আল কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ (AQIS)আস-সাহাব উপমহাদেশউস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহকাশ্মীর আর্কাইভবই ও রিসালাহবার্তা ও বিবৃতিমিডিয়াহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনঃ পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের ডাক! – উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ

মজলুম কাশ্মীরী মুসলমানদের সাহায্যের জন্য উপমহাদেশের মুসলমানদের প্রতি বার্তা

কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনঃ পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের ডাক!

– উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ

মুখপাত্র আল কায়েদা উপমহাদেশ

পিডিএফ ডাউনলোড করুন [২.২ মেগাবাইট]

  ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৫৫৫.৮ কিলোবাইট]

অনলাইনে পড়ুন

পিডিএফ ডাউনলোড করুন।

https://banglafiles.net/index.php/s/TMA3rAT4d5MLNS9
http://www.mediafire.com/file/4rarwg7701gihwr/kashmir_bn.pdf/file
https://archive.org/download/kashmir_byan/kashmir_bn.docx

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন।

https://banglafiles.net/index.php/s/jFAXd2KYiwe76Ng
http://www.mediafire.com/file/xyltx12k1nvgl6h/kashmir_bn.docx/file
https://archive.org/download/kashmir_bn_201905/kashmir_bn.docx

—————————-

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য এবং সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক তাঁর সম্মানিত রাসূলের উপর।
ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমান ভাইয়েরা!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।


রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বাণীঃ
“مثل المؤمنين في توادهم وتراحمهم وتعاطفهم مثل الجسد إذا اشتکی منه عضو تداعی له سائر الجسد بالسهر والحمی”
মুমিনদের পরস্পরের প্রতি ভালবাসা, দয়া ও সহানুভূতির সম্পর্কের উপমা একটি দেহের মত। যখন দেহের কোন অঙ্গ আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তখন পুরো দেহ কষ্ট ও ব্যাথায় থাকে।


রাসূল (ﷺ) আরও বলেন, “المسلم أخو المسلم لا يظلمه ولا يسلمه” মুসলমান মুসলমানের ভাই, না সে তাঁর উপর জুলম করে আর না সে তাঁকে অন্য কারও জুলমের কাছে সমর্পণ করে।
কিছু দিনের ভেতরে ভারতের আগ্রাসী বাহিনী ষাটের বেশি মুসলমানকে শহীদ করে, হাজার হাজার মুসলমানকে আহত করে এবং অসংখ্য মুসলমানকে জেলের ভেতর নিক্ষেপ করে। মা, বোন এবং বৃদ্ধদের চিৎকার ও আর্তনাদে প্রত্যেক মুসলমানের হৃদয় হয়েছে আঘাতপ্রাপ্ত। দ্বীনের প্রতি ভালবাসা এবং মুশরিক হিন্দুদের থেকে স্বাধীনতার জন্য কুরবানির এমন এক লম্বা সফর এটাই প্রমাণ করে যে, কাশ্মীরি জাতি এক জীবিত এবং ঈমানদার জাতি। এই জাতির ঈমানের প্রতি মর্যাদাবোধ মৃত নয়। ভারতীয় জুলম এই জাতির বিবেককে গুড়িয়ে দিতে পারেনি আর না আমাদের বিশ্বাসঘাতক এবং খেয়ানতকারীরা ইসলামের সাথে এর সম্পর্ক ভেঙে দিতে পেরেছে। যদি কেউ সঙ্গ দিয়েছে, তাহলে কাশ্মীরকে নিজের গ্রীবাস্থ ধমনী হিসেবে দাবি করে এবং সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে সফরের মাঝে তাদের একাকী ছেড়ে চলে গিয়েছে … এত কিছুর পরও এই জাতি কোন কিছুর পরোয়া না করে জালেম শাসকের সামনে দৃঢ় থাকে … কুরবানির পর কুরবানি দিয়ে সামনে এগিয়ে চলতে থাকে, কুফরের গোলামী করাকে অস্বীকার এবং আল্লাহর একত্ববাদের খোলাখুলি ঘোষণা দেওয়া তাদের জাতিসুলভ স্বভাবে পরিণত করে। আর ’ بہار ہوکہ خزاں ، لاالہ الا اللہ‘‘হোক অনুকূল অথবা হোক প্রতিকূল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর মত প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে দ্বীনি মর্যাদাবোধ থেকে এক পাও পিছু হটেনি। আল্লাহ কাছে দু’আ তিনি যেন কাশ্মীরি জাতির এই ঈমানের মর্যাদাবোধকে কবুল করেন, একে পুরো উপমহাদেশের জন্য নমুনা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন, এই জাতিকে দৃঢ়তার সাথে কুফরের মোকাবেলা করার যোগ্যতাসম্পন্ন নেতৃত্বের দিকনির্দেশনা উপহার দেন। আমিন।


আমাদের কাশ্মীরি ভাইদের এবং তাঁদের নেতাদের সাথে আমরা এই শহীদদের জন্য সমবেদনা প্রকাশ করছি। কিন্তু এই বয়ানের উদ্দেশ্য শুধু সমবেদনা প্রকাশ করা নয়, দুঃখ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা নয়, ফাঁকা কোন সমবেদনা বা দয়া দেখানো নয়, এই বয়ানের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নামের গলিত লাশের সামনে দাবী দাওয়া উপস্থাপন করার রাস্তা দেখানো নয়। বরং কাশ্মীরি ভাইদের ক্ষতের আরোগ্য করা, কাশ্মীরের মুসলমানদের সাহায্যের জন্য মুসলিম উম্মতের সামনে চিন্তা ও কর্মকাণ্ডের দাওয়াত উপস্থাপন করাই আমাদের উদ্দেশ্য।


সম্মানিত ভাইয়েরা!
এই দুঃখ ভারাক্রান্ত অবস্থায়, প্রধাণ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল রাস্তা চিনে নেওয়া, বন্ধু এবং শত্রুকে সনাক্ত করা। গন্তব্যের দিকে যদি আমরা এই প্রথম পদক্ষেপ সফলভাবে উঠিয়ে থাকি, তাহলে আমরা সত্যিকারভাবে এই মাজলুম জাতিকে সাহস যোগাতে পারব। প্রকৃতপক্ষে এটাই তাঁদের ক্ষতের আরোগ্য করবে। আর যদি আমরা চক্রের মাঝে ঘুরপাক খেতে থাকি, এবং অন্যদের বিপথে পরিচালিত করতে থাকি, ডাকু আর লুটেরাদের পথনির্দেশক হিসেবে নেই, মরীচিকাকে গন্তব্য ও লক্ষ্য বলতে থাকি, তাহলে তা হবে আমাদের পক্ষ থেকে এই মাজলুম জাতির প্রতি সর্বোচ্চ অন্যায় এবং অবিচার।


প্রিয় কাশ্মীরি ভাইয়েরা! ঈমানী চেতনায় ভরপুর যুবকেরা!
এখনও কি সময় হয়নি যে, আমরা তাদের বিদায় জানাব যারা শুধু সমবেদনা ও শুভকামনা জানিয়ে এসেছে কিন্তু কাশ্মীর বিরোধকে জিইয়ে রাখতে চেয়েছে, তারা যেই স্বরূপেই হোক না কেন – জাতিসংঘের স্বরূপে শয়তানের পরিচালনা বোর্ড, অথবা উম্মতের বিশ্বাসঘাতকের স্বরূপে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও সরকার। মজলুম কাশ্মীরিদের ইস্যু এই অনৈতিক, দুর্নীতি পরায়ণ লোকদের কাছে নোংরা এক খেলা অথবা কুৎসিত এক ব্যবসা ছাড়া আর কিছু নয়। যেহেতু এই পথের জন্য যে বুনিয়াদি গুণাগুণ – ঈমান, সততা ও শরীয়তের অনুসরণ – এসবের তারা ঘোর বিরোধী, কিভাবে বা কেন আমরা তাদের কাছ থেকে কল্যাণ আশা করতে পারি? “بتوں سے تجھ کو امیدیں ،خدا سے نومیدی” “প্রতিমার থেকে আশা আর আল্লাহর থেকে হতাশা”। কাশ্মীরের এই ক্ষতকে জিইয়ে রাখা তাদের রাজনীতির অংশ, মা-বোনদের আর্তনাদে তাদের ব্যবসার উন্নতি লাভ হয়, কাশ্মীর উপত্যকায় আগুন প্রজ্বলিত রাখা তাদের বিলাসবহুল জীবন ও বিনোদনের প্রতিরক্ষক। যে পথ তারা দেখায় তা শুধু ব্যর্থতা, অসহায়ত্ব ও বেদনায় গিয়েই শেষ হয়। দুঃখজনকভাবে এই মাজলুম জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতার ও খেয়ানতের কাহিনী কোনভাবেই বহিঃআগ্রাসন ও অত্যাচার থেকে কম নয়। আমাদের প্রিয়ভাজন, সহানুভূতিশীল ও স্বার্থপরদের চেনার জন্য ৬০-৬৫ বছর কি যথেষ্ট লম্বা সময় নয়!


কাশ্মীর এবং পুরো ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমান ভাইয়েরা!
এটা কি কোন গোপন বিষয় যে, জাতিসংঘ বিশ্বের অপরাধী চক্রের হাতের অস্ত্র ছাড়া আর কিছু নয়? এর ইতিহাস ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি শত্রুতার এক প্রকাশ্য অভিব্যক্তি। প্রতিষ্ঠার পরপরই এর প্রথম পদক্ষেপ ছিল পবিত্র ভূমি আল-কুদসে ইসরায়েলের অবৈধ অস্তিত্বের বৈধতা নেওয়া ও আইনের মাধ্যমে একে প্রতিষ্ঠিত করা। সাথে সাথে এটাই সেই প্রতিষ্ঠান যা ইহুদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে জিহাদকে সন্ত্রাস হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসছে। এটাই সেই প্রতিষ্ঠান যা চেচনিয়ার মাজলুম মুসলিমদের বিরুদ্ধে জালেম রাশিয়াকে শক্তিশালী করে আসছে। এই প্রতিষ্ঠানই সেই চীনের জুলমকে বৈধতার আচ্ছাদন দিয়ে রেখেছে, যেই চীন তুর্কিস্তান দখল করে রেখেছে। এই প্রতিষ্ঠানই জালেম ও দখলকারীদের আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাকে এবং সারা বিশ্বে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বাস্তব সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এরইসাথে, কাশ্মীরে হিন্দু দখলদারিত্ব কি এই জাতিসংঘের তত্ত্বাবধায়নেই হচ্ছেনা? কেনই বা এমনটা হবেনা, কারণ জাতিসংঘের নেতৃত্ব তো কেবল ঐ পাঁচটি দেশের হাতে যারা মুসলিমদের রক্ত ঝরানোতে আসক্ত হয়ে গেছে? এই ভেটো ক্ষমতার অধিকারী দেশগুলো, এই অপরাধী কুচক্রীরা সিরিয়াতে একতাবদ্ধ হয়েছে এবং মুসলমানদের উপরে সেখানে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, আমাদের এই সত্যকে মেনে নেওয়া উচিত যে, জাতিসংঘই কাশ্মীরসহ উম্মতের সব সমস্যার সমাধান তো নয়ই বরং সব সমস্যার কারণ! একবার যখন আমরা এই সত্যকে মেনে নিব তখন সত্যিকার এক সমাধানের দিকে যাওয়া আমাদের জন্য সহজ হবে।


উপমহাদেশের মুসলমান ভাইয়েরা!
কাশ্মীর সমস্যা শুধু কাশ্মীরের মুসলমানদের সমস্যা নয়। এটা পাকিস্তান ও ভারতের মুসলমানদের বরং আরও সঠিকভাবে বললে পুরো উম্মতের দেড় (১.৫) বিলিয়ন মুসলমানদের সমস্যা। এই সমস্যার মূল হল আক্বিদা। হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যকার পার্থক্যই এই বিরোধের ভিত্তি। আমরা মুসলমান জাতি হিসেবে এর সমাধান নির্ধারণের ব্যাপারে স্বাধীন নই; আমাদের এটা বাছাই করার সুযোগ নেই যে, কাশ্মীরের এবং উপমহাদেশের মুসলমানরা কুফর ও শিরকের কর্তৃত্বকে মেনে নিবে এবং এরপর এই স্লোগান দেবে, “হিন্দু মুসলমান ভাই ভাই”। আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) তাঁর কিতাবে এই বিরোধের সমাধান অবতীর্ণ করেছেন যা আমরা মানতে বাধ্য। এই সমাধানই হল জিহাদ। “کتب علیکم القتال” তোমাদের জন্য জিহাদকে ফরয করা হয়েছে। জালেমের জুলমকে বন্ধ করে মাজলুমকে সাহায্য করার জন্য জিহাদ, মানুষকে মানুষের গোলামী থেকে মুক্ত করে তাদের রব আল্লাহর গোলামীর দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই জিহাদ। গায়রুল্লাহর জুলমে ভরপুর ও জবরদস্তি শাসনব্যবস্থাকে ধ্বংস করা এবং ন্যায়পরায়ণ শাসনব্যবস্থা, আল্লাহর শরীয়তকে প্রতিষ্ঠার জন্যই জিহাদ … এটা ঐ জিহাদ যা আজ ফরযে আইন আর এই ফরযের প্রতি মুসলিম জাতি অক্ষমতা ও অবহেলায় রয়েছে যার ক্ষতি থেকে কাশ্মীরি এবং পুরো উপমহাদেশের মুসলমানরা আজ ভুগছে। আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, কাশ্মীর সমস্যা কোন রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এই সমস্যা বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত, এটি এমন একটি বিষয় যে ব্যাপারে আল্লাহর সামনে আমাদের হিসাব দিতে হবে। আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) আমাদেরকে একটি সমাধান, একটি রাস্তা, একটি মূলনীতি বলে দিয়েছেনঃ “وَقَاتِلُوهُم” তাদের সাথে যুদ্ধ কর। কতক্ষণ পর্যন্ত? “حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَة” যতক্ষণ পর্যন্ত কোন সংবিধান, কোন আইন, কোন ধর্ম, কোন শাসনব্যবস্থা বা কোন শক্তির কর্তৃত্ব না থাকে – শুধু আল্লাহর কিতাব, আল্লাহর দ্বীনের কর্তৃত্ব থাকে “وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ” … যতক্ষণ না আল্লাহর শরীয়ত আইনব্যবস্থায় পরিণত হয় এবং এর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়!!


আমার কাশ্মীরি মুসলমান ভাইয়েরা!
আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত যারা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন তাদের সাথে কিভাবে আচরণ করতে হবে তা আমাদের শিখিয়েছেন, আর এটাই হল জিহাদ ও কিতাল, আর তিনি আমাদেরকে এই জিহাদের মূল উদ্দেশ্য কি তাও বলেছেন। আর এই উদ্দেশ্য হল শরীয়তের প্রতিষ্ঠা। শরীয়তের প্রতিষ্ঠাই একমাত্র পারে মাজলুমের কান্নার মূলকে উৎপাটন করতে এবং অবিচারকে শেষ করে দিতে। জিহাদের উদ্দেশ্য মোটেই শুধু একজন জালেমকে সরিয়ে দিয়ে অন্য এক আল্লাহদ্রোহী জালেমকে মাজলুমদের উপর বসানো নয়। এর উদ্দেশ্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। এই ন্যায়বিচার মানুষরুপী শয়তানের অজ্ঞতার উপর প্রতিষ্ঠিত আইন-কানুনের মাঝে নেই। সত্যিকার ন্যায়বিচার হল তাই যা আল্লাহ, রাজাধিরাজ সাত আসমানের উপর থেকে অবতীর্ণ করেছেন। এই ঐশ্বরিক ন্যায়বিচার ছাড়া সব আইন, সব সংবিধান, সব ব্যবস্থা জুলম, অজ্ঞতা এবং আশরাফুল মাখলুকাত মানবজাতির অপমান ও মর্যাদাহানি। “وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ” যে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেননি সেই অনুযায়ী বিচার করে সেই জালেম। কাজেই, আমাদের জন্য জরুরী হল এই জুলম থেকে মুক্ত হওয়া এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা; এটা কখনও বিলাপ, কান্না, জালেমদের থেকে আমাদের অধিকার ভিক্ষা চাওয়া অথবা গণতন্ত্র নামের খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে না কখনও অর্জিত হয়েছে আর না কখনও অর্জিত হবে। মাজলুম কাশ্মীরিদের ন্যায়বিচার দেওয়া এবং উপমহাদেশের মুসলমানদের প্রকাশ্য জুলম ও নিষ্ঠুরতার কুফরি শাসনব্যবস্থা থেকে স্বাধীন করার একটাই রাস্তা তা হল জিহাদ। ফুকাহায়ে কিরামদের বইগুলো এই সত্যের সাক্ষী দেয় যে, আজ জিহাদ কোন নফল আমল নয়, এটা কোন মুসতাহাব নয়, বরং পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও রোযার মত এটি ফরযে আইন।


কাশ্মীর ও উপমহাদেশের মাজলুম মুসলমান ভাইয়েরা!
এরপর আমাদের এই সত্য মেনে নেওয়া ছাড়া অন্য কোন রাস্তা নেই যে, যদি এই জিহাদ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও এর গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রভাব থেকে মুক্ত না করা যায়, তাহলে মাজলুম কাশ্মীরি জাতির উপর জুলমের কালো রাত শুধু লম্বাই হবেনা, বরং এটা কখনও শেষই হবেনা। নবী (ﷺ) বলেন, “لايلدغ المؤمن من جحر مرتين” মুমিন কখনও একই গর্ত থেকে দুইবার দংশিত হয়না। কাশ্মীরের জিহাদের ইতিহাস কি এটা প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট নয় যে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর লক্ষ্য মাজলুম কাশ্মীরিদের সাহায্য করা নয়, বরং তাদের এখানে নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে। অর্থ সম্পদ জমা করা আর নিজেদের বিলাসী জীবনকে নিরাপদ করাই তাদের কৌশল। ভারত বা কাশ্মীরের মুসলমানদের প্রতিরক্ষার সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। যে সেনাবাহিনী মার্কিনী ডলারের বিনিময়ে ইসলামের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, আম মুসলিমদের এবং উম্মাহর মুজাহিদদের হত্যা করে, নিয়মিতভাবে মসজিদ ও মাদ্রাসার উপর বোমাবর্ষণ করে, যে বাহিনীর পেশাই হল আল্লাহর আইন যারা চায় তাদের উপর নির্যাতন করা; কিভাবে সেই বাহিনী নিজের পেশাদারিত্ব, বেতনভাতা বা আরাম-আয়েশকে মাজলুমদের জন্য ঝুঁকিতে ফেলতে পারবে। এটা অসম্ভব!


প্রিয় কাশ্মীরি ভাইয়েরা,
এখন হল মুসলিম উম্মতের জাগরণের এবং কাফেরদের অপমানের সময়। আজ, যারা উম্মতের রক্ষায় কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তারা কোন রাষ্ট্রীয় বাহিনী নয়। ইংরেজদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর কাজই হল কুফরি শাসনব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখা ও এর প্রতিরক্ষা করা। এরা ক্রুসেডারদের সাথে মিলে উম্মতের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে এবং ইসলামের পুনঃজাগরণের বিরুদ্ধে এরা সামনে থেকে লড়াই করছে। তাদের দায়িত্ব হল কাফেরদের তৈরি রক্তাক্ত সেই সীমানাকে রক্ষা করা যে সীমানা মুসলিমদেরকে বিভক্ত করে রেখেছে। আজ আফগানিস্তান থেকে শুরু করে সিরিয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসী ও আগ্রাসী বৈশ্বিক কাফেরদের বিরুদ্ধে যদি কেউ দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করে থাকে তাহলে তারা হল ইসলামের মুজাহিদরা। এরাই হল ঐ সিংহরা যারা কোন সশস্ত্র বাহিনী বা কোন সরকারের অধীনস্ত বা নির্ভরশীল নয়। আল্লাহ যিনি অমুখাপেক্ষী তিনি এঁদের পথপ্রদর্শনকারী ও সাহায্যকারী আর আম মুসলমান তাদের আনসার … !


আমার কাশ্মীরি তরুণ ভাইয়েরা ও বয়োজ্যেষ্ঠবৃন্দ,
মাজলুম কাশ্মীরিদের ক্ষতের আরোগ্যের জন্য এই মুজাহিদদের এবং মুসলিম জনতার দিকে ধাবিত হোন। শুধু এই মুজাহিদরাই আপনাদের দুঃখের আরোগ্য করতে পারবে, যারা তাঁদের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং নীতি কোন কিছুতেই কোন তাগুত সরকারের, সেনাবাহিনীর অথবা গোয়েন্দা সংস্থার উপর নির্ভরশীল বা অধীনস্ত নয়। ইতিহাস এই সত্যের সাক্ষ্য দেয় যে, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় অথবা তাদের তত্ত্বাবধায়নে যুদ্ধ, জিহাদের ফলকে নষ্ট করা এবং মাজলুম কাশ্মীরিদের উপর জুলমকে আরও বাড়ানোরই সমকক্ষ। এটা এই কারণে যে, একজন চাকরিজীবী সৈন্য এবং একজন মুজাহিদের আক্বীদা, আদর্শ, শিক্ষা এবং লক্ষ্যের মাঝে বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। ২০০২ সালে, যখন ভারতীয় সেনাবাহিনী সীমানা অভিমুখে অগ্রসর হয় এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে কিছুটা শক্তি প্রদর্শন করে, তখন পাকিস্তানি বাহিনী সম্পূর্ণ নতি স্বীকার করে নেয়। যেসব জেনারেলরা কিছুদিন আগ পর্যন্ত কাশ্মীর জিহাদের উকালতি করছিল, তারা একে “সন্ত্রাসবাদ” বলে আখ্যা দেয়। কাশ্মীরি প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মুজাফফারাবাদ এবং মানসেরা ক্যাম্পে মুহাজিররা কয়েদীতে পরিণত হয়। জিহাদের ময়দান থেকে তাঁদেরকে ফিরিয়ে কায়িক শ্রমে বাধ্য করা হয়। যদি কোন মুজাহিদ ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করে, তাহলে তাঁকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বুলেটে শহীদ করা হয়। কাশ্মীরকে নিজেদের ‘গ্রীবাস্থ ধমনী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে আসা লোকেরাই কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনের পিঠে নিজেদের ছুরি ঢুকিয়ে দেয় এবং মাজলুম কাশ্মীরিদের নির্দয় হিন্দুদের দয়া ও সম্মানের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়! … কেন? কারণ ভারতীয় সেনাবাহিনীর চাপের মুখে ও আমেরিকার অসন্তুষ্টির সামনে দৃঢ় থাকা তাদের মতবাদের অংশ নয়! কাশ্মীরি বোনদের ও মেয়েদের ইজ্জত লুণ্ঠিত হয় এবং অসহায় কাশ্মীরিদের উপর জুলম কোনভাবেই কম হয়না। পাকিস্তানি জেনারেলরা কাশ্মীরি জিহাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে সাময়িকভাবে নিজেদের মাথার উপর থেকে বিপদকে সরিয়ে দেয় … হিন্দুদের গর্ব ও জুলম চরম পর্যায়ে পৌঁছে, কিন্তু পাকিস্তানি সেনাসদস্যদের উর্দি, বেতনভাতা এবং বিলাসিতা নিরাপদ থাকে!


এর বিপরীতে আফগান ভূমির মুজাহিদ সিপাহশালার এবং মুমিন শাসকের উপমা দেখুন। এই মুজাহিদ যেহেতু কাকুল (পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একাডেমী) থেকে প্রশিক্ষণ নেননি … আল্লাহর কিতাব, মসজিদ, জিহাদের ময়দান থেকে তিনি তাঁর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন; এজন্য যখন আমেরিকা উনার কাছে একজন মুসলিমকে হস্তান্তরের দাবি করেন, তিনি সেই মুসলিমকে তাদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করেন। যুগের ফেরাউন হুমকি দেয় যে, আফগানিস্তানকে প্রস্তর যুগে ফেরত পাঠাবে; তিনি চাপে ঝুঁকে পড়েননি … তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “এটি কোন একজন ব্যক্তির ব্যাপার নয়, এটি ইসলাম ও কুফরের বিষয়। আমেরিকা যদি আফগানিস্তানের প্রত্যেকটি গাছ এবং পাথরকে ছাই বানিয়ে দেয়, তবুও কোন পরোয়া নেই। আমার ঈমানের মর্যাদাবোধ এটা কখনও সহ্য করবেনা যে আমি কোন মুসলমানকে কাফেরের হাতে হস্তান্তর করব।” আমেরিকা সব রকম অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পঞ্চাশের বেশি দেশ সাথে নিয়ে আগ্রাসন চালায়; ড্রোন, বি-৫২, এফ-১৬ সহ সব নতুন ধরণের প্রযুক্তির পরীক্ষা চালায়। আগুন ও বোমার বৃষ্টি বর্ষণ করা হয়। কিন্তু আল্লাহর এই মুজাহিদ বান্দারা এক মুহূর্তের জন্যও ঝুঁকেননি, ভীত হননি, লড়াই চালিয়ে গেছেন, কুরবানি ও শাহাদাতের এক মহান ইতিহাস রচনা করতে থাকেন। পরিশেষে আমেরিকা পরাজয়ের সূচনায় পৌঁছে যায়। ইসলামের সম্মান অর্জিত হয়। এমনকি আজকেও আফগানিস্তানের অর্ধেকের বেশি জায়গায় তাওহীদের পতাকা সজ্জিত। যে জিহাদী আন্দোলনকে বন্ধ করার জন্য আমেরিকা আফগানিস্তানের উপর হামলা চালিয়েছিল, তা আফগানিস্তানের বাইরে সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে!! আর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।


এটাই একজন মুজাহিদ এবং একজন চাকরিজীবী সৈন্যের মাঝে পার্থক্য। কিভাবে একজন মুজাহিদ যে আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখে, সে আর একজন চাকরিজীবী সৈন্য এক হতে পারে যে দুনিয়াবি শক্তিকে তার প্রভূ মনে করে? যে আল্লাহর জন্য যুদ্ধ করে এবং যে অর্থ ও পদোন্নতির জন্য অস্ত্র উঠায় এ দুইজনের পার্থক্য নগণ্য নয়! একজন মুজাহিদ কাফেরের চাপের মোকাবেলায়, তাঁর শক্তি ও প্রযুক্তি দেখে তাঁর বিশ্বাসকে বেচে দেয়না, সে কাফেরদের ভয়ে ভীত হয়ে তাঁর মাজলুম ভাইদের সহায় সম্বলহীন অসহায় অবস্থায় ফেলে চলে যায়না! চারপাশে শত্রুর শক্তির বহর দেখে তিনি তাদের সামনে ঝুঁকে পড়েননা, তিনি তাদের সামনে সিজদায় পড়ে যাননা বরং তাঁর বিশ্বাস তাঁর বিরুদ্ধে জালেমদের বলপ্রয়োগ দেখে আরও শক্তিশালী হয়। এটা এজন্য যে, তিনি আল্লাহর সাহায্য এবং আনুগত্যের মাঝে থেকেই লড়াই করেন! আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত বলেন,
الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ
অর্থাৎ মুমিন তারাই “যাদেরকে লোকেরা বলে, “নিশ্চয় লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে একত্র হয়েছে। সুতরাং তাদেরকে ভয় কর।” এটা তাদের ঈমানকে বৃদ্ধি করে এবং তাঁরা বলেন, “আল্লাহ আমাদের জন্য যথেষ্ট আর তিনি কতই না ভাল কার্যনির্বাহক”” … একজন মুজাহিদ জিহাদকে কোন জাতীয় নীতি নয়, বরং একটি ইবাদত মনে করে, মাজলুমদের সাহায্য করা তাঁর কাছে কোন নোংরা রাজনীতি নয়, বরং আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার উপায়। এর বিপরীতে, চাকরিজীবী একজন সৈন্য বিরোধী শক্তিকে দেখে মনোবল হারিয়ে ফেলে। সংখ্যায় ১,০০,০০০ হওয়ার পরও হিন্দু সৈন্যদের সামনে আত্মসমর্পণ করা তার জন্য কোন সমস্যায় নয়, অর্ধেকের বেশি পাকিস্তান হিন্দু, মুশরিক, মূর্তিপূজারীদের কাছে ছেড়ে দিয়ে “It’s part of the game” বলে নির্লজ্জতা ও মর্যাদাহীনতার এক নজিরবিহীন ইতিহাস সে তৈরি করে। এটাই ঈগলের মত মুজাহিদ এবং শকুনের মত চাকরিজীবী সৈনিকের মাঝে পার্থক্য!


پرواز ہے دونوں کی، اسی ایک فضا میں
کرگس کا جہاں اور ہے ، شاہیں کا جہاں اور
“উভয়ের উড়ার জায়গা একই,
কিন্তু ঈগলের দুনিয়া এক, আর শকুনের দুনিয়া আরেক”


তাই প্রিয় কাশ্মীরের ভাইয়েরা!
খাঁটি শরীয়তী ভিত্তির উপর কোন জিহাদী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠা ছাড়া কাশ্মীরের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব নয়; এমন এক আন্দোলন যা কোন সেনাবাহিনী অথবা সরকারের সহযোগিতা বা তত্ত্বাবধায়ন ব্যতিত চলবে, আর এর সহযোগিতায় থাকবে মুসলিম জনসাধারণ। এমন আন্দোলন যা আল্লাহর শত্রুদের সাথে শত্রুতায়, মুমিনদের সহযোগিতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী, যা কুফরি খেল-তামাশা ও গণতন্ত্রের ধোঁকা থেকে দূরে থাকা এবং শরীয়তের অনুসরণ নিজের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য মনে করে; এমন আন্দোলন যার লক্ষ্য কাশ্মীরের স্বাধীনতা ছাড়াও নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) এর দ্বীনের প্রতিষ্ঠা।


গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রভাবমুক্ত এমন খাঁটি জিহাদ কঠিন, কিন্তু তা নিঃসন্দেহে অসম্ভব নয়। এখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় সহজ এবং কঠিনের মাঝে নয়, বরং সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় জিহাদের ফলকে নিজের হাতে অথবা শত্রুর ঝুলিতে রাখার। আলহামদুলিল্লাহ, আজ সারা দুনিয়ায় তাগুতের সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত জিহাদ হচ্ছে। চেচনিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া, পশ্চিমা ইসলামী বিশ্ব, ইসলামী তুর্কিস্তান এবং সবার উপরে ইসলামী ইমারত আফগানিস্তান এবং সিরিয়া আমাদের জন্য উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এই জিহাদী আন্দোলনগুলো এই প্রমাণ করে যে, তাগুতী শক্তি এবং সরকারের সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত জিহাদী আন্দোলনের মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতিরক্ষা সম্ভব। বর্তমান সময়ের জিহাদের ইতিহাস থেকে আমরা এই শিক্ষাই অর্জন করি। এজন্য শুধু আল্লাহকে ভয় করা এবং তাঁর উপরই ভরসা করাই জরুরী। আল্লাহ আমাদের এই সত্য সম্পর্কেই অবহিত করেছেন –


وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا * وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ ۚ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ ۚ
অর্থাৎ “যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন”। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জিহাদ করবে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাঁকে পথ প্রদর্শন করবেন।
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَھْدِيَنَّھُمْ سُبُلَنَا
অর্থাৎ “যারা আমার পথে জিহাদ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব।” আমরা যদি আল্লাহর উপর ভরসা করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দাওয়াত ও জিহাদের পতাকা উত্তোলন করি, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই আমাদের সাহায্য করবেন।
إن تنصر اللہ ینصرکم !
“তোমরা যদি আল্লাহকে সাহায্য কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করবেন!”


কাজেই আমার তরুণ কাশ্মীরি ভাইয়েরা এবং সম্মানিত বয়োজ্যেষ্ঠবৃন্দ!
জুলম থেকে মুক্তি এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ এটাই। এই পথে আপনারা অগ্রসর হোন, আমরা আপনাদের সাথে আছি। সমস্ত বিশ্বের মুজাহিদরা আপনাদের সহযোগিতায় দাঁড়িয়ে আছে। পাকিস্তান ও ভারতের জনসাধারণ ইনশাআল্লাহ আপনাদের আনসার হবেন। আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। “إِنْ يَنْصُرْكُمُ اللَّه” যদি আল্লাহর আপনাদের সাহায্য করেন “فَلَا غَالِبَ لَكُمْ” তাহলে কেউ আপনাদের উপর বিজয়ী হতে পারবেনা। “وَإِنْ يَخْذُلْكُمْ” আর তিনি যদি আপনাদেরকে ত্যাগ করেন “فَمَنْ ذَا الَّذِي يَنْصُرُكُمْ مِنْ بَعْدِهِ” তাহলে তাঁর পরে কে আপনাদের সাহায্য করতে পারবে? “وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ” আর মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপরই ভরসা করা।


পাকিস্তানি, ভারতীয় ও বাংলাদেশি মুসলমান ভাইয়েরা!
কাশ্মীরি মাজলুম ভাইদের সাহায্য করা, উপমহাদেশে অত্যাচারী কুফরি শাসনব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য জিহাদ আমাদের উপর ফরয। কাশ্মীরি জনগণ অনেক কুরবানি দিয়েছেন, এই কুরবানি কেবল তখনই ফল দিতে পারবে যখন আমরা পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশের মুসলমানরাও ‘حیی علی الجہاد’ এর উত্তরে ‘لبیک’ বলব, এক সারিতে সারিবদ্ধ হয়ে জিহাদী কাফেলাকে শুধু শক্তিশালী করবনা, বরং জিহাদকে তাগুতের আক্রমণ ও ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচাব। অনেক দেরি হয়ে গেছে আরও দেরি আল্লাহর ভয়ংকর অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَا لَكُمْ إِذَا قِيلَ لَكُمُ انْفِرُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ اثَّاقَلْتُمْ إِلَى الْأَرْضِ أَرَضِيتُمْ بِالْحَيَاةِ الدُّنْيَا مِنَ الْآخِرَةِ فَمَا مَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فِي الْآخِرَةِ إِلَّا قَلِيلٌ (38) إِلَّا تَنْفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلَا تَضُرُّوهُ شَيْئًا وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ۔
“হে ঈমানদারগণ, তোমাদের কি হল, যখন আল্লাহর পথে বের হবার জন্যে তোমাদের বলা হয়, তখন মাটি জড়িয়ে ধর, তোমরা কি আখেরাতের পরিবর্তে দুনিয়ার জীবনে পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? অথচ আখেরাতের তুলনায় দুনিয়ার জীবনের উপকরণ অতি অল্প। যদি তোমরা বের না হও, তবে আল্লাহ তোমাদের মর্মন্তুদ আযাব দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন। তোমরা তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারবে না, আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান”।


আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দিন, কাশ্মীরি মুসলমানদের ধৈর্য্য ও দৃঢ়তাকে বাড়িয়ে দিন এবং এই মহান জাতির কুরবানির বরকতের মাধ্যমে উপমহাদেশে ইসলামের কর্তৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত করুন। কবুল করুন, হে রাব্বুল আলামিন।
وصلی اللہ تعالی علی خیر خلقہ محمد وآلہ وصحبہ أجمعین

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =

Back to top button