অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আল হিকমাহ]আরবআল-হিকমাহ মিডিয়াইয়েমেনইলম ও আত্মশুদ্ধিবই ও রিসালাহবাংলা প্রকাশনামিডিয়াশাইখ হারিস আন নাজ্জারী রহিমাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

উত্তম নাসিহা – ৮ || হিজরত ও জিহাদে অগ্রগামীদের ফজিলত – শায়খ আল মুজাহিদ হারিস আন নাজারি রহঃ

উত্তম নাসিহা – ৮||

হিজরত ও জিহাদে অগ্রগামীদের ফজিলত – শায়খ আল মুজাহিদ হারিস আন নাজারি রহঃ

 

https://archive.org/details/9.un8jihadohijroteogrogamiderfojilot

https://archive.org/details/UN8_BN
https://bit.ly/2tkvgAu

ভিডিও ডাউনলোড করুন

https://archive.org/download/9.un8jihadohijroteogrogamiderfojilot/9.UN8%20-%20Jihad%20O%20Hijrote%20Ogrogamider%20Fojilot.mp4

http://www.mediafire.com/file/9hqnpmbbg9mll7f/9.UN8_-_Jihad_O_Hijrote_Ogrogamider_Fojilot.mp4/file

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

https://archive.org/download/9.un8jihadohijroteogrogamiderfojilot/9.UN8%20-%20Jihad%20O%20Hijrote%20Ogrogamider%20Fojilot.pdf

http://www.mediafire.com/file/t8o7dkzeolaxjzc/9.UN8_-_Jihad_O_Hijrote_Ogrogamider_Fojilot.pdf/file

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

https://archive.org/download/9.un8jihadohijroteogrogamiderfojilot/9.UN8%20-%20Jihad%20O%20Hijrote%20Ogrogamider%20Fojilot.docx

http://www.mediafire.com/file/vkgmdalj36eprkw/9.UN8_-_Jihad_O_Hijrote_Ogrogamider_Fojilot.docx/file

——————

উত্তম নাসিহা

শায়খ হারিস ইবনে গাজী আন-নাযারী (রহ.)

অষ্টম উপদেশ: হিজরত ও জিহাদে অগ্রগামীদের ফযীলত

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সঙ্গীসাথিদের উপর।

আল্লাহ তা’আলা বলেন:

“মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথমে ঈমান এনেছে ও যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করেছে আল্লাহ তাদের সকলের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে।

আল্লাহ তাদের জন্য এমন উদ্যানরাজী প্রস্তুত করে রেখেছেন, যার তলদেশে নহর বহমান। তাতে তারা সর্বদা থাকবে। এটাই মহা সাফল্য ।”

আল্লাহ তা’আলা জানিয়ে দিলেন: তিনি তাদের প্রতি সন্তুষ্ট, তারাও তার প্রতি সন্তুষ্ট এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন জান্নাত।

তারা কারা? মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে যারা অগ্রগামী বা পূর্ববর্তী।

আল্লাহ তা’আলা আরেক আয়াতে বলেন:

“তোমাদের মধ্যে যারা (মক্কা) বিজয়ের আগে ব্যয় করেছে ও যুদ্ধ করেছে তারা (পরবর্তীদের) সমান নয়।

মর্যাদায় তারা সেই সকল লোক অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, যারা (মক্কা বিজয়ের) পরে ব্যয় করেছে ও যুদ্ধ করেছে। তবে আল্লাহ কল্যাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সকলকেই। তোমরা যা ব্যয় কর আল্লাহ সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত।”

উস্তাদ আব্দুল্লাহ আয্যাম বলেন,

এ দুটি আয়াতের মধ্যে আল্লাহর পথে অগ্রগামীদের শ্রেষ্ঠত্ব এবং আল্লাহর নিকট তাদের মহান মর্যাদা ও সুউচ্চ স্তর লাভের দলীল রয়েছে।

অগ্রগামীগণ হলেন তাদের পরবর্তীদের জন্য অনুসরণীয়। সে তাদের সম্মুখে এবং তাদের ইমাম, যার অনুসরণ করা হবে।

যারা ইসলামের মধ্যে অগ্রগামী, হিজরতের মধ্যে অগ্রগামী, জিহাদের মধ্যে অগ্রগামী, ব্যয় ও দানের মধ্যে অগ্রগামী, কুরবানী ও পরীক্ষার মধ্যে অগ্রগামী, উপরন্তু এ সব কিছু সে সময়, যখন কোন সাহায্যকারী পাওয়া দুস্কর ছিল, সহযোগীতাকারী একেবারে নগণ্য ছিল এবং হিতাকাঙ্খী প্রেমিকের অস্তিত্ত্ব না থাকার মত ছিল,

যাদের অবস্থা এমন, কখনো সম্ভব নয় যে, তাদেরকে অন্য সমস্ত মানুষের সমান স্তরে রাখা হবে এবং কখনো সম্ভব নয় যে, তাদেরকেও ঐ সমস্ত লোকদের সমস্তরে রাখা হবে, যারা তাদের পরে এসেছে, তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে, তাদের নীতির উপর চলেছে ও তাদের আদর্শকে নিজেদের আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করেছে। হ্যাঁ, এটিও সেই ধরণের একটি আয়াত। এর মাধ্যমেও দলিল দেওয়া সঠিক।

শায়খুল ইসলাম তার ফাতাওয়ায় হিজরত সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন:

আল্লাহ তা’আলা বলছেন:

“যারা পরে ঈমান এনেছে, হিজরত করেছে ও তোমাদের সাথে জিহাদ করেছে তারাও তোমাদের অন্তর্ভূক্ত।”

সালাফের একদল বলেন, এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হবে কিয়ামত পর্যন্ত যারা ঈমান আনবে, হিজরত করবে ও জিহাদ করবে। তাই তারাও ফযীলত পাবে। জিহাদ, হিজরত ও নুসরাতের ফযীলত।

মানুষের মধ্যে একজনের আরেকজনের উপর প্রাধান্য, অর্থাৎ হিজরত ও জিহাদে অগ্রগামীতার বিশেষ ফযীলত, এটি একটি শরীয়তসিদ্ধ বিষয়। নবী করীম সা: তার সাহাবাদের মাঝে প্রাধান্য দিতেন তাদের প্রবীনত্ব, অগ্রগামীতা ও মর্যাদার দিক লক্ষ্য করে।

বুখারীর মধ্যে এসেছে, (এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা) হযরত আবু দ্দারদা রা: থেকে। অর্থাৎ ঘটনাটি বর্ণনা করছেন আবুদ্দারদা রা:। তিনি বলেন:

আমি রাসূল সা: এর নিকট বসা ছিলাম। ইত্যবসরে আবু বকর রা: আসলেন। তিনি কাপড়ের এক প্রান্ত হাতে ধরে আছেন। যার ফলে তার হাটুদ্বয় পর্যন্ত প্রকাশিত হয়ে পড়ল।

রাসূল সা: বললেন: তোমাদের সাথী গভীর আচ্ছন্নতার মধ্যে আছেন। (অর্থাৎ কোন সমস্যা হয়েছে।) অত:পর তিনি সালাম দিলেন। (অর্থাৎ আবু বকর রা: প্রবেশ করে সালাম দিলেন।) তারপর বললেন, আমার মাঝে ও ওমর ইবনুল খাত্তাবের মাঝে একটি সমস্যা হয়েছিল। আমি আগে তাকে কিছু বলে ফেলেছি।

অত:পর আমি অনুতপ্ত হয়ে আমাকে মাফ করে দেওয়ার জন্য তার কাছে অনুরোধ করেছি। কিন্তু তিনি মাফ করলেন না। (অর্থাৎ আবু বকর রা: রাসূলুল্লাহ সা: এর নিকট ওমরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন যে, আমি তাকে ক্রোধান্বিত করে ফেলেছিলাম।

অত:পর আমি তার কাছে অনুরোধ করি আমাকে মাফ করে দিতে, কিন্তু তিনি মাফ করেননি। তিনি (আবুদ্দারদা রা:) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা: এর প্রতি মনোযোগী হলাম: রাসূল সা: বললেন, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন হে আবু বকর!

তিনি ক্ষমা কামনা করছিলেন ওমর ইবনুল খাত্তাব রা: থেকে। ফলে রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন হে আবু বরক! তিনি এটা তিনবার বললেন।

এরপর ওমর রা: অনুতপ্ত হলেন। কারণ আবু বকর আমাকে সন্তুষ্ট করাতে চাচ্ছেন, অথচ আমি… তাই তিনি অনুতপ্ত হলেন।

অত:পর তিনি আবু বকর রা: এর বাড়িতে আসলেন। জিজ্ঞেস করলেন, এখানে আবু বকর আছেন? পরিবারের লোকজন বললেন, না।

অত:পর তিনি রাসূলুল্লাহ সা: এর নিকট আসলেন। বর্ণনাকারী সাহাবী বলেন: নবী সা: এর চেহারায় ক্রোধ ফুটে উঠছিল। এতে আবু বকর রা: এর দয়া সৃষ্টি হল।

তিনি হাটু গেড়ে বসে গেলেন। অত:পর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর শপথ, আমি অধিক অন্যায়কারী ছিলাম। আমিই দায়ী। তিনি এটা দু’বার বললেন।

তখন রাসূল সা: বললেন, আল্লাহ আমাকে তোমাদের মাঝে প্রেরণ করলেন, তখন তোমরা বলেছিলে, আপনি মিথ্যা বলেছেন, আর আবু বকর বলেছিল, আপনি সত্য বলেছেন। তিনি তার জান ও মাল দ্বারা আমার হিতকামনা করেছেন।

তাই তোমরা কি আমার জন্য আমার সাথীকে ছেড়ে দিবে?! তিনি এটা দু’বার বললেন। এরপর আর কখনো আবু বকর রা: কে কেউ কষ্ট দেয়নি।

রাসূল সা: আবু বকর রা: এর জন্য ক্রোধান্বিত হলেন এবং তার অগ্রগামীতার কারণে তার শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করলেন।

হাফেজ ইবনে হাজার রহ: ফাতহুল বারীতে এই হাদিসের সংযোজনে বলেন:

আবু বকর রা: এর মর্যাদা সমস্ত সাহাবাদের উপরে। আর সম্মানিত ব্যক্তির উচিত নয়, তার থেকে অধিক সম্মানিত ব্যক্তিকে রাগান্বিত করা।

বুখারীর মধ্যে এসেছে, রাসূল সা: বলেছেন,

তোমরা আমার সাহাবাদেরকে গালি দিও না, কারণ তোমাদের কেউ যদি উহুদ পরিমাণ স্বর্ণও সদকা করে, তা তাদের একজনের সমপরিমাণও হবে না বা তার অর্ধেকও হবে না।

এখানে তিনি ঐ সমস্ত সাহাবাদেরকে সম্বোধন করছেন, যারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন পরবর্তীতে।

অর্থাৎ এখানে সাহাবাদেরকেই সম্ভোধন করেছেন। অর্থাৎ আমার সাহাবাদেরকে গালি দিও না, কথাটি সাহাবাদেরকেই সম্ভোধন করে বলা হয়েছে, তবে ঐ সমস্ত সাহাবা, যারা পরে ইসলাম গ্রহণ করেছেন ও পরে জিহাদ করেছেন।

রাসূলুল্লাহ সা: তাদেরকে ভর্ৎসনা করছেন, অগ্রগামী ও পূর্ববর্তী সাহাবাদের ব্যাপারে তাদের থেকে যা সংঘটিত হয়েছিল তার জন্য। তবে প্রত্যেকের জন্য কলাণের ওয়াদা করেছেন।

উস্তাদ আব্দুল্লাহ আয্যাম বলেন, যখন পূর্ববর্তী আলোচনা থেকে জানা গেল, প্রত্যেক ব্যক্তির মর্যাদা তার ইসলামের অগ্রগামীতা, হিজরতের অগ্রগামীতা, জিহাদের অগ্রগামীতা এবং ব্যয় ও কুরবানীর মধ্যে অগ্রগামীতার ভিত্তিতে, যখন এ বিষয়গুলো জানা গেল, তখন সবার জন্য আবশ্যক হল, প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার উপযুক্ত স্থানে সমাসীন করা।

যেমন রাসূল সা: বলেছেন, সহীহ মুসলিমে রয়েছে:

তোমরা মানুষকে তার যথাযথ মর্যাদার স্থানে রাখ।

ইমাম নববী রহ: এই হাদিসের সংযোজনে বলেন,

অধিকারের ক্ষেত্রে মানুষের প্রাধান্য লাভ হবে তাদের মর্যাদা ও স্তর হিসাবে। এটা কিছু বিধানের ক্ষেত্রে বা অধিকাংশ বিধানের ক্ষেত্রে। হ্যাঁ, মানুষের মাঝে স্তর ও পর্যায় রয়েছে। ইনসাফ অবশ্যই কাম্য, কিন্তু পিতার এমন কিছু হক থাকে, যা সন্তানের হকের মত নয়, বড়’র এমন কিছু হক থাকে, যা ছোট’র হকের মত নয়।

এমনিভাবে আলেমেরও বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। একজন ব্যক্তি বড়, জ্ঞানী, বার্ধক্যে পৌছে গেছেন তার একটি সম্মান আছে, যদিও ছোট অধিক ইলমের অধিকারী হন না কেন, কিন্তু  বড়’র একটি সম্মান ও মর্যাদা আছে। আর আলিমের কিছু মর্যাদা ও সম্মান রয়েছে, যদিও সে আপনার থেকে বয়সে ছোট হন। সুতরাং মাসআলাটি ভারসাম্যপূর্ণ। প্রত্যেকের ই স্ব-স্ব আদব রয়েছে।

একারণে উচিত হল, যে এই পথে তার থেকে অগ্রগামী হয়েছে, তার একটি অধিকার সংরক্ষণ করা, তার অগ্রগামীতার মূল্যায়ন করা, তাকে সেই মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা, যাতে আল্লাহ তাকে অধিষ্ঠিত করেছেন এবং এক্ষেত্রে সংকোচবোধ না করা।

কারণ আল্লাহ তাকে এই মর্যাদা দিয়েছেন তার সবর, কুরবানী ও বিপদাপদ বরণ করার কারণে।

এসকল কলাণের অগ্রপথিকগণ সেই সময় জিহাদের বাজারকে প্রতিষ্ঠিত রেখেছেন, যখন তা অচল ছিল। সেই সময় এরজন্য তাদের প্রাণ ও আত্মা বিসর্জন দিয়েছেন, যখন দ্বীনের সাহায্য করতে অনেকেই পিছপা হয়েছিল।

যেদিন সাহায্যকারী কম ছিল, সহযোগীর অস্তিত্বই ছিল না। তাই হিজরত ও জিহাদের পথে অগ্রগামী এ সকল লোককে অন্যদের উপর প্রাধান্য দেওয়া হবে এবং তাদের অগ্রাধিকার বাস্তবায়ন করা হবে। শুধু তাই না, বরং তারা মুসলমানদের নেতা, তাদের সরদার।

ইমাম আশহাব ইমাম মালেক রহ: থেকে এই উক্তি বর্ণনা করেছেন:

মর্যাদাবান ও হিম্মতওয়ালা লোকদেরকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেন: “তোমাদের মধ্যে যারা (মক্কা) বিজয়ের আগে ব্যয় করেছে ও যুদ্ধ করেছে তারা (পরবর্তীদের) সমান নয়”।

উস্তাদ বলেন,

এস্থানে যে জিনিসটি জানা আবশ্যক তা হল, (গুরুত্বপূর্ণ কথা) প্রবীন বা অগ্রগামী লোকদের থেকে যে সমস্ত ভুল-বিচ্যুতি ও পদস্খলসমূহ হবে, যা হবেই, এগুলো যেন তাদের কুরবানীর ইতিহাসকে ভুলিয়ে না দেয়, যা তারা পূর্বে হিজরত ও জিহাদের ময়দানে রচনা করে গেছেন, বরং এগুলো তো এমন কিছু ভুল-বিচ্যুতি, যা তাদের নেককাজের বিশাল সমুদ্রে হারিয়ে যাবে। “পানি যখন দুই  কুল্লায় (মটকায়) পৌঁছে, তখন তা নাপাকী ধারণ করে না”।

বরং উত্তম হল তাদের ভুলগুলোকে স্খলন বলা, যেমন মুসনাদে আহমদে হযরত আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করীম সা: থেকে বর্ণনা করেন:

রাসূলুল্লাহ সা: বলেন: তোমরা অবস্থাসম্পন্ন লোকদের স্খলনগুলোকে ক্ষমা করে দাও, তবে হুদুদ (আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি) ব্যতিত।

ইবনুল কায়্যিম বিদাউল ফাওয়ায়েদে বলেন:

অবস্থাসম্পন্ন লোক হল, যারা মানুষের মাঝে মর্যাদাবান, সুখ্যাতি, সম্মান ও নের্তৃত্বের দিক থেকে। কারণ আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে তাদেরই সমজাতীয়দের মাঝে একপ্রকার বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন।

তাই এরূপ যাদের দোষগুলো সবার থেকে ঢাকা এবং তাদের গুণগুলো সবার মাঝে প্রসিদ্ধ, কিন্তু কখনো তার ঘোড়া হোচট খেল, তার ধৈর্য্যরে হাড় ফুলে উঠল এবং তার শয়তান তার উপর প্রভাবশালী হল, তখন যেন তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য দ্রুত এগিয়ে না যাওয়া হয়।

বরং তার স্খলনটিকে ক্ষমা করা হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তা আল্লাহর ‘হদ’ পর্যন্ত না পৌঁছে। কারণ এটা (হদ) সম্মানিত লোকদের থেকেও আদায় করতে হবে, যেমন নিম্ন শ্রেণীর লোকদের থেকে গ্রহণ করা হয়।

ইমাম নববী রহ: এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন-

যে কোন মুসলিমের দোষ গোপন করে, আল্লাহ তার দোষ গোপন করবেন- এখানে যে প্রশংসনীয় গোপন করা উদ্দেশ্য তা হচ্ছে, অবস্থা সম্পন্ন বা এধরণে লোকদের দোষ গোপন করা, যারা সাধারণত অন্যায় ও বিশৃংখলা সৃষ্টিতে প্রসিদ্ধ নয়।

তিনি আরেকটি সূক্ষ কথা উল্লেখ করেছেন: শায়খ আব্দুল্লাহ আজ্জাম রহঃ, তিনি বলেন,

যার কোন স্খলন ঘটে না, সে হল কর্মহীন বসে থাকা লোক। কারণ যে কর্মহীন স্বীয় ঘরে বসে থাকে, তার কোন ভুল হওয়া সম্ভব নয়। যার স্খলন ঘটে, যে ভুলের মধ্যে পড়ে সেই হল এমন ব্যক্তি, যে নড়া চড়া করে, কাজ করে।

এদেরই স্খলন ঘটে, এদেরই ভুল হয়। আর সবার জানা আছে, মুমিন যখন কোন ভুল করে ফেলেন আল্লাহ তাদের ভুল ক্ষমা করে দেন এবং আল্লাহ আমাদের থেকেও কামনা করেন, যেন আমরাও অবস্থাসম্পন্ন লোকদের স্খলনসমূহ ক্ষমা করে দেই।

সহীহ হাদিসের মধ্যে রয়েছে:

তোমরা অবস্থাসম্পন্ন লোকদের স্খলনসমূহ ক্ষমা করে দাও।

এখান থেকেই ইমাম ইবনুল কায়্যিম রহ: বলেন:

সালাফ (পূর্ববর্তী) ও খালাফগণ (পরবর্তীগণ) একমত পোষণ করেছেন যে, যখন কোন ব্যক্তির ভাল গুণগুলো প্রকাশিত হয়ে যায় এবং তার উত্তম কর্ম ও সৎকাজে আদেশের বিষয়গুলো সমাজে ছড়িয়ে পড়ে, এমন ব্যক্তির স্খলন ও বিচ্যুতিগুলোর থেকে দৃষ্টি নত করা হবে, যা অন্যদের থেকে নত করা হত না।

কেননা ভুল ও অপরাধ হল নাপাকী, আর “পানি যখন দুই কুল্লায় (মটকায়) পৌঁছে, তা নাপাকী বহন করে না ।”তাই তার অপরাধগুলোও নাপাকী, যা তার পূণ্যের বিশাল সমুদ্রের মাঝে হারিয়ে যাবে। তার বিশাল আমল ও নেক কাজের মধ্যে হারিয়ে যাবে।

মোটকথা, প্রতিটি মানুষকেই তার পূর্ববর্তীর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব বুঝতে হবে। এর প্রতিই ইসলাম আমাদেরকে আহ্বান করে। বড়দেরকে সম্মান করা, অগ্রগমীতা ও মর্যাদার অধিকারীদেরকে সম্মান করা, যতক্ষণ পর্যন্ত তা হদ (আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তি) না হয়। কিন্তু যখন স্পষ্ট অন্যায় কাজ হয়, তখন তো সৎকাজের আদেশ করা ও অন্যায় কাজ হতে নিষেধ করা শরীয়তের স্থায়ী মূলনীতি। যেটা আমাদের প্রতি কিতাব ও সুন্নাহর আহ্বান।

আমরা আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রার্থনা করি, আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে তার ইবাদত করার তাওফীক দান করুন এবং তার অবাধ্যতার বিষয়গুলো আমাদের থেকে দূরে রাখুন। আমীন!

ওয়াসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 5 =

Back to top button