অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়াইলম ও আত্মশুদ্ধিউস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহপাকিস্তানবই ও রিসালাহবাংলা প্রকাশনামিডিয়াহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

দূরদৃষ্টির সাথে জিহাদ – উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ

দূরদৃষ্টির সাথে জিহাদ
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ
ভারতীয় উপমহাদেশ কায়িদাতুল জিহাদের মুখপাত্র

দূরদৃষ্টির সাথে জিহাদ – উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ

ভিডিও ডাউনলোড

https://banglafiles.net/index.php/s/rZBd9Yp9gJMkftc

https://archive.org/download/JihadAl…ra/bsira_S.mp4

https://archive.org/download/bsira_S/bsira_S.mp4

https://www.file-upload.com/nsg3n829avrp

http://www.mediafire.com/file/jedjaa82zmkw0e8/bsira_S.mp4/file

পিডিএফ ডাউনলোড

https://banglafiles.net/index.php/s/s9oYiJZkLmEngi2
https://archive.org/download/JihadAl…AlaBaseera.pdf

https://archive.org/download/JihadAlaBaseera_201906/JihadAlaBaseera.pdf

https://www.file-upload.com/l5ti50e1rery

http://www.mediafire.com/file/7p9n11b9du6zidl/JihadAlaBaseera.pdf/file

ওয়ার্ড ডাউনলোড

https://banglafiles.net/index.php/s/H9FieH4RMSp5imS
https://archive.org/download/JihadAl…laBaseera.docx

https://archive.org/download/JihadAlaBaseera_201906/JihadAlaBaseera.docx

https://www.file-upload.com/25gv64ivlonv

http://www.mediafire.com/file/3i0dgqwr8lrchbz/JihadAlaBaseera.docx/file


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

দূরদৃষ্টির সাথে জিহাদ

ভারতীয় উপমহাদেশের কায়িদাতুল জিহাদের মুখপাত্র উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহর বয়ান

প্রসঙ্গ: পাকিস্তানের মারদানে জারসিদা বিশ্ববিদ্যালয় ও আইডি অফিসে অনাকাঙ্ক্ষিত মুসলিম হত্যা।

আল্লাহর নামে শুরু করছি, তার প্রশংসা করছি, তার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি এবং তারই পথপ্রদর্শন কামনা করছি। রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক তার সম্মানিত রাসূলের উপর।

বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি।  আল্লাহ তাবারাকা ওয়াতাআলা বলেন:

﴿ وَلْتَكُنْ مِنْكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُون ﴾

“তোমাদের মধ্যে যেন এমন একটি দল থাকে, যারা (মানুষকে) কল্যাণের দিকে ডাকবে, সৎ কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজে বাঁধা দেবে। আর তারাই সফলতা লাভকারী।”

তারপর:

পাকিস্তানের ও বিশ্বের সকল প্রান্তের আমার ভাই ও বোনেরা!

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ!

হক ও বাতিলের মাঝে, জিহাদ ও ফাঁসাদের মাঝে এবং শরীয়তের পথ ও অন্য সকল পথের মাঝে পার্থক্য রেখা বুঝা আবশ্যক। কারণ আমাদের দ্বীনই আমাদের উপর এটা আবশ্যক করে। এর জন্যই বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলা কিতাবসমূহ নাযিল করেছেন নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন এবং এর জন্যই আসমান ও যমীন আবহমান কাল ধরে প্রতিষ্ঠিত আছে। আর জুলুম ও ইনসাফের মাঝে এই পার্থক্য রেখা বর্ণনা করা আলেম-উলামা, মুজাহিদীন ও দ্বীনের দায়িদের অন্যতম দায়িত্ব।

তাই আমাদের সকল প্রচেষ্টা, সকল পরিশ্রম ও সকল দল ও সংগঠন প্রতিষ্ঠার একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত শরীয়তের অনুসরণ এবং প্রতিপালকের সন্তুষ্টি অর্জন। আমরা যদি শরীয়তের অনুসরণ করি, তাহলে আমাদের কোন ভয় নেই, কোন চিন্তা নেই। প্রতিটি কষ্টই তখন সৌভাগ্য এবং প্রতিটি মনজিলই সে পথে বিজয় ইংশাআল্লাহ।

কিন্তু আল্লাহ আমাদেরকে ক্ষমা করবেন না, যদি আমরা শরীয়তের অনুসরণ না করি এবং শরীয়তের জায়েয-নাজায়েযের পরোয়া না করি। তখন এই সকল দল, সংগঠন এবং এই সকল চেষ্টা, পরিশ্রম ও কষ্টই অনর্থক ও মূল্যহীন। শুধু দুনিয়ার ক্ষতি এবং উম্মতের জন্য বোঝা ও পরীক্ষাই না, বরং আখিরাতেও লাঞ্ছনা ও ধ্বংস। আমরা আল্লাহর কাছে এর থেকে আশ্রয় চাই।

জিহাদের ন্যায় মহান ইবাদত আল্লাহ আমাদের উপর এজন্যই ফরজ করেছেন, যাতে আমরা তার শরীয়তের শাসন প্রতিষ্ঠা করি এবং হকের প্রতিদ্বন্দ্বী বাতিলের অবসান ঘটাই। তাই জিহাদের অনিবার্য দাবি হল, আমাদের দাওয়াত ও কর্মে প্রকৃত হক প্রকাশিত হবে, বাতিল তার সামনে লাঞ্ছিত ও অবনত হবে এবং শরীয়তের পতাকাবাহীগণ তাদের কথা ও কাজে সত্যবাদী হবে।

ফলে যদি বাতিলের উপর প্রতিষ্ঠিত জাহিলিয়্যাতের পক্ষে লড়াইকারী লোকটি মারা যায়, তখন প্রত্যেকের সামনে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এই অপরাধী লোকটি জুলুমের পক্ষে প্রতিরোধ করতে গিয়ে ধ্বংস হয়েছে।

আর যখন হকের উপর প্রতিষ্ঠিত ইসলামের পক্ষে লড়াইকারী ব্যক্তি নিহত হয় বা ফাঁসিতে ঝুলে, তখন বন্ধুর পূর্বে শত্রুই একথার স্বীকৃতি দেয় যে, সে সত্যকে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে এবং আল্লাহর যমীনে আল্লাহর শরীয়ত বাস্তবায়নের জন্য জীবন বিলিয়েছে, অত:পর হকের উপর অটল থাকার কারণে তাকে শহীদ করা হয়েছে। এটাই পাকিস্তানের ভূমিতে জিহাদী আন্দোলনের বরকতময় বার্তা- যেন যে ধ্বংস হয়, প্রমাণ সহই ধ্বংস হয় এবং যে বাঁচে প্রমাণ সহই বাঁচে।

কিন্তু যখন পিতা-মাতাগণ দেখবে, জারসিদা বিশ্ববিদ্যালয়ে ও আইডি অফিসের সামনে তাদের কলিজার টুকরোগুলোকে হত্যা করা হচ্ছে, তখন তারা তাদের সন্তানদের হত্যাকে কিভাবে বিশ্লেষণ করবে!?

তাদের ঐ সকল সন্তানরা তো মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেনি, মুরতাদ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেনি, নির্যাতন সেলগুলোতে শরীয়তের সাহায্যকারীদেরকে চাবুক মারেনি বা আমেরিকান ডলারের জন্য কওমের নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের উপর বোমা বর্ষণ করেনি। তাহলে কেন পিতা-মাতার আশা-ভরসা ও ভবিষ্যতের স্বপ্নগুলোকে শেষ করে দেওয়া হল!? কি অপরাধে তাদেরকে হত্যা করা হল!?

কেন ঐ সকল প্রাণগুলোকে ছিনিয়ে নেওয়া হল, যারা বৃদ্ধ বয়সে তাদের সেবা করত? পিতা-মাতার এই সন্তানগুলো তো সেখানে শুধু শিক্ষা অর্জনের জন্য গিয়েছিল, আইডি অফিসের সামনে শুধু একটি আইডি কার্ডের জন্য দাঁড়িয়েছিল। তাহলে তাদেরকে কেন হত্যা করা হল? কারা তাদেরকে হত্যা করল? যদি জালিম সেনাবাহিনীর সৈন্য না হয়, যদি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন সন্ত্রাসীরা না হয় তাহলে কারা? এই প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন।

এটাই সেই গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রেখা, যা দ্বীন ও মুসলমানদের পক্ষে লড়াইকারী মুজাহিদদের লক্ষ্য রাখতে হয়। এর জন্যই আজ আমি আমার আহত জাতিকে সম্বোধন করছি! যেন যে ধ্বংস হয়, প্রমাণ সহই ধ্বংস হয় এবং যে বাঁচে, প্রমাণ সহই বাঁচে।

প্রকৃতপক্ষে এই ঘটনা জারসিদার শহীদদের অভিভাবকদের পর আর কাউকে মুজাহিদদের চেয়ে অধিক বেদনা দেয়নি। কারণ সেই শাসক গোষ্ঠী এর জন্য দু:খিত হয়নি, যারা শুধু ধন-সম্পদ, খ্যাতি ও ক্ষমতার পূজা করে। বরং মুসলিম হন্তা সেনাবাহিনী তো সেদিন আনন্দে আটখানা হয়েছে।

কারণ তাদের ভ্রান্ত ধারণামতে এই ঘটনা তাদের জুলুম ও কুফরের গায়ে পর্দা ফেলবে। যদিও তাদের কুফর ও জুলুম প্রতিটি চক্ষুষ্মানের নিকট সূর্যের চেয়ে স্পষ্ট।

অপরদিকে আমরা মুসলমানদের বিপদে চিন্তিত হওয়ার পাশাপাশি আমাদের বয়ে চলা পবিত্র দাওয়াত ও সেই বরকতময় বার্তার জন্যও চিন্তিত, যার জন্য আমরা আমাদের আত্মাগুলো পেশ করে দেই। কারণ এটা মূলত: জাহিলিয়্যাতের মোকাবেলায় ইসলামের দাওয়াত এবং জুলুমের মোকাবেলায় ইনসাফের দাওয়াত। এটা মাজলুমের পক্ষে জালিমের বিরুদ্ধে জিহাদের ধ্বনি।

কিন্তু দু:খজনক ব্যাপার হল,  মুসলিম হত্যার মত এসকল ঘৃণ্য কর্মগুলো পবিত্র জিহাদ ও তার বার্তাকে কলঙ্কিত করেছে। একারণে আমরা আরেকবার আমাদের প্রিয় জাতির সামনে হক ও বাতিলের মাঝে, কল্যাণ ও অকল্যাণের মাঝে পার্থক্য রেখা স্পষ্ট করে দিতে চাই।

কারণ আইডি অফিসের সামনে চাই সাধারণ জনগণ নিহত হউক, অথবা জারসিদা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর অগ্নিকান্ড ঘটানো হোক, কোন অবস্থাতেই জিহাদ ও মুজাহিদদের সাথে এ সকল ভয়াবহ অপরাধ কর্মের কোন সম্পর্ক নেই, যার বলি হতে হয়েছে নিরপরাধ মুসলিমদের।

আমরা আমেরিকা ও আমেরিকার পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান সহ সকল কুফরী শাসনব্যবস্থার সাথে শত্রুতা করি। তাই এই শাসনব্যবস্থার নেতৃবর্গ- জেনারেল ও শাসকরা আমাদের শত্রু। একারণে এ সকল বেতনভুক্ত কষাই তথা সেনাবাহিনীর সকল সদস্য ও সামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তারা, যারা অস্ত্রবলে এই কুফরী শাসনব্যবস্থার ক্ষমতার আসনে বসে আছে তারা আমাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু।

আর আমরা এই কথাটি মানুষের সহানুভূতি কুড়ানোর জন্য রাজনৈতিক দাবির মত বলছি না। আল্লাহর শপথ! আমাদের মূল চিন্তা হল আমাদের আখিরাত আর পবিত্র জিহাদের বদনাম আমাদেরকে চিন্তিত করে। তাই আল্লাহর যে শরীয়তকে বাস্তবায়নের জন্য আমরা বের হয়েছি, তা-ই আমাদের নিকট দাবি করে আমরা যেন এই সত্যকে স্পষ্টভাবে বলে দেই এবং কার্যগতভাবে তার দাবি অনুযায়ী আমল করি।

কারণ শায়খ উসামা বিন লাদেন রহ: ও শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহর কাফেলার মোবারক দাওয়াত এবং তাদের পথ ও পদ্ধতি হল আমাদের পথনির্দেশক। বিশ্ব কুফর ও জুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের জিহাদী অভিযানগুলোই সাক্ষ্য দেয় যে, আমরা বিশ্বাস করি মুসলমানদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হারাম, বরং জুলুম ও নৈরাজ্য।

আমরা পরিপূর্ণ স্পষ্টভাবে বলছি যে, এ ধরণের অপরাধমূলক কর্মকান্ড শুধু মুজাহিদদের পূত-পবিত্র ও ইনসাফময় বার্তাকেই কর্দমাক্ত করবে না, বরং একইভাবে তা কুফরী শাসনব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করবে।

আমি আরো স্পষ্টভাবে বলছি যে, আমি নিজেও যদি উক্ত আইডি অফিসের সামনে বা জারসিদা বিশ্ববিদ্যালয়ে বা অন্য কোন বিদ্যালয়ে সে সময় অবস্থান করতাম, তাহলে আমিও মুসলমানদেরকে রক্ষা করার জন্য এবং পাকিস্তানের জিহাদকে কলঙ্ক থেকে বাঁচানোর জন্য এ সকল আক্রমণকারীদের মোকাবেলা করতে চাইতাম। যদিও এর বিনিময়ে তারা আমার প্রাণ কেড়ে নিত।

কারণ মুসলমানদের প্রতিরক্ষা করা এবং তাদের কল্যাণকামিতার দায়িত্ববোধই তো আমাদেরকে আমেরিকা ও আমেরিকার কর্মচারি পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়েছে। মুসলমানদের দ্বীন, প্রাণ, সম্পদ ও সম্মান রক্ষা করা ছাড়া জিহাদের আর কি উদ্দেশ্য!? জিহাদের নামে মুসলমানদের জান-মাল নষ্ট করা তো নয়!

 

আমার প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা!

আমি আপনাদের সামনে সংক্ষিপ্তভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে কায়িদাতুল জিহাদের কর্মপন্থার কিছু ধারা তুলে ধরা জরুরী মনে করছি:

প্রথমত: আমরা বিশ্বাস করি, সাধারণ মুসলিমগণ আমাদের ভাই এবং আমরা মনে করি, তাদেরকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা তাদের জান, সম্মান, এমনকি তাদের ফাসেকদের সম্পদকেও আমাদের উপর হারাম মনে করি। একারণে আমরা বিশ্বাস করি, পাকিস্তানের বাজার, বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মত সাধারণ স্থানগুলোতে  যে সকল মুসলিমগণ আছে, তারা আমাদের ভাই।

তবে যদি নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির কুফরী উলামায়ে কেরামের নিকট অকাট্য দলিলের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় তার কথা ভিন্ন। এর উপর ভিত্তি করে আমরা বিশ্বাস করি, তাদের জান ও মালে স্পর্শ করাও আমাদের উপর হারাম।

দ্বিতীয়ত: আমরা বিশ্বাস করি, আমেরিকা, ভারত ও তাদের মিত্ররা আমাদের শত্রু। আর পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও তার শাসকরা আমেরিকার কর্মচারি মাত্র। তারাই পাকিস্তানে শরীয়ত প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায়। তারাই কুফরী শাসনব্যবস্থার প্রতিরক্ষা করছে, বরং তার নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং আমেরিকান ডলারের বিনিময়ে মুসলমানদেরকে হত্যা করছে। একারণে তারা আমাদের শত্রু।

তৃতীয়ত: আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই যে, আমরা পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তার সামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহের অফিসার ও সৈনিকদেরকে হত্যা করাকে বিশুদ্ধ ইবাদত মনে করি। কিন্তু একই সময়ে আমরা এই আকিদাও রাখি যে, তাদের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে হত্যা করা অকাট্যভাবে শরীয়ত বিরোধী। চাই তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হোক বা না হোক। আমরা মনে করি, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সন্তানদের ব্যাপারে যতক্ষণ পর্যন্ত কার্যগতভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার প্রমাণ না পাওয়া যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে হত্যা করা হারাম।

অনুরূপভাবে  সেনাবাহিনীর লোকদের পিতামাতাদেরকেও। জেনে রাখুন, মুরতাদ সেনাবাহিনীর সদস্যদের স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যার ব্যাপারে আজ পর্যন্ত আরব বা আজমের কোন মুজাহিদ আলেম ফাতওয়া দেননি। অপরদিকে  সেনাবাহিনীর সদস্যদের স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা নাজায়েয হওয়ার ব্যাপারে আমাদের সামনে শায়খ আতিয়্যাতুল্লাহ রা: ও শায়খ আবু মুহাম্মদ আল-মাকদিসী হাফিজাহুল্লাহর মত বড় বড় মুজাহিদ আলেমদের স্পষ্ট ফাতওয়া রয়েছে।

চতুর্থত: আমরা বলি, দ্বীনের সাথে শত্রুতাকারী ধর্মহীন দলগুলোর নেতারা, যারা শরীয়ত প্রতিষ্ঠার পথে বাঁধা হয়ে আছে, তারা ইসলামের গন্ডি থেকে বের হয়ে গেছে এবং আমরা বিশ্বাস করি, তাদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানো জায়েয আছে। কিন্তু এর পাশাপাশি আমরা এটাও স্পষ্টভাবে বলি যে, আমরা এই সকল দলের সাধারণ সমর্থকদেরকে কাফের বলি না এবং তাদেরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানোও জায়েয মনে করি না।

পঞ্চমত: আমরা বিশ্বাস করি, গণতন্ত্র কুফর। কিন্তু এতে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তিকে কাফের বলি না। এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলোর এরূপ ব্যাখ্যা যে, তারা দ্বীনের খেদমত ও শরীয়ত বাস্তবায়নের জন্য পার্লামেন্টের সদস্য হচ্ছে, এগুলো ভ্রান্ত ব্যাখ্যা।

তথাপি এর উপর ভিত্তি করে আমরা এসকল দলগুলোকে কাফের বলি না এবং তাদেরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানোও জায়েয মনে করি না। কিন্তু যেহেতু তাদের এহেন কর্ম কুফরী শাসনব্যবস্থাকে শক্তিশালী করছে, এজন্য আমরা তাদেরকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে এই হারাম কাজ থেকে বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করি।

এই কর্মনীতি। এটাই সুস্পষ্ট দলিলের উপর প্রতিষ্ঠিত জামাআতু কায়িদাতিল জিহাদের মতাদর্শ। এই মতাদর্শ হক্কানী উলামায়ে কেরাম ও জিহাদী নেতৃবৃন্দের  কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সারাংশ এবং এর ভিত্তিতেই আমরা এর সাথে যুক্ত মুজাহিদদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি এবং এর দিকেই অন্যান্য সকল মুজাহিদদেরকে আমরা আহ্বান করি।

মুজাহিদদের নিকট কয়েকটি আবেদন

যেহেতু দ্বীন হল কল্যাণকামিতা তাই আমি পরিপূর্ণ বিনয়ের সাথে আমার প্রিয় মুজাহিদ বন্ধুদের উদ্দেশ্যে কয়েকটি আবেদন পেশ করব:

প্রথম আবেদন: আমরা আমাদের সকল গুরুত্বপূর্ণ কাজে আল্লাহকে ভয় করব। বিশেষত: মুসলমানদের প্রাণের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ে। যেহেতু এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। তার সম্মান সম্মানিত বাইতুল্লাহর সম্মানের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।

রাসূলুল্লাহ সা: বলেন: “অন্যায়ভাবে একজন মুমিন হত্যার চেয়ে পুরো দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাওয়া আল্লাহর নিকট সহজ।”

তিনি আরো বলেন: “একজন মুসলিমের রক্ত, সম্পদ, সম্মান- তথা প্রতিটি জিনিস অন্য মুসলিমের উপর হারাম

আর মুমিনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল, সে আল্লাহকে এমনভাবে ভয় করে যে, সর্বদা আল্লাহর ইবাদত করতে থাকে; হারাম কাজে লিপ্ত হওয়া বা তাতে অটল থাকা তো দূরের কথা। আল্লাহ আয্যা ওয়াজাল্লা বলেন:

﴿وَالَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آتَوْا وَقُلُوبُھُمْ وَجِلَةٌ أَنَّھُمْ إِلَى رَبِّھِمْ رَاجِعُون﴾

এবং যারা যে-কোন কাজই করে, তা করার সময় তাদের অন্তর এই ভয়ে ভীত থাকে যে, তাদেরকে নিজ প্রতিপালকের কাছে ফিরে যেতে হবে।”

এরা হলেন, সাহাবা রিদওয়ানুল্লাহি আলাইহিম আযমাঈন। তারা আল্লাহর ঐ সকল শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন, যাদের আল্লাহর শত্রু হওয়ার ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু এতদসত্ত্বেও তাদের অন্তর থাকত ভয়ে প্রকম্পিত, না জানি তাদের থেকে কোন শরীয়ত বিরোধী কাজ প্রকাশিত হয়ে যায়! অথবা লোক দেখানো বা অহংকার হয়ে যায়! আর তাদের যবান বিনীতভাবে বলতে থাকে:

﴿رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِين﴾

হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের গুনাহসমূহ এবং আমাদের দ্বারা আমাদের কার্যাবলীতে যে সীমালঙ্ঘন ঘটে গেছে তা ক্ষমা করে দিন। আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখুন এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে বিজয় দান করুন।”

দ্বিতীয় আবেদন: আমলের পূর্বে ইলম অর্জন করা। আমল বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য ইখলাসের পর দ্বিতীয় শর্ত হল, তা শরীয়ত অনুযায়ী হওয়া। কাকে হত্যা করা জায়েয আছে, কাকে হত্যা করা জায়েয নেই? কার সম্পদ বৈধ, কার সম্পদ বৈধ নয়?

কাকে শত্রু হিসাবে গ্রহণ করা আবশ্যক আর কার সাথে ভালবাসা আমাদের ঈমানের অংশ? এই সকল মাসআলাগুলোর ইলম থাকা প্রতিটি মুজাহিদের জন্য আবশ্যক। তাই ব্যক্তিগত গবেষণা থেকে বেঁচে থাকুন, পরিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকুন! এ সকল মাসআলাসমূহের ক্ষেত্রে জিহাদী আলেমদের অনুসরণকে নিজেদের উপর আবশ্যক করে নিন। আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা বলেন:

﴿يَا أَيُّھَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ﴾

“হে মুমিনগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, তার রাসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা দায়িত্বশীল তাদের।”

এখানে উলুল আমর দ্বারা উদ্দেশ্য হল হক্কানী উলামায়ে কেরাম। আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা আরো বলছেন:

﴿يَا أَيُّھَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا

“হে মুমিনগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর করবে, তখন যাচাই-বাছাই করে দেখবে।

তৃতীয় আবেদন: স্পষ্ট ও সর্বসম্মত লক্ষ্যগুলো নির্বাচন করার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকা। যেসকল লক্ষ্যগুলোর ব্যাপারে মুজাহিদ আলেমগণ কোন আপত্তি করবেন না এবং সাধারণ মুসলমানদের জন্যও সেগুলোর বৈধতা বুঝা কঠিন হবে না এবং তার কারণগুলো মানুষের নিকট অস্পষ্ট হবে না। এর বিপরীতে শরীয়ত ও সাধারণ মুসলমানদের বুঝের প্রতি লক্ষ্য না করে বিভিন্ন লক্ষ্য নির্বাচন করা ধ্বংসাত্মক এবং জিহাদী কাফেলার জন্য আত্মঘাতীমূলক।

চতুর্থ আবেদন: আপনাদের আবেগ, রাগ ও শত্রুতাকে শরীয়তের অনুগামী করুন। কারণ প্রকৃত মুজাহিদ হল, যে নিজ নফসকে শরীয়তের অনুগামী করার জন্য প্রথমে নফসের সাথে জিহাদ করে। “মুজাহিদ হল, যে আল্লাহর আনুগত্যের ব্যাপারে নিজ নফসের সাথে জিহাদ করে।” রাসূলুল্লাহ (সা:) সন্তুষ্টি ও রাগের মধ্যে ভারসাম্যতাকে মুক্তিদানকারী বৈশিষ্ট্যসমূহের অন্যতম গণ্য করেছেন।

পঞ্চম আবেদন: আমি এটা মুজাহিদ আমীর ও নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে পেশ করছি: তা হচ্ছে, জিহাদ ও জিহাদী দাওয়াতের জন্য মঙ্গলজনক হল, আমরা মন্দ কারীর ব্যাপারে বলে দিব যে, সে মন্দ করেছে, যদিও যারা এই মন্দ কাজে লিপ্ত হয়েছে তারা আমাদের মধ্য থেকেই কেউ হয়। অনুরূপ আমরা ভালকাজ কারীর ব্যাপারে বলে দিব যে, তুমি ভাল কাজ করেছো, যদিও উক্ত ভালকাজ কারী আমাদের ছাড়া অন্য কেউ হোক।

নিশ্চিত, কোন ভুল কাজ বা শরীয়ত বিরোধী কাজকে ভাল প্রমাণ করতে চাওয়া জিহাদের জন্য আদৌ মঙ্গলজনক নয়। চাই উক্ত কাজে আমরা নিজেরা লিপ্ত হই বা আমাদের কেউ লিপ্ত হউক। আর আমরা আমাদের সাময়িক স্বার্থকে দ্বীনের স্বার্থের উপর প্রাধান্য দিব না। আল্লাহ তা’আলা বলেন:

﴿يَا أَيُّھَا الَّذِينَ آمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ بِالْقِسْطِ شُھَدَاءَ لِلَّهِ وَلَوْ عَلَى أَنْفُسِكُمْ أَوِ الْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِينَ﴾

হে মুমিনগণ! তোমরা ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী হয়ে যাও আল্লাহর জন্য সাক্ষ্যদাতারূপে, যদিও তা তোমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে কিংবা তোমাদের পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয়।”

ষষ্ঠ আবেদন: আমরা আমাদের দলের মাঝে ‘আমর বিল মারুফ ও নেহি আনিল মুনকারের ফরজ দায়িত্ব আদায়ের ব্যাপারে গুরুত্ব দিব। কারণ আমাদের কাফের ও মুরতাদদের বিরুদ্ধে জিহাদী মিশনের সাথে আরো দু’টি মিশন রয়েছে: তা হচ্ছে আত্মসংশোধনের মিশন এবং মুজাহিদদেরকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করা ও আমর বিল মারুফ ও নেহি আনিল মুনকারের মিশন। আমরা কখনোই আল্লাহর পাকড়াও হতে মুক্ত পাবো না, যদি এই সকল মিশনগুলোর ব্যাপারে দৃঢ় না হই।

এ সবগুলো বিষয় পালন করলে আমরা আমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সফলতা লাভ করতে এবং অসহায় উম্মাহকে রক্ষা করতে সক্ষম হবো।

সায়্যিদুনা আবুদ্দারদা রা: বলেন: “তোমরা তো তোমাদের আমলের দ্বারা যুদ্ধ কর”। তাই অন্যায় থেকে নিষেধ না করা একটি মহা গুনাহ, যার ক্ষতি ভাল-মন্দ সবাইকে ভোগ করতে হয়। বনী ইসরাঈলের ধ্বংস ও তাদের নবীদের যবানে তাদের অভিশপ্ত হওয়ার কারণ তো এটাই ছিল যে, তারা অন্যায় কাজ দেখতো, কিন্তু তা থেকে নিষেধ করত না-

﴿كَانُوا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَنْ مُنْكَرٍ فَعَلُوهُ لَبِئْسَ مَا كَانُوا يَفْعَلُونَ

তারা যেসব অসৎ কাজ করত, তাতে একে অন্যকে নিষেধ করত না। বস্তুত তাদের কাজ ছিল অতি মন্দ।”

সপ্তম আবেদন: আমি এটা মুজাহিদ মামুরদের উদ্দেশ্যে পেশ করছি: হে আমার প্রিয় বন্ধুরা! রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন: “আল্লাহর অবাধ্যতার মধ্যে কারো আনুগত্য (জায়েয) নেই, আনুগত্য শুধু ন্যায়সঙ্গত কাজে (জায়েয)”। আমির যদি অন্যায় কাজের আদেশ করে, তাহলে তার আদেশ প্রত্যাখ্যান করা ঈমানের আবশ্যকীয় দাবি। এটাই আল্লাহ ওয়ালা মুজাহিদদের নিদর্শন। আর যদি আমরা শরীয়ত বিরোধী আদেশের সামনে চুপ থাকি, বা তা বাস্তবায়ন করতে থাকি, তাহলে আমাদের মাঝে ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মাঝে পার্থক্য রইল কি? আপনারা এ কথা চিন্তা করুন যে, আমরা প্রত্যেকে স্বীয় প্রভূর সামনে একা একা দাঁড়াবো।

যদি দল বা সংগঠন আমাদেরকে আমাদের প্রভূর সন্তুষ্টি অর্জনে সাহায্য করে, তাহলে তো এটা আল্লাহর নেয়ামত। আমরা এর জন্য আল্লাহর প্রশংসা করি। অন্যথায় কোন দল বা সংগঠন আমাদেরকে কিয়ামতের দিন আল্লাহর আযাব থেকে মুক্তি দিতে পারবে না।

অষ্টম আবেদন: সকল মুজাহিদদের উদ্দেশ্যে: তা হচ্ছে মুসলমানদের সাথে নম্রতা ও কোমলতার সাথে আচরণ করা; রুক্ষতা ও কঠোরতা না করা। আল্লাহ সুবহানাহু ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন যে, “তারা কাফেরদের উপর কঠোর আর আপসে সহমর্মী”।

পাকিস্তানের জনগণ মুসলিম। হ্যাঁ, গুনাহ ও ভুল-ভ্রান্তি সত্ত্বেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে তাদের হুকুম হল তারা মুসলিম। আর মুসলমানদেরকে ভালবাসা, তাদের সাথে নম্রতা ও কোমলতার সাথে আচরণ করা, তাদের কল্যাণ কামনা করা এবং যে সকল শরীয়তের শত্রুরা তাদের উপর কুফরী শাসনব্যবস্থা কার্যকর করছে তাদের সাথে শত্রুতা করা ও তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা আল্লাহর ঐ সকল বান্দাদের আলামত, যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন। আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা বলেন:

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَنْ يَرْتَدَّ مِنْكُمْ عَنْ دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ﴾

হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্য হতে কেউ যদি নিজ দ্বীন থেকে ফিরে যায়, তবে আল্লাহ এমন লোক সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারাও তাকে ভালবাসবে। তারা মুমিনদের প্রতি কোমল এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোনও নিন্দুকের নিন্দাকে ভয় করবে না।”

কারো মুসলিম ভাই তার যবান ও হাত দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে আর এ অবস্থায় সে প্রকৃত মুসলিম হবে এটা সম্ভব নয়, মুজাহিদ হওয়া তো দূরের কথা। “মুসলিম সেই, যার যবান ও হাত থেকে অন্য মুসলিমরা নিরাপদ থাকে”। আমাদের এটা স্মরণ রাখা উচিত যে, আমাদের পক্ষে এই জালিম রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া এবং শরীয়ত বাস্তবয়ন করা ও প্রভুকে সন্তুষ্ট করা সম্ভব না, যদি আমরা বাস্তবিকভাবে আমাদের মুসলিম ভাইদের প্রতি হিতকামনা ও ভালবাসা না রাখি।

আমার প্রিয় ভাইদের প্রতি সর্বশেষ আবেদন: আমরা “সুসংবাদ দাও, ঘৃণা ছড়িও না” এর উপর আমল করি, আমরা ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত হই, যারা স্বীয় আমল দ্বারা মানুষের অন্তরে ইসলামের প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি করে, তাদের অন্তর্ভুক্ত না হই, যারা আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে ঘৃণা সৃষ্টি করে। যাতে আপনাদের প্রতিটি কথা ও প্রতিটি কাজ মানুষের অন্তরে জিহাদের প্রতি ভালবাসা সৃষ্টি করে।

নিশ্চয়ই আমরা দাঁড়িয়েছি একটি দাওয়াত নিয়ে। আমরা একটি বার্তা বহন করছি। আমাদের একটি লক্ষ্য আছে। জিন ও ইনসানের সমস্ত শয়তানরা এবং সমস্ত শত্রুরা আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এই পবিত্র লক্ষ্যের উপর আবরণ সৃষ্টি করার জন্য এবং ঐ সকল লোকদের মাঝে আমাদের সুনাম নষ্ট করার জন্য, আমরা নিজেদেরকে যাদের সদস্য মনে করি এবং যাতে মানুষ আমাদের থেকে দূরে সরে যায়।

তাই আমাদের প্রতিটি কাজ, প্রতিটি পদক্ষেপ ও প্রতিটি কথা যেন জিহাদের প্রকৃত রূপ থেকে এসকল আবরণ দূর করার জন্য সহায়ক হয়।

আরও শুনুন হে আমার মুজাহিদ ভাইগণ!

আল্লাহর শপথ, যদি আমরা ও আমাদের সন্তানরা সবাই নিহত হয়ে যাই, কিন্তু আমাদের দাওয়াত ব্যাপকতা লাভ করে, তার জ্যোতি বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের জাতি আমাদের দাওয়াতকে আল্লাহর দ্বীনের প্রতি প্রত্যাবর্তন ও শরীয়ত বাস্তবায়নের দাওয়াত হিসাবে গ্রহণ করে নেয়, তাহলে এটাই সৌভাগ্য। কিন্তু যদি আমাদের ভুল-ভ্রান্তির কারণে পবিত্র জিহাদী দাওয়াতের চেহারা বিকৃত হয়ে যায়, তাহলে আমরা মুজাহিদদের উপর, আল্লাহর দ্বীনের উপর, আমাদের জনগণের উপর এবং আমাদের পরাধীন জাতির উপর জুলুম করলাম।

আলেমদের প্রতি বার্তা:

জাতির প্রকৃত কর্ণধার ও সত্যের ঘোষণা দানকারী আমাদের সম্মানিত, মর্যাদাবান ও মহান আলেমদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই, আমরা তো আপনাদেরই ছাত্র, আপনাদেরই সন্তান এবং আপনাদেরই ফসল। আমরা জিহাদী কাফেলার সাথে আপনাদের যে কোন ধরণের সম্পৃক্ততাকে আমাদের জন্য মূল্যবান ও আমাদের আনন্দের কারণ মনে করি, যদিও জিহাদী ময়দানগুলো আলেম শূন্য নয়। কিন্তু এই সংখ্যা যথেষ্ট নয়। তাই আমরা বর্তমানে জিহাদের ময়দানে পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি আপনাদের প্রয়োজন মনে করি।

কারণ জিহাদের ময়দানে সম্ভাব্য বৃহৎ সংখ্যায় আপনাদের উপস্থিতির দ্বারাই জিহাদের ভুল-ভ্রান্তি প্রতিকার সম্ভব। তাই মুজাহিদদের সাথে আলেমদের সম্পর্ক যত শক্তিশালী হবে, জিহাদী কাফেলা উম্মাহর জন্য তত অধিক কল্যাণ ও বরকত বয়ে আনতে পারবে। আমরা আপনাদের থেকে কামনা করি, আপনারা আমাদেরকে দিকনির্দেশনা দিন। আপনারা আমাদেরকে ইনসাফের সাথে তদারকি করলে এটাকে আমরা আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা মনে করব। আল্লাহ আপনাদের ইলম ও আমলে বারাকাহ দান করুন! আমীন!

মহান উম্মাহর প্রতি:

সবশেষে আমি আমার প্রিয় পাকিস্তানী মুসলিমদের উদ্দেশ্যে বলবো: জালিম সেনাবাহিনী ও বিশ্বাসঘাতক শাসকগোষ্ঠী কখনোই আপনাদের কল্যাণ কামনা করে না, বরং তারা আপনাদের শত্রু। এই সকল তো এমন যে, তারা তাদের রবের বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন করছে, আমেরিকার দাসত্ব করছে, অর্থ, ডলার ও কৃপ্রবৃত্তির পূজা করছে এবং হাজার হাজার মুসলিমদেরকে হত্যা করেছে।

তারা তাদের নফসের শত্রু। নিজ সত্ত্বার কাছে অপরাধী। প্রকৃতপক্ষে আপনাদের স্বস্তি, আপনাদের নিরাপত্তা এবং আপনাদের দ্বীন ও দুনিয়ার সফলতা ও সম্মান দয়াময় ও মহান প্রভূর শরীয়তের মধ্যেই। কিন্তু এই সেনাবাহিনী শরীয়তের পথে বাঁধা হয়ে আছে।

আর যেসকল মুজাহিদগণ আল্লাহর শরীয়তের জন্য এবং আপনাদের প্রতিরক্ষার জন্য আমেরিকা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তারাই আপনাদের প্রকৃত কল্যাণকামী। যারা শরীয়তের পথে জিহাদ করছে।

তাই ঐ জিহাদ ও ঐ সকল মুজাহিদদেরকে চিনুন, যারা ন্যায়বান ও অন্যায়কারীর মাঝে, জালিম ও মাজলুমের মাঝে এবং শরীয়তসম্মত ও শরীয়তবিরোধী বিষয়ের মাঝে পার্থক্য করে। তাদেরকে সহযোগীতা করুন। কারণ প্রত্যেক ময়দানেই আসল ও নকল এবং ভাল ও  মন্দ থাকে। এর মাধ্যমেই আল্লাহ আমাদেরকে পরীক্ষা করেন। আর আপনারা নিশ্চিতভাবে জানুন যে, শরীয়তই এ দেশের ভবিষ্যৎ।

অন্ধকার রাত্রি অতি শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে ইংশাআল্লাহ। কারণ একটি উজ্জ্বল প্রভাতের জন্য পুরো একটি প্রজন্ম কুরবানী করেছে, অত:পর শরীয়তের সাহায্যকারীগণ ছড়িয়ে পড়েছে দেশ হতে দেশান্তরে। তাদের এই বন্দীত্ব বরণ, হত্যা, ফাঁসি ও এত কুরবানী কিছুতেই বাতাসে উড়ে যাবে না। আর এ বিষয়টি তো শুধু  হকের জন্য কুরবানীই চায়।

তাই বর্তমানে খায়বার থেকে করাচি পর্যন্ত এমন কাফেলাসমূহের আবির্ভাব ঘটেছে, যারা শুধু ইসলামের দাবিই করছে না, বরং ইসলামকে বাস্তবায়িত দেখার জন্য শাহাদাত ও কুরবানীর এক মহান ইতিহাস রচনা করেছে এবং অবিরাম এই পথের উপর চলছে।

আল্লাহ আমাদেরকে ঐ সকল লোকদের অন্তর্ভুক্ত করুন, যারা এই কাফেলায় সওয়ার হয়েছে এবং আমাদের জীবন ও রক্ত এমন একটি প্রভাতের জন্য কবুল করে নিন, যা শরীয়তের নূরে উদ্ভাসিত হবে। নিশ্চয় তার উদয় অত্যাসন্ন। আমীন! ইয়ারাব্বাল আলামীন!

পরিশেষে সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। রহমত বর্ষিত হোক তার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মুহাম্মদ সা:, তার পরিবারবর্গ ও সমস্ত সাহাবীদের প্রতি।

 

আস-সাহাব ভারতীয় উপমহাদেশ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × three =

Back to top button