অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়ানির্বাচিতনির্বাচিত প্রকাশনামিডিয়া

শতাব্দীর চুক্তি নাকি বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?- পর্ব – ৩ || শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ || bengali-translation

مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media

تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents

الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation

بعنوان:
শিরোনাম:
Titled

صفقة القرن أم حملات القرون (الحلقة الثالثة)
শতাব্দীর চুক্তি নাকি বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?- পর্ব – ৩
Deal of the Century or the Crusade of the Century (Episode 3)

للشيخ أيمن الظواهري – حفظه الله
শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ
By Sheikh Ayman al-Zawahiri (May Allah Protect Him)

 

 

 

 

 

 

للمشاهدة المباشرة والتحميل
সরাসরি দেখুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Viewing and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/shotabdir_cukti-3
লিংক-২ : https://mediagram.me/261b7ca539acd241
লিংক-৩ : https://noteshare.id/vZaFgeE
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20220823165005/https://justpaste.it/shotabdir_cukti-3
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20220823165253/https://mediagram.me/261b7ca539acd241
লিংক-৬ : https://web.archive.org/web/20220823165405/https://noteshare.id/vZaFgeE

 

روابط الجودة الاصلية
FULL HD 1080 (260 MB)
মূল রেজুলেশন [২৬০ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/ZXdLznaDLSx9DzG
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti-3%20HD.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2v708cfdd53f1443359a2fd44f6c0fc1fd
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=u3q6g5m6v8
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/135ca6fc-f037-42bf-882f-61101ce91643/10eaaead1dd87a1ee500cf3a3ba9a7fb3d80eabcf83f50f56bbe9053fcdd0360

 

روابط الجودة العالية
HQ 1080 (130 MB)
১০৮০ রেজুলেশন [১৩০ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/zQi36FLibTSr3xx
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti-3%201080.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2v2bc31b5b3fc64b4190e83b9ef36121e9
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=e1q7p2f8f7
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/f78020a4-11d8-4d10-abe2-096926def114/3e654b2c858ed974e2736d27cf8f7661d26eea118583e7ce556321c28d90b76e

روابط الجودة المتوسطة
MQ 720 (53 MB)
৭২০ রেজুলেশন [৫৩ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/8ZXWqEdDi9NQWjT
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti-3%20720.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2va66461c64f074a4bbb9230ab4cc05050
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=y0o4u8t6i3
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/ea8bde2c-d7eb-4737-ad86-f56f62865c90/eeb8f35926faff3362ffa24cc044158a73808a6c3b3625c3b1fe183606cc05d7

 

روابط الجودة المنخفضة
LQ 360 (18 MB)
৩৬০ রেজুলেশন [১৮ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/5Ay99SB5TqAr5qx
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti-3%20360.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2v732fda82a15e428aa03193ddbb14884a
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=g5p3u1r2z1
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/55340877-2eeb-415a-b68f-45c2f03ef1b4/df591830405787c9d53abd2c3415544ce8624fe00c7bc9cf1b432f4fea5d9f31

 

روابط جودة الجوال
Mobile Qoality (22 MB)
3GP রেজুলেশন [২২ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/86DL6bJyfC7f66X
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti-3%20.3gp
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2v25d9dde045ce4bb183ffae4f66304984
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=b1i8y8b1s6
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/7a0544f4-4014-4c8f-b016-9c0c7e06484d/ec53c5cb748c02f0830eee85cbe2b1bdb84b0a083b13ca9584ddc1e92ae0040a

روابط بي دي اب
PDF (498 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৪৯৮ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/HbS4wjDfqNFqwGQ
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti_-_3_-_SayekhAymanAlZawahiri.pdf
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2v9f0dc595b4354e5c8e6cf39758e6b434
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=e6s6h1p9e2
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/71e85270-3285-43df-abbf-05da2b14a2bb/ade89493b253dc8a0fc5c5a49bc8933c8c9d4e3ce3b80ff91e14f7142385f9e9

روابط ورد
Word (3 MB)
ওয়ার্ড [৩ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/AEYkcmQkGEHALKf
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti_-_3_-_SayekhAymanAlZawahiri.docx
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2v5ed430e9b3a446b8a9dd35a728f7e48c
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=x8q0u2z4l7
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/a2903513-75c7-4d56-846b-16c189e5f393/7ed789c8e58a52e846d1ed15986338e01ade8aae87a736f43877416a3428aa0d

روابط الغلاف- ١
book Banner [4 MB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [৪ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/HbS4wjDfqNFqwGQ
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti-3%20Book%20Cover.png
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2v896b14468e6445adb0e455a65be1e92a
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=w6b0n2a5k2
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/a89a4453-8599-47e9-bc01-1de54c9581f0/df25e45e0c885edfeef04d50e38381e431d7ff1cff5cb9bcafc85a23bd4a2593

 

روابط الغلاف-٢
Banner [631 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৬৩১ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/H8y6HkBAPd28nWy
লিংক-২ : https://archive.org/download/sotabdir_chukti_3/SotabdirChukti-3%20banner.png
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d3m2v1a3186c5f37c432cb750d7ddf211157d
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=n8b9j3n5m6
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/2143d1bd-98df-40ee-9972-b84c9f8d8fec/15ccf717672b0cd16cbb41205802d9dd844a93e496a9833e0f0acae615d9179f

 

 

*******

 

শতাব্দীর চুক্তি

নাকি

বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?

 

পর্ব – ০৩

 

 

শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ

 

 

মূল প্রকাশনা সম্পর্কিত কিছু তথ্য

মূল নাম:

صفقة القرن أم حملات القرون (الحلقة الثالثة) : للشيخ أيمن الظواهري حفظه الله

ভিডিও দৈর্ঘ্য: ১৬:৩৬ মিনিট

প্রকাশের তারিখ: রজব, ১৪৪৩ হিজরি

প্রকাশক: আস সাহাব মিডিয়া

 

 

 

بسم الله والحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وصحبه ومن والاه

সকল প্রশংসা কেবল আল্লাহর জন্য। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তার পরিবার, সাহাবায়ে কেরাম এবং তার সকল ‍অনুসারীদের উপর।

সমগ্র পৃথিবীর মুসলিম ভাই ও বোনেরা!

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

এটি “শতাব্দীর চুক্তি নাকি বহু শতাব্দীর ক্রুসেড” সিরিজের তৃতীয় পর্ব। পূর্ববর্তী দুইটি পর্বে আমি সংক্ষিপ্তভাবে ইসলাম ও ক্রুসেডের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কতিপয় প্রধান দিক নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমি ক্রুসেডারদের মোকাবেলা করার সম্ভাব্য কিছু পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমি আরও উল্লেখ করেছিলাম যে, বুঝার সুবিধার্থে এই আলোচনাকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হবে।

প্রথমত: দাওয়াত সচেতনতার জিহাদ।

দ্বিতীয়ত: প্রতিরোধ জিহাদ এবং শত্রুকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জিহাদ।

আমি ‘দাওয়াত ও সচেতনতার জিহাদ’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমি আরও উল্লেখ করেছিলাম, যেহেতু এই আলোচনাটি বেশ বড় তাই বিষয়টিকে সংক্ষিপ্ত ও সহজ করার উদ্দেশ্যে কয়েকটি পয়েন্টের ভিত্তিতে আলোচনা করা হবে। আমরা ধারাবাহিক ভাবে নিম্নলিখিত পয়েন্টগুলোর উপর আলোকপাত করব ইনশা আল্লাহ।

সচেতনতা তৈরির জিহাদ

উম্মাহর তরবিয়ত ঠিক করার জিহাদ

দাওয়াতের লড়াই

রাজনৈতিক জিহাদ

-(উম্মাহর) ঐক্যের গুরুত্ব

আমি ‘সচেতনতা তৈরির জিহাদ’ – এই পয়েন্টটি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আরও বলেছিলাম যে, বিষয়টিকে বুঝার জন্য নিম্নলিখিত ৩ প্রশ্নের উত্তর প্রদানের মাধ্যমে আমরা এই বিষয়টি বিশ্লেষণ করব:

১ম প্রশ্ন: আমাদের প্রকৃত শত্রু কারা?

২য় প্রশ্ন: ‘আল ওয়ালা ওয়াল বারা (আল্লাহর জন্যই বন্ধুত্ব আল্লাহর জন্যই শত্রুতা)’ –এর আকীদাকে আমরা কীভাবে আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করবো?

৩য় প্রশ্ন: আমরা কাকে আমাদের পথ প্রদর্শক ও আমির হিসেবে গ্রহণ করবো?

অত:পর আমি প্রথম প্রশ্ন: ‘আমাদের প্রকৃত শত্রু কারা?’ – এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ আমি ‘সচেতনতা তৈরির জিহাদ’ অংশের দ্বিতীয় প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ। আমাদের দ্বিতীয় প্রশ্ন – আল ওয়ালা ওয়াল বারা (আল্লাহর জন্যই বন্ধুত্ব আল্লাহর জন্যই শত্রুতা)’ –এর আকীদাকে আমরা কীভাবে আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করবো?

শুরুতেই আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করছি যে, আমার এই বার্তাটি যেন আম ভাবে মুসলিম উম্মাহর সকল জনসাধারণের নিকট পৌঁছে দেন। বিশেষ করে উম্মাহর ঐ অংশের কাছে পৌঁছে দেন, যারা মুসলিম উম্মাহর এই পরাজিত ও লাঞ্ছনার অবস্থাকে ভবিষ্যতে ‘বিজয়’ ও ‘সম্মানে’ রূপান্তর করতে আগ্রহী।

উম্মাহর এই অংশটি উম্মাহর সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরির যোগ্যতা রাখে। জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যও এই দলটি উপযুক্ত। এই দলটি যদি কুরআনকে আঁকড়ে ধরতে পারে, চলমান সংঘাতের কারণ ও প্রকৃতি বুঝতে পারে, মতানৈক্য, ফ্যাসাদ ও ব্যক্তি কেন্দ্রিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা  অতিক্রম করতে পারে এবং সর্বক্ষেত্রে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলতে পারে – তবে আল্লাহর ইচ্ছায় বিজয় তাদের সঙ্গী হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ।

উম্মাহর অবস্থার পরিবর্তনের এই বিপ্লবে যোগ্য নেতৃত্ব লাগবে। এই নেতৃত্বের শরিয়তের মূলনীতিসমূহ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। চলমান সংঘর্ষের প্রকৃতি ও ময়দানের বাস্তবতা বুঝতে হবে। উম্মাহর সামগ্রিক অবস্থার সম্যক জ্ঞানও থাকতে হবে। এমন একটি নেতৃত্ব উম্মাহর অবস্থার পরিবর্তনের বিপ্লবের জন্য আবশ্যকীয়। এমন যোগ্য নেতৃত্ব ছাড়া উম্মাহর অবস্থা পরিবর্তনের বিপ্লব হবে – সেই আলোড়ন সৃষ্টিকারী প্রবাহের মতো, যা দ্রুতই জলাভূমিতে বিলীন হয়ে যায়।

বলিষ্ঠ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বহীন বিপ্লবের গায়ে পরাজয়-ই লেখা থাকে। আমাদের এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন যারা সত্যিকার বিজয় তথা ইসলামের বিজয়ের জন্য কুরবানি করবে। এমন নেতৃত্ববিহীন বিপ্লব শুরুতেই তার পথ হারিয়ে ফেলে এবং হুমকির মুখে পশ্চাদপসরণ করে। সেইসাথে প্রকৃত বিজয় তথা ‘ইসলামের বিজয়কে  উৎসর্গ করে ফেলে।

যে বিপ্লব উপযুক্ত সময়ে তার কর্মসূচীকে ‘সশস্ত্র সংঘাতে’ রূপান্তর করতে পারে না, সেটি এমন এক বিপ্লব যার ভাগ্যে হত্যা ও বন্দিত্বের স্বীকার হওয়াই নির্ধারিত। যে ব্যক্তি নিজেকে বিপ্লবী/ মুজাহিদ বলে দাবি করে, আবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংস্থাগুলির করুণার দ্বারা স্বীয় আশা পূরণের স্বপ্ন দেখে, সে এমন এক বিপ্লবী যে একজন ভিক্ষুক এবং ভিক্ষুক থাকাতেই সে সন্তুষ্ট।

আমি যে প্রশ্নটি উত্থাপন করেছিলাম সেই প্রশ্নে ফিরে আসি। আল ওয়ালা ওয়াল বারা (আল্লাহর জন্যই বন্ধুত্ব আল্লাহর জন্যই শত্রুতা)’ –এর আকীদাকে আমরা কীভাবে আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করবো?

সাধারণত, ‘আল ওয়ালা ওয়াল বারা’ এর কথা যখন বলা হয়, তখন অনেকের বা অধিকাংশের মনে কাফের, মুরতাদ, মুনাফিক ও তাদের মতো অন্যান্যদের সাথে আচরণ কেমন হবে সে বিষয়টি চলে আসে।

আমি আমার শ্রোতাদের এ বিষয়টি মনে করিয়ে দিতে চাই এবং স্পষ্ট করতে চাই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন –

وَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَىٰ تَنفَعُ الْمُؤْمِنِينَ

“অর্থঃ এবং স্মরণ করিয়ে দিন; কেননা, স্মরণ করিয়ে দেয়া মুমিনদের উপকারে আসবে”। (সুরা যারিয়া’ত ৫১:৫৫)

‘আল ওয়ালা ওয়াল বারা – আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও শত্রুতা’ এর প্রথম অংশ হলো ‘আল ওয়ালা’ অর্থাৎ আল্লাহর জন্য বিশ্বাসীদের সাথে বন্ধুত্ব বা বিশ্বাসীদের প্রতি আনুগত্য। আর এই বিশ্বাসীদের মধ্যে রয়েছে নেককার, পাপাচারী এবং বিদআতি। তাদের সকলের সাথেই বন্ধুত্ব রক্ষা করা ওয়াজিব। যখন তারা নিপীড়িত হবে, বিশেষত যদি তারা তাদের দ্বীন রক্ষার জন্যও উঠে দাড়ায়, তখন তাদের সাহায্য করতে হবে। এমনকি তারা যদি শুধুমাত্র তাদের পার্থিব অধিকার রক্ষার জন্যও উঠে দাড়ায়, তবুও তাদের সাহায্য ও সমর্থন করতে হবে।

মুসলিম বা অমুসলিম – যাদের উপর জুলুম করা হয়েছে, তাদের সকলের পাশে আমাদেরকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে হবে। নিজেদের উপর হওয়া অত্যাচার থেকে তারা প্রতিকার পেতে চাইলে তাদেরকে সাহায্য ও সমর্থন করতে হবে। কারণ এটাই আমাদের দ্বীন। এটাই আমাদের নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «شَهِدْتُ مَعَ عُمُومَتِي حِلْفَ الْمُطَيَّبِينَ، فَمَا أُحِبُّ أَنْ أَنْكُثَهُ، وَأَنَّ لِي حُمْرَ النَّعَمِ»

“আবদুর রহমান ইবনে আওফ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ

আমি আমার চাচাদের সাথে মুতাইয়্যাবীনের চুক্তিতে (হিলফুল ফুযূল) শরীক ছিলাম। বহুমূল্য লাল উটের বিনিময়েও তা লঙ্ঘন করা আমার পছন্দনীয় নয়”। (মুসনাদে আহমাদ: হাদিস নং ১৬৫৫; মুসতাদরাকে হাকিম: ২৮৭০; হাদিসটি সহীহ। )

তিনি আরও বলেন যে, “আমি আব্দুল্লাহ বিন জাদ‘আনের ঘরে হওয়া একটি শপথের সাক্ষী ছিলাম। এটা আমার কাছে একপাল লাল উটের চেয়েও প্রিয়। আর যদি আমাকে ইসলামের যুগেও এমন একটি শপথের জন্য আহবান করা হয়, আমি আন্তরিকভাবে এই আহবানে সাড়া দিব।” (শায়খ আলবানী হাদিসটি সহীহ বলেছেন)

হিলফুল ফুযূল শীর্ষক চুক্তিটি ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে মক্কায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তাতে মক্কার সকল নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষকে সাহায্য করার জন্য কুরাইশিরা শপথ করেছিল।

ইবনে ইসহাক, মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বিন হারিস আল তায়মী থেকে বর্ণনা করেন:

“হুসাইন বিন আলী বিন আবু তালিব এবং ওয়ালীদ বিন উতবা বিন আবু সুফিয়ান এর মাঝে ‘যুল মারওয়া’র সম্পদ নিয়ে বিরোধ হয়েছিল। একবার দুজনে টাকার হিসাব নিয়ে তর্ক করছিলেন। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগ করেছিলেন। সেসময় আমি তাদের সাথে ছিলাম।

মদিনার তখনকার গভর্নর ছিল ‘ওয়ালীদ’। সে স্বীয় চাচা মুআবিয়া বিন আবু সুফিয়ান দ্বারা নিযুক্ত হয়েছিল। ওয়ালীদ স্বীয় কর্তৃত্বের অধিকারে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর উপর অবিচার করেছিল। হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে বললেন: আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, আমার হকের ক্ষেত্রে ইনসাফ করুন। অন্যথায় আমি আমার তলোয়ার হাতে নিয়ে আল্লাহর রাসূলের মসজিদে দাঁড়াব এবং হিলফুল ফুযূল সন্ধিচুক্তির ভিত্তিতে (আমাকে সাহায্য করার) আহবান জানাব।

তিনি (মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম) বলেন, আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের তখন ওয়ালীদের নিকটেই ছিলেন। হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর কথা শুনে তিনি বলেন, ‘আমিও আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি! যদি তিনি (হুসাইন) হিলফুল ফুযূল এর ভিত্তিতে আহবান জানান, তবে আমিও আমার তরবারি হাতে নিয়ে তার পাশে দাঁড়াবো। যতক্ষণ না যথাযথভাবে তার হক আদায় হবে, ততক্ষণ আমরা তার পাশে থাকবো অথবা আমরা সকলেই মারা যাব।

মিসওয়ার বিন মাখরামা বিন নাওফেল এর কাছে এই সংবাদ পৌঁছালে তিনিও একই কথা বললেন। আব্দুর রহমান বিন উসমান বিন উবায়দুল্লাহ তায়মী এর নিকট এই খবর পৌঁছলে তিনিও অনুরূপ বললেন।

ওয়ালীদ বিন উতবার কাছে যখন এই সংবাদ পৌঁছালো, সে হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু এর হক যথার্থভাবে আদায় করলো – ফলে তিনি সন্তুষ্ট হলেন”[1]

ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنِ اسْتَعَاذَ بِاللَّهِ فَأَعِيذُوهُ، وَمَنْ سَأَلَ بِاللَّهِ فَأَعْطُوهُ، وَمَنْ أَتَى إِلَيْكُمْ مَعْرُوفًا فَكَافِئُوهُ، فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فَادْعُوا لَهُ، حَتَّى يَعْلَمَ أَنْ قَدْ كَافَأْتُمُوهُ»

“যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে আশ্রয় প্রার্থনা করে তাকে আশ্রয় দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে কিছু প্রার্থনা করে তাকে দান করো। যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে ভালো ব্যবহার করে তোমরা তার প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেয়ার মত কিছু না থাকলে তার জন্য দোয়া করো, যাতে সে অনুভব করতে পারে যে, তোমরা তার ভালো কাজের প্রতিদান দিয়েছ”। (মুসতাদরাকে হাকিম,  ২/৬৩; সুনানে আবু দাউদ, ৩/৭৫০)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে কুদসিতে আল্লাহর কথা বর্ণনা করে বলেন,

يا عبادي إني حرمت الظلم على نفسي وجعلته بينكم محرماً، فلا تظالموا

“হে আমার বান্দা, আমি নিজের ওপর জুলুম হারাম করেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি। অতএব তোমরা একে অপরের ওপর জুলুম করো না”। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭৩৭)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেন,

عَنْ سَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ : مَنْ قُتِلَ دُونَ مَالِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ قُتِلَ دُونَ أَهْلِهِ أَوْ دُونَ دَمِهِ أَوْ دُونَ دِينِهِ فَهُوَ شَهِيدٌ

“সাঈদ বিন যায়দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিতঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিজের মাল রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় সে শহীদ, যে নিজের পরিবার রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় সে শহীদ, যে তার নিজের প্রাণ রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় সেও শহীদ এবং যে নিজের দ্বীন রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয় সে শহীদ।” (আবু দাঊদ ৪৭৭৪, তিরমিযী ১৪২১, নাসাঈ ৪০৯৫)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, “যে তার ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গিয়ে মারা গেল, সে শহীদ”।

সুতরাং কাউকে অন্যায়ভাবে বন্দী করে রাখা হলে, আমাদের তাকে সাহায্য করতে হবে। যে কোন শ্রমিক তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে, আমাদের তাকে সহায়তা করতে হবে। যে কোন গ্রামের অধিবাসীরা অন্যায়ভাবে প্রাপ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হলে, আমাদেরকে তাদের সাহায্যে এগিয়ে যেতে হবে। আমেরিকার দাসদের হাতে নিহত প্রত্যেক ব্যক্তির বদলা আমাদের নিতে হবে। অন্যায় আগ্রাসনের কারণে কোন মহিলা, যুবতী, এতিম বা বিধবা – অপমানিত হলে বা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে, আমাদের অবশ্যই তাদের সাহায্য করতে হবে। এককথায় ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত প্রত্যেক ব্যক্তি, সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক – আমাদের সাহায্য ও সমর্থন পাবার হকদার।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিমদের প্রতি অন্যায়-অবিচার কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। অনুরূপভাবে কোন মুসলিমকে অপমান করা, তাচ্ছিল্য করা, তাকে শত্রুর কাছে সমর্পণ করাকেও – নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন,

الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ، لَا يَظْلِمُهُ، وَلَا يَخْذُلُهُ، وَلَا يَكْذِبُهُ، وَلَا يَحْقِرُهُ

“মুসলিম মুসলিমের ভাই, সে তার উপর যুলুম করে না এবং তাকে সঙ্গীহীন ও সহায়হীনভাবে ছেড়ে দেয় না। সে তার কাছে মিথ্যা বলে না ও তাকে অপমান করে না”। (মুসলিমঃ ২৫৬৪)

ইমাম বুখারী রহিমাহুল্লাহ’র রেওয়ায়েতে এসেছে, “প্রত্যেক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তার প্রতি যুলুম করে না এবং তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে না অর্থাৎ তাকে কুফফারদের হাতে সমর্পণ করে না”।

তাই কাফিরদের হাতে বন্দী প্রত্যেক মুসলিমকে উদ্ধার করা আমাদের কর্তব্য। এই বন্দী নেককার, পাপাচারী অথবা বিদআতি – যাই হোক না কেন। সেক্ষেত্রে একজন মুসলিম বোন যদি তাকে কুফফারদের থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সাহায্য চায়, তাহলে বিষয়টি কেমন হবে?

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ: دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ

“এক মুসলিমের রক্ত, সম্পদ ও মান-সম্মান অন্য মুসলিমের জন্য হারাম”। (মুসলিমঃ ২৫৬৪)

এই হল মুমিনদের সাথে বন্ধুত্বের অবস্থাসমূহ। বর্তমানে আল্লাহর জন্য মুমিনদের সাথে বন্ধুত্বের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু বিষয় আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাই। মুসলিমদের একটি দল – অন্যায়ভাবে মুসলিমদের রক্তপাতকে হালাল মনে করছে। তারা মুসলিমদের সম্মান নষ্ট করছে, তাদেরকে যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে এবং মুজাহিদদের বিরুদ্ধে সাধারণ মুসলিমদের উস্কানি দিচ্ছে। সর্বোপরি ফাতাওয়া ও বিবৃতি দিয়ে এসকল কর্মকাণ্ডকে জায়েজ করার চেষ্টা করা। এর চেয়েও ভয়ংকর বিষয় হল – একজন মুসলিম তার অস্ত্র বের করছে অপর মুসলিম ভাইকে হত্যা করার জন্য। অথচ আকাশ থেকে বাছ-বিচার ছাড়াই মুসলিমদের উপর ক্রমাগত বোমা ফেলা হচ্ছে।

আমাদেরকে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহ অনুসরণ করতে হবে। তিনি বলেছেন:

فَقالَ: لا تَرْجِعُوا بَعْدي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقابَ بَعْضٍ

‘আমার পরে তোমরা একে অপরের গর্দান কাটাকাটি করে কাফির হয়ে যেও না।’ (বুখারী পর্ব ৩/৪৩ হাঃ ১২১, মুসলিম ১/২৯, হাঃ ৬৫, আহমাদ ১৯২৩৭)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি মুজিযা হচ্ছে – তিনি আমাদেরকে খাওয়ারিজ সম্প্রদায়ের আগমনের কথা আগেই জানিয়েছেন। তিনি বলেন: ‘লোকদের মধ্যে যখন মতানৈক্য দেখা দিবে, তাদের আবির্ভাব হবে’।

এখানে আমি একটু বিরতি দিতে চাই এবং একটু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্পষ্ট করতে চাই। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই – আল কায়দার কোন কার্যক্রমের দ্বারা সাধারণ মুসলিমদের রক্ত যেন না ঝরে – এব্যাপারে আল কায়দা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। সাধারণ মুসলিমদের ব্যাপারে আল কায়দা জামাআতের মানহাজ পূর্ব থেকেই এমন ছিল এবং আলহামদুলিল্লাহ এখনও এমনই আছে।

আমাদের মূলনীতি হল – সাধারণ মুসলমানদের রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন কার্যক্রম আমরা এড়িয়ে যাব। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আল কায়দার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ সম্পর্কে একাধিকবার স্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট বিবৃতি জারি করেছে। যারাই এই সংগঠনের কাছে বাইয়াত দিয়েছেন এবং যারা আমাদের উপদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাদেরকে অবশ্যই আমাদের ‍দিকনির্দেশনা অনুসারে কাজ করতে হবে। কারো প্রতি ধারালো ছুরি কিংবা তীক্ষ্ণ বুলেট তাক করে হুমকি দেওয়ার কিংবা বাধ্য করার অধিকার আমাদের নেই। আমাদের ও আমাদের ভাইদের মাঝে আছে কেবল (ঈমানী ভ্রাতৃত্ব রক্ষার) অঙ্গীকার, চুক্তি ও পরকালের ভয়।

আমার বক্তব্যের সারকথা হলো – আমাদের অবশ্যই নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আর নিপীড়িতরা যদি মুসলিম হয় তাহলে এই সহযোগিতার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। আর জুলুমকারী যদি শীর্ষস্থানীয় মুরতাদ, বিশ্বাসঘাতক ও পশ্চিমাদের দালাল হয়, তাহলে এই মাজলুমদের সহায়তা করা অপরিহার্য হয়ে দাড়ায়।

অন্যায়ের মোকাবেলা করার জন্যই সাহাবীগণ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও তাবেয়ীগণ রহিমাহুল্লাহ – উমাইয়া খেলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম মালিক রহিমাহুল্লাহ ‘খেলাফতে বনী আব্বাসের’ বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়েছিলেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহিমাহুল্লাহ, আহমাদ বিন নাসর আল খুযাঈ  রহিমাহুল্লাহ’র প্রশংসা করেছিলেন।

ইরাকের ফকীহগণ ইবনুল আশ’আসের সাথে বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন। ‘যাওয়িআহ’[2] এর যুদ্ধে ক্বারীগণ অর্থাৎ আলিমগণ লোকদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতেন, ‘হে লোকসকল! খারাপ লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা বেমানান। সুতরাং নিজ ধর্ম ও মুসলিম বিশ্বকে রক্ষার জন্য যুদ্ধ করুন’।

ইমাম আহমাদ রহিমাহুল্লাহ বলেন: ‘আবু বকর বিন আইয়াশ আমাদেরকে বলেছেন: আলিমগণ বলতেন, জামাজিম[3] ও হাররাহ[4] এর বিদ্রোহীদের চেয়ে উত্তম কোন বিদ্রোহ হয়নি।’

যদি ইয়াজিদ ও আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের মতো শাসকদের বিরুদ্ধে জমহুর ফকীহগণ বিদ্রোহ করতে পারেন, তাহলে আমরা কেন এই মুরতাদ, বিশ্বাসঘাতক, দালাল, চোর এবং অধঃপতিতদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে জাতিকে সমর্থন করবো না?

অতএব, মুসলিম উম্মাহকে সাহায্য করা আমাদের কর্তব্য। এই সাহায্য এই জন্য করতে হবে যেন মুসলিম উম্মাহ তার ধর্ম ও পার্থিব বিষয়াবলীর বিষয়ে অতীতের গৌরবোজ্জ্বল অবস্থানে ফিরে আসতে পারে। উম্মাহকে সাহায্য করতে হবে – যেন তারা এসব চোরদের হাত থেকে তাদের অধিকার ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয় এবং উম্মাহর আগ্রহ ও উদ্দীপনা যেন ধর্মনিরপেক্ষবাদী ও অবিশ্বাসীদের দ্বারা কলুষিত না হয়।

মুসলিম জাতিকে সমর্থনের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস ও শরিয়াহ শাসনের সুফলের বাস্তব উদাহরণ উম্মাহর সামনে উপস্থাপন করতে পারি। আমরা উম্মাহর সামনে এই উদাহরণ রাখতে পারবো যে, পবিত্র শরিয়াহ আমাদেরকে জালিমদের প্রতিহত করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা, শূরা গঠন ও জন্মভূমিকে মুক্ত করার নির্দেশ দেয়।

উম্মাহর সাধারণ মুসলিমরা আকীদা এবং ন্যায়বিচার ও দুর্নীতি প্রতিরোধের মধ্যকার এই যোগসূত্রটি আজ উপলব্ধি করতে পারছে। তাই তারা স্লোগান তুলেছে, ‘আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নাই। মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল, সিসি আল্লাহর শত্রু’। এ থেকে বুঝা যায় যে, মুসলিম উম্মাহ অন্যায়ের প্রতিরোধে দ্বীন-ধর্মকে আঁকড়ে ধরছে। এইভাবে সাধারণ জনগণের ‘উপলব্ধি’ আজ ইসলামী কাজের সাথে সম্পৃক্ত অনেক দলের উপলব্ধিকেও ছাড়িয়ে গেছে।

এই স্লোগানের আগে শামে আমাদের জনগণের স্লোগান ছিল: ‘আমাদের চিরদিনের নেতা, সায়্যিদুনা মুহাম্মাদ’।

এপর্যন্ত আমরা আল ওয়ালা তথা মুমিনদের সাথে বন্ধুত্বের বিষয়ে আলোচনা করলাম। ‘আল ওয়ালা ওয়াল বারা’ এর দ্বিতীয় অংশ হলো – কাফিরদের সাথে সম্পর্ক ছিন্নকরন।

মুসলিমদের শত্রুদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে আমাদেরকে এটি অর্জন করতে হবে। সম্পর্ক ছিন্নকরণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে সেই দেশগুলো, যারা পশ্চিমাদের হয়ে মুসলিম দেশগুলোতে বড় বড় অপরাধের সাথে জড়িত। এরা শরিয়াহর বিপক্ষে যুদ্ধ করে, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বিশৃঙ্খলার বিষবাস্প ছড়ায়, কাফিরদের সামরিক ঘাঁটিগুলোর জন্য নিজ দেশকে উন্মুক্ত করে দেয়, ইসরায়েলের সাথে প্রকাশ্যে ও গোপনে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং মুসলিম উম্মাহর অর্থ ও সম্পদ চুরি করে।

এসকল জাতিসত্তা ও রাষ্ট্রগুলির দুর্নীতি ও ধ্বংসাত্মক কাজগুলো প্রকাশ করতে হবে। তাদের প্রতারণার মুখোশ খুলে দিতে হবে। মুসলিম উম্মাহর কাছে স্পষ্ট করতে হবে যে, এসকল জাতিসত্তা ও রাষ্ট্রসমূহ আন্তর্জাতিক প্রধান অপরাধী শক্তিগুলোর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।

তারা কতক মাশায়েখ, পাগড়িওয়ালা, দাড়িওয়ালাদের মাধ্যমে ইসলামকে এর ভিতর থেকে আঘাত করতে চায়। এসকল মাশায়েখরা আল্লাহকে ভয় করে না। ক্রুসেডারদের দালালদের হয়ে এরা ভ্রান্ত বিশ্বাস জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে শত্রুর সেবা করছে। দ্বীনকে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করতে এদের মধ্যে কোন লজ্জাবোধও কাজ করে না।

পূর্বের বৈঠকে আমি এ বিষয়ে অনেকগুলো উদাহরণ উল্লেখ করেছি। আজ আমি আরও কিছু নির্লজ্জ ও জঘন্য উদাহরণ যোগ করছি। উদাহরণস্বরূপ (লিবিয়ায় আমিরাতের সালাফি সমর্থিত) হাফতার, (মিশরে) সিসি, গাদ্দাফি, সৌদি রাজ পরিবার এবং আমিরাতের সালাফিবাদের কথা বলা যায়। এদের সালাফিয়্যাহ – ভিক্ষাবৃত্তির সালাফিয়্যাহ। পরজীবিতা, প্রশ্রয়, ঘুষ এবং হারাম টাকা খাওয়া ভাড়াটে গোয়েন্দা ও গোয়েন্দাদের এজেন্ট-পন্থী সালাফিয়্যাহ।

এটি ছিল আমাদের ২য় প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর। প্রশ্নটি ছিল – আল ওয়ালা ওয়াল বারা (আল্লাহর জন্যই বন্ধুত্ব ও আল্লাহর জন্যই শত্রুতা)’ –এর আকীদাকে আমরা কীভাবে আমাদের জীবন যাপনের পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করবো?

আজ এই পর্যন্তই। আল্লাহ চাইলে তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর নিয়ে পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ। আমাদের তৃতীয় প্রশ্নটি ছিল – আমরা কাদের অনুসরণ-অনুকরণ করবো?

وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين،

وصلى الله على سيدنا محمد وآله وصحبه وسلم.

والسلام عليكم ورحمة الله وبركاته.

************

 

১ সহীহ সীরাতুন নাবাবিয়্যাহ, পৃ. ৩৭; শায়খ আলবানী ঘটনাটি সহীহ বলেছেন।

২ ৮২ হিজরির মোহররম মাসে ইবনুল আশআস ও হাজ্জাজ ইবন ইউসুফের মাঝে এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধে ইবনুল আশআস পরাজিত হন।

৩ বনী উমাইয়া শাসকদের বিরুদ্ধে আব্দুর রহমান ইবনু আশ‘আস এর নেতৃত্বে একটি বিদ্রোহ হয়েছিল।  ৮৩ হিজরিতে কুফা ও বসরার মাঝে অবস্থিত দাইরুল জামাজিম নামক স্থানে তার ও হাজ্জাজ ইবন ইউসুফ এর মাঝে লড়াই সংঘটিত হয়েছিল। এখানে সেই বিদ্রোহীদের প্রশংসা করা হচ্ছে।

৪ হাররাহ এর ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা। কারবালার ময়দানে হুসাইন রা. এর শাহাদাতের পর মদিনার অধিবাসীগণ ইয়াজিদ এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। তারা ইয়াজিদ নিযুক্ত প্রশাসক উসমান ইবন আবী সুফিয়ান ও তার সাথী বনী উমাইয়ার যারা ছিলো তাদেরকে মদিনা থেকে বের করে দেন। ইয়াজিদ তখন শাম থেকে মুসলিম ইবনু উকবা এর নেতৃত্বে একটি বাহিনী প্রেরণ করে। তাদের সাথে মদিনার অধিবাসী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়।  অনেক সাহাবী, সাহাবীদের সন্তান ও তাবেয়ীগণ সেই যুদ্ধে শহীদ হন। ৬৩ হিজরিতে এই ঘটনাটি ঘটেছিল।

 

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − fifteen =

Back to top button