আল-ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশনইতিহাস- ঐতিহ্যকাশ্মীর আর্কাইভপাকিস্তানবই ও রিসালাহমাওলানা আসিম উমরমিডিয়াহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

কাশ্মির ও দ্বিধাবিভক্ত মুসলমানদের উদ্দেশ্যে লড়াই চলবেই – মাওলানা আসিম উমর হাফিজাহুল্লাহ

আল ফিরদাউস আর্কাইভ পরিবেশিত

কাশ্মির ও দ্বিধাবিভক্ত মুসলমানদের উদ্দেশ্যে
লড়াই চলবেই – মাওলানা আসিম উমর হাফিজাহুল্লাহ

[স্ক্যান কপি]

লড়াই চলবেই

  কাশ্মির এবং দ্বিধাবিভক্ত মুসলমানদের উদ্দেশ্যে

মূল

শাইখ আসেম উমর (হাফিজাহুল্লাহ)

অনুবাদ

মুফতী আবুল ফাতাহ্ 

প্রকাশনায়

আল-জান্নাত

গোপালগঞ্জ

 

লড়াই চলবেই…

শাইখ আসেম উমর (হাফিজাহুল্লাহ)

মুফতী আবুল ফাতাহ্ অনূদিত

প্রথম প্রকাশ

আগষ্ট- ২০১৮ ইং

সর্বসত্ত্ব

প্রকাশক কর্তৃক সংরক্ষিত

নির্ধারিত মূল্য: ২৫/-

 

 الحمد لله الذي خلقنا في هذه الأمة بأنه لا تزال فيا طائفة على الحق لا يضرهم من خذلهم ولا من خالفهم حتى يأتي أمره ولو اجتمع الثقلان على حربهم قبيلا.

ونشهد أن لا إله الا الله وحده لا شريك له في الخلق والأمر ونشهد أن سیدنا محمد عبده ورسوله الذي بعث بأربعة سيوف ، لرفع كلمة الإسلام وتشييدها ، وخفض كلمة الكفر وتهوينها وتوهینها، والذي قال: (بعثت بين يدي الساعة بالسيف حتى يعبد الله وحده لا شريك له ، وجعل رزقي تحت ظل رمحي) وعلى آله وأصحابه ليوث الغابة وأسد عريه . أما بعد!

فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم . بسم الله الرحمن الرحيم ، وَقَٰتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ ٱلدِّينُ كُلُّهُۥ لِلَّهِۚ فَإِنِ ٱنتَهَوْا۟ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ بَصِيرٌ.

وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم : إذا تبايعتم بالعينة واخذتم أذناب البقر ورضيتم بالرع وتركتم الجهاد سلط الله عليكم ” ذلا لا ينزعه ځتی ترجعوا إلى دينكم .

হে কাশ্মিরের আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মুসলমান!

 বর্তমানে যখন বিশ্বের প্রতিটি জনপদে মুসলমানগণ অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন, চেহারায় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতকে সুশোভিত করেছেন, বুকে আল্লাহর কিতাব কুরআনকে ধারণ করে জিহাদে বেরিয়ে পড়েছেন, শহিদদের রক্তের বরকতে জিহাদ নির্যাতিতের জিঞ্জির ছিড়ে, ভয় ও ত্রাসের রাজ্য পেরিয়ে আল্লাহর অবধারিত সংবিধিবদ্ধ সংবিধান এবং খেলাফতের জীবনব্যবস্থা পুনর্জীবিতকরণের কালে অনুপ্রবেশ করেছে, নিজেদের হরণকৃত সম্পদ ও অধিকার পুনঃদখলের অসহায়ত্ব থেকে অগ্রসর হয়ে কুফরি জীবনব্যবস্থাকে বিশ্ব থেকে মূলোৎপাটনের ধ্বনি দিয়ে চলছে, যাঁরা গতদিন পর্যন্ত সশস্ত্র জিহাদের বিপক্ষে অবস্থান করছিলেন, তারাই আজ গণতান্ত্রিক নর্দমার কিনারা থেকে উঠে এসে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ অবলম্বন করে চলছেন!

আমিরুল মুমিনিনের আফগান, রক্তের সাগরে হাবুডুবু খেয়ে নিরাশ হয়ে পড়া ভবঘুরেদের আশার পৃথিবীতে স্বাগতম জানিয়েছে, আরবের শাহজাদাদের মূল্যবান রক্ত, যা কিনা খুরাসানের ভূমিকে সিক্ত করেছে, সে রক্তই সারা বিশ্বের তরুণ, যুবক সম্প্রদায়ের অন্তরে অনুপ্রেরণার ঝড় সঞ্চার করেছে, প্রেরণার তুফান সৃষ্টি করেছে! উম্মতের শহিদ, মিল্লাতের অনুকম্পাকারী শায়খ উসামা বিন লাদেনের রক্তের বরকত আরববিশ্বে এভাবে প্রকাশ পেয়েছে যে, শামের ভূমিতে মুজাহিদগণের বিজয়ধারা শুরু হয়েছে। আফগানের ভূমিতে যারা মুজাহিদগণকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার দুঃস্বপ্নে বিভোর, তারা এখন স্বপ্নে শামের ভূমিকে এক নতুন আফগানরূপে আবিস্কার করতে বাধ্য হচ্ছে! ঈমান, হিকমাত ও প্রজ্ঞার অধিকারী ইয়ামান এবং ও মক্কা-মদিনার শাহাজাদাগণের জিহাদের ধ্বনি সৌদি রাজপরিবারের দম্ভের মধ্যে কম্পন সৃষ্টি করে দিয়েছে, মিশরের প্রান্তরে প্রান্তরে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঝঙ্কার গুঞ্জরিত হচ্ছে। ইরাক থেকে আমেরিকা পরাজিত হয়ে লেজ গুটিয়ে পালাচ্ছে, ফিলিস্তিনে জাতিগোষ্ঠীর অত্যাচার এবং গণতান্ত্রিক চর্চার দিন শেষে এবার খেলাফতের আওয়াজ আসছে, লিবিয়াতে কৌশলগত কারণে মুজাহিদগণ চুপিসারে লড়াইয়ের পূর্বপ্রস্তুতির ধাপগুলো অতিক্রম করছেন, জাযিরাতুল আরবের মুজাহিদগণ ফ্রান্সের অধিবাসীদের আরামের ঘুম হারাম করে দিয়েছে, শ্রান্ত শরীরে একটু ঘুমাতে হলে মুজাহিদগণের অনুকম্পার অপেক্ষা করতে হচ্ছে, তিউনিসিয়া থেকে জিহাদের রণধ্বনি বের হচ্ছে, সোমালিয়াতে আমেরিকান সৈন্যদের পর এখন তার ভাড়াটে সেনাসদস্যদের কবরস্থানে রূপ নিয়েছে, বর্তমানে আলহামদুলিল্লাহ, সোমালিয়ার উপকূলীয় অঞ্চল মুজাহিদগণের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে!

 এমনই বিশ্বের খেলাফত আন্দোলনের শহিদের রক্ত যেখানে ইসলামি বিশ্বকে রাঙিয়ে তোলার প্রয়াস চালান হচ্ছে, মুসলমানগণ হাতে চাপাতি নিয়ে আমেরিকা, ইউরোপে দীনের শত্রুদের ওপর আক্রমণ হেনে চলছে, তখন বারবার প্রশ্ন জাগছে যে, আমার কাশ্মিরের ভাইদের হাত থেকে ক্লাশিনকোভ কেড়ে নিয়ে মাটি আর পাথরের ঢিলা কে ধরিয়ে দিয়েছে?

শহিদগণের সঙ্গে জিহাদের রাস্তা অবলম্বন করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার অঙ্গীকারে এবং জিহাদ ও তার পথ মসৃণ এবং অবিচল রাখার অঙ্গীকারে চুক্তিবদ্ধ সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ জিহাদকে ত্যাগ করে হরতাল, অবরোধ এবং অন্তসারশূন্য গণতান্ত্রিক রণ-ধ্বনিতে কাশ্মিরের স্বাধিনতার স্বপ্ন কাদের ইঙ্গিতে হচ্ছে?

এ কেমন জুলুম এবং অন্যায়ের কথা যে, নব্বই হাজার শহিদের রক্তের কুরবানি দেওয়ার পর সম্মান এবং উন্নতশিরের পথকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে? এসব কাদের চক্রান্ত যে, কাশ্মিরের গণমানুষের অন্তরে জ্বলতে থাকা ধিকিধিকি আগুনের ওপর বরফপানি ঢেলে দেওয়া হচ্ছে!

হে কাশ্মিরের মুজাহিদগণ! কাশ্মিরের শহিদগণের সঙ্গে করা অঙ্গীকারের কী হল? যাদের সঙ্গে মরা ও বাঁচার অঙ্গীকার করা হয়েছিল! কাশ্মিরের জিহাদকে অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করা হয়েছিল? কাশ্মিরের বোনদের সঙ্গে করা অঙ্গীকার কেন পূর্ণ করা হচ্ছে না? কাশ্মিরের মা-দেরকে ভারতের নীপিড়ন থেকে উদ্ধারের ধ্বনি কেন নানা রঙের যুক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক গণ্ডির সীমারেখায় আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে?

হে পাকিস্তানের মুসলমানগণ! হে নব্বই হাজার শহিদের আমানত রক্ষাকারীগণ! … কাশ্মিরের বোনেরা আপনাদের কাছে জানতে চায়, হে আমাদের ভাই, কাল যে কারণে জিহাদ ফরজ ছিল, আজও তো সেসব কারণগুলো বিদ্যমান, কুতিবা আলাইকুমুল কিতালের আয়াত তো আজও তেলাওয়াত করা হয়, কাল যদি কাশ্মিরের বোনেরা তোমাদেরকে তাদের মুক্তির জন্য আহবান, আকুতি জানিয়ে থাকে, তবে তাদের সে আওয়াজ তো আজও ইথারে-পাথারে ধ্বনিত হচ্ছে! কাল যদি ঝিলাম নদীতে ভাসমান বোনের বিবস্ত্র লাশ তোমাদের অন্তরকে ক্ষতবিক্ষত করে থাকে, তবে তো তোমাদের অন্তর আজও বেঁচে আছে বোঝা যায়, তবে সেই ঝিলাম নদীর ঢেউয়ের মাতম কান পেতে শুনে দেখ, তারা তোমাদেরকে ডেকে ডেকে বলছে, সেসব অঙ্গীকার কোথায় চলে গেল, সেসব কসম, ওয়াদাগুলোর কী হল, শহিদগণের রক্ত থেকে অবশেষে কোন  অপারগতাবশতঃ কারণে বিস্মৃত হয়ে যাওয়া হয়েছে? রাষ্ট্র সরকার কি আইন প্রণয়ন করে দিয়েছে, সরকার কি জিহাদকে হারাম ঘোষণা করেছে…, তবে জানতে ইচ্ছা করে সেখানে হয়েছেটা কি? কি হলো… মৃত্যু অবধি লড়াই করার সেসব অঙ্গীকারের, শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত জিহাদ অব্যহত রাখার প্রত্যয়ের, সেসব রক্তের, যার রঙে প্রান্তরের পর প্রান্তর রঙিন হয়েছে, জাতির সেসব মেয়েদের কান্না, যা কিনা কাশ্মিরের পরিবেশকে দুর্বিষহ করে দিয়েছে, ঝিলাম নদীর বহমান স্রোতে উলঙ্গ বোনের লাশগুলো, যুবক সন্তানদের পথ চেয়ে থাকা মা-দের পাথরের চোখগুলো, এসব যুবকদের শত স্বপ্নসাধ যে, (নিজের যৌবনকাল জিহাদের ময়দানে কাটিয়ে দেব, নিজের জীবনকে জিহাদের জন্য উৎসর্গ করে দেব, যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইসলামের বসন্ত দেখতে পায়, কাশ্মির মুক্তস্বাধীন হয়ে এ ভূমি ইসলামের চারণভূমিতে পরিণত হয়…) এসব যুবকদেরকে হত্যা করে দেওয়া হয়েছে, সবকিছু বিক্রয় করে দেওয়া হয়েছে… ব্রাক্ষ্মণরা কি জাদু করেছে, নাকি পাকিস্তানি কোনো সংস্থা, তারা কি সবাইকে এমন জাদুগ্রস্ত করে দিয়েছে যে, কাশ্মিরের জিহাদকে যেন এক পুরাতন স্মৃতিচারণের বিষয়ে পরিণত হয়ে যায়? উদ্দীপনায় যেন ভাটা পড়ে গেছে, তাকবির ধ্বনিতে যেন গলা টিপে ধরা হয়েছে, ক্ষমতাসীনদের দাপটে শরীরের মধ্যে যেন এমন কাঁপুনি শুরু হয়েছে যে, কাশ্মিরের আজাদির কথা ভুলে গিয়ে নিজের স্বাধীনতা-নিরাপত্তা নিয়েই এখন সবাই ব্যস্তসমস্ত! এ বড় অন্যায়… বড়ই অন্যায্য কথা…! আমার কাশ্মিরের ইসলামি ঐতিহ্যের ইতিহাসের সঙ্গে অনেক বড় অন্যায় হয়েছে!

হরি সিংয়ের জন্য আর কান্না কিসের,

যে কিনা জিন্দা কাশ্মিরকেই বিক্রি করে দিয়েছে…

সে তো শক্রই শত্রু…

কান্না তো তাদের কাজের জন্য করতে হচ্ছে,

যারা কিনা কাশ্মিরের মাকে কাঁদিয়েছে,

বোনদেরকে কাঁদিয়েছে, এরপর তাদেরকে ভারতীয়

দয়া-অনুকম্পার ওপর ছেড়ে দিয়েছে!

মনে রাখবেন, আযাদ কাশ্মিরের শহিদগণ আযাদ কাশ্মিরের মুসলমানদেরকে জিজ্ঞেস করবে, আমরা কি জিহাদ রাজনৈতিক বিভিন্ন লাভের কথা মাথায় রেখেই করেছিলাম? এসব পার্থিব উপলক্ষকে পূর্ণ করার জন্যই করেছিলাম? আমাদের রক্ত কি এতই সস্তা ছিল যে, এ রক্তকে পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা হবে? কখনোই নয়, আমরা তো বরং এ রক্তকে এ জন্য ঝরিয়েছিলাম, যেন আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দীন বাস্তবায়ন হয়! আল্লাহর দীন বিজয়ী হয়! নিজের প্রিয় ঘরবাড়ি ত্যাগ, নিজের পরিচিত শহর ত্যাগ করে হিজরতের জীবন বেছে নেওয়া, মা-বাবার প্রিয় মুখ ছেড়ে জিহাদের কণ্টকাকীর্ণ পথে পা বাড়ান, জেল জীবনের দুর্দশা-পেরেশানি শুধু এ কারণে হাসিমুখে বরণ করা হয়েছে, যেন এ ভূমিতে শরিয়ত বাস্তবায়ন হয়!

হে স্বাধীন কাশ্মিরের অধিবাসীরা!

শরিয়তের বাস্তবায়ন, শরিয়ত অথবা শাহাদাতের সে রণধ্বনি তোমরা কিভাবে ভুলে যেতে পার, অথচ তার প্রতিটি বস্তি জনপদে কয়েকজন শহিদের কবর এখনো বিদ্যমান! সেসব মা-বাবারা সেই জিহাদকে কিভাবে ভুলে যেতে পারে, যেখানে তাদের হৃদয়ের ধন কুরবান-উৎসর্গ হয়েছে?! সেসব জাতিগোষ্ঠী কিভাবে সে জিহাদকে ভুলে যেতে পারে, যার সন্তানেরা বাড়ন্ত যৌবনে জিহাদে গিয়ে শহিদ হয়ে গিয়েছে?!

হে শহিদের রক্তের উত্তরসূরীগণ!

এসো, জিহাদের জন্য বেরিয়ে এসো! ইসলামি বিশ্ব যেখানে শত বৎসর যাবত ঘুমিয়ে কাটিয়েছে, তা আজ আড়ষ্টতা ভেঙে জেগে উঠেছে! তোমরা তো জাগ্রত ছিলে, তবে সে জাগ্রত অবস্থা থেকে আবার কেন ঘুমিয়ে পড়লে! সারা বিশ্ব তো গণতান্ত্রিক জীবনব্যবস্থা থেকে নিরাশ হয়ে শক্তির মাধ্যমে নিজের অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য বাধ্য হয়েছে, সবক শিখেছে, আর তোমরা সেই অর্জিত শক্তিকে ছেড়ে দয়া দাক্ষিণ্য, হরতাল, অবরোধের মত আন্দোলনের পথে অগ্রসর হচ্ছ!

আল্লাহ তায়ালা তো নির্যাতিতদেরকে উদ্দীপনা দিয়ে বলছেন, তোমরা যদি অন্যায় অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ চাও, তবে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করো, আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর একান্ত দয়ায় সাহায্য ও বিজয় দান করবেন। আল্লাহ বলেন:

أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَٰتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا۟ۚ وَإِنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ

“আর তাদেরকে অনুমতি প্রদান করা হল, যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ,তাদের প্রতি অত্যাচার-নিপীড়ণ করা হয়েছে, আর নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে বিজয়ী করে দিতে সক্ষম।”

আর যদি অত্যাচারীদের হাতকেও প্রতিহত করতে চাও, তবেও লড়াইয়ের পথকেই অবলম্বন করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

قَٰتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ ٱللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ

“তোমরা তাদের সঙ্গে লড়াই কর, তোমাদের হাতে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন, তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন, তাদের ওপর তোমাদেরকে বিজয় দান করবেন এবং মুমিনদের অন্তর প্রশান্ত করবেন।”

হে ঈমানের দাবিদার ব্যক্তিবর্গ।

যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালার কিতাব সংরক্ষণ করতে চাও, যদি এমন চাও যে, কোনো কাফেরের যেন এই সাহস না হয়, সে এই কুরআনের একটি পৃষ্ঠাকে জ্বালানো তো দূরে থাক, এমন কোনো কথার চিন্তাও যেন তাদের মাথায় আনতে না পারে! তোমরা যদি এই কুরআনকে বিজয়ী দেখতে চাও,তাকে বাজারে, আইন-আদালতে এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে তার বাস্তবায়ন দেখতে চাও, তবে এক্ষেত্রেও জিহাদই একমাত্র পথ, যার ওপর ভিত্তি করে এই রাস্তা অতিক্রম করা যেতে পারে!

সুরা হাদিদে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

لَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلَنَا بِٱلْبَيِّنَٰتِ وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْمِيزَانَ لِيَقُومَ ٱلنَّاسُ بِٱلْقِسْطِۖ وَأَنزَلْنَا ٱلْحَدِيدَ فِيهِ بَأْسٌ شَدِيدٌ وَمَنَٰفِعُ لِلنَّاسِ وَلِيَعْلَمَ ٱللَّهُ مَن يَنصُرُهُۥ وَرُسُلَهُۥ بِٱلْغَيْبِۚ إِنَّ ٱللَّهَ قَوِىٌّ عَزِيزٌ

“নিশ্চয় আমি আমার রাসুলগণকে এমনসব স্পষ্ট দলিল-প্রমাণ দিয়ে প্রেরণ করেছি এবং তাদের সঙ্গে ন্যায়নীতি ও কিতাবও প্রেরণ করেছি, যেন মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি লোহাও দিয়েছি, যাতে রয়েছে প্রচণ্ড শক্তি এবং তাতে মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণও রয়েছে। আর তা এই জন্য যে, আল্লাহ প্রকাশ করে দেন, কে প্রত্যক্ষ না করেও তাঁকে এবং তাঁর রাসুলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিমান ও মহাপরাক্রমশালী!” (সুরা হাদিদ: ২৫)

যদি কেউ এই ন্যায় পরায়ণতাকে গ্রহণ না করে, তাকে নিজের রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন না করে, শক্তির দাপটে তাঁর রাস্তায় বাঁধা প্রদান করে, আল্লাহর সৃষ্টিকে তার বরকত থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করে, কেউ যদি শুধু এই কারণে শরিয়তের আইন-কানুন বাস্তবায়ন হতে বাঁধা দেয় যে, এ আইনকানুন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে তার মদ, কাবাবের আসর-অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে, তার রঙিন পশুপ্রবৃত্তি চরিতার্থ হতে পারবে না! সুতরাং, এমন কুপ্রবৃত্তির লোকদেরকে শায়েস্তা করতে আমি এই আইনগ্রন্থের সঙ্গে লোহাও প্রেরণ করে দিলাম, যা কিনা এমন হঠকারিতাপ্রবণ লোকদেরকে আমার আইন বাস্তবায়নের রাস্তা থেকে হটিয়ে দেবে, যারা কিনা সত্য এবং ন্যায়নিষ্ঠ রীতিনীতির রাস্তার প্রতিবন্ধক হিসেবে প্রমাণিত হবে, যারা কিনা তার বিরোধিতা করবে! সুতরাং, (তাতে রয়েছে প্রচণ্ড শক্তি) এই লোহার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধের সরঞ্জাম, তাতে রয়েছে বড় পাওয়ার!

ইমাম নাসাফি রহিমাহুল্লাহ তাঁর তাফসিরে মাদারেকে উল্লেখ করেন, এই আয়াতে তিনটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থাৎ, কুরআন, মিযান এবং লোহা! এই তিনটি বিষয়ের মধ্যে সমন্বয় এই যে, কুরআন হচ্ছে শরিয়তের আইন উৎস, যা কিনা ন্যায়নিষ্ঠতা এবং ন্যায়পরায়ণতার আদেশ করে থাকে এবং আল্লাহদ্রোহীতা এবং অবাধ্যতায় বাঁধা প্রদান করে, ন্যায়নিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠাকরণ এবং জুলুম অত্যাচার থেকে বাঁচা শুধুমাত্র কোনো হাতিয়ার এবং পরিমাপদণ্ডের মাধ্যমেই সম্ভব আর তাই হচ্ছে মিযান। আল্লাহর এই কিতাব মুসলমানদেরকে তলোয়ারের ব্যবহারের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে থাকে, যা কিনা শরিয়তের বিরোধিতাকারী এবং অস্বীকারকারীদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি প্রামাণ্য বিষয়, আর তা হচ্ছে লোহা- যাকে আল্লাহ তায়ালা মহাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

আল্লামা আলুসি রহিমাহুল্লাহ বলেন, এ আয়াতে পরোক্ষভাবে বলা হয়েছে যে, কুরআন এবং ন্যায়নিষ্ঠ প্রতিষ্ঠা করার জন্য তলোয়ারের প্রয়োজন, যেন নিরাপত্তা এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা যায়। কারণ, অন্যায়-অত্যাচার অনেকের প্রবৃত্তির মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জায়গা করে নেয়। তা দমন করতে তলোয়ারের প্রয়োজন।

আল্লামা শানকিতি রহিমাহুল্লাহ তাঁর আযওয়াউল বয়ান গ্রন্থে বলেন, আল্লাহ তায়ালা এই আয়াতে যা বলেছেন, তা হচ্ছে, দীনের বিধান বাস্তবায়ন দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। একটিকে আল্লাহ সুরা হাদিদে বর্ণনা করেছেন

وَأَنزَلْنَا مَعَهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْمِيزَانَ

অর্থাৎ, “আমি তাদের সঙ্গে কিতাব এবং মিযান অবতীর্ণ করেছি।”

কারণ, এখানে দলিল-প্রমাণ এবং অকাট্য বিষয়বস্তু রয়েছে। এরপর যখন কেউ তা মানতে অস্বীকৃতি জানাবে, তা বাস্তবায়নের অস্বীকৃতি জানাবে, তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালা লোহা অবতরণ করেছেন। অর্থাৎ তলোয়ার, বর্শা, তীর দিয়ে তাদেরকে হত্যা করা হবে। নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কথাটি এভাবে বর্ণনা করেছেন-

عن ابن عمر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم بعثت بين يدي الساعة بالسيف حتى يعبد الله وحده لا شريك له، وجعل رزقي تحت ظل رمحي.

ইবনে উমর থেকে বর্ণিত, নবিজি বলেন, আমাকে কিয়ামতের পূর্বমুহূর্তে তলোয়ার দিয়ে প্রেরণ করা হয়েছে, (ততক্ষণ পর্যন্ত লড়াই করার জন্য) যতক্ষণ না একনিষ্ঠভাবে লা শারিক এক আল্লাহর ইবাদত করা হবে। আর আমার জীবিকা রাখা হয়েছে আমার বর্শার ছায়াতলে।

সুতরাং হে ঈমাদারগণ! তোমাদের জন্য সে শক্তিকে জোগাড় করে রাখা আবশ্যক।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَأَعِدُّوا۟ لَهُم مَّا ٱسْتَطَعْتُم مِّن قُوَّةٍ

“আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সাধ্যমত প্রস্তুতি গ্রহণ কর।”

যেন তোমাদেরকে নিজের অধিকার আদায় করার জন্য কাফেরদের করুণা প্রার্থনা করে ফিরতে না হয়, তোমাদেরকে দরজায় দরজায় ঘুরে ফিরতে না হয়, তোমাদের মানসম্মান যেন কাফের-মুশরিকদের দয়ার ওপর আটকে না থাকে যে, তারা যখন ইচ্ছা করবে তোমাদেরকে পদদলিত করবে, তোমাদেরকে এই পৃথিবীতে কাফেরদের দাসত্ব করার জন্য প্রেরণ করা হয় নি; বরং এই বিশ্বচরাচরের নেতাকর্তা বানিয়ে পাঠানো হয়েছে।

আর যদি তোমরা এই জিহাদকে ত্যাগ কর; তবে তোমাদের জন্য অবমাননা। আর তা ততক্ষণ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে, যতক্ষণ না আবার সে জিহাদের দিকে ফিরে আসা হবে। নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর হাদিসে বলেছেন-

إذا تبايعتم بالعينة واخذتم أذناب البقر ورضيتم بالرع وتركتم الجهاد سلط الله عليكم ذلا لا ينزعه ځتی ترجعوا إلى دينكم.

যখন তোমরা ঈনা ব্যবসা করবে এবং গরুর লেজ আকড়ে ধরে বসে যাবে, চাষবাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে পড়বে এবং জিহাদকে ত্যাগ করবে, তখন আল্লাহ তোমাদের ওপর এমন লাঞ্ছনা চাপিয়ে দেবেন, যা তোমাদের থেকে ততক্ষণ পর্যন্ত যাবে না, যতক্ষণ তোমরা আবার পরিপূর্ণ দীনে ফিরে আসতে জিহাদকে অবলম্বন করবে। [সুনানে আবু দাউদ- ৩৪৬২]

তবে এ কথাও মনে রাখতে হবে, কেউ জিহাদের ময়দানে না আসাতে আল্লাহর দীনের নিশ্চয় কোনো ক্ষতি হবে না, যদি দীনের জ্ঞানী সম্প্রদায় জিহাদে না আসে, যদি সমাজের ধনীশ্রেণি জিহাদের পথে সম্পদ খরচ না করে, জিহাদের পথে না আসে, তবেও আল্লাহ তাঁর দীনের জন্য কারো প্রতি মুখাপেক্ষী নন! আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছেন,

إِلاَّ تَنفِرُواْ يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ

যদি তোমরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে বের না হও, তবে আল্লাহ তোমাদেরকে মর্মদ শাস্তি দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করে দেবেন। [সুরা তাওবাঃ ৩৯]

আবার বলছেন,

وَإِن تَتَوَلَّوْا۟ يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ ثُمَّ لَا يَكُونُوٓا۟ أَمْثَٰلَكُم

“আর যদি তোমরা তাঁর প্রতি এবং তাঁর প্রেরিত দীনের প্রতি বিমুখ হও, তবে তিনি এমন জাতিগোষ্ঠীকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত বানাবেন, যাঁরা তোমাদের ন্যায় হবে না।” [সুরা মুহাম্মদ: ৩৮]

আল্লাহ তায়ালা এমন বীরবাহাদুর জাতি প্রেরণ করবেন, যারা কিনা শরিয়তের বিধিবিধান বাস্তবায়নের জন্য নিজের গর্দান দিতেও প্রস্তুত হয়ে যাবে, নিজের জীবনকে সওদা হিসেবে পেশ করবে, মৃত্যুকে হাসিমুখে বরণ করে নেবে, তাঁর জীবন বিধানকে বিজয়ী করার জন্য, তাঁর শরিয়তকে বাস্তবায়ন করার জন্য আল্লাহ এমন প্রেমিকদল তৈরি করে দেবেন, স্রষ্টার প্রেম তাদের অন্তরে তরঙ্গমালার ন্যায় প্রবলবেগে আছড়ে পড়বে, তাঁরা তাদের প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য এমন ব্যাকুল হয়ে পড়বে, যেমন মাছ পানি ব্যতীত ছটফট করতে থাকে, তাতে প্রবেশ করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তারা প্রেম ও ত্যাগের এমন ইতিহাস সৃষ্টি করবে যে, ইতিহাসও তাতে বিমূঢ় হয়ে যাবে। প্রেমিকগণ প্রেমের উপকরণ তাদের থেকে শিক্ষা করবে, অঙ্গীকার পালনকারীগণ নিজের অঙ্গীকারে ত্রুটির সবক নিয়ে আফসোস- পরিতাপ করতে থাকবে, তারা সেসব অন্তরের অধিকারী, যারা আমার ভালবাসায়, আমার দীনের ভালবাসায় আমার প্রেমিক রাসুল এবং আমার কুরআনের ভালবাসায় শরীরে বিস্ফোরক বেঁধে নিয়ে মুখে একত্ববাদের তাকবির লাগিয়ে তাদের প্রিয় জীবনকে আমার কাছে বিক্রি করে দেবে, যে জীবন কিনা দুনিয়ার প্রেমে মত্ত ব্যক্তিবর্গ বাঁচানোর জন্য নিজের আখিরাতকে পর্যন্ত বিক্রি করে চলছে! বারুদভর্তি গাড়ি নিয়ে আল্লাহর শত্রুদের সারির মাঝে এমন বীরত্বের সঙ্গে ঢুকে পড়বে যে, জান্নাতের হুরগণ পর্যন্ত সন্দেহে পড়ে যাবে! তাঁরা মৃত্যুকে তাড়িয়ে ফিরবে, ঠিক যেভাবে প্রবৃত্তির পূজারীরা পার্থিব জীবনের পেছনে ছুটে চলছে! মৃত্যু তাদের ভয়ে সন্ত্রস্ত হয় পড়বে, ঠিক যেমনিভাবে দুনিয়ার কুফর ও তার অনুসারীরা মৃত্যুকে ভয় করে থাকে!

আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি এই গ্রন্থের নীতিনিয়ম এবং তার বিধিবিধান পৃথিবীর বুকে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রেরণ করেছি। আমি এই গ্রন্থ এমনিতেই অবতীর্ণ করিনি এবং এ পৃথিবীকেও আমি অযথা সৃষ্টি করিনি। তার একটি লক্ষ্য উদ্দেশ্য অবশ্যই রয়েছে, এই আসমানি গ্রন্থ এবং নবিগণকে প্রেরণের একটি উদ্দেশ্য রয়েছে যে, পৃথিবীর মানবসৃষ্ট সমস্ত রীতিপ্রথাকে যেন তারা মিটিয়ে দিতে পারেন। যে স্রষ্টা এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, তার নীতিমালাই একমাত্র এই পৃথিবীর প্রভূতকল্যাণের জন্য প্রতিশ্রুতিশীল। তার বিধিবদ্ধ জীবনবিধানই কেবলমাত্র পৃথিবীতে চলতে পারে! নতুবা সর্বত্রে বিশৃঙ্খলা আর ধ্বংসযজ্ঞ ছড়িয়ে পড়বে। সর্বত্রে ধ্বংসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে, যখন মানবসৃষ্ট এসব নিয়মনীতিই অত্যাচারপ্রবণ, এমতাবস্থায় আল্লাহর সৃষ্টি কিভাবে ন্যায় ও ইনসাফের বিচার পেতে পারে? নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেতে পারে! বরং অত্যারীরা নেতৃত্বের আসনগুলো দখল করবে। দুর্বল অসহায়দেরকে নর্দমার কীটের মত পিষে ফেলতে চাইবে, এ কারণে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্ট জগৎ সংসারে তারই নীতিমালা বাস্তবায়ন হওয়া চাই!

আল্লাহ কুরআনে কাশ্মিরের অধিবাসীদেরকে জিহাদের প্রতি আহবান করে চলছেন! কাশ্মিরের মুসলমানদেরকে শহিদগণের রক্ত আত্মমর্যাদার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, এই জিহাদকে আবার নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, স্বাধীন ভূমি থেকে সমগ্র কাশ্মিরকে স্বাধীন করার জন্য, শ্রীনগরের লালচকে ইসলামের পূর্ণ তরঙ্গ সৃষ্টি করার জন্য, স্বাধীন আফগানের সীমান্ত থেকে দখলকৃত হিন্দুস্তানের স্বাধীনতার জন্য, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর জন্য!

আজ আফগানের ভূমি থেকে মুজাহিদগণ

হিন্দুস্তানের দিকে বেরিয়ে পড়ছে…

কোনো অদৃশ্যের ইঙ্গিতে নয়,

কোনো রাষ্ট্রীয় পলিসির ওপর ভিত্তি করে নয়…

শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালার আদেশ মান্য করার অভিপ্রায়ে।

শুধুমাত্র তাঁর ওপরই ভরসা করে,

গজনবি এবং গৌরির ইতিহাসকে আবার তাজা করতে,

আবার স্মরণ করিয়ে দিতে,

আওরঙ্গজেব এবং আবদালির মন্থনকৃত রাস্তাকে

আবার মন্থন করার জন্য,

দিল্লিতে দাঁড়িয়ে থাকা কুতুব মিনারের হৃদমর্যাদা

মুসলমানদের কাছে আবার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য,

তা উদ্ধার করার জন্য,

দিল্লির লাল কেল্লায় ইসলামের ঝাণ্ডাকে

আবার উডডীন করার জন্য,

দিল্লির জামে মসজিদে আমিরুল মুমিনিনের বক্তব্য

আবার গুঞ্জরিত করার জন্য!

প্রতারিত হবেন না, এসব কোনো কবির কবিতা আবৃত্তি নয়, এসব তো সেসব আল্লাহপ্রেমিকদের স্বপ্ন, যারা কিনা নিজেদের প্রতিপালকের সাহায্যে এর পূর্বের স্বপ্নগুলোকেও সত্যরূপে রূপ দান করেছিলেন।

এ তো আফগানের ভূমিতে রুশ বাহিনীর মত সুপার পাওয়ার লাঞ্ছনাকর পরাজয় বরণ করার স্বপ্ন, তারপর আল্লাহর জমিনে তাঁর বিধিবিধান বাস্তবায়নের স্বপ্ন, ইসলামি বিশ্বের ছোট ছোট শিশুর মুখে আমিরুল মুমিনিন শব্দ ব্যাপক করার স্বপ্ন, এরপর সময়ের ফিরাউন আমেরিকার ঔদ্ধত্যকে এই জমিনের ওপরই বিচূর্ণ করার স্বপ্ন…!!!

হে কাশ্মিরের আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মুসলমানেরা!

হে নব্বই হাজার শহিদের উত্তরসূরীগণ!

হে হিন্দুস্তানে বসবাসরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসারী গোলামগণ!

এ সময়কালতো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করার সময়কাল। সুতরাং, দৃঢ় বিশ্বাস রাখ, আমরা এবং আমাদের কাশ্মির এবং দিল্লিতে ইসলামের পতাকা উডডীন করার স্বপ্ন দেখে আসছি। হিন্দুস্তানের শাসকদেরকে জিঞ্জিরে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি! এসো, তোমরাও সে কাফেলায় যুক্ত হয়ে যাও, তাদের সহযোগী হয়ে যাও! খুরাসানের ভূমিতেই নিজের আবাস বানিয়ে নাও! কাশ্মিরের স্বাধীনতা এবং ভারতীয়দের ধ্বংসের স্বপ্ন, স্বাধীনভূমিতে বসবাস করেই কেবল সম্ভব, স্বাধীন জিহাদের জন্য স্বাধীন ভূখণ্ড, এসো, তোমরাও তাতে কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাও!

মনে রেখ, জিহাদ ব্যতীত ইসলাম কখনো স্বাধীন হতে পারে না! কুফরের শক্তিকে বিচূর্ণ করা ব্যতীত ইসলামের বিজয় অসম্ভব। অভিযোগ দায়ের, জবাবদিহিতা, সমঝোতা ইত্যাদি দিয়ে জাতির স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়। লড়াইয়ের রাস্তা ছেড়ে এসব অহেতুক মিছিল-মিটিং দিয়ে অত্যাচারীদের কী হবে, কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে যে, তারা তোমার ফরিয়াদ শুনবে বসে বসে! আমাদের শত্রুরা তো আলোচনা বৈঠক এজন্যই করে, যখন তার ওপর জিহাদের প্রহার গিয়ে পড়ে! তার শক্তির মাথা গিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি খায়, সে তখন বুঝে নেয়, মুসলমানের মধ্যে এতটুকু শক্তি আছে, যা দিয়ে তারা আমাদের প্রতিরোধ করতে সক্ষম, তখন তারা আমাদের শক্তির সঙ্গে টক্কর দিতে ভয় পায়। তারা আমাদের পেছনের ইতিহাস খুব ভাল করেই জানে! সুতরাং, তারা ধোঁকা-প্রতারণার আশ্রয় নিতে চায়, আমাদেরকে তারা শান্তির সবক শোনায়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমাদের অধিকার আদায়ের পাঠদান করে! অথচ এই গণতন্ত্র দিয়েই তো এসব অত্যাচারীরা সমগ্র ইসলামি বিশ্বকে নিজেদের গোলাম ও দাসে পরিণত করে নিয়েছে!

একটু স্মরণ করে দেখুন, জম্মু এবং কাশ্মিরে প্রতিটি জনপদকে তার আপনার এবং আমাদের প্রিয় যুবকদের রক্তে রঞ্জিত করেছে। সুতরাং, এই জিহাদকে টিকিয়ে রাখতে হবে, অব্যাহত রাখতে হবে! যে অঙ্গীকার আপনারা নিজেদের শহিদগণের সঙ্গে করেছিলেন, আল্লাহর সাহায্যের ওপর ভরসা করে তা পূর্ণ করুন। সেসব ওয়াদা-অঙ্গীকার যা কিনা বরফগলা রাতে করা হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন ঘটানো হবে, শরিয়ত বাস্তবায়ন হওয়া পর্যন্ত… কাশ্মিরের বাগবাগিচা, উপত্যকায় ইসলামি বসন্ত ঢেউ খেলানো পর্যন্ত, হয়ত শরিয়ত, নয়তো শাহাদাত পর্যন্ত…!!!

বাজুর শক্তি প্রদর্শন করে দেখাও, শিকারীর কাছে অভিযোগ করো না, আজ পর্যন্ত কোনো পিঞ্জিরা ফরিয়াদের মাধ্যমে ভেঙে যায় নি!

লড়াই চলবেই

প্রকাশনায়

আল-জান্নাত

গোপালগঞ্জ

Related Articles

২ Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × three =

Back to top button