নির্বাচিতবার্তা ও বিবৃতি [আন নাসর]বাংলা প্রকাশনামিডিয়া

কায়িদাতুল জিহাদ – কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আল-আযহার দশকের সূচনা এবং হজে আকবার ১৪৪৪ হিজরী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বার্তা

مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media

 

تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents

 

الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation

 

بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:

بيان من القيادة العامة : بيان بمناسبة دخول عشر الأضحى والحج الأكبر ١٤٤٤هــ

কায়িদাতুল জিহাদ – কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব
আল-আযহার দশকের সূচনা এবং হজে আকবার ১৪৪৪ হিজরী উপলক্ষে
শুভেচ্ছা বার্তা

Qaidatul Jihad – General Command Statement
STATEMENT ON THE ENTRY OF THE TEN OF AL-ADHA AND THE GREAT PILGRIMAGE 1444 HIJRI
Messages of greetings

 

 

للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/AQC_Statement_AL-ADHA_1444h
লিংক-২ : https://mediagram.me/e8137be9c9e6f910
লিংক-৩ : https://noteshare.id/KhUrSiL
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20230628034043/https://justpaste.it/AQC_Statement_AL-ADHA_1444h
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20230628034122/https://mediagram.me/e8137be9c9e6f910
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20230628034202/https://noteshare.id/KhUrSiL

 

روابط بي دي اب
PDF (1.1 MB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [১.১ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/Y757xMDkR2z5QoA
লিংক-২ : https://archive.org/download/hajj-barta-1444/AQC%20-%20Hajj%20Barta%20-%201444%20F.pdf
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/835qy9fddb9e9824a4dd38a7c469b452fbeba
লিংক-৪ : https://jmp.sh/11bQTaFf
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/22497999-d319-435c-baee-d1a6c354b1ab/34db3ef848f2ceb064367ba59e7cf59ac4973f4e9c501da6a23d302f4dee1a48
লিংক-৬ : https://f005.backblazeb2.com/file/HajjBarta1444/AQC+-+Hajj+Barta+-+1444+F.pdf
লিংক-৭ : https://www.mediafire.com/file/ik69xc1ohuffu0u/AQC+-+Hajj+Barta+-+1444+F.pdf/file
লিংক-৮ : https://mega.nz/file/EzV0GaSD#PphGXjNU5fAlIZ4B6EbPOjyL9XtIFnmgl5Rx-M18vgc

 

روابط ورد
Word (704 KB)
ওয়ার্ড [৭০৪ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/rXoTP2PzqBac6ze
লিংক-২ : https://archive.org/download/hajj-barta-1444/AQC%20-%20Hajj%20Barta%20-%201444%20F.docx
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/835qy4bb42397b23341f4b995a15c6977f66c
লিংক-৪ : https://jmp.sh/ikx7ppLy
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/34280737-48f4-4517-a042-4ef0492224ec/0df57f1d1d6a718eeb6cb09e186331446757f7b88bc84435aac701a69cdb706e
লিংক-৬ : https://f005.backblazeb2.com/file/HajjBarta1444/AQC+-+Hajj+Barta+-+1444+F.docx
লিংক-৭ : https://www.mediafire.com/file/njf4drw0y1rcmu9/AQC+-+Hajj+Barta+-+1444+F.docx/file
লিংক-৮ : https://mega.nz/file/hzVgBaTB#fPxJNOx7zdjjsxvhDycOtD_0MzHdptQX_Fqq9-0rgrQ

 

روابط صور
page [17.8 MB]

লিংক-১ : https://archive.org/download/hajj-barta-1444/Hajj%20Barta%20-%201444.zip
লিংক-২ : https://jmp.sh/QoDaw5TX
লিংক-৩ : https://drive.internxt.com/sh/file/daef8ba0-0a05-491c-9835-5d0b7e85980a/282563b513b6a9e4ece621bf8dbc4db665a90a936caf0d22cea092e1367a021a
লিংক-৪ : https://f005.backblazeb2.com/file/HajjBarta1444/Hajj+Barta+-+1444.zip
লিংক-৫ : https://www.mediafire.com/file/clp5kb83zr7ogmx/AQC+-+Hajj+Barta+-+1444+F+Image+File.rar/file
লিংক-৬ : https://mega.nz/file/wjtFwZSL#x4PjvOjarQeiJuXvyARKKDfhJ9VZOXMbbh2CSg7FWP4

 

روابط الغلاف
Banner [941 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৯৪১ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/PDG5ZpD7Q9TeT4x
লিংক-২ : https://archive.org/download/hajj-barta-1444/AQC%20-%20Hajj%20Barta%20-%201444%20F%20Banner.jpeg
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/835qy3bb46ec06e5845bcac9782bbcbe5fc99
লিংক-৪ : https://jmp.sh/UpbG3EBb
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/4556fe04-2a04-4e8d-97c7-962079c8f2f9/8eeb7893603f74dd599257da962ca73501ea69e35b880a0fb47f8bc4a5bc10db
লিংক-৬ : https://f005.backblazeb2.com/file/HajjBarta1444/AQC+-+Hajj+Barta+-+1444+F+Banner.jpeg
লিংক-৭ : https://www.mediafire.com/file/x7v850i5eogea26/AQC+-+Hajj+Barta+-+1444+F+Banner.jpeg/file
লিংক-৮ : https://mega.nz/file/pnlGCIhY#v9XlGnfPkJdwJYCXlFd9wIOq-85Wt2ioGfljLWHqbxc

 

=======

 

الحمد لله الذي امتن على عباده بمواسم الطاعات،  والصلاة والسلام الأكملان على خير البريات ، الذي حث أمته على صنوف القربات ، والتقلب في مراقي العبوديات

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি ইবাদতের মৌসুম দিয়ে আপন বান্দাদেরকে অনুগ্রহ করেছেন! পূর্ণ রহমত ও প্রশান্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, যিনি বিভিন্ন ইবাদতের প্রতি এবং মহিমাময় দাসত্বের সিঁড়ি অতিক্রমের বিষয়ে উম্মাহকে অনুপ্রাণিত করেছেন।

হামদ ও সালাতের পর..

لبيك اللهم لبيك لبيك لا شريك لك لبيك إن الحمد والنعمة والملك لك لا شريك لك

ঘনিয়ে এসেছে বড় হজের সময়। লক্ষ লক্ষ মুসলিম তাওয়াফ, যিকির, সাঈ ও রমি’র মতো হজের ঐতিহ্যবাহী হুকুম-আহকাম সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বাইতুল আতিকে (সর্ব প্রাচীন গৃহ বাইতুল্লাহ’তে) সমবেত হয়েছেন। এটা এমনই এক সময়, যখন ভালোবাসা, আকাঙ্ক্ষা, ঈমানি আবেগ এবং মহান হজের ঐতিহ্যের প্রতি মহত্তবোধ প্রত্যেক হাজী মনে জেগে উঠে। এ সম্পর্কেই তো আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন

ذَلِكَ وَمَن يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقْوَى الْقُلُوبِ

অর্থ: “এটা শ্রবণযোগ্য… কেউ (শাআ’ইর তথা)আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করলে তা তো তার হৃদয়ের আল্লাহভীতি প্রসূত। (সূরা হাজ – 22:32)

আমরা এই শুভক্ষণে, গর্বিত মুসলিম উম্মাহর লক্ষ লক্ষ অন্তরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। সকলের জন্য কুরবানী ও ঈদ উপলক্ষে, বিশেষ করে জিলহজ মাসের প্রথম দশক উপলক্ষে বিশেষ শুভ কামনা, রহমত ও বরকতের দোয়া। সকল মুসলিমের জন্য রইলো ভালোবাসা, সততা ও নিষ্ঠার উপহার। আপনারা ইবাদত-বন্দেগি এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার নৈকট্য অর্জনে এই সময়ে প্রাণপণ চেষ্টা করুন। জান্নাতুল ফিরদাউস ক্রয়ের জন্য এবং তথায় রহমান ও রাহীম আল্লাহর নৈকট্যের অধিকারী হবার জন্য কুরবানী করুন।

সকল মুসলিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলবো,

বড় হজের দৃশ্যগুলো, আমাদেরকে পুনরুত্থান দিবস ও হাশরের ময়দানে সৃষ্টিকুলের সমবেত হবার কাছাকাছি একটি শিল্পচিত্র প্রদর্শন করে। সেদিন বনি আদম সকলেই অভিন্ন বেশভূষায়, বিচার ও প্রতিদানের জন্য সমবেত হবেন। এজাতীয় দৃশ্য অবলোকনের পরও যে অন্তর নম্র ও বিনীত হয় না, তা বিনয় ও নম্রতা হতে বহু দূরে।

لله در ركائب سارت بهم تطوي قفار الشاسعات على الدجى

رحلوا الى البيت الحرام وقد شجا قلب المتيّم منهم ما قد شجا

نزلوا بباب لا يخيب نزيله وقلوبهم بين المخافة والرجاء

অর্থ: ওই সমস্ত বাহনের জন্য আল্লাহর প্রশংসা, যেগুলো তাদেরকে নিয়ে আঁধারের মাঝে বিশালতার প্রান্তরে পথ চলে।

তারা সম্মানিত ঘর অভিমুখে যাত্রা করে, ইয়াতীমের মতো তাদের হৃদয় নম্রতায় ছেয়ে যায়।

তারা এমন এক দরজায় উপস্থিত হয়, যেখান থেকে কেউ ব্যর্থ হয়ে ফেরে না; তাদের অন্তর ভয় ও আশার মাঝে দোলা খেতে থাকে।

 

হে গর্বিত উম্মাহ!

বড় হজ পালনের যে বিধান দীন ইসলামে এসেছে, তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হচ্ছে- এক কিবলার অভিমুখী সকলেই যেন ঈমানী ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয়। এই গণজমায়েতকে গোটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন বলে গণ্য করা হয়। মুসলিমদের মাঝে ঐক্য ও নৈকট্যের লক্ষ্য বাস্তবায়ন- হজের অন্যতম লক্ষ্য। মুসলিম জাতি গোষ্ঠীগুলোর মাঝে সাহায্য সহযোগিতার সুদৃঢ ধর্মীয় বন্ধন ও বিস্তৃত প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা- হজের তাৎপর্যপূর্ণ আরেকটি লক্ষ্য। আল্লাহ তাআলার বাণী—

وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا

“অর্থ: এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো”। (সূরা হুজুরাত – ৪৯:১৩)

অন্যত্র তিনি এরশাদ করেছেন:

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ

“অর্থ: মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই”। (সূরা হুজুরাত – ৪৯:১0)

নিশ্চয়ই এ এক বিরাট সম্মেলন। মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে তৈরিকৃত বাইতুল্লাহকে ঘিরে বৃহত্তর জনসমাগম। প্রত্যাশা এটাই ছিলো যে, এই বৃহত্তর গণসম্মেলনে মুসলিমরা বৎসরে একবার, একই প্লাটফর্মে কুশল বিনিময় করবে এবং সম্মিলিত ইসলামী ভবিষ্যৎ নির্মাণের আশা প্রকাশ করবে। এছাড়া যথাসম্ভব নিজেদের রাজনীতি সম্পর্কে একে অপরকে জানাবে। সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিবে। চিন্তা ভাবনা উপস্থাপন করবে। এভাবেই একটি যৌথ আগামী নির্মাণে তারা ঐক্যবদ্ধ হবে। স্বাভাবিকভাবে এমনটাই হবার কথা ছিলো।

আমরা দেখতে পাই, উপস্থিত লক্ষ লক্ষ জনতার মাঝে শুধু এক রবের ধ্বনি। একই দীনের উচ্চারণ এবং এক রাসূলের স্মরণ। সেখানে সকলেই এক কিবলা অভিমুখী, এক ঐতিহ্যের অনুসারী এবং অভিন্ন ইবাদতের রীতি পালনকারী। আর তা কেনই বা হবে না? তারাতো এক উম্মাহ। উম্মাতুন ওয়াহিদা…। আল্লাহ তাআলা তাঁর কুরআনে করীমে সত্যই বলেছেন

إِنَّ هَذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاعْبُدُونِ

অর্থ: “নিশ্চয়ই এই হল তোমাদের উম্মাহ, উম্মাতুন ওয়াহিদা (এক উম্মাহ)। আর আমি তোমাদের রব; অতএব তোমরা আমারই ইবাদত কর।” (সূরা আম্বিয়া – ২১:৯২)

মুসলিমদের গর্বিত সোনালী অতীতে, হজের সময়ে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী ও ভিন্ন ভিন্ন শাসক শাসিত অঞ্চল থেকে মুসলিমগণ বাইতুল্লায় উপস্থিত হতেন। তখন হাজীদের এই মহান গণজমায়েতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ ছিলো-পৃথিবীর সর্বত্র মুসলিমদের অবস্থার উন্নতি, অগ্রগতি নিয়ে আলাপ আলোচনা করা। বনি আদমের অভাবী ও দুর্বলদের সাহায্য সহায়তায় অবদান রাখা। কারণ এই গুরু দায়িত্ব পালন করা, সম্মিলিতভাবে গোটা উম্মাহর মাঝে দায়িত্ব বণ্টনের মাধ্যমেই সম্ভব হতে পারে। আধুনিক ক্রুসেডার-জায়নবাদী যৌথ শক্তির আগ্রাসনের মুখে হারামাইন শরীফাইনের পতন এবং এই পুণ্য ভূমি জায়নবাদী সৌদি রাজ পরিবারের কাছে ন্যস্ত করার মধ্য দিয়ে আল্লাহর ইচ্ছা বাস্তবায়িত হওয়ার পূর্বে, হজের সময়কার চিত্র এমনই ছিলো ।

হজ্জের আযান দিয়ে ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম- রুহ জগতে বনি আদমদের কে আহ্বানের এটিও একটি উদ্দেশ্য যে, তারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে নিজেদের এবং অন্যদের সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করবে। উম্মাহর দুর্বল শ্রেণীকে নিয়ে ভাববে।

কুরআনের এক আয়াতে الْبَائِسَ الْفَقِيرَ – তথা দুর্দশাগ্রস্ত, দরিদ্র শ্রেণির আলোচনা এসেছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহলের জুলুমের দ্বারা লক্ষ লক্ষ মানুষ এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত হয়ে আছে। আর এদের সংখ্যা দিনকে দিন কেবল বাড়ছেই। তাই আদম সন্তানদের জন্য উচিত হলো-এই মজলুমদের দুর্দশা কাটানোর জন্য চিন্তা-ভাবনা করবে। এমনিভাবে রব্বুল ইবাদের তাওহীদের সকল স্তর তারা প্রতিফলিত করবে। মূর্তির অপবিত্রতা থেকে বিরত থাকবে ও মিথ্যা কথা পরিহার করবে। তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী, রুকুকারী ও সিজদাকারীদের জন্য বাইতুল্লাহকে পবিত্র করবে।

হজের প্রতিটি দৃশ্য; শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একথাই জানান দেয়, এই উম্মাহ অচিরেই ঐক্যবদ্ধ হবে। আল্লাহর রজ্জু শক্ত হাতে আঁকড়ে ধরবে এবং সংঘবদ্ধ হবে। তাই কুরআন সুন্নাহতে জিহাদের সঙ্গে হজের কথা এসেছে। ইসলামের শত্রুদের অন্যায় স্বার্থ ধ্বংসের জন্য হজও জিহাদের ভূমিকা পালনকারী—যদি এই মহান ইসলামিক গণজমায়েতে বড় হজের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্যগুলো হাসিল হয়। যদি আমরা বলি, হজের বিধান ক্রুসেডার শক্তি এবং তাদের তাবেদারদের দৃষ্টিতে জিহাদের বিধানের পর ‘দ্বিতীয় স্তরের সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম’ হিসেবে চিহ্নিত, তাহলেও অত্যুক্তি হবে না। ইসলাম ও মুসলিমদের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য এবং সম্মান পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে- হজের বিধান ইসলামের দ্বিতীয় ফরয। এ কারণেই শত্রুপক্ষ নানাবিধ চক্রান্তের মাধ্যমে এই হজ বন্ধের অপপ্রয়াসে লিপ্ত, যেন আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থায় হজের কার্যকারিতা হারিয়ে যায়।

জাজিরাতুল আরব ভূখণ্ডে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনকারী ক্রুসেডার-জায়নবাদী যৌথশক্তি, তাবেদার গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীকে দিয়ে মুসলিম হাজীদেরকে এই শর্ত সাপেক্ষে হজের অনুমতি দেয় যে, হাজীগণ রাজনৈতিকভাবে অবরুদ্ধ থাকবেন- যেভাবে হারামাইন শরীফাইন তাদের তাবেদারদের হাতে অবরুদ্ধ। হাজীগণ ঈমানী সংঘবদ্ধতায়, হজের কিছু শরীয়া উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে, জাজিরাতুল আরবে ক্রুসেডার-জায়নবাদী আগ্রাসনের জন্য হুমকিমূলক কিছু করে বসেন কিনা-সেটাই তাদের ভয়। অন্যথায় যতক্ষণ পর্যন্ত এই হজকে ব্যবহার করে আর্থিকভাবে তারা লাভবান হবে এবং মুসলিম বিশ্বে ক্রুসেডার-জায়নবাদী যৌথ আগ্রাসন শক্তিশালী হবে, ততক্ষণ হজের অনুমতি দিতে তাদের কোন অসুবিধা নেই।

এরা মুসলিমদের অর্থ-সম্পদ শোষণ করে আমেরিকা ও তেল আবিবের ইহুদীবাদী ব্যাংকগুলোতে গচ্ছিত রাখছে। অথচ পেট্রোলের রাজস্বই, হাজীগণের সকল প্রয়োজন পূরণের জন্য যথেষ্ট ছিলো।

এমনিভাবে হজকে তারা গতিবিধি পর্যবেক্ষণ এবং গোপনীয়তা রেকর্ডের সুযোগ হিসেবে ধরে নেয়। চীন, মায়ানমার, ভারত এবং বাশার আল আসাদের মতো তাগুতগোষ্ঠীর নিপীড়নের শিকার দুর্বল মুসলিমদেরকে সনাক্ত করার জন্য, শত্রু এবং তাবেদার গোষ্ঠী বিগত কয়েক বছর যাবৎ হজের মৌসুমকে ফাঁদ হিসেবে  ব্যবহার করে আসছে। আর এখন হজের মৌসুমকে তারা বিনোদন, আমোদ-প্রমোদ, অনৈতিকতা বিস্তার এবং কুরআন অবতরণের ভূমি থেকে ইসলাম বিতাড়নের মৌসুম হিসেবে গ্রহণ করেছে।

এ সবকিছুই তেল আবিবে থাকা তাদের নিকৃষ্ট বন্ধুদেরকে এই ভূমিতে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। অথচ যুদ্ধের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই নিকৃষ্ট জাতিকে মদীনা মুনাওয়ারা থেকে এবং গোটা জাজিরাতুল আরব থেকে বিতাড়িত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

হে আমাদের প্রিয় উম্মাহ!

হজের আমলগুলো, সেই কাঁটাযুক্ত কঠিন পথ নিয়ে গভীর ভাবনায় ডুবে যাবার সুযোগ করে দিচ্ছে, যেপথে আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেঁটেছেন। তিনি তায়েফে গমন করেছেন। তায়েফবাসীর পাথরের আঘাতে তাঁর কদম মোবারক ফুলে গিয়েছিলো। অতঃপর একাকী অবস্থায় তিনি ফিরে এসেছেন।

যে স্থানে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিঠে উটের নাড়ি ভুঁড়ি চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো, সেখানে গিয়ে আপনারা ভাবুন!

আপনারা স্মরণ করুন, কেমন করে মুশরিকরা খুবাইব ইবনে আদি রাযিয়াল্লাহু আনহুকে শূলবিদ্ধ করেছিলো। অথচ তাঁর অপরাধ ছিলো এটাই -তিনি তাওহীদের দাবি রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। এই পথ প্রান্তর আজও সে ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছে। মক্কার তপ্ত মরুভূমিতে হযরত বেলাল রাযিয়াল্লাহু আনহুকে নির্যাতন করা হয়েছিলো। হযরত সুমাইয়া রাযিয়াল্লাহু আনহাকে শাস্তি দেয়া হয়েছিলো। ডজন ডজন মুসলিমকে ইসলামের কারণে নিপীড়ন করা হয়েছিলো! কিন্তু শাস্তির তিক্ততা তাঁদের ঈমানের মিষ্টতা কেবল বাড়িয়েই তুলেছিলো!

আপনারা স্মরণ করুন! কেমন করে কাফেররা আমাদের প্রিয় নবী এবং তাঁর নির্বাচিত সাহাবীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলো। সত্যের পথে তারা কত ত্যাগ-তিতিক্ষা স্বীকার করেছিলেন। আর কেমন ক্ষমার দৃষ্টান্ত উপস্থাপিত হয়েছিলো যখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন

اذهبوا انتم الطلقاء

“অর্থ: তোমরা চলে যাও, তোমরা মুক্ত”।

স্মরণ করুন হযরত হাজেরার যমযম, মাকামে ইবরাহীম এবং ইসমাইলের পাথরের কথা। স্মরণ করুন যেদিন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীকে বলেছিলেন:

مَا ظَنُّكَ يَا أَبَا بَكْرٍ بِاِثْنَيْنِ اَللهُ ثَالِثُهُمَا

অর্থ: “এমন দুজনের ব্যাপারে আপনার কি ধারণা যাদের তৃতীয় জন হলেন স্বয়ং আল্লাহ? অতএব চিন্তা করবেন না আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।”

তখন হযরত সিদ্দিক রাযিয়াল্লাহু আনহু সেই কথা সত্যায়ন করে সিদ্দিক হবার বাস্তব দৃষ্টান্ত পেশ করলেন।

সারা বিশ্বের হে মুসলিম উম্মাহ! হে আল্লাহর ঘরের হাজীগণ!

ঈদুল আযহা আমাদের মহান পূর্বসূরিদের জীবন, অর্থ-সম্পদ, পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি বিসর্জনের উপাখ্যান স্মরণ করিয়ে দেয়। নিশ্চয়ই ঈদ উল আযহা আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় ওই মহান পিতার কুরবানীর কথা, যিনি আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলার ডাকে সাড়া দিয়ে আপন পুত্রের কন্ঠে ছুরি বসিয়েছিলেন।

তাই হে তালবিয়া পাঠকারী জনসমাগম! হে অশ্রু বিসর্জনকারী চোখ! হে স্বচ্ছ পবিত্র চেহারার অধিকারীগণ! আল্লাহর যিকিরে সিক্ত জিহ্বার অধিকারীগণ! আল্লাহর ভয়ে ভীত, খুশু খুজুর অধিকারী হে পুণ্যাত্মাগণ! হে দুর্বলের সাহায্যকারী হস্তসমূহের মালিকগণ! হে সিজদায় নত ললাটের অধিকারীগণ!

এই মহান কুরবানীগুলো আপনারা স্মরণ করুন এবং এই আদর্শ বুকে ধারণ করুন। আপনারা আজকের মক্কায় আকাশচুম্বী ইমারত দেখতে পাবেন। বড় বড় দালান কোঠা গর্বিত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থেকে পবিত্র কাবা শরীফ ও হজ্জের আমলগুলোর মাহাত্ম্য ম্লান করে দিতে চাইছে। নিশ্চয়ই আপনারা তাগুত-গোষ্ঠীর জুলুম দেখতে পাবেন। আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত সম্মানিত মুজাহিদীন ও নির্বাচিত উলামায়ে কেরামের বন্দীদশা ও অসহায়ত্ব দেখতে পাবেন। তাগুত গোষ্ঠী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জাজিরাতুল আরবে যে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা আমদানি করেছে, সেগুলোও আপনারা দেখতে পাবেন। মুসলিমদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা দলীলের ভিত্তিতে সুস্পষ্ট কুফরী বলে বিবেচিত এমন বিষয়ও এখানে দেখতে পাবেন। তাই জালিম ও বিশৃঙ্খলাকারী এই তাগুত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আপনাদের দোয়ার একটি অংশ যেন অবশ্যই থাকে। আপনারা আল্লাহর কাছে তাঁর সম্মানিত ঘরে দাঁড়িয়ে দোয়া করবেন, তিনি যেন আমাদেরকে এবং গোটা মুসলিম উম্মাহকে সকল পাপাচার ও অন্যায় থেকে পবিত্র করেন। আমাদের অবস্থা এবং সকল মুসলিমের অবস্থা সংশোধন করে দেন। আমাদের সকল পুণ্যভূমি, কাফেরদের অপবিত্রতা থেকে মুক্ত করে দেন। আমাদের বন্দীদেরকে এবং সকল মুসলিম বন্দীদেরকে সৌদি রাজ পরিবারের কারাগার এবং অন্য সকল জালিমের কারাগার থেকে মুক্ত করে দেন! তিনি যেন ইসলাম ও মুসলিমদেরকে সাহায্য করেন! আগ্রাসী জায়োনিস্ট, ক্রুসেডার ও মুরতাদ শক্তির বিরুদ্ধে আমাদেরকে সুস্পষ্ট বিজয় দান করেন! আমীন!

হারামাইনের দেশের হে ভাইগণ!

রহমানের মেহমানগণ আপনাদের কাছে এসেছেন। তাই তাদের সেবা যত্ন, সম্মান, মর্যাদা রক্ষা এবং সাহায্য সহযোগিতার ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করুন। আপনারাও তাদের পরিবার হয়ে যান। আপনাদের সহযোগিতায় হজের আমল যেন তাদের জন্য সহজ হয়। তাদের সঙ্গে আপনারা তেমন সদাচরণ করুন, যেমনটা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জাজিরাতুল আরবের অধিবাসীদের ব্যাপারে প্রসিদ্ধ। কারণ আপনারা যেখানেই থাকেন, সেখানেই তাদের সামনে ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করেন।

হে রহমানের মেহমানগণ!

জেনে রাখুন আপনারা আল্লাহর ঘর এবং তাঁর পবিত্র স্থানে অবতরণ করেছেন। আর কেউ কোন ঘরে প্রবেশ করলে ঘরের মালিকের ইচ্ছা ও নিয়ম নীতির অধীনে থাকেন। স্মরণে রাখুন, হজের মাঝে কোন অশ্লীলতা, পাপাচার এবং ঝগড়া বিবাদ নেই। আপনারা আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখুন—

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الَّذِي جَعَلْنَاهُ لِلنَّاسِ سَوَاءً الْعَاكِفُ فِيهِ وَالْبَادِ ۚ وَمَن يُرِدْ فِيهِ بِإِلْحَادٍ بِظُلْمٍ نُّذِقْهُ مِنْ عَذَابٍ أَلِيمٍ

“অর্থ: যারা কুফর করে ও আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই মসজিদে হারাম থেকে বাধা দেয়, যাকে আমি প্রস্তুত করেছি স্থানীয় ও বহিরাগত সকল মানুষের জন্যে সমভাবে এবং যে মসজিদে হারামে অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী কাজ করার ইচ্ছা করে, আমি তাদেরকে যন্ত্রাণাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাবো।” (সূরা হাজ – ২২:২৫)

আল্লাহ আপনাদের হজ কবুল করুন এবং আপনাদের প্রচেষ্টার যথাযথ প্রতিদান দান করুন! আল্লাহ আমাদের এবং আপনাদের সকল সৎ কর্ম কবুল করে নিন!

تقبل الله منا ومنكم صالح الاعمال

হৃদয়ে আঁকা কাবার ছবি ও বাইতুল্লাহর দিকে তাকিয়ে বলবো, আমরা তাওহীদের শাহাদাতের দাবি পূরণে বঞ্চিত হয়েছি। (তাওহীদের সাক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল)। কারণ আমরা বাইতুল্লাহর জবরদখলকারীদেরকে সন্তুষ্ট করার পরিবর্তে বাইতুল্লাহ’র রবকে সন্তুষ্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপনারা রবের কাছে আমাদের পক্ষে সেদিন সাক্ষী হবেন, যেদিন মানবজাতি রাব্বুল আলামীনের সামনে দণ্ডায়মান হবে।

হে বায়তুল্লাহর প্রভু! আমরা আপনাকে সাক্ষী বানাচ্ছি। সৌদি রাজপরিবারের লুটেরা দল এবং তাদের মনিব আমেরিকা ও ইহুদীরা আমাদেরকে আপনার হারাম শরীফ জিয়ারত থেকে বঞ্চিত করেছে। বায়তুল্লাহ তাওয়াফের সুযোগ কেড়ে নিয়েছে। আপনার ঘরে সালাত আদায়, আপনার কাছে দুআ, আপনার ঘরের কোণে বসে আপনাকে স্মরণ- সব কিছুর সুযোগ তারা কেড়ে নিয়েছে।

হে আল্লাহ! আমাদের এই বঞ্চনা যেন তাদের উপর অভিশাপ হয়! আপনি তাদের থেকে মুসলিমদের প্রতিশোধ গ্রহণ করুন। যেমনিভাবে আপনার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এবং তাঁর সম্মানিত সাহাবীদেরকে সুযোগ করে দিয়েছিলেন, তেমনিভাবে আমাদেরকেও নিরাপদে, বিজয়ী অবস্থায় আপনার ঘরে প্রবেশের সুযোগ করে দিন!

হে আল্লাহ আপনার কুরআনের বাণীর প্রতিফলন আমাদেরকেও একবার দেখিয়ে দিন—

لَّقَدْ صَدَقَ اللَّهُ رَسُولَهُ الرُّؤْيَا بِالْحَقِّ ۖ لَتَدْخُلُنَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ إِن شَاءَ اللَّهُ آمِنِينَ مُحَلِّقِينَ رُءُوسَكُمْ وَمُقَصِّرِينَ لَا تَخَافُونَ ۖ فَعَلِمَ مَا لَمْ تَعْلَمُوا فَجَعَلَ مِن دُونِ ذَٰلِكَ فَتْحًا قَرِيبًا

“অর্থ: আল্লাহ তাঁর রাসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আল্লাহ চান তো তোমরা অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে, মস্তক মুণ্ডিত অবস্থায় এবং কেশ কর্তিত অবস্থায়। তোমরা কাউকে ভয় করবে না। অতঃপর তিনি জানেন, যা তোমরা জানো না। এছাড়াও তিনি দিয়েছেন তোমাদেরকে একটি আসন্ন বিজয়”। (সূরা ফাতাহ – ৪৮:২৭)

وآخر دعوانا ان الحمد لله رب العالمين

 

জিলহজ্ব. ১৪৪৪ হিজরি
জুন, ২০২৩ ইংরেজী

 

 

*********

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =

Back to top button