অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়াআর্কাইভইলম ও আত্মশুদ্ধিনির্বাচিতবই ও রিসালাহ [আন নাসর]বিষয়মিডিয়াশাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

ধারাবাহিক নতুন দাওয়াহ সিরিজ | আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ দ্বিতীয় পর্ব – প্রথম মজলিস | শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ

مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media

تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents

الترجمة البنغالية
বাংলা ডাবিং
Bengali Translation

بعنوان:
শিরোনাম:
Titled

سلسلة دعوية: بعنوان معا إلى الله الحلقة الثانية -الجزء الأول

ধারাবাহিক নতুন দাওয়াহ সিরিজ
আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ
দ্বিতীয় পর্ব – প্রথম মজলিস

The Awareness Series – 2 (Part Two):
Together Towards Allah

للشيخ أيمن الظواهري حفظه الله
শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ
By Sheikh Ayman Az Zawahiri Hafizahullah

 

 

 

 

 

 

للمشاهدة المباشرة والتحميل
সরাসরি দেখুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Viewing and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/allahor_ostitter_proman-2-1
লিংক-২ : https://mediagram.me/6fb483db7d24446b
লিংক-৩ : https://noteshare.id/AHtZoBI
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20220212…ter_proman-2-1
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20220211…b483db7d24446b
লিংক-৬ : https://web.archive.org/web/20220212…are.id/AHtZoBI

روابط الجودة الاصلية
FULL HD 1080 (556.9 MB)
মূল রেজুলেশন [৫৫৬.৯ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/BT9ycYMbFgpCsWx
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kd8121c6d416b4adcacbadbe841fd8ea2
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=p1w3y3w5n6
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/f702a3d8-b8c4-4b50-8de2-979676ecea37/cbf26bed3fadc683406a3a028d2e35e4a48d23477c19112240664803508df96b

روابط الجودة العالية
HQ 1080 (366.4 MB)
১০৮০ রেজুলেশন [৩৬৬.৪ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/zEJoaEdXH5zsr7m
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman%20HQ.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k00e87183b4994a999c428f4693a06b41
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=h8n4i2l6q6
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/1c4361a2-4034-470a-a27f-fd7ff3de091d/815f65265c9aa2550b8d65c50a48acace7c38207b52b77a4acdcc39491b1c555

روابط الجودة المتوسطة
MQ 720 (153.6 MB)
৭২০ রেজুলেশন [১৫৩.৬ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/BQxDJLXeNQHe4aY
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman%20MQ.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kfb4a2ea40ee5494096438729c7765a7a
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=v4y9a6t3b1
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/23ac6ebc-be84-4d82-be37-e62d6c077cbf/272238c284cb188275a0871b683e790a7b3f8365a4257fa80c80c72315bc379c

روابط الجودة المنخفضة
LQ 360 (62.6 MB)
৩৬০ রেজুলেশন [৬২.৬ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/paT9WCxctfZiC8p
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman%20LQ.mp4
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k1f44051372f24d9ea7a01c45aba2498b
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=g4x7x8n7k2
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/05d0ed6d-aa93-4352-9a71-0500c9348626/1dd0a0d54e6b32448d1eb76c41377c18addfe437de10c8c5764961e7dabfe197

روابط جودة الجوال
Mobile Qoality (58.1MB)
3GP রেজুলেশন [৫৮.১ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/eb7HsALJjddSAN4
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman.3gp
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7kf8239a2ff925496f9f06eb16a15f76d6
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=b5p3r6e5h2
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/f2be6229-d6fc-4d53-9662-27da5233c1a2/001d29a6ba010c6c36ff75ed7c51e3c2e42fae70f540c45e85e9e015e79ae78d

 

روابط بي دي اب
PDF (590 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৫৯০ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/QrcZScDSBGBZREs
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman.pdf
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k56ba334d061042588e57fd1ec2da4bc1
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=m8k8g8z6k4
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/3344dc3e-2b60-455f-8749-97eaa0ddd1df/edb9c03fb2b6229e8290ed2f8855797b554b0c4530011f6c4ab12f09a987bf6c

روابط ورد
Word (345 KB)
ওয়ার্ড [৩৪৫ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/bRzdawDeiwbpPww
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman.docx
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k8cc796d563244b1e988c986494c2eab9
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=l5t3y6h0j2
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/f568019f-c6a4-478d-a8b6-8b40868726bd/deb7eef6a14799466d3d8684b40141fdd536734a23cdc0a37aec22bf3234507f

روابط الغلاف- ١
book cover [888 KB] বুক কভার ডাউনলোড করুন [৮৮৮ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/oSdBDQCQ9D79ir5
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman%20Cover.jpg
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k3531efe967dd437180ad02f4874fa493
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=r3p4q0t8x3
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/ae116195-a420-4795-b599-e814c3f18406/caa82cea0634d770d91f13f8e3ac7f9b2e76a55cad45842f4f2b7b7bac7bcabb

روابط الغلاف- ٢
Banner [818 KB] ব্যানার ডাউনলোড করুন [৮১৮ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/SAN6S6dJcgfiA57
লিংক-২ : https://archive.org/download/allahorostitterproman/Allahor%20ostitter%20proman%20banner.jpg
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/d7t7k0edccea390ac4166aa4546d142b06584
লিংক-৪ : https://www.idrive.com/idrive/sh/sh?k=a1x3g9b3t6
লিংক-৫ : https://drive.internxt.com/sh/file/04c54e9e-8998-4375-9cd8-923f558e8b00/48d9750b2b9cd1d5b621fee16c2b4c66dc9c44534a962da7914c489f50f32d20

 

******

 

 

 

 

ধারাবাহিক নতুন দাওয়াহ সিরিজ

আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ

দ্বিতীয় পর্ব – ‍প্রথম মজলিস

শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ

 

মূল প্রকাশনা সম্পর্কিত কিছু তথ্য

মূল নাম:

سلسلة دعوية: بعنوان معا إلى الله الحلقة الثانية -الجزء الأول

ভিডিও দৈর্ঘ্য: 22:33 মিনিট

প্রকাশের তারিখ: রমজান ১৪৪১ হিজরি, মে ২০২০ ঈসায়ী।

প্রকাশক: আস সাহাব মিডিয়া

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

দ্বিতীয় পর্ব – ‍প্রথম মজলিস

বিশ্বের আনাচে কানাচে অবস্থানরত আমার মুসলিম ভাইয়েরা!

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

এই সিরিজের প্রথম পর্বে আল্লাহ তা’আলার অস্তিত্ব অস্বীকারকারী নাস্তিকদের মিথ্যা প্রমাণ করতে যৌক্তিক প্রমাণগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করেছিলাম। এ মজলিসে বাকি অংশ খণ্ডনের আলোচনা থাকবে। আল্লাহ চান তো এই প্রসঙ্গে আমি এখানে স্বাভাবিক প্রমাণ, আল্লাহর সৃষ্টি এবং ওহী নির্ভর বাদানুবাদগুলো সংক্ষেপে খণ্ডন করব এবং প্রমাণ করব।

আল্লাহর সৃষ্টিগত প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে বলা যায়, এটিই আল্লাহর অস্তিত্বের  সবচেয়ে মজবুত ও শক্তিশালী দলিল। প্রকৃতপক্ষে এটা যৌক্তিক দলিলের চেয়েও শক্তিশালী। কারণ সৃষ্টিগত ভাবেই মানুষের মনে এ দলিল প্রোথিত থাকে। পক্ষান্তরে, যৌক্তিক কারণগুলো কারও মনে উদ্ভব হতে পারে বা যারা আল্লাহর অস্তিত্বকে খণ্ডন করার চেষ্টা করেছেন তাদের মনে উত্থাপিত সন্দেহগুলির সমাধানের জন্য এই যৌক্তিক কারণগুলো প্রয়োজন হতে পারে। মহাগ্রন্থ আল কুরআনই আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে, রাসূলগণ তাঁদের গোত্রীয় কাফেরদের বিরুদ্ধে এই যৌক্তিক দলিলই পেশ করেছিলেন।

যেমন ইরশাদ হয়েছে,

أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَبَأُ الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ قَوْمِ نُوحٍ وَعَادٍ وَثَمُودَ ۛ وَالَّذِينَ مِن بَعْدِهِمْ ۛ لَا يَعْلَمُهُمْ إِلَّا اللَّهُ ۚ جَاءَتْهُمْ رُسُلُهُم بِالْبَيِّنَاتِ فَرَدُّوا أَيْدِيَهُمْ فِي أَفْوَاهِهِمْ وَقَالُوا إِنَّا كَفَرْنَا بِمَا أُرْسِلْتُم بِهِ وَإِنَّا لَفِي شَكٍّ مِّمَّا تَدْعُونَنَا إِلَيْهِ مُرِيبٍ﴿﴾قَالَتْ رُسُلُهُمْ أَفِي اللَّهِ شَكٌّ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ

“অর্থঃ তোমাদের কাছে কি তোমাদের পূর্ববর্তী কওমে নূহ, আদ ও সামুদের এবং তাদের পরবর্তীদের খবর পৌছেনি? তাদের বিষয়ে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। তাদের কাছে তাদের পয়গম্বর প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করেন। অতঃপর তারা নিজেদের হাত নিজেদের মুখে রেখে দিয়েছে এবং বলেছে, যা কিছু সহ তোমাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে, আমরা তা মানি না এবং যে পথের দিকে তোমরা আমাদেরকে দাওয়াত দাও, সে সম্পর্কে আমাদের মনে সন্দেহ আছে, যা আমাদেরকে উৎকণ্ঠায় ফেলে রেখেছে। (9) তাদের পয়গম্বরগণ বলেছিলেনঃ আল্লাহ সম্পর্কে কি সন্দেহ আছে, যিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের স্রষ্টা? (সূরা ইবরাহিম ১৪:৯-১০)

আল্লাহ আরও ইরশাদ করেন ,

وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ ۖ فَأَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ ﴿﴾ اللَّهُ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَيَقْدِرُ لَهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴿﴾وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّن نَّزَّلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَحْيَا بِهِ الْأَرْضَ مِن بَعْدِ مَوْتِهَا لَيَقُولُنَّ اللَّهُ ۚ قُلِ الْحَمْدُ لِلَّهِ ۚ بَلْ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ ﴿﴾

“অর্থঃ যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে নভোমণ্ডল ও ভূ-মণ্ডল সৃষ্টি করেছে, চন্দ্র ও সূর্যকে কর্মে নিয়োজিত করেছে? তবে তারা অবশ্যই বলবে আল্লাহ। তাহলে তারা কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে? (61) আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযিক প্রশস্ত করে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা হ্রাস করেন। নিশ্চয়, আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (62) যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করে, অতঃপর তা দ্বারা মৃত্তিকাকে উহার মৃত হওয়ার পর সঞ্জীবিত করে? তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। বলুন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা বোঝে না”। (সূরা আনকাবুত ২৯:৬১-৬৩)

অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন,

وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَهُمْ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ ۖ فَأَنَّىٰ يُؤْفَكُونَ

“অর্থঃ যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ, অতঃপর তারা কোথায় ফিরে যাচ্ছে?”(সূরা আয-যুখরুফ ৪৩:৮৭)

স্রষ্টার সৃষ্টির দ্বারা চিন্তা করে, স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ দেওয়া – ঈমানের একটি বড় স্তম্ভ। এজন্য নিচের এই বস্তুগুলো নিয়ে চিন্তা করাটাও একজন ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ। যেমন – মানুষের আঙ্গুলের ছাপ, চোখ, প্রত্যেক মানুষের সুনির্দিষ্ট ডিএনএ, আণুবীক্ষণিক কোষের গঠন এবং বিশ্বজগতের এত বড় বড় ছায়াপথ ইত্যাদি। শুধু হীনতর কাফেররাই এই স্পষ্ট প্রমাণসমূহ অস্বীকার করতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন,

اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَأَنزَلَ مِنَ السَّمَاءِ مَاءً فَأَخْرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرَاتِ رِزْقًا لَّكُمْ ۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ الْفُلْكَ لِتَجْرِيَ فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ ۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ الْأَنْهَارَ﴿﴾وَسَخَّرَ لَكُمُ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ دَائِبَيْنِ ۖ وَسَخَّرَ لَكُمُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ﴿﴾

“অর্থঃ তিনিই আল্লাহ, যিনি আকাশসমূহ এবং ভূমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন। যিনি আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেন অতঃপর তা দ্বারা তোমাদের জন্য ফলফলাদি রিযিক স্বরূপ উৎপন্ন করেন। যিনি নৌকাকে তোমাদের আজ্ঞাবহ করেছেন, যেন তাঁর আদেশে এটি সমুদ্রে চলাচল করে এবং তিনিই নদীসমূহ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করে রেখেছেন। চন্দ্র সূর্যকে তোমাদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন সর্বদা এক নিয়মে। এবং রাত দিনকে তোমার সেবায় নিয়োজিত করেছেন। যে সকল বস্তু তোমরা চেয়েছ, তার প্রতিটি বস্তুই তোমাদেরকে তিনি দান করেছেন। যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা করো তবে তা গণনা করে শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় মানুষ বড় জালেম, অকৃতজ্ঞ”। (সূরা ইবরাহিম ১৪:৩২-৩৩)

ওহীর উপর ভিত্তি করে বলা যায়, আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর একটি ত্রুটিহীন কিতাব অবতীর্ণ করেছেন যেটি আজও পর্যন্ত মানুষকে চ্যালেঞ্জ করে যাচ্ছে— তার মত একটি কুরআন আনার ব্যাপারে। কিন্তু মানুষ এখনো তার সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারেনি।

এই কিতাবে অনেক নিদর্শন এবং বিস্ময়কর তথ্য আছে, যা এর মৌলিকতার এবং ঐশ্বরিক উৎপত্তির একটি প্রমাণ। যেমন: কুরআন আমাদেরকে পূর্বেই বলেছিল যে, রোমানরা পরাজিত হওয়ার পর আবারো পারস্যের উপর জয় লাভ করবে। এ ব্যাপারে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু কুরাইশদের সাথে বাজি ধরেছিলেন। এটা একটা বহুল প্রসিদ্ধ ঘটনা যেটির সত্যতা অস্বীকার করা সম্ভব হয়নি।

আরেকটি উদাহরণ, কুরআন বলছে আবু জাহেল এবং তার স্ত্রী অবশ্যই জাহান্নামে যাবে। কারণ তারা কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে। আবু জাহেল ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দিয়ে কুরআনের সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারত। কিন্তু তার পক্ষে এটা সম্ভব হয়ে উঠেনি। কুরআনের সংবাদই বাস্তবে পরিণত হয়েছে।

একইভাবে হাদিসের মধ্যেও অসংখ্য বিস্ময়কর বাণী এসেছে। যেমন সহিহ বুখারি, মুসলিম ও অন্যান্য হাদিসের গ্রন্থে এসেছে –

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ الأَعْرَجِ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوا التُّرْكَ صِغَارَ الأَعْيُنِ، حُمْرَ الْوُجُوهِ، ذُلْفَ الأُنُوفِ، كَأَنَّ وُجُوهَهُمُ الْمَجَانُّ الْمُطَرَّقَةُ، وَلاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوا قَوْمًا نِعَالُهُمُ الشَّعَرُ ‏‏

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ততদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন না তোমরা এমন তুর্কি জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যাদের চোখ ছোট, চেহারা লাল, নাক চ্যাপ্টা এবং মুখমণ্ডল পেটানো চামড়ার ঢালের ন্যায়। আর ততদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন না তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যাদের জুতা হবে পশমের”। (সহিহ বুখারি – ২২২৭/২৯২৮)

হিজরি সপ্তম শতকে তাতারদের বিরুদ্ধে মুসলিমদের যুদ্ধের মাধ্যমে এ বাণীর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। অথচ হাদিসের গ্রন্থগুলো লেখা হয়েছে হিজরি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শতকের মধ্যবর্তী সময়ে। আর এই গ্রন্থগুলো নিখুঁতভাবে সত্যায়িত এবং সংরক্ষিত। কেউই এই গ্রন্থগুলোর সত্যতা অস্বীকার করতে পারে না এবং এই হাদিসগুলোর ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করতে পারে না। এগুলোর অনেক মূল কপি এখনও বিদ্যমান। এই মূলকপির অনেকগুলো সপ্তম শতকের আগে থেকেই বিদ্যমান আছে। তাছাড়া, এই গ্রন্থগুলো জালকরণ বা সপ্তম হিজরির পরের বলে কোন অপবাদ আরোপ করা কারো পক্ষে সম্ভব হয়নি।

আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে, সত্য এবং সত্যায়িত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন,

আবু ক্বাবিল বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বলতে শুনেছি,

بَيْنَمَا نَحْنُ حَوْلَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَكْتُبُ إِذْ سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الْمَدِينَتَيْنِ تُفْتَحُ أَوَّلاً قُسْطَنْطِينِيَّةُ أَوْ رُومِيَّةَُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَدِينَةُ هِرَقْلَ تُفْتَحُ أَوَّلاً يَعْنِى قُسْطَنْطِينِيَّةَ

‘আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাশে বসে লিখতাম। (একদা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করা হ’ল, দু’শহরের কোন শহরটি সর্বপ্রথম বিজিত হবে, কনস্টান্টিনোপল, না-কি রোম? তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, না, বরং হিরাকল (হিরাক্লিয়াস)-এর শহর (কনস্টান্টিনোপল) সর্বপ্রথম বিজিত হবে। (আহমাদ হা/৬৬৪৫; সহীহাহ হা/৪; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১০৩৮৫)

আর এটা ঘটেছে। এখন আমরা রোম বিজয়ের অপেক্ষায় আছি ইনশা আল্লাহ। আরেকটি উদাহরণ, যা বুখারি মুসলিমসহ অন্যান্য কিতাবে এসেছে,

لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَخْرُجَ نَارٌ مِنْ أَرْضِ الْحِجَازِ تُضِيءُ أَعْنَاقَ الْإِبِلِ بِبُصْرَى

কেয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না হেজাজ থেকে একটি অগ্নি বের হবে। যার আলোতে বসরা শহরের উটের গর্দানগুলো আলোকিত হবে। (বুখারি, হাদিস : ১০৫৪)

৬৫৪ হিজরিতে এ আগুন বাস্তবে বের হয়েছে। ইবনে কাসির ও আবু শামাহসহ অন্যান্য ঐতিহাসিকগণ এ ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করেছেন।

আরেকটি উদাহরণ, ইমাম তাবরানির মু’জামুল আওসাত গ্রন্থে এবং আল্লামা হাফেজ রাযির ‘তারিখে সানআ’ গ্রন্থে ওয়াবার ইবনে ইয়াহনুস রাদিয়াল্লাহু আনহু’র একটি হাদিস এসেছে –

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়াবার ইবনে ইয়াহনুস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে সানআর গভর্নর করে প্রেরণ করেন। তাঁকে সেখানে একটি মসজিদ নিমার্ণের আদেশ করেন। যার অবস্থান গামদান প্রাসাদের মূলে অবস্থিত বাযান বাগানে। তার সামনে বরাবর অবস্থিত আছে দীন পাহাড়।

রাসূলুল্লাহর নির্দেশনা অনুসারে তৈরি করা মসজিদের কেবলা পরিপূর্ণভাবে কা’বায় গিয়ে মিলিত হয়। সেই যুগে এমন সূক্ষ্মতার সাথে ও পরিপূর্ণ ভাবে নির্দেশনার বাস্তবায়ন ও সত্যতা প্রমাণ করা – একমাত্র ত্রুটিহীন ওহী ছাড়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। শাইখ আব্দুল মাজিদ যানদানীকে আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দান করুন। তিনি এই মোজেজাকে ভিডিও ক্লিপে ধারণ করেছেন।

“এটি হচ্ছে গ্র্যান্ড মসজিদ যেটির পিছনের দিকে সেই মসজিদটি অবস্থিত যা নির্মাণের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই রেখাটি সানআর মসজিদের কেবলা থেকে চলে গেল দীন পাহাড়ের চূড়ার দিকে। রেখাটি দীন পাহাড়ের চূড়ার দিকে চলতে থাকল। এই হচ্ছে দীন পাহাড়। রেখাটি পাহাড়ের উপর দিয়ে অতিক্রম করছে এবং উত্তর দিক দিয়ে চলে যাচ্ছে, পশ্চিম উত্তর দিক দিয়ে। রেখাটি ইয়েমেনের সীমানা অতিক্রম করেছে। এ হচ্ছে মক্কা মোকাররামা। এ হচ্ছে হারাম শরিফ। এই রেখা কা’বার মধ্যমণিতে পৌঁছে গেল”।

এই হচ্ছে অসংখ্য মোজেজা থেকে সামান্য কিছু উদাহরণ – যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ওহী আকারে এসেছে। কোন নাস্তিক তার জবাব দিতে পারবে না। অতএব, আল্লাহ সত্য বলেছেন,

سَنُرِيهِمْ آيَاتِنَا فِي الْآفَاقِ وَفِي أَنفُسِهِمْ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ الْحَقُّ ۗ أَوَلَمْ يَكْفِ بِرَبِّكَ أَنَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ

“অর্থঃ এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, এ কোরআন সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়?” (সূরা ফুসসিলাত ৪১:৫৩)

এই সংক্ষিপ্ত জবাবের মাধ্যমে অস্বীকারকারী নাস্তিকরা যে ধারণাসমূহ পোষণ করে তার খণ্ডনমূলক আলোচনা এখানে শেষ করছি। এখন প্রথম মজলিশের দ্বিতীয় অংশ শুরু করতে যাচ্ছি যেটিতে বস্তুবাদী নাস্তিকরা যা বিশ্বাস করে – সেবিষয়ে আলোচনা করব।

এই বিষয়টির গভীরে প্রবেশ করার পূর্বে নাস্তিক্যবাদের কিছু প্রধান প্রয়োগক্ষেত্রের দিকে সংক্ষিপ্তাকারে ইঙ্গিত করতে চাই।

এক. বস্তুকেন্দ্রীক অদৃষ্টবাদী।

দুই. নৈতিক আপেক্ষিকতা।

তিন. উত্তর আধুনিকতাবাদ ও চূড়ান্ত নাস্তিক্যবাদী।

বস্তুকেন্দ্রীক অদৃষ্টবাদীদের দর্শন:

তাদের বিশ্বাস জগতে যা কিছু আছে সবকিছুই রাসায়নিক এবং শক্তির পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া মাত্র, যা আচার-ব্যবহার, কথা-বার্তা, চিন্তা-চেতনা কিংবা গ্রহ-নক্ষত্রের গতি, ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

এই মতবাদের প্রবক্তাদের মতে, এ সকল চালচলন, কথা ও কাজ সংগঠিত হওয়ার পূর্বেই নির্দিষ্ট বস্তুবাদী নিয়ম-কানুনের ভিত্তিতে এগুলো অনুমান বা ভবিষ্যতবাণী করা সম্ভব ।

এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে তারা যুক্তি দেখায় যে, এই অস্তিত্বের মাঝে বস্তু ছাড়া আর কোন কিছুই মূল্যবান নয়। কারণ সকল চিন্তা, বিশ্বাস ও কল্পনা কেবল বস্তুগত রাসায়নিক ও পদার্থগত পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া মাত্র।

সুতরাং, নৈতিকতার ভিত্তিতে সবকিছুই এখানে সমান। এখানে সত্য বা মিথ্যা বলে কিছু নেই। এখানে যা কিছু ঘটবে সবকিছুই বাস্তবতা হিসেবে মেনে নিতে হবে কোনরকম সত্য বা মিথ্যা ধারণা ব্যতিরেকেই। কারণ বস্তুবাদী পৃথিবীতে সত্য বা মিথ্যার কোন মাপকাঠি নেই।

তারা বলে যে, বস্তুবাদী জগত সবকিছুকে পরিচালিত করছে এবং প্রত্যেক বস্তুর জন্য নিয়ম আরোপ করছে। সুতরাং বস্তুগত পৃথিবী থেকে মানুষেরও পৃথক হওয়ার কোন স্বাধীনতা বা সুযোগ নেই। কারণ মানুষও বস্তুবাদী বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। এটিই হল বস্তুবাদী পৃথিবী যার বাস্তব ও বৈজ্ঞানিক নিয়ম-কানুন সকল কিছুকে শাসন করে।

আর মানুষ, এডাম স্মিথের বক্তব্য অনুসারে পদার্থের সমষ্টি এবং একটি ‘পণ্য’। এই ‘পণ্য’ তার বাজার নীতি অনুসারে পরিচালিত। অথবা মার্কসের মতানুসারে,  মানুষের ভাগ্য ‘অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণবাদ’ দ্বারা নির্ধারিত। আরও হীনতর হলে, সে হবে সিগমন্ড ফ্রয়েড এর আবিষ্কৃত মানব। ফ্রয়েডের মতে মানুষ তার নিজের যৌন লালসা এবং গ্রন্থি দ্বারা উৎপন্ন হরমোন দ্বারা পরিচালিত একটি বস্তু।

সুতরাং বস্তুবাদী দর্শনে মানুষ হচ্ছে কীট-পতঙ্গ, গাছ এবং পাথরের মতই একটি বস্তু। শুধু গঠনগত দিক থেকে এগুলো মানুষ থেকে ভিন্ন। কিন্তু সবশেষে কোনোরকম পার্থক্য ছাড়াই সবগুলোর উপরই বস্তুবাদী নীতি সমানভাবে প্রযোজ্য হয়।

অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে – বস্তুবাদী প্রাকৃতিক নীতিতে মানুষ কেবলই একটি বস্তু, যেটির কোন অস্তিত্ব নেই । মানুষের বিবেকের কোন কার্যকারিতা নেই। জগত সঞ্চলনের জন্য তার অস্তিত্বের কোন প্রয়োজন নেই। বরং বিবেক, চিন্তা ও অনুভূতি ইত্যাদি এগুলো হচ্ছে – বস্তুর সঞ্চলন ও প্রতিক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।

সুতরাং, বস্তুবাদী দর্শনে ভাল-মন্দ, ন্যায়বিচার-অবিচার, সম্মান-অসম্মান, নৈতিকতা বা অনৈতিকতা বলতে কিছু নেই। এ সবগুলোই বস্তুবাদী নিয়ম কানুনের কিছু পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া মাত্র।

কার্ল মার্কস যখন ‘পুঁজিবাদের’ উপর মেহনতি মানুষের অনিবার্য বিজয়ের আলোচনা করত তখন তার আলোচনায় সে অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে নিপীড়িতদের সাহায্য করার কথা বলত না। বরং সে এটিকে ‘দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ তত্ত্বের’ আলোকে ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ার ‘চূড়ান্ত সীমা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। সে বিশ্বাস করতো যে, অচিরেই পুঁজিবাদী সমাজ রূপান্তরিত হবে সমাজতান্ত্রিক সমাজে। শেষে কমিউনিজম সমাজে রূপান্তরিত হবে এবং এর মাধ্যমেই ইতিহাসের পরিসমাপ্তি ঘটবে।

আলহামদু লিল্লাহ, আমরা তাদের ইতিহাসের সমাপ্তি প্রত্যক্ষ করেছি। তারা তো এখন সকলেই পুঁজিবাদের ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছে যা মার্কসের কল্পনা করা বিষয়ের চেয়ে অনেক বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং নির্মম।

একটা কথা বলি – দাগেস্তানে যখন আমি কারাগারে ছিলাম তখন বন্দীরা আমাকে বলত যে, এখানে প্রত্যেক মামলার একটা মূল্য আছে। যখন মূল্য পরিশোধ করা হয় অথবা উপযুক্ত ঘুষ দেওয়া হয় তখন বেকসুর খালাস পাওয়া যায়। অন্যথায় কারাগারে ধুকে ধুকে মরতে হয়। একবার আমাদের মামলার উকিল— যে ঘুষখোর দলের একজন— সে আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘তোমরা কি জান, বিচারক কেন এক এজলাস থেকে আরেক এজলাস পর্যন্ত তোমাদের রায় বিলম্বিত করছে? কারণ তোমাদের লোকেরা এখন পর্যন্ত ঘুষ আদায় করেনি। সুতরাং তাদের সাথে কথা বল, যেন সুযোগ শেষ হওয়ার আগেই একটা ব্যবস্থা করে’।

এরপর যখন ঘুষ আদায় করা হল তখন দলের প্রত্যেকই কমিশন অনুযায়ী তার ভাগ নিয়ে নিল। মামলা দায়েরকারীদের দাবি ছিল তিন বছর সাজা দেয়া হোক। সেখানে আমরা কারাদণ্ড পেলাম ছয় মাসের। এমনকি মামলা দায়েরকারীও শাস্তি কমানোর ব্যাপারে আপত্তি করেনি। কারণ সেও টাকার ভাগ পেয়েছিল।

একদিন আমাদের এক কারাসাথী বিষণ্ণ মনে কোর্ট থেকে ফিরে এলো। বিচারক তাকে পঁচিশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। আমি তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য তার কাছে গেলাম। তখন সে আমাকে চুপে চুপে বলল, ‘জানেন, কেন আমাকে এমন সাজা দিল?’ আমি বললাম, ‘কেন?’ সে বলল, ‘আমার ভাই বিচারককে ঘুষ দিতে দেরি করেছে, তাই।’

আল্লাহর অনুগ্রহে সমাজবাদের মত অচিরেই আমরা পুঁজিবাদেরও সমাপ্তি প্রত্যক্ষ করব ইনশা আল্লাহ।

ফরাসি দার্শনিক মিশেল অনফ্রে (Michel Onfray):

“আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সভ্যতা ভেঙ্গে পড়ছে। এটা ভালো হচ্ছে নাকি মন্দ হচ্ছে – সে বিষয়ে আমি কিছু বলছি না। আমি শুধু এতটুকু ইঙ্গিত দিতে চাচ্ছি যে, আমরা যে নাস্তিক্যবাদী সভ্যতায় জীবন যাপন করছি তার ব্যাপারে আমরা এ ছাড়া আর কিছুই অনুধাবন করতে পারছি না যে, এটি তার শেষ চক্রে পৌঁছে গেছে। কারণ এটি আর ভাল কিছু উৎপাদন করতে পারছে না।

সভ্যতা হচ্ছে একটি জীবন্ত দেহের মত। আমাদের বর্তমান সভ্যতা মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। এক্ষেত্রে অন্যান্য সভ্যতা আমাদের জায়গা দখল করতে প্রস্তুত। যেমন: ‘ইসলাম’। এটি একটি সীমা পরিসীমাহীন সভ্যতা।

আমি সর্বদাই ডুবে যাওয়া টাইটানিকের উদাহরণ টেনে আনি। সুতরাং আমাদের উচিত প্রশস্ত হৃদয় এবং প্রফুল্ল চেহারা নিয়ে যাকে ভালো লাগে তার সাথে ভালো মদ পান করা। এই জাহাজকে ডুবতে দাও। কারণ ডুবন্ত তরীর ফুটোতে প্লাগ লাগানোর চেষ্টা করার কোন মানে হয় না।”

তো, মূল কথা হচ্ছে, বস্তুবাদী নাস্তিকদের মতে এই জগত এবং জগতে যা কিছুর অস্তিত্ব আছে সবই কিছু অণু, ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন, চার্জ এবং কিছু বিকিরণ ব্যতীত আর কিছু নয়।

এটাই হচ্ছে অস্বীকারকারী নাস্তিকদের কুৎসিত চেহারা, যেটা লুকাতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করে। যখন দেখবেন আল্লাহর অস্তিত্বে অস্বীকারকারী নাস্তিকরা স্বাধীনতা, সমতা, মানুষের অধিকার, মুক্তি, ইনসাফ ও জুলুম অত্যাচার ইত্যাদি নিয়ে কথা বলছে — অবশ্য এসব বিষয় নিয়েই তারা বেশি কথা বলে— তখন মনে রাখবেন তারা কেবল মিথ্যার থুথু নিক্ষেপ করছে। এর মাধ্যমে তারা আপনাদের উপর মিথ্যারোপ করছে না, বরং নিজেদের উপরই মিথ্যারোপ করছে। তারা এটা বলে না যে, তাদের আকিদা হচ্ছে ‘নিয়ন্ত্রণবাদী বস্তুবাদ’ – যেখানে মানুষ এবং পাথরকে একই মনে করা হয় এবং বস্তুবাদী নিয়ম মানতে বাধ্য করা হয়। যে নিয়ম জানে না কোন আখলাক, চেনেনা কোন মূল্যবোধ এবং দয়া মায়া। তাদের মতবাদনুসারে, তাদের সকল আচার-ব্যবহার এবং কর্মকাণ্ড পূর্বনির্ধারিত এবং বস্তুবাদী নীতির অনিবার্য পরিণাম। তারা তাদের মতের বিরোধীদের ক্ষেত্রেও একই নীতি অবলম্বন করে। তাদের মতের বিরোধীদেরকে বলে তোমাদের সকল কার্যক্রমও প্রাকৃতিক বস্তুবাদী নীতি দ্বারা পূর্বনির্ধারিত। অতএব, এ দুইয়ের মাঝে কোন পার্থক্য নেই।

আপনি যদি কোন নাস্তিকের বাস্তবতা উদ্ঘাটন করতে চান তবে তাকে তার চিন্তার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন। তখন দেখবেন সে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বলবে, চিন্তার উৎস হচ্ছে ‘বিবেক’। আপনি তার প্রতারণায় প্রতারিত হবেন না। বরং তাকে আরও সূক্ষ্ম প্রশ্ন করে বসুন, এই জগতের উৎস কী? এবং কোথায় থেকে এর উৎপত্তি? ঠিক তখনই আপনি তার আসল চেহারা বের করতে সক্ষম হবেন। তার মুখ থেকে বাস্তবতা বেরিয়ে আসবে।

আর একজন মুমিন ও মুসলিম ব্যক্তি হিসেবে আপনি তো ইবাদত করেন এক আল্লাহর, যিনি একক, অদ্বিতীয়, অমুখাপেক্ষী, রাজাধিরাজ, মহাপবিত্র, শান্তিদাতা, নিরাপত্তা বিধায়ক এবং সকল কিছুর কার্যনির্বাহী। অপরদিকে নাস্তিক পূজা করে কিছু নিয়ম নীতির। সেগুলো হল মাধ্যাকর্ষণ বল, কেন্দ্রাভিমুখি বল, বৈদ্যুতিক চার্জ, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ, তাপগতিবিদ্যার সূত্র, গতি ও স্থিতি জড়তার সূত্র। তারা আরও অনেক নিয়ম কানুনের পূজা করে।

নাস্তিক যখন দয়মায় আল্লাহর বান্দা হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তখন সে চুম্বক, গাছ, পাথর আর কীটে পরিণত হয়েছে।

মার্কসবাদীদের কাছে শুনতে পাবেন, তারা হয়তো মানবতাবাদী ‘মার্কসবাদে’র কথা বলবে অথবা মানববান্ধব ‘সমাজবাদে’র কথা বলবে। তারা দাবি জানাবে যে, তারা দুর্বল, নিপীড়িত মাজলুম জনতার সাথে আছে। এ ধরণের আরও চমৎকার শ্লোগান তারা শোনাবে। কিন্তু এসব চটকদার গরম বক্তৃতার প্রতি কান না দিয়ে আপনি তাদের প্রতি সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্ম প্রশ্ন ছুড়ে মারুন। তাহলেই তাদের মুখোশ খুলে যাবে। প্রকাশিত হবে তাদের ‘বস্তুবাদী অদৃষ্টবাদের’ বাস্তবতা।

তারা এই চটকদার শ্লোগানগুলো ব্যবহার করে অনুসারী বাড়ানোর জন্য অথবা জাতিকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য। এমনকি নিজেদেরকেও ধোঁকা দেওয়ার জন্য। তাদের মাঝে মানবতার অবশিষ্ট অংশটুকুও বাকি নেই। বাস্তবতা সম্পূর্ণ আলাদা।

‘অ-মার্কসবাদী বস্তুবাদী’রা ‘মানবতা ও নৈতিক মূল্যবোধকে’ সমর্থন করা সত্ত্বেও মার্কসবাদীদের মতই একই মতবিরোধে নিজেদের খুঁজে ফিরে।

যখন আপনি ‘বস্তুবাদী’কে প্রশ্নের মাধ্যমে আটকে দেবেন, তখন সে এই বাস্তবতা স্বীকার করতে চাইবে না। তখন তাকে বলুন, ‘তোমার এই প্রত্যাখ্যানই তোমার বিশ্বাস রদ করার সবচেয়ে বড় উপায়’। কারণ তোমার মাঝে থাকা মানবতার অবশিষ্ট অংশটুকুই ‘অদৃষ্টবাদী বস্তুবাদ’কে প্রত্যাখ্যান করে।

আর যদি সে আপনাকে বলে, আমি একজন চারিত্রিক মূল্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি – তখন তাকে বলুন, তোমার ঐ বস্তুবাদী বন্ধু সম্পর্কে তোমার মতামত কী, যে সব ধরণের নৈতিকতাকে অস্বীকার করে? তার বিরুদ্ধে তুমি কোন দলিল দাঁড় করাবে?

যদি তারা যুক্তি দেখায় যে, আমরা দেখেছি – কমিউনিস্টরা তাদের বিশ্বাসের জন্য কী পরিমাণ জুলুম, নির্যাতন এবং হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হয়েছে। তখন উত্তর হবে, ‘হ্যাঁ, এটা তাদের বিশ্বাস ও কর্মপন্থা পরস্পর বিরোধী উৎকৃষ্ট প্রমাণ’। বস্তুবাদীদের মতে পৃথিবীতে কোন স্থির বিশ্বাস বা মূল্যবোধ নেই। অপরদিকে তারাই একটি নির্দিষ্ট বিশ্বাসের জন্য জুলুম, নির্যাতন এবং হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হয়েছে ও হচ্ছে।

অপর দিকে কমিউনিস্ট এবং বস্তুবাদীরা সবোর্চ্চ পর্যায়ের ‘অর্থনৈতিক সুবিধাবাদী’ হয়ে থাকে। অবশেষে এই দুই রকম মনোভাবই কিছু কিছু বস্তুবাদীর মাঝে নাস্তিকতা সম্পর্কে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। আল্লাহ চান তো তাদের তাওবাও আমরা দেখতে পাব।

নাস্তিক, অদৃষ্টবাদ বস্তুবাদীরা – ‘নৈতিক অধঃপতনের’ বিষয়টি অস্বীকার করে। তাদের মতবাদ অনুসারে মানুষ, পাথর আর গাছ একই। তাদের কাছে মানুষ, প্রবৃত্তি, আত্মা, বিবেক, চরিত্র ও নৈতিকতা – সব এক সমান।

ডারউইনের মতবাদ যখন প্রকাশ পেল তখন বস্তুবাদীরা সেটাকে গিলে ফেলল। অথচ ডারউইন আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকার করত না। কিন্তু সে ধর্মনিরপেক্ষ ছিল। সে দাবি করত মানুষের বিকাশ হয়েছে স্বয়ংক্রিয় প্রাকৃতিক পরিবর্তনের দ্বারা। ডারউইনের ‘বেঁচে থাকার উপযুক্ততা (Survival of the fittest)’ থিওরিটি তখন দখলদার পশ্চিমাদের আদর্শ হয়ে গেল। বিভিন্ন দেশে কলোনি স্থাপনের পক্ষে সাফাই গাইতে এই তত্ত্ব ব্যবহার করা শুরু করলো।

জীবজগতে ‘চরিত্র’ ও ‘পারস্পরিক দয়ামায়া’র কোন স্থান নেই। সেখানে ‘সবল ও শক্তিশালী’ শ্রেণী ‘দুর্বল ও অক্ষম’ শ্রেণীর বিনাশ করে। তেমনি দখলদার পশ্চিমাদের ক্ষেত্রেও এটা স্বাভাবিক যে, তারা দুনিয়ার বাকি সমাজের ভূমি ও সম্পদের ক্ষেত্রে নিজেকেই বেশি হকদার মনে করবে।

তাদের একজন তো বলেও ফেলেছে, ‘কোন হিংস্র প্রাণীর দল একটি হরিণকে আক্রমণ করা আর একদল যুবক একজন রমণীকে অপহরণ করে, ধর্ষণ করে হত্যা করার মাঝে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই।’

সুতরাং ধ্বংসাত্মক ‘বস্তুবাদী অদৃষ্টবাদ’ এর মাঝে প্রকৃত স্বাধীনতা নেই; একমাত্র এবং প্রকৃত স্বাধীনতা কেবল একত্ববাদের মাঝে এবং ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র স্বীকারোক্তির মাঝেই রয়েছে।

কারণ কোন ব্যক্তি যখন ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র সাক্ষ্য দিয়ে মুমিন হয়ে যায় তখন সে সব ধরণের মানবীয় প্রবণতা, প্রবৃত্তি ও ঝোঁক অথবা শ্রেণী, দল ও সাম্প্রদায়ীকতা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। নিজের সব বিষয়কে সে মহান আল্লাহর সামনে ন্যস্ত করে দেয়। যিনি সকল ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে পবিত্র এবং সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী।

প্রথম পর্বে যেমন বলেছিলাম, অদৃষ্টবাদী বস্তুবাদে বিশ্বাসীদের কাছে ইনসাফের কোন অর্থ নেই। এই মতবাদের নিকট – ‘হক’ বা ‘বাতিল’ বলতেও কিছু নেই। জালেম ও মাজলুমের মধ্যেও কোনও পার্থক্য নেই। তাছাড়া এ মতবাদের মাঝে নিরপেক্ষতা বলতেও কিছুই নেই। কারণ নিরপেক্ষতার অর্থই হচ্ছে সকল প্রভাব থেকে মুক্ত থাকা। তারা মনে করে বস্তুবাদী দর্শনেই জগতের সকল কিছু বিদ্যমান। এমনকি তারা মনে করে ‘চিন্তা’ এবং ‘অনুভূতি’ও বস্তু থেকে উৎপন্ন হয়। এসব কিছু বস্তুরই কিছু প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ মাত্র। সে হিসেবে বিচারকের সিদ্ধান্তও নিরপেক্ষ নয়। কারণ এই সিদ্ধান্তও কিছু পদার্থ ও রাসায়নিক উপাদানের প্রতিক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।

অতএব একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালাই ইনসাফের ব্যাপারে ক্ষমতাবান। কারণ তিনি সকল অস্তিত্ব সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত। তিনি নিজেই স্বয়ংসম্পূর্ণ। তিনি যা ইচ্ছা তা—ই করেন। এ কারণেই তাঁর নাযিলকৃত শরিয়াহ সবচাইতে ইনসাফপূর্ণ।

ইসলাম ইনসাফপূর্ণ ধর্ম হওয়ার কারণে স্বভাবতই জুলুমের সাথে তার বিরোধ চলে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই এখানে একটু ব্যাখ্যা করতে চাচ্ছি। কারণ অনেকের মতে নাস্তিকতার দিকে অনেকের ধাবিত হওয়ার সাথে এই বিষয়ের সম্পৃক্ততা আছে।

আল্লাহ তায়ালা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন এভাবে,

كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ ۗ

“তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ প্রদান করবে, অসৎ কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ইমান আনবে”। (সূরা আলে ইমরান ৩:১১০)

হাদিসে কুদসিতে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন,

يَا عِبَادِي إِنِّي حَرَّمْتُ الظُّلْمَ عَلَى نَفْسِي وَجَعَلْتُهُ بَيْنَكُمْ مُحَرَّمًا فَلَا تَظَالَمُوا

“আমার বান্দাগণ! আমি নিজের উপর জুলুম হারাম করে নিয়েছি। তোমাদের জন্যও তা হারাম করেছি, অতএব পরস্পরে জুলুম করো না। (সহিহ মুসলিম: ২৫৭৭)।

যারা শাসকের পক্ষ নিয়ে জুলুম এবং জালেমদের সমর্থন করে – তারা ইসলামের বিধি-বিধান ও কর্মপন্থা থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে এবং এ সম্পর্কে তাদের কোনও ধারণাই নেই। যেমন আমরা এমন লোকের কথাও শুনেছি, যে টিভির পর্দায় প্রতিদিন আধাঘন্টা করে উম্মাহকে আহ্বান করে, তারা যেন দাপুটে লম্পট ব্যভিচারীকে প্রতিহত করার জন্য প্রকাশ্যে আমর বিল মা’রুফ নাহি আনিল মুনকার না করে।

এই ব্যক্তি শুধু ইসলামের অপব্যাখ্যাকারীই নয় বরং সে মানবীক গুণাবলি থেকেও রিক্তহস্ত। এই লোকের উচিত বাড়িতে গিয়ে বাবা মার কাছে আবার নতুন করে মানবতার শিক্ষা শেখা।

এই ধরণের অধঃপতিত লোকদের কারণেই অ্যামেরিকা আর তার দোসররা আমাদের উপর কর্তৃত্ব করছে। তাদের কারণেই অনৈতিকতা বিস্তারের পাশাপাশি এই নাস্তিকতার ফিতনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আজ এ পর্যন্তই। এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ আপনাদের হেফাজতে রাখুন।

আমাদের সালাত এবং সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ তা’লার জন্যই, যিনি বিশ্বজগতের একমাত্র রব।

و اخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين, و صلي الله علي سيدنا محمد و أله و صحبه و سلم . و السلام عليكم و رحمة الله و بركاته ـ

************

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent

Related Articles

৩ Comments

Leave a Reply to Musafir Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × two =

Back to top button