ’ থেকেই একই সাথে খোরাসান থেকে অনূদিত হয়েই প্রকাশিত হয়েছিল। এখন এটির সংশোধিত সংস্করণ ‘আন নাসর মিডিয়া’ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে।

স্বত্ব

এই বইয়ের স্বত্ব সকল মুসলিমের জন্য সংরক্ষিত। পুরো বই, বা কিছু অংশ অনলাইনে (পিডিএফ, ডক অথবা ইপাব সহ যে কোন উপায়ে) এবং অফলাইনে (প্রিন্ট অথবা ফটোকপি ইত্যাদি যে কোন উপায়ে) প্রকাশ করা, সংরক্ষণ করা অথবা বিক্রি করার অনুমতি রয়েছে। আমাদের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই। তবে শর্ত হল, কোন অবস্থাতেই বইয়ে কোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন, বিয়োজন করা যাবে না।

  • কর্তৃপক্ষ

 

উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ’র বিশেষ সাক্ষাৎকার

(প্রথম পর্ব)

  

আমরা কি চাই?

উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলন – প্রকৃত বাস্তবতা! 

অনুবাদ

আন নাসর অনুবাদ টিম

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। সম্মানিত দর্শকবৃন্দ, আজ আমরা জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ এর সাথে কথা বলার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। অনেক দিন থেকে এই সাক্ষাৎকারের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল; কিন্তু অনিবার্য কিছু পরিস্থিতির কারণে আমাদের এই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যেহেতু আল-কায়েদা উপমহাদেশের প্রতিষ্ঠার পরে এটা প্রথম সাক্ষাৎকার এজন্য অনেক প্রশ্ন জমে থাকায় এই বৈঠককে কয়েকটি পর্বে বিভক্ত করা হয়েছে। আজ এই ধারাবাহিক বৈঠকের প্রথম পর্ব। সম্মানিত উস্তাদ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আস-সাহাব উপমহাদেশের পক্ষ থেকে আপনাকে মুবারকবাদ জানাচ্ছি।

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ জাযাকুমুল্লাহু খায়রান। আল্লাহ আপনাদের উত্তম প্রতিদান  প্রদান করুন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আল-কায়েদা উপমহাদেশের মুখপাত্র হিসেবে আপনার সাথে অনেক বিষয়ে আলাপ করার প্রত্যাশা ছিল। জিহাদি আন্দোলন পুরো দুনিয়ায় প্রসারিত হয়েছে সেই সাথে এই উপমহাদেশও বর্তমানে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করছে। সুতরাং অনেক প্রশ্ন সাধারণ মানুষ এবং এই আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের অন্তরে জন্ম নিচ্ছে। আশা করি আপনার সঙ্গে কয়েক পর্বের বৈঠকে ইনশাআল্লাহ এসব প্রশ্নের উপর ফলপ্রসূ কথোপকথন সম্ভব হবে।

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আপনাদের, আস-সাহাব উপমহাদেশের ভাইদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি যে, আপনারা আমাকে এই সাক্ষাৎকারের সুযোগ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা এই বৈঠকগুলোকে আমাদের সবার জন্য এবং পুরো মুসলিম উম্মতের জন্য কল্যাণ এবং ফায়দার কারণ বানিয়ে দিন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমীন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আপনাদের মাধ্যমে এই সুযোগে আমি শ্রদ্ধাভাজন আমীরুল মুমিনীন শায়খুল হাদীস শায়খ হেবাতুল্লাহ হাফিযাহুল্লাহ এবং সম্মানিত আমীর শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহসহ দুনিয়ার সব জিহাদি নেতৃত্ব, মুজাহিদ এবং মুসলমান ভাইদের সেবায় আমার পক্ষ থেকে, সম্মানিত আমীর আসেম উমর হাফিযাহুল্লাহ এবং আমাদের জামাআতের পক্ষ থেকে সালাম জানাচ্ছি। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ এক বুনিয়াদি প্রশ্নের মাধ্যমে শুরু করছি। আল-কায়েদা উপমহাদেশের মূল দাওয়াত কী এবং কী উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য এটি গঠিত হয়েছে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমরা জুলুম ও ফাসাদের সমাপ্তি ঘটানোর জন্য, আল্লাহর দীনকে বিজয়ী করার জন্য এবং নিজেদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলাকে খুশি করার জন্য বের হয়েছি। আল্লাহর সন্তুষ্টি মুসলমানদের প্রতি কল্যাণকামিতার সাথে শর্তযুক্ত। এজন্য আপনি এটাকে এভাবেও বলতে পারেন যে, আমাদের লক্ষ্য মুসলমান জনসাধারণের পথপ্রদর্শন, তাঁদের প্রতিরক্ষা এবং তাঁদের কল্যাণকামিতা। এরপর এটাও বাস্তবতা যে, আজ এই ভূখণ্ড জুলুম, ফিতনা এবং ফাসাদে যেভাবে ছেয়ে গেছে, তার সমাপ্তি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা জিহাদের মাঝে রেখেছেন। জিহাদ অব্যাহত থাকলে এগুলো বন্ধ ও অবসান  হবে। আর যদি জিহাদ অবসান কিংবা স্থবির হয়ে যায়, তবে এগুলো প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেয়ে চারদিকে ধ্বংস ও বিপর্যয় ছড়াতে থাকবে। যেমনটি রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেছেন :

وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَفَسَدَتِ الْأَرْضُ

অর্থাৎ “আল্লাহ যদি একজনকে অপরজনের দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে গোটা দুনিয়া বিধ্বস্ত হয়ে যেতো।” [সূরা বাকারা, ২:২৫১]

আল্লামা ইবনে আবি হাতিম রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ

 لَوْلا الْقِتَالُ وَالْجِهَادُ.لَفَسَدَتِ الأَرْضُ ۔

অর্থাৎ “যদি কিতাল ও জিহাদ না হত, তাহলে গোটা দুনিয়া বিধ্বস্ত হয়ে যেতো।”

এসব ফিতনা ও ফাসাদের প্রতিকার, জুলুম ও শোষণের আঁধারের নিরাময় আল্লাহ তাআলা শরীয়ত মোতাবেক জিহাদ এবং কিতালের মাঝে রেখেছেন। এরপর এটাও বাস্তবতা যে, মুসলমানদের কল্যাণকামিতা এবং তাঁদের পথপ্রদর্শনের যে দাবি তা সত্যি হতে পারে না যতক্ষণ তলোয়ার নিয়ে এই জালেমদের মুখোমুখি না হওয়া যায়, তাদের শক্তিকে ভেঙে না দেওয়া যায় যারা আল্লাহর দীন এবং তাঁর বান্দাদের মাঝে প্রতিবন্ধক, যারা আল্লাহর সৃষ্টিকে নিজেদের দাস বানিয়ে রেখেছে এবং যারা আল্লাহদ্রোহী। আজ এসব জালেমের কারণে মনুষ্যত্ব বিপথগামী হচ্ছে এবং এদের কারণেই ধ্বংসের গহ্বরে পৌঁছে গেছে। আল্লাহ এমন অহংকারী জালেমদের বিরুদ্ধে শুধু দাওয়াত অথবা অনুনয় বিনয়ের রাস্তা দেখাননি, বরং আল্লাহ কিতাবের সাথে তলোয়ারও দিয়েছেন, দাওয়াতের সাথে কিতালও ফরয করেছেন।

فَقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفْسَكَ وَحَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَسَى اللَّهُ أَنْ يَكُفَّ بَأْسَ الَّذِينَ كَفَرُوا وَاللَّهُ أَشَدُّ بَأْسًا وَأَشَدُّ تَنْكِيلًا

অর্থাৎ “আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনি মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন। শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ্য খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-সামর্থ্যের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং কঠিন শাস্তিদাতা।” [সূরা নিসা, ৪:৮৪]

কাজেই আমরা কি চাই? আমরা জুলুম, ফিতনা এবং ফাসাদ খতম করতে চাই। আমরা আল্লাহর দীনকে বিজয়ী করার মাধ্যমে দীন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা মুসলিম জনসাধারণের পথপ্রদর্শন, প্রতিরক্ষা এবং কল্যাণ চাই। আর এইসব লক্ষ্য অর্জনের শরীয়তসম্মত রাস্তা হলো দাওয়াত ও জিহাদ তথা দাওয়াত ও কিতাল। এই দুইটি অর্থাৎ দাওয়াত ও জিহাদকে আমরা পারস্পরিক অবিচ্ছেদ্য এবং পরিপূরক মনে করি। এটাই আমাদের মানহাজ, এটার দিকে আমরা আমাদের উম্মতকে ডাকি এবং এর মাধ্যমেই ইনশাআল্লাহ মাজলুমদের সাহায্য করা সম্ভব হবে, এর মাধ্যমেই বঞ্চিতদের আল্লাহ তাআলা অধিকার দেবেন, এর মাধ্যমেই এখানকার দলিত, পীড়িত, মাজলুম জনসাধারণের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার রাস্তা আল্লাহ তাআলা খুলে দিবেন এবং এই দাওয়াত ও কিতালের রাস্তা উপমহাদেশের ভেতর জুলুম ও ফাসাদের এই কালরাত্রিকে ন্যায়পরায়ণতা, নিরাপত্তা ও বরকতে পরিপূর্ণ ভোরে পরিবর্তন করার কারণ হবে ইনশাআল্লাহ।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ উপমহাদেশে জিহাদি আন্দোলন একটা লম্বা সময় ধরে অব্যাহত আছে। আল-কায়েদা উপমহাদেশের দৃষ্টিতে উপমহাদেশের জিহাদি আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমাদের জামাআতের মৌলিক নীতি আপনাদের সামনে তুলে ধরছি, যাতে বোঝা যায় আমরা জামাআত হিসেবে উপমহাদেশের জিহাদি আন্দোলনকে কিভাবে দেখি। এই আন্দোলন পাকিস্তান, কাশ্মীর, ভারত এবং বাংলাদেশসহ পুরো উপমহাদেশকে ইসলামী উপমহাদেশে পরিবর্তন করার আন্দোলন; আর এটা ঐ বৈশ্বিক জিহাদি আন্দোলনের অংশ যা বৈশ্বিক স্তরে জায়নবাদী ক্রুসেডার, ধর্মনিরপেক্ষ সেক্যুলার, মুশরিক এবং ধর্মহীনদের জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। একইসাথে আমাদের দৃষ্টিতে এই আন্দোলন ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের বরকতময় অভিযানের ধারাবাহিকতা।

  • প্রকৃতপক্ষে, আমাদের জামাআত ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্য থেকে এক বাহিনী। আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য বিষয়গুলোর মাঝে একটি হলো ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা এবং একে শক্তিশালী করা। আফগানিস্তানের ইসলামী ইমারতের পতাকাতলে আমাদের সাথিরা আলহামদুলিল্লাহ লড়াই করছে এবং আমরা পাকিস্তানের মুসলমানদেরকে, উপমহাদেশের মুসলমানদেরকে সরাসরি দাওয়াত দেই যে, তাঁরা যেন এখানে আসে এবং ইমারতের পতাকাতলে আমেরিকান জোটের বিরুদ্ধে শরীয়ত প্রতিষ্ঠার এই বরকতময় জিহাদে অংশগ্রহণ করে। এরপর আফগানিস্তানের বাইরে উপমহাদেশের ভেতরেও ইসলামী ইমারতের শত্রুদের প্রতিরোধ করা এবং তাদের মোকাবেলায় জনসাধারণের স্তরে জিহাদি আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করাও এই উপমহাদেশ ভিত্তিক জিহাদি আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য!
  • দ্বিতীয়ত, বৈশ্বিক শয়তানদের লুটতরাজ এবং ফাসাদের রাস্তা উপমহাদেশে বন্ধ করা এবং তাদের জুলুম থেকে পাকিস্তান, কাশ্মীর, বাংলাদেশ, ভারত ও বার্মার মুসলমানদের প্রতিরক্ষা করা আমাদের এই আন্দোলনের লক্ষ্য!
  • একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ আরও একটি বড় উদ্দেশ্য হলো উপমহাদেশের মুসলমানদেরকে তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, যেসব অধিকার তাঁদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই অধিকারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার আল্লাহ তাআলার দেওয়া উপহার পবিত্র শরীয়ত। অর্থাৎ এই জায়গার লোকেরা জাহিলিয়াতের অধীনে থাকতে যেন বাধ্য না হয়, বরং শরীয়তের ছায়াতলে যেন তাঁরা থাকতে পারে। একইভাবে আরেকটি অধিকার হলো স্বাধীনতা, মুসলমানদের জান, মাল ও ইজ্জতের প্রতিরক্ষা! উপমহাদেশের মুসলমানদের এই সব অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া আমরা জিহাদি আন্দোলনের লক্ষ্য মনে করি …!

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ উপমহাদেশে চলমান এই জিহাদি আন্দোলনে আল-কায়েদা উপমহাদেশ কী ভূমিকা রেখেছে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমাদের জামাআত, জামাআত কায়েদাতুল জিহাদ উপমহাদেশ, যাকে সংক্ষেপে আল-কায়েদা উপমহাদেশও বলা হয়ে থাকে, তো আমাদের জামাআত উপমহাদেশের জিহাদি আন্দোলনের এক বড় দাঈ! আল্লাহর অনুগ্রহে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ভারতে এই জামাআত পুরোপুরি কার্যকর রয়েছে। আমাদের মুজাহিদ ভাইয়েরা দাওয়াত এবং কিতালের ময়দানে উপমহাদেশের জিহাদি আন্দোলনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে অগ্রসর হচ্ছে। দুই ময়দানেই আল্লাহ সাহায্য করছেন; শাহাদাত, গ্রেফতারি এবং বাস্তুহারা হওয়া এসবের সম্মুখীন হতে হচ্ছে; কিন্তু আল্লাহর অনুগ্রহে কান্দাহার থেকে ইসলামাবাদ, ঢাকা এবং দিল্লি পর্যন্ত গাযওয়ায়ে হিন্দের বরকতময় দাওয়াতকে এই কাফেলা নিজেদের রক্ত দিয়ে রঙিন করে রেখেছে এবং আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা যে এসব পরীক্ষা থেকে শুধু আমাদের জামাআত নয় বরং পুরো উপমহাদেশের জিহাদি আন্দোলন ইনশাআল্লাহ সফল ও শক্তিশালী হিসেবে দেখা দিবে।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ উপমহাদেশের ভেতরে আপনাদের প্রধান শত্রু এবং প্রণিধানযোগ্য লক্ষ্যবস্তু কী?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ সবচেয়ে প্রথম লক্ষ্যবস্তু ‘গুণ্ডাদের সর্দার’ আমেরিকা, কারণ আমেরিকা ইসলাম ও মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু। এর হাত মুসলিম উম্মতের রক্তে রঞ্জিত, গোটা দুনিয়ায় ইসলামের বিরুদ্ধে জালেমদের পৃষ্ঠপোষক এবং বৈশ্বিক অত্যাচারী শাসনব্যবস্থার সবচেয়ে বড় রক্ষক ও সর্দার। এজন্য উপমহাদেশের এই ভূখণ্ডকে আমেরিকার নোংরামি থেকে মুক্ত এলাকা বানানো, মার্কিন ষড়যন্ত্র ও জুলুম থেকে এই ভূখণ্ডকে পবিত্র করা এবং এই অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বিতীয় লক্ষ্যবস্তু ভারত। মুশরিক, লুণ্ঠনকারী ও অত্যাচারী ওই ভারত, যে কাশ্মীর দখল করে রেখেছে এবং প্রতিদিন আমাদের কাশ্মীরি মা, বোন এবং ভাইদের উপর জুলুম করে যাচ্ছে। এই ভারতের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা থেকে আসাম ও গুজরাট পর্যন্ত আমাদের মুসলমান ভাইদের ‘রক্তের হোলি খেলা’ অব্যাহত আছে। আবার এই ভারত আজ ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে আমেরিকা এবং ইসরায়েলসহ সমস্ত বৈশ্বিক শয়তানের মিত্র। কাজেই বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান বরং পুরো উপমহাদেশে ভারতীয় সরকারের স্বার্থকে নিশানা বানানো আমাদের দ্বিতীয় বড় লক্ষ্যবস্তু!

তৃতীয় লক্ষ্যবস্তু ঐসব শক্তি যারা জিহাদি আন্দোলনের শত্রু, জিহাদি আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং এর জন্য বৈশ্বিক কুফরী শক্তি থেকে অর্থ জমা করছে। পাকিস্তানের উপর চেপে বসা জেনারেল, এদের সশস্ত্র চেলা এবং শাসক শ্রেণি এর সুস্পষ্ট উদাহরণ। এটা ঐ বিষফোঁড়া যার কাজই হলো জিহাদি আন্দোলনকে মূল থেকে শেষ করে দেওয়া। যখন তারা এটা করতে ব্যর্থ হয়, তখন এই আন্দোলনকে বিক্ষিপ্ত করা, আন্দোলনকে বৈশ্বিক গুণ্ডাদের বশীভূত করা এবং এর বরকতময় ফলকে এসব কাফেরের কোলে সঁপে দেওয়াকে এরা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে। কাজেই এই জালেম গোষ্ঠী জিহাদি আন্দোলনের এবং ইসলামী জাগরণের বিরুদ্ধে প্রত্যেক মুলহিদ (নাস্তিক) ও কাফেরের বাহু। এদের কারণেই আজ পাকিস্তান গোটা দুনিয়ার অপরাধী গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এবং আজ এদের কারণেই এই ভূখণ্ড আল্লাহর শরীয়ত থেকে বঞ্চিত। এখানে জুলুম ও ফাসাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত আছে এদের কারণেই।

এখানে লক্ষ্যবস্তু নিয়ে আলোচনা, এজন্য বলছি যে, আল-কায়েদা উপমহাদেশের আচরণবিধি আলহামদুলিল্লাহ প্রকাশিত হয়েছে। তাতে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, পদ্ধতিসহ আমাদের জিহাদি লক্ষ্যবস্তু এবং মূলনীতি ও মানদণ্ড লিপিবদ্ধ হয়েছে! এজন্য সব মুসলমানের বিশেষভাবে মুজাহিদদের, আমাদের জামাআতের সাথিদেরকে এবং জামাআতের বাইরের অন্যান্য ভ্রাতৃস্থানীয় জামাআতের প্রিয় ভাইদের সবাইকে এই আচরণবিধি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমেরিকা, ভারত এবং সেই সাথে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে একই সময়ে শত্রু বানানো এবং এদের বিরুদ্ধে লড়াই করা কি যুদ্ধের স্ট্র্যাটেজির দিক থেকে উপযুক্ত?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ বাস্তবতা এটাই যে, আমরা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে শত্রু বলি আর না বলি এরা শত্রু এবং এরা শরীয়তের বিরুদ্ধে, দীনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে, জিহাদি আন্দোলন ও মুজাহিদদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আমরা জানি যে, শত্রুর সংখ্যা কমিয়ে আনা যুদ্ধে সবচেয়ে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে, কিন্তু নিজেদের বিরুদ্ধে লড়াইরত শত্রু থেকে চোখ বন্ধ করে রাখা নিজেদের দাওয়াত, জিহাদ এবং আন্দোলনকে নিজ হাতে ধ্বংস করার প্রতিশব্দ। আজ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এবং অত্যাচারী শাসনব্যবস্থা – শরীয়ত ও জিহাদের পথে পুরোপুরি প্রতিবন্ধক। এজন্য অনিবার্যভাবে এই শত্রুদের বিরুদ্ধে ময়দানে নামতে আমরা বাধ্য হয়েছি। এখানে আমি এটাও উল্লেখ করছি যে, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ইসলামের শত্রুতার ইতিহাস দেখে এই বাস্তবতা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, দীনের বিজয়ের আন্দোলন যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের দাওয়াতকে বাঁচানোর জন্য এই সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ময়দানে না নামবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলন এক পাও অগ্রসর হতে পারবে না ; ততক্ষণ পর্যন্ত উপমহাদেশে কোনো জালেমের রাস্তা বন্ধ করা যাবে না।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ বাংলাদেশের অবস্থা আপনার সামনে। আপনি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাকে কিভাবে দেখেন? এবং এখানকার মুজাহিদদের জন্য আপনি কোন কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি মনে করেন?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ বাংলাদেশের মুসলমানেরা আজ এক ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। আর তাঁদের এই অবস্থার জন্য জালেম, শরীয়তের শত্রু এবং উম্মতের সাথে খেয়ানতকারী এই পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ভূমিকা- ভারতীয় সরকারের থেকে কোনো দিক থেকে কম নয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর লজ্জাজনক জুলুম এই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি আজ পর্যন্ত ভুলতে পারেনি। এই জাতি ইসলামের জন্য পাকিস্তানের অংশ হয়েছিল কিন্তু ইসলামের শত্রু পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর ষড়যন্ত্র ও অত্যাচার তাঁদেরকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করে দিয়েছে। ভারতের এ থেকে ফায়দা নেওয়ার সুযোগ ছিল আর সেই সুযোগ ভারত পুরোপুরি কাজে লাগায়। ফলস্বরূপ, রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ পুরোপুরি ভারতের দাস হয়ে গেছে। এখানকার সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, আদালত এবং মিডিয়া সবকিছু আজ ভারতের ভাষায় কথা বলে এবং ভারতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করে; যদিও আলহামদুলিল্লাহ এখানকার জনসাধারণের মাঝে তাওহীদের সন্তান এবং রাসূলের () এর জন্য উৎসর্গিত মনোভাবের লোকের অভাব নেই। আর এই কারণেই এরকম আহলে ঈমান-দের জন্য জায়গা অত্যন্ত সংকীর্ণ হয়ে গেছে। মূর্তি এবং গরুর পূজারিদের লক্ষ্য এই মুসলিম জনপদকে তাঁদের সবচেয়ে বড় মূল্যবান সম্পদ ঈমান থেকে বঞ্চিত করা এবং নিজেদের পুরোপুরি দাস বানানো। দুঃখের বিষয় আজ চোর, লুটেরা, নিচ, ধর্মহীন এবং মুলহিদদের (নাস্তিকদের) সম্মান দেওয়া হচ্ছে আর দীনের অনুসারীদেরকে জাতি, দেশ বরং পুরো মানবজাতির শত্রু হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাঁদের উপর জুলুম করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে ঢাকার ভেতরে এক দীনি সমাবেশে রাতে অভিযান এবং শুধু এক রাতেই নীরবে এক হাজারেরও বেশি মুসলমানকে শহীদ করা; এরপর ভারতের সীমান্তে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলার ভেতরে স্বয়ং ভারতের সামরিক বাহিনীর পূর্ণ অনুপ্রবেশ এবং বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সাথে মিলে পঞ্চাশের বেশি মুসলমানকে হত্যা এবং তাঁদের ঘর-বাড়ি ধ্বংস … হায়! ঘটনা যদি এখানেই শেষ হতো, কিন্তু না.. এখানে শেষ হয়নি। আজ একদিকে আহলে ঈমানদের ফাঁসি, হত্যার পর হত্যা এবং বন্দী করার ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে এবং অন্যদিকে দীনের শত্রু মুলহিদ ও রাসূল (ﷺ) এর অবমাননাকারীদের মতো নিকৃষ্ট সৃষ্টিরা পুরোপুরি আশ্রয় প্রশ্রয় পাচ্ছে। অনেক লম্বা সময় থেকে বাংলাদেশের মুসলমানদের উপর এক যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যা প্রকৃতপক্ষে ধর্মনিরপেক্ষতার চেহারায় মুশরিক হিন্দুদের ইসলাম এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের মুসলমানরা জানে যে, তাঁদের উপর জিহাদ ফরয হয়ে গেছে। এই জিহাদ বাংলাদেশ ও ইসলামের সঙ্গে ভারতের দুশমনির বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা হিসেবে হোক অথবা কাশ্মীরি এবং ভারতীয় মুসলমানদের সাহায্য হিসেবে হোক, প্রত্যেক অবস্থায়ই ভারতীয় সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া আজ ফরযে আইন। এই কারণেই আমাদের জামাআতের কাছে বাংলাদেশ বরং পুরো উপমহাদেশে ভারতীয় সরকার গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় লক্ষ্যবস্তু।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আপনি কি এখানে বাংলাদেশে আমাদের জামাআতের সাথে সংশ্লিষ্ট মুজাহিদদের জন্য কোনো বার্তা দিতে চান?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমি বাংলাদেশে আমাদের অত্যন্ত প্রিয় সাহসী মুজাহিদ ভাইদের প্রতি অনুরোধ করবো বাংলাদেশের মুসলমানদেরকে জিহাদের এই ইবাদতের দিকে ডাকা এবং গাযওয়ায়ে হিন্দের এই মহান আন্দোলনকে এখানে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আল্লাহ আপনাদেরকে নির্বাচিত করেছেন। বাংলাদেশের মুসলমানদের দীন ও দুনিয়ার প্রতিরক্ষা আপনাদের উপর ফরয এবং এই ফরয আদায়ে নিজ জাতিকে অত্যন্ত যত্নের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জিহাদে শামিল করুন, এতে আপনারা সফল হবেন তো আপনারা বাংলাদেশে ইসলাম এবং ইসলামের অনুসারীদের সাহায্য করতে পারবেন এবং কাশ্মীর থেকে বার্মা পর্যন্ত মাজলুমদের হৃদয়ও আপনারা শীতল করতে পারবেন। আপনারা আপনাদের হাতিয়ার মুশরিক, অপবিত্র এবং জালেম ভারতীয় সরকারের দিকে তাক করুন। যারা ঢাকা এবং সাতক্ষীরা থেকে শুরু করে কাশ্মীর এবং আহমাদাবাদ এমনকি পুরো উপমহাদেশের আহলে ঈমানের শত্রু এবং অপরাধী এই মুশরিক হীন শত্রুর বিরুদ্ধে অগ্রসর হোন …। যদি আপনার এই রাস্তায় কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে আপনারাও নিজেদের কাজের মাধ্যমে এই বার্তা দিন যে, আপনারা নিজেদের জিহাদ, আন্দোলন এবং দাওয়াত কীভাবে রক্ষা করতে হয় তা খুব ভালো করে জানেন। আল্লাহ আপনাদের সাহায্য করুন এবং আপনাদের মাধ্যমে উপমহাদেশের তাওহীদ ও জিহাদের এই বরকতময় পতাকা সুউচ্চ করুন। আমীন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আপনি বর্তমান জিহাদি আন্দোলনকে উপমহাদেশের ইসলামী এবং জিহাদি ইতিহাসের সাথে কিভাবে সংযুক্ত করেন?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ ইংরেজরা যখন উপমহাদেশের অধিকাংশ এলাকা থেকে শরীয়ত ধ্বংস করে, তখন শাহ আব্দুল আযীয (রহিমাহুল্লাহ) ১৮০৬ সালে এক ফাতওয়া দেন যে, উপমহাদেশ আর দারুল ইসলাম নেই; এটা দারুল হারব হয়ে গেছে। এরকম ঐতিহাসিক ফাতওয়ার আলোকে সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহিমাহুল্লাহ) এবং শাহ ইসমাইল শহীদ (রহিমাহুল্লাহ) এর জিহাদি আন্দোলন শুরু হয়, (উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বে ১৮৫৭ সালে স্বাধীনতার আন্দোলন এবং শায়খুল হিন্দ (রহিমাহুল্লাহ) এর মতো অন্যান্য জিহাদি আন্দোলনও অস্তিত্ব পায়)।

শাহ আব্দুল আযীয (রহিমাহুল্লাহ) যে উপমহাদেশকে ‘দারুল হারব’ ঘোষণা করে ফাতওয়া দেন, এই ফাতওয়া আজও কার্যকর ও প্রাসঙ্গিক। কারণ, কত আর কারণগুলো সব আজও পুরো উপমহাদেশে একেবারে পরিপূর্ণরূপে বিদ্যমান। আজ পুরো উপমহাদেশে কোথাও শরীয়ত প্রতিষ্ঠিত নেই! বরং উপমহাদেশের প্রত্যেক কোণায় কোণায় আজ শরীয়তের শত্রুদের রাজত্ব। উপমহাদেশে মুশরিক, মুলহিদ (নাস্তিক) এবং ক্রুসেডার কাফেরদের ধর্মহীন গোলামদেরই শাসন চলছে। এজন্য শাহ আব্দুল আযীয (রহিমাহুল্লাহ) এর ফাতওয়ার উপর আমল আজও ওয়াজিব। দ্বিতীয় কথা হলো সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহিমাহুল্লাহ) যখন আন্দোলন ও যুদ্ধাভিযান শুরু করেন, যার জন্য হাজার হাজার উলামায়ে কেরামকে ফাঁসি দেওয়া হয় এবং যে আন্দোলনকে শায়খুল হিন্দ (রহিমাহুল্লাহ)-ও পরে সমর্থন দিয়েছিলেন, তো এই আন্দোলন উপমহাদেশে কখনও শেষ হয়নি, বরং অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত পুরো ইতিহাস জুড়ে এই আন্দোলনের উপস্থিতি অনস্বীকার্য। বাংলায় (বাংলাদেশ) হাজী শরীয়তুল্লাহ এবং তিতুমীরের উত্তরাধিকারীরা, পাকিস্তানের উপজাতীয় অঞ্চলের ফকির এপি, হাজী তারংযাই এবং মোল্লা পাবন্দের মতো বিখ্যাত নাম এই জিহাদি আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরও এই আন্দোলন এখানে গোত্রীয় এলাকাগুলোতে জারি থাকে। শরীয়ত প্রতিষ্ঠার ওয়াদা যখন এখানকার শাসকেরা পূরণ করেনি, তখন ফকির এপি (রহিমাহুল্লাহ) শরীয়ত প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে আন্দোলন পুনরায় শুরু করেন এবং এই ‘অপরাধে’ পাকিস্তানি বিমানবাহিনী তাদের ইংরেজ এয়ার ভাইস মার্শাল এলেন এর নেতৃত্বে এই আন্দোলনের এক জনসমাগমের উপর নিজেদের প্রথম অভিযান সম্পন্ন করে। এরপরেও এই আন্দোলন জারি থাকে, জোয়ার ভাটা অবশ্যই এসেছে, আর আন্দোলনের উপর এমন জোয়ার ভাটা এসেই থাকে; কোনো ঘটনা অথবা অবস্থা এই আন্দোলনকে তার পুরনো বুনিয়াদের উপর নতুন প্রেরণার সাথে আবার উদ্দীপিত করে তোলে! আমেরিকা যখন এখানে আসে, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী যখন জিহাদি আন্দোলন ও ইসলামের বিরুদ্ধে খোলাখুলি যুদ্ধ শুরু করে, যখন পাক বাহিনীর আসল চেহারা সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় তখন এখানে মুজাহিদদের আন্দোলনও নতুন প্রেরণা নিয়ে ঐ পুরনো বুনিয়াদের উপরই … নিজ লক্ষ্যকে সামনে রেখে আবার দাঁড়িয়ে যায়—যে বুনিয়াদের ওপর সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহিমাহুল্লাহ)-এর জিহাদি আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত ছিল … এভাবে এখানে উপমহাদেশের জিহাদি আন্দোলনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। কাজেই আমরা মুজাহিদরা উপমহাদেশে সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহিমাহুল্লাহ) এর আন্দোলনেরই ধারাবাহিকতা। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক অর্থে সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহিমাহুল্লাহ)-এর উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিন, আমরা যেন সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহিমাহুল্লাহ)-এর কাঙ্ক্ষিত উপমহাদেশকে ইসলামের শত্রু-মুক্ত করতে পারি এবং এখানে শরীয়ত প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়— এই সবকিছু আমাদেরও লক্ষ্য। একইভাবে তাঁর পথ ছিল দাওয়াত ও জিহাদ আর এটা আমাদেরও পথ ও পন্থা। এজন্য আমরা উপমহাদেশের ভেতরে ইনশাআল্লাহ সাইয়্যেদ আহমাদ শহীদ (রহিমাহুল্লাহ)-এর জিহাদি আন্দোলনেরই ধারাবাহিকতা, আল্লাহ আমাদেরকে এই আন্দোলনের হক আদায় করার তাওফীক দান করুন এবং আল্লাহ এখানকার মুসলমানদের জন্য আমাদের এই আন্দোলনকেও সাইয়্যেদ আহমাদ রহিমাহুল্লাহর আন্দোলনের মতো বরকতময় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করুন। আমীন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ উপমহাদেশ থেকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের দিকে মনোযোগ দেওয়া যাক। আপনি উল্লেখ করেছেন আল-কায়েদা উপমহাদেশের বড় লক্ষ্য ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের শক্তিবর্ধন। আফগানিস্তানে আমেরিকার যুদ্ধ সতেরো বছরে গড়িয়েছে। আজ সতেরো বছর পরে আপনার দৃষ্টিতে ইসলামী ইমারত আফগানিস্তান কোথায় দাঁড়িয়ে আছে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আজ আলহামদুলিল্লাহ ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের কাফেলা সফলতার সাথে নিজ সফর জারি রেখেছে। মার্কিন জোট হামলা করেছে সতেরো বছর হয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে যুগের এই ফেরাউন সব ধরনের শক্তির পরীক্ষা করেছে, আণবিক বোমা ছাড়া এর তূণে যা কিছু ছিল সব কিছু সে শেষ করে ফেলেছে। ডলারও অনেক খরচ করেছে। প্রেরণা দেওয়ার জন্যও অনেক কিছু সাজিয়েছে। যা কিছু তার সামর্থ্যের মধ্যে ছিল সবকিছুর পরীক্ষা সে করেছে কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ সবকিছু ব্যর্থ হয়ে গেছে। আল্লাহ আমীরুল মুমিনীন মোল্লা উমর (রহিমাহুল্লাহ)-এর নিজ রবের ব্যাপারে কৃত ধারণা সত্য করে দেখিয়েছেন, যা তিনি ব্যক্ত করেছিলেন এভাবে—“এরা আমাদেরকে পরাজিত করার ওয়াদা করেছে আর আল্লাহ আমাদেরকে বিজয়ী করার ওয়াদা করেছেন, দেখা যাক কার ওয়াদা সত্য হয়।” আলহামদুলিল্লাহ আমেরিকার ওয়াদা মিথ্যা ছিল। আল্লাহর ওয়াদা সত্য ছিল, সত্য আছে। অতএব আল্লাহ আমাদেরকে এই তাওফিক দান করুন, আমরাও আল্লাহর সাথে আমাদের অঙ্গীকার যেন বাস্তবায়িত করতে পারি। আল্লাহ আমাদের জিহাদের রাস্তায় দৃঢ়তা দিন। যাইহোক, আল্লাহ ইসলামী ইমারতের কাফেলা, মুসলিম উম্মতের মুজাহিদ এবং মুসলমানদেরকে বিজয় দিয়েছেন আর আমেরিকা পরাজিত হয়েছে; আজ আমেরিকার এই পরাজয়কে পুরো দুনিয়া দেখছে।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আপনি বর্তমান পরিস্থিতিকে কিসের ভিত্তিতে আমেরিকার পরাজয়ের সমার্থবোধক মনে করেন?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আমেরিকা কিছু লক্ষ্য সামনে নিয়ে এখানে এসেছিল, তার এখানে আসার কিছু উদ্দেশ্য ছিল, ঐসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি অর্জিত হয়েছে? সেগুলো কি অর্জিত হয়েছে; আজ সে কি কোনো নতুন কথা বলা শুরু করেছে নাকি আজও সে তার পুরনো কথার উপরই রয়েছে যেখান থেকে সে তার এই যাত্রা শুরু করেছিল? বাস্তবতা হলো এই যে, আমেরিকা তার লক্ষ্য অর্জনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আফগানিস্তানে মার্কিন জোটের লক্ষ্য কী ছিল? আর যদি আমেরিকা নিজ লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়ে থাকে তাহলে তার এই ব্যর্থতার ফলাফল কী?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ প্রথম লক্ষ্য ছিল জিহাদি আন্দোলনকে এবং এই তালিকার শীর্ষে ইসলামী ইমারত এবং আল-কায়েদাকে ধ্বংস করা। কিন্তু জিহাদি আন্দোলন কি শেষ হয়েছে? আলহামদুলিল্লাহ, আফগানিস্তানে এই আন্দোলন আজও প্রতিষ্ঠিত আছে, মুজাহিদেরা আমীরুল মুমিনীন শায়খ হেবাতুল্লাহ (হাফিযাহুল্লাহ) ‘র নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে। জিহাদি কাফেলা আগে থেকে শক্তিশালী হয়েছে। আফগানিস্তানের অর্ধেকের বেশি অংশ মুজাহিদদের নিয়ন্ত্রণে। একের পর এক বিজয়। মুজাহিদদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় আমেরিকান সামরিক বাহিনী এবং চোর লুটেরাদের নিয়ে গঠিত এদের যে স্থানীয় এজেন্ট আফগান সামরিক বাহিনী আছে, তারা আজ পা ফেলার জায়গা পাচ্ছে না। সবশেষ উপায় এদের কাছে রয়েছে বোমাবর্ষণ; কিন্তু বোমাবর্ষণ করে তো আর ভূমি দখল করা যায় না। শাসন করার জন্য ভূমিতে নামতে হয় এবং এটা এদের সাধ্যের মাঝে নেই। এরপর এটাও দেখুন, যে জিহাদি আন্দোলনকে কান্দাহার এবং তোরাবোরা হতে দাফন করে দেওয়ার জন্য আবরাহার এই বাহিনী এসেছিল, সেই বরকতময় আন্দোলন পুরো দুনিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে এবং ছায়াদার বৃক্ষ হয়ে পূর্ব ও পশ্চিমে বেশ কিছু ভূখণ্ডে আহলে ঈমানদের অন্তর ও চোখ শীতলকারী হয়ে উঠেছে। আজ আমেরিকার সামনে শুধু আফগানিস্তান ই নয়, বরং ইয়েমেন, সোমালিয়া, লিবিয়া, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, মালি এবং উপমহাদেশসহ পুরো দুনিয়ায় আলহামদুলিল্লাহ কুফরী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে এই জিহাদি আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত। আল্লাহর অনুগ্রহে আরও বিস্তৃত এলাকায় আজ তাওহীদের পতাকা পত পত করে উড়ছে।

দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল শরীয়তকে শেষ করে দেয়া … প্রথম কথা শরীয়ত শেষ করার কী দরকার ছিল? শরীয়তের সাথে শত্রুতা কেন? কারণ, যেখানে শরীয়ত থাকবে সেখানে আল্লাহর বান্দা তৈরি হবে, সেখানে জুলুমের প্রতি ঘৃণা ও ন্যায়পরায়ণতার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হবে। সেখানে এদের অজ্ঞতায় পূর্ণ শাসনব্যবস্থা এবং পচা-গলা সংস্কৃতির প্রতি ঘৃণা জন্ম নিবে। এজন্য এরা দুনিয়ার কোনো প্রান্তরেই শরীয়তকে সহ্য করতে পারে না। যাই হোক আমেরিকার এখানে আসার একটি লক্ষ্য ছিল শরীয়ত ধ্বংস করা। এখন কি শরীয়ত ধ্বংস হয়ে গেছে? এদের নোংরামি আর শয়তানিতে ভরা সংস্কৃতি কি এখানে চালু হয়েছে? আজও যেসব এলাকায় মুজাহিদদের ক্ষমতা আছে, আলহামদুলিল্লাহ সেখানে শরীয়তের উপরেই আমল হচ্ছে, কুফরের ক্ষতিকর শাসনব্যবস্থা নেই, এদের পশ্চিমা সংস্কৃতির যে নোংরামি, এগুলোর নাম নিশানাও আপনি কোথাও পাবেন না … এটা শুধু এখানে আফগানিস্তানের অবস্থা নয়, বরং যেসব এলাকায় আল্লাহ মুজাহিদদের বিজয় দিচ্ছেন, সেখানে আপনি শরীয়তের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে দেখবেন।

আমেরিকার হামলার তৃতীয় লক্ষ্য ছিল জনসাধারণকে দাস বানানো … যাতে আমেরিকা যাকে ভালো বলে জনসাধারণও তাকে ভালো মনে করে ; যাকে আমেরিকা খারাপ বলে, জনসাধারণও তাকে খারাপ বলে। এখানকার জনসাধারণ কি এই দাসত্ব কবুল করেছে? আলহামদুলিল্লাহ এখানকার মানুষেরা আজ মুজাহিদদের জন্য জীবন দেয়, তারা মুজাহিদদের নিজেদের জান, মাল ও দীনের রক্ষাকারী মনে করে। আর নিজ দীন ও পবিত্রতার শত্রুদের প্রতি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মুজাহিদ এই জনতার শত্রুতাও সব সময় আপনি দেখতে পাবেন।

এই জালেমদের চতুর্থ লক্ষ্য ছিল নিজেকে নিরাপদ বানানো, অর্থাৎ এই জালেমরা জুলুম থেকে নিজেদের হাত তো রুখবেই না, আফগানিস্তান থেকে ফিলিস্তিন, সিরিয়া ও ইয়েমেন পর্যন্ত আমাদের মা, বোন, ভাই ও বাচ্চাদের তো হত্যা করছে কিন্তু এসব কিছুর পরও এরা নিজেদেরকে প্রতিরক্ষার স্বপ্ন দেখে। আজ আলহামদুলিল্লাহ আমেরিকা এবং এর মিত্ররা আগের চাইতে মোটেও বেশি নিরাপদ নয়; সতেরো বছর পার হয়ে গেছে, এরপরেও আজ এদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিজেদের হেফাযত করা। বাজেটের এক বিরাট অংশ এরা নিজেদের ও মিত্রদের প্রতিরক্ষার জন্য খরচ করছে কিন্তু এরপরও তাদের নিউইয়র্ক, ম্যানচেস্টার এবং প্যারিস সেই আগুনের শিখা ও তাপ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না যেই আগুন এরা আমাদের ঘরে লাগিয়েছিল।

কাজেই এটা ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই না, যা দেখে আমেরিকানরা ভয়ে স্তম্ভিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে গেছে। এদের কাছে আজ এমন কোনো কার্ড নেই যা তারা ইতিপূর্বে ব্যবহার করেনি। একজন আহাম্মক ব্যক্তির প্রেসিডেন্ট হয়ে যাওয়া তাদের মানসিক অবস্থার সত্যিকার চিত্র ফুটিয়ে তোলে। কোথায় সেই আমেরিকা যার প্রেসিডেন্ট যেখানেই যেত, সৌভাগ্যের আশায় সবাই তার সাথে মিলিত হতো আর কোথায় আজকের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, যে নিজ স্থান সামলানোর জন্য নিজ মিত্রদের কাছে এক এক পয়সার হিসাবের কথা বলে, জাতীয় বাজেটে কাটছাঁট আর সবার আগে আমেরিকার শ্লোগান দিতে থাকে। অতীতে আমেরিকার বৈশ্বিক রাজনীতিতে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ সহ্য হচ্ছিল না আর বর্তমানে কুফরী ও ইসলামের যুদ্ধে এই রাশিয়া থেকে লুকিয়ে ও প্রকাশ্যে সাহায্য নিয়ে যাচ্ছে।

এই সব কিছু প্রমাণ করে যে, আমেরিকা এখন ঐ আমেরিকা নেই, এর পরাজয় সুস্পষ্ট আলহামদুলিল্লাহ। আমেরিকার এই পরাজয় এখন শুধু মুজাহিদদের কথা নয়, বরং আমেরিকা এবং এর মিত্রদের কাছ থেকেই এই পরাজয়ের স্বীকৃতি শোনা যাচ্ছে।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ এই অবস্থায় আপনি কি এটা প্রত্যাশা করেন যে, আমেরিকা নিকট ভবিষ্যতে মুসলিম উম্মতের উপর অপরাধ চালিয়ে যাওয়া থেকে বিরত হয়ে যাবে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ না, আমেরিকার নির্যাতনের ফিরিস্তি অনেক লম্বা, এখন যদি সে পিছু হটতে চায় তবুও এর অন্যায় অত্যাচারের পরিণাম এর পিছু নেবে। নিজের ধ্বংস আমেরিকার দৃষ্টিতে আসছে, এজন্য এর বোধশক্তি আরও কমে গেছে, এক আহাম্মক মানুষকে প্রেসিডেন্ট বানানোর পর যেভাবে সে ইয়েমেন, সিরিয়া ও আফগানিস্তানে জনসাধারণের বসতির উপর বোমাবর্ষণ করেছে, তা এর বোধশক্তির কমতিরই ইঙ্গিত। আর প্রবল সম্ভাবনা আছে যে, নিজেদের এরকম বোধশক্তির অভাব থেকে সে এমন পদক্ষেপ নিবে যা থেকে নিকট ভবিষ্যতে একে ভুগতে হবে।

তবে হ্যাঁ, পূর্ববর্তী এবং বর্তমানে চলমান যুদ্ধের মাঝে পার্থক্য আছে! পূর্বে ইসলামী বিশ্বকে জয় করার জন্য আমেরিকা লড়াই করছিল আর বর্তমানে সে নিজে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ভয়ে, নিজেকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করছে। অতীতে সে নিজের শক্তি এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে সবকিছু করার দাবি করতো কিন্তু বর্তমানে সে নিজের শক্তির সীমাবদ্ধতা এবং নিজের পরাজয় অনুভব করছে! আল্লাহর কাছে আশা রাখি নিজেকে নিরাপদ ও রক্ষা করার ভাগ্য আমেরিকার হবে না; মুসলিম উম্মতের কুরবানী এবং জিহাদের আঘাতের নিচে তলিয়ে আমেরিকা ধ্বংস হবে ইনশাআল্লাহ।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আমেরিকার এই পরাজয় এবং আগ্রাসন-প্রচেষ্টার ফলে মুসলিম উম্মতের উপর কি প্রভাব পড়ছে?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ বাস্তবতা এই যে, আজ মুসলিম উম্মত জিহাদি আন্দোলনের চেহারা সম্মান, প্রগতি এবং বিজয়ের যে সফরের দিকে পদার্পণ করছে, এটা কোনো ছোটখাটো ঘটনা নয়, এটা একটা বড় ঘটনা, এটা প্রত্যেক মুসলমানের অনুভব হওয়া জরুরি। দুইটা যুগের একটু তুলনা করে দেখেন, একটা যুগ ছিল যখন শরীয়ত প্রতিষ্ঠার সব আশা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, সব দিকে জুলুম ও ফাসাদের রাজত্ব ছিল, এই শয়তানদের তর্জন-গর্জন চরমে ছিল, পবিত্র ভূমি এবং মুসলমানদের অন্যান্য অধিকৃত ভূমির স্বাধীনতার জন্য এমন কোনো বড় শক্তি উম্মতের জন্য ছিল না, বৈশ্বিক জালেম শাসনব্যবস্থা পুরোপুরি উম্মতকে গ্রাস করে ফেলছিল; যেখানে চোখ যায় সেখানেই দেখা যাচ্ছিল পশ্চিমাদের আশীর্বাদপুষ্ট, পালিত শাসকগোষ্ঠী, তাদের রক্ষক এবং গোলাম বাহিনী। মুসলমানদের দীন এবং দুনিয়াকে এই জালেমদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কোনো শক্তি ছিল না। তাই পূর্ববর্তী যুগ ছিল হতাশা, অবনতি এবং পতনের যুগ। আর বর্তমানে চলমান এই যুগে উম্মত পুরো সম্মানের সাথে উম্মত হিসেবে শত্রুর মোকাবেলা করছে, দৃঢ়তা দেখাচ্ছে এবং শত্রুরাও নিজের বানানো ময়দানে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বরং এমন যুদ্ধের ময়দানে দাঁড়ানো যার কারণে দুনিয়ার এই গোলামদেরও জান চলে যাচ্ছে! সেই ময়দান যা থেকে বাঁচার জন্য বৈশ্বিক কুফর কত কিছু ব্যয় করছে, মুসলিম উম্মতের মাঝে নানা রকম ব্যক্তিত্ব, চিন্তা এবং আন্দোলন এরা সামনে নিয়ে আসছে যাতে মুসলমান কিতালের ময়দানে নামার আগে থেমে যায়; কিন্তু এইসব ষড়যন্ত্র, রাজনৈতিক প্রচেষ্টা, সব মেহনতই ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। আজ তাদের এত পদক্ষেপের পরও উম্মত জিহাদের ময়দানে দাঁড়িয়ে আছে। এসব জালেমের বিরুদ্ধে এই ময়দানে আর কে মোকাবেলা করছে? সেই সামরিক বাহিনী তো নেই যে বেতন, প্লট এবং উন্নতিকে নিজের জীবনের লক্ষ্য মনে করে, ওরা সবাই তো আজ এই জালেমদের গোলাম হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এদের মোকাবেলায় ঐসব বীরই দাঁড়িয়ে আছে যারা উম্মতকে লুট করছে না বরং উম্মতের কল্যাণের আশায় নিজের সবকিছু এই উম্মতের জন্য ব্যয় করে যাচ্ছে … আলহামদুলিল্লাহ শরীয়ত প্রতিষ্ঠায়, স্বাধীনতা এবং সম্মান এবং ইসলামের উত্থানের স্বপ্ন আজ শুধু স্বপ্ন নয়, বরং আলহামদুলিল্লাহ বৈশ্বিক জিহাদি আন্দোলনের চেহারায় এসব স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ আপনার দৃষ্টিতে বৈশ্বিক কুফরের মোকাবেলায় মুসলিম উম্মতের এই সফলতার কারণ কি?

উস্তাদ উসামা মাহমুদঃ আল্লাহর উপর ভরসা এবং শরীয়ত বহির্ভূত সমস্ত পথ ও পন্থা পরিহার করে আল্লাহর কিতাবের দেওয়া শরীয়ত সম্মত পন্থা গ্রহণ করা এই সফলতার প্রথম কারণ। আজ অধিকার আদায়ের জন্য যে ‘আইনি’ এবং ‘গণতান্ত্রিক’ পন্থার কথা বলা হয়, এগুলো সব কুফরের কুৎসিত, শয়তানি পন্থা। এগুলোর মাধ্যমে আগেও কখনও মুসলমানরা তাদের ইসলামী অধিকার পায়নি, আর না ভবিষ্যতে তারা অধিকার আদায় করতে পারবে। দীনি জামাআতের যেই ভাইয়েরা যখন যেখানে এসব পন্থা অবলম্বন করেছে, তারা সবাই পথ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে গেছে। যখন আমরা এই কথা বলি তখন আল্লাহর শপথ এদের প্রতি আমাদের সহমর্মিতা এবং কল্যাণকামিতার উপর ভিত্তি করেই এরকম কথা বলি। আমাদের আফসোস যে, এই জামাআতগুলো এসব পন্থা অবলম্বন করে নিজেরাও দীন থেকে দূর হয়ে গেছে। আজ অবস্থা এমন যে, শরীয়ত প্রতিষ্ঠার জন্য সত্যিকার প্রচেষ্টা তো বহু দূরের কথা, শুধু শরীয়ত প্রতিষ্ঠার দাবি করার জায়গাও গণতন্ত্র এদের দেয়নি। অর্থাৎ অতীতে যেখানে প্রথমে শরীয়ত প্রতিষ্ঠার নামে দেশজুড়ে আন্দোলন চালানো যেত এবং অন্যায় অশ্লীলতাকে বন্ধ করার জন্য গণবিক্ষোভ ও প্রতিরোধের নেতৃত্ব দেওয়া যেত, আজ এসবের জায়গায় গণতান্ত্রিক অধিকার এবং মানবাধিকার অথবা নামসর্বস্ব রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় স্বার্থের মতো অস্পষ্ট এবং বাতিল পরিভাষার হৈচৈ তো অবশ্যই করা যাচ্ছে, কিন্তু জাহিলিয়াতের বিরুদ্ধে ইসলামের প্রতিরোধের যে প্রয়োজনীয়তা তার জন্য কোনো সাথি আপনি পাবেন না। বাস্তবতা এটাই যে, আমর বিল মারূফ (সৎ কাজের আদেশ) এবং নাহী আনিল মুনকার (অসৎ কাজের নিষেধ) এবং আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব এবং শত্রুতার মতো ফরযগুলো এই পন্থার মূলনীতি অনুযায়ী বাতিল হিসেবে গণ্য হয়। তাহলে এই পথ ও পন্থার মাধ্যমে কোন কল্যাণ আসবে? রাশিয়ার পরাজয়, ইসলামী ইমারতের প্রতিষ্ঠা এবং এর বরকতময় কাফেলার ধারাবাহিকতা এবং বিজয়। একইভাবে দুনিয়ার অন্যান্য জায়গায় জিহাদি আন্দোলন ছড়িয়ে যাওয়া এবং এর সফলতা, শরীয়ত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন– এসব সফলতার প্রথম কারণ এসব শরীয়ত বহির্ভূত পথ ছেড়ে নবুয়্যতী মানহাজ, শরীয়ত সম্মত পন্থা, দাওয়াত ও জিহাদের মানহাজকে দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরা প্রমাণিত হয়েছে।

দ্বিতীয় কারণ, ইসলামী বিশ্বকে দখল করে রাখা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গোলামি থেকে জিহাদি আন্দোলনকে স্বাধীন করা। এসব বাহিনী তো বৈশ্বিক কুফরী শক্তির দাস এবং শরীয়তের সবচেয়ে বড় শত্রু, এদের জীবন মরণ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দুনিয়াবি স্বার্থের কারণে হয়ে থাকে, এজন্য এদের নিয়ন্ত্রণ থেকে জিহাদি আন্দোলনকে মুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি ছিল। অতীত অভিজ্ঞতা এই বাস্তবতাই বুঝিয়ে দিচ্ছিল যে, এসব বাহিনীর হাতে নিজের লাগাম ছেড়ে দেওয়া জিহাদি আন্দোলনের ব্যর্থতারই সমার্থবোধক; উপমহাদেশ থেকে আরব বিশ্ব পর্যন্ত ইতিহাস এই শিক্ষাই দেয়। এজন্য এখন জিহাদি আন্দোলন এসব বাহিনীকে নিজেদের অবলম্বন বানায়নি এবং নিজেদের লাগাম নিজেদের হাতেই রেখেছে।

তৃতীয় কারণ, বৈশ্বিক কুফরের মাথা আমেরিকার উপর আঘাত করা এবং সবকিছু সহ্য করে এই যুদ্ধের ময়দানে টিকে থাকা প্রমাণিত হয়েছে। আগে সে সুরক্ষিত ছিল। আগে এই পাপাচারী, জালেম ও খেয়ানতকারী দুশমন দূরে বসে নিজেদের এজেন্টদের মাধ্যমে মুসলিম উম্মতের উপর জুলুম করত। তার নিজের এসব জুলুমের জন্য কোনো মূল্যই দিতে হত না, কিন্তু এখন নিজেকে রক্ষা করার জন্য তার নিজেরই জান ও মাল যুদ্ধের আগুনে ঢালতে হচ্ছে

এগারো সেপ্টেম্বরের বরকতময় হামলা জালেমদের এবং বলপ্রয়োগকারীদের মোকাবেলায় মাজলুমদের যুদ্ধের এক সফল পদ্ধতি ও প্রভাবশালী দাওয়াত হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এই দাওয়াতের উত্তরে লাব্বায়েক বলে উম্মত দাঁড়িয়ে গেছে, যার ফলে আমেরিকার জন্য নিজেকে নিরাপত্তা-বলয়ে লুকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ খোদা হওয়ার দাবিদার আমেরিকা আজ আল্লাহর মুজাহিদদের সামনে নিজেকে একেবারে অক্ষম হিসেবে দেখছে। আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা, আল্লাহ চায় তো আমেরিকা আরও কিছুদিন জিহাদের আঘাতের নিচে থাকবে এবং জিহাদের অব্যাহত আঘাতের ফলে আমেরিকার পতন হবে ইনশাআল্লাহ।

একইভাবে একথাও আপনাদের সামনে তুলে ধরা জরুরি যে, আগে আমেরিকা ইসলামী বিশ্বে আড়ালে থেকে নিজের এজেন্টদের মাধ্যমে কাজ করাতো … এসব এজেন্টরা ধোঁকার মাধ্যমে নিজের গোলামি ও নোংরামির উপর পর্দা ঢেলে রাখতো … নিজেকে উম্মতের নায়ক হিসেবে দেখাত, কিন্তু আমেরিকার উপর আঘাতের কারণে যখন আমেরিকা প্রকাশ্যে সামনে এসে গেল, তখন এর গোলাম বাহিনী ও নেকাবধারী শাসকদের ঘোষণা দিয়ে কুফর ও ইসলামের মাঝে যেকোনো একটি তাঁবুকে নির্বাচন করতে হলো। ফলে মুসলমানদের শত্রু ও বন্ধুকে শনাক্ত করা সহজ হয়ে গেল!

চতুর্থ কারণ ছিল, আজকের দিনের জিহাদি আন্দোলন হকপন্থি আলেমদের থেকে নির্দেশনা নিচ্ছে এবং সেই সাথে এটা নিজেকে বিগত ইসলামী আন্দোলনের ধারাবাহিকতা মনে করে। ফলে অভিজ্ঞতা থেকে এই আন্দোলন কার্যক্রম শিখতে পেরেছে এবং শত্রুর চাল এবং ষড়যন্ত্রও বুঝতে শিখেছে, আলহামদুলিল্লাহ। এই গুণের কারণে আল্লাহ একে পাকাপোক্ত বানিয়েছেন, উম্মতের ভেতরে এর মূল মজবুত হয়েছে এবং এই আন্দোলন ফিতনারও মোকাবেলা করতে পারছে। আজ ‘জামাতুত দাওলা’ এর ফিতনা আমাদের সামনে। কিভাবে জিহাদি আন্দোলন এই পথভ্রষ্ট চিন্তা ও ফাসাদের তুফানের মোকাবেলা করেছে এবং জিহাদকে ধ্বংস হওয়া থেকে বাঁচিয়েছে তা আমাদের কাছে সুস্পষ্ট।

আলহামদুলিল্লাহ, এই চার কারণ ছিল বাহ্যিক, যদিও সবচেয়ে বড় প্রথম এবং আসল কারণ হলো আল্লাহর উপর ভরসা, শরীয়তের অনুসরণ, সাহায্যের জন্য শুধু আল্লাহর দিকে তাকানো এবং এরপরে অদৃশ্য থেকে আল্লাহর সাহায্য। আলহামদুলিল্লাহ সফলতা ছিল এবং সফলতার দিকে, শরীয়ত প্রতিষ্ঠার দিকে, স্বাধীনতা, সম্মান ও উন্নতির দিকে এখন এই সফর জারি আছে, আলহামদুলিল্লাহ। আর এজন্য আমাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা দরকার, এই রাস্তায় আমাদের পথ দেখানোর জন্য নিজেদের রবের শুকরিয়া আদায় করা দরকার।

الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي هَدَانَا لِهَذَا وَمَا كُنَّا لِنَهْتَدِيَ لَوْلَا أَنْ هَدَانَا اللَّهُ

অর্থাৎ “সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর যিনি আমাদের হেদায়াত দিয়েছেন; আর আল্লাহ আমাদের হেদায়াত না দিলে আমরা হেদায়াত পেতাম না।”

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে, পুরো উম্মতকে, নিজের সন্তুষ্টির রাস্তার উপর দৃঢ়তা দিন। আমীন।

আস-সাহাব উপমহাদেশঃ দর্শকবৃন্দ, জাযাকুমুল্লাহু খায়রান। আমাদের পরবর্তী পর্ব ইনশাআল্লাহ কাশ্মীরের জিহাদ এবং কাশ্মীরের স্বাধীনতার আন্দোলনের উপর হবে। সেই পর্বে ইনশাআল্লাহ জামাআত আল-কায়েদা উপমহাদেশের কাশ্মীরের জিহাদের ব্যাপারে অবস্থান এবং আচরণবিধির উপর আলোচনা হবে। সে পর্যন্ত অনুমতি চাচ্ছি, আল্লাহ আপনাদের সবাইকে উত্তম প্রতিদান দিন। ওয়াসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

********************************

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent

********************************

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + twelve =

Back to top button