অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়ানির্বাচিতনির্বাচিত প্রকাশনামিডিয়া

শতাব্দীর চুক্তি নাকি বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?- পর্ব – ৪ || শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ || bengali-translation

مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media

تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents

الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation

بعنوان:
শিরোনাম:
Titled

صفقة القرن أم حملات القرون (الحلقة الرابعة)
শতাব্দীর চুক্তি নাকি বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?- পর্ব – ৪
Deal of the Century or the Crusade of the Century (Episode 4)

للشيخ أيمن الظواهري – حفظه الله
শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ
By Sheikh Ayman al-Zawahiri (May Allah Protect Him)

 

 

 

 

 

 

للمشاهدة المباشرة والتحميل
সরাসরি দেখুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Viewing and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/shotabdir_cukti-4
লিংক-২ :https://mediagram.me/56321869dd4b61eb
লিংক-৩ : https://noteshare.id/J69XZpt
লিংক-৪: https://web.archive.org/web/20220827130609/https://justpaste.it/shotabdir_cukti-4
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20220827130730/https://mediagram.me/56321869dd4b61eb
লিংক-৬ : https://web.archive.org/web/20220827130818/https://noteshare.id/J69XZpt

روابط الجودة الاصلية
FULL HD 1080 (361 MB)
মূল রেজুলেশন [৩৬১ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti-4%20HD.mp4
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/7qxRmCXzL6owQcD
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwx405fa458c28b4d0fa8c2e2b3a8076627
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/f56ab236-11c1-4878-bea4-3b3bad249f65/9c582fa56af8bbf2db5cc86ae9a6ca42648417479451b41640d5674abeebe758
লিংক-৫ : https://k00.fr/SotabdirCukti4HD
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=r4k3c5y8i7

روابط الجودة العالية
HQ 1080 (177 MB)
১০৮০ রেজুলেশন [১৭৭ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/MdcXfiktP6Kwwez
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti-4%20-%201080.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwxbc7d87e6a11645e0899dd13f0dfbfdf1
লিংক-৪: https://drive.internxt.com/sh/file/6655a81c-aeaa-490c-accb-bfbbb11eca63/eebdc66ce8adf871d4c4fead00b76a9dfa2dc17d2d8bf7065a63711572466e15
লিংক-৫ : https://k00.fr/SotabdirCukti41080
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=d3d6o6x8h1

روابط الجودة المتوسطة
MQ 720 (65 MB)
৭২০ রেজুলেশন [৬৫ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti-4%20-%20720.mp4
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/ggmb9B9WAKfDgFi
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwxc88a906a7f3d481fbd1afbb46e2e9749
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/07057d3f-b6b4-4e89-b254-3a57b0617058/d370557f63352975110ca674e4a52f25949f445e990e3b6bdb3c1c3c0d5a3185
লিংক-৫ : https://k00.fr/SotabdirCukti4720
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=v1a6v7g9k9

روابط الجودة المنخفضة
LQ 360 (23 MB)
৩৬০ রেজুলেশন [২৩ মেগাবাইট]

লিংক-১: https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti-4%20-%20360.mp4
লিংক-২: https://banglafiles.net/index.php/s/ks3japj6tNy6G5Z
লিংক-৩: https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwx355e1386703d4a8aa9d0019f78e5263a
লিংক-৪: https://drive.internxt.com/sh/file/778bf9e2-c6a1-412c-9f9b-3239681693cc/7cc1c8ce01e79054fc7cc93f0ecea3b420b035bd5f08b4a0d703bfd9279b95ec
লিংক-৫: https://k00.fr/SotabdirCukti4360
লিংক-৬: https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=w6v3r0s5u8

روابط جودة الجوال
Mobile Qoality (27 MB)
3GP রেজুলেশন [২৭ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti-4%20.3gp
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/FgCw33YygEpPJab
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwx77bddb4fd894482d8b2ecca57bc09d20
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/67e63af6-4922-4982-a9d7-e47fcc2b3043/22afb0d4def6c31dc85bdf1c98c8762599eaaaccb4057fb923e2a1fbeb0ebb75
লিংক-৫ : https://k00.fr/SotabdirCukti43gp
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=e9t1k3n6w2

روابط بي دي اب
PDF (547 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৫৪৭ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti%20-%204%20-%20SayekhAymanAlZawahiri.pdf
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/DZGWAHRw6bE7KzX
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwx3b4beb12505b405fb961026f9774803f
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/b067d931-f2f4-4ebd-b7f5-4a19d816a4ed/fe466b9cbd3ba6a058b5b49d5ada68bb35e62c9604ddff36f19b0da315f3c995
লিংক-৫ : https://k00.fr/SotabdirCukti4PDF
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=b6y3n1z3f4

روابط ورد
Word (3 MB)
ওয়ার্ড [৩ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti%20-%204%20-%20SayekhAymanAlZawahiri.pdf
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/z7mfBxxo7kBnLq6
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwxc8b05960ccb248ba9f569378d2e2e5d6
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/1dc1c5de-fef0-429b-a1f9-bc31f1cc2245/26f210c9b04eba533c0dee256c935a9cccb91b2ccb5bfc1b9d7781027b9c2fd6
লিংক-৫ : https://k00.fr/SotabdirCukti4Word
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=d6v9q3w8w8

روابط الغلاف- ١
book Banner [4 MB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [৪ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti-4%20Book%20Cover.png
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/fgQ8EaZnNKagLer
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwx3490d5399a5047df93559574cc4f524a
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/6961761a-c172-49aa-a53e-cc96e67ec27a/8253f2df9bb3b88de9e1a83194997bda84656e3ad05069aa0a7d2cdd203a51d9
লিংক-৫ : https://k00.fr/SotabdirCukti4Cover
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=w2m3w3z2i9

روابط الغلاف-٢
Banner [516 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৫১৬ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_4/SotabdirChukti-4%20%20banner.png
লিংক-২ : https://banglafiles.net/index.php/s/mwsAx2P53iT47cz
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/cypwx927bc6db29be4ecc94f9aa0e703c638a
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/eec740e3-ac94-4a17-a61f-96f84e9ecd2f/d5df7ed0ad411de2178d2cbfe2643282a9f02f3573a7a633c02370e1ad24649d
লিংক-৫ : https://k00.fr/sotabdircukti4Banner
লিংক-৬ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=p1e1c8r7p1

 

==========================================

 

শতাব্দীর চুক্তি

নাকি

বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?

পর্ব – ০৪

শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ

-মূল প্রকাশনা সম্পর্কিত কিছু তথ্য-

মূল নাম:

صفقة القرن أم حملات القرون (4) (الحلقة الرابعة) – للشيخ أيمن الظواهري – حفظه الله

ভিডিও দৈর্ঘ্য: ১৬:4৬ মিনিট

প্রকাশের তারিখ: রজব, ১৪৪৩ হিজরি

প্রকাশক: আস সাহাব মিডিয়া

بسم الله والحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وصحبه ومن والاه

সকল প্রশংসা কেবল আল্লাহর জন্য। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তার পরিবার, সাহাবায়ে কেরাম এবং তার সকল ‍অনুসারীদের উপর।

সমগ্র পৃথিবীর মুসলিম ভাই ও বোনেরা!

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

এটি “শতাব্দীর চুক্তি নাকি বহু শতাব্দীর ক্রুসেড” সিরিজের চতুর্থ পর্ব। পূর্ববর্তী তিনটি পর্বে আমি সংক্ষিপ্তভাবে ইসলাম ও ক্রুসেডের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কতিপয় প্রধান দিক নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমি ক্রুসেডারদের মোকাবেলা করার সম্ভাব্য কিছু পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমি আরও উল্লেখ করেছিলাম যে, বুঝার সুবিধার্থে এই আলোচনাকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হবে।

প্রথমত: দাওয়াত ও সচেতনতার জিহাদ।

দ্বিতীয়ত: প্রতিরোধ জিহাদ এবং শত্রুকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জিহাদ।

আমি ‘দাওয়াত ও সচেতনতার জিহাদ’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমি আরও উল্লেখ করেছিলাম, যেহেতু এই আলোচনাটি বেশ বড় তাই বিষয়টিকে সংক্ষিপ্ত ও সহজ করার উদ্দেশ্যে কয়েকটি পয়েন্টের ভিত্তিতে আলোচনা করা হবে। আমরা ধারাবাহিকভাবে নিম্নলিখিত পয়েন্টগুলোর উপর আলোকপাত করব ইনশা আল্লাহ।

-সচেতনতা তৈরির জিহাদ

-উম্মাহর তরবিয়ত ঠিক করার জিহাদ

-দাওয়াতের লড়াই

-রাজনৈতিক জিহাদ

-(উম্মাহর) ঐক্যের গুরুত্ব

আমি ‘সচেতনতা তৈরির জিহাদ’ – এই পয়েন্টটি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আরও বলেছিলাম যে, বিষয়টিকে বুঝার জন্য নিম্নলিখিত ৩ প্রশ্নের উত্তর প্রদানের মাধ্যমে আমরা এই বিষয়টি বিশ্লেষণ করব:

১ম প্রশ্ন: আমাদের প্রকৃত শত্রু কারা?

২য় প্রশ্ন: ‘আল ওয়ালা ওয়াল বারা (আল্লাহর জন্যই বন্ধুত্ব ও আল্লাহর জন্যই শত্রুতা)’ –এর আকীদাকে আমরা কীভাবে আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করবো?

৩য় প্রশ্ন: আমরা কাকে আমাদের পথ প্রদর্শক ও আমির হিসেবে গ্রহণ করবো?

***

আমি প্রথম দুইটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলাম। আজকে আমি তৃতীয় প্রশ্নের (আমরা কাকে আমাদের পথ প্রদর্শক ও আমির হিসেবে গ্রহণ করবো?) উত্তর প্রদানের মাধ্যমে ‘সচেতনতা তৈরির জিহাদ’ বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করতে চাচ্ছি।

শুরুতেই আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি যে, আমার এই বার্তাটি যেন আমভাবে মুসলিম উম্মাহর সকল জনসাধারণের নিকট পৌঁছে দেন। বিশেষ করে উম্মাহর ঐ অংশের কাছে পৌঁছে দেন, যারা মুসলিম উম্মাহর এই পরাজিত ও লাঞ্ছনার অবস্থাকে ভবিষ্যতে ‘বিজয়’ ও ‘সম্মানে’ রূপান্তর করতে আগ্রহী।

আমি আবারও সকলকে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আমরা একটি দীর্ঘ ও ভয়ানক যুদ্ধের ময়দানে আছি। আর এই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত হচ্ছে – ‘একতা’। তাই আমাদেরকে এক উম্মাহ হিসেবে একই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ফ্রন্টে এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।

এই যুদ্ধ থেকে সফলভাবে ফসল ঘরে আনতে হলে, মুসলিম উম্মাহর এমন একটি দল আমাদের সামনে থাকতে হবে যারা এই যুদ্ধের কারণ ও প্রকৃতি সম্পর্কে পূর্ণ মাত্রায় সচেতন। উম্মাহর এই অগ্রগামী দলকে পরিস্থিতি সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। অগ্রগামী এই দলটিতে ‘যোগ্য নেতৃত্ব’ থাকা আবশ্যক।

এই নেতৃত্বকে অবশ্যই যুদ্ধ ময়দানের প্রকৃতি সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। তাদেরকে অবশ্যই এই প্রকৃত সত্যটি জানা থাকতে হবে যে, দীর্ঘস্থায়ী এই যুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার জন্য সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ঐক্য অনিবার্য। তাদেরকে এটাও অনুধাবন করতে হবে যে, উম্মাহর মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি হয় এমন যে কোন উদ্যোগ, প্রকৃতপক্ষে ইসলামের শত্রুদের জন্য অমূল্য উপকারী হয়ে দেখা দিবে।

নেতৃবৃন্দদের এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে যে, মুসলিম উম্মাহকে বিভিন্ন রাষ্ট্রের নাম অনুসারে ‘দেশ কেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদের’ ভিত্তিতে আলাদা ভাবা যাবে না। ‘দেশ কেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদ’ এই নেতৃত্বের মধ্যে থাকতে পারবে না। একে সমর্থন করা যাবে না। এই ধরণের জাতীয়তাবাদে কোন ধরনের উৎসাহ দেয়া যাবে না। এই ধরণের জাতীয়তাবাদে সমর্থন দেয়া – প্রকৃতপক্ষে মুসলিম উম্মাহের বিরুদ্ধে ক্রুসেডার-ইহুদীদের সাহায্য করার নামান্তর।

যে ‘নেতৃত্ব’ এসকল বাস্তবতার মর্ম উপলব্ধি করতে পারে না, তারা নিশ্চিতভাবে জনসাধারণকে ব্যর্থতার দিকে টেনে নিয়ে যাবে এবং বড় ধরণের ক্ষতির সম্মুখীন করবে। বাস্তবতা বিবর্জিত নেতৃত্বই ‘আরব বসন্ত’ ব্যর্থ হওয়ার মুল কারণ। এই বিপ্লবের নেতৃবৃন্দ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে অক্ষম ছিল। তারা শরিয়াহ’র মূলনীতিসমূহ, ময়দানের বাস্তবতা এবং কুফর ও ঈমানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের প্রকৃত বাস্তবতা বুঝতে পারে নি। কিংবা তারা ইচ্ছে করেই তা বুঝতে চায় নি।

আর এখানেই সেই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি উঠে আসে যে, মুসলিম উম্মাহর নেতৃত্বের, বিশেষ করে এর অগ্রগামী দলের যারা নেতৃত্ব দিবে তাদের মধ্যে কী কী গুণাবলী থাকতে হবে? উম্মাহ যাদেরকে অনুসরণ করবে ও যাদের থেকে দিকনির্দেশনা গ্রহণ করবে, তাদের মধ্যে কী কী গুণ থাকতে হবে?

এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলবো – কোন ধরণের নেতৃত্ব থেকে আমরা নির্দেশনা গ্রহণ করবো এবং অনুসরণ করবো – সেটা নির্ণয় করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক আছে। এসকল নিয়ামক যে দলের মধ্যে থাকবে সেই নেতৃত্ব থেকে নির্দেশনা নেয়া যাবে এবং তাদের অনুসরণ করা যাবে। এরূপ একটি নেতৃত্ব নির্বাচনের নির্দেশকগুলোর মধ্যে রয়েছে:

** ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক শাসন করার বাধ্যবাধকতার ব্যাপারে তার অবস্থান কী? সে কি শরিয়াহ অনুযায়ী শাসন করার প্রতি দায়বদ্ধ? শরিয়াহ ব্যতীত অন্য কিছু দিয়ে শাসন করাকে কি এই দল অস্বীকার করে? শরয়ি নির্দেশনার ক্ষেত্রে ‘আপোষ করা’কে কি তারা অস্বীকার করে?

** ‘দখলকৃত প্রতিটি মুসলিম ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করতে হবে’ – এই নীতিমালার ক্ষেত্রে তার অবস্থান কী? সে কি এই মূলনীতির ব্যাপারে আপোষ করে? সে কি এমন কোন মতবাদ গ্রহণ করে নিয়েছে যেখানে কোন মুসলিম ভূখণ্ড’কে দুই ভাগ করে দুই জাতিসত্তার জন্য নির্ধারণ হয়? অথচ সেখানে মুসলিমদের জন্য বরাদ্দকৃত ভূখণ্ড মোট ভূখণ্ডের ১০ ভাগের এক ভাগ। অন্যদিকে মুসলিম ভিন্ন অন্য জাতিসত্তার ভূমি, মুসলিমদের ভূমির তুলনায় ৯ গুণ বড়।

আমাদের দেখতে হবে এই দল ও তার নেতৃত্ব কি মুসলিম ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছে? নাকি সে তার বাহিনী, সামরিক সামর্থ্য ও ভ্রান্ত ফতোয়া নিয়ে দখলদারদের অপকর্মে সাহায্য করে যাচ্ছে?

** ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকিকরণ ও তাদেরকে স্বীকৃতি দানের ক্ষেত্রে এর দলের ও নেতৃত্বের অবস্থান কী?

** দুর্নীতিবাজ অত্যাচারী শাসক ও তাদের ভাড়াটে সৈনিকদের ব্যাপারে এই দলের অবস্থান কি? বিপ্লব পরবর্তী সময়ে এই শাসক এবং তার সাহায্যকারীদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে সে বিষয়ে এই দলের সুনির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা আছে কি?

** আন্তর্জাতিক পরাশক্তির অনুগত রাষ্ট্রগুলোতে যে সকল পুতুল সরকার, আন্তর্জাতিক অপরাধীদের দালাল হয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে – তাদের ব্যাপারে এই দলের অবস্থান কী? এসকল পুতুল রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানদের আনুগত্য করা হবে কিনা – এ বিষয়ে এই দলের অবস্থান কি? যদি এসকল রাষ্ট্রপ্রধানরা শয়তানের পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করে – তবে তাদের ব্যাপারে এই দলের অবস্থান কি হবে?

এখানে আমি গুরুত্বসহকারে আবারও মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আমাদের চলমান এই যুদ্ধটি একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ। শতাব্দীকাল ধরে সঠিক মানহাজ থেকে বিচ্যুতির কারণেই আজ আমরা এই পরাজিত অবস্থায় এসে পৌঁছেছি।

তাই আমাদের এরূপ নেতৃত্বের প্রয়োজন – যারা সামান্য অর্জনের পরই খেই হারিয়ে ফেলে না। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি কিংবা প্রলোভনের আশায় যারা আপোষ করে বা যুদ্ধ প্রত্যাহার করে – এমন নেতৃত্বের আমাদের প্রয়োজন নেই। বরং আমাদের এখন এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যে সিরাতুল মুস্তাকিমে অবিচল থাকে।

যে নেতৃত্ব শরিয়াহ’র মূলনীতির ক্ষেত্রে কোনও আপোষ করে না, তেমন নেতৃত্ব আমরা চাই। এই নেতৃত্ব ইসলামের শত্রুদের মধ্যকার রেষারেষি থেকে উপকৃত হবে, কিন্তু ‘শরিয়া দ্বারা শাসনের’ মতো মূলনীতিগুলোকে কোন চুক্তি বা লেনদেনের পণ্যে রূপান্তরিত করবে না।

আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন – যে নেতৃত্ব ঐক্যের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। এমন নেতৃত্বের প্রয়োজন নেই – যে নেতৃত্ব দাম্ভিকতা, একগুঁয়েমি এবং সমালোচনা দ্বারা পরিচালিত হয়। এরূপ নেতৃত্ব বিভাজন সৃষ্টি করে, একঘরে হয়ে যায় এবং একটি কল্পনাপ্রসূত ও বাস্তবতা বিবর্জিত খিলাফতের স্বপ্নে উম্মাহ’র রক্ত ঝরায়। এভাবে এটি নিজেকে ও নিজের বিভ্রান্ত অনুসারীদেরকেও ধ্বংস করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন,

فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ

“অর্থঃ অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে”। (সুরা নুর ২৪:৬৩)

হে মুসলিম উম্মাহ,

উপযুক্ত ‘মুজাহিদ নেতৃত্ব’ আপনাদের মাঝেই রয়েছে। তাদের অনেকে আজ জেলে বন্দি, কেউবা দেশছাড়া আর কেউ কেউ যুদ্ধের ময়দানে আছেন। উম্মাহর সচেতন অগ্রবর্তীদেরকে অবশ্যই এই মুজাহিদ নেতৃত্বের অধীনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই নেতৃত্বই বিপ্লবের মূল কার্যকারণ। এরাই প্রকৃত বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। শাইখুল জিহাদ শাইখ আব্দুল্লাহ আযযাম রহিমাহুল্লাহ সবসময় উম্মাহর এই নেতৃত্বের কথাই বলতেন।

কারাগারে বন্দী বা নির্বাসনে থাকা কিংবা যুদ্ধ ময়দানে থাকা উম্মাহর এই সচেতন অগ্রগামী দলের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই – আমি তাদের নিকট এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাই যে, নিশ্চয়ই আপনাদের এই সকল সমস্যার অবসান হবে। এই সমস্যাসমূহ এই পথের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই পথের পথিকদের আল্লাহ এভাবেই পরীক্ষা করেন। এটা আল্লাহর সুন্নাহ। যাইহোক, আমরা অবশ্যই আমাদের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিবো এবং এই ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করবো না ইনশা আল্লাহ।

কুফফার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলো আমাদের সামনে সেসকল ব্যক্তিদের নেতা হিসেবে দাড় করানোর চেষ্টা করে, যারা একই ভুল বারবার করে আমাদের পরাজয়ের স্বাদ আস্বাদন করাবে। আমাদেরকে অবশ্যই এসকল পূর্ব নির্ধারিত নেতৃত্ব থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং তাদেরকে পরিহার করে চলতে হবে।

সত্যিকার অর্থে আমাদেরকে যারা যোগ্য নেতৃত্ব দিতে সক্ষম, পৃথিবীর অহংকারী কুফফার শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলো কখনোই তাদের নিয়ে আমাদের সামনে আলোচনা করবে না। কখনোই তাদেরকে আমাদের সামনে উপস্থাপন করবে না। আমাদের নেতৃত্ব দেয়ার মতো যোগ্য ও আন্তরিক নেতারা হয় জেলে বন্দী অথবা যুদ্ধ ময়দানে কিংবা নির্বাসনে থাকেন।

আমি উম্মাহর প্রত্যেক ঐ ব্যক্তিকে আহবান করছি – যারা উম্মাহর অবস্থার পরিবর্তনের জন্য নিজেদের জান, মাল ও সম্পদ উৎসর্গ করতে রাজি – আপনারা ট্রাম্পের ‘শতাব্দীর চুক্তি’ ঘোষণার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। আমি প্রত্যেক ঐ ব্যক্তিকে আহবান করছি – যারা ট্রাম্পের ‘শতাব্দীর চুক্তি’ ঘোষণাকে মোকাবেলা করতে আগ্রহী – আপনারা ট্রাম্পের ঘোষিত ‘শতাব্দীর চুক্তি’র বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এই ঘোষণার পূর্বে মুসলিম উম্মাহর স্বার্থবিরোধী যত ঘোষণা এসেছে এবং ধারাবাহিকভাবে সামনে যেগুলো আসবে – এসকল চুক্তির বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানাচ্ছি।

আমি শুধুমাত্র আত্মত্যাগীদেরই আহবান করছি না; বরং আমি তাদেরকেও আহবান করছি – যারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। যারা সিরাতুল মুস্তাকিম থেকে দূরে চলে গিয়ে আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তাদেরকেও উম্মাহ বিরোধী এসকল চুক্তি প্রতিরোধের আহবান জানাচ্ছি। আরও আহবান করছি সেসকল ব্যক্তিদের যারা শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে প্রতারিত হয়েছেন। তাগুতের সাথে চুক্তি স্থাপন, তথাকথিত ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকারীদেরও আমি প্রতিরোধে আহবান জানাচ্ছি। ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে নির্বাচন এবং এরকম আরও বিভিন্ন বাতিল মতবাদে বিশ্বাসীদেরকেও ভুল থেকে ফিরে এসে এই প্রতিরোধে যোগ দেয়ার আহবান জানাচ্ছি।

আমি তাদেরকে আহবান করছি। মুসলিম উম্মাহকে যত দ্রুত সম্ভব তাওহীদের পতাকার ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানাচ্ছি। ‘শরিয়াহ অনুযায়ী শাসন’ – এই মূলনীতির ক্ষেত্রে যেন কোন আপোষ করা না হয়। প্রতি ইঞ্চি মুসলিম ভূমি মুক্ত করার জন্য তীব্র চেষ্টা করার আহবান জানাচ্ছি। সেইসাথে ঐ সকল দালাল সরকারগুলোকে বর্জন করার আহবান জানাচ্ছি, যারা আমাদের সাথে প্রতারণা করে ও আমাদের উপর অত্যাচার চালায়।

প্রিয় মুসলিম উম্মাহ,

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে অসাধারণ ক্ষমতা দান করেছেন। আমেরিকা, সমগ্র পশ্চিমা বিশ্ব, প্রাচ্য জোট, চীন এবং ইসলামের সমস্ত শত্রুরা একত্রিত হয়েও ঐক্যবদ্ধ মুজাহিদ মুসলিম উম্মাহকে মোকাবেলা করতে পারবে না। এজন্যই তারা আমাদেরকে দুর্বল করে রাখতে চায়। তারা চায় আমরা যেন আমাদের শক্তি ও মনোযোগ নিয়ে ফালতু অথবা ফুরুয়ি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকি। বিভিন্ন বাতিল মতবাদ, ফুরুয়ি ইখতিলাফ ও ভ্রান্ত পথে পরিচালনার মাধ্যমে কুফফাররা আমাদের শক্তিকে নি:শেষ করে দিতে চায়।

আমেরিকা তার সমস্ত শক্তি ও ক্ষমতা দিয়েও আল্লাহর রাস্তায় জীবন উৎসর্গকারী ১৯ জন মুজাহিদের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি। আর এভাবেই এই ১৯ জন মুজাহিদ আমেরিকাকে তার নিজ ভূমিতেই এমন শিক্ষা দিয়েছে যা তাকে হতভম্ব করে দিয়েছিল। এখন পর্যন্ত আমেরিকার সেই ক্ষত থেকে রক্ত ঝরছে।

আমেরিকা ও ইসলামের শত্রুরা সবসময় উৎকণ্ঠিত ও আতঙ্কিত অবস্থায় থাকে এই ভেবে যে, না জানি কখন মুসলিম উম্মাহ তাওহীদের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়! তারা জানে যে, যদি মুসলিম উম্মাহ ‘শরিয়াহ দ্বারা শাসন’ ও ‘আল্লাহর পথে জিহাদ’ – এই দুই মূলনীতির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়, তবে তখন থেকেই তাদের (আমেরিকা ও ইসলামের শত্রুদের) পতন শুরু হয়ে যাবে। তারা খুব ভাল করেই জানে যে, উম্মাহর এই একতাই – তাদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যাবার সূচনা হবে।

আরব বসন্তে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল তারা যোগ্য ছিল না। নেতৃত্বের ‍দুর্বলতা ও অক্ষমতার কারণেই, ‘আরব বসন্তে’র সময়ে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের তীব্র শক্তিকে কাজে লাগাতে তারা ব্যর্থ হয়েছিল। এই নেতৃত্ব ইসলাম বিরোধী পশ্চিমা বিশ্ব কিংবা প্রাচ্য জোটকে মোকাবেলা করে শরিয়তের উপর অবিচল থাকার কথা চিন্তা করারই সাহস পায় নি। আর একারণেই শুরু থেকেই, এই নেতৃত্ব ধর্মনিরপেক্ষ বা বামপন্থী দলগুলোর সাথে জাতীয় ঐক্যের নামে জোট করা শুরু করে। অথচ তারা যাদের সাথে জোট করেছে এদের অনেকের হাতই বিভিন্ন মাত্রায় নিরীহ মুসলিমদের রক্তে রঞ্জিত। উপরন্তু এই সমস্ত জোট শরিয়তকে শাসন ব্যবস্থার মূল হিসেবে গ্রহণ করেনি। ফলাফলস্বরূপ অবস্থা এমন হয়েছে যে, বৃহত্তর ক্ষেত্রে এই দুর্বল নেতৃত্ব আর কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। তাদের আত্মসমর্পণ ও দাসত্বের মনোভাবের কারণে জোটের অন্যান্যরা যা চাপিয়ে দিয়েছে তাই তারা মেনে নিয়েছে।

সত্যি কথা বলতে, এই ধরণের নেতৃত্ব যে আন্দোলনে থাকবে সেটি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে বাধ্য। আরব বসন্তের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটে নি। দুর্নীতিপরায়ণ শাসনব্যবস্থার কারণে আরব দেশগুলোতে ক্ষমতায় আবার সেই জালিমরাই এসেছে। পার্থক্য হল – মাঝে কিছু সময় তারা ফোকাসের বাইরে ছিল। তবে এ সময়েও ক্ষমতা পূর্ববর্তী প্রশাসনের হাতেই কুক্ষিগত ছিল।

আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যে নেতৃত্ব বাস্তবিকই সম্মানের প্রকৃত অর্থ বুঝে, নিজ বিশ্বাস নিয়ে যে গর্ববোধ করে এবং হতাশার অন্ধকার কাটিয়ে উঠতে পারে। আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যে নেতৃত্ব আল্লাহর আয়াতের সঠিক মর্মার্থ বুঝতে পারে:

وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ

“অর্থঃ আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।” (সুরা আল-ইমরান ৩:১৩৯)

নিম্নোক্ত আয়াতের মর্মার্থ যাদেরকে আনন্দিত করে, তেমন নেতৃত্বই আমাদের প্রয়োজন।

وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَٰكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ

“অর্থঃ সম্মান (শক্তি) তো আল্লাহ তাঁর রসূল ও মুমিনদেরই। কিন্তু মুনাফিকরা তা জানে না।” (সুরা মুনাফিকুন ৬৩:8)

আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যারা আকিদা ও শরিয়াহ’র ক্ষেত্রে কোনও আপোষ করবে না। এমন নেতৃত্বও দেখা যায় যারা ধর্মনিরপেক্ষ, নাস্তিক, দুর্নীতিবাজ এবং নীতিহীন অপরাধীদের সাথে আপোষ করে এই আশায় যে, এই অপরাধীরা তাদেরকে কারাগার বা নির্বাসন থেকে মুক্তি দিবে কিংবা বিজয়ের ফলাফল তাদের সাথে ভাগ করে নিবে। দুনিয়াবি বিষয় প্রাপ্তির আশায় অপরাধীদের সাথে আপোষকারী এমন নেতৃত্ব আমাদের প্রয়োজন নেই।

আমাদের এরূপ নেতৃত্ব প্রয়োজন, যারা কিনা পশ্চিমা ও প্রাচ্যের নিকট সহানুভূতি ভিক্ষা চায় না। এমন নেতৃত্বও দেখা যায় যারা আশা করে যে, পশ্চিমারা ও প্রাচ্যের অপরাধীরা তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে মুসলিম দেশগুলোতে তাদের নিয়োগ করা দালাল সরকারদের পরিত্যাগ করবে। অথচ মুসলিম দেশগুলোর এসকল দালাল সরকারদের তারাই তৈরি করেছে ও ক্ষমতায় এনেছে। এমনকি ক্ষমতা স্থায়ী করার জন্য সব ধরণের সাহায্য করে যাচ্ছে। কল্পনার জগতে বসবাসকারী ও ভুল মানহাজে পরিচালিত এমন নেতৃত্ব আমাদের প্রয়োজন নেই।

আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যে নেতৃত্ব মুসলিম ভূখণ্ডের দখলকৃত এক ইঞ্চি ভূমিও ছাড় দিতে রাজি নয়। সম্পূর্ণ মুসলিম ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারের দাবিতে অনড় নেতৃত্বই আমাদের প্রয়োজন। আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যারা জাতীয় ঐক্যের নামে মুসলিম ভূখণ্ডের কিছু অঞ্চল কিংবা পুরো দেশকেই বিক্রয় করে দেয়ার মত জঘন্য কাজের বৈধতা দেয় না।

আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যারা ইসলাম ও কুফর এর মধ্যকার দ্বন্দ্বের প্রকৃত বাস্তবতা বুঝতে পারে। অতঃপর এই বাস্তব বুঝের উপর তারা স্থির থাকে, এই বাস্তবতাকে বিশ্বাস করে এবং এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে পরিকল্পনা করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। এই নেতৃত্বকে এটা বুঝতে হবে যে, চলমান যুদ্ধ একটি বৈশ্বিক যুদ্ধ। এটা আঞ্চলিক কোন সংঘর্ষ নয়। এটাও বুঝতে হবে যে, সমগ্র দুনিয়ার কাফিররা ‘সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা দমনের নামে’ আমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে তাদের একতা থাকা স্বত্বেও, তারা চায় আমরা মুসলিমরা যেন তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ না হতে পারি। তাই তারা আমাদেরকে রাষ্ট্র বা দেশ কেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদে উৎসাহিত করে। অথচ এই রাষ্ট্র ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ মুসলিম উম্মাহকে ৫০ টিরও অধিক ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে। এগুলোর মধ্যে এমন দেশও আছে, মানচিত্রে যাদের দেশের অবস্থান বের করতে মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রের প্রয়োজন হয়!

আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যারা বিশ্বাস করে যে আমরা এক উম্মাহ হিসেবে বিভিন্ন ময়দানে মূলত একই যুদ্ধে আছি। রাষ্ট্র কেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদের প্রতারণার ব্যাপারে সচেতন – এমন নেতৃত্ব আমাদের লাগবে। রাষ্ট্র কেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদ আমাদেরকে মিশরীয়, সিরীয়, পাকিস্তানি এবং তুর্কি ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত করেছে। রাষ্ট্র কেন্দ্রিক এই জাতীয়তাবাদের মূল চাওয়া হল – ‘সকল মুসলিম একে অপরের ভাই’ এই মূলনীতিকে অস্বীকার করবে। বরং ভাই হিসেবে মুসলিমদের চাইতেও প্রাধান্য পাবে নিজ দেশের মানুষেরা। মুসলিমদের অবশ্যই তাদের মুসলিম ভ্রাতৃত্ব অস্বীকার করতে হবে এবং নিজ দেশের কাফির, ধর্মনিরপেক্ষবাদী, নাস্তিক ও মুশরিকদের সাথে ঐক্য করতে হবে, এটাই রাষ্ট্র কেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদের মূলকথা।

আমেরিকার ইসরাইলের সাথে কোন স্থল সীমানা নেই। তবুও আমেরিকা রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ইসরাইল রাষ্ট্র গঠন করেছে। একে সমর্থন দিচ্ছে ও একে প্রতিপালন করছে।

অপরদিকে আমরা মুসলিমরা ইসলামি মাগরিব থেকে ইন্দোনেশিয়া এবং পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ককেশাস পর্যন্ত ভৌগলিকভাবে একই অঞ্চলের বাসিন্দা। আমাদের ভূমিগুলো প্রত্যেকটি একে অপরের সাথে সংযুক্ত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন –

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ

“অর্থঃ নিঃসন্দেহ মুমিনরা ভাই-ভাই” (সুরা আল-হুজুরাত ৪৯:১০)

আমাদের রবের দেয়া এই মূলনীতি আমাদের সামনে থাকা সত্ত্বেও আমরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে আছি। নানান মতানৈক্যে আমরা ভুগছি। আর এভাবেই ফিলিস্তিনিরা জাতীয় ঐক্যের নামে আজ ফিলিস্তিন বিক্রেতাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমরা মিশর ও সুদান সরকারকে হালাইব[1] (Halayab) অঞ্চল নিয়ে যুদ্ধ করতে দেখেছি। প্রত্যেক দলই দলিল হিসেবে ব্রিটেনের করা সীমানারেখার কথা বলেছে। আশ্চর্যের বিষয় হল – যে ব্রিটেন আমাদেরকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করার জন্য মুসলিম ভূখণ্ডকে এতগুলো ভাগে বিভক্ত করেছে, আজ সেই কুফফারদের দেয়া সীমানারেখাকেই আমরা দলিল হিসেবে মেনে নিয়েছি। আরও দুঃখের বিষয় – সেই চক্রান্তমূলক মানচিত্রের দলিল দিয়ে ভূমি দখলের জন্য নিজেদের মধ্যে লড়াই করছি!

আরব বিশ্ব জুড়ে বিপ্লব শুরু হলে, পশ্চিম ও প্রাচ্যের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই বিপ্লবের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য প্রোপাগান্ডা চালিয়েছিল। আমাদের মধ্যকার অনেক বিশ্বাসীরাই তখন এই প্রোপাগান্ডা বিশ্বাস করে সীমানা রাষ্ট্রের ধারণাকে আঁকড়ে ধরেছিল। যদিও এই রাষ্ট্রীয় সীমারেখা দখলদার কাফিদেরই চাপিয়ে দেয়া।

সিরিয়াতে আজ মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে কে যুদ্ধ করছে? শুধুমাত্র বাশারের সন্ত্রাসী বাহিনী নাকি আমেরিকা, ইসরাইল, রাশিয়া এবং ইরানের ঐক্যবদ্ধ বাহিনীও? কে সিসির আকস্মিক অভ্যুত্থানকে সমর্থন দিয়েছিল? শুধুমাত্র মুবারক সরকারের অবশিষ্টাংশ নাকি আমেরিকা, ইসরাইল, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং সৌদি আরব ও আমিরাতে তাদের দালালরাও?

কারা আফগানিস্তানে মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে? শুধুমাত্র কাবুল সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী নাকি আমেরিকা, মিশর, আমিরাত, জর্ডান ও তুরস্কসহ ৫০ টি রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত ন্যাটো জোটও?

যাইহোক, আমাদের অনেকেই, এদের মধ্যে অনেক ইসলামি দলও রয়েছে দাবি করে যে ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদের, সিরিয়া সিরিয়ানদের, পাকিস্তান পাকিস্তানীদের এবং তিউনিসিয়া তিউনিসিয়ানদের। এভাবে তারা দেশের নামে মুসলিম উম্মাহকে নানান ভাগে বিভক্ত করছে। এজন্য আমরা যুদ্ধের ময়দানে প্রবেশের পূর্বেই পরাজিত হয়েছি। পশ্চিমা ক্রুসেডার ও প্রাচ্যের কম্যুনিস্টদের আরোপিত বিভাজনকে গ্রহণ করে আমরা যুদ্ধে নামার আগেই মনস্তাত্বিকভাবে পরাজিত হয়ে গেছি।

আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যে নেতৃত্ব কোন চুক্তি করার জন্য কিংবা কাল্পনিক সুবিধা পাওয়ার লোভে শরিয়াহ’র শাসনকে পরিত্যাগ করবে না।

এমন নেতৃত্বও দেখা যায় যারা ‘বিপক্ষ মতের দলের সাথে ঐক্যের নামে’ দখলদার ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়। আমাদের এমন নেতৃত্বের প্রয়োজন যারা এসমস্ত দুর্নীতিবাজ, নাস্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তির সাহায্য পাওয়ার প্রত্যাশী না।

আমাদের বিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত পরামর্শদাতা সাইয়িদ কুতুব রহিমাহুল্লাহর মত নেতৃত্ব প্রয়োজন। যিনি বলেছিলেন,

‘যে আঙ্গুল প্রত্যেক সালাতের মধ্যে আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেয়, সেই আঙ্গুল কোন অত্যাচারীর কাছে প্রাণভিক্ষার চিঠি লিখবে না।’

আমাদের ড. আব্দুল আজিজ রানতিসি রহিমাহুল্লাহর মত নেতৃত্ব প্রয়োজন। যিনি বলেছিলেন,

‘আমাদেরকে অবশ্যই আমেরিকাকে প্রচণ্ড ত্রাসের দ্বারা আতংকিত করে রাখতে হবে।’

আমাদের মোল্লা মুহাম্মদ উমর রহিমাহুল্লাহর মত নেতৃত্ব প্রয়োজন। যিনি বলেছিলেন,

‘বুশ আমাদেরকে পরাজয়ের ওয়াদা করেছে। আর আল্লাহ আমাদেরকে বিজয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমরা দেখব দুটির মধ্যে কার ওয়াদা সত্য হয়।’

আমাদের উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহর মত নেতৃত্ব প্রয়োজন। যিনি শপথ করে বলেছিলেন,

“আমেরিকা কখনোই শান্তি পাবে না, যতক্ষণ না ফিলিস্তিনে আমাদের ভাইয়েরা শান্তিতে বসবাস করতে পারে এবং কাফিরদের মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়।’

আমাদের শাইখ উমর আব্দুর রহমান রহিমাহুল্লাহর মত নেতৃত্ব প্রয়োজন। যিনি তার বিচার চলাকালীন সময়ে আদালতে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন:

‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী বিচার করুন। এর অন্যথা করলে আপনি কাফির, একজন জালিম এবং একজন পাপী।’

হে মুসলিম উম্মাহ, হে সচেতন অগ্রগামী দল, হে বিশুদ্ধ ও আন্তরিক নেতারা, হে ময়দান থেকে পিছু হটে যাওয়া দল, আপনারা যারা অবিশ্বাস করেছিলেন, অভিশাপ দিয়েছিলেন এবং মুসলিমদের পবিত্রতা লঙ্ঘন করেছিলেন – আসুন আমরা সবাই আবার সিরাতুল মুস্তাকিমে ফিরে আসি এবং আমাদের জন্য উপযুক্ত, ধার্মিক, জ্ঞানী, বিশ্বাসী ও একনিষ্ঠ নেতাদের বাছাই করে নেই…।

হে আল্লাহ আপনি সাক্ষী থাকুন, আমি পৌঁছে দিয়েছি।

يا أيّها الحر العزيز أسامع    فأصوغ نصحي دعوة ودعاء

أم ألجمت فاك الخطوب وحرّمت    أذنيك حين تخاطب الإصغاء

سقط القناع عن الذين ترددوا  فانقد رجالك واختر الزعماء

دعْ عنك كل مذبذب متراجع  واخترْ لنصرك قادة نجباء

হে স্বাধীন ও সম্মানিত ভাই! আপনি কি এই আহবানে সাড়া দিবেন?

যাতে আমি আমার উপদেশকে আল্লাহর পথের দাওয়াত ও ইবাদাত বানাতে পারি নাকি আপনার বাকপটু ঠোটকে বদ্ধ করে রেখেছেন?

নাকি আপনাকে উদ্দেশ্য করে যখন কিছু বলা হয়, তখন আপনি না শোনার জন্য অন্যদিকে মনোযোগ দিয়ে রাখেন?

মুখোশ খুলে গেছে, সংশয়ে থাকাদের প্রকৃত চেহারা প্রকাশ হয়ে গেছে,

তাই আপনাদের জনগণকে রক্ষা করতে উপযুক্ত নেতৃত্ব নির্বাচন করুন।

যারা দ্বিধায় ফেলে তাদের থেকে দূরে থাকুন

এবং বিজয়ের জন্য সম্মানিত নেতাদের বাছাই করে নিন।

এর মাধ্যমে আমি ‘আমরা কাকে আমাদের পথ প্রদর্শক ও আমির হিসেবে গ্রহণ করবো?’ – প্রশ্নটির উত্তর দেয়া শেষ করলাম।

পরবর্তী পর্বে, আমি এই আলোচনা চালিয়ে যাবো এবং ‘উম্মাহর তরবিয়ত ঠিক করার জিহাদ’ বিষয়ে আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ।

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين،

وصلى الله على سيدنا محمد وآله وصحبه وسلم.

والسلام عليكم ورحمة الله وبركاته.

************

১ সুদান ও মিশরের মাঝে ‘রেড সি’ সমুদ্র তীরবর্তী একটি এলাকা। মিশর ও সুদান উভয়েই এর মালিকানা দাবি করে।

*********************

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 + 16 =

Back to top button