যুদ্ধে বেশি হত্যা করতে পারা – এটা বিজয়ের কোন লক্ষণ নয়। যখন আপনারা দেখবেন, একজন সর্বদা বেশি হত্যা করে, বুঝবেন সে বিজয়ী নয়।
যখন কেউ প্রবেশ করে উদ্ধার করে নিজের সাথে নিয়ে যেতে পারে, তখন সে বিজয়ী। কিন্তু যখন সে বেশি হত্যা করে, তখন সে বিজয়ী নয়। আমরা দেখতে পাই শত্রু এখন হত্যা বেশি করছে, জমায়েতগুলোতে বেশি বেশি আক্রমণ করছে। এর অর্থ কী?
এর মানে হল – এখনো সে ভয়ের মাঝে আছে। (হামলা) যখনই তীব্র করে, তখন তার অর্থ হল আমরা সরে পড়েছি, তাই সে আক্রমণের তীব্রতা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এটাই সাধারণ নীতি। বিজয়ীর অর্থ অধিক হত্যাকারী নয়।
যুদ্ধ অব্যাহত থাকা – এটাই বিপরীত পক্ষ বিজয়ী না হওয়ার দলিল। তাই যখন দেখবেন আপনি শত্রুর উপর আঘাত হানার পরই শত্রু আপনার উপর দ্বিতীয় আঘাত হানে, তখন ধরে নিন যে, আপনি বিজয়ী। ভাইয়েরা সবচেয়ে বড় যে ভুলটিতে পতিত হন সেটা হল – শত্রু দ্বিতীয় হামলার জন্য বাহিনী প্রেরণ করলেই ভাইরা বলে উঠেন, ‘আর কতদিন?’
এই হামলা তো এ কারণেই এসেছে যে, আপনি প্রথম হামলায় বিজয়ী হয়েছেন। একারণেই দ্বিতীয় বাহিনী প্রেরণ করা হয়েছে। এর অর্থ হল, আপনি প্রথম হামলায় বিজয়ী হয়েছেন। তাই যখন দেখবেন শত্রু দ্বিতীয় বাহিনী প্রেরণ করেছে, তখন তাকবীর দিন ‘আল্লাহু আকবার’। আমরা প্রথম হামলায় বিজয়ী হয়েছি। দ্বিতীয় যুদ্ধ আরো সহজ হবে ইনশাআল্লাহ।
যাইহোক, আমরা যদি সংশ্লিষ্ট যুদ্ধের ভূমিগুলোর দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব – অনেক মুজাহিদ নিহত হয়েছেন। অনেক নারী আহত ও নিহত হয়েছেন। অনেকের সম্মান লুণ্ঠিত হয়েছে। প্রায় প্রত্যেকেই অনেক দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। এটা দেখার পর আমাদের হৃদয় বেদনাক্রান্ত হয়ে যায়।
প্রকৃতপক্ষে তাদের (শত্রুদের) মাঝে এর চেয়ে বড় বেদনা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যদি চলমান ঘটনাবলী দেখি, তাহলে আমরা মুসলমানদের উপর আরো বেশি আঘাত দেখতে পাবো। (শত্রুদের আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার বিষয়টি মুসলিমদের আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সাথে) তুলনা করার জন্য নয় বরং এটার তো তুলনাই হয় না।
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আপনি তখনই বিজয় দেখতে পাবেন, যদি দিনশেষে আপনি দুই কল্যাণের যে কোন একটিতে থাকতে পারেন। এই ব্যাপারটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি শত্রু যদি বাহ্যত যুদ্ধে বিজয়ীও হয়, আর আপনি এখনো কাজে ব্যস্ত – তবে আপনি দুই কল্যাণের যেকোন একটির উপর আছেন তবে – আপনি বিজয়ী আর আপনার শত্রু পরাজিত।
অনেক সময় শত্রু যখন কোন একটি এলাকা দখল করে থাকে, তখন প্রশ্ন আসতে থাকে যে, ‘কখন শত্রু পরাজিত হবে’?
শত্রু তখনই পরাজিত হবে যখন আপনি বিজয়ী হবেন। এর থেকে দু’টি মাত্রা সামনে আসে- আপনি পরীক্ষাটিকে কিভাবে চিন্তা করেন। অর্থাৎ অনেক সময় এমন স্থানে মৃত্যু কাম্য হয় না, যেখানে মৃত্যু লেখা আছে।
এজন্য আপনি যখন যুদ্ধের দিকে তাকান, তখন আস্থাশীলের দৃষ্টিতে তাকান। আর শত্রু যখন যুদ্ধের দিকে তাকায়, তখন মিথ্যার দৃষ্টিতে তাকায়। আপনাকে বলবে: আমরা ৮০০ হত্যা করেছি। প্রকাশ্যে এমন বদলার কথা বলে, যা অন্তরে নেই। সেটাকে মিথ্যায় রূপান্তর করে। নিজ সাথীদেরকে ধোঁকা দেয়।
কিন্তু আমরা এমন নই। আমরা ‍যুদ্ধের লোক। আমরা আয়াতের বর্ণনানুযায়ী এবং প্রত্যক্ষ বাস্তবতার আলোকে বিজয়ী। মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ বলেন:
( قُلْ هَلْ تَرَبَّصُونَ بِنَا إِلا إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ) (التوبة : 52).
“বল, তোমরা কি আমাদের ব্যাপারে দু’টি কল্যাণের একটি ছাড়া অন্য কিছুর অপেক্ষা করছো…” (সূরা আত-তাওবাহ ৯:৫২)
চাই আমরা বিজয়ী হই বা নিহত হই – উভয় হিসেবেই আমরা বিজয়ী। আমরা যে যুদ্ধে জড়াই, তাতে এটাই যৌক্তিক যে, যুদ্ধ আমরা চালিয়ে গেলে বিজয় একদিন আসবেই।
সরকারী বাহিনী সর্বদা যুদ্ধকে চূড়ান্ত করতে চেষ্টা করে। কিন্তু আপনি যুদ্ধকে চূড়ান্ত করতে চেষ্টা করেন না। কারণ আপনার আকার দুর্বল। আপনার আকার ছোট। যখন আপনার সঙ্গীগণ ২০০০ টি অস্ত্র সংগ্রহ করেছে, তখন আপনার শত্রুরা চার লক্ষ অস্ত্র সংগ্রহ করেছে।
ইয়া আল্লাহ! অস্ত্র, সাঁজোয়া যান এবং বিমান দিয়ে সে সর্বদা যুদ্ধকে সংক্ষিপ্ত করে ফেলার চেষ্টা করে। তার লক্ষ্য থাকে – যুদ্ধ শেষ করে দ্রুত বের হয়ে যাবে। যুদ্ধ চলমান থাকা তার স্বার্থ নয়। আপনাকে বলবে, এটা চালিয়ে যাওয়া (আপনার পক্ষে) সম্ভব নয়। কারণ যতদিন অব্যাহত থাকবে, ততদিন তার ক্ষয় হতেই থাকবে। এই প্রকৃত বিজয়ের জন্যই আপনি অপেক্ষা করছেন। আপনি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অর্থাৎ আপনি যুদ্ধ চূড়ান্ত করতে পারলে করে ফেলুন। কেউ আপনাকে বলবে না যে, ‘আপনি যুদ্ধ চূড়ান্ত করবেন না’। কিন্তু পৃথিবীর নীতি অনুযায়ী বিশাল বড় ও শক্তিশালী এক বাহিনী কতগুলো বিষয়ের উপর ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং যুদ্ধ চূড়ান্ত করে ফেলতে চাইছে। তাই আপনি যুদ্ধ করুন এবং সরে পড়ুন, যেভাবে খালিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু সরে পড়েছেন।
কৌশলগুলো সেভাবেই কাজে লাগান, যেভাবে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাজে লাগিয়েছেন।
প্রতিদিন একটি কাফেলাকে আঘাত করবেন। অর্থাৎ আপনার পরিমাণ অনুযায়ী তার মোকাবেলা করবেন। আমি চাচ্ছি চলমান থাকা, আর আপনি বলছেন: ‘কতদিন পর্যন্ত যুদ্ধ করবো’?
আপনি আমাকে বলছেন, কখন আমরা বলবো – বিজয়। শত্রু তো এই কথার কারণেই পাগল। কিন্তু আপনি বের হয়েছেন। বিশ বছর মোকাবেলা করেছেন। এখন প্রশ্ন করছেন, ‘কতদিন পর্যন্ত যুদ্ধ করবো?’
ইবাদত তো এমনই। আল্লাহর শপথ, যখন আপনি জিহাদকে এমন আমল হিসেবে দেখবেন, যা আমাদেরকে জীবন দান করেছে – তখন কিভাবে আমরা তা ছাড়তে পারি?
আমরা কতদিন পর্যন্ত যুদ্ধ করবো? কেন, আমাদের আকাঙ্ক্ষা তো অন্যদের মত নয় যে, আমরা একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবো? অর্থাৎ খুব দুর্বল রাষ্ট্র। তড়িৎ সৃষ্ট রাষ্ট্র। এমনটা আমাদের লক্ষ্য নয়। এরা বিশ বছর যাবত ‍যুদ্ধে আছে। যুদ্ধ চলমান। কেউ কি নামাযের ইবাদত করে অস্থির হতে পারে?
একই কাহিনী জিহাদের ক্ষেত্রেও। দশদিন বিশ্রামে করবে, তারপর আবার ফিরে আসবে নতুন করে যুদ্ধ করতে। জিহাদ কিয়ামত পর্যন্ত চলমান থাকবে। এটা স্থায়ী ইবাদত। যতদিন রাত-দিন বাকি থাকবে, ততদিন জিহাদ চলমান থাকবে।
তাই আমাদের কেউ এসে যেন এই কথা না বলে যে, কখন আমরা চূড়ান্ত বিজয় লাভ করবো? আমরা চূড়ান্তকরণ চাই না। আমরা চাই, জিহাদের সকল শর্ত ও আরকান সহ জিহাদ চালিয়ে যাবো।
খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, শত্রু কীভাবে যন্ত্রণা ভোগ করছে। আল্লাহর শপথ, তারা এক মানসিক অশান্তিতে জীবন যাপন করে। কিন্তু মুজাহিদগণ এ অবস্থায় জীবন যাপন করে না।
এখান থেকেই শক্তি আসে। খুব সামান্য একটি গ্রুপ, বিশাল বড় দলকে আটকে রাখছে। কখন? যখন তারা ধৈর্যের পোষাকে সজ্জিত হয়েছে। যখন প্রকাশ না হওয়ার বিষয়টি গ্রহণ করেছে। এ দু’টি গুণ কিয়ামত পর্যন্ত আমাদের বৈশিষ্ট্য- সবর ও আত্মগোপন।

**********

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة الحكمة للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية (بنغلاديش)
আপনাদের দোয়ায়
আল হিকমাহ মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল কায়েদা উপমহাদেশ (বাংলাদেশ শাখা)
In your dua remember your brothers of
Al Hikmah Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]

জুন ৮, ২০২১

০ ৩,৩৮২ ৫ minutes read