অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আল হিকমাহ]আরবআল-হিকমাহ মিডিয়াবাংলা প্রকাশনামিডিয়াশাইখ হামুদ বিন উকলা আশ শুয়াইবী রহিমাহুল্লাহসৌদী আরবহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

তরবারিই সমাধান – শায়খ হামুদ বিন উকলা আশ শুয়াইবি রহঃ

তরবারিই সমাধান
শায়খ হামুদ বিন উকলা আশ শুয়াইবি রহঃ



https://archive.org/details/OnlySolution
https://archive.org/download/OnlySolution/Only%20Solution%20-%20Main%20Sequence_5.mp4

http://www.mediafire.com/file/10rfbt5kdymavcb/43.Only_Solution_-_Main_Sequence_5.mp4/file
https://archive.org/download/43.onlysolutionmainsequence5/43.Only%20Solution%20-%20Main%20Sequence_5.mp4

তিনি হলেন বানু খালিদ গোত্রের আবু আব্দুল্লাহ হামুদ বিন আব্দুল্লাহ বিন উক্বলা বিন মুহাম্মাদ বিন আলি বিন উক্বলা আশ-শু’আইবি আল-খালিদি। তার জন্ম হয় ১৩৪৬ হিজরিতে (১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ)। ক্বাসীম প্রদেশের বুরাইদা বিভাগের আশ-শাক্বক্বাহ শহরে। তারায় পড়াশুনায় হাতেখড়ি হয় ৬ বছর বয়সে। ১৩৫২ হিজরিতে (১৯৩১ খ্রিস্টাব্দ) গুটিবসন্তের কারনে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান।
.
তবে অন্ধত্ব তার ‘ইলম অর্জনের পথে বাধা হতে পারে নি। তিনি শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুবারাক আল-উমারির অধীনের ক্বুরআনের হিফয করা শুরু করেন এবং ১৩ বছর বয়সে সম্পূর্ণ ক্বুরআনের হিফয সমাপ্ত করেন। তবে হিফয ও তাজউয়িদ সম্পূর্নভাবে আত্মস্থ করতে তার সময় লাগে আরো ২ বছর। তার এই অর্জনের পেছনে তার পিতার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল, তিনি সবসময় চাইতেন যে তার ছেলে একজন ‘ইলম অন্বেষণকারী হবে – আল্লাহ তার উপর রহম করুন।
.
ক্বুরআন হিফয করার পর তিনি কিছদিন তার পিতাকে চাষাবাদ ও খেজুর বাগানের দেখাশুনায় সাহায্য করেন।
.
১৩৬৭ হিজরিতে (১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ) পিতার নির্দেশ অনুযায়ী ‘ইলম অর্জনের লক্ষ্যে তিনি রিয়াদে আসেন। তিনি ;ইলম শিক্ষা শুরু করেন শায়খ আব্দুল লতিফ বিন ইব্রাহিম আল আশ-শাইখ রাহিমাহুল্লাহর অধীনে। এই মহান শিক্ষকের অধীনের তিনি আল-আজ্রুমিয়্যাহ, উসুল আস-সালাসা, রাহবিয়াতু ফিল ফারাইদ এবং ক্বাওয়াইদ আল-আরবা’আ সম্পূর্ণ মুখস্থ ও এর ব্যাখ্যাসমূহ আত্মস্থ করা সম্পন্ন করেন।
.
অতঃপর১৩৬৮ হিজরিতে (১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ) তিনি শায়খ মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহিম আল-আশ শায়খ রাহিমাহুল্লাহর শিষ্যত্ব গ্রহন করেন। এই মহান শায়খের অধীনে তিনি প্রাথমিক ভাবে যাদ আল মুস্তাক্বানি, কিতাবুত তাওহিদ, কাশফুশ শুবুহাত, আল ওয়াসিতিয়্যাহ (শায়খ আল-ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ), আল-আরবা’ঈন আন-নাওয়াউইয়্যাহ, আলফিয়াতু ইবন মালিক, বুলুগ্বুল মারাম অধ্যায়ন। শায়খ মুহাম্মাদের রাহিমাহুল্লাহ অধিনে সকল ছাত্রকেই বাধ্যতামূলকভাবে এই কিতাবগুলো শিখতে হতো।
.
এগুলোর পর তিনি শায়খ মুহাম্মাদের কাছে অধ্যায়ন করেন আক্বিদা আত-তাহাউইয়্যাহ, আদ দুররাহ আল মুদানিয়্যাহ, আক্বিদা আল-হামাউইয়্যাহ। শায়খ মুহাম্মাদ আলাদা ভাবে তাকে এই কিতাবগুলোর শিক্ষাদান করেন।
.
এছাড়াও তিনি শিক্ষাগ্রহন করেন নিম্নোক্ত উলামার অধীনে –
তিনি আব্দুল আযিয বিন বাযের রাহিমাহুল্লাহ অধীনে তাওহিদ ও হাদিসের ‘ইলম অর্জন করেন।
শায়খ মুহাম্মাদ আল আমিন আশ-শানক্বিতি রাহিমাহুল্লাহ
শায়খ মুহাদ্দিস আব্দুর রাহমান আল-আফ্রিকি রাহিমাহুল্লাহ
শায়খ আব্দুল আযিয বিন রাশীদের রাহিমাহুল্লাহ অধীনে তিনি ফিক্বহ অধ্যায়ন করেন
শায়খ আব্দুল্লাহ আল খুলাইফি
শায়খ হামাদ আল-জাসির
শায়খ সাউদ বিন রাশুদ (রিয়াদের ক্বাযি)
শায়খ ইব্রাহিম বিন সুলাইমান
ইউসুফ উমার হাসনাইন, আব্দুল লতিফ সারহান, ইউসুফ দাবা’ সহ মিশরের বিভিন্ন আলিমের কাছে আরবী ব্যকরন শিক্ষা করেন
.
১৩৭৬ হিজরিতে (১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ) তিনি কিং সাউদ ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষক নিযুক্ত হন। ১৩৭৭-১৪০৭ হিজরি পর্যন্ত (১৯৫৬-১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দ) তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তারপর তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এই দীর্ঘ সময় তিনি ইউনিভার্সিটিতে তাওহিদ, ফিক্বহ, ফারাইদ, হাদিস, উসুল, ব্যাকরনসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষাদান করেন। এছাড়া তিনি বেশ কিছু মাস্টার্স ও ডক্টরেট থিসিসের সুপারভাইজার ছিলেন।
তার অসংখ্য ছাত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের নাম হলঃ
.
আব্দুল আযিয আল-আশ শায়খ (সৌদি আরবের বর্তমান মুফতি), আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুহসিন আত-তুর্কি প্রাক্তন ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রী,আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহিম আল আশ-শায়খ প্রাক্তন বিচার সংক্রান্ত মন্ত্রী, সালিহ আল-ফাউযান, গায়হাব আল গায়হাব, ক্বাজি আব্দুর রাহমান বিন সালিহ আল-জাবর, ক্বাজি আব্দুর রাহমান বিন আব্দুল্লাহ বিন আল-আজলান – প্রাক্তন প্রধান ক্বাজি ক্বাসিম প্রদেশ, সুলাইমান বিন মুহান্না – প্রাক্তন প্রধান ক্বাজি রিয়াদ, আব্দুল্লাহ আল-গ্বুনাইমান
.
এছাড়া শায়খ যাদের ডক্টরেট থিসিস রিরিভিউ করেছেন তাদের মধ্যে আছেন আবু বাকর আল জাযাইরি, রাবি বিন হাদি আল-মাদ্বখালি, মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন শায়খের সবচেয়ে অন্তরঙ্গ ছাত্র যারা তার আদর্শ ও মানহাজকে অবিকৃত ভাবে ধারন করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন – শায়খ সুলাইমান বিন নাসির আল-‘উলওয়ান, শায়খ আলি আল খুদাইর, শায়খ নাসির আল ফাহাদ, যখন আফগানিস্তানে তালিবান কর্তৃক ইসলামি ইমারাত প্রতিষ্ঠিত হয় তখন শায়খ হামুদ এবং তার দুই ছাত্র সুলাইমান আল-‘উলওয়ান এবং আলি আল-খুদাইর, মুল্লাহ উমার কে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লেখেন এবং মুল্লাহ উমারকে আমিরূল মু’মিনিন বলে সম্বোধন করেন। এছাড়া সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য তালিবানকে সাহায্য করা বাধ্যতামূলক বলে তিনি একটি ফতোয়া দেন। এছাড়া ২০০১ এ যখন সারা বিশ্ব মুসলিমদের বিরুদ্ধে অ্যামেরিকার সাথে জোট বাধছিল তখন এই মহান নির্ভীক শায়খ ফতোয়া দেন যে আগ্রাসী কাফির অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে তালিবানকে এবং আফগানিস্তানের মুহাজিরদের সহায়তা করা সকল মুসলিম উম্মাহর জন্য বাধ্যতামূলক। শায়খ হামুদ প্রকাশ্যে সৌদি শাসকগোষ্ঠীর কুফর সম্পর্কে কথা বলতেন। এই কারনে ৭৫ বছর বয়সে এই অন্ধ বৃদ্ধকে কারারুদ্ধ করা হয়।
.
শায়খ হামুদ বিন উক্বলা আশ-শু’আইবি আপোষহীন, নির্ভীক এক নক্ষত্র, মিল্লাতু ইব্রাহিমের দিকে আহবানকারী, মুশরিক ও কাফিরদের উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে সত্যকে ঘোষণাকারী – যিনি শায়খ আল-ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ এবং ইমাম ওয়াল মুজাদ্দিদ শায়খ মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব ও উলামায়ে নাজদের প্রকৃত উত্তরসূরি।
.
এই মহান শিক্ষক ১৪২২ হিজরির ৪ই জিলক্বদ (১৮ই জানুয়ারি, ২০০২) মৃত্যুবরন করেন। আল্লাহ তার উপর রহম করুন।
হে আল্লাহ আপনি শায়খ হামুদ বিন উক্বলা আশ-শু’আইবিকে ক্ষমা করে দিন, এবং আপনার রহমতের চাঁদরে তাঁকে মুড়িয়ে দিন, তার কবরকে আলোকিত ও প্রশস্ত করে দিন। তার কবরকে জান্নাতের বাগানগুলোর মধ্যে একটি বাগান বানিয়ে দিন, তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করুন, তাকে বিচার দিবসে মহা আতঙ্ক থেকে রক্ষা করুন…
.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − thirteen =

Back to top button