পুলিশের আইজিপি এর প্রশ্নের জবাব
#প্রশ্ন – পুলিশের আইজিপি এ কে এম শহীদুল প্রশ্ন করেছে, জঙ্গিদের আবার কিসের মানবাধিকার? [পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক]
.
#উত্তর – কখনো কখনো প্রশ্নের চাইতে প্রশ্নকারীর পরিচয় এবং অবস্থান গভীরতর অর্থ এবং গুরুত্ব বহন করে, এবং কখনো কখনো উত্তর পাবার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করা হয় না, বরং নির্দিষ্ট একটি উত্তরকে সঠিক বলে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে প্রশ্ন করা হয়। তাগুতের গোলাম এই প্রশ্নে এ দুটি বৈশিষ্ট্যের সম্মিলন ঘটেছে।
.
মানবাধিকার তো দূরে থাক, ন্যূনতম ভদ্রতা, শালীনতা, লজ্জা, মর্যাদা, সম্মান এবং মায়া-মমতা, আত্মসম্মান, আত্মমর্যাদা, দয়ার মতো মানবিক অনূভূতি সম্পর্কে যে বাহিনীর সদস্যদের কোন ধারণা নেই। আর একথার স্বপক্ষে প্রমান অসংখ্য, যার তুচ্ছাতিতুচ্ছ একটি অংশ এখানে তুলে ধরা হল –
.
*সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের এক সোর্সকে ডাকাতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ১ দিনের রিমান্ডে আনে পুলিশ। গত ৩১ আগষ্ট বুধবার রিমান্ডে আনার পর ওই আসামিকে মারধর করা হবে না বলে তার স্ত্রীর কাছে ২৫ হাজার টাকা দাবি করে সোর্স নজরুল ও শুভ। দেনদরবারে এক পর্যায় ইচ্ছার বিরুদ্ধেই আসামির বড় স্ত্রীকে সোর্স নজরুল ও ছোট স্ত্রীকে শুভ পৃথক দু,টি কক্ষে নিয়ে ধর্ষন করে। পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ওই বাসায় যায় এসআই আতাউর। এসময় আতাউর মাতাল ছিল। এসআই আতাউর নিজেও আসামির ছোট স্ত্রীকে ধর্ষন করে। দু,সতিনের সাথে ধর্ষন উৎসব চালায় তারা। এ ঘটনায় সোর্স নজরুল ইসলাম ওরফে তোতলা নজরুল ও শুভকে পুলিশ আটক করলেও পুলিশের এসআই আতাউর আছে বহাল তবিয়তে।
.
যে ব্যক্তি এমন এক বাহিনীর নেতৃত্ব দেয় সে অন্যের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন করছে ! গোবরে যে কীটের বসবাস সে কি আজ পরিচ্ছনতার সবক দিচ্ছে? হে অসম্মানিত, অমানুষ তোমাদের কাছে মানবাধিকারের অর্থ কি? মানবাধিকারের অর্থ কি বনা জবাবদিহিতায় ধর্ষনের অধিকার?
.
*২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু দিকে শাহ আলী থানার পুলিশের সোর্সরামিরপুর ১ নম্বরে চিড়িয়াখানা লেকের পাড়ে কিংসুক সমবায় সমিতির পাশে চা-দোকানি বাবুল মাতাব্বরের কাছে যান। চাঁদা না দেয়ায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সোর্স দেলোয়ার লাথি দিয়ে বাবুলকে কেরোসিন তেলের জ্বলন্ত চুলার উপর ফেলে দেন। এতে বাবুলের সারা শরীর পুড়ে যায়। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি শাহ আলী থানার এসআই মমিনুর, এসআই দেবেন্দ্র নাথ ও কনস্টেবল জসিমউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তারা ইচ্ছা করলে বাবুলকে বাঁচাতে পারতো। উপরন্তু বাবুলের স্ত্রী লাকি বেগম বালতিতে থাকা পানি দিয়ে স্বামীর শরীরের আগুন নেভাতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের হাতে-পায়ে ধরে কান্নাকাটি করলেও কাজ হয়নি। এ নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৫ পুলিশই বর্তমানে চাকরিতে বহাল।
.
*বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে নগ্ন করে রাতভর পুলিশি নির্যাতন। নির্যাতনের শিকার দুই ভাই জানান ইউনিভার্সিটির পরিচয়পত্র হারিয়ে যাওয়ায় তারা থানায় জিডি করতে যান। এসময় ডিউটি অফিসার এসআই মনির জিডির বিষয়টি সম্পর্কে কিছু না জেনেই তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এত প্রতিবাদ করে রাজ ও শাহী। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে দারোগা মনির তাদের হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেন। কয়েকজন পুলিশ সদস্য রাজ ও শাহীকে উলঙ্গ করে মুখে কালো কাপড় গুঁজে ও হাত-পা বেঁধে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে তাদের হকিস্টিক ও জিআই পাইপ বেধড়ক পেটানো হয়। এসময় জোর করে ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হয়।
.
স্বীকারোক্তি না দেওয়ায় তাদের ওপরে নেমে আসে আরো অমানবিক নির্যাতন। এরপর তাদের কয়েক দফায় থানার দোতালার একটি কক্ষে রেখে নির্যাতন করা হয়। পরে তাদের সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা থানার একটি অন্ধকার কক্ষে রাখা হয়। পরে গভীর রাতে আবারো তাদের ওপর চালানো হয় পুলিশি নির্যাতন। নির্যাতন শেষে তাদের নগ্ন করে থানার দোতালার একটি কক্ষে সারারাত আটকিয়ে রাখা হয়। [প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০১৪ – ক্যাম্পাসলাইভ২৪]
.
এরকম আছে আরো হাজারো কাহিনী। আর জঙ্গিদের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন করছে এ বাহিনীর প্রধান! যে বাহিনীর জীবিকার মূল উৎস হল সাধারণ মানুষের কষ্টের টাকা ঘুষ ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে ছিনিয়ে নেওয়া। অতঃপর হে অর্থের গোলাম তোমার কাছে মানবাধিকারের অর্থ কি? টাকার জন্য যারা আগুনে জ্বলন্ত মানুষকে বাচানোতে বাঁধা দেয় তাদের মুখে মানবাধিকারের অর্থ কি?
.
*সিএনজি থেকে নারীকে তুলে ‘পতিতা’ বলে টহল পুলিশের চাঁদাবাজি: বরখাস্ত ৩ [কক্সবাজারনিউজ.কম -প্রকাশকালঃ জানুয়ারি ২৭, ২০১৬]
.
*ডেমরায় পুলিশের ছত্রছায়ায় চলছে মাদকব্যবসা, জুয়া, এবং পতিতাবৃত্তি। এছাড়া নিষিদ্ধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার গ্যারেজ মালিক, অবৈধ যানবাহন স্ট্যান্ড কর্তৃপক্ষ, অবৈধ দখলদার ও ফুটপাতে ব্যবসা পরিচালনাকারীদের থানায় ডেকে এনে গোপন মিটিং করে মাসোহারা আদায়ের নিয়ম তৈরি করছে পুলিশ। এলাকার মাদক ব্যবসায়ী, অবৈধ বিভিন্ন ব্যবসায়ী, অবৈধ মদ-বিয়ারের আখরা ও বিভিন্ন বেনামী প্রতিষ্ঠান থেকে সাপ্তাহিক ও মাসিক চাঁদা আদায় করে থানা পুলিশের একাধিক এসআই ও এএসআই। এক কথায় ডেমরা পুলিশের চাঁদাবাজি অনৈতিক কাজের নিরাপদ স্থান।
.
আরও অভিযোগ রয়েছে, ডেমরার বামৈল, কোনাপাড়া, ডগাইর, বক্সনগর, বাহির টেংরাসহ বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট বাসায় এবং রাস্তার পাশে ডিএনডি খালের পাড়ে পুলিশের ছত্রছায়ায় চলে ভ্রাম্যমান পতিতা ব্যবসা। বেশ কিছু পতিতা পুলিশের যোগসাজশে তাদের সোর্সদের মাধ্যমে অনেক খদ্দেরকে ঘরে আটক করে। পরে সম্মানের ভয়ে পুলিশ ও পতিতাদের ফাঁদে পড়া সেসব খদ্দেররা অনেক টাকার বিনিময়ে পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পায় বলেও জানা যায়। এমনও অভিযোগ রয়েছে ভাসমান ও স্থায়ী পতিতার মধ্যে যারা একটু সুন্দর তাদের নিয়ে অনেক পুলিশ অনৈতিক কাজ করেন। [ডেমরায় পুলিশের ডিজিটাল চাঁদাবাজি -আমাদের সময়.কম – 13.09.2015]
.
*নোয়াখালীতে ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী ও পতিতা থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ
.
*সাভারের আমিনবাজারে অপরাধ দমনের জন্য বসানো হয়েছিল একটি পুলিশ ক্যাম্প। ক্যাম্পটি সাভার মডেল থানার অন্তর্গত। এটি দায়িত্বশীলতার মডেল না হয়ে হয়ে উঠেছিল দুর্বৃত্তপনার আখড়া। বহুদিন ধরে ক্যাম্পটির কর্মকর্তারা স্থানীয় বাজার থেকে জিনিসপত্র কিনে দাম না দেওয়া, লোকজনকে থানায় ধরে নিয়ে প্রহার, মামলার হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় ও শিশু-কিশোরদের আটক করে অর্থের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়াকে মোটামুটি নিয়মে পরিণত করে ফেলেছিলেন।
.
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনেও সেবা খাতগুলোর মধ্যে পুলিশ বিভাগ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত বলে উল্লেখ করেছে। আইন রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত এই ব্যক্তিরা আইন লঙ্ঘনকেই অবশ্যকর্তব্য বলে মনে করেন এবং চাঁদাবাজি, নির্যাতন, হয়রানি ও জিনিসপত্র নিয়ে দাম না দেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছেন লাগামহীনভাবে। [পুলিশের চাঁদাবাজি – প্রথম আলো – আগস্ট ২৮, ২০১৩ ]
.
*ঈদে মহাসড়কে পুলিশের চাঁদাবাজি
[দৈনিক জনকণ্ঠ প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬]
.
পণ্য ওঠা-নামায় মোটা অংকের অর্থ দাবি ও তুচ্ছ ঘটনায় পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে দোকানপাট বন্ধ করে ধর্মঘট পালন করছেন ঝালকাঠি জেলার সর্ববৃহৎ হাট রাজাপুরের বাঘরিহাটের ব্যবসায়ীরা। [ঢাকাটাইমস২৪ –
পুলিশের ‘চাঁদাবাজি’র অভিযোগে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট]
.
বছরের পর বছর মহাআনন্দে এসকল কাজ করে যাওয়া বাহীনির মহাপরিদর্শক মানবাধিক নিয়ে প্রশ্ন করছে অথচ ন্যূনতম সম্মান, আত্মমর্যাদা ও লজ্জা সম্পর্কেই এ বাহীনীর ধারণা নেই। এটা হল সেই বাহিণী যাদের স্ত্রী-সন্তানদের ঈদের কাপড় আসে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে নেওয়া ঘুষের টাকা থেকে। এটা হল সেই বাহিনী যার সদস্যরা ঈদের জন্য পশু কিনে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পাওয়া মাদক ব্যবসার বখরার টাকা দিয়ে। এটা হল সেই বাহিনী যার সদস্যরা তাদের মেয়ের বিয়ে দেয় পতিতাদের কাছ থেকে পাওয়া চাদার টাকা দিয়ে। তাহলে আত্মমর্যাদা, সম্মান, অধিকার, মানবিকতা – অতএব টাকার বিনিময়ে নিজেকে দিনে একাধিকবার বিক্রি করা ব্যক্তিদেরর মুখে মানবাধিকার শব্দের অর্থ কি? মানবিক বিচার, বিবেক, বিবেচনা ও অনুভূতির সাথে এধরনের লোকের সম্পর্কই বা কি?
.
*পুলিশ কনস্টেবল ‘ধর্ষিত’, ‘ধর্ষণকারী’ এএসআই। রাজধানীর খিলগাঁও তিলপাপাড়ায় বৃহস্পতিবার তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে ওই নারী কনস্টেবলের বোন জানিয়েছেন। ওই নারী পুলিশ সদস্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন। [নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম – 2015-06-13]
.
*পুলিশ আমাকে থানায় রেখে ইলেকট্রিক শক দিয়েছে। মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। পুলিশ বলেছে, আমি যেন আমার বোনকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করি। আমি বলেছি, নিজের বোনকে কি কেউ কখনো ধর্ষণ করতে পারে?। ধর্ষণ মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে প্রায় সাত মাস জেল খেটে কয়েক দিন আগে জামিনে বের হয়ে এসে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাঙ্গুনিয়ার কিশোর তাসফিক উদ্দিন ছবুর এ কথা বলে।[নয়াদিগন্ত – চট্টগ্রাম ব্যুরো, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৫]
.
পুলিশ বাহিণীর এরকম শত শত অপরাধের ফিরিস্তি পত্রিকাগুলোর পাতায় পাতায়, আর চাপা পড়ে যাওয়া খবরের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কিন্তু তবুও এ নির্লজ্জ, ঘুষখোর, ধর্ষক, আত্মসম্মান, আত্মমর্যাদাহীন বাহিনীর মহাপরিদর্শক চায় মানবাধিকার নিয়ে কথা বলতে! এ প্রশ্নটি করেছে এমন এক লোক, যে এমন এক বাহিনীর প্রধান যে বাহিনীর “হিরো’ অফিসার নিজের স্ত্রীকে নিজেই ভাড়াটে খুনী দিয়ে হত্যা করে। এবং এই বাহিনী সেই খুন চেপে যায়। আর এ “হিরো” অফিসারের- ফ্যামিলি ড্রামার বলি হয়ে পবিত্র রমযানের মাসে ১৫০০০ এর বেশি মানুষকে গ্রেফতার হতে হয়।
.
এদের কাছে জঙ্গিদের কি কোন ধরনের মানুষেরই তো মানবাধিকার নেই। এরা না চেনে মানবতা, না চেনে অধিকার। এরা চেনে টাকা, রুপি ডলার। এরা চেনে স্যার আর ম্যাডামদের। এরা চেনে পদ, পদবি আর প্রমোশান। এরা চেনে নারী, বাড়ি, গাড়ি। অতএব মানবাধিকারের ব্যাপারে এই মহাপরিদর্শক কিংবা ও বাহিনীর অন্য কেউ কি জানে?
.
.
জঙ্গিদের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নকারী হল ঐ বাহিনীর মহাপরিদর্শক যার সদস্যরা বাংলাদেশ কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানীর পকেটে ইয়াবা গুঁজে দিয়ে মাদকব্যবসায়ী বলে তাকে থানায় নিয়ে তার কাছে ঘুষ আদায় করে। আবার এই একই বাহিনী সত্যিকারের মাদকব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা খেয়ে নির্বিঘ্নে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে যেতে দেয়।
.
এটা হল সেই বাহিনী যারা বন্দীদের গোপনাঙ্গে ইলেকট্রিক শক দেয়, প্লাচ দিয়ে নখ টেনে ওঠায়, বুট পড়ে বুকের উপর উঠে লাফায়। দিনের পর দিন সিলিংয়ের সাথে ঝুলিয়ে রাখে, শুধুমাত্র ছাত্রশিবির করার অপরাধে। এটা হল সেই বাহিনী তাগুত হাসিনা ও তার ভারতীয় প্রভুদের খুশি করতে শাপলা চত্বরে উলামা,তালিবুল ইলম ও ইসলামপ্রেমী জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। আর তারপর এরা বলে “আমরা তো হুকুমের গোলাম! নিরুপায়”।
.
হে তাগুতের গোলাম, তোমাদের কাছে মানবাধিকারের অর্থ কি? হে ফিরিঙ্গি আর গাভীপূজারিদের গোলাম তুমি মানবাধিকারের কি বোঝ? মানবাধিকার দিয়ে তো ঘুষ খাওয়া যায় না, আর প্রমোশন পাওয়া যায় না – তাহলে এ বিষয়ের সাথে তোমার কি লেনদেন?
.
এটা হল সে বাহিনী যেটা নবীর ﷺ অবমাননাকারী মালাউন অভিজিতকে হত্যার কারনে, অভিজিতের নাপাক রক্তের বদলে ক্রসফায়ার নাটকে হত্যা করে এমন মুসলিম ব্যাক্তিকে যিনি তার কাজের মাধ্যমে এ ভূমির মুসলিমদের অন্তরকে শান্ত করেছিলেন। এই সেই বাহিনি যারা বন্দীদের শরীরে ড্রিল মেশিন দিয়ে ফুটো করে ইসলামবিদ্বেষী এবং নবীর ﷺ অবমাননাকারীদের হত্যা করার কারনে।
.
অতঃপর হে ডলার আর রুপির গোলাম, হে ‘স্যার আর ম্যাডামদের’ গোলাম মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার তুমি কে? অমানুষের কি অধিকার মানুষদের বিষয়ে কথা বলার?
.
এটা হল সেই বাহিনী যাদের ছত্রছায়ায় পহেলা বৈশাখে সমকামীদের মিছিল হয়। যাদের নিরাপত্তা স্তরের আড়ালে সমকামীতার উৎসব চলে। এটা হল সেই বাহিনী যারা নিরাপত্তা দেয় ঐসব লোক এবং সংগঠনকে যারা এ ভূমিতে সমকামীতার প্রসারের জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করছে। আর যখন আল্লাহর বান্দারা সমকামীর প্রচারক ও প্রসারককে তার উপযুক্ত প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয় তখন এই বাহিনী তাগুতের পক্ষ নিয়ে, শয়তানের পক্ষ নিয়ে, কুফরের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করে ইসলামের পক্ষালম্বন করা ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে।
.
অতএব হে পদ আর পদবীর গোলাম, হে কুফর শক্তির গোলাম – মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার তুমি কে? সমকামী অধিকার রক্ষাকারী তুমি মানবিকতা, নীতি, নৈতিকতা আর অধিকার নিয়েই বা কি জানো যে তুমি মানবাধিকারের মতো বড় বড় শব্দ উচ্চারন করা শুরু করেছ? তোমার দুনিয়াতো স্যার-ম্যাডাম, পদ-পদবী ঘুষ, চাঁদা, মিথ্যাচার, চক্রান্ত, টাকা-ডলার-রুপির, মাদক-পতিতা-জুয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ – কেন তুমি তোমার পচে যাওয়া ছোট মাথাটা মানবাধিকারের মটো বিষয় নিয়ে চিন্তার করার জন্য খাটাচ্ছো?
.
এটা হল সেই বাহিনি যাদের সদস্যরা বিনা অপরাধে মানুষকে থানায় নিয়ে নির্যাতন করে ঘুষ দাবি করে, ঘুষ না পেলে নির্যাতন করে। হাত-পা ভেঙ্গে দেয়, পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে এবং এর উদাহরণ এতো অধিক সংখ্যক যে উল্লেখ করতে গেলে এখানে উল্লেখ করার সম্ভব না। এই হল সেই বাহিণি যে বাহিনীর “শহীদ” হল ওসি সালাউদ্দিন, যে ঘুষের জন্য থানায় পিটিয়ে মানুষ হত্যা, আদালত চত্বরে শ্লীলতাহানি, ৫ বছরের শিশুকে গ্রেফার করা ,চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলার মতো অসংখ্য মহান অবদান রেখে গেছে। [বিস্তারিত পড়ুন – http://tinyurl.com/j82drbr ]
.
এই অমানুষ সালাউদ্দিনের কথা বলতে গিয়ে চোখে পানি এনে ফেলা মহাপরিদর্শক যখন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে তখন ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়? বলতে। ওহে মূর্খ, নির্লজ্জ ব্যক্তি, ওহে মহাধর্ষক বাহিনীর মহাপরিদর্শক! তুমি কি জানো না বেশ্যার মুখে সতীত্বের কথা মানায় না? বরং বেশ্যা তো তোমাদের তুলনায় উত্তম। সে টাকার বিনিময়ে শুধু তার শরীর বিক্রি করে, আর তোমরা বিক্রি করো নিজের দ্বীন, দুনিয়া, ইমান, আদর্শ, মর্যাদা-সম্মান, সবকিছু।
.
তাই এ মহাপরিদর্শকের প্রশ্নের জবাবে আমি বলি – হে নির্লজ্জ, অপমানিত আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাহীন গোলাম, হে ফিরিঙ্গী ও গাভীপূজারীদের গোলাম, হে ডলার-রুপির গোলাম, হে স্যার-ম্যাডামদের গোলাম, হে পদ-পদবী-পদোন্নতির গোলাম – ব্যাপারতা এমন না যে তোমার এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া আমার জন্য কঠিন, বরং বাস্তবতা হল আমার দেয়া উত্তর বোঝা তোমার মতো হতভাগ্যের জন্য অসম্ভব। তাই আগে তুমি ও তোমার গোলাম বাহিনী মানুষ হও, মনুষ্যত্ব কি তা শেখো। যদি তা না পারো কমপক্ষে পশু জগতের মধ্যে যে লজ্জা, সম্মান ও মর্যাদাবোধ আছে তা শিখে নাও। নিজেকে বিক্রি করা বন্ধ কর, নিজের দ্বীনকে বিক্রি করা বন্ধ কর। তারপর হয়তো মানবাধিক শব্দটা নিয়ে চিন্তার করার প্রাথমিক পর্যায়ে তুমি পৌছাতে পারবে। অন্যথায় তুমি তোমার নোংরা, ক্ষুদ্র, ঘিঞ্জি মাথা এবং তোমার পচে গলে যাওয়া, দুর্গন্ধ ছড়ানো অন্তরকে ব্যস্ত করো না মানবাধিকার কিংবা মানবতা নিয়ে চিন্তায়। কেউই তার সাধ্যেরবাইরে যেতে পারে না, আর অমানুষ কখনো মানুষদের বিষয়ে মন্তব্য করতে পারে না।