দুইটি আলোকবর্তিকা পশ্চিমকে আলোকিত করেছে || আনসারুল্লাহ ব্লগের পক্ষ থেকে শাইখ আনোয়ার আল আওলাকি এবং সামির খানের শাহাদাতে মুসলিম উম্মাহর প্রতি বার্তা
দুইটি আলোকবর্তিকা পশ্চিমকে আলোকিত করেছে
مِّنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ ۖ فَمِنْهُم مَّن قَضَىٰ نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّن يَنتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا
“মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি”
এবং তাদের একবিন্দুও পরিবর্তন ঘটেনি…আসলে এইভাবে আমরা আমেরিকার দুই শহীদ, ইয়েমেনের দুই শহীদ,শাইখ, দা’য়ী, সত্য বক্তা, যে তাঁর কথার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন, মুহাজির মুজাহিদ আনোয়ার আল আওলাকি এবং সাহসী ও নির্ভীক, দৃঢ়চেতা উচ্চাকাঙ্খী মুহাজির মুজাহিদ সামির খান সম্পর্কে বর্ননা করতে পারি।
দুইজনই তাদের নিজ পথে আমেরিকার জন্য কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।
একজন বিখ্যাত দা’য়ী যিনি মানুষের হৃদয়কে নাড়া দিয়েছিলেন এবং অশ্রু ঝরিয়েছিলেন। যিনি নবী (আলাইহিসসাল্লাম), রসূল (সল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম) এবং সাহাবাদের (রাযিআল্লাহুয়ানহু) জীবনি জনগণের সামনে তুলে ধরেছিলেন যাতে মুসলিমদের ভিতরে চেতনা জাগ্রত হয় যা অবহেলার কারণে মুসলিমের ভিতর থেকে লোপ পেয়েছে এবং জিহাদ ও ভ্রাতৃত্ববোধের চেতনা পুনরায় জেগে উঠুক। একজন মুজাহিদ দা’য়ী হিসেবে ধীরে ধীরে পরিনত হওয়ার সময় যা তিনি শুরু করেছিলেন, তিনি তাঁর সাথে তাঁর শ্রোতাদের একসাথে নিয়েছিলেন। যার ফলাফলস্বরূপ শতের অধিক নিদাল হাসান যখন সময় হবে তখন আক্রমণ করার জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষা করছে।
আরেকজন দিকহারানো মুসলিম তরুণ যিনি সত্যের দিকে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন, আংশিক নয় পুরোপুরি, আবিষ্কার করেছিলেন হারানো এবং অবহেলিত জিহাদের রাস্তা যা অপেক্ষা করছিল তাঁর দ্বারা উন্মোচন করার জন্য। তিনি পিছনে ফিরে যাননি বরং তাঁর অটল স্থির প্রতিজ্ঞা এবং সাহসীকতা দিয়ে তিনি সেই রাস্তা ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন অন্যরা যা কখনও তা দেখেনি এবং এইভাবে এইটি সকলের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল, আর নতুন ক্রুসেডারদের বাস্তবতা এখন একটি সাধারন বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
তাঁরা খুব অল্পই জানতেন যে তাঁরা একদিন ঈমান ও হিম্মতের ভূমি, সাহায্য এবং জিহাদের ভূমি, ইয়েমেনের ভূমি আরবের ফেলিক্সের ভূমিতে পথ অতিক্রম করবেন!
যেখান থেকে তাঁরা তাদের স্বপ্নকে উচ্চআসনে নিয়ে গিয়েছিলেন, পুরো দুনিয়ার সাথে এমনভাবে কথা বলছিলেন যা তাঁরা কখনো কল্পনা করতে পারেনি। যখন তাঁরা বলতেন জনগন শুনতো, যখন তাঁরা লিখতেন জনগণ পড়ত, যখন তাঁরা সতর্ক করতেন তাঁরা ভয় পেত এবং যখন তাঁরা বিদ্রুপ করতেন মানুষ তখন বিধ্বস্ত হতো।
তাঁরা একে অপরের সাথী হওয়ার পর তাঁরা পরষ্পর থেকে কখনো আলাদা হননি, তাঁরা একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হননি কিন্তু তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন যারা পিছনে পড়ে থাকে, তাদের থেকে যারা তাদের পথ অনুসরণ করতে অধিক সময় নেয় এবং তাদের থেকে যারা এই পথ অনুসরন করা থেকে বিরত থাকে এবং তাদের থেকেও যারা অভিযোগ করে।
… সিদ্দিকদের এবং নবীদের(আলাইহিসসাল্লম) সাথে অনন্তকালের সঙ্গী হওয়ার জন্য, এবং অন্যরাও যারা তাদের কথাকে সত্যে পরিণত করেছিলেন।
নিশ্চয় তাঁরা বিজয়ী হিসেবে প্রমানিত হয়েছিলেন, সকল কিছু উপেক্ষা করে তাঁরা সামনের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন, দৃঢ়চেতা ছিলেন এবং অর্জন করেছিলেন যা নিয়ে সকলে শুধু স্বপ্ন দেখতে পারে, তাঁরা জয়ী হয়েছেন, যদিও এই বিজয় যুদ্ধক্ষেত্রে হয়নি কিন্তু জয় করেছিলেন মানুষের হৃদয় যা সত্যকে ধারন করে ,“এবং নিশ্চয় ঐটি বিরাট সফলতা”
﴿ذلك الفوز الكبير﴾
তাদের শাহাদাতবরনে মুসলিমদের অনুভূতি কি তা বোঝানোর কোন ভাষা আমাদের কাছে নেই এবং আমাদের আশা বেঁচে থাকবে জ্ঞানী এবং হিকমতওয়ালাদের কাছে।
﴿إِنَّ رَبِّي لَطِيفٌ لِّمَا يَشَاءُ إِنَّهُ هُوَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ﴾
“আমার পালনকর্তা যা চান, কৌশলে সম্পন্ন করেন। নিশ্চয় তিনি বিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ”
﴿لَقَدْ كَانَ فِي قَصَصِهِمْ عِبْرَةٌ لِّأُولِي الْأَلْبَابِ﴾
“তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে প্রচুর শিক্ষণীয় বিষয়,
”
… দুনিয়া এবং আখিরাতের জীবনে তাদের জন্য সফলতা যারা আল্লাহকে কামনা করে, আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহর জন্য যারা ভিন্নমত পোষন করে, আল্লাহর জন্য পরিত্যাগ করে।
নিশ্চয় শাইখ আনোয়ার এবং ভাই সামির তাদের জীবন বিসর্জন করেছেন মুসলমানদের জন্য,তাদের জন্য সত্য এবং সঠিক পথ প্রজ্জ্বলিত করার জন্য, হিজরত এবং জিহাদের কঠিন সময়ে ভীতি এবং অনিরাপত্তায় সত্যের কন্ঠের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য। তাঁরা পশ্চিমের মুসলিমদের জন্য আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করেছেন, তাদেরকে তাদের সত্যিকারের ভূমিকা এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
নিঃসন্দেহে তাঁরা তাদেরকে (পশ্চিমের মুসলিম) তাদের দায়িত্ব দেখিয়েছেন, যা এখনও বাস্তবায়নের জন্য অপেক্ষা করছে! সময় হয়ে গেছে তাদের সতর্কতাকে দাম দেয়ার এবং তাদের ডাকে সারা দেওয়ার, কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সেরা পথের জন্য যা একজনের কাজের মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব।
জেনে রাখুন এখনও অনেক রক্তের প্রতিশোধ নেওয়া বাকী আছে এবং শুধুমাত্র আপনারা যারা পশ্চিমা দেশে বসবাস করছেন তারাই এই কর্তব্য পূরন করতে পারেন। ইতিহাসের যোগ্য স্থানে জায়গা খুঁজে নিন এবং গোপনীয়তার সহিত সাহায্য কামনা করুন যেমন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লাম শিখিয়েছিলেন। তৈরি হোন এবং আপনার কাছে যা কিছু আছে তাই জড়ো করে নিজেকে শক্তিশালী করুন, উপযুক্ত পরিকল্পনা করুন এবং এর বাস্তবায়ন করুন, অবশ্যই এইটি তাদের দ্বারা সম্ভব হবে যাদেরকে আল্লাহ্ কবুল করবেন। আপনার নিজের কর্তব্যের উপর জীবনকে পরিচালিত করুন এবং পৃথিবীব্যাপি মুমিনদের আত্মাকে শান্তি পেতে দিন। আল্লাহ্র কাছে সাহায্য চান এবং আপনার বিশ্বাস আল্লাহ্তাআলার উপর রাখুন। নিশ্চয় শেষ বিজয় মুমিনদের জন্য।
﴿قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِين وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ﴾
“যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন”
আমরা আল্লাহ্র কাছে দোয়া করি আল্লাহ্ যেন ইসলামের এই দুই নেতার হিজরত,জিহাদ এবং সকল কাজ কবুল করুন, এবং তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন।
শান্তি এবং অনুগ্রহ বর্ষিত হোক শেষ নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লামের উপর এবং সকল প্রশংসা আল্লাহ্র যিনি সকল কিছুর মালিক।
পরিবেশনায়
আনসারুল্লাহ বাংলা ব্লগ
ডাউনলোড করুন
http://www.mediafire.com/file/0j89q6mg9qha2d2/dui+alokbortika.docx
[উল্লেখ্য ফাতাওয়ার মূল পিডিএফ কপিটি আমাদের সংরক্ষণে নেই।]