প্রবন্ধ-নিবন্ধ

জঙ্গির পক্ষ থেকে একটি প্রশ্ন

আজ একটু নিয়মের ব্যতিক্রম হবে। সাধারনত আপনারা প্রশ্ন করেন, আমি উত্তর দেই। আজ আমরা উল্টোটা করবো। আজ প্রশ্ন করবো আমি…

.খবরে প্রকাশ – মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করলে যাবজ্জীবন
.
তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ ধারাকে স্থানান্তর করে করা প্রণীত হতে যাওয়া নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৬’র খসড়ায় এ বিধান রাখা হয়েছে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে খসড়া আইনটি নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে।

আপনার একটু আন্তরিক ভাবে, একটু সময় নিয়ে প্রশ্নটা নিয়ে ভাববেন। আমার প্রশ্ন হল –
.
শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করলে যাবজ্জীবন আর রাহমাতুললিল আলামীন রাসূলুল্লাহ ﷺ কে নিয়ে কটূক্তি করলে জার্মানীতে আবাসন, মিডিয়াতে মাতম, নিরবতা পালন, মুক্তচিন্তার বীর আর দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের শহীদ উপাধি লাভ – এটা কেমন কথা?
.
.
একটু চিন্তা করবেন। একটু মাথায় রাখবেন, একদিন আল্লাহর সামনে আপনাকে, আমাকে, আমাদের সবাইকে দাড়াতে হবে। অণু পরিমান সৎকর্ম, অণু পরিমান অসৎকর্ম নিয়ে হিসাব করা হবে। এমন এক কঠিন হিসাবের দিন আসছে যেদিন ছোটবড় কোন কিছুই হিসাবের আওতা থেকে বাদ যাবে না।
.
সেই দিন হিন্দুবন্ধু-বঙ্গবন্ধু, দাদাবন্ধু-পল্লীবন্ধু, “শহীদ” জিয়া -ইয়াহিয়া – কেউই আপনাকে রক্ষা করতে পারবেন না। একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা পারবেন আপনাকে রক্ষা করতে। আল্লাহ যদি আপনাকে প্রশ্ন করেন – আমার যমীনে আমার আইন বাস্তবায়ন করলে না কেন? বাস্তবায়নের দাবি করলে না কেন?
.
কি জবাব দেবেন?
.
আল্লাহ যদি প্রশ্ন করেন – আমার হাবীবের অবমাননা করা হল, তুমি কি করলে?
.
কি জবাব দেবেন?
.
আল্লাহ যদি প্রশ্ন করেন – কিভাবে এমন এক আইনকে তোমরা মেনে নিলে যেখানে আমার হাবীবের চাইতে অপরের সম্মানকে অধিক মূল্য দেওয়া হয়?
.
কি জবাব দেবেন?
.
.
যারা বাংলাদেশের শাসকদের মুসলিম দাবি করে- তাদের কাছেও প্রশ্ন রইলো। হেফাযতে ইসলাম আর কিছু চায়নি, শুধু চেয়েছিল নবী ﷺ এর অবমাননাকারীদের যেন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কুফরি সংবিধানের শুধু নতুন একটি আইন সংযোজনের দাবি তারা করেছিল। তাদের সাথে কি হয়েছিল আমরা জানি। আর আজ সেই একই দেশে আইন পাশ করা হচ্ছে, “বঙ্গবন্ধু”-কে নিয়ে অবমাননা করলে মৃত্যুদন্ড!
.
তাহলে এদের কাছে কে বড়? এদের কাছে কার সম্মান মুল্যবান? এদের নবী কে? আর এদের দ্বীন কি? ইসলাম আর নবী করিম ﷺ এখানে হালাল কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ আর শেখ মুজিবকে নিয়ে কথা বলা কবীরা গুনাহ! আর এক দেশ ভর্তি মুসলিম নির্লিপ্ত ভাবে তা মেনে নিচ্ছে?

এটা নিয়ে কারো মাথাব্যাথা নেই !!

কিন্ত ছেলেরা দাড়ি রাখছে, মেয়েরা বোরকা পড়ছে, চটি বই আর জাফর ইকবালের বইয়ের বদলে তরুন ক্বুরআন-হাদীসের মতো “জিহাদী বই” পড়ছে এটা নিয়ে সবার মাথা খারাপ?
.
মা লাকুম কাইফা তাহকুমুন! তোমাদের কি হলো তোমরা কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ? আখিরাতকে ভুলে যাচ্ছ? দুনিয়া কে চিরস্থায়ী মনে করছো? আল্লাহ কি হিসাব গ্রহনে তৎপর নন? আল্লাহর শাস্তি, আল্লাহর ক্রোধকে কি ভুলে গেলে?
.
আর এটা কেমন ব্যবস্থা, কেমন আইন, কেমন সংবিধান যেখানে ইচ্ছামতো অমুক-তমুককে আকাশে তোলা যায়, কিন্তু সর্বাধিক সম্মানিত ব্যক্তির ﷺ ব্যাপারে কটূক্তিকারীদের শাস্তি দেওয়া যায় না? আর কিবাহেব একজন মুসলিম, যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে যে নবী ﷺ কে ভালো বাসে, সে এই সংবিধান মানতে পারে?
.
আপনাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর আমি দিয়েছি। ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে আরো দেয়ার ইচ্ছা আছে। কিন্তু আজ আপনাদের প্রতি একজন মুসলিম ভাই হিসেবে এ হল আমার প্রশ্ন।
.
আপনি আমাকে জঙ্গি মনে করুন, আমাকে গালি দিন, আমাকে ক্রস ফায়ারে দিতে চান, সমস্যা নেই। কিন্ত আপনি আর আমি একটা বিষয়ে একমত – লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আমি আপনাকে সে আল্লাহর কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করছি যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি আপনাকে সেই নবীর কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করছি যার ব্যাপারে আপনাকে কবরের অন্ধকারের প্রশ্ন করা হবে, যার শাফা’আতের পাবার আশা আপনি পোষন করেন…
.
একটু চিন্তা করুন…এখন যদি আমরা না জাগি, তাহলে কখন?!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − 11 =

Back to top button