অডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়াবাংলা প্রকাশনাশাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ

ইমামের সাথে অতিবাহিত দিন গুলো || পর্ব-০৪ || শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ

আন নাসর মিডিয়া
পরিবেশিত


ইমামুল মুজাহিদ শাইখ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ) এর
স্মৃতিচারণ


ইমামের সাথে অতিবাহিত দিনগুলো
পর্ব-০৪

শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ

ভিডিও ডাউনলোড করুন
মূল ফাইল [৭৯৩ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/B9wtL8iwKWf3cTH
http://www.mediafire.com/file/rk1pdkyctlwd2lx/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing.mp4/file
https://archive.org/download/ayam-mayal-ima-part-4-bangla-dubbing/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing.mp4

১০৮০ রেজুলেশন [২৪০ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/niER4qTTbZMZren
http://www.mediafire.com/file/ql5kz3jx0qaocop/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing-1080p.mp4/file
https://archive.org/download/ayam-mayal-ima-part-4-bangla-dubbing/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing-1080p.mp4

৭২০ রেজুলেশন [১৫৪ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/zcaAYoSaGnr93Tt
http://www.mediafire.com/file/9tto2s18j6l8qya/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing-720p.mp4/file
https://archive.org/download/ayam-mayal-ima-part-4-bangla-dubbing/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing-720p.mp4

৩৬০ রেজুলেশন [৬৯ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/TsBcT3EnZq2HCTr
http://www.mediafire.com/file/edjl7gfxfl13xk6/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing-360p.mp4/file
https://archive.org/download/ayam-mayal-ima-part-4-bangla-dubbing/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing-360p.mp4

3gp রেজুলেশন [৪৭ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/47yiK7qgxPXdr9e
http://www.mediafire.com/file/xzfssswb188dze6/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing.3gp/file
https://archive.org/download/ayam-mayal-ima-part-4-bangla-dubbing/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing.3gp

অডিও ডাউনলোড করুন [২৮ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/nGrnprqX7Zk6B7H
https://www.mediafire.com/file/vcwkdw40arcf65d/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing.mp3/file
https://archive.org/download/ayam-mayal-ima-part-4-bangla-dubbing/Ayam_Mayal_Ima_Part-4_Bangla_Dubbing.mp3

ব্যানার ডাউনলোড করুন [১১ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/Hyd5HFGGiqzMkCs
http://www.mediafire.com/file/35cp8r3hne97rw0/Bennar_04.jpg/file
https://archive.org/download/ayam-mayal-ima-part-4-bangla-dubbing/Bennar%2004.jpg

পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৮৯৭ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/cYZCRzpd9rp8seg
https://www.mediafire.com/file/74hrarap97x427g/Imamer_Sathe_Dingulo_-_Part_-_4.pdf/file
https://ia601405.us.archive.org/20/items/imamer-sathe-dingulo-part-4-banner/Imamer%20Sathe%20Dingulo%20-%20Part%20-%204.pdf

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৯৮৪ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/yk6xKR4yfMxwHHo
https://www.mediafire.com/file/g51in241sr7qhur/Imamer_Sathe_Dingulo_-_Part_-_4.docx/file

https://archive.org/download/imamer-sathe-dingulo-part-4-banner/Imamer%20Sathe%20Dingulo%20-%20Part%20-%204.docx

বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [২.৭৬ মেগাবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/JNSoEaJ5dwMii5k
https://www.mediafire.com/view/4skw0w154geqgnt/Imamer_Sathe_Dingulo_-_Part_-_4_Banner.jpg/file
https://ia801405.us.archive.org/20/items/imamer-sathe-dingulo-part-4-banner/Imamer%20Sathe%20Dingulo%20-%20Part%20-%204%20Banner.jpg

বুক কভার ডাউনলোড করুন [৯৪০ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/JqGAiLpF7rTYMkg
https://www.mediafire.com/view/dr71qmiyin5kmub/Imamer_Sathe_Dingulo_-_Part_-_4.jpg/file
https://archive.org/download/imamer-sathe-dingulo-part-4-banner/Imamer%20Sathe%20Dingulo%20-%20Part%20-%204.jpg

—————–————
اپنی دعاؤں میں ہمیں یاد رکھيں
اداره النصر براۓ نشر و اشاعت
القاعدہ برِّ صغیر(بنگلادیش)

আপনাদের দোয়ায়
আন নাসর মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল কায়েদা উপমহাদেশ (বাংলাদেশ শাখা)

In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]


ইমামুল মুজাহিদ শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. এর স্মৃতিচারণ

ইমামের সাথে অতিবাহিত দিনগুলো

পর্ব০৪

-শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ

অনুবাদ পরিবেশনা

আল্লাহর নামে শুরু করছি। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন, সাহাবি ও তাঁদের সাথে যারা বন্ধুত্ব রাখে তাদের ওপর।

সারা দুনিয়ার আমার মুসলিম ভাইয়েরা,

আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

পরসমাচার-

এটি ‘ইমামের সাথে অতিবাহিত দিনগুলো’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার ৪র্থ পর্ব। এখানে আমি শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ-এর সাথে অতিবাহিত দিনগুলো নিয়ে কিছু উত্তম স্মৃতিচারণ করব। (আল্লাহ তাআলা শায়খের ওপর তাঁর রহমতকে প্রশস্ত করে দিন এবং আমাদেরকেও তার সাথে একীভূত করুন।)

এই পর্বের শুরুতে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করতে চাই। আর তা হলো: পূর্বের হালাকাগুলোর মতো এই হালাকাতেও আমি সেসব শুহাদাদের নিয়ে আলোচনা করতে চাই, যারা আমার সমসাময়িক ছিল এবং যাদের সাথে আমার অনেক স্মৃতিময় ঘটনা রয়েছে। তাদের নিয়ে আলোচনা করব বিধায় জীবিতদের ব্যাপারে আমার ভালো জানাশুনা থাকা সত্ত্বেও তাদের নিয়ে আপাতত আলোচনা করছি না।

কেননা যুদ্ধ তো চলছেই, আর শত্রুরাও আমাদের যেকোনো সংবাদ সংগ্রহের জন্য ওত পেতে আছে। ফলে এমনও হতে পারে যে, এসব সংবাদের সূত্র ধরে ওরা মুসলিম, মুজাহিদ, অথবা জিহাদ ও মুজাহিদদের সাহায্যকারীদের কষ্ট দেবে। আমি এবং আমার ভাইয়েরা জিহাদ ও মুজাহিদদের জন্য এমন কঠিন ও সংকটময় মুহূর্তে তাদের কোরবানির কথা ভুলতে পারব না।

এ যুগে মুমিন মুজাহিদদের বাহিনীগুলো স্বল্প সরঞ্জাম নিয়ে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী বস্তুবাদী সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করেছে। অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছায় মুজাহিদগণ তাদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছে। আমি সেসব জীবিত ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যারা ব্যাপকভাবে আমাদের প্রতি, জিহাদ এবং মুজাহিদদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের উদ্দেশে বলব, এই মুহূর্তে আপনাদের আলোচনা করছি না আপনাদের নিরাপত্তার খাতিরে। ইনশাআল্লাহ এমন দিন আসবে, যেদিন আমরা আপনাদের অবদান ও শ্রেষ্ঠত্বের আলোচনায় ব্যস্ত থাকব।

আমি এখানে সংক্ষিপ্তভাবে স্পষ্ট করব যে, এমন কঠিন বিপদের মুহূর্তে পাকিস্তান ও আফগান জাতি আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে পশতুনের বিভিন্ন গোত্র। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, যারা জিহাদ ও মুজাহিদদের বিপদের মুহূর্তে পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করেছেন, তিনি যেন তাদের প্রত্যেককে উত্তম প্রতিদান দান করেন। এটি হলো প্রথম বিষয়।

দ্বিতীয় বিষয় হলো, প্রকৃতপক্ষে আমি মুজাহিদে আজম, ইমামুল জিহাদ, মুজাদ্দিদ শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা তুলে ধরতে অপূর্ণতা অনুভব করছি। কারণ, আমি নিজের মধ্যে কিছু সংকীর্ণতা অনুভব করছি।

রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পর বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে ও নির্দিষ্ট কোথাও স্থির থাকতে না পারায় আশা করি ভাইয়েরা আমার অপারগতা অনুভব করতে পেরেছেন। এছাড়াও নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতিও লক্ষ রাখতে হয়েছে। কারণ, আমাদের জন্য এবং সকল মুজাহিদদের জন্য সর্বপ্রথম নিরাপত্তা ঠিক রাখতে হবে।

আমি সেসব লেখক, ইসলামি চিন্তাবিদ ও গবেষকদের নিন্দা জানাই, যারা শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ-কে ভালোবাসেন, তাঁকে সম্মান করেন, তাঁর অবস্থান সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন তবুও শায়খকে নিয়ে আলোচনা করেন না। শায়খের প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধব, জিহাদের ময়দানে ও হিজরতের সময় তাঁর সাথি ছিলেন এমন ভাইদেরকেও নিন্দা জানাই। কারণ তারা শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ-এর সম্পর্কে কোনো আলোচনা করে না।

ইসলামের ইতিহাসের এই মহান ব্যক্তিকে যদি আমি এই যুগের সালাহুদ্দিন আইয়ুবি বলি, তবে অতিরিক্ত হবে না। তিনি এমন ব্যক্তি, যিনি তাঁর সম্পদ, পড়ালেখা, পরিবার-পরিজন, স্বদেশ, জাতিসত্তা, এমনকি তাঁর ব্যক্তিত্বকে আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গ করে দিয়েছেন। তাঁর সকল কিছু আল্লাহ তাআলার রাস্তায় বিলিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ শায়খকে সম্মানিত করুন। কেননা, তিনি যৌবন থেকেই ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শরীক হয়েছেন। এরপর বিগত ২০ বছরের কঠিন সংকটময় মুহূর্তে কমিউনিস্ট সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া এবং পশ্চিমা ক্রুসেডার আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। এই পুরো সময়টাতে তিনি এই উম্মতের একজন শ্রেষ্ঠ বীর, অগ্রগামী সিপাহসালার এবং দানশীল নেতার পরিচয় দিয়েছেন। এমন বীরত্বের সাথে আমাদের পরিচিত হওয়া, তাদের সুনাম-সুখ্যাতি আলোচনা করা বড়ই প্রয়োজন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তাদের কীর্তিগাথা, ইতিহাস তুলে ধরা আমাদের জন্য একান্ত আবশ্যক।

আজ কোথায় সেই ভাইয়েরা, যারা শায়খের মর্যাদা সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত? আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এই উম্মাহর মধ্যে এমন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। আজ কেন তারা চুপ করে আছে? আমি চাই, তারা যেন বুঝে যে, শায়খের অবদান জাতির সামনে তুলে ধরাটা আমার মতো তাদেরও কর্তব্য।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, যখন কোনো খেলোয়াড়, গায়ক বা ভ্রান্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মারা যায়, তখন অসংখ্য বই প্রকাশিত হয়, পত্রিকার কলামগুলো পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং অনেক ভিডিও চিত্র তৈরি হয়; অথচ ইমামুল জিহাদ শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ যুগের হুবাল আমেরিকার বিরুদ্ধে জিহাদের অগ্নি প্রজ্বলিত করে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আমেরিকাও তাঁকে তাদের প্রথম শত্রু মনে করত। সুতরাং শায়খের অবদান আর কোরবানির কথা বর্ণনায় তোমাদের উদ্যম কোথায় হারিয়ে গেল?! প্রকৃতপক্ষে আমি এদের সকলকে নিন্দা জানাই।

শায়খের বন্ধুবান্ধব, সঙ্গী-সাথি, যারা তাঁর মর্যাদা সম্পর্কে অবগত আছেন এবং যারা হিজরত ও জিহাদের সময় তাঁর সঙ্গী ছিলেন তাদের সকলের প্রতি আমার আহবান, আপনারা শায়খের অবদানগুলো তুলে ধরুন এবং তাঁকে নিয়ে লেখালেখি করুন। কথা বলুন। আর যারা ভালোভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করতে পারেন না কিংবা লেখালেখি করতে পারেন না, তারা যেন সে সকল কল্যাণকামীদের সাহায্য করেন, যারা শায়খের সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং তারা যেন শায়খের স্মৃতিময় ঘটনাসমূহ ও সুরভিত এই ইতিহাসকে একত্রিত করেন। আমি তার কিছুটা দেখেছি। তবে তারা আমার চেয়েও বেশি দেখেছে। তাই তাদের প্রতি আহবান জানাব, তারা যেন শায়খের এই সুরভিত ইতিহাসকে গোপন না করে, অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে তাঁর অবদানগুলো আলোচনা করে এবং সর্বমহলে তুলে ধরে। কারণ এটি আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধের একটি অংশ। কোনোভাবেই যেন তাদের দ্বারা শায়খের সুনাম বিনষ্ট না হয়। বরং তাঁর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে কথা বলা জরুরী। এটি এমন একটি বিষয়, যা আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চেয়েছি।

এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, অনেকেই যখন শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ সম্পর্কে আলোচনা করেন, তখন তারা তাঁর সৃষ্টিগত অবকাঠামো, উত্তম চরিত্র, সম্মান-মর্যাদা ও উদারতা নিয়ে আলোচনা করেন। এগুলো যে তাঁর উন্নত গুণাবলি এতে কোনো সন্দেহ নেই। শত্রুরাও তাঁর এই গুণগুলোর কথা অকপটে স্বীকার করে। আমরা এগুলো অবশ্যই আলোচনা করব। কিন্তু আসলেই কি শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ তাঁর উন্নত চরিত্র ও উত্তম গুণাবলির কারণে একজন ইমাম হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন?

না। বিষয়টি আসলে এমন নয়। তিনি তো এমন একজন সংস্কারক, যিনি আমেরিকার বিরুদ্ধে জিহাদের আগুন প্রজ্বলিত করেছেন। রাশিয়া বিরোধী জিহাদে অংশগ্রহণ করেছেন। পথভ্রষ্ট ও পথভ্রষ্টকারী বিশ্ব মোড়লদের নিষ্প্রভ করে দিয়েছেন এবং তাদের সকল অন্যায় জাতির সম্মুখে তুলে ধরেছেন। এটিই হচ্ছে শায়খের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম দিক।

অতএব, হে ভাই,

কেন আপনারা শায়খের আলোচনা করার সময় তাঁর এই গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক দিকটি নিয়ে আলোচনা করেন না? যে গুণটির কারণেই মূলত শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ একজন ইমাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

আবার কিছু ভাই শায়খ রহিমাহুল্লাহ-এর কমিউনিস্ট রাশিয়াবিরোধী যুদ্ধের আলোচনা করে থাকলেও তাঁর জীবনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের আলোচনা এড়িয়ে যান।

প্রথমটি হলো : শায়খের আমেরিকাবিরোধী জিহাদ। শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ আমেরিকাবিরোধী জিহাদে সম্মিলিত শত্রুবাহিনীর মোকাবেলায় মুসলিম উম্মাহকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়েছেন। একমাত্র আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহেই এই প্রচেষ্টায় সফল হয়েছেন।

দ্বিতীয়টি হলো : পথভ্রষ্ট ও পথভ্রষ্টকারী শাসকদের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান। তিনি সত্যই বলতেন, ‘অবশ্যই আমরা সাপের মাথা তথা সবচেয়ে বড় শত্রুর বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলব।’ তিনি যুগের হুবাল আমেরিকার প্রতি ইঙ্গিত করে বলতেন, ‘যখন এই বড় মূর্তিটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, তখন তার পদলেহী অনুগতরাও শক্তিহীন হয়ে পড়বে এবং বিভক্ত হতে থাকবে’। এদের বিরুদ্ধে জিহাদের পাশাপাশি তিনি তাদের মুখোশ উন্মোচন করতেন, তাদের সাথে চ্যালেঞ্জ করতেন, তাদের খুঁত বের করে দিতেন এবং এই অসভ্য শাসকদের ভণ্ডামি প্রকাশ করে দিতেন। তাদের বিরুদ্ধে জাতিকে উৎসাহিত করতেন।

হে ভাইয়েরা,

শায়খের এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তো আপনাদের আলোচনায় স্থান পেল না! তাঁর জীবনের অন্যতম এই দুটি দিক কেন আপনারা প্রকাশ করেন না?

হে ভাইয়েরা,

পথভ্রষ্ট শাসকদের বিরুদ্ধে আরব বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ সুখ্যাতি অর্জন করেছেন। কেননা, তিনি পূর্ব থেকেই জনগণকে এমন একটি বিপ্লবের জন্য উদ্বুদ্ধ করে আসছিলেন। অতঃপর বিপ্লবগুলো যখন সংঘটিত হয়েছে, তখন তিনি সেগুলোর পক্ষে শক্ত ও দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছেন। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, তিনি এগুলোর নিয়ন্ত্রক ছিলেন। কেননা এই বিপ্লবগুলো ছিল এমন, যা জাতিকে বহির্নিয়ন্ত্রণ ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে মুক্ত করে ইসলামি হুকুমতের দিকে নিয়ে যাবে। ঘটনাপ্রবাহ এটাই সাব্যস্ত করেছে যে, তিনি নিশ্চল মনস্তাত্তিক গণতন্ত্র থেকে জাতিকে সতর্ক করার সিদ্ধান্তটি যথোপযুক্ত সময়েই গ্রহণ করেছেন। ফলে আমেরিকার মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে, সত্য স্পষ্ট হয়ে গেছে এবং নিজেদের বিষাক্ত দাঁতগুলো প্রকাশ করে দিয়েছে। ওরা এই বিপ্লবগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে ট্যাংক আর সাঁজোয়া যুদ্ধ সরঞ্জাম দিয়ে। বোমারু বিমান দ্বারা সব চূর্ণ করে দিয়েছে। বন্দুক আর কামানের অনবরত গোলা-বারুদ দ্বারা হত্যা করেছে এবং নিজেদের তৈরিকৃত গণতন্ত্রের নীতিমালা নিজেরাই লঙ্ঘন করেছে।

এই ঘটনাসমূহ শায়খের দূরদৃষ্টি ও তাঁর চিন্তার সত্যতা প্রমাণ করে দিয়েছে। তিনি মানুষকে এই বিপ্লবগুলোর প্রতি আহবান করতেন। কেননা, গণতন্ত্রের অচলাবস্তা এই বিপ্লবগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। অনেক ইসলামি দল পথ হারিয়ে ফেলেছে, সবকিছু ঘোলাটে করে ফেলেছে।

শাম, মিসর, লিবিয়া ও তিউনিসিয়া-সহ সর্বত্র যা ঘটে চলেছে, তা আমাদের সামনে স্পষ্ট। ধূর্ত আমেরিকার পক্ষে এসব কিছুই সম্ভব। যদিও মুসলিম দলগুলোর বক্তব্য ও কর্মসূচি ভিন্ন ভিন্ন, কিন্তু প্রত্যেকের প্রচেষ্টা হচ্ছে ধীরগতিতে হলেও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি ইসলামি বিপ্লব সংঘটিত করা। আর এখানেই মুসলিমদের শক্তি বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ছে। যেভাবে প্রবল বেগে প্রবাহিত নদী বনাঞ্চলে প্রবেশ করার পর নিশ্চল অথবা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

অতঃপর যখন এই পদ্ধতি সফল না হবে, আমেরিকা তার খারাপ রূপে আবার আত্মপ্রকাশ করবে এবং তার সৈনিকরা অস্ত্র বলে, হত্যা-লুণ্ঠন করে এবং বল প্রয়োগ করে এগিয়ে আসবে। আরব জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধূলিসাৎ করে দিতে মরিয়া হয়ে উঠবে। কেননা আরবরা ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠা করতে চায়, বহিঃশত্রুর প্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত করতে চায় এবং অভ্যন্তরীণ গোলযোগ থেকে উম্মাহকে উদ্ধার করতে চায়।

আমার ভাইয়েরা,

বর্তমানে মিসরে যা ঘটছে, তা অবশ্যই জঘন্য অপরাধ। এতে অংশ নিয়েছে উদারতা ও মানবতাবাদের ফেরিওয়ালা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা এবং গণতন্ত্রবাদীরা। এ কাজগুলোর সাথে বহিঃশত্রু আমেরিকা পরিপূর্ণভাবে জড়িত। কারণ, আমেরিকা ও আমেরিকার মিত্র বাহিনীগুলো জোরপূর্বক এই আক্রমণগুলো পরিচালনা করেছে, অর্থ জোগান দিয়েছে এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

আফসোসের বিষয় হলো, এই ত্রিপক্ষের সাথে মিথ্যুক সিসির বাহিনীও জড়িত। যারা শরিয়াহকে দূরে ঠেলে দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী ক্রুসেডারদের সাথে মিলিত হয়ে মুসলিম উম্মাহের রক্ত ঝরিয়েছে। এদের প্রত্যেকেই মার্কিন সৈন্যদের পরিসেবায় নিয়োজিত। আজ তারা সবাই আরব গণবিপ্লবের সম্মুখীন হচ্ছে। কারণ তারা নিজেদের ধর্মের দিকে ফিরে আসছে না, ইসলামি বিধান অনুযায়ী বিচার ফয়সালা করছে না এবং বহির্বিশ্বের আধিপত্য ও গোলামী থেকে ফিরে আসছে না।

বর্তমানে মিসরে আমাদেরকে পাপিষ্ঠ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের, ঘাতক সেনাবাহিনীর এবং ফাসেক শাসকগোষ্ঠীর সাথে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এই বিশাল জোটের আক্রমণের সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের। তাদের এই অপরাধ চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এরা জাতির সাথে গাদ্দারি করেছে। জঘন্য অপরাধের দোষে দোষী এরা। তাই এই জাতির উচিত তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, তাদের জুলুমের পথ বন্ধ করে দেওয়া।

ফকিহগণ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, সম্মান, দ্বীন ও সম্পদের ওপর আক্রমণকারীকে যেকোনো মূল্যেই হোক প্রতিহত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং যেভাবে তারা মুসলিম উম্মাহর ওপর আক্রমণ করে সেভাবে তাদের ওপরও আক্রমণ করতে হবে। আর উম্মাহর কর্ণধারদের উচিত হলো, এসব শত্রুদের মোকাবেলা করার জন্য সময় উপযোগী ও কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এবং উপযুক্ত যেকোনো পথ বেছে নেওয়া।

অপরাধী ব্যক্তি কখনো তার অপরাধের স্বীকার হওয়া ব্যক্তিকে প্রতিরোধের পদ্ধতি বলে দেয় না। জালেম কখনো মাজলুমকে তার জুলুমকে প্রতিহত করার পথ দেখিয়ে দেয় না। বরং মাজলুমকেই সেই পথ আবিষ্কার করে নিতে হয়। ইসলামি শরিয়ায় জুলুমের প্রতিবাদ করা ও প্রতিহত করা ফরজ এবং জুলুম থেকে বাঁচার জন্য কোনো উপযুক্ত পথ বেছে নেওয়ার পর তা থেকে বাধা প্রদান করার অধিকার কারও নেই।

এই আলোচনার শুরুতে আমি আপনাদের সামনে যে বিষয়ে আলোচনা করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম, তা হলো : তোরাবোরায় শায়খ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ সম্পর্কে আলোচনা করব। কারণ, তোরাবারার সংকটময় মুহূর্তগুলোতে শায়খের উন্নত চরিত্র ও বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশ পেয়েছে। আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল, তাঁর সাহায্যের প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও শত্রুদের সম্মুখে দৃঢ়তা ইত্যাদি। এমন কঠিন দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে মাত্র তিনশ জন আল্লাহর সৈনিক নিয়ে আমেরিকা ও তার মিত্র বাহিনী এবং গাদ্দার মুনাফিকদের মোকাবেলা করার সময় তার রাজনৈতিক ও সামরিক অভিজ্ঞতার সুনিপুণ প্রকাশ ঘটেছে।

১৭ই রমজানে শুরু হওয়া তোরাবোরায় যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে ভাইয়েরা আমাকে হযরত হুসাইন ইবনে আলি রাযিয়াল্লাহু আনহুমা-এর কথাই বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিলেন। তোরাবোরায় শত্রুদের সামনে তাদের অবস্থা তেমনি ছিল, যেমন ছিল কারবালায় হযরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহু-এর অবস্থা। তারা ছিল বিচ্ছিন্ন। সাহায্য ও রসদ সংগ্রহের পথও বন্ধ হয়ে যায়। তারা চতুর্দিক থেকে মার্কিন বাহিনীর এবং মুনাফিকদের বেষ্টনীতে পড়ে গিয়েছিল। মনে হয় যেন তারা সকলে আফগানিস্তানের যুদ্ধ শেষ করে তোরাবোরার জন্যই একত্রিত হয়েছে। ভাইদের কোরবানি, আত্মত্যাগ, বিপদ, মুসিবত, সবর ও বন্দীত্বের এই যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। এই যুদ্ধে কিছু কঠিন বাস্তবতার প্রকাশ পেয়েছিল। আমি সেগুলোর কিছু আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

প্রথমে যেই বিষয়টি আলোচনা করব, তার শুরুতেই আমি  কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসার সাথে সেসব আনসার ও বন্ধুবরদের কথা উল্লেখ করছি, যারা তোরাবোরায় মুজাহিদ ভাইদের সাহায্য করেছেন। এর বিপরীতে উল্লেখ করব কিছু বিশ্বাসঘাতক ও শত্রুদের পা চাটা গোলাম মুনাফিকদের কথা, যাদেরকে এই স্বল্প সংখ্যক মুমিনদের মোকাবেলায় ক্রুসেডার আমেরিকার পতাকায় অংশগ্রহণ করার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল।

এই যুদ্ধে মুজাহিদদের সাহায্যকারীদের মধ্য থেকে সর্বপ্রথম আমি – ধৈর্যশীল, সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত ও প্রিয় ভাই শায়খুল জিহাদ মুহাম্মাদ ইউনুস খালেস রহিমাহুল্লাহ-এর সম্পর্কে আলোচনা করব। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন। আমি পূর্বের আলোচনায় তাঁর দৃঢ়তা, শায়খ উসামার প্রতি ভালোবাসা এবং শক্ত বন্ধন সর্ম্পকে আলোচনা করেছি। আমি এখন তোরাবোরায় তাঁর একটি শ্রেষ্ঠ দিক নিয়ে আলোকপাত করব ইনশা আল্লাহ।

আমেরিকানরা যখন তাদের দলবল ও মুনাফিকদের সামনে নিয়ে জালালাবাদ প্রবেশ করছিল, তখন শায়খ মুহাম্মাদ ইউনুস খালেস রহিমাহুল্লাহ আরব শিশু-নারীদের জন্য তার বাড়ি উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। যেন তাদের নিয়ে এই মুনাফিকরা বাণিজ্য করতে না পারে। তিনি তাদের হেফাজত করেছেন। এমনকি তাদের সুন্দরভাবে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে এর উত্তম বিনিময় দান করুন।

আমি আগেও উল্লেখ করেছি যে, তিনি এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে, প্রায় শয্যাশায়ী হয়ে গেছেন। তবুও তিনি এমন একটি ভিডিওবার্তা প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন, যাতে তিনি মুসলিম উম্মাহকে আফগানিস্তানে মার্কিনবিরোধী যুদ্ধের জন্য আহবান জানাবেন। কারণ, আমেরিকার দ্বারা আফগানিস্তানে জোরপূর্বক দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার কারণে জিহাদ ফরজে আইন হয়ে গিয়েছে। তাঁর অসুস্থতা এতটাই কঠিন ছিল যে, তিনি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। নিজের সামান্য কাজ করার ক্ষমতাটুকুও হারিয়ে ফেলেছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি দয়া করুন।

দ্বিতীয়ত যেই বীরের কথা উল্লেখ করব, তিনি হলেন মুয়াল্লিম আওয়াল গুল। আল্লাহ তাঁর প্রতি রহম করুন। তিনি ছিলেন লাগমান রাজ্যের অধিবাসী। এটি জালালাবাদের পার্শ্ববর্তী রাজ্য। তিনি শায়খ ইউনুস খালেস রহিমাহুল্লাহ-এর অন্যতম আনসার ছিলেন এবং তাঁর জিহাদি তানজীমের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। অতঃপর যখন ইমারাতে ইসলামিয়্যা আফগানিস্তান গঠিত হয়, তখন তিনি ইমারাতে ইসলামিয়্যার দায়িত্বশীল হন এবং জালালাবাদ ট্যাংক পরিচালনা বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ-এর সাথে শায়খ আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ-এর সম্পর্ক জিহাদের সূচনা থেকেই। তাছাড়া তিনি জালালাবাদে শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ ও তাঁর ভাইদের পাশেই থাকতেন। তিনি জালালাবাদে শায়খ ইউনুস খালেস ও তাঁর সাথিদের কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ‘নাজমুল জিহাদ’ নামক এলাকায় তাদের সাথে থাকতেন। তিনি শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ-এর সাথে ঘন ঘন সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁর সাথে গভীর সম্পর্ক রাখতেন। এমনকি শায়খ উসামা জালালাবাদ ছেড়ে কান্দাহার চলে যাবার পর যখনই জালালাবাদ আসতেন, তখন মুয়াল্লিম আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ-এর সাথে সাক্ষাৎ না করে যেতেন না।

তোরাবোরায় আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ-এর বীরত্বগাথা অনেক বড় বড় অবদান আছে। যখন আমেরিকান সৈন্য জালালাবাদ প্রবেশ করল, তখন তারা ভাবল, মুয়াল্লিম আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ অন্তত প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। তাই তারা ট্যাংক পরিচালনা থেকে তাঁর দায়িত্ব পরিবর্তন করেননি। মুয়াল্লিম আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ-এর নিকট এই মর্মে বার্তা পাঠালেন যে, আমি আপনার অধীনেই আছি। আপনার নির্দেশ হলে আমি এই স্থান ও বর্তমান দায়িত্ব ছেড়ে দেবো এবং আফগানিস্তান ছেড়ে অন্যত্র হিজরত করব। অথবা আপনার আদেশ হলে আমি এই দায়িত্বেই বহাল থাকব এবং আপনার গোয়েন্দা হয়ে থাকব। যথাসাধ্য আপনার সহায়ক ও সাহায্যকারী হয়ে থাকব এবং আপনার খাবরাখবর ও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয় জোগান দেবো।

মুয়াল্লিম আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ বাস্তবে তা-ই করেছেন। বিভিন্ন উন্নতি অগ্রগতি ও খবরাখবর জানাতেন একের পর এক। মুনাফিকরা কী পরিকল্পনা করছে, তারা কী জমা করছে, কী বলছে, কী প্রস্তুত করছে এবং তোরাবোরায় ভাইদের ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্ত কী? একেরপর এক খবরাখবর পাঠাতেন। অতঃপর আমেরিকা তোরাবোরায় যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল। তাদের স্বভাবগত অভ্যাস হলো, তারা কখনো সম্মুখ যুদ্ধ করতে চায় না। তোরাবোরা ঘটনার পর তাদের ব্যাপারে আমাদের এই অভিজ্ঞতা পরিপূর্ণ হয়েছে। কারণ, পশ্চিমা ক্রুসেড বাহিনী চূড়ান্ত পর্যায়ের ভীতু এবং দুনিয়ার প্রতি তাদের প্রচণ্ড পরিমাণে ভালোবাসা রয়েছে। তারা বড় ধরনের শক্তি অর্জন ও যুদ্ধ প্রস্তুতি ছাড়া কখনো সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে না। তারা সব সময় মুনাফিকদের সামনে রেখে যুদ্ধ করে। যেমনটি ঘটেছে ইরাক, ভিয়েতনাম-সহ বিভিন্ন যুদ্ধে।

আমেরিকানরা তোরাবোরা অবরোধ করার জন্য জালালাবাদের মুনাফিক ট্যাংক বাহিনীকে অগ্রে পাঠিয়ে দেয়। আকাশ থেকে বোমা বর্ষণের দায়িত্ব নিজেদের হাতেই রাখে। যাতে তারা নিরাপদে থাকতে পারে।

অবশেষে মুয়াল্লিম আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ-এর প্রতি নির্দেশ আসলো, তোরাবোরা অবরোধে তার বাহিনী নিয়ে অংশগ্রহণ করতে। তখন তিনি শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ-এর নিকট পরামর্শ চেয়ে একটি বার্তা পাঠালেন। ‘আমি এখন কী করব? আমি কি আমার এই অবস্থান ত্যাগ করে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাব? না আমার বাহিনী নিয়ে তোরাবোরা অবরোধে এগিয়ে যাব? আমি আপনাকে ওয়াদা দিচ্ছি, প্রত্যেকটি গোলা মুজাহিদদের অবস্থান থেকে দূরে খালি পাহাড়ে নিক্ষেপ করব’।

তখন আমরা তোরাবোরায় ছিলাম। আমি এবং অপর এক ভাই ক্রোধান্বিত হয়ে বলে উঠলাম যে, ‘শায়খ আওয়াল গুল মুরতাদদের কাতারে যায় কীভাবে?! অথচ তিনি একজন মুজাহিদ।’ তখন শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ তাঁর রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘হে ভাইয়েরা, একজন ব্যক্তি (সে আমাদের সাহায্যকারী ও বন্ধু) আমাদের থেকে দূরে খালি প্রান্তরে বোমা বষর্ণ করাটা অন্য একটা শয়তান সরাসরি আমাদের দিকে বোমা বর্ষণ করার চেয়ে অনেক ভালো।

আমরা বললাম, ‘ঠিকই তো।’ তারপর তিনি আওয়াল গুলের কাছে বার্তা পাঠিয়ে বললেন, ‘ভালো, এই কাজে আল্লাহর ওপর ভরসা করো।’ আর বাস্তবেও তিনি তা-ই করেছেন। আমরা দেখছিলাম, তাঁর গোলাসমূহ আমাদের পাশের পাহাড়ে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে।

আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ-এর আরও একটি বীরত্বপূর্ণ ঘটনা হলো, (এটি অন্য একটি ঘটনা। আমরা তা শায়খের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। তিনি কীভাবে অবরোধ থেকে অনেককে উদ্ধার করে তাদেরকে দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য তৈরি করেছেন।) যখন শায়খ তোরাবোরা থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন, তিনি সকলকে বিন্যস্ত করলেন। এরপর শায়খ ও তাঁর সাথে অনেক ভাই একটা প্রশস্ত জায়গায় সরে যান। সেখান থেকে আরও কয়েকটি জায়গা পরিবর্তন করে জালালাবাদ থেকে বের হয়ে যান। কে শায়খকে জালালাবাদ থেকে বের হতে সাহায্য করেছে?

তিনি হলেন বীর, শহীদ মুয়াল্লিম আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ। তিনি নিজ পাহারায় তার গাড়িতে করে শায়খকে তাঁর সম্মান ও মর্যাদার সাথে বের করেছেন। আমি এই প্রথমবার তাঁর এই মহৎ কাজের বর্ণনা করছি। অতঃপর আমেরিকানরা তাঁকে সন্দেহ করে এবং বন্দী করে। তারপর বাগরাম কারাগারে ও শেষে গুয়ান্তানামোতে নিয়ে গিয়েছে।

আমেরিকানরা দাবি করে যে, তিনি গুয়ান্তানামোতে হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে শহীদ হয়েছেন। আমার খুব বেশি সন্দেহ হয় যে, তারা তাঁকে হত্যা করেছে অথবা চেষ্টা করেছে। কিংবা তাঁর এই বীরত্বের কারণে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাঁকে শহীদ করেছে। আমি বুঝি না, তারা তাকে চিনতে পেরেছে কি না? তবে তারা আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ-এর ইতিহাস, সত্যতা, শায়খ উসামার সাথে তাঁর সম্পর্কের ব্যাপারে জানত। আল্লাহ তাঁর প্রতি রহম করুন।

আফগানিস্তানে তীব্র বোমা বর্ষণের বর্ণনার পূর্বে আমি শায়খ আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ-এর আরও একটি বীরত্ব বর্ণনা করছি। তিনি শায়খ উসামাকে বলেছেন যে, ‘আমি আপনার জন্য আফগানিস্তানের উৎকৃষ্ট মুজাহিদদের একত্রিত করতে প্রস্তুত। তাদের সামান্য কিছু বিষয় ছাড়া পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি রয়েছে। যখন আমেরিকানরা প্রবেশ করবে, তখন তারা প্রস্তুত থাকবে। এ কাজ আমি করতে প্রস্তুত।’ শায়খ উসামা তাঁর কথা খুবই স্মরণ করতেন। এই বীরত্বের দরুন আল্লাহর কাছে তিনি সর্বদা তাঁর জন্য উত্তম বিনিময় কামনা করতেন।

এই ধরনের বীরত্বগাথা ঘটনা শুধু তাঁর থেকেই প্রকাশ পেত না; বরং জালালাবাদ ও তার আশপাশের অনেকের থেকেই এগুলো প্রকাশ পেত। জীবিত ভাইদের নাম প্রকাশ না করার জন্য আমি ভাইদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যদিও তাঁরা আমাদের সাহায্য করেছেন, পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমাদের শক্তিশালী করেছেন এবং তারা তাদের প্রকৃত ইসলামি জিহাদের খনিকে প্রকাশ করেছেন। আফগান মুসলিমদের জন্য তারা তাদের ভেতরকে খুলে দিয়েছেন। যার ফলে আল্লাহর অনুগ্রহে প্রথমে রাশিয়া তারপর আমেরিকা ধ্বংস হয়েছে।

আমি শায়খ আওয়াল গুলের বন্ধুবান্ধব, সন্তানসন্তুতি, তাঁর স্বজাতি, জালালাবাদের অধিবাসী ও আফগানের মুসলিম জাতিকে আহবান করব, তারা যেন প্রতিশোধ গ্রহণ করে – তাঁকে শহীদকারী আমেরিকার কাছ থেকে, সে সকল বিশ্বাসঘাতকের কাছ থেকে – যারা তাঁকে হস্তান্তর করেছে এবং তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ইনশাআল্লাহ আমি তাদের একজনের আলোচনা করব। তারা যেন তাঁর প্রতিশোধ না নিয়ে ছেড়ে না দেয়। শায়খ আওয়াল গুল আমাদের, আফগানিস্তানের সকল মুজাহিদের এবং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর নিকট একটি আমানত ছিল। তাই উচিত হল এই বীর মুজাহিদের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নেওয়া।

তিনি কঠিন সময়ে সঠিকভাবে সবার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর যেসব দূত আমাদের কাছে সংবাদ নিয়ে আসতেন, তাদের একজন আমাদের কাছে এসে বলল, ‘মুয়াল্লিম আওয়াল গুল দরজা বন্ধ করে কেঁদে কেঁদে বলছেন, “আমি শায়খ উসামা ও তাঁর সাথিদের জন্য কী করতে পারি?”

এই ভাই তাকে ধৈর্যধারণের কথা বলতেন এবং বলতেন, “এমনি ছিল নবী-রাসূল ও সালেহীনদের অবস্থা। সুতরাং অবশ্যই এখানে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে।” আল্লাহ তাঁর ওপর রহম করুন।’

আমি শায়খ আওয়াল গুল রহিমাহুল্লাহ-এর সাথে সংশ্লিষ্ট আরেকটি ঘটনা উল্লেখ করছি। এক ভাই শায়খ উসামা রহিমাহুল্লাহ-এর কাছে এসে বললেন, ‘যে ব্যক্তি আওয়াল গুলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, আমরা তাকে চিহ্নিত করেছি। আমরা তার হত্যার আয়োজন সম্পন্ন করতে চাই।’ তখন শায়খ উসামা তাদের বললেন, ‘সন্দেহবশত কাউকে হত্যা করবেন না। প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহকে ভয় করুন। দৃঢ় বিশ্বাস ছাড়া কাউকে হত্যা করবেন না। বাস্তবেই কেউ যদি আমরিকার সাথে মিলে কাজ করে এবং তার বিশ্বাসঘাতকতার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে থাকেন, তবেই তাকে হত্যা করতে পারেন।’

তোরাবোরার ঘটনার সাথে জড়িত অন্য একজন বীরের আলোচনা করছি। তিনি হলেন শহীদ কারি আব্দুল আহাদ। রাশিয়াবিরোধী জিহাদের একজন বীর সৈনিক তিনি। শায়খ ইউনুস খালেসের হিজবে ইসলামি আফগানিস্তানের অন্যতম সদস্যও ছিলেন। রাশিয়াবিরোধী জিহাদের সময় তিনি সেই দলের একজন কমান্ডার ছিলেন। তোরাবোরায় তিনি সম্মানজনক কৃতিত্ব রেখেছেন। প্রায়ই আমাদের সাক্ষাতে আসতেন। আমাদের সাথে তার অঙ্গীকার ছিল। তাই আমাদের নিকট বিভিন্ন সংবাদ সরবরাহ করতেন। কারি আব্দুল আহাদ আমাকে ও আরও অনেক ভাইকে তোরাবোরা থেকে বের করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর সব কৃতিত্বের কথা বাদ দিলেও অন্তত এটা বলতেই হয় যে, তিনি আমাদের তোরাবোরা থেকে বের হওয়ার একটা রাস্তা বের করে দিয়েছেন। ফলে আমরা নিরাপদ স্থানে পৌঁছুতে সক্ষম হই। আল্লাহ তাঁকে উত্তম বিনিময় দান করুন।

তোরাবোরা থেকে বের হওয়ার সময় আমরা আশ্চর্য ধরনের একটা জায়গা অতিক্রম করলাম। সেখানে আল্লাহর কুদরত স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছি এবং বুঝেছি যে, আল্লাহ যা লিখে রেখেছেন, এর অতিরিক্ত বান্দাকে কোনো কিছু আক্রান্ত করবে না। মনে হয় এই ঘটনাটি আমি আমার কোনো আলোচনার ফাঁকেও বলেছি। সংক্ষেপে এর বিবরণ হলো, রাতের আঁধারে আমি, আমার সাথে কয়েকজন মুজাহিদ ভাই এবং কয়েকজন আনসার ভাই কারি আব্দুল আহাদ ভাইয়ের সাথে এক স্থান থেকে অন্যত্র সফর করছিলাম। আমরা এক জায়গায় আসলাম। কারি আব্দুল আহাদ ভাই আমাদের অপেক্ষা করতে বলে তিনি রাস্তার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চলে গেলেন। এসে বললেন, ‘রাস্তা নিরাপদ। আপনারা আসতে পারেন।’ আমি সেই রাস্তা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। তবে তার সাথে চলতে থাকলাম। দেখলাম, রাস্তার কোল ঘেঁষে দেয়াল উঠানো। যখন আমরা আরও কাছে গেলাম, তখন দেখলাম, এটা মুনাফিকদের একটা ঘাঁটি। যারা জালালাবাদ ও আশেপাশের এলাকাগুলো দখল করে নিয়েছে।

হঠাৎ দেখলাম, আমাদের থেকে প্রায় ৫/৬ মিটার দূরে দেয়ালের মধ্যে বড় একটি ফাঁকা দেখা যাচ্ছে। যার আশপাশের ৩/৪ মিটার দেখা যায়। আমরা ঠিক তার সামনে দিয়েই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ মুনাফিকদের একটা গাড়ি আসলো এবং এই ছিদ্রের ফাঁক দিয়ে লাইটের আলো আমদের শরীরে এসে পড়ল। ফলে আমাদের স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। আমরা তাদের মুখোমুখি হয়ে গেলাম।

আমি একটা গাছের আড়ালে ছিলাম। আমার সাথে অন্য একজন ভাইও ছিলেন। তিনি আমাকে বললেন, ‘অস্ত্র প্রস্তুত করুন।’ আমি বললাম, ‘কী হলো?’ তিনি জানালেন, ‘তারা আমাদের স্পষ্ট দেখছে। অর্থাৎ এক্ষুনি আমাদের তাদের সাথে লড়াই করতে হবে।’ লম্বা আকৃতির একজন ভাই ছিলেন আমাদের সাথে। তিনি আত্মগোপনের জন্য কিছু পাচ্ছিলেন না। ফলে নিজেকে গোপন করার জন্য তিনি চিত হয়ে শুয়ে পড়লেন। আমরা সেকেন্ডের মধ্যে যুদ্ধ শুরু করার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলাম। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ড্রাইভার গাড়ি ঘুরিয়ে রাস্তা পরিবর্তন করে চলে গেল। বুঝতে পারিনি, সে কি রাস্তা পরিবর্তন করতে চেয়েছিল, না আমাদের দেখে ভয়ে পালিয়েছে?

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গাড়িটা যাওয়া মাত্রই একজন আনসার ভাই আসলেন। তিনি ছিলেন একজন শক্তিশালী গঠনের ও মজবুত পেশীবিশিষ্ট। তিনি সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে দৌড়াচ্ছিলেন। আমরা আনুমানিক তিন কদম অগ্রসর হতেই আঁধারের কারণে দুর্গন্ধময় একটি নালার মধ্যে পড়ে গেলাম। অস্ত্রটাও উধাও হয়ে গেল এবং আমরাও চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লাম। আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। তিনি খুব দ্রুত নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে নিলেন এবং পুনরায় আমাকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরে দৌড়াতে লাগলেন। আমরা আমাদের মারকাজের দিকে ছুটলাম এবং একটা রাস্তা পেয়ে খুব দ্রুত দৌড়াতে লাগলাম।

সেখানে আমাদের সাথের আনসাররা ছিলেন পূর্ণ যৌবনে বলীয়ান। একমাত্র আমিই ছিলাম প্রায় পঞ্চাশের কোঠায়। আমি এমনিতেই দুর্বল ছিলাম। এক ভাই সেই সুঠামদেহী ভাইকে বললেন, ‘ভাই আপনি ড. সাহেবকে পিঠে তুলে নিন।’ আমি বললাম, ‘না, না আমাকে তুলো না।’ আমরা সবোর্চ্চ গতিতে দৌড়াতে লাগলাম। একটি গাড়ি এসে প্রথম রাস্তায় সামান্য সময় দাঁড়াল। কিন্তু আল্লাহর অশেষ করুণায় আমরা সেখান থেকে নিরাপদে সরে গেলাম। ততক্ষণে কারি আব্দুল আহাদ আমাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছেন। অতঃপর তিনি আমাদের মেহমানদারি করলেন এবং খাবারের আয়োজন করলেন। তারপর সেখান থেকে আমরা তাঁর নেতৃত্বে অন্যত্র সরে গেলাম। আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

কারি আব্দুল আহাদ আফগান সেনাবাহিনী তাঁর বাড়ি তল্লাশি করতে আসলে তাদের হাতে শাহাদাত বরণ করেন। আল্লাহ তাকে উত্তম বিনিময় দান করুন।

আমি সমগ্র পৃথিবীর মুজাহিদ ভাইদের বিশেষত জালালাবাদ ও আফগানিস্তানের মুজাহিদ ভাইদের বলব যে, মুয়াল্লিম আওয়াল গুল, কারি আব্দুল আহাদ ও আফগানিস্তানের সকল শহীদ ভাইদের খুনের বদলা নেওয়ার দায়িত্ব আপনাদের ওপর। আমেরিকা ও তাদের সাহায্যকারী প্রত্যেকের থেকে এই বদলা নেওয়া আবশ্যক। আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করলাম। আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

واخر دعوانا ان الحمد لله رب العالمين، وصلي الله علي سيدنا محمد واله وصحبه وسلم

 

******************

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × five =

Back to top button