বিজয়ী উম্মাহর প্রতি সংক্ষিপ্ত বার্তা পর্ব – ৪ || সীসাঢালা প্রাচীর! -শায়খ আইমান আল-জাওয়াহিরী (হাফিজাহুল্লাহ)
বিজয়ী উম্মাহর প্রতি সংক্ষিপ্ত বার্তা
পর্ব – ৪
সীসাঢালা প্রাচীর
মুসলিম উম্মাহ’র প্রতি
শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ’র
সংক্ষিপ্ত বার্তা
ডাউনলোড করুন
ভিডিও ডাউনলোড করুন
https://banglafiles.net/index.php/s/djFioydH8yrXNEf
https://www.file-upload.com/5id11yxcx5ig
https://archive.org/details/LeadWall
https://archive.org/download/LeadWall/LeadWall.mp4
পিডিএফ ডাউনলোড করুন
https://banglafiles.net/index.php/s/siw3mEfixbxrRM7
https://www.file-upload.com/o38id480hpi6
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন
https://banglafiles.net/index.php/s/Nbzi2mf52wBnREK
https://www.file-upload.com/aagj6i817hl3
ব্যানার ডাউনলোড করুন
https://banglafiles.net/index.php/s/xwsQMMyoFSkZipX
https://www.file-upload.com/to9cyn27mopn
====================
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية (بنغلاديش)
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]
—————–
শায়খ আইমান আল-জাওয়াহিরী (হাফিজাহুল্লাহ)
আস-সাহাব মিডিয়া
بسم الله والحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وصحبه ومن والاه
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। দরূদ ও সালাম আল্লাহর রাসূলের উপর এবং তার পরিবারবর্গ, সাহাবা ও যারা তার সাথে বন্ধুত্ব রাখে তাদের উপর।
হে সর্বস্থানের মুসলিম ভাইগণ! আস-সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। তারপর:
নিশ্চয়ই আজ প্রতিটি উচ্চ ও নিম্ন ভূমির কাফের বাহিনী আমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ক্রুসেডার, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যজগত, সাফাবী, নুসাইরী, শীয়া, জায়নবাদী ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী তাগুতরা- সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে জিহাদের শিখাটিকে নিভিয়ে দিতে, যা বর্তমানে মুসলিম উম্মাহর সামনে বিজয়ের পথ আলোকিত করতে শুরু করেছে।
তাই আজ আমাদের কতই না প্রয়োজন এক হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া, পরস্পর সমঝোতা করা, পরস্পর নিকটবর্তী হওয়া, সকলের পরিকল্পনা এক করা, একপথে চলা এবং সকলে মিলে আমাদের যুদ্ধের জন্য পরিকল্পনা করা।
যেমনটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা বলছেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنُواْ إذَا لَقيتُمْ فئَةً فَاثْبُتُواْ وَاذْكُرُواْ اللَّهَ كَثيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلَحُونَ (৪৫) وَأَطيعُواْ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلاَ تَنَازَعُواْ فَتَفْشَلُواْ وَتَذْهَبَ ريحُكُمْ وَاصْبرُواْ إنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابرينَ﴾.
“হে মুমিনগণ! যখন তোমরা কোন দলের সম্মুখীন হবে, তখন অবিচলিত থাকবে। আল্লাহকে বেশি পরিমাণে স্বরণ করবে, যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর। এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে এবং পরস্পরে কলহ করবে না।
অন্যথায় তোমরা দুর্ল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব বিলুপ্ত হবে। আর ধৈর্য ধারণ করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে।”
আমাদের কতই না প্রয়োজন ঐক্যের পথে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা! আমাদের কতই না প্রয়োজন সকল মুজাহিদ গ্রুপগুলো এমন একটি প্রতিশ্রুতির উপর ঐক্যবদ্ধ হওয়া, যা একথা দৃঢ় করবে যে,
তাদের জিহাদ শুধু আল্লাহর জন্য, আল্লাহর কালিমাকে উচু করার জন্য, আল্লাহর শরীয়ার শাসন বাস্তবায়ন করার জন্য এবং দেশীয় ও জাতীয়তাবাদের সেই মিথ্যা ও ভ্রান্ত সীমানাগুলোকে চূর্ণ করার জন্য, যার বীজ আল্লাহর শত্রুরা আমাদের দেশসমূহে ও আমাদের চিন্তা-চেতনায় বপন করতে চায়।
আমাদেরই সবচেয়ে বেশি এটা প্রয়োজন যে, সকল মুজাহিদ পরস্পরকে শক্তিশালী করবে, সাহায্য করবে ও নিজেদের মাঝে মিত্রতা স্থাপন করবে। ঠিক যেন সীসাঢালা প্রাচীর। যেন সকলে মিলে একটি দেহ। যার একটি অঙ্গ ব্যাথিত হলে তার জন্য সমস্ত অঙ্গগুলোই জ্বর ও অনিদ্রায় কাটায়।
আমাদেরই সবচেয়ে বেশি এটা প্রয়োজন যে, আমরা শরয়ী আদালতের ব্যাপারে একমত হবো, যা মুজাহিদদের মাঝে বিবাদমান বিষয়গুলোতে মিমাংসা করে দিবে।
আমাদের উচিত, শায়খ উসামা বিন লাদেন রহ: এর দাওয়াতকে পুনরুজ্জীবিত করা। উম্মাহর আমলদার আলেমগণ, শ্রেষ্ঠ মুসলিমগণ ও মুজাহিদ নেতৃবৃন্দেরকে নিয়ে একনিষ্ঠ বান্দাদের একটি পরিষদ গঠনের দাওয়াত। যাতে এই পরিষদ মুজাহিদদেরকে এবং মুসলিম জনগণকে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্তের দিকনির্দেশ করতে পারে। তাই যেমনিভাবে বিলম্ব ব্যর্থতার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে, অনুরূপ তাড়াহুড়া কখনো দুর্ঘটনার কারণ হয়।
সেটি এমন পরিষদ হবে, যা প্রাধান্য নিয়ন্ত্রণ করবে, দায়িত্ব বন্টন করবে, প্রচেষ্টাসমূহ যথাযথ খাতে প্রবাহিত করবে এবং এবং তাকে বিক্ষিপ্ততা ও ব্যার্থতা থেকে রক্ষা করবে।
এমন একটি পরিষদ, যা তাগুত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উম্মাহর শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করবে এবং তাদের চলার পথে তাদেরকে হিতোপদেশ দিবে। যেন উম্মাহ তাদের কাঙ্খিত খেলাফতে রাশেদা ফিরিয়ে আনতে পারে।
উক্ত পরিষদের সদস্যরা উম্মাহর জন্য আহলুল হাল্ল ওয়াল আকদের একটি কমিটি গঠন করবে। তারা নিজেরাই উম্মাহর উপর এমনভাবে চেপে বসবে না যে, ইমাম নিয়োগ দান ও বরখাস্তকরণের অধিকার শুধু তাদেরই থাকবে।
কোন আপত্তিকারী এই আপত্তি করতে পারে যে, এটি একটি চিন্তা মাত্র, এর কোন বাস্তবতা নেই। তাহলে আমার উত্তর হচ্ছে: ঠিক আছে, তাহলে আসুন আমরা এখন চিন্তাগত আদর্শগুলোর উপর একমত হই, তারপর ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করি।
আল্লাহর তাওফীক ও অনুগ্রহে একতার ব্যাপারে আমার বেশ কিছু কার্যকরি অভিজ্ঞতা রয়েছে, যার কিছু কিছু আল্লাহর সাহায্য ও দয়ায় সফলও হয়েছে। আমি এই অভিজ্ঞতাগুলো থেকে এই শিক্ষা অর্জন করেছি যে, ঐক্যের সুফল অনেক বেশি ও ব্যাপক এবং আমাদের আশারও অতীত। আমি তা থেকে আরও শিক্ষা পেয়েছি যে, নিরাশার কোন স্থান নেই এবং আমাদের চেষ্টা বন্ধ না করা উচিত। যদিও বা এমন হয় যে, আমরা বীজ বপন করি আর আমাদের পরবর্তীরা তার ফল লাভ করে।
ইসলামের সাহায্যের জন্য যে কোনো ঐক্যই গড়া হয়, আল্লাহর অনুগ্রহে তাতে কোনো না কোওও বরকত লাভ হয়ই।
তাই আমার মনে পড়ে, যখন আমরা ইহুদী ও ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য জাবহাতুল ইসলামীয়া আল-আলামীয়া গঠন করলাম, তখনই নাইরোবী ও দারুস সালাম থেকে সাহায্য আসলো।
এমনিভাবে যখন আল-কায়েদা ও জামাতুল জিহাদ ঐক্যবদ্ধ হল, তখন নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ও বেনি সালফিয়ার মুবারক হামলাসমূহের মাধ্যমে সাহায্য আসল।
এর বিপরীতে মতানৈক্য বিজয়কে বিলম্বিত করে।
আর এটি এমন একটি বাস্তবতা, যাকে সমর্থন ও মজবুত করে আল্লাহ তা’আলার এই বাণী-
وَلاَ تَنَازَعُواْ فَتَفْشَلُواْ وَتَذْهَبَ ريحُكُمْ.
“আর পরস্পরে কলহ করবে না, অন্যথায় তোমরা দুর্ল হয়ে পড়বে এবং তোমাদের হাওয়া (প্রভাব) বিলুপ্ত হবে।”
একারণেই যেমনটা আমি পূর্বেও বলেছি যে, ইবরাহীম আল-বদরী (আই এস প্রধাণ বাগদাদী) ও তার দল যে মতবিরোধের উদ্ভব ঘটিয়েছে, তা বহুগুণে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অপরাধ।
কেননা তারা পরামর্শ ও প্রতিষ্ঠা ছাড়া কৃত্রিম খেলাফত গঠনের মাধ্যমে বিবাদ ছড়িয়েছে। এ সম্পর্কে তাদের মুখপাত্র বলেছে: “আমরা তা শক্তিবলে ও জোরপূর্বক গ্রহণ করেছি”। সে যদি সত্য বলত, তাহলে এরূপ বলত: আমরা এটাকে শক্তিবলে ও জোরপূর্বক দাবি করেছি।
তারা এমন সময় এই দাবি করেছে, যখন কাশগর থেকে তাঞ্জা পর্যন্ত সমস্ত শত্রুরা আমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। অথচ ইতিপূর্বে তাদের যোগাযোগ-প্রতিনিধি ও শুরার সদস্য ১৪৩৩ হিজরীর ১০ ই রবিউল আউয়ালে শায়খ আবু ইয়াহইয়া আল-লিবী রহ: এর বরাবর এই মর্মে পত্র প্রেরণ করেছে যে,
“আদেশ দানের অধিকার তো আপনাদেরই। কারণ আপনারা আমাদের দায়িত্বশীল। আমরা আপনাদের আদেশ শুনবো ও মানবো। আর আপনাদের দাওলাতুল ইসলামীয়ার ভাইয়েরা আপনার মশওয়ারা ও অনুমতি ছাড়া কোনও পদক্ষেপই গ্রহণ করবে না”।
অত:পর সে তার নিকট আগ্রহ প্রকাশ করে, যেন খুরাসানের শায়খগণ তাদের বক্তব্যসমূহে তাদের ইরাকের ইসলামী দাওলার কথা উল্লেখ করেন এবং সে এ ব্যাপারে বাগদাদীর তাগিদও বর্ণনা করে যে, যদি খুরাসানের শায়খগণ তার পরিবর্তে অন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে সে সৌভাগ্যবানই হবে এবং সে ও তার মজলিসে শুরা এর পূর্ণ আনুগত্য করবে। অত:পর সে তার থেকে সাধারণ দিকনির্দেশনা ও শামে কার্য পরিচালনার পরিকল্পনা চায় এবং আরো জানায় যে, তিনি কখনো তাদের থেকে শ্রবণ ও আনুগত্য ছাড়া কিছু দেখতে পাবেন না।
এমন কথাবার্তার পর যখন শামে তাদের কিছুটা শক্তি অর্জিত হল, তখনই তারা পাল্টে গেল। তাদের মুখপাত্র ঘোষণা দিল, তারা ১৪২৭ হিজরীতে দাওলাতুল ইরাক আল-ইসলামীয়া ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই আল-কায়েদা থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। অর্থাৎ আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মদ ওমরের ওফাতের প্রায় ৬ বছর পূর্বে এবং শায়খ উসামা বিন লাদেন রহ: এর ওফাতের প্রায় ৪ বছর পূর্বে।
অর্থাৎ তারা একই সাথে শায়খ উসামা বিন লাদেন ও মোল্লা মুহাম্মদ ওমর রহ: এর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অপরাধ সংঘটিত করে গর্ব করছে। এটা শুধু মিথ্যাই নয়; বরং জঘন্য ও বহু মিথ্যার সমন্বয়কারী মিথ্যা। তারা এই মিথ্যা উদ্ভাবন করেছে। এভাবে তারা তাদের পূর্বের স্বীকারুক্তিগুলোও ভঙ্গ করেছে। আর মিথ্যাবাদীদের ন্যায়পরায়ণতা প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের কোন শরয়ী নেতৃত্বের যোগ্যতা থাকে না।
তাদের মুখপাত্র ঘোষণা করেছে, তারা কোনো স্বতন্ত্র আদালত মানে না। কারণ হতে পারে তার প্রথম সিদ্ধান্তই হবে তাদের জামাত শাম থেকে বের হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে। অর্থাৎ সে তার প্রবৃত্তানুকূল ফায়সালা চায়, যা তাকে শামে থাকতে দিবে। কিন্তু আমি মনে করি, তাদের মূল কারণ হচ্ছে, স্বতন্ত্র আদালতের পথে হাটলে তাদের উপর কিসাস কার্যকর হওয়ার ভয়।
অত:পর তারা তাদের অন্তরের সব গুপ্ত বিষয় প্রকাশ করে দেয়। যেমন কায়িদাতুল জিহাদ ও জাবহাতুন নুসরার নেতৃবৃন্দকে কাফের আখ্যায়িত করা; বরং যারাই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদেরকেই কাফের আখ্যায়িত করা।
যেন তারা নবী, তাই যারাই তাদের মোকাবেলায় যুদ্ধ করবে, তারাই কাফের হয়ে যাবে। এর ভিত্তিতে সে তার সৈন্যবাহিনীকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অবাধ অনুমতি দিয়ে দেয়।
অত:পর যে ই তাদের সীমালঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দাড়ায়, সে ই কাফের হয়ে যায়। তারপর সে মুক্ত অঞ্চলগুলোকে আবার মুক্ত করার এবং সকল মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঘোষণা দেয়, এমনকি যদিও ঐ সকল মুজাহিদগণ শরীয়ার শাসন বাস্তবায়নের জন্যই প্রচেষ্টাকারী হয়।
আরও ঘোষণা দেয় যে, যে তাদের শর্ত অনুযায়ী তাওবা না করবে, তার জন্য রয়েছে ছুরি ও বুলেট। সুবহানাল্লাহ!
তাই বলছি, ইবরাহীম আল-বদরীর দল কি ভুলে গেছে যে, যে ইমারাতে ইসলামীয়াকে তারা গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের এজেন্ট হওয়ার অপবাদ দেয় এবং কুফরীর দিকে সম্পৃক্ত করে, সেই ইমারা কারো থেকেই বায়আতের আবেদন করেনি।
বরং শায়খ আবু মুসআব আয-যারকাবী রহ: ইমারাতে ইসলামীয়ার হাতে বায়আত না হওয়া সত্ত্বেও সেখানে অবস্থান করতেন এবং হেরাতের নায়েবে গভর্ণর শহীদ (যেমনটা আমরা তার ব্যাপারে ধারণা করি) মুজাহিদ মওলবী আব্দুল হান্নান রহ: এর মারকাযে স্বীয় সাথীদেরকে প্রশিক্ষণ দিতেন। এতদসত্ত্বেও কেউ তো তার গর্দান পৃথক করে দেয়নি, তার মাথা উড়িয়ে দেয়নি এবং তাকে তাকফীরও করেনি।
বরং তিনি সেখানে সম্মান ও মর্যাদার পাত্রই ছিলেন। একারণেই তিনি মোল্লা মুহাম্মদ ওমর রহ: এর প্রশংসা করেন এবং শায়খ উসামা রহ: এর হাতে বায়আতের মাধ্যমে তার হাতে বায়আত হন। আল্লাহ তাদের সকলের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন!
এটাই হচ্ছে ইমারাতে ইসলামীয়া ও গোড়া খারিজীদের মাঝে পার্থক্য। যারা তাদের পূর্বসূরীদের উপর অধিক হারে মিথ্যা আরোপ করে, তাদের সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, তাদেরকে গালমন্দ করে এবং সতী নারীদেরকে অপবাদ দেয়।
আমরা তাদের নিকট দাবি করেছিলাম, তারা যেন আমাদের কুফরের ব্যাপারে অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীল সহ একটি সাংগঠনিক বিবৃতি প্রকাশ করে। আমরা তাদের নিকট আরো দাবি করেছিলাম, তারা যেন আমাদের সামনে ঐ সকল ব্যক্তিদের নাম, গুণাবলী ও ইতিবৃত্তি আলোচনা করে, ইবরাহীম আলবদরীর ধারণামতে যারা তাকে দাবিকৃত খেলাফতের দায়িত্বে নিয়োগ দিয়েছে। বিশেষ করে তাদের মধ্যে যারা সাদ্দামের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীর নিয়মিত সৈন্য ছিল তাদের। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সাড়া দেওয়ার মত কাউকে পাওয়া যায়নি।
মোটকথা, একথা বলাই আমাদের উদ্দেশ্য যে, আমাদের কর্মপন্থা হচ্ছে একতাবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করা। যেমন শায়খ উসামা বিন লাদেন রহ: মোল্লা ওমর রহ: এর হাতে বায়আত হয়েছেন।
তারপর আমরা জাবহাতুল ইসলামীয়া আল-আলামীয়া গঠন করি, তারপর জামাত কায়িদাতিল জিহাদ গঠন করি, তারপর আল্লাহর অনুগ্রহে উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমাদের মুজাহিদ ভাইদেরকে ইসলামের পঞ্চিমাঞ্চলে একত্রিত করি এবং ইসলামের সাহায্যের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা প্রকাশ করি।
আর শামের মুজাহিদদের প্রতি আমাদের একতার আহ্বান বরাবরই অব্যাহত রয়েছে।
আমরা তাদেরকে একাধিকবার বলেছি যে, আপনারা যাকে আপনাদের ইমাম হিসাবে মনোনীত করবেন, সে ই আমাদেরও মনোনীত। আমরা ঐক্যের স্বার্থে সাংগঠনিক সম্পর্কও কুরবানী করতে পারি, যদিও আমাদের ভাইদের প্রতি আমাদের সম্মানবোধ রয়েছে।
অপরদিকে বদরী ও তার দল মুজাহিদদের পিঠে খঞ্জরের ভূমিকা পালন করছে। তারা শামের জিহাদকে মুলতবি করে নিজেদের ফিৎনার মাধ্যমে ইসলামের শত্রুদেরকে তাদের হারানো কিছু ভূমি পুনরুদ্ধারের সুযোগ করে দেয় এবং দামেশকের দিকে মুজাহিদদের যাত্রা ব্যাহত করে দেয়।
আর এখন আমেরিকা ও তাদের মিত্ররা সেই খেলাফতের ইরাককে সাফাবী রাফিযীদের নিকট বিক্রি করে দিচ্ছে, যারা আহলুস সুন্নাহর অঞ্জলগুলোর উপর কৃর্তত্ব প্রতিষ্ঠা করছে। কিন্তু তাদের শামের ভাইয়েরা তাদের দিকে সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করতে পারছেন না। কারণ তারা উগ্র খারিজীদের থেকে গাদ্দারী ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন।
সিরিয়ার বিদ্রোহের পূর্বে আমরা জামাতুল বাগদাদীর ভুল-ভ্রান্তিগুলো সংশোধনের বহু চেষ্টা করেছি, তাদেরকে গোপনে উপদেশ দিয়েছি, কিন্তু ইরাকের ব্যাপারে যে আশঙ্কা আমাদের মনে আসছিল, আমরা তার ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। কিন্তু যখন শামে তাদের ফেৎনা ছড়িয়ে পড়ল, তখন আমাদের সামনে বীভৎস ও ভয়ংকর বাস্তবতা প্রকাশিত হল।
যাদেরকে আমরা শামে পাঠিয়েছিলাম তাদের থেকে এবং আমাদের প্রবীন নির্ভরযোগ্য ভাই ও অন্যান্য ভাইদের পক্ষ থেকে আমাদের নিকট লাগাতার সাক্ষ্য আসতে লাগল। জাবহাতুন নুসরার ভাইয়েরা তাদের অভিযোগপত্র প্রেরণ করল। ইবারাহীম আলবদরী, আবু সুহাইব ও আদনানীও অভিযোগ প্রেরণ করল। আমরা বদরীকে এই মর্মে সতর্ক করলাম যে, আমাদের বিলম্ব (যেটাকে সে সঠিক বিলম্ব বলে মনে করে) অধিক রক্তপাতের কারণ হবে।
আর মিডিয়া ও ইন্টারনেটও মূহুর্তে মূহুর্তে শামের অবস্থাদি প্রকাশ করল। তখন আমি মুসলমানদের রক্ত হেফাজতের জন্য শাম সংকটের ব্যাপারে আমার সিদ্ধান্ত প্রকাশ করলাম। তখন তারা তাদের প্রকৃত চেহারা প্রকাশ করল। আমি এক সময় মুআল্লিম ও হাকিম থাকার পর তখন হয়ে গেলাম কাফের।
কিন্তু তাদের ভ্রান্ত মত অনুযায়ী তাদের উপর তাদের নিজেদেরকেই তাকফীর করা আবশ্যক হয়। কেননা তারা পূর্বে একজন কাফেরের প্রশংসা করত, গণতন্ত্রের প্রতি ঈমান রাখত, ইখওয়ানকে সমর্থন করত, সাইসবেকোর নির্ধারিত ভূ-সীমা মানত, শিয়াদেরকে তাকফীর করত না…… এজাতীয় আর যত উদ্ভট কথা রয়েছে।
পক্ষান্তরে আমরা এখনো পর্যন্ত ইবরাহীম আল বদরী ও তার দলকে কাফির আখ্যায়িত করি না, যদিও তারা আমাদেরকে তাকফীর করে। কেননা আমরা আল্লাহর অনুগ্রহে তাদের ক্ষেত্রে আল্লাহর আনুগত্য করি, যদিও তারা আমাদের ব্যাপারে আল্লাহর অবাধ্যতা করে।
এটাই প্রমাণ করে, তাদের তাকফীর হচ্ছে রাজনৈতিক এবং স্বার্থপূর্ণ। ক্ষমতায় প্রভাব বিস্তার করার জন্য এবং একক রাজত্ব লাভ করার জন্য। এ মতানুসারে যে: “কাফির আখ্যায়িত কর, যেন ধ্বংস করতে ও ক্ষমতা লাভ করতে পার।”
আমরা সবর করলাম, আমাদের ভাইদেরকে জবাব দিতে নিষেধ করলাম।
তারপর ধারাবাহিকভাবে তাকফীর, মিথ্যা অপবাদ, গালমন্দ সহ বিভিন্ন প্রকার মন্দাচার শুরু হল। তখন আমরা আমাদের জাবহাতুন নুসরার ভাইদেরকে আদেশ দিলাম এবং ইবরাহীম আলবদরী ও তার দলের নিকট আবেদন করলাম, তারা যেন যুদ্ধবিরতি দেয়। জাযীরাতুল আরবের ভাইয়েরা ও ইসলামী মাগরিবের ভাইয়েরাও যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রকাশ করল।
শারলি এবদোর মুবারক হামলার পর আমি বললাম, নিশ্চয়ই এই সাহায্য প্রতিটি মুসলিমের জন্য। এটা আমাদেরকে আমাদের প্রচেষ্টাসমূহ এক করতে আহ্বান করে।
তারপর আমি দ্রুত ক্রুসেডার, সাফাবী ও নুসাইরী জোটের বিরুদ্ধে পারস্পরিক সহযোগীতার প্রস্তাব করলাম এবং এই শিরোনামে একটি বার্তা প্রকাশ করলাম: “আসুন আমরা বায়তুল মুকাদ্দাসকে মুক্ত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই”।
তখন জবাবে আমরা কি পেয়েছিলাম? গালমন্দ, তাকফীর, মিথ্যাচার ও বিভিন্ন অপবাদ।
তবে যে মতবিরোধপূণ বিষয়ে শরীয়তের ফায়সালা মানতে রাজি হয় এবং পরামর্শের পথে আসে, তার জন্য কল্যাণের দ্বারসমূহ সর্বদা উম্মুক্ত রয়েছে; কেউ তা বন্ধ করতে পারবে না।
পক্ষান্তরে যে অকল্যাণের দরজাসমূহে প্রবেশ করতে চায়, সে তার যা পছন্দ হয় তা নিয়ে থাকুক।
মোটকথা, আমরা প্রতিটি মুজাহিদকে আহ্বান করি, তারা যেন স্বীয় ভাইদের সাথে পরস্পরে নিকটবর্তী হয় এবং ঐ সকল লোকদেরকে পরিহার করে, যারা তাদেরকে ধীরে ধীরে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ভূখন্ড ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার অতল গহ্বরে নিয়ে যেতে চায়, দিবা-রাত্রি মুজাহিদদের কাতারকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করে এবং তাদের মাঝে শ্রেণীবিভেদ করতে চায়।
একদলকে বলে, মধ্যপন্থি, যাদের উপর বোমা বর্ষণ করতে হবে না আর আরেক দলকে বলে, কট্টরপন্থি, যাদেরকে সমূলে ধ্বংস করতে হবে।
তাই হে আমাদের শামের ভাইগণ এবং প্রতিটি স্থানের মুসলিমগণ!
দেখুন, মুরসী ও ইখওয়ান, আমেরিকা, ইউরোপ ও ইসরাঈল তাদের কাছে যা দাবি করেছে, তারা তা ই আদায় করেছে, কিন্তু এখন তারা কোথায়? তাই হে চক্ষুস্মানগণ! উপদেশ গ্রহণ করুন!
তাই আসুন, আমরা শয়তানী জোটের মোকাবেলায় পরস্পরকে সহযোগীতা করি, শক্তি যোগাই এবং সকলে এক কাতারে ঐক্যবদ্ধ হই।
﴿وَإن تَصْبرُواْ وَتَتَّقُواْ لاَ يَضُرُّكُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا إنَّ اللَّهَ بمَا يَعْمَلُونَ مُحيطٌ﴾.
“তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় কর ও ধৈর্য ধারণ কর, তাহলে তাদের চক্রান্ত তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। নিশ্চয়ই তারা যা করে, আল্লাহ তা পরিবেষ্টন করে আছেন।”
পরিশেষে সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের সরদার মুহাম্মদ, তার পরিবারবর্গ ও তার সাহাবীদের উপর।
ওয়াস-সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।