আফ্রিকাসংবাদসোমালিয়া

সোমালিয়ায় “উচ্চতর শরীয়াহ গবেষণা ইনস্টিটিউট” ছাত্রদের স্নাতক সনদ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করলো হারকাতুশ শাবাব !

 

(রজব ১৪৪০ হিজরী, মার্চ ২০১৯ ঈসায়ী)
“উচ্চতর শরীয়াহ গবেষণা কেন্দ্র” ১৪৩৯-৪০ শিক্ষাবর্ষে ইসলামী শরীয়াহর উপর গ্রেজুয়েশন সম্পন্ন করা ছাত্রদের উদ্দেশ্যে একটি সনদ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সোমালিয়ার ইসলামী রাষ্ট্র। “হারকাতু শাবাব মুজাহিদীন” এর সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও দাওয়াহ অফিস “ডিপার্টমেন্ট অফ একাডেমিক ইনস্টিটিউশন” শরীয়াতে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করা ছাত্রদেরকে তাদের একাডেমিক সাফল্যের জন্য সনদ প্রদান করেছেন।

এসময় উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শাইখ আবু আব্দুর রহমান, শাইখ আরসামী, শাইখ সুলতান বিন সুলতান, শাইখ হাসান ইয়াকুব আলী, শাইখ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ হাফিজাহুমুল্লাহ সহ হারকাতুশ শাবাবের সিনিয়র অনেক আলেমগণ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গোত্রীয় প্রধান ও স্নাতক ছাত্রদের অভিভাবকগণ।

ছাত্রদের তাদের গ্রুপভিত্তিক পরিচালিত উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পড়ালেখার দিকে লক্ষ্য রেখে সেখান থেকে সবচেয়ে যোগ্য ও মেধাবী ছাত্রদেরকে “শরীয়াহ ইনস্টিটিউশনে” শরীয়াহর উপর পাঁচ বছর মেয়াদী উচ্চতর কোর্সে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদান করা হয়।
এখন এখান থেকে সনদপ্রাপ্ত ছাত্ররা ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের বিষয়ের উপর উচ্চতর কোর্স করে শরীয়াহর উপর আরও যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হবে।

হারকাতুশ শাবাব মুজাহিদীন তাদের দাওয়াহ অফিসের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কার্যক্রম গোটা মুসলিম ভূখণ্ডের শিক্ষা প্রতিষ্ঠাসমূহের জন্য একটি উপযুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত ইসলামী সিলেবাস প্রদান করার মধ্যেই কেবল সীমাবদ্ধ রাখেননি, বরং সেই সাথে উপ-জাতীয় নেতাদের স্বনিয়ন্ত্রিত আঞ্চলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহযোগিতা ও তাদের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসাও করছেন।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে হারকাতুশ শাবাবের সিনিয়র নেতারা ও অ্যাডভোকেসি অফিসের কর্মকর্তাগণ নিজেদের হাতে এই বছরের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের স্নাতক ডিগ্রি প্রদান করেন। সার্টিফিকেট এবং বিশেষ উপহার ছাড়াও ১২৪জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের জন্যই ছিল একটি করে আধুনিক তুশিবা কম্পিউটার।

এদিকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী ছাত্রদের জন্য কম্পিউটার ও সনদ প্রদান ছাড়াও ছিল বিশেষ পুরস্কার।

প্রথম স্থান অধিকারী ছাত্র পুরস্কার অর্জন করেন ৫০০ ডলার (৪০ হাজার), সাথে বৈজ্ঞানিক বইসহ অনেকগুলো শরয়ী কিতাব।

দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ছাত্র পুরস্কার লাভ করেন ৩০০ ডলার (২৪ হাজার), সাথে বৈজ্ঞানিক বই ও অনেকগুলো শরয়ী কিতাব।

তৃতীয় স্থান অধিকারী ছাত্র পুরস্কার লাভ করেন ২০০ ডলার (১৬ হাজার), সাথে বৈজ্ঞানিক বই ও অনেকগুলো শরয়ী কিতাব।

উচ্চ শিক্ষার জন্য শরয়ী ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা মূলত ইসলামী রাজ্যগুলোর প্রশাসনের নিয়ন্ত্রিত ইসলামী আইন বিভাগের সেরা শিক্ষার্থী। যাদেরকে আরো যোগ্য করে তোলার জন্য সোমালিয়ার ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধানরা নির্বাচিত করেছেন। যারা আরো ৫ বছর হারকাতুশ শাবাবের নিয়ন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয়ে শরয়ী ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি বিজ্ঞান বিভাগেও দক্ষতা অর্জন করবেন।
প্রতি বছরই দেশটির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইসলামী আইন বিভাগে সফলতা অর্জনকারী সেরা শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে একটি কোর্সের আয়োজন করে হারকাতুশ শাবাব, এখান থেকে বাছাই করা ছাত্রদেরকেই হারকাতুশ শাবাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অনুমোদন দিয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছর ১২৪ জন শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য অনুমোদন পেলেন। এসকল শিক্ষার্থীরা এখন শরয়ী আইনের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও ইসলামী গবেষণায় দক্ষতা অর্জন করবেন ইনশাআল্লাহ।

অন্যদিকে, আমেরিকার নেতৃত্বাধীন কুফফার জোট অব্যাহতভাবে এই ইসলামী ভূখণ্ডের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সন্ত্রাসবাদ দমনের মিথ্যা অজুহাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গবেষণা কেন্দ্রগুলোতে বোম্বিং করে যাচ্ছে। অপরদিকে, হারকাতুশ শাবাব মুজাহিদীন মুসলিম উম্মাহর এই সম্পদগুলোকে কুফফার জোটের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করছেন এবং প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাকেন্দ্র নির্মাণ করে চলেছেন, যা ধর্মীয় সমাজ গঠনে ও মুসলিম উম্মাহর উন্নয়নে বড় ধরণের ভূমিকা রাখছে।
হারকাতুশ শাবাবের লক্ষ্য হচ্ছে সোমালিয়ার সকল মুসলিমদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষার মাধ্যমে তাদের অধিকার প্রদান করা। যার ফলে তাদের প্রকৃত ইসলামের জ্ঞান বিকশিত হবে এবং সকলে নৈতিক চরিত্রের অধিকারী হবেন।
শিক্ষাব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ক্বুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষাব্যবস্থায় রূপান্তরিত করা। আমরা আল্লাহ তায়ালার নিকট এই ব্যাপক কার্যক্রমে সাহায্য প্রার্থনা করছি।

সবশেষে, হারকাতুশ শাবাব ‍মুজাহিদীন সোমালিয়ার মুসলিম ও আদর্শবান উপ-জাতিগুলোকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, আপনারা আপনাদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যাপারে সচেতন হোন এবং তাদেরকে ইসলামিক আদর্শে লালন-পালন করুন, আর একটি আদর্শবান, মহৎ ও বিবেকবান জাতি গঠনে ভূমিকা রাখুন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + fourteen =

Back to top button