Bengali Translation || আন নাফির বুলেটিন – ৪১ || জুমাদাল উলা ১৪৪৫ হিজরী || তৃতীয় ৯/১১

আন নাফির বুলেটিন -৪১

জুমাদাল উলা ১৪৪৫ হিজরী

তৃতীয় ৯/১১

২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরে একদল সাহসী মুসলিম যুবক আমেরিকার প্রাণকেন্দ্রে আক্রমণ পরিচালনা করেন। সেই বিখ্যাত ও ঐতিহাসিক ঘটনা, সকলেরই জানা।

আমেরিকাতে এই হামলার কারণ সম্পর্কে পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারীরা জানিয়েছেন। কারণটি হল: জায়নবাদী রাষ্ট্র ‘ইসরায়েল’-এর প্রতি আমেরিকার সমর্থন অব্যাহত রাখা। আমেরিকা প্রতিনিয়ত ইসরাঈলকে সর্বপ্রকার সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করছে, যেন অবৈধ ‘ইসরায়েল’ রাষ্ট্রটি মুসলিম উম্মাহর দেহে খঞ্জর চালাতে পারে ও ফিলিস্তিনের মুসলিমদের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখতে এবং বিস্তৃত করতে পারে।

আমেরিকার এমন উদ্দেশ্যের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এবং ফিলিস্তিনে মুসলিমদের সর্বপ্রকার ক্ষতি সাধনের দৃশ্য সহ্য করতে না পেরেই ইসলামের সিংহ পুরুষ মুজাহিদরা জেগে উঠেন। তাঁরা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারেননি। বরং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার সাহায্যে তাঁরা প্রস্তুতি নিতে আরম্ভ করেন। নিজেদেরকে উৎসর্গ করেন এবং জায়নবাদের সবচেয়ে বড় সমর্থক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিজ দেশের প্রাণকেন্দ্রে ধরাশায়ী করেন।

ইসলামের বীর বাহাদুর মুজাহিদরা আমেরিকার সুউচ্চ টাওয়ারগুলো গুঁড়িয়ে দেন।  পেন্টাগনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটান। বহু বছরের জন্য আমেরিকার হোয়াইট হাউজে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেন। তাঁরা আমেরিকাকে এমন এক যুদ্ধের গোলকধাঁধায় পতিত হতে বাধ্য করেন, যেখান থেকে তারা এখনো বের হয়ে আসতে পারেনি। এসবের মাধ্যমে মুজাহিদরা আমেরিকানদের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দেন:

“তোমরা কখনো নিরাপত্তার স্বপ্নও দেখতে পারবে না, যতক্ষণ না আমরা ফিলিস্তিনের ভূমিতে বাস্তবেই শান্তিতে বসবাস করতে পারব।”

এরপর দুই দশক বা তারও বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুসলিম মুজাহিদীন এবং প্রধানত জামাআত কায়েদাতুল্ জিহাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে আমেরিকা বিভিন্ন রণাঙ্গন ও ফ্রন্টে নানাভাবে পরাজিত ও অপমানিত হয়েছে। এমনকি কোনো কোনো ময়দান থেকে তারা লাঞ্ছিত অপদস্থ হয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে।

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়! আজ বাস্তবতা এটাই প্রমাণ করে দিয়েছে যে, আমেরিকা প্রথম ৯/১১ থেকে শিক্ষা নেয়নি। মনে হচ্ছে, সে দ্বিতীয় ৯/১১ তথা ‘বরকতময় তুফানুল আকসা অপারেশন’ থেকেও কোনো শিক্ষা গ্রহণ করেনি!

এরপর দুই দশক বা তারও বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুসলিম মুজাহিদীন এবং প্রধানত জামাআত কায়েদাতুল্ জিহাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে আমেরিকা বিভিন্ন রণাঙ্গন ও ফ্রন্টে নানাভাবে পরাজিত ও অপমানিত হয়েছে। এমনকি কোনো কোনো ময়দান থেকে তারা লাঞ্ছিত অপদস্থ হয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে।

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়! আজ বাস্তবতা এটাই প্রমাণ করে দিয়েছে যে, আমেরিকা প্রথম ৯/১১ থেকে শিক্ষা নেয়নি। মনে হচ্ছে, সে দ্বিতীয় ৯/১১ তথা ‘বরকতময় তুফানুল আকসা অপারেশন’ থেকেও কোনো শিক্ষা গ্রহণ করেনি!

তৃতীয় ৯/১১ অত্যাসন্ন!

কিছু আমেরিকান বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিবিদের বিশ্লেষণ সহ সমকালীন নানাবিধ ইঙ্গিত থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারছি, তৃতীয় ৯/১১ অনিবার্যভাবেই আসতে চলেছে। এবারের (তৃতীয় ৯/১১) অপারেশন শুধু মুজাহিদীনের হাতেই হবে, এমনটা ভাবার অবকাশ নেই। বরং বর্তমানে আমেরিকার কাছ থেকে প্রতিশোধ নেয়ার আকাঙ্ক্ষা ও স্পৃহা এতটাই বিস্তৃতি লাভ করেছে যে, আসন্ন (তৃতীয় ৯/১১) অপারেশন অমুসলিম বীরদের পক্ষ থেকে সংঘটিত হওয়াটাকেও আমি অসম্ভব মনে করি না!

বিশ্বের সকল জাতিগোষ্ঠী আজ গাজা উপত্যকার ঘটনা দেখে ব্যথিত হচ্ছে। ইসরায়েল এবং তার সমর্থকদেরকে সকলে অভিশাপ দিচ্ছে। এই অন্যায়ের শীর্ষে রয়েছে- নিরপরাধ নারী-শিশু হত্যাকারীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, অত্যাচারী ও স্বৈরাচারী রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃত ক্রুসেডার ‘আমেরিকা’। তাই তো আজ এমন অনেক ‘উসামা’ আমেরিকার প্রতি বিক্ষুব্ধ! তারা নিজেদের ও মুসলিমদের হৃদয় শীতলকারী হামলার মাধ্যমে আমেরিকাকে লণ্ডভণ্ড করে দেয়ার জন্য মোক্ষম সুযোগ ও উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করে যাচ্ছে। স্বাধীনচেতা মুসলিমদের হৃদয় ও চিন্তায় আজ কত ‘৯/১১’-এর স্বপ্ন বোনা হচ্ছে!

এ কারণে আমরা আমেরিকানদেরকে বলবো: উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ, তাঁর সঙ্গী-সাথিরা এবং ইসলামের সিংহ পুরুষরা গৌরবময় সেই মঙ্গলবারে তোমাদের দেশে হামলার পরিকল্পনা করে কোনো ভুল করেননি। এই হামলা অকারণে কিংবা নিছক ঘৃণার কারণে ছিল না।

হামলাকারী মুজাহিদরা আমেরিকাকে শায়েস্তা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবার আগে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদীদের অপরাধের সাক্ষী হন। আজ যেমন আমরা জায়নবাদীদের অপরাধের সাক্ষী হচ্ছি। ইসরায়েলের সাহায্য-সহযোগিতা ও সমর্থনের জন্য প্রেরিত প্রতিটি আমেরিকান গুলি, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ডলার-ই আমেরিকাকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানোর কারণ হিসেবে যথেষ্ট।

হে আমেরিকান জনগণ!

আজ তোমরা নিজেরাই প্রত্যক্ষ করছো, মুসলমানদের বিরুদ্ধে এবং গাজার শিশু ও নারীদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ইহুদীরা কিরূপ মানবতা বিরোধী অপরাধে মেতে উঠেছে! যে ইন্টারনেটে তোমরা অধিকাংশ সময় পার কর, তাতে তোমাদের চোখের সামনে রক্তাক্ত দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে তোমরা সেই সমস্ত সংবাদ দেখে যাচ্ছ!

এ কারণে ইসলামের সিংহ পুরুষ মুজাহিদগণ নিকট-ভবিষ্যতে যদি ইসরায়েলকে সাহায্য-সহযোগিতা ও সমর্থন করার কারণে তোমাদেরকে শায়েস্তা করে, তখন তোমাদের উচিত শুধু নিজেদেরই তিরস্কার করা; অন্য কাউকে নয়। কারণ বর্তমান সময়ে গাজায় আমাদের নারী-শিশুদেরকে হত্যা করার জন্য তোমাদের দেশ টন টন বিস্ফোরক দ্রব্য সরবরাহ করে যাচ্ছে। আর তোমাদের নেতারাই এই সমস্ত মানবতা বিরোধী অপরাধকে এখনো অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছে।

“তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জিহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে, এটি তোমাদের জন্যে অতি উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পার।” [সূরা আত-তাওবা ০৯: ৪১]

হে আমেরিকাবাসি! তোমরা কখনো নিরাপত্তার স্বপ্নও দেখতে পারবে না,

যতক্ষণ না আমরা ফিলিস্তিনের ভূমিতে বাস্তবেই শান্তিতে বসবাস করতে পারব