তাগুতের পুলিশ বাহিনীর হুকুম কি?
– তাগুতের পুলিশ বাহিনীর হুকুম কি?
প্রশ্নকারী রফিক রফিক
#উত্তর – বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হচ্ছে দলগতভাবে একটি মুরতাদ বাহিনী, যদিও এর ভিতর কোন কোন ফাসিক মুসলমান, এমনকি মুমিনও থাকতে পারে। তবে এই কারণে “এই মুরতাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্বক জিহাদের হুকুম” এ কোন পরিবর্তন হবে না।
মুরতাদ বাহিনী
১। এই মুরতাদ বাহিনীকে দলগত তাকফীরঃ
তাকফীর তাইফাতুল কুফর বা কোন দলকে তাকফীর করা – এই বিষয়টিকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদের ইজতিহাদের উপর ছেড়ে দেননি বরং এটা ঈমান ও কুফরের বিষয়।
এরকম পরিস্থিতি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময়ও এসেছিল যখন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়া একদল লোক ইসলাম ও মুসলমানদের বিরোধীতা করেছিল। তাদেরকে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে হত্যা করা হয়, আল কোরআনে এ কাজের প্রশংসা করা হয় এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটা অনুমোদন করেন।
এই ব্যাপারে দলিল দেবার পূর্বে আমরা এই ব্যাপারে কিছু মূলনীতি আলোচনা করতে চাই। তা হলো: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা মানুষকে শুধু নিজের জন্যই দায়বদ্ধ করেননি, বরং সে যে দলের আনুগত্য ও সমর্থন করে, সেই দলের জন্যও তাকে দায়বদ্ধ করেন। আমরা সকল ভাই-বোনকে এটা জানাতে চাই যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা প্রত্যেক ব্যক্তির ঈমানের ব্যাপারে দুইটি নিয়ম করেছেন। একটি হচ্ছে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে তার ঈমানের অবস্থা; আরেকটি হচ্ছে তার দল কিংবা যে দলের প্রতি তার আনুগত্য ও সমর্থন রয়েছে, যে দলের জন্য সে চেষ্টা-সাধনা করে, সময় ও শ্রম ব্যয় করে সেই দলের ঈমানের অবস্থা সংক্রান্ত।
এই বিবেচনায় মানুষ চার ধরনের হয়ে থাকে:
ক) ব্যক্তিগতভাবে মুসলমান এবং দলগত ভাবেও মুসলমান:
এরা হচ্ছেন ঐ সকল মানুষ যারা দ্বীন ইসলামে বিশ্বাস রাখেন ও এর পাঁচটি স্তম্ভের উপর আমল করেন। তারা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ইসলামের অনুসরণ করেন। এছাড়াও তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত কোন দলের জন্য কাজ করেন এবং সেটার প্রতি আনুগত্য পোষণ করেন। উদাহরণ স্বরুপ: আনসার ও মুহাজির উভয় দলের সাহাবা (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) গণ। কিংবা ঐসকল মুসলমান যারা এমন কোন খিলাফতের আনুগত্য করেন যা ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী শাসন করে, যেখানে এমনকি যদিও খলিফা জুলুমকারী হয়, শরীয়ত তখনো পূর্ণাঙ্গ থাকে এবং মুসলমানদের অধিকার সুরক্ষিত থাকে। ১৯২৪ সালে খিলাফত ধ্বংসের পর থেকে আর এই উদাহরণ উপস্থিত নেই। এখন এর উদাহরণ হচ্ছে: ঐ সকল মুসলমানগণ যারা ব্যক্তিগতভাবে ইসলাম পালন করছেন এবং ইসলামী শরীয়তের বিজয়ের জন্য চেষ্টা-সাধনা ও জিহাদ করছেন। এছাড়াও যারা এই সকল মুসলমানদেরকে সাহায্য করছেন, সমর্থন করছেন তারাও এই দলে পড়বেন যদিও তারা ঐ দলে শরীক হতে পারছেন না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেছেন:
لاَ يُكَلِّفُا للّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَاكَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَااكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَوَ لاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُعَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَاعَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
“আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে। হে আমাদের পালনকর্তা, যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তবে আমাদেরকে অপরাধী করবেন না। হে আমাদের পালনকর্তা! এবং আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছেন, হে আমাদের প্রভু! এবং আমাদের দ্বারা ঐ বোঝা বহন করাবেন না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন করুন। আমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। আপনিই আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কে সাহায্যে করুন।” – সূরা আল বাকারাহ: ২৮৬
খ) ব্যক্তিগতভাবে কাফের এবং দলগতভাবেও কাফের:
এরা হচ্ছে ঐ সকল লোক যারা আসল কাফের (অর্থাৎ, সে ইসলাম গ্রহন করে পরে কুফরীর মাধ্যমে দ্বীনত্যাগ করেনি, বরং পূর্বের থেকেই সে কাফের, যেমন: ইহুদী, খ্রীষ্টান ইত্যাদি) ও মুর্তাদ (যারা দ্বীন ইসলাম গ্রহন করে পরবর্তীতে বড় কুফর বা বড় শির্*ক করার মাধ্যমে দ্বীনত্যাগ করেছে) হবার কারণে ইসলামের বাহ্যিক আমলগুলি সম্পাদন করে না। এর আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে: যখন কোন ব্যক্তি কোন কাফের কিংবা মুর্তাদ দলের অনুগত থাকে এবং ঐ দলের পক্ষে কাজ করে।
উদাহরণ স্বরুপ: বর্তমান মুসলমান দেশসমূহে সেনাবাহিনীগুলোতে কর্মরত ইহুদী-খ্রীষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ, নাস্তিক, অগ্নি উপাসক ও দ্বীনের ব্যাপারে সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি ইত্যাদি। কারণ মুসলমান দেশের সেনাবাহিনীগুলিও বর্তমানে ইসলামী শরীয়তের রক্ষক না হয়ে বিরোধীতা করছে – তাই এসব সেনাবাহিনী দলগতভাবে কাফের দল।
গ) ব্যক্তিগতভাবে কাফের কিন্তু দলগতভাবে মুসলমান:
এর উদাহরণ হচ্ছে এমন ব্যক্তি যারা বাইরে ইসলামের আনুগত্য প্রকাশ করছে কিন্তু অন্তরে মুনাফেকীর কুফর রয়েছে। এবং সে এমন একটি দলের অংশ যারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা, তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মুমিনদের সাহায্য করছে। কিন্তু সে এই দলটিকে ধোঁকা দিয়ে লুকিয়ে আছে যাতে ভিতর থেকে এই দলটিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এজন্য সে বাহ্যিকভাবে ইবাদত-বন্দেগী করে থাকে। এই ইবাদত-বন্দেগীর কারণ হচ্ছে যাতে সে এই দলটিতে থাকতে পারে এবং তার মুনাফেকী করতে পারে, ঠিক যেমনটি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সময় আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সলুল করেছিল।
বর্তমান যুগে এর উদাহরণ হচ্ছে: মুর্তাদ সরকারের গোয়েন্দা বাহিনী যারা মুজাহিদীনদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের জন্য মুজাহিদ সেজে সম্মুখ সমরে যায়। এছাড়াও তারা বিভিন্ন ইসলামী আলোচনা ও মিটিং এ যোগদান করে।
তাদের স্বরুপ প্রকাশ পাবার আগ পর্যন্ত তাদের ব্যাপারটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার উপর ছেড়ে দিতে হবে। আর প্রকাশ পাবার পর তাদের উপর ইসলামী হদ জারি করা হবে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা দুরার আস সুন্নিয়া, ৯ম খন্ড,মুর্তাদের ব্যাপরে হুকুম অধ্যায়ে আছে।
ঘ) ব্যক্তিগতভাবে মুসলমান কিন্তু দলগতভাবে কাফের:
এই দলের বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। এটাকে ভালোভাবে না বুঝলে তাকফীরের ভুল প্রয়োগের সম্ভাবনা থেকে যাবে। খারেজী, তাকফীরী ও মুর্জিয়ারা এই দলের ব্যাপারে ভুল করে থাকে। এই রকম পরিস্থিতি বা দল নতুন কিছু নয়। বরং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে এবং সাহাবাদের (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) যুগেও এরকম দল ছিল যখন রিদ্দাহ্* এর ঘটনা ঘটেছিল। যখন তাতারীরা মুসলমানদের বিভিন্ন এলাকা দখল করে নিয়েছিল এবং মুসলমানরা কাফেরদের সাথে মেলামেশা করছিল সেই সময়েও এইরকম দল ছিল।
সত্যি কথা হলো: বর্তমান সময়েও মুসলমান উম্মাতের অধিকাংশের অবস্থাও তাই। ব্যক্তিগত ইবাদত ও ফরজ-ওয়াজিব পালনের ক্ষেত্রে হয়তো এসব মুসলমানদের অবস্থা ভালো হতেও পারে। এমনও হতে পারে যে সে তাহাজ্জুদ পালনকারী, হজ্জ্ব আদায়কারী। কিন্তু যারা *শরীয়তের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত, যারা মুমিনদেরকে হত্যা করছে, যারা সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করতে বাধাপ্রদান করছে – সে ঐসব লোকদেরকে সমর্থন করে। প্রকৃত কাফের অথবা মুর্তাদদের আদর্শিক বিজয়ের আগ পর্যন্ত সে তাদের পক্ষে প্রচেষ্টা চালায়। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে তায়েফের ঘটনায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।
যখন তায়েফবাসী ইসলাম গ্রহণ করার পরও সুদের ব্যবসা ছাড়তে রাজী হলো না, তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে প্রথমে নিষেধ করলেন, কিন্তু তারা এর জবাবে তলোয়ার বের করলো এবং সুদের ব্যবসা বন্ধ করতে অসম্মতি প্রকাশ করলো। যদিও তারা কালেমা পড়তো, আযান দিতো, নামাজ পড়তো কিন্তু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে একুশদিন ধরে যুদ্ধ করলেন। তিনি তাদের ঘাঁটি ঘিরে ফেললেন, তার ভিতর পাথর, আগুন ও সাপ-বিচ্ছু নিক্ষেপ করলেন যাতে তারা আত্মসমর্পণ করে – যদিও সেখানে নারী-শিশু-বৃদ্ধ ও অক্ষমরা ছিল। তাদের সবার সাথে কুফরের একটি দল হিসেবে আচরণ করা হয়েছে যদিও ব্যক্তিগতভাবে তারা নামাজ পড়তো কিংবা ইসলামের অন্যান্য বিধান মেনে চলতো। এছাড়াও যেসব মুসলমান কুরাইশ কাফেরদের সাথে অবস্থান করতো তাদের ব্যাপারে আলোচনায় আল কোরআনেও এই রকম উদাহরণ দেয়া হয়েছে। বদরের যুদ্ধের সময় ঐ সকল মুসলমানদেরকে কুরাইশরা যুদ্ধে যোগদানে বাধ্য করে যারা তখনও হিজরত করেনি। এর মাধ্যমে তারা তাদের সংখ্যার আধিক্য দেখিয়ে সাহাবাদের (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) ভয় দেখাতে চেয়েছিল। এসব মুসলমানদের মধ্যে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চাচা আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ও ছিলেন। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে: রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদেরকে (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) জানিয়েছিলেন যে, “বনী হাসিমের কিছু মানুষকে এই যুদ্ধে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে, যুদ্ধের ময়দানে উনাদেরকে সামনে পেলে যেন ছেড়ে দেয়া হয় কারণ তাদেরকে বাধ্য করা হয়েছে।” একথা শুনে একজন সাহাবী বলেছিলেন: “ওহ তাহলে আমরা আমাদের পরিবারকে হত্যা করবো আর আমাদের শত্রুদেরকে ছেড়ে দিবো, তাদেরকে হত্যা করবো না।” রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জবাব দিয়েছিলেন, “তোমার কি পছন্দ হবে যে, আমার চাচা আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর মুখে চড় মারা হোক?” উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে ঐ সাহাবীকে শাস্তি দেয়ার অনুমতি চাইলেন।
কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে এসবই পরিবর্তন হয়ে যায়। এবং সাহাবী (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) এর ছোঁড়া কিছু কিছু তীর ঐ সকল মুসলমানদের গায়ে লাগে যারা বাধ্য হয়ে কুরাইশদের পক্ষে যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন। মুহাজির ও আনসার (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) তখন ভয় পেয়ে বলতে থাকেন: “আমরা আমাদের ভাইদের হত্যা করেছি।” তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আয়াত নাযিল করেন:
إِنَّ الَّذِينَ تَوَفَّاهُمُ الْمَلآئِكَةُ ظَالِمِي أَنْفُسِهِمْ قَالُواْ فِيمَ كُنتُمْ قَالُواْ كُنَّا مُسْتَضْعَفِينَ فِي الأَرْضِ قَالْوَاْ أَلَمْ تَكُنْ أَرْضُ اللّهِ وَاسِعَةً فَتُهَاجِرُواْ فِيهَا فَأُوْلَـئِكَ مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ وَسَاءتْ مَصِيرً إِلاَّ الْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاء وَالْوِلْدَانِ لاَيَسْتَطِيعُونَ حِيلَةً وَلاَيَهْتَدُونَ سَبِيلاً
“যারা নিজের অনিষ্ট করে, ফেরেশতারা তাদের প্রাণ হরণ করে বলে, তোমরা কি অবস্থায় ছিলে? তারা বলে: এই ভূখন্ডে আমরা অসহায় ছিলাম। ফেরেশতারা বলে, আল্লাহর পৃথিবী কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা দেশত্যাগ করে সেখানে চলে যেতে? অতএব, এদের বাসস্থান হলো জাহান্নাম এবং তা অত্যন্ত মন্দ। কিন্তু পুরুষ, নারী ও শিশুদের মধ্যে যারা অসহায়, যারা কোন উপায় করতে পারে না এবং পথও জানে না তারা এর অন্তর্ভুক্ত নয়।” – সূরাহ্* আন নিসা: ৯৭-৯৮
এখানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা শুধু ঐ সকল দুর্বল মুসলমানদেরকে জাহান্নামের শাস্তি মাফ করে দেন যারা দুর্বল ও নিরুপায়। কিন্তু এই ঘটনায় কোন কুফরের দলকে কিভাবে দেখতে হবে, তাদের সাথে কি আচরণ করতে হবে এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে। বদরের যুদ্ধের পর আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) নিজের ও তার ভাতিজার জন্য এই বলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে অব্যাহতি চাচ্ছিলেন যে, তারা মুসলমান। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেনঃ “আপনার এই যুক্তিটি বাদ দিন। আপনারা একটি যুদ্ধরত কাফের দলের সাথে এসেছেন এবং আপনাদের সাথে যুদ্ধরত দলের মতোই আচরণ করা হবে। আপনাকে অবশ্যই নিজের ও নিজের ভাতিজার জন্য মুক্তিপণ আদায় করতে হবে।”
অন্য হাদীসে এসেছে: “আপনার বাহ্যিক অবস্থা দেখেই আমরা আপনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবো। আপনার অন্তরের ব্যাপার আল্লাহ দেখবেন।” (বিস্তারিত: সহীহ বুখারীতে এই আয়াতের তাফসীর ও কিতাবুল গাযওয়া)
তারপর তিনি আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে নিজের জন্য ও তার ভাতিজার জন্য মুক্তিপণ আদায় করতে নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আয়াত নাযিল করেন:
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّمَن فِي أَيْدِيكُم مِّنَ الأَسْرَى إِن يَعْلَمِ اللّهُ فِي قُلُوبِكُمْ خَيْرًا يُؤْتِكُمْ خَيْرًامِّمَّا أُخِذَ مِنكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيم
“হে নবী, যারা তোমার হাতে বন্দী হয়ে আছে তাদেরকে বলে দাও যে, আল্লাহ যদি তোমাদের অন্তরে কোন রকম মংগল চিন্তা রয়েছে বলে জানেন, তবে তোমাদেরকে তার চেয়ে বহুগুণ বেশী দান করবেন যা তোমাদের কাছ থেকে বিনিময়ে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া তোমাদেরকে তিনি ক্ষমা করে দিবেন। বস্তুতঃ আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।” – সূরাহ্* আল আনফাল: ৭০
অতঃপর আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বিশ আউন্স সোনা মুক্তিপণ হিসেবে প্রদান করেন। (বিস্তারিত: তাফসীর আল কুরতুবী, ইবনে কাসীর ও আত তাবারী)
কুফরের দল এবং ঈমানের দল চেনার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেছেন:
الَّذِينَ آمَنُواْ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللّهِ وَالَّذِينَ كَفَرُواْ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ الطَّاغُوتِ فَقَاتِلُواْ أَوْلِيَاء الشَّيْطَانِ إِنَّ كَيْدَ الشَّيْطَانِ كَانَ ضَعِيفًا
“যারা ঈমানদার তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে তাগুতের পক্ষে। সুতরাং তোমরা লড়াই করতে থাক শয়তানের পক্ষ অবলম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল।” – সূরা আন নিসা: ৭৬
এই আয়াত থেকে বিভিন্ন দলের ব্যাপারে তিনটি নিয়ম পাওয়া যায়:
ক) যারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার রাস্তায় লড়াই করে, তারা সাধারণভাবে মুমিন যদিও ঐদলে মুনাফিক থাকতে পারে। তারপরও সেটা মুমিনদের দল।
খ) যারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কোন প্রতিদ্বন্দীর জন্য অথবা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন আদর্শের জন্য লড়াই করে, তারা একটি কুফরের দল যদিও সেই দলে এমন কেউ থাকতে পারে যে কাফের নয়। বাহ্যিকভাবে তাদেরকে যে রকম দেখা যায়, সে হিসাবেই দলীয় ভাবে তাদেরকে কুফরের দল গণ্য করা হবে।
গ) এসব দলের ব্যাপারে আমাদের নীতি ও আচরণ কি হবে তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন। কোন দলের সাথে আমরা থাকবো, কোন দলকে আমরা সাহায্য করবো, তাও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলে দিয়েছেন। এই আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আমাদেরকে বাহ্যিক দিক দেখেই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বলেছেন এবং এই যুদ্ধ অবশ্যই চলবে।
তাহলে এটা সুস্পষ্ট হলো যে, যে উদ্দেশ্যে কোন দল যুদ্ধ করে থাকে, সেই উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা সেই দলকে কুফরের দল কিংবা ঈমানদারদের দল বলে আখ্যায়িত করেছেন। যদি কোন দল আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার আইন-বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করে তবে তারা ঈমানদারদের দল। যদি তারা তাগুতের জন্য লড়াই করে তবে তারা কুফরের দল। আর ইসলামী শরীয়ত এর পরিবর্তে অন্য যে সকল কিছু বা যে সকল ব্যক্তির কাছে মানুষ বিচার-ফায়সালার জন্য যায় তারাই হল তাগুত। আর সন্দেহাতীতভাবে এই প্রকার তাগুত হচ্ছে কুফরের দল।
এছাড়াও নীচের হাদীসেও একটি দলকে ঈমান ও অন্য দলকে কুফরের দল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “একটি বাহিনী কাবা শরীফে যুদ্ধের জন্য আসবে। তারা যখন বাইদাহতে আসবে তখন তাদের সর্বপ্রথম ব্যক্তি থেকে সর্বশেষ ব্যক্তি পর্যন্ত সবাইকে পৃথিবী গিলে ফেলবে।” আমি বললাম, “হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), কিভাবে পৃথিবী তাদের সর্বপ্রথম ব্যক্তি থেকে সর্বশেষ ব্যক্তি পর্যন্ত সবাইকে গিলে ফেলবে অথচ সেখানে কেউ কেউ থাকবে বাজারে আরও অনেকে থাকবে যারা ঐ বাহিনীর নয়।” তিনি বললেন: “সর্বপ্রথম ব্যক্তি থেকে সর্বশেষ ব্যক্তি পর্যন্ত সবাইকে পৃথিবী গিলে ফেলবে অতঃপর যার যার নিয়্যত অনুযায়ী তারা আখিরাতে উঠবে।” (সহীহ বুখারী)
ইমাম আহমদ, ইবনে মাজাহ ও তিরমিযী (রাহিমাহুল্লাহ) বর্ণিত হাদীসে এসেছে: “সেখানে তো অনেকে থাকবে যাদেরকে বাধ্য করা হয়েছে।” রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: “যার যার নিয়্যত অনুযায়ী তাদেরকে আখিরাতে উঠানো হবে।” ইমাম নাসায়ী (রাহিমাহুল্লাহ) এর বর্ণনায় এসেছে: “যদি তাদের মধ্যে কোন ঈমানদার থাকে তাহলে কি হবে?” এ থেকে বুঝা যায় যে ঐ বাহিনীটি একটি কুফরের দল যদিও এর ভিতরে কেউ কেউ ঈমানদার থাকবে।
যদিও ঐ বাহিনীটি একটি কুফরের দল কিন্তু এর ভিতরের প্রত্যেক ব্যক্তিকেই কাফের নাও বলা হতে পারে। এটাই হলো আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাহ এর সুষ্পষ্ট অবস্থান, আর এটাই দুই প্রান্তিক অবস্থানের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান।
তাই সেনাবাহিনী হোক কিংবা কোন বিভ্রান্ত দল হোক, যেমন: জাহমিয়া,যে কোন দলের উপর তাকফীরের ক্ষেত্রে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাহ এর মূলনীতি এটা নয় যে,তারা কোন দলের সকল ব্যক্তিকে একসাথে ব্যক্তিগতভাবে তাকফীর (তাকফীরুল মুয়াইয়িন) করেন।
এমনও হতে পারে যে, সেখানে কোন নিরুপায় বাধ্যগত মুসলমান আছে অথবা সেখানে সাময়িক অর্থনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য কোন ফাসেক মুসলমান আছে।
এমনকি সেই দলে কোন ভালো মুমিনও থাকতে পারে,যে সেই দলের ভিতর লুকিয়ে আছে যাতে মুসলমানদের সাহায্য করতে পারে। যেমন: মিশর সেনাবাহিনীতে খালিদ আল ইস্তাম্বুলি (রাহিমাহুল্লাহ) [[উনি ছিলেন মিশরের একজন আলেম শাইখ মুহাম্মাদ ইস্তাম্বুলী (রাহিমাহুল্লাহ) এর ভাই। মিশরের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদ আহমদ আনওয়ার আস সাদাত এর শাসনামলে মুহাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ) সেনাবাহিনীতে ছিলেন। তিনি ধীরে ধীরে সেনাবাহিনীর উচ্চ পদে আসিন হন। তার ভাইকে সত্য প্রকাশের জন্য জেলে প্রেরণ করার কিছুদিনের মধ্যেই মুহাম্মাদ (রাহিমাহুল্লাহ) সাদাতকে ৬ই অক্টোবর, ১৯৮১ তে হত্যা করেন। এই নায়োকোচিত ঘটনাটি টেলিভিশনে একটি সরাসরি অনুষ্ঠান চলাকালে তিনি সম্পন্ন করেন, যার মাধ্যমে সারা পৃথিবীর মানুষ প্রত্যক্ষ করে যে, সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ এখনও হাতের দ্বারাই সবচেয়ে ভালভাবে সম্পাদন করা যায়। অত:পর ভাই খালিদ (রাহিমাহুল্লাহ) কে তৎকালীন শাসকেরা বিচারের প্রহসনের মাধ্যমে মুবারকের ক্ষমতায়নের জন্য ঠান্ডা মাথায় খুন করে।]] ছিলেন অথবা ফেরাউনের পরিবারের সেই ব্যক্তি যার ব্যাপারে আল কোরআনে এসেছে:
وَقَالَ رَجُلٌ مُّؤْمِنٌ مِّنْ آلِ فِرْعَوْنَ يَكْتُمُ إِيمَانَهُ أَتَقْتُلُونَ رَجُلًا أَن يَقُولَ رَبِّيَ اللَّهُ وَقَدْجَاءكُم بِالْبَيِّنَاتِ مِن رَّبِّكُمْ وَإِنيَكُ كَاذِبًا فَعَلَيْهِ كَذِبُهُوَإِنيَكُ صَادِقًا يُصِبْكُم بَعْضُ الَّذِي يَعِدُكُمْ إِنَّ اللَّهَ لَايَهْدِي مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ كَذَّابٌ
“ফেরাউন গোত্রের এক মুমিন ব্যক্তি, যে তার ঈমান গোপন রাখতো, সে বললো, তোমরা কি একজনকে এজন্যে হত্যা করবে যে, সে বলে, আমার পালনকর্তা আল্লাহ, অথচ সে তোমাদের পালনকর্তার নিকট থেকে স্পষ্ট প্রমাণসহ তোমাদের কাছে এসেছে? যদি সে মিথ্যাবাদী হয়, তবে তার মিথ্যাবাদিতা তার উপরই বর্তাবে, আর যদি সে সত্যবাদী হয়, তবে সে যে শাস্তির কথা বলছে, তার কিছু না কিছু তোমাদের উপর পড়বেই। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারী, মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না।” – সূরা আল মুমিন ৪০:২৮
তবে এসব দুই-একটি ব্যতিক্রমধর্মী অবস্থার বিবেচনায় এই দলটির কাফের হবার শরীয়তি সিদ্ধান্তে কোন পরিবর্তন আসে না। ফেরাউনের পরিবারের দুই/এক জন মূসা (আঃ) কে রক্ষার চেষ্টা করেছিল বলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ফেরাউনের পরিবারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বদলে দেন নি।
তাই আমরা বুঝতে পারলাম যে, যারা তাগুতের জন্য মুসলমান ও মুজাহিদীনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তারা হচ্ছে কুফরের একটি দল। এসব শত্রুদের বিরুদ্ধে ততক্ষণ পর্যন্ত কঠোরভাবে যুদ্ধ করা উচিত যতক্ষণ না তারা ইসলাম ও ইসলামী শরীয়তে পরিপূর্ণভাবে ফিরে আসে। ছোট কিংবা বড় কোন ব্যাপারেই যাতে এই দল ইসলাম ছাড়া অন্য কোন কিছুর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত না নেয়।
যদিও এই দলের প্রত্যেক ব্যক্তিকে আমরা কাফের কিংবা মুর্তাদ বলি না কিন্তু এই দলের উচ্চপদস্থ নেতৃত্ব যারা বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়,তাদেরকে আমরা তাগুত বলি।
অপরদিকে, আমাদের মুসলমান দেশসমূহের সাধারণ মুসলমানরা বেশীরভাগই হচ্ছেন দুর্বল ও অসহায় এবং তাদের অধিকাংশই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ও তাঁর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর শরীয়তকে পছন্দ করেন।
এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট যা তাকফীরী / খারেজী দলগুলো ভুলে যায় এবং মুসলমান দেশসমূহের সাধারণ জনগণকে কাফের/ মুশরিক মনে করে। অথচ এই দলগুলোই আবার এসব দেশকে মুর্তাদ সরকারের হাত থেকে উদ্ধার করার আহবান জানায়। এখন যদি এসব দেশের বেশীরভাগ মানুষ কাফের-মুশরিকই হয়,তাহলে এসব দেশকে মুর্তাদদের হাত থেকে মুক্ত করে লাভ কি? কারণ এসব দেশ মুক্ত করার পর তাদের দৃষ্টিতে এ সকল ‘মুর্তাদ’দের (অর্থাৎ, সাধারণ জনগণকে) হত্যা করতে হবে!! এভাবেই অজ্ঞ এবং বোকা মুসলমানদের তারা আকর্ষণীয় বক্তব্যের মাধ্যমে ধোঁকা দেয় এবং ক্ষমতার প্রলোভন দেখায়।
সুত্রঃ শাইখ আবু হামযা আল মিসরী (আল্লাহ তাঁকে বন্দীত্ব থেকে মুক্ত করুন)
২। এই মুরতাদ বাইনীর ব্যাপারে হুকুমঃ
বর্তমান বিশ্বের যেকোন দেশের সেনাবাহিনীর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলিমদের শত্রুদের স্বার্থ রক্ষা করা। এটা হচ্ছে মুসলিম ইতিহাসের মধ্যে অত্যন্ত জঘন্যতম একটি অধ্যায়!
এই সেনাবাহিনীর দ্বারা দুইটি উদ্দেশ্যকে বাসত্মবায়ন করা হয়ঃ
প্রথমতঃ দেশের রাজা অথবা প্রেসিডেন্ট এবং তার সহচরদেরকে রক্ষা করা অর্থাৎ তাগুতের রক্ষাকারী
দ্বিতীয়তঃ এই উম্মতের শত্রু অর্থাৎ ইহুদী এবং আগ্রাসী (আমেরিকার) শক্তির স্বার্থ রক্ষা করা।
সুতরাং যদি কোন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ছাড়া এই ফরজ আমল দুটি পালন করা সম্ভব না হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাও তখন ফরজ হয়ে যায়।
– এই সেনাবাহিনী মুসলিম দেশগুলোতে মুরতাদ শাসকদেরকে রক্ষা করছে।
– এরা ইসলামী শরীয়াহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এবং
– যারা এই শরীয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাদেরকে হত্যা করছে।
– তারা আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করার জন্য পাকিস্থান, সোমালিয়া এবং পশ্চিমা বিশ্বের মুজাহিদীনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।
যদি সেনাবাহিনীর অবস্থা এই হয় তবে কেন এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ঐ সকল মুজাহিদীনদেরকে দোষারোপ করা হচ্ছে যে, ‘তারা মুসলিম বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে’? এটা কোন্ ধরনের বিভ্রান্তকর যুক্তি?
দোষারোপ তো করা উচিত ঐ সকল সেনাবাহিনীদের প্রতি যারা সামান্য বেতনের বিনিময়েঃ
– স্বেচ্ছায় সোয়াতের মুসলিমদের হত্যা করছে,
– বোমা দিয়ে ধ্বংস করছে মসজিদগুলোকে যেমনটি তারা লাল মসজিদের সাথে করেছে
– সোমালিয়াতে মহিলা ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করছে।
ঐ সেনাবাহিনীগুলো নিষ্ঠুর পশুর মত! যারা সামান্য ডলারের বিনিময়ে নিজেদের দ্বীনকে বিক্রি করে দিচ্ছে এবং মানুষরূপী কিছু শয়তানের সামনে তাদের মাথা নত করে আছে। এরাই এই উম্মদের সবচেয়ে বড় শত্রু এবং সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব।
যারা এই সেনাবাহিনীর বিরূদ্ধে যুদ্ধ করছে তাদের উপর আল্লাহর দয়া ও রহমত বর্ষণ করুন এবং যারা এদের দ্বারা নিহত হচ্ছেন সেই সকল শহীদদের উপর আল্লাহর দয়া ও রহমত দান করুন।