ইসলামী বসন্ত পর্ব-৯ তুর্কিস্তান…সবর ও নুসরতের গল্প -শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরি (হাফিজাহুল্লাহ)
ইসলামী বসন্ত
পর্ব-৯
তুর্কিস্তান…সবর ও নুসরতের গল্প
শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরি (হাফিজাহুল্লাহ)
ডাউনলোড করুন
ইসলামী বসন্ত
পর্ব-৯
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
https://banglafiles.net/index.php/s/oJqMgKH8t364ZPL
https://archive.org/details/IslamiBosonto9
https://www.file-upload.com/h4xjcyflwzc6
https://archive.org/details/IslamiBosonto9_201811
https://archive.org/details/IslamiBosonto9_20181103
http://www.mediafire.com/file/adq0dakkesxobw0/IslamiBosonto-9.pdf/file
https://archive.org/download/IslamiBosonto101_20190624_1627/IslamiBosonto-9.pdf
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
https://banglafiles.net/index.php/s/zfqy2H7By5DtdDX
https://archive.org/details/IslamiBosonto9
https://www.file-upload.com/pd6oc5hvwiu3
https://archive.org/details/IslamiBosonto9_201811
https://archive.org/details/IslamiBosonto9_20181103
http://www.mediafire.com/file/8er7m0o2huv4a82/IslamiBosonto-9.docx/file
https://archive.org/download/IslamiBosonto101_20190624_1627/IslamiBosonto-9.docx
====================================
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية (بنغلاديش)
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]
============================
ইসলামী বসন্ত
পর্ব-৯
তুর্কিস্তান…সবর ও নুসরতের গল্প
শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরি (হাফিজাহুল্লাহ)
এই পর্বে আমি পূর্ব তুর্কিস্তানের মুসলমান ভাইদের নিয়ে কথা বলতে চাই।
পূর্ব তুর্কিস্তান, ইসলামের ভুলে যাওয়া এক অঞ্চল। যেখানকার ভাইরা, আমাদের মুসলিম পরিবারের সদস্যগণ প্রতিনিয়ত নাস্তিক চীনের দমন-পীড়নের স্বীকার হচ্ছে। তাঁদেরকে হত্যা, নির্যাতন, ও গ্রেফতার করা হচ্ছে; তাঁদের আকীদাকে পরিবর্তন করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে; তাঁদের মাঝে অশ্লীলতা ও মাদকের সয়লাব ঘটানো হচ্ছে; দ্বীনের শিআরসমূহ আদায় করতে দেয়া হচ্ছে না; মহিলাদের পেটের সন্তানকে মেরে ফেলা হচ্ছে; মুসলমানদের সম্পদ ভোগ-দখল করা হচ্ছে, সেগুলো চুরি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে; তাঁদের ভূমিকে পারমানবিক বোমার পরীক্ষণের জন্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, পারমানবিক বর্জ্য ফেলছে; মুসলিম নারীর হিজাব কেড়ে নেয়া হচ্ছে; এবং লক্ষ লক্ষ চীনা নাস্তিক দ্বারা তাঁদের দেশ ভরে ফেলা হচ্ছে। নাস্তিকদের এসকল নির্যাতন, চীনাদের এসকল অত্যাচারের মুখে দ্বীনকে দৃঢ়ভাবে ধারণকারী এসকল মুসলমানের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত এসকল ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ড চলছে।
কিন্তু এতোসব জুলুম অত্যাচারের পরেও পূর্ব তুর্কিস্তানের মুসলিম ভাইয়েরা নতি স্বীকার করেননি, বরং তাঁরা চল্লিশেরও কিছু বেশি সংখ্যক আন্দোলন করেছেন। ক্রমান্বয়ে তাঁদের এ আন্দোলন দখলদার নাস্তিক চীনাদের বিরুদ্ধে জিহাদে রূপ নিয়েছে।
***
পূর্ব তুর্কিস্তানের মুসলিম ভাইয়েরা!
আপনাদের সামনে একটি দীর্ঘ লড়াই। আল্লাহর কাছে দু’আ তিনি যেন আপনাদেরকে সাহায্য করেন, এবং আপনাদেরকে তাওফীক দান করেন।
আপনাদের সামনে দখলদার চীনাদের বিরুদ্ধে একটি কঠিন যুদ্ধ, যারা আপনাদের ভূমিকে লক্ষ লক্ষ চীনা দ্বারা দখল করে রেখেছে। তাই আপনাদের সামনে তুর্কিস্তানের মুসলিম উম্মাহকে উৎসাহ দান, একত্রিতকরণ, জাগানোর লড়াই, এবং তাঁদেরকে প্রস্তুতকরণের লড়াই।
আপনাদের সামনে তুর্কিস্তানের মুসলিমদেরকে শরীয়তের আহকাম, ইসলামের আদাবের দিকে আহ্বান করার লড়াই; নাস্তিকতার সর্বনাশ থেকে উম্মাহকে বাঁচানোর লড়াই যা নাস্তিক চীনারা বিস্তার করছে।
আপনাদের লড়াই হলো যুবকদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লড়াই; তাঁদেরকে ইলম অন্বেষণের, আকীদার পাঠ পড়ানোর, শরীয়তের বিধিবিধান শেখানোর লড়াই, যেন আপনাদের মাঝ থেকে বের হয়ে আসে সত্য পথের দাঈ যারা উম্মাহকে ইসলামের পথে ফিরিয়ে আনবেন।
আপনাদের লড়াই হলো প্রত্যেক জিহাদের ময়দানের মুজাহিদ ভাইদের সাথে জিহাদ ও কিতাল করার লড়াই। তাই যখন কোন মুসলিমের উপর তাঁর দেশে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়, তখন তাঁর উপর ওয়াজিব হলো দ্বীনের প্রতিষ্ঠাকল্পে দ্বীনের সাহায্যার্থে যেখানে সম্ভব হয় হিজরত করা। আর আমরা হলাম একটি জাতি যার সম্পর্কে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
“এক মুমিন অপর মুমিনের জন্যে প্রাচীরের ন্যায়। তার একটি অপরটির সাথে জোড়া লেগে থাকে।”
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন,
“ভালোবাসা, দয়া করা, দান করার ক্ষেত্রে মুমিনরা এক দেহের ন্যায়। যখন তাঁর কোন এক অঙ্গে ব্যাথা অনুভব হয়, তো সারা শরীরে জ্বর এসে যায় ও সমস্ত রাত জাগরণ করতে থাকে।”
মুসলমানদের দেশ একটি দেশ। যদি কেউ তাঁর এলাকাতে জিহাদ ও ইদাদ করতে না পারে, তাহলে সে যেন হিজরত করে। কেননা হিজরত রাসূলদের (আলাইহিমুস সালাম) সুন্নাত, তাঁদের অনুসারীদের সুন্নাত। আল্লাহ তা’আলা কোরআনে হযরত মূসা (আলাইহিস সালাম)-এর কথা স্মরণ করে বলেন,
فَفَرَرْتُ مِنكُمْ لَمَّا خِفْتُكُمْ فَوَهَبَ لِي رَبِّي حُكْمًا وَجَعَلَنِي مِنَ الْمُرْسَلِينَ [الشعراء-٢١]
“অতঃপর আমি ভীত হয়ে তোমাদের কাছ থেকে পলায়ন করলাম। এরপর আমার পালনকর্তা আমাকে প্রজ্ঞা দান করেছেন এবং আমাকে পয়গম্বর করেছেন।”(সূরা শু’আরাঃ ২১)
আল্লাহ সুবহানাহু ও তা’আলা আরো বলেন,
وَالَّذِينَ هَاجَرُوا فِي اللَّهِ مِن بَعْدِ مَا ظُلِمُوا لَنُبَوِّئَنَّهُمْ فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً ۖ وَلَأَجْرُ الْآخِرَةِ أَكْبَرُ ۚ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ ، الَّذِينَ صَبَرُوا وَعَلَىٰ رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ [الشعراء : ٤١۔٤٢]
“যারা নির্যাতিত হওয়ার পর আল্লাহর জন্যে গৃহত্যাগ করেছে, আমি অবশ্যই তাঁদেরকে দুনিয়াতে উত্তম আবাস দিবো এবং পরকালের পুরস্কার তো সর্বাধিক; হায়! যদি তাঁরা জানতো।”(সূরা শু’আরাঃ ৪১-৪২)
শায়খ আব্দুল্লাহ আযযাম, শায়খ আবু মুসআব আয-যারকাওয়ী (রহিমাহুমাল্লাহ) ফিলিস্তিনে জিহাদ করেছিলেন। তারপর যখন সেখানে থাকা তাঁদের জন্য কষ্টকর হয়ে যায়, তাঁরা নিজেদের দেশে থেকে ইহুদীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে সক্ষম হলেন না, তাঁরা পাকিস্তানে হিজরত করলেন। তারপর সেখান থেকে তাঁরা আফগানিস্তানে হিজরত করলেন, যেন আফগানের মুজাহিদদের সাথে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এরপর শায়খ আবু মুসআব (রহিমাহুল্লাহ) ইরান যান এবং সেখান থেকে ইরাকে হিজরত করেন। আর শায়খ উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ) পাকিস্তানে হিজরত করার পর সুদানে হিজরত করেন। তারপর তিনি সেখান থেকে আফগানিস্তানে হিজরত করেন।
অতঃপর সেখানে বিশ্বব্যাপী এমন একটি ইসলামী বিপ্লব প্রতিষ্ঠা করলেন যা বিশ্ব কুফফারদেরকে দূর্বল করে দেয়। তারপর তিনি বিশ্বব্যাপী ইহুদী ও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্যে একটি বৈশ্বিক ইসলামী দল গঠন করেন। এরপর তিনি আমীরুল মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মদ উমর (রহিমাহুল্লাহ)-কে বাইয়াত প্রদান করেন, যেন মুসলমানরা একত্রিত হয়। তাঁকে উসামা বিন লাদেন (রহিমাহুল্লাহ) বাইয়াত দেয়া মানে তাঁকে শায়খ আবু মুসআব আয-যারকাওয়ী, শায়খ আবু হামযা আল-মুহাজির, শায়খ আবু ওমর আল-বাগদাদী (রহিমাহুমাল্লাহ) বায়াত দেন। তাঁকে মাগরেবে ইসলামীর মুজাহিদগণ, এবং জাযিরাতুল আরবের মুজাহিদগণও বাইয়াত প্রদান করেন। তাঁর শাহাদাতের পর আল-কায়েদার সোমালিয়া শাখা ও ভারত উপমহাদেশের ভাইরা তাঁকে বাইয়াত দেন। আর এসকল কিছুই হিজরত ও একতার বরকতে হয়েছে।
এমনিভাবে শায়খ আবু মুহাম্মদ আত-তুরকিস্তানী (রহিমাহুল্লাহ) ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের উদ্দেশ্যে হিজরত করেন। তিনি ইমারাহকে বাইয়াত দেন এবং তাঁর সাথে সাথে আপনাদের অনেক পূণ্যময় ধর্মীয় ব্যক্তিত্বও বাইয়াত প্রদান করেন।
মোট কথা, শায়খ আবদুল্লাহ আযযাম, শায়খ উসামা বিন লাদেন, শায়খ আবু মুসআব আস-সুরী, শায়খ আবু মুসআব আয-যারকাওয়ী, এবং শায়খ আবু মুহাম্মদ আত-তুরকিস্তানী (রহিমাহুমাল্লাহ) প্রমুখ জিহাদের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বগণ ইসলামের সাহায্যার্থে হিজরত করেন যখন তাঁদের দেশ তাঁদের জন্যে সংকীর্ণ হয়ে এলো। তাঁরা যেন আল্লাহ তা’আলার এ বাণীর উদাহরণ স্বরূপ; তিনি ইরশাদ করেন,
وَمَن يُهَاجِرْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يَجِدْ فِي الْأَرْضِ مُرَاغَمًا كَثِيرًا وَسَعَةً ۚ وَمَن يَخْرُجْ مِن بَيْتِهِ مُهَاجِرًا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ يُدْرِكْهُ الْمَوْتُ فَقَدْ وَقَعَ أَجْرُهُ عَلَى اللَّهِ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا [النساء: ١٠٠]
“যে কেউ আল্লাহর পথে দেশত্যাগ করে, সে এর বিনিময়ে অনেক স্থান ও সচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। যে কেউ নিজ গৃহ থেকে বের হয় আল্লাহ ও রসূলের প্রতি হিজরত করার উদ্দেশ্যে, অতঃপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তবে তাঁর সওয়াব আল্লাহর কাছে অবধারিত হয়ে যায়। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।” (সূরা নিসাঃ ১০০)
আমাদেরকে স্মরণ রাখতে হবে, ইহুদীরা ফিলিস্তিন দখল করার প্রস্তুতি স্বরূপ খ্রিস্টান জোটের সাথে থেকে দুটি বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে ইউরোপে, লিবিয়ায়, মিসরে, ও শামে। এখন আপনারা নিজেরা দেখছেন রিবাত ও জিহাদের ভূমি শামে কীভাবে কুফর সংঘ একত্রিত হয়েছে। সাফাভী শিয়ারা তাদের সাহায্যকারী ইতরদের আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, ও লেবানন থেকে একত্রিত করেছে। পশ্চিম ও পূর্বের খ্রিস্টানরা তাদের নাস্তিক, ধর্মনিরপেক্ষ, ও জাতিয়তাবাদী বন্ধুদের নিয়ে মুসলমানদের মারতে এসেছে। তারা এ বিষয়ে একমত যে, তারা রিবাত ও জিহাদের ভূমি শামকে জিহাদী মুসলিম দেশ হিসেবে গড়তে দেবে না।
আফগানের পাহাড়-পর্বতও পূর্ব তুর্কিস্তানের আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন মুজাহিদদেরকে চেনে। তাঁরা ইমারাতে ইসলামিয়াকে রক্ষা করার জন্যে মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করেছেন যাদেরকে রাশিয়া, ইরান, আমেরিকা, ও ইউরোপ সমর্থন দিয়েছিলো। আর যখন আমেরিকা ও তার জোট, এবং তাদের চাটুকাররা শেষ ক্রুসেড হামলা করেছিলো, পূর্ব তুর্কিস্তানের মুজাহিদ ভাইরা তোরাবোরাতে তখন জিহাদ করেছিলেন। তারপর ওয়াযিরিস্তান, ও আফগানিস্তানের আনাচে কানাচে তাগুতের মোকাবেলা করেছেন।
বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তান সরকার এবং আমেরিকান খ্রিস্টান জোটের অনবরত হামলা সত্ত্বেও তাঁদের জিহাদ থেমে যায়নি। যখন রিবাত ও জিহাদের ভূমি শামে জিহাদ প্রতিষ্ঠা পেলো, তখন পূর্ব তুর্কিস্তানের মুজাহিদ ভাইরা সেখানে শামের ভাইদের সহায্য করার ক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন।
সুতরাং শামের (সিরিয়ার) বরকতময় ভূমিতে তাঁদের জিহাদ এটাই প্রমাণ করে যে, আরব বসন্ত, যা সাম্যবাদীরা এবং ইসলামী কর্মকান্ডের দাবীদার কিছু দল ধর্মনিরপেক্ষতার দিকে অধপতিত হয়ে নষ্ট করে দিয়েছে। তাছাড়া তারা আরব বসন্তকে ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবরচিত সংবিধান, মানুষের প্রবৃত্তির কাছে বিচার চাওয়া, জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র চেতনা এবং দেশীয় লীগ প্রভৃতির বৃত্তে নিমজ্জিত করে রেখেছে। আল্লাহর হুকুমে অচিরেই এই ব্যর্থ, নষ্ট আরব বসন্তের গতিপথ সংশোধিত হয়ে ইসলামী বসন্তের রূপ ধারণ করবে। যা শরীয়তের শাসনে, মুমিনদের ভ্রাতৃত্বে ও ইসলামী ভূখন্ডসমূহের ঐক্যে বিশ্বাসী হবে। তদ্রুপ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ ও দাওয়াতের মাধ্যমে নবুয়্যতের আদলে খিলাফত ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার নিমিত্তে আপ্রাণ প্রয়াস চালিয়ে যাবে। যাতে করে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর জন্যই হয়ে যায়।
শামে আপনাদের পরবর্তী সাহায্য আল্লাহর ইচ্ছায় মিসর ও তিউনিসিয়ার মজলুমদের জন্য একথা সাব্যস্ত করবে যে, উম্মাহর বিজয়ের জন্যে দাওয়াত ও জিহাদের পথই সঠিক। এটি আল্লাহর ইচ্ছায় ইসলামী বসন্তের বিজয়ের সুসংবাদ।
পূর্ব তুর্কিস্তানের মুজাহিদ ভাইরা! আপনারা ক্রুসেডারদের হামলার আগে ও পরে আফগানিস্তানে ইমারাতে ইসলামিয়ার পক্ষে জিহাদ করেছেন, এবং শত্রুদেরকে প্রতিহত করেছেন। এরপর ওয়াযিরিস্তানে জিহাদ করেছেন, আর তারপর রিবাতের ভূমি শামে, যা মুমিনদের জন্যে উত্তম স্থান। জিহাদ করার মাধ্যমে আপনারা একথা সাব্যস্ত করেছেন যে, আমরা এক জাতি, এবং আমাদের মাঝে কোন জাতিগত, বংশগত ভেদাভেদ নেই, নেই কোন সীমানা। আপনারা এ কথার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন যে, মুজাহিদদেরকে ক্রুসেডার, সাফাভী, নুসাইরি ও ধর্মনিরপেক্ষতার মত নিকৃষ্ট মতবাদীদের হামলার বিপরীতে এক হতে হবে যারা রাফেদী, খ্রিস্টান, নুসাইরি, রাশিয়ানদের জোটের মাধ্যমে ইসলাম ও জিহাদকে সমূলে উৎপাটন করতে চায়।
এ মারাত্মক হামলা আমাদের সকলের কাছে এ দাবী রাখে যে, কুসংস্কার ও নির্বুদ্ধিতার বিভক্তি পরিত্যাগ করে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবো। আমাদের উপর আবশ্যক হলো, বিভক্তির ডাক, মিথ্যা দাবী, ভ্রান্ত ধারনা, অন্তঃসারশূন্য উপাধীসমূহ যা বাস্তবসম্মত নয় এবং শরয়ী ভিত্তিতেও নয়। বরং খুলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাতের বিপরীত এবং জোর-জবরদস্তির রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করে। যা সঠিক মত-পথের বিপরীতে হাজ্জাজের পন্থার সাথে মিলে যায়। এসবের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গঠন করা।
যে ব্যক্তি নিজেকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিযুক্ত করলো তার ধারালো ছুরি দ্বারা, বিদীর্ণকারী বুলেট দ্বারা, বিপথগামী অভিযোগ দ্বারা, বা বিচ্ছিন্নকারী বিভিন্ন ভাবাদর্শ দ্বারা, সে অনেক বড় অপরাধ করলো। সে শুধু খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে পিছনে নিক্ষেপ করেনি, শুধু হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফের মতের অনুসরণ করেনি, বরং সে এমন কিছু অনুসরণ করেছে যা থেকে আমাদের নেতা উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সাবধান করেছিলেনঃ
إني- إن شاء الله- لقائم العشية في الناس فمحذرهم هؤلاء الذين يريدون أن يغصبوهم أمورهم
“ইনশাআল্লাহ, আমি আজ রাতে মানুষের সামনে দাঁড়াবো এবং তাঁদেরকে ঐ সকল লোকদের ব্যাপারে সর্তক করবো যারা অন্যের অধিকার হরণ করে, এবং তাঁকে বঞ্চিত করে (বিষয়টি ছিল খিলাফাহর ব্যাপারে)।”
কিন্তু বাতিল আরও চায় মুজাহিদদের কাতারকে বিক্ষিপ্ত করতে। অথচ এ সময়ে তাঁদের একীভূত হওয়া আমাদের জন্যে অধিক প্রয়োজন। তারা প্রত্যেকে তাদের উদ্দেশ্য ও আশা বাস্তবায়নের জন্যে তাকফির করা, গালি দেয়া, পবিত্র রক্তকে প্রবাহিত করা, নিষ্পাপ মহিলাদেরকে যিনার অপবাদ দেয়া, মর্যাদাবান লোকদেরকে গোয়েন্দা বলে অপমান করা, পরামর্শ থেকে পালানো, শরীয়তী বিচারপন্থা থেকে পালানোর পথ ছাড়া ভিন্ন পথ পেলো না। তাদের এ কাজ শত্রুদেরকে অমূল্য খেদমত পেশ করেছে!
শরীয়তের সাথে প্রতারণার নিন্দায় ইমাম ইবনুল কায়্যিম (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,
“আমাদের শায়খ (রহিমাহুল্লাহ) [এখানে ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ) উদ্দেশ্য] বলেন, এ বিষয়ের সামঞ্জস্যশীল অপর একটি হাদিস এসেছে যা এক রেওয়াতে মারফু ও এক রেওয়াতে মাওকুফ। ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, এমন এক সময় আসবে যখন মানুষ পাঁচটি জিনিস দিয়ে পাঁচটি জিনিসকে হালাল করবে:
তারা মদের নাম পালটিয়ে একে হালাল করবে, অবৈধ সম্পদকে হাদিয়া বলবে, মানুষ হত্যা করাকে ইরহাব বলবে, যিনাকে বিবাহ বলবে, এবং সুদকে ক্রয়-বিক্রয় বলবে।”
এমনকি শায়খ (রহিমাহুল্লাহ) এভাবেও বলেছেন,
“অত্যাচারীরা রাজনৈতিক প্রতিপত্তি ব্যবহার করে আইন করে রাষ্ট্রীয় পবিত্রতার নামে সন্ত্রাস নাম দিয়ে মানুষ হত্যা বৈধ মনে করবে সেটা সুস্পষ্ট।
জুলুম করে অজ্ঞতাপ্রসূত তাকফির করার ব্যাপারে ইবনে তাইমিয়া (রহিমাহুল্লাহ) বলেন,
“যদি আপনি এমন কোন ব্যক্তির উপর বিজয় লাভ করেন যে ইলমের অধিকারী, যে মুহকাম দলীল খোঁজে সত্যের প্রতি অনুগত হওয়ার জন্যে, সে যেখানেই থাকুক, যেভাবেই থাকুক, যার সাথেই থাকুক একাকিত্ব চলে যায় ও তাঁর সাথে হৃদ্যতা হয়ে যায়, যদিও সে আপনার বিরোধীতা করে। কেননা সে আপনার বিরোধীতা করে ও আপনার কাছে ওযর পেশ করে। আর গণ্ডমূর্খরা কোন প্রকার প্রমাণ ব্যতীতই আপনার বিরোধীতা করবে, আপনাকে তাকফির করবে, এবং বিদ’আতী বলবে। আর আপনার অপরাধ আপনি তার অনুসৃত খারাপ পথ থেকে ও তার মত মন্দ চরিত্র থেকে দূরে থাকতে চান। এরকম শত ঘটনাও যেন আপনাকে ধোঁকায় না ফেলে। কেননা…পরস্পর বন্ধনযুক্ত এসব লোকেরা আহলে ইলমের কোন একজন মানুষের সমান নয়, আর আহলে ইলমের একজন মানুষ পুরো পৃথিবীর মানুষের সমান।”
যে সৎচরিত্রবান হয়, সে যেখানেই থাকুক না কেন, সবার থেকে দূরেই থাকুক না কেন, সে জানবে যে, আল্লাহর সাহায্যে মুজাহিদ ভাইরা উম্মতে মুসলিমার এসকল সন্তানরা উম্মতের ইতিহাসকে আবার লিখছে। আর তাঁদের প্রথম সারিতে হলো আপনাদের ভাই তুর্কিস্তানের মুজাহিদরা যারা তুর্কিস্তান, আফগানিস্তান, ও শামে ইসলাম ও মুসলমানদের হয়ে লড়াই করছে। সুতরাং তাঁদেরকে সাহায্য করা, তাঁদেরকে শক্তিশালী করা, এবং তাঁদেরকে সমর্থন করা আমাদের উপর আবশ্যক। আর প্রত্যেক মুজাহিদ, মুসলিম ও মজলুমকে সমর্থন করা ও সাহায্য করাও আমাদের উপর আবশ্যক।
وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين، وصلى الله على سيدنا محمد وآله وصحبه وسلم
والسلام عليكم ورحمة الله وبركاته