আল-ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশনপ্রবন্ধ-নিবন্ধ

কল্পনার দিনলিপি

তারবিয়াহ – ৬
বিষয়ঃ সাম্প্রতিক ঘটনাবলী
কল্পনার দিনলিপি
মুইনুদ্দিন শামী
অনুবাদঃ মাওলানা আজিজুর রহমান

আল্লাহ পাকের বিশেষ দয়া, তিনি আমাদেরকে মুসলিম বানিয়েছেন। অতঃপর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মত বানিয়েছেন।

হে আমাদের মালিক! আপনি আমাদেরকে যার উম্মত বানিয়েছেন তার পথে চলার তাওফিক দান করুন। শরীয়ত প্রতিষ্ঠার মুবারক মেহনত আমাদের হাত দ্বারা বাস্তবায়ন করুন। আপনার রাস্তায় আমদেরকে শহিদ হিসেবে কবুল করুন এবং নবীগণ, সিদ্দিকগন ও নেককারদের সাথে হাশর এর ব্যবস্থা করে দিন। আমীন।

দ্বীন ইসলামের দুশমন ট্রাম্প, আর ট্রাম্পের বন্ধু ইমরান

ট্রাম্পের কিছু গুণাবলী দেখুন!
১. ধর্মীয়ভাবে সে ইহুদীবাদী খৃস্টান।
২. সে নিজেই বলে – ইসরাইলের সবচেয়ে বড় সমর্থকরা হোয়াইট হাউজে বাস করে।
৩. বাইতুল মুকাদ্দাসকে (জেরুসালেমকে)ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দিয়েছে।
৪. ইহুদী ও ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে নিজের মেয়েকে ইহুদীর কাছে বিয়ে দিয়েছে।
৫. বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ও নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
৬. সে বলে “আমাদের ‘উগ্রবাদী ইসলাম বা সন্ত্রাসবাদকে’ পরাজিত করতে হবে।
৭. ইন্দো-মার্কিন কমিউনিটির সমাবেশে সে বলেছে, “আমাদের (ভারত–আমেরিকার)নিরাপত্তার জন্য বর্ডার সংরক্ষণ করতে হবে।
৮. উপড়ে উল্লেখিত সমাবেশে মোদি প্রশ্ন রেখেছে – “আমেরিকার ৯/১১ ও মুম্বাই এর ২৬/১১ হামলার পরিকল্পনা কোথায় হয়েছে? (পাকিস্তানে হয়েছে!)
৯. ঐ সমাবেশে ট্রাম্প মোদিকে Father Of India আখ্যা দিয়েছে। সে কাকে পিতা আখ্যা দিল?! RSS এর মত সন্ত্রাসী সংগঠনের গোলাম ‘মোদি’কে?! এই RSS গান্ধিকে হত্যা করেছিলো।
এই হলো ট্রাম্পের কিছু কীর্তিকলাপ। সে যা করেছে এগুলো তার দশ ভাগের এক ভাগও নয়। তারপরও ইমরান খান বলে, “ট্রাম্প সাহেব অনেক মহৎ মানুষ। স্পষ্টভাষী। আমি তার বন্ধু”।
আর ট্রাম্পও ইমরান খানকে এমন শব্দে সম্বোধন করে। আর সামনাসামনি সাক্ষাতে তো বলেই দিয়েছে, “যদি তোমার পরবর্তী ইলেকশনে আমি হোয়াইটহাউজে থাকি – তবে তোমার হয়ে প্রচারণা চালাবো। এবার কী হলো! দুইয়ে দুইয়ে যেন কত?!!

পাক-চীন বন্ধুত্ব

আল জাজিরা টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারের সময় যখন সাংবাদিক প্রেসিডেন্ট আরেফ আলাভীর কাছে জিজ্ঞাসা করল ‘আপনার চীনের সাথে ব্যবসার প্ল্যান ১৪৩ মিলিয়ন আরব ডলার। অর্থাৎ প্রায় ৬ খরব(দশ হাজার কোটি টাকায় এক খরব)। এটি সত্তর আরব রুপিয়া দ্বারা শুরু হয়েছিল। এই চীনই তো দশ হাজার তুর্কিস্তানের মুসলমানকে উত্তর চীনে বন্দি করে রেখেছে। তাদের উপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। আপনি এ ব্যাপারে কি বলবেন? আরেফ আলভি বলল, “পাকিস্তান চীন সরকারের সাথে আছে। এই ধরণের গুজব তখন ছড়ানো হয়, যখন কোন দেশকে চাপে রাখতে ইচ্ছা করা হয়। আমাদের সরকারের পলিসি হলো এমন যদি কিছু চীনে হয়ে থাকে তাহলে তা চীনের অভ্যন্তরীন বিষয়। আর আমরা চীনের উপর ভরসা রাখি তারা তাদের লোকজনকে ভালোভাবেই রাখবে”।

এই প্রশ্ন ইমরান খানকে করা হয়েছিলো। উত্তরে সে বলেছে, “আমি পাকিস্তানের বাইশ কোটি মানুষের প্রধানমন্ত্রী। তাদের ব্যাপারেই আমাকে চিন্তাভাবনা করতে হবে। (অর্থাৎ চীনের মুসলমানদের কোন দায়-দায়িত্ব আমার নেই)।

ধরে নিলাম এটা চীনের অভ্যন্তরীন বিষয়। পাকিস্তান যখন কাশ্মীরের আওয়াজ উঠায় তখন প্রধান চারটি ইসলামী দেশের কোনটিই তাকে সমর্থন দেই নি। উপরন্তু ঠিক এই সময়ই সৌদী, আরব আমিরাত মোদিকে এওয়্যার্ড দিয়েছিল। সেক্ষেত্রে কাশ্মীর ইস্যুকেও ইন্ডিয়ার অভ্যন্তরীন বিষয় বলা যায়। আপনার কষ্টের তো বিষয় নয় এটি। তারপর এটাও মনে রাখবেন যে, এই সব কথা বলে চীনের সাথে মিলে মুসলমান হত্যায় কিন্তু আপনিও শরীক আছেন। যার সাথে যার মহব্বত তার সাথে তার কেয়ামত।

ন্যাটো কার্গো – কর্মসংস্থানের মাধ্যম

ভয়েস অব আমেরিকা রেডিওর একটি নিউজ রিপোর্টে বলা হয়েছে, যখন আমেরিকা ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তানে হামলা করেছে তখন পাকিস্তানের অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল। এই ব্যবস্থার মধ্যে একটি ছিলো ‘ন্যাটো কার্গো’। প্রতিদিন কমপক্ষে চারশ কার্গো পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে প্রবেশ করত এবং ন্যাটো বাহিনীর সেনাক্যাম্পে পৌঁছত।

আপনারা জানেন – এই সব কার্গোতে ললিপপ, কুলফি ও বাচ্চাদের খাবার পাওয়া যেত না। যেসব জিনিস তাতে থাকত তার মধ্যে ছিল ছোট ছোট পার্টস আকারে ভাগ করা জঙ্গি হেলিকপ্টার, ড্রোন বিমান, গাড়ি, অস্ত্র -বারুদ, সেনাদের প্রয়োজনীয় জিনিস ও জ্বালানী। আর এটাও জানা কথা যে, এই সেনারা আফগানিস্তানে লুকোচুরি খেলতে আসেনি। বরং আফগান জনগণের গণহত্যায় এই বাহিনী নিয়মিত অংশগ্রহণ করতো।

কুফফারদের নিচুতার স্তর চিন্তা করুন। বলা হচ্ছে এই কার্গোগুলো কামাই রোজগারের একটি সুযোগ ছিলো। এ খবর শুনে সাইয়্যিদ কুতুবের একটি ঘটনা মনে পড়ল। তাকে ফাঁসিতে ঝুলানোর জন্য যখন মঞ্চে নেয়া হলো। তখন জেলের মৌলভী চলে এসে বলল, “সাইয়্যিদ কালেমা পড়”। তিনি বললেন, “কোন কালেমা? আমাকে ফাঁসি দেয়া হচ্ছে যে কালেমার অপরাধে সেই কালেমা? না তোমার রোজগারের ব্যবস্থা করেছে যে কালেমা সেই কালেমা”?

এদিকে আমাদের জেনারেল তো কার্গো প্রতি কমিশন নিত। রাষ্ট্রের কোষাগারের জন্য নয়, বরং নিজের পকেট ভরার জন্য। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘জেনারেল কিয়ানী’। তো উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবার কি আয় রোজগারের ব্যবস্থা হয়েছিলো?

মুসলমান নয় ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের আড্ডা

ভিসন ২০৩০ উপস্থাপনকারী ধর্মনিরপেক্ষবাদী মুহাম্মদ বিন সালমান কিছুদিন পূর্বে মহিলাদের জন্য মাহরাম ছাড়া সৌদি প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। এখন মহিলারা বিশেষ করে পশ্চিমা মহিলারা মাহরাম ছাড়াই আনন্দ বিনোদন করতে পারবে। আমরা তো সেই ভিসনের আলোচনা করেছি, যেটি হলো উলঙ্গপনার ভিসন। এখানে খোলামেলা সমুদ্র সৈকত, নাইটক্লাব, মদ, নাচ ইত্যাদি আছে। হে আল্লাহ! ঐ কুলাঙ্গারের গর্দান আমাদের তলোয়ারের নিচে করে দেন – যে আমাদের নবীর পবিত্র শহরকে নাপাক বানিয়েছে।

লাভ

কসুর ও ফয়সালাবাদে মাসুম ফুলগুলিকে মাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তারপর তাদের দুখিনী মায়েদেরকে টিভি চ্যানেলের সামনে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে তারা তাদের সন্তানদের লাশ, অথবা কমপক্ষে তাদের হাড্ডি হলেও যেন দেয়া হয়, তার আবেদন জানিয়েছে।
এই হল বর্তমান অবস্থা। অনুভূতিহীনতা এই পর্যায়ে এসে নেমেছে। আর দাবি করছে সেক্স এডুকেশন এর দ্বারা অবস্থা ভালো হবে। এই চরিত্রহীন ও সামজিকতাহীন ব্যক্তিরা সমাধান করবে সমাজের সমস্যা? একে বলা হয় লাভ! exploitation!

আত্মহত্যা…হারাম মৃত্যু!

আল্লাহর দ্বীনের জন্য নিজের জীবনকে কুরবান করে নিহত হওয়াকে ইস্তেশহাদি হামলা বলে। যেহেতু এই ধরণের হামলাকে কাফেররা ভয় পায়, এবং এই হামলার বিপরীতে তাদের সকল টেকনোলজি অচল, তাই এই ধরণের হামলার নাম আত্মঘাতী হামলা দিয়েছে।
মিডিয়াতে এমন অসংখ্য ঘটনা পাওয়া যায়, যেখানে কোন একজন ব্যক্তি শত্রুর ক্ষতি করার জন্য এবং নিজের লোককে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবনকে জেনে বুঝে শেষ করে দেয়। পাকিস্তানের ৬৫ সালের যুদ্ধে চুন্ডা নামক স্থানের রণাঙ্গনে – পাকিস্তানি সেনাদের ভারতীয় ট্যাংকের নিচে শুয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেয়া আর রাশেদ মিনহাসের প্লেন ফেলে দেয়াতো প্রসিদ্ধ ঘটনা। এখন এই একই কাজ মুজাহিদরা করলে আত্মহত্যা ফতোয়া দেয়া হয়। যাতে করে ইসলামের অগ্রগতিকে থামিয়ে দেয়া যায়।

এর জন্য বাতিলপন্থীরা কিছু দরবারি মোল্লাদের ভাড়া করেছে। তারাই এই হামলাকে নাজায়েয ফতোয়া দিয়েছে। (যদি এটা শরয়ী বিষয় হতো তাহলে আমি কথা বলতাম না, বলতাম এটা আমদের বিষয় নয়। কিন্তু ৬৫ তে জায়েয আর মুজাহিদরা করলে নাজায়েয? বাকি এই হামলা দ্বারা নিরপরাধ মুসলমান যদি মারা যায় তাহলে তা জায়েজ হবে না)।

এখন দেখেন এইসব ব্যাপারে সবাই কথা বলে। এমনকি বিবিসির মত দ্বীনের দুশমন সংবাদমাধ্যমও কথা বলে। সম্প্রতি বিবিসির একটি রিপোর্ট শুনলাম। তাতে এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মহিলা বলেছে – তার ছেলে মানসিক রোগের কারণে আত্মহত্যা করেছে। একজন বললো – “এমন কাহিনী প্রচার করবেন না, তাহলে মৌলভী সাহেবরা জানাজা পড়বে না”। ছেলের পিতা বলল, “মৌলভীর জানাজার কি দরকার? আমিই তার জানাজা পড়ব”।

এ ধরণের মানসিক রোগীদের চিকিৎসা জরুরী। বরং যদি একটি ইসলামি দেশ প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে ইসলামি সরকারের জন্য উচিৎ হলো এবিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া(যেমনিভাবে রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, এই সমস্যা দিন দিন বাড়ছে)। কিন্তু এটা কেমন কথা যে, তোমাদের ছেলেরা আত্মহত্যা করবে, আর তোমরা এক্ষেত্রেও মৌলভীকে নিয়ে ঝগড়া লাগিয়ে দেবে – যে মৌলভি জানাজা পরতে চায় না। তারপর আবার এই রিপোর্টে এই ধরণের কাজকে সাধারণ কাজ বলা হয়েছে। অর্থাৎ এটা হারাম কিছু না!!!

এই রিপোর্ট দ্বারা কিছু শিক্ষা অর্জন হয় –
১. কিছু দুনিয়ালোভী মৌলভীদেরকে এই মিডিয়াগুলো আত্মঘাতি হামলার বিরুদ্ধে ব্যবহার করে।
২.আত্মহত্যা যদি মানসিক সমস্যার কারণে হয় তাহলে এটা গ্রহণযোগ্য বিষয়, আর যদি ইসলামের জন্য হয় তাহলে এটা অগ্রহণযোগ্য।
৩. ইসলাম ছাড়া আর যা কিছু আছে; সেক্যুলারিজম, লিবারেলিজম, উলঙ্গপনা, বেহায়াপনা, আত্মহত্যা, সব কিছুর দাওয়াত বৈধ, শুধু ইসলামের দাওয়াত অবৈধ।

মধ্যপন্থা দৃষ্টিভঙ্গির হিরো

করাচির এক কার্টুনিস্ট ও সাহিত্যিক ‘মহিলা সুপার হিরো’ নামে এক কমিক্স সিরিজ বের করা শুরু করেছে। যার নাম ‘ইধি বাবা’। সেই মহিলা বলছে, একটা কমিক্স এর কাজ হাতে এসেছিল। আমি চিন্তা করলাম, কমিক্সের মধ্যে হিরো ভিলেনকে মারে। এক্ষেত্রে বাচ্চাদেরকে কেন এই চিন্তা কেন দেয়া হবে যে, হক্কের জন্য প্রয়োজনে মারতে হবে? বরং এই চিন্তা দেয়া যায় কিনা যে – হক্কের জন্য বাঁচাতে হবে।
এই চিন্তা থেকে আমি ইধির ব্যক্তিত্বকে নির্বাচন করেছি। এটা নির্বাচনের একটি দিক। চিন্তা করুন এটা কেমন বুঝ যে, হকের জন্য মারা হবে না, শুধু বাঁচানো হবে। কল্পনা করুন, বাতিল আপনাকে মারছে আর আপনি নিজের লোকদেরকে কেবল মলম পট্টি লাগাচ্ছেন এবং বলছেন আমি  Nonviolence এর প্রবক্তা। যদি প্রশ্ন করা হয় – কেন Nonviolence ও নম্রতার প্রবক্তা? তারা উত্তর দেয় – যাতে Violence না ছড়িয়ে যায়।

ভাই একজন খারাপ মানুষ একশ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং করছে। এখন তাকে যদি মারা হয় অথবা গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে এই সামান্য Violence দ্বারা শত মানুষ হত্যার Violence কি বন্ধ হবে না? দেখুন এমন দৃষ্টিভঙ্গি কে ছড়াচ্ছে? একজন মহিলা – যেকিনা সেক্যুলার। আর এর প্রচার কে করছে? বিবিসি ও এজাতীয় বিজাতি প্রচারমাধ্যম।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লাখো-কোটি মানুষ গণতন্ত্রের জন্যই জীবন দিয়েছিলো। এই পশ্চিমা প্রচারমাধ্যম যাদের গোলামি করে। তারা সেক্যুলারাজিমের নামে শুধু মুসলমান নয় বরং মানবতার গণহত্যার অপরাধী। (যদি  nonviolent heroes এর দৃষ্টিভঙ্গি শুধু Violence কে রোধ করা হয় তাহলে এটা অবাস্তব প্রস্তাবনা। আর যদি এর দ্বারা জিহাদকে বন্ধ করা উদ্দেশ্য হয় তাহলে এর দ্বারা জিহাদ বন্ধ হবে না।)

ডাও মেডিকেল কলেজে ‘পয়গামে পাকিস্তান’ নামে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রভাব:
প্রথমেই বলে দেই যদি পড়তে মনে না চায় – তাহলে পড়বেন না।
ডাও মেডিকেল কলেজ করাচির প্রসিদ্ধ একটি মেডিকেল কলেজ। অক্টোবর ২০০৯ এ ওখানে একটি স্টল ‘সাজানো’ হয়েছিল। স্টলটি ছিলো কনডম প্রচার সংক্রান্ত। স্টলের দোকানদার কন্ডমের স্টাইলের পোষাক পরা ছিলো। এবং কনডমের ‘ফাযায়েলের’ প্রেজেন্টেশন দিচ্ছিল। কলেজের সমস্ত ছাত্রছাত্রীদেরকে বাধ্য করা হয়েছে ঐ স্টলে উপস্থিত হয়ে স্টলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে। ঐ স্টল থেকে উপস্থিত লোকজনকে ফ্রী কনডম দেয়া হয়েছে।

এখন বলুন এখানে কী সমস্যা? কিতাবে তো এর শরয়ী হুকুমও বয়ান করা হয়েছে। সুতরাং এভরেসন এড়ানোর জন্য এর ব্যবহারে কী সমস্য। এটা তো ইসলামী গণতান্ত্রিক পাকিস্তান। এখানের সব সাদা কালো ভালো।

সমস্যা আসলে কনডমের ব্যবহারে নয় বরং এর মাধ্যমে যেনার প্রতি খোলামেলা আহবানের উপর। এটা কোথায় প্রচার করা হচ্ছে? এটা তো এমন জায়গায় বন্টন করা হচ্ছে, যেখানে অল্প বয়সী অবিবাহিত নারী পুরুষরা একসাথে আছে। এমন জায়গায় খোলাখুলিভাবে এমন জিনিসের প্রচার কী ফলাফল বয়ে আনে?

বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ! পূর্বে তো সামাজিকভাবে বদনামের ভয় ছিলো। এখন তো সরকার এর নিরাপদ রাস্তা নিজেই দেখাচ্ছে। যে দেশের ২৫% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, যেখানে লাখো মানুষ রুটির জন্য হাহাকার করে, সে দেশে রুটি বিলি না করে কনডম বিতরণ করছে!

সরকারী প্রচার মাধ্যমগুলো দ্বারা খারাবির প্রচার হচ্ছে, এবং ভালো বিষয়ের ক্ষেত্রে বাঁধা হচ্ছে। তারপর আবার এই অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, আত্মমর্যাদাহীনতার বিরুদ্ধে যে লিখবে, বলবে এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলবে, সে খারেজী, বাগি আরো কত কী! এটাকেই বলে পয়গামে পাকিস্তানের বিজয়!!

জি, এইচ, কিউ এর মধ্যে লাপাত্তা ব্যক্তিদের জন্য সেল গঠন

বিষয়টা তো পুরোনো হয়ে গেছে। কিন্তু পর্যালোচনা হওয়া দরকার।
৫ই জুলাই ২০১৯
দুখিনী আমেনা মাসউদ জানজুআ সাহেবার ডি জি আই এস পি আর আসিফ গফুরের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এরপর সে এবিষয়টি প্রকাশ করেছে এবং টুইটও করেছে যে, চিফ অব আর্মি স্টাফের আদেশে জি এইচ কিউ এর মধ্যে লাপাত্তা ব্যক্তিদের জন্য একটি সেল গঠন করা হয়েছে। অনেক মানুষ এই সংবাদ শুনে খুশী হয়েছে। তারা মনে করেছে এর দ্বারা ঐসকল ব্যক্তিদের মুক্তির প্রক্রিয়া সহজ হবে। কিন্তু তারা এই টুইটের আসল বার্তা বুঝতে সক্ষম হয়নি।

পূর্বে লোকেরা দেখত কখনও এম আই আই বি এবং এফ আই ও এখানে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। এই সেল আসলে পূর্বে থেকেই ছিলো। আসিফ গফুর যেই সেলের কথা বলে, বাজওয়ার আদেশে যেই সেল গঠন করা হয়েছে এই সেল হলো সেই সেল। অর্থাৎ জি এইচ কিউ ওরফ পিন্ডিওয়ালারা এখন লোকদেরকে সরাসরি লাপাত্তা করে দিবে।

আবার সেলের আরো একটি অর্থও আছে, সেল পরিচালনা কামরাকেও এমনটা বলা হয়। তবে সেনাবাহিনী স্পষ্ট বলছে যে, লাপাত্তা ব্যক্তিদের জন্য একটি সেল – জি এইচ কিউ তেও আছে।

ভাই রেলগাড়ি চালাও..এটম বোমা নেই

অন্য কোন উপাধি সম্ভবত আর বাকি নেই। সে বিয়ে করেনি। এজন্য জাতির পিতা হতে পারেনি। তাই তাকে বলা হয়েছে পাকিস্তানের ছেলে। জী, শায়খ রশীদের আলোচনা করছি। সে ভারতকে হুমকি দিয়ে বলেছে, আমাদের কাছে এক পোয়া, আধা পোওয়া এটম বোমা আছে। আমাদের কাছে ইঞ্চি ইঞ্চি, আধা ইঞ্চি, পৌনে ইঞ্চি, দুই ইঞ্চি বোমাও আছে। শায়খ রশীদের জন্ম হলো বাজারে, তারপর সেখানেই নেংটি কাচা দিয়ে খেলে বেড়াত। মাঝে মাঝে পাশের গোয়ালা থেকে এক পোয়া, আধা পোয়া দুধ দই কিনে খেত। সরকারি পানির নলও দেখেছে এক ইঞ্চি, আধা ইঞ্চি, দুই ইঞ্চি। তার দৌড় এপর্যন্তই। এজন্য এটম বোমাকেও সের কেজি ও ইঞ্চি দ্বারা পরিমাপ করছে। এবং হুমকি দিচ্ছে।
ভাই তুমি রেলগাড়ি চালাও এটাই অনেক বড় কাজ। এটম বোম বন্ধক রাখ।

জিহাদ আমাদের জীবনের লক্ষ্য

জিহাদের কবি, আল্লাহর রাস্তার শহিদ মাকসুদুজ্জামান শহিদ রহিমাহুল্লাহ বলেন – আমাদের জীবনের লক্ষ্য হলো জিহাদ।
সুতরাং যাকে আল্লাহ তাআলা এই রাস্তার মজা ও বুঝ দান করেছেন – সে ভালো করেই জানে যে, প্রত্যেক জিহাদির জন্য জীবনের উদ্দেশ্য হলো জিহাদ। এই রাস্তা থেকে সরে যাওয়া বা সরানো জন্য কাছে মৃত্যুর সমান মনে হয়। এজন্য তো এই সমস্ত পাগলেরা গুলি, বোমা, আগুন, ড্রিল মেশিনের দ্বারা ছিদ্র করা, খাবারে শিশা, আরো বড় কথা হলো মা, বাপ, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানদের পর্যন্ত এই রাস্তায় শহিদ হয়ে যাওয়া বা বন্দী হয়ে যাওয়া সত্বেও এই রাস্তা ছাড়ে না। এই রাস্তার মজা হলো মজলুমদেরকে জালেমের হাত থেকে বের করে ইনসাফের শীতল ছায়ায় নিয়ে আসা এবং জালেমদের মুখ ও ঘাড়ে তলোয়ার মারা। যেমনটি বদর, উহুদ. পেন্টাগন ও জি এইচ কিউ এর মধ্যে করা হয়েছে।

আলেমরা বলেছেন, জিহাদের সর্বোচ্চ স্তরের একটি স্তর হলো – কাফেরদেরকে রাগান্নিত করা।
আল্লাহ তাআলা বলেন
وَلَا يَطَئُونَ مَوْطِئًا يَغِيظُ الْكُفَّارَ
তাদের এমন পদক্ষেপ যা কাফিরদের ক্রোধ জন্মায়
এই আয়াতের তরজমা তাফসীর তো উলামায়ে কেরাম করেছেন। আমি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে কাফেরদেরকে রাগান্নিত করে এমন কিছু বিষয় তুলে ধরছি।
১. জিহাদপন্থীদের উপস্থিতিই কাফেরদের জন্য রাগের কারণ।
২. তাদের বিরুদ্ধে মুজাহিদদের পরিকল্পনা ।
৩. কাফেরদের উপর মুজাহিদদের হামলা।
৪. মুজাহিদ কর্তৃক কাফেরদের গ্রেফতার করা।
৫. কাফেরদের বিরুদ্ধে মুজাহিদদের শক্ত অবস্থান এবং হকপন্থীদের পক্ষে কথা বলা।
৬. কাফেরদের বিপক্ষে, হকের পক্ষে মুজাহিদদের লেখনী।
৭. মুজাহিদদের এমন স্থানে পৌঁছে যাওয়া যেখানকার ব্যাপারে কাফের মুনাফিকদের ধারণা হলো, তাদের অনুমতি ছাড়া এখানে কেউ প্রবেশ করে কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
৮. মুজাহিদদের এমন স্থান থেকে আল্লাহর সাহায্যে বেরিয়ে যাওয়া যেখান থেকে একটি পিপড়া বের হলেও তাদের ক্যমেরায় ধরা পড়বে।

পদ্ধতিতো আরো অনেক আছে, আমি এখানে অল্প কয়েকটি লিখলাম। উদ্দেশ্য হলো – মুসলমানরা জেনে যেন অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারে। আর কাফের মুশরিকরা জ্বলবে, পুড়বে, রক্তক্ষরণ হবে, রাগে ফেটে পড়বে, আর তাদের অন্তর একটি জাহান্নামে পরিণত হবে।
নিঃসন্দেহে তিনিই আল্লাহ যিনি দুনিয়াতেই কাফেরদের অন্তরকে জাহান্নাম ও মুমিনের অন্তরকে জান্নাতে পরিণত করেছেন। হে আল্লাহ এর জন্য আমরা আপনার শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

**********

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =

Back to top button