প্রবন্ধ-নিবন্ধ
উদ্ধত উদভ্রান্ত অসঙ্গতি – মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের বাস্তবতা
এমন এক ফিতনাময় সময়ে আমরা থাকি যখন দুনিয়া কেবল চতুর্দিক থেকেও না আমাদের অন্তরের ভেতরেও রাজ করছে। যখন দীনের পাবন্দির কথা চিন্তা করি তখনও আমরা দুনিয়া থেকে শেখা কিছু বাতিল চিন্তা বাদ দিতে পারিনা। এর অন্যতম এক উদাহরন হল কোন বিষয়, ব্যক্তি বা বক্তব্যকে গভীরভাবে যাচাই না করে বাহ্যিক অবস্থা কিংবা চাকচিক্য দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া। কিন্তু চকচক করলেই সোনা হয় না। আরেক উদাহরন হল উজুব, কিবর ও রিয়াতে আক্রান্ত হওয়া ও একে প্রশ্রয় দেওয়া। বর্তমান ফেসবুক জগতে আবার এ দুইটি বিষয় পরিপূরক আকারে কাজ করে। কোন ব্যক্তির চাকচিক্যময় বক্তব্য শুনে আমরা তাকে মাথায় তুলে ফেলি। অন্যদিকে গুণমুগ্ধ অনুসারীর দল ঐ ব্যক্তিকে নিজের ব্যাপারে প্রতারিত করে। অন্তরের ব্যাধিতে সে আক্রান্ত হয়। তার ভ্রান্তিগুলো আরো আত্মবিশ্বাসের সাথে ছড়াতে থাকে। কথার ঝলকে অনুসারীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এক অভিশপ্ত চক্রের মতো এ চলতেই থাকে।
বর্তমান সময়ে একভাবে বা অন্যভাবে আমরা অনেকেই এই ফিতনায় আক্রান্ত। ভাই শেখ সাদির সাথে বেশ কিছুদিন ধরে যে তর্কবিতর্ক চলে আসছে, তা হল এই ফিতনার জলজ্যান্ত উদাহরন। এ ব্যাপারে কিছু বিষয় এখানে লেখা। উল্লেখ্য, এই লেখার উদ্দেশ্য ব্যক্তিকেন্দ্রিক আক্রমন নয়। সকল ভাইকে আমরা এ থেকে বিরত থাকতে বলবো। বরং মুসলিম ভাইদের এই ফিতনার ব্যাপারে সতর্ক করা যাতে আমরা সকলেই পতিত হতে পারি, আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আর শেখ সাদি ভাইয়ের তর্ক, দাবি, বক্তব্য, স্বচ্ছতা, নৈতিকতা ও সত্য নির্ণয়ের পদ্ধতি সম্পর্কে ভাইদের জানানোও উদ্দেশ্য। ওয়ামা তৌফিকি ইল্লাহ বিল্লাহ।
বি দ্র – কারো ব্যাপারে কুধারনা করা, ধারনাপ্রসূত কথা বলা, কটুবাক্য বলা থেকেও আমরা ভাইদের বিরত থাকতে অনুরোধ করবো। এটি ইনসাফের দাবি নয়, আর এতে করে মুখ্য বিষয় থেকে গৌন বিষয়ের দিকে মনোযোগ ধাবিত হয়। আকিদা ও মানহাজগত বিচ্যুতি নিসন্দেহে অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে গুরুতর ত্রুটি।
ভ্রান্তি
ভাই শেখ সাদি গতো মাসখানেক যাবত প্রচুর বিষয়ে অনেক কথা বলেছেন। এসব ব্যাপারে আদল, ইনসাফ, আমানতদারিতা ও ন্যায়পরায়ণতার প্রমান তার কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। অনেক অভিযোগ তার কাছ থেকে এসেছে, কিন্তু সেগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়নি। অনেক চিত্র তিনি একেছেন কিন্তু বাস্তবের সাথে সেগুলোর মিল পাওয়া যায়নি। যখন এ ব্যাপারে আদবের সাথে, দালীলিকভাবে তার ভুল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে তখন তিনি উপেক্ষা করেছেন। নিজের স্পষ্ট ভুল স্বীকার করেননি বরং প্রয়োজন মতো নিজের কথা ঘুরিয়ে একেকবার একেক কথা বলেছেন, ব্যাখ্যা দিয়েছে, আলোচনার দিক পরিবর্তনের চেষ্টা করেছেন। উল্লেখ্য যে, কোন দল, মত কিংবা মানহাজ নিয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে। এটি নিন্দনীয় কিছু না। আপনি কোন দলকে ভুল মনে করতে পারেন, এ ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করতে পারেন। কিন্তু আপনার এ আলোচনায় আমানতদারিতা, সততা, ভারসাম্য ও সামঞ্জস্য থাকতে হবে। নইলে সেটা আর ইলমী অথবা দালীলিক অথবা আন্তরিক অথবা গঠনমূলক সমালোচনা হয় না সেটা বিদ্বেষ ও বিষোদগারে পরিণত হয়।
শেখ সাদি ভাইয়ের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে।
তার আলোচনা ও সমালোচনার পদ্ধতি সম্পর্কে আপত্তি ও যে ভুলগুলো আমাদের চোখে ধরা পড়েছে সেগুলো নিচের নোটে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
ভারসাম্যহীন উগ্র আস্ফালন – https://bit.ly/2MqCeJN
পাঠক এটি দেখে নিলে উপকৃত হবেন ইনশাআল্লাহ। এ নোটে আমরা বলেছিলাম,
আপনি কট্টর আহলে হাদিস ও মাজহাবিদের অপছন্দ করার কথা বলেন অথচ তাদের অনেকগুলো গুরত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য আপনার মধ্যে পাওয়া যায়।
যেমন > ইখতিলাফি বিষয়ে ইখতিলাফকে অস্বীকার করা বা চেপে যাওয়া। এমনভাবে কথা বলা যে আপনি যা বলেছেন সেটাই একমাত্র সঠিক মত। ভিন্নমতের স্বপক্ষে দলীলগুলো, বক্তব্য, ফতোয়া চেপে যাওয়া।
> ইখতিলাফি বিষয়ে আপনার সাথে না মেলা মতকে বিদআহ, গুলুহ এগুলো বলা।
>খুঁজে খুঁজে যে আছার ও আকওয়াল আপনার পক্ষে যায় সেগুলো উপস্থাপন করা, এগুলোর উপর ভিত্তি করে নিজের একটা ফতোয়া দেওয়া বাকিসব এড়িয়ে যাওয়া।
>উদ্ধৃতি থেকে যেটা প্রমান হয় না সেটা দাবি করা। ইচ্ছামত ব্যাখ্যা করা। ইচ্ছামতো কিয়াস করা।
>আপনি ভুল স্বীকারের কথা বলেন, কিন্তু স্পষ্ট ভুলকে স্বীকার করেন না। বরং যখন সেটা ভুল প্রমাণিত হয় তখন সেটা বাদ দিয়ে ভিন্ন একদিকে আলোচনাকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা।
এ বৈশিষ্ট্যগুলো এমন এক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয় যা সত্যান্বেষণ ও অনুসরণের বদলে যেকোন মূল্য নিজের মতকে জাহির ও বিজয়ী করাকে উদ্দেশ্য হিসাবে গ্রহণ করেছে। এমন মনোভাবে আল্লাহ সন্তুষ্ট করা যায় না। বরং অনেক সময় আল্লাহ এমন ব্যক্তির লুকায়িত অবস্থা প্রকাশ করে দেন।
এর একটি উদাহরন আমরা এখন দেখবো। ভাই সাদি বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন বিষয়ে নিজেকে দলীলের অনুসারী, যেকোন মূল্য সত্য মেনে নেওয়া ব্যক্তি, ইমাম ইবনে তাইমিয়াহর দৃষ্টান্তের অনুসারী – ইত্যাদি বলে দাবি করার চেষ্টা করেন কিন্তু এর কোন ছাপ তার কাজে পাওয়া যায় না।
বাস্তব দৃষ্টান্ত
মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের সাহায্য করা তথা তাওয়াল্লি তথা মুযাহারা কুফর আকবর ও রিদ্দা – এ সুসাব্যস্ত আকিদার ব্যাপারে তিনি কিছুদিন আগে বললেন, এই আকিদা চরমপন্থীদের আকিদা। গলদ আকিদা। তার মতে এই কাজটি কেবল তখনই কুফর হবে যখন এখানে অন্তরের বিষয় যুক্ত হবে। অর্থাৎ কাফিরদের সাহায্য করার সাথে সাথে যখন এর সাথে কাফিরদের দীনকে ভালোবাসা, এর বিজয় কামনা করা, কুফরকে পছন্দ করা, ইত্যাদি যুক্ত হয়।
তার এ ভ্রান্ত ধারণা ইতিমধ্যে আল্লাহর ইচ্ছায় খন্ডন করা হয়েছে। তিনি যেসব আলিমদের অনুসরনীয় মনে করেন, যেমন শাইখ বিন বাজ, শাইখ আল-ফাউজান, তাঁদের বক্তব্য দিয়েই।
এ ব্যাপারে দেখুন –
এর মধ্যে ভাই শেখ সাদির বক্তব্য খন্ডনে যেসব দলিল আনা হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিংশ শতাব্দীর জগৎ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও ফকীহ মিশরের আল্লামা আহমাদ শাকের রহিমাহুল্লাহ এর ফতোয়া যা তাঁর কালিমাতুল হাক্ক গ্রন্থের ১২৬ থেকে ১৩৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত হয়েছে। যেখানে তিনি বলেছেন
“ব্রিটিশদের সহযোগিতার ব্যাপারে কথা হলো, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অথবা বড় যে কোনো ধরনের সহযোগিতা হলো চূড়ান্ত ইরতিদাদ (দ্বীন ত্যাগ) ও নিশ্চিত কুফরি। এতে কোনো অজুহাত বা ভুল ব্যাখ্যা কোনোটাই গ্রহণযোগ্য নয়। মূঢ় জাতীয়তাবাদ, ভঙ্গুর রাজনীতি এবং ভণ্ডামিপূর্ণ তোষামোদ কিছুই এ দ্বীনি বিধান থেকে কাউকে রক্ষা করবে না। বিশেষ ব্যক্তি, সরকার বা নেতাদের মাঝে যদি তা সংঘটিত হয় তবে ইরতিদাদ (দ্বীন ত্যাগ) ও কুফরির ক্ষেত্রে এদের সবাই একই।
…….সুতরাং ওরা (ফ্রান্স) ও ব্রিটিশরা হুকুমের ব্যাপারে একই। প্রত্যেক স্থানে তাদের রক্ত ও সম্পদ হালাল। বিশ্বের যে কোনো স্থানের মুসলিমদের জন্য ওদেরকে কোনো প্রকারের সহযোগিতা করা নাজায়েয। যদি কেউ সহযোগিতা করে তবে তার হুকুম তাদের মতোই যারা ব্রিটিশদের সহযোগিতা করে, তা হলো ইরতিদাদ (দ্বীন ত্যাগ) যা সম্পূর্ণরূপে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আর এটা যে কোনো প্রকার বা প্রকৃতির সহযোগিতা হোক না কেনো।“
বিস্তারিত দেখুন –
ইংরেজি – https://tinyurl.com/y9zershq
স্পষ্টতই এই ফতোয়ার মাধ্যমে ভাই সাদি ও তার মতো অন্যান্যদের আপত্তি ও ভ্রান্তির বিপক্ষে স্পষ্ট প্রমান এসেছে। এই মত রাখার কারণে যদি বর্তমানের কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে গুলাত বা চরমপন্থী, বা ভুল আকিদা-মানহাজের বলা হয়, তাহলে এই কথা শাইখ আহমেদ শাকিরের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়া উচিৎ।
এই লেখা প্রকাশিত হবার পর যদিও ভাই সাদি সরাসরি এ লেখা ও দলীলগুলো নিয়ে আলোচনা করেননি। কিন্তু অন্যত্র এক কমেন্টে তিনি শাইখ আহমেদ শাকিরের বক্তব্যের এক অদ্ভুত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন –
‘শায়খ আহমাদ শাকের রহঃ যখন ব্রিটিশরা মিসর ইনভেড করেছিল, তখন যেকোন উপায়ে তাদের সাহায্য করা কুফর আকবার সাব্যস্ত করেছিলেন। কারণ এই পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য “মুসলিমদের উপর কাফিরদের জয় কামনা” শিরোনামভুক্ত হয়।”
সচেতন পাঠকমাত্রই তার এই দুই বক্তব্যের মধ্যেকার অসামঞ্জস্য ধরতে পারবেন। এ বিষয়টি দেখিয়ে দিয়েই আমি তাকে প্রশ্ন করি –
আমার কমেন্ট –
“ আপনি বলেছেন – /কাফেরদের মুসলিমদের বিরূদ্ধে সাহায্য করা কুফর হবার ২টি শর্ত – (১) মুসলিমদের উপর কাফিরদের বিজয় কামনা (২) কুফর পছন্দ করা।/
যারা এমন মনে করে না, তাদের গুলাত, চরমপন্থী অনেক কিছু বলেছেন।
আবার বলেছেন –
/শায়খ আহমাদ শাকের রহঃ যখন ব্রিটিশরা মিসর ইনভেড করেছিল, তখন যেকোন উপায়ে তাদের সাহায্য করা কুফর আকবার সাব্যস্ত করেছিলেন। কারণ এই পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য “মুসলিমদের উপর কাফিরদের জয় কামনা” শিরোনামভুক্ত হয়। এই কারণেই ২০০১ এ একটি বাইয়াত প্রাপ্ত শরয়ী ইমারতের পতন ঘটাতে যারা কাফেরদের সাহায্য করেছে, তাদের এই কাজ আবশ্যিকভাবে মুসলিম জাতির উপর কাফিরদের জয় কামনা সাব্যস্ত হয়। কারণ তিনি মুসলিমদের আম বাইয়াত প্রাপ্ত।/
কাফিরদের বিজয় কামনা ও পছন্দ-অপছন্দ ইত্যাদি হল অন্তরের বিষয়। এই যে আপনি বললেন,
/শায়খ আহমাদ শাকের রহঃ যখন ব্রিটিশরা মিসর ইনভেড করেছিল, তখন যেকোন উপায়ে তাদের সাহায্য করা কুফর আকবার সাব্যস্ত করেছিলেন। কারণ এই পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য “মুসলিমদের উপর কাফিরদের জয় কামনা” শিরোনামভুক্ত হয়।/
এই পরিস্থিতি সাহায্য (যা একটি আমল) থেকে কিভাবে তাদের মনের খবর পাচ্ছেন? এবং তাকফিরকে লাযেম করছেন? আর উনি যে এই নিয়তে বলেছেন সেটা আপনি কিভাবে জানলেন? এটা কি উনার কথা না আপনার কথা? আপনার বুঝ বা তাবীল? আপনি কি যেসব কওল দেন সেগুলোর সবগুলোর ক্ষেত্রে এভাবেই নিজের বুঝ বা তাবীল অনুযায়ী ব্যাখ্য জুড়ে দেন?
কোন উক্তি কপি-পেস্ট করবেন না। আপনি কোন কার্যকরনে এমন বলছেন সেটা জানালে খুশি হব।”
নিচে এই কমেন্টের স্ক্রিনশট দেওয়া হল –
অতঃপর ভাই সাদি নিচের জবাব দেন –
“এই পরিস্থিতি সাহায্য (যা একটি আমল) থেকে কিভাবে তাদের মনের খবর পাচ্ছেন? এবং তাকফিরকে লাযেম করছেন?
উত্তরঃ মিসর ওসমানী সালতানাতের অধীনে ছিল, যাহেরীভাবে ইসলামী শাসন কায়েম ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশরা ওসমানীদের পরাজিত করে মিসর দখলে নেয়। এইসময় যারা ব্রিটিশদের মিসর দখলে সাহায্য করেছে, তারা অবশ্যই মুসলিমদের উপর কুফফারদের পরাজয় কামনা করেছে।
তাদের মুখে এটা স্বীকারের প্রয়োজন নেই। কারণ এমন পরিস্থিতিতে যেকোনভাবে কাফেরদের সাহায্য “কাওয়াতিউল আকলিয়্যাহ” (অকাট্য আকলী দলীল) এবং জিবিল্লাতুল ফিতরিয়্যাহ (মানুষের সহজাত বৈশিষ্ঠ্য) থেকে এটা আবশ্যক হয়। অর্থাৎ স্বয়ং এই আমলের উপরই তাকফীর করা হচ্ছে। কেননা এই আমল অত্যাবশ্যকীয়ভাবে ফাসেদ আকীদার পরিচায়ক। ২০০১ এ যখন তালেবান সরকারকে পতন ঘটাতে মার্কিনিরা আক্রমণ করে, #তখন তাদের যারা সাহায্য করেছে, তারাও কুফরে আকবারে লিপ্ত।”
বস্তুত তার এই এক বক্তব্য থেকেই তার আগের অনেক বক্তব্য ভুল ধরা যায়, এবং তার এক কথার সাথে আরেক কথার যে কোন সামঞ্জস্য, সঙ্গতি একেবারেই নেই তা প্রমান করা যায়। আপাতত সেই আলোচনাতে আমরা গেলাম না, ইনশাআল্লাহ প্রয়োজনে সামনে সেগুলো আনা হবে। আমরা আপাতত তার এই বক্তব্যের দিকে মনোযোগী হব।
এখানে তার পুরো বক্তব্য ভিত্তি হল – ব্রিটিশরা উসমানী খেলাফতের বিরুদ্ধে আক্রমন করেছিল। ইসলামী শাসন উৎপাটিত করেছিল। তাই যারা এ কাজে সহায়তা করেছে তারা অবশ্যই মুসলিমদের উপর কাফিরদের বিজয় কামনা করেছে।
অথচ শাইখ আহমেদ শাকেরের এই ফতোয়া দেওয়া হয়েছে ১৯৫৬ সালের সুয়েজ সংকটের প্রেক্ষাপটে! উসমানী খিলাফত ধংস করা, শরীয়াহ শাসন – এ কোন কিছুর সাথে এ ফতোয়ার কোন সম্পর্কে নেই।
শাইখের ফতোয়া পড়লেই বিষয়টি বুঝে আসে।
ভাই সাদি তার লেখাগুলোতে অনেক উদ্ধৃতি ও কওল পেশ করেন যার কারনে অনেক ভাই মনে করেন যে তিনি খুব দালীলিক আলোচনা করেন। কিন্তু তার দেওয়া উদ্ধৃতির সাথে যে তার নিজস্ব বক্তব্যের কোন সম্পর্ক নেই এটি অনেক ভাই-ই বুঝতে পারেন না। আদতে তিনি উদ্ধৃতি পেশ করে নিজের আগে থেকে ঠিক করে রাখা উপসংহারকে সঠিক প্রমানের উদ্দেশ্যে তা নিজের মনমতো ব্যাখ্যা করেন। যার প্রমান আপনারা এখনই দেখতে পাবেন।
এ বিষয়টি তার কাছে এবং অন্যান্য পাঠক ও দর্শকদের স্যামনে পরিষ্কার করার উদ্দেশ্য যখন আমি প্রশ্ন করলাম –
“আর উনি (আহমেদ শাকির) যে এই নিয়তে বলেছেন সেটা আপনি কিভাবে জানলেন? এটা কি উনার কথা না আপনার কথা? আপনার বুঝ বা তাবীল? আপনি কি যেসব কওল দেন সেগুলোর সবগুলোর ক্ষেত্রে এভাবেই নিজের বুঝ বা তাবীল অনুযায়ী ব্যাখ্য জুড়ে দেন?”
আমার এ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি স্বভাবমতো একটি অপ্রাসঙ্গিক উদ্ধৃতি পেশ করলেন দিলেন আরবী ইবারতসহ। যাতে একজন আম ভাইয়ের কাছে মনে হয় খুব শক্ত এক দালীলিক জবাব তিনি দিয়ে ফেলেছেন।
আর তারপর “উসমানী খিলাফতের উপর ব্রিটিশ ও আক্রমণের প্রেক্ষিতে এ ফতোয়া দেওয়া” – এই ভুলের উপর ভিত্তি করে, একে উসুল বানিয়ে নিজে নিজে কিয়াস করে পরপর বেশ কয়েকটি কমেন্ট দিব্যি বিভিন্ন বিষয়ে নিঃসঙ্কোচ আত্মবিশ্বাসের সাথে একের পর এক মন্তব্য করে যেতে লাগলেন। আর তার কিছুক্ষন পর ‘এই বিষয়ে আর প্রশ্ন নেওয়া হবে না’ – ঘোষণা দিয়ে দিলেন। (দেখুন স্ক্রিনশট ৩,৪,৫)
আসলে তার ৭০-৮০% কথার বাস্তবতা হল এরকম। উদ্ধৃতি থেকে যা প্রমান হয় না, নিজের গায়ের জোরে সেটা প্রমানের চেষ্টা। নিজে নিজে ভুলভাল কিয়াস করা, অপ্রাসঙ্গিক বিভিন্ন উক্তি আনা, ইত্যাদি – যা আমরা ইতিপূর্বে “ভারসাম্যহীন উগ্র আস্ফালন” লেখায় উল্লেখ করেছি।
এরপর বিষয়টি স্পষ্টভাবে সকলের স্যামনে তুলে ধরার জন্য আমি নিচের কমেন্ট করলাম –
“শেখ সা’দী আপনার টাইমলাইনে আপনি উত্তর দিতে চাইলে দিবেন না, জোর করা এখতিয়ার আমার নেই। কিন্তু প্রাথমিক প্রশ্নের জবাব তো দিবেন।
অনর্থক কথা প্যাচাচ্ছেন কেন ভাই?
আমি আপনাকে প্রশ্ন করছি যে আপনি যে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন এটা কি শাইখ আহমেদ শাকিরের রহঃ ব্যাখ্যা নাকি আপনার ব্যাখ্যা? আপনি সেখানে আরেকজনের কওল নিয়ে আসছেন কেন? আপনি যে কথাগুলো বলছেন আহমেদ শাকির কি তাঁর পুরো লেখায় এগুলো বলেছেন, নাকি এটা আপনি ধরে নিয়েছেন বা নিজের ব্যাখ্যা চাপাচ্ছেন?
তালিবানের বিবৃতির যাহেরি অর্থ নিতে হবে আর আহমেদ শাকিরের কথা তাবীল করতে হবে, নাকি? এভাবে জোড়াতালি দিয়ে আর কতো?
/ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশরা ওসমানীদের পরাজিত করে মিসর দখলে নেয়। এইসময় যারা ব্রিটিশদের মিসর দখলে সাহায্য করেছে, তারা অবশ্যই মুসলিমদের উপর কুফফারদের পরাজয় কামনা করেছে।/
এই যে আপনি এই কথাটা বললেন তারপর এই কথার সূত্র ধরে ইবনে আফফার, মিফতাহ আয-যামান, Awaab Muntasir তাদের কথার উত্তর দিলেন, এর উপর নানা উসুলও বানানো শুরু করলেন, আপনি জানেন শাইখ আহমেদ শাকিরের এই ফতোয়া কখনের? এটার সাথে না ওসমানীদের সম্পর্ক আছে আর না ইসলামী শাসনের সম্পর্কে আছে। এই ফতোয়া উসমানী খেলাফতের পতনের আরো কয়েক দশক পরে দেওয়া। ১৯৫৬ এর সুয়েজ সংকটের সময় ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের মিশরে আক্রমণের প্রেক্ষাপটে। আপনি এটাকে ‘উসমানীদের বিরুদ্ধে তথা ইসলামী শাসনের বিরুদ্ধে” যুদ্ধের প্রেক্ষাপট। আহমেদ শাকিরের ফতোয়া পড়লে আপনি এটা বুঝতে পারতেন। আর আত্ববিশ্বাসের সাথে ভুল কথা বলার ব্যাপারে ভয় থাকলে, নিজের মুখের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করলে বিষয়টা যাচাই করে তারপর মন্তব্য করতেন। তা না করে আপনি নিজে নিজে একটা কথা বললেন। তারপর থামলেন না, এটাকে বেজ করে সুন্দর প্রশ্নোত্তর চালিয়ে যাচ্ছেন। সুবহানআল্লাহ।
ভাই নিজের জবান, লেখনী, উজুব আর কিবরের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করেন। এভাবে যেসব কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন, এর জন্য আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে, এটা মনে রাখেন। আর যদি আল্লাহর পাকড়াও এর ব্যাপারে নির্ভয় হয়েও থাকেন তাহলে নিদেনপক্ষে চক্ষুলজ্জা করেন।”
আমার কমেন্টের স্ক্রিনশট।
এবার তার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় তিনি আমার কমেন্টটিই ডিলিট করে দিলেন (স্ক্রিনশট ৮)। কোথায় ইমাম ইবনে তাইমিয়াহর যেকোন মূল্য হক অনুসন্ধানের আদর্শ, কোথায় ইনসাফ, মর্যাদাবোধ, দোষ স্বীকারের পুরুষত্ব! বরং তিনি সবচেয়ে গোঁড়া মাজহাবী ও উগ্র আহলে হাদিস ব্যক্তিদের পথ অনুসরণ করলেন। এবং দুর্বল নানা অজুহাত দেখাতে শুরু করলেন।
স্ক্রিনশট ৮
শেষ পর্যন্ত নিজের অবস্থা টেকাতে একটি ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করলেন যা থেকে তার দ্বিমুখী নীতি এবং আহলে ইলমের কথাকে পুঁজি করে নিজের বুঝ-বাস্তবতাবিবর্জিত কথাকে সত্য বলে চালিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তার নিজের মুখ থেকেই প্রমাণিত হলেন। কারণ তিনি বললেন –
– শায়খ আহমদ শাকেরের পুরো ফাতওয়া আমি পড়েছিলাম। কিন্তু ঠিক কোন সময়ের প্রেক্ষাপটে এই ফাতওয়া সেটা আমার অনুমান ছিল। আমি ওলামাদের বক্তব্য সমন্বয়ের চেষ্টা করেছি।…
বস্তুত শাইখ আহমেদ শাকিরের ফতোয়া মনোযোগ দিয়ে পড়লে যেকেউ বুঝতে পারবে এটা কোন প্রেক্ষাপটের ফতোয়া, আর যদি কেউ সেটা নাও বুঝে, তবুও নিদেনপক্ষে এটুকু নিশ্চিতভাবে বুঝতে পারবে যে এর সাথে কস্মিনকালেও উসমানী খেলাফতের বিরোধিতার কোন সম্পর্ক ছিল না।
যেমন যেটাকে ভাই সাদি “ইল্লত’ প্রমানের চেষ্টা করেছেন এবং নিজের চেষ্টায় মুগ্ধ হয়ে এর উপর ভিত্তি করে নানা ফতয়া দেওয়া শুরু করেছিলেন শাইখ আহমদের শাকিরের পুরো ফতোয়ায় সেই উসমানী খেলাফত কিংবা ইসলামী শাসনের বিরোধিতা করার বিষয়টি আসেইনি। এছাড়া শাইখ আহমেদ শাকির এখানে বলেছেন –
সুয়েজ ও এ সংলগ্ন এলাকায় ব্রিটেন কী করেছে আমরা দেখেছি
তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিৎ এ কথা শুনা ও নিজের সামনে রাখা –সে থাকতে পারে মিসরে, সুদানে, ভারতে, পাকিস্তানে কিংবা সেইসব ভূখন্ডে…
অথচ এটি সবাই জানে যে উসমানি খিলাফতের আনুষ্ঠানিক পতন হয়েছে ১৯২৪ সালে, আর পাকিস্তানের জন্ম ১৯৪৭ এ!
আবার শাইখ বলেছেন –
(আমি) এটা চিন্তা করে প্রতারণায়ও পড়িনি যে মুসলিম ভূখন্ডগুলোর সরকারেরা ইসলামী আইনে এর উত্তর দিবে, এবং ব্রিটিশ ও ফ্রেঞ্চদের সাথে বিদ্যমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সব সম্পর্কচ্ছেদ করবে।
অর্থাৎ এ কথা থেকেও স্পষ্ট যে শাইখ উসমানি খেলাফতের কথা বলছেন না, বরং খেলাফত পরবর্তী সময়ের কথা বলছেন। নইলে ‘মুসলিম ভূখন্ডগুলোর সরকার”-দের কথা আসবে কেন?
কিন্তু ভাই সাদি ‘পুরো ফতোয়া পড়ার’ পরও এই বিষয়গুলো ধরতে পারেননি। এই ফতোয়ার প্রেক্ষাপটের উপর ভুল ধারণা করে সেই ভুল ধারণার উপর নানা মত দিতে থাকলেও একবার যাচাই করার দরকার মনে করেননি। এই হল তার পড়া, বুঝ আর নৈতিকতার অবস্থা। যদি সুধারনা রাখতে হয় তাহলে বলতে হয় তার পড়ার মান খারাপ, অথবা পড়ে অনুধাবনের মান খারাপ। ওয়াল্লাহু আলাম। অথচ এই অবস্থা নিয়ে তিনি দিব্যি নানা বিষয়ে মানূষের ব্যাপারে অভিযোগ করে যাচ্ছেন। অপবাদ দিচ্ছেন, ফতোয়া দিচ্ছেন। শাইখ আহমেদ শাকিরের অবস্থান পরিষ্কার এবং মুজাহিদিনের অবস্থান তাঁর এই অবস্থানেরই অনুরূপ যা হল –
ওরা (ফ্রান্স) ও ব্রিটিশরা হুকুমের ব্যাপারে একই। প্রত্যেক স্থানে তাদের রক্ত ও সম্পদ হালাল। বিশ্বের যে কোনো স্থানের মুসলিমদের জন্য ওদেরকে কোনো প্রকারের সহযোগিতা করা নাজায়েয। যদি কেউ সহযোগিতা করে তবে তার হুকুম তাদের মতোই যারা ব্রিটিশদের সহযোগিতা করে, তা হলো ইরতিদাদ (দ্বীন ত্যাগ) যা সম্পূর্ণরূপে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আর এটা যে কোনো প্রকার বা প্রকৃতির সহযোগিতা হোক না কেনো।
পরে আমার কমেন্ট ডিলিট করার ব্যাপারে আমার প্রশ্নের জবাব তিনি কিছু দুর্বল কথাবার্তা বলারও চেষ্টা করেছেন, এবং আমার আরো একটি কমেন্ট ডিলিট করেছেন, যেখানে এমন অবস্থায় পতিত ব্যক্তির ব্যাপারে কুরআনের হুকুম অনুযায়ী আমি কেবল তাকে সালাম দিয়েছি এবং বলেছি
‘প্রত্যকের নিজের সীমা অনুযায়ী কথা বলা উচিত। সততা ও লজ্জাহীন ব্যক্তির সাথে কথা বলে সময় অপচয় করা অনর্থক। সালাম।
এই কমেন্টও ভাই সাদি ডিলিট করে দেন। বস্তুত এ হল সত্যের মুখোমুখি হয়ে তা মেনে নেওয়ার অনিচ্ছা, ভুল স্বীকারে অনীহা, যেকোন মূল্যে নিজেকে ঠিক প্রমানের লোভ, অস্বস্তিকর সত্যকে চাপা দেওয়া এবং এ থেকে পলায়ন করার মানসিকতার প্রকাশ ও ফলাফল। যা স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে। ।
মূলত এ পুরো আলোচনা থেকে যে দুটি বিষয় প্রমাণিত হয় তা হল ভাই সাদি দলীল ব্যবহার করেন কিন্তু দালীলিক আলোচনা করেন না। উনি দলীল ব্যবহার করেন নিজের কথাকে সঠিক প্রমানের জন্য। উনার দলিলের ব্যবহার অনেকটা অন্তসারশুণ্য চাকচ্যিকের মতো যার বাহ্যিক অবস্থার সাথে আভ্যন্তরীন অবস্থার কোন মিল নেই। এভাবেই মুজাহিদিনের বিরুদ্ধে তিনি একের পর এক জঘন্য অপবাদ দিয়ে আসছেন। চিন্তা করুন, যেখানে একটি বিষয়ে দুইটি বক্তব্যের মধ্যে তিনি সামঞ্জস্য ও সঙ্গতি বজায় রাখতে পারেন না, দুইটি সহজ প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন না, যখন নিজের ভুল প্রকাশিত হয় তখন তা স্বীকার করার সৎ সাহস রাখেন না বরং তা কমেন্ট ডিলিটের মাধ্যমে গোপন করার চেষ্টা করেন, যখন কোন আলিমের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে তাঁর অবস্থান বর্ণনার সময় তিনি আমানতদারিতা ও ইনসাফ বজায় রাখতে পারেন না, বরং নিজের “অনুমান” আর দুর্বল বুঝ অনুযায়ী “সমন্বয়” সাধনের চেষ্টা করে এমন এক বক্তব্য পেশ করেন যার সাথে মূল বক্তব্য কোন সম্পর্কই নেই, তখন কিভাবে আপনি এমন ব্যক্তির কাছ থেকে এমনসব বিষয়ে কথা গুরুত্বের সাথে নিবেন? সবচেয়ে অসৎ মাজহাবি ও কট্টর আহলে হাদিসদের এসব বৈষিষ্ট্য তার মধ্যে বিদ্যমান। অথচ তিনি ইমাম ইবনে তাইমিয়ার মত শুদ্ধ চরিত্রের এ সুদৃঢ় নৈতিকতার অধিকারী ব্যক্তির আদর্শ অনুসরণের কথা বলেন! দীনের খাতিরে নিজের ভুল স্বীকারের মাধ্যমে সামান্য দম্ভ ও বড়ত্ব যে কুরবানি করতে পারে না, যক্ষের মতো ভুলকে আকড়ে থাকে সেই আবার দম্ভভরে এমন সব ব্যক্তিদের ব্যাপারে মত ও অপবাদ দিয়ে বেড়ায় যারা দীনের খাতিরে জান-মাল, পরিবার সব কুরবানী করেছেন! সুবহানআল্লাহ।
বস্তুত আমরা ভাই সাদির প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করি না। বিদ্বেষ না বরং তিনি করুণার যোগ্য। তিনি নিজে ফিতনায় পড়েছেন তা এখন বুঝতে পারছেন না। তার অন্তরের ব্যাধি ও নফস তাকে অন্ধ করে দিচ্ছে। নিজের ভাষাগত দক্ষতাকে তিনি নিজের হক্কানিয়াত ধরে নিয়েছেন।
দ্বিতীয় বিষয়টি হল অনলাইন জগতের এই ফিতনাহ সম্পর্কে সতর্ক হওয়া। নিজের অজান্তেই এখানে একজন ব্যক্তিকে আমরা এমন আসনে বসাই যার যোগ্য সে না। এর মাধ্যমে আমরা তাকেও ফিতনায় ফেলি, নিজেও ফিতনাতে পতিত হয়, এবং অন্যদেরও ফিতনার মধ্য ফেলার আয়োজন করি।
দীনের পথে সফলতা নির্ভর করে আল্লাহর সাথে বান্দার নৈকট্যে উপর। আল্লাহর স্মরণ, সন্তুষ্টি ও তাঁর নাজিল করা শরীয়তের পাবন্দি করার মাধ্যমেই বান্দা সফলতা অর্জন করে। শেষ বিচারে মালিককে রাজিখুশি করার উপরে কাজের ফল নির্ভর করে। যদি এগুলোর কমতি দেখা যায় তাহলে সেই মেহনত, আন্দোলন অথবা ব্যাক্তি সাময়িকভাবে সফলতা অর্জন করতে পারলেও একসময় মুখ থুবড়ে পরে। কেবল এক আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা কাজগুলোই রয়ে যায় আর বাকিগুলো বান্দার আফসোসের কারণ হয়। দীন আমাদের এই শিক্ষা দেয়। দুনিয়া আমাদের শিক্ষা দেয় সফলতা নির্ভর করে কেবল ব্যক্তির প্রতিভা, অধ্যাবসায়, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির উপর।
আল্লাহ আমাদের তাঁর নৈকট্য অর্জন করার তৌফিক দান করুন।
যারা সত্যান্বেষী আল্লাহ তাদের হেদায়েত করুন, হেদায়েতের পর তাঁদের ভুল-ত্রুটি-সীমালঙ্ঘন ও অপবাদগুলোকে ক্ষমা করে দিন, গুনাহগুলোকে নেক আমলে পরিণত করে দিন। আর যারা অন্য কোন কারণে আল্লাহর রাস্তার মুজাহিদিনের সমালোচনা করে আখিরাতের আগে দুনিয়াতেও আল্লাহ তাদের উপযুক্ত প্রতিদান দিন, যে বিষয় তারা কামনা করে সে বিষয় দিয়েই তাদেরকে অপমানিত, লাঞ্ছিত ও অধঃপতিত করুন।
আর মিথ্যা তো বিলুপ্ত হবারই।
[সংগৃহীত]