উপমহাদেশখোরাসাননির্বাচিতসংবাদ

নিজ বাড়িতে শহিদ করা হলো পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন উস্তাযুল মুজাহিদীন মাওলানা সামি‘উল হক্বকে(রহিমাহুল্লাহ)

পাকিস্তানের প্রভাবশালী ধর্মীয় পণ্ডিত ও সাবেক সিনেটর মাওলানা সামিউল হক্বকে (রহিমাহুল্লাহ) গতকাল রাওয়াল পিন্ডিতে নিজ বাসভবনে গুপ্তহত্যা করা হয়েছে। খবরটি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছেলে মাওলানা হামিদুল হক। মাওলানা হামিদুল হক বলেন, নিজ রুমে বিশ্রাম নেওয়ার সময় আমার পিতাকে শহীদ করে দেওয়া হয়। এসময় তাঁর ড্রাইভার হক্কানী গোসলের প্রয়োজনে বাহিরে ছিলেন। ফিরে এসে মাওলানা সামিউল হক্বকে বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। গাড়ির ড্রাইভার আনুমানিক মাত্র ১৫মিনিট  আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বলে জানান তাঁর ছেলে। তাঁর মৃত্যুটি এক সংবেদনশীল সময়ে হয় যখন  ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তায় এক গোস্তাখে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বেকুসুর খালাস দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছিল। মাওলানা সামিউল হক্ব রাস্তা অবরোধের কারণে এতে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তাই তিনি তাঁর বাসভবনে ফিরে আসেন।

মাওলানা হামিদ বলেন, তাঁর পিতাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।  মাওলানার মুখপাত্র বলেন, হত্যাকারীর পরিচয় বা গতিপ্রকৃতি কিছুই জানা যায় নি। তাঁর জন্মস্থান আকোরা খাত্তাকে মাওলানা সামিউল হক্বের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আজ দুপুরে তাঁর লাশ দাফন করা হবে বলে জানা যায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।

তিনি তাঁর জন্মস্থানে দারুল হাক্কানি মাদ্রাসার প্রধান ছিলেন, যেখানে দ্বীনি ইলম অর্জন করেছেন হাজারো তালেবান মুজাহিদ, যাঁদের মাঝে রয়েছেন আমিরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ ওমর রহিমাহুল্লাহ।  শহিদ সামিউল হক রহিমাহুল্লাহ পাকিস্তানের সিনেটর সদস্য ছিলেন ১৯৮৫-১৯৯১ আবার ১৯৯১-১৯৯৭ পর্যন্ত। তিনি পাকিস্তান-আফগান উভয় সীমান্তের তালেবানদের মাঝে খুব প্রভাবশালী একজন আলেম ছিলেন।  তাঁর মতামত তালেবান মুজাহিদীনের মাঝে বেশ গুরুত্ববহ ছিল। গত মাসে আফগানে একটি ইস্যুর দূর্লভ সমাধানের জন্য তাঁকে ফাদার অব তালেবান (তালেবানদের অভিভাবক) উপাধি দেওয়া হয়। তিনি নিজে বলেছিলেন, আফগানের ঐ ইস্যুটি খুবই জটিল ছিল। এর সমাধান আমার জন্য মোটেও সহজ ছিল না।

তাঁর জন্ম পরিচয়ঃ

তিনি ১৯৩৬ সালে আকুরা খাত্তাক এর এক ধার্মিক ও ঐতিহ্যবাহী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে ধর্ম পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ ও গবেষক ছিলেন, ছিলেন তালেবানদের একজন রাহবারও। তিনি সানাতে দাররা তাফসিরে কুরআন এবং সনদে ফাজিলাত ও ফারাগাতের ধারক ছিলেন।

আল্লাহ তা’য়ালা এই মহান ব্যক্তিত্বকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন। আমীন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 + 19 =

Back to top button