আন-নাসর মিডিয়াবই ও রিসালাহবই ও রিসালাহ [আন নাসর]বার্তা ও বিবৃতিবার্তা ও বিবৃতি [আন নাসর]মিডিয়া

ইমারাতে ইসলামিয়ার বার্তা – মুসলিম জাতির সম্মানিত আলেমদের প্রতি

ইমারাতে ইসলামিয়ার বার্তা – মুসলিম জাতির সম্মানিত আলেমদের প্রতি

ইমারাতে ইসলামিয়ার বার্তা – মুসলিম জাতির সম্মানিত আলেমদের প্রতি

ডাউনলোড লিংকঃ
————

পিডিএফঃ ইমারাতে ইসলামিয়ার বার্তা – মুসলিম জাতির সম্মানিত আলেমদের প্রতি (পিডিএফ)

ডকুমেন্টঃ ইমারাতে ইসলামিয়ার বার্তা – মুসলিম জাতির সম্মানিত আলেমদের প্রতি (ডকুমেন্ট)

 

পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৫১১কেবি]

https://banglafiles.net/index.php/s/j6B29kMWnppg4EA

https://archive.org/download/IeaBarta/iea%20barta.pdf

https://www.file-upload.com/fu7mkjlayv76
http://www.mediafire.com/file/uy82f381dkhf2ba/iea_barta.pdf/file

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৩৮কেবি]

https://banglafiles.net/index.php/s/8xr8xJjwAxWrT65

https://archive.org/download/IeaBarta/iea%20barta.docx

https://www.file-upload.com/s0tpateqswpt
http://www.mediafire.com/file/d6fuou1x11kcg49/iea_barta.docx/file

===================

সম্ভাব্য উলামা পরিষদ গঠনকে সামনে রেখে

মুসলিম জাতির সম্মানিত আলেমদের প্রতি

 

ইমারাতে ইসলামিয়ার বার্তা

বাংলা অনুবাদ এবং পরিবেশনায়

আন-নাসর মিডিয়া

 

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং তিনিই যথেষ্ট। দরূদ ও সালাম তার নির্বাচিত নবীর উপর। তারপর: আল্লাহ তা’আলা প্রজ্ঞাময় কুরআনে বলেন:

( إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَزِيزٌ غَفُورٌ)

নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে আলেমগণই আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীল।” (সূরা ফাতির ২৮)

 

হে সম্মানিত আলেমগণ!

আস-সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ!

আপনারা ভাল করেই জানেন: নবুওয়াতের ধারাবাহিকতা শেষ হওয়ার পর সমস্ত মুসলিম জাতির পথপ্রদর্শন, সংশোধন ও আধ্যাত্মিক নেতৃত্ব দানের গুরু দয়িত্বটি আলেমদের উপর অর্পিত হয়েছে। নিশ্চয়ই উম্মতের ব্যক্তিগত সংশোধনের দায়িত্ব ছাড়াও মুসলমানদের বড় বড় বিষয়গুলোতেও আলেমদের মহা দায়িত্ব রয়েছে। নিশ্চয়ই আফগানিস্তানে চলমান জিহাদের ব্যাপারটি বর্তমানে উম্মতের সব চেয়ে বড় ব্যাপার বলে ধর্তব্য। এটি এমন একটি ব্যাপার, যাতে কোন জটিলতা নেই এবং তা কারো বুঝতে কঠিন হওয়ারও কথা নয়।

আপনারা জানেন, প্রায় ১৫ বছর পূর্বে এই ভূমিতে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত ছিল। রাজনৈতিক ক্ষমতা ছিল একটি জিহাদী দলের হাতে, যারা পবিত্রতা ও নিয়মানুবর্তিতার ক্ষেত্রে সমাজে সবার থেকে অগ্রগামী ছিল। তারা ছিলেন শরয়ী ইলমের তালিব ও সম্মানিত আলেমগণ।

আপনারা জনেন, সে মময় পবিত্র শরীয়ত কার্যকর ছিল। হুদুদ ও কিসাস বাস্তবায়িত হত। সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধের কুরআনী হুকুম সর্বত্র বিরাজমান ছিল। রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি সহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কেবল কুরআন-সুন্নাহর আলোকেই শাসন পরিচালনা করা হত।

কিন্তু ইসলামের ঐতিহাসিক শত্রুরা চৌদ্দশত বৎসর ধরে ইসলামের বিরুদ্ধে শত্রুতা করে আসছে, বিশেষত: ইসলামের রাজনৈতিক শাসনের বিরুদ্ধে। ক্রুসেড যুদ্ধ ও সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে তারা উম্মাতে ইসলামীয়ার অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করেছে। ইসলামের ঐ সকল পশ্চিমা ঐতিহাসিক শত্রুরা এবার আমেরিকার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা ইমারাতে ইসলামীয়ার বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক অবস্থানের স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে। প্রথমে তারা মিডিয়া যুদ্ধের মাধ্যমে সূচনা করেছে। তারপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও রাজনৈতিক অবরোধের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। তৃতীয় ধাপে তারা আমাদের দেশে ও আমাদের ইসলামী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক আক্রমণ চালিয়েছে।  সীমালঙ্ঘনকারী ও জালেম পাশ্চাত্যবাদীরা আমাদের ইসলামী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়। আমাদের ভূমি ছিনিয়ে নেয় এবং নিজ দেশেই আমাদেরকে পরাধীন ও পরাজিত করে রাখে। আমাদের দেশের ভূমি ও আকাশপথের উপর তারা কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ফেলে এবং তাদের সাম্রাজ্যবাদী পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাদের ভূমিতেই তাদের সামরিক ঘাটি ও বিমানঘাটি নির্মাণ করে। আমাদের আত্মমর্যাদাশীল জিহাদী জনগণকে লাঞ্ছিত করার জন্য আমাদের সমাজ থেকে পালয়নকারী ও পাশ্চাত্যে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী তাদের এজেন্টদেরকে ফিরিয়ে আনে এবং তাদেরকে এখানে শাসক বানায়। যদিও তখন আমাদের জাতি ছিল পরাধীন, পরাভূত ও নিপীড়িত, তথাপি ১৫ শ’ সম্মানিত আলেমের পক্ষ থেকে ফাতওয়া আসে, আগ্রাসী আমেরিকার সীমালঙ্ঘন প্রতিহত করার জন্য জিহাদ শুরু করার। তাদেরকে শরীয়তের পরিস্কার বর্ণনাসমূহের আলোকে জিহাদের ফরজ আদায় করতে বলা হয়। যেমন:-

(وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِ‌جُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَ‌جُوكُمْ ۚ وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ ۚ وَلَا تُقَاتِلُوهُمْ عِندَ

الْمَسْجِدِ الْحَرَ‌امِ حَتَّىٰ يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ ۖ فَإِن قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ ۗ كَذَٰلِكَ جَزَاءُ الْكَافِرِ‌ينَ ﴿١٩١﴾). [البقرة]

অনুবাদঃ তাদেরকে যেখানেই পাও, হত্যা কর এবং তারা তোমাদেরকে যেখান থেকে বহিস্কৃত করেছে, তোমরাও তাদেরকে সেখান হতে বহিষ্কৃত কর এবং হত্যা অপেক্ষা ফেতনা-ফাসাদ (কুফর ও শিরক) গুরুতর অপরাধ এবং তোমরা তাদের সাথে মসজিদুল হারামের নিকট যুদ্ধ করো না, যে পর্যন্ত না তারা তোমাদের সাথে তন্মধ্যে যুদ্ধ করে; কিন্তু যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তবে তোমরাও তাদেরকে হত্যা কর; কাফেরদের জন্য এটাই প্রতিফল।  (সূরা বাকারা /১৯১)

(أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا وَإِنَّ اللَّهَ عَلَى نَصْرِهِمْ لَقَدِيرٌ (۳۹) الَّذِينَ أُخْرِ‌جُوا مِن دِيَارِ‌هِم بِغَيْرِ‌ حَقٍّ إِلَّا أَن يَقُولُوا رَ‌بُّنَا اللَّـهُ ۗ وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّـهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ‌ فِيهَا اسْمُ اللَّـهِ كَثِيرً‌ا ۗ وَلَيَنصُرَ‌نَّ اللَّـهُ مَن يَنصُرُ‌هُ ۗ إِنَّ اللَّـهَ لَقَوِيٌّ عَزِيزٌ ﴿٤٠﴾). [سورة الحج].

অনুবাদঃ  (যুদ্ধের) অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে; কারন, তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে; আল্লাহ নিশ্চয় তাদেরকে সাহায্য করতে সম্যক সক্ষম। তাদেরকে তাদের ঘরবাড়ী হতে অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত করা হয়েছে শুধু এ কারনে যে, তারা বলেঃ আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ; আল্লাহ যদি মানব জাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে বিধবস্ত হয়ে যেতো খ্রিষ্টান- সংসার বিরাগীদের উপাসনালয়, গির্জা, ইয়াহুদীদের উপাসনালয় এবং মসজিদ সমূহ যাতে অধিক স্মরণ করা হয় আল্লাহর নাম; আল্লাহ নিশ্চয়ই তাকে সাহায্য করেন যে তাঁকে সাহায্য করে; আল্লাহ নিশ্চয়ই শক্তিমান পরাক্রমশালী।  (সূরা হাজ্জ /৩৯-৪০)

ـــ وَعَنْ أَنَس بن مالک رضي الله عنه، قال: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «جَاهِدُوا الْمُشْرِكِينَ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ وَأَلْسِنَتِكُمْ». [رواه ابو داوود ۳۲/۲ والنسائي ۷/۶ والحاکم ۸۱/۲

“আনাস ইবনে মালিক রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সা: বলেন: তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে তোমাদের সম্পদ, জান ও জবানের দ্বারা জিহাদ কর।”

হানাফী ফিকহের আলোকে এই বিধানটি:

وَفي الهندية (۸۸/۲) وَعَامَةِ الْمَشَايخِ رحمهم الله تعالى قَالُوا: الجِهادُ فَرْضٌ عَلَى كُلّ حَالٍ غَيْرَ أنَّهُ قَبْلَ النَّفِيرِ فَرْض كِفَايَة وَبَعْدَ النَّفِيرِ يَصِيرُ فَرْض عَيْنٍ وَهُوَ الصَّحِيْح، وَمَعْنَى النَّفِيرِ أنْ يُّخْبِرَ أهْل الْمَدِينَة أنَّ الْعَدُوَّ قَدْ جَاءَ يُرِيْدُ أنْفُسَكُمْ وَذُرَارِيْكُمْ وَأمْوَالَكُمْ فَإِذَا أُخْبِرُوا عَلَى هَذَا الْوَجْهِ افْتَرَضَ عَلَى كُلّ مَنْ قَدَرَ عَلَى الْجَهَادِ مِنْ أهْلِ تِلْكَ الْبَلْدَةِ أَنْ يَّخْرُجُوا لِلْجِهَادِ وَقَبْلَ هَذَا الْخَبَرِ كَانُوا فِي سَعَة أنْ لَّا يَخْرُجُوا.

ـــ وفي المبسوط للإمام السرخسي (۲-۱۰): ثم أمر رسول الله صلى الله وسلم بالقتال إذا كانت البداية منهم فقال تعالى ﴿أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بِأَنَّهُمْ ظُلِمُوا﴾. [البقرة: ۱۹۱] أي: أذن لهم في الدفع وقال تعالى: ﴿فَإِنْ قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ﴾ [البقرة:۱۹۱]. وقال تعالى: ﴿وَإِنْ جَنَحُوا لِلسَّلْمِ فَاجْنَحْ لَهَا﴾ [الأنفال: ۶۱]. ثم أمر بالبداية بالقتال فقال تعالى: ﴿وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لا تَكُونَ فِتْنَةٌ﴾ [البقرة: ۱۹۷].

“ফাতওয়ায়ে আলমগীরী (পৃ: ২/৮৮) তে রয়েছে, আলেমদের সর্বসাধরণের মত হল, জিহাদ সকল অবস্থায়ই ফরজ। তবে ‘নাফির’ এর পূর্বে ফরজে কিফায়া থাকে, আর নাফিরের পর ফরজে আইন হয়ে যায়। আর এটিই বিশুদ্ধ মত। ‘নাফির’ অর্থ হল: শহরবাসীদের নিকট এই সংবাদ আসা যে, শত্রু তোমাদেরকে এবং তোমাদের সন্তান ও সম্পদসমূহ ধ্বংস করার জন্য তোমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। যখন তাদের নিকট এভাবে সংবাদ পৌঁছলো, তখন ঐ শহরের যারা জিহাদে সক্ষম তাদের প্রত্যেকের উপর জিহাদ ফরজ হয়ে গেল। আর এই সংবাদ পৌঁছার পূর্বে তাদের বের না হওয়ারও সুযোগ ছিল।

ইমাম সারাখসী রহ: এর মাবসূতে (১০/২ ) রয়েছে:

অত:পর রাসূলুল্লাহ সা: কে যুদ্ধের আদেশ করা হল, কেবলমাত্র যখন তাদের পক্ষ থেকে শুরু হবে তখনই। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা আয়াত নাযিল করলেন: “যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হচ্ছে, তাদেরকেও যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হল। কারণ তারা জুলুমের শিকার হয়েছে।” অর্থাৎ তাদেরকে প্রতিহত করার অনুমতি দেওয়া হল। আল্লাহ আরো বলেন: “তারা যদি তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তবে তোমরাও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর।” আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন: “তারা যদি সন্ধির প্রতি ঝুকে পড়ে, তবে তোমরাও তার প্রতি ঝুকে পড়।”

অত:পর আল্লাহ তা’আলা প্রথমে যুদ্ধ শুরু করার আদেশ করে আয়াত নাযিল করেন: “তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাক, যতক্ষণ না ফিৎনা নির্মূল হয়”।”

সম্মানিত আলেমদের ফাতওয়ার আলোকে ইমারতে ইসলামীয়ার মুজাহিদগণ কুফরের সীমালঙ্ঘন প্রতিহত করার জন্য দৃঢ় সংকল্পের সাথে এক নেতৃত্বের অধীনে জিহাদ শুরু করেন।

এই জিহাদী লড়াই দীর্ঘ ১৪ বছরে বিভিন্ন স্তর ও সংকট অতিক্রম করে এই পর্যায়ে এসে পৌছেছে যে, পশ্চিমা দখলদারদের স্বশস্ত্র সৈন্য সংখ্যা দাড়িয়েছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার। যারা সর্বপ্রকার উন্নতমানের অস্ত্র, ট্যাংক, বিমান ও অত্যাধুনিক যুদ্ধ-সরঞ্জামাদীতে সুসজ্জিত। এর সাথে কয়েক দশক হাজার স্থানীয় দালাল সেনাবাহিনীকেও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করে তারা, তাদেরকে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বের করে এবং তাদের প্রত্যেককেই আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বেতনভূক্ত কর্মচারি বানায়। অনেক সময়ই এই যুদ্ধারা আকাশ পথে ঘৃণ্য বোমা হামলা চালায়। এভাবে তারা এক ঐতিহাসিক জুলুম ও অপরাধে লিপ্ত হয়। কিন্তু তারা তাদের এসকল কৌশল ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমাদের ঈমানদার জনগণের সংকল্পে সামান্যও চির ধরাতে ব্যর্থ হয়।

সমস্ত প্রশংসাই আল্লাহর জন্য। তার সাহায্যেই সব কিছু হয়। তাই আমাদের মুজাহিদ জনগণের কুরবানীর বরকতে সর্বশেষ বছরগুলোতে যুদ্ধের পট-পরিবর্তন হয়ে যায়। ফলে এখন অবস্থা এই যে, মুজাহিদগণ সামনে অগ্রসর হচ্ছেন আর আগ্রাসীরা পশ্চাদপসরণ করছে এবং পালিয়ে যাচ্ছে।  এ পর্যন্ত আগ্রাসী দেশসমূহের মধ্যে ১০ টি পতাকার পতন ঘটেছে। তাদের সকল সৈন্যকে পলায়ন করতে বাধ্য করা হয়েছে। এখন অবশিষ্ট রয়েছে শুধু আমেরিকা, বৃটেন ও অন্যান্য  কয়েকটি আগ্রাসী রাষ্ট্র। যারা এখনও যুদ্ধ ও দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ঐ সকল রাষ্ট্রগুলোরও কয়েক দশক হাজার সৈন্যকে আফগানিস্তান থেকে পলায়ন করতে বাধ্য করা হয়েছে। এখন তাদের অবশিষ্ট সীমিত সংখ্যক সৈন্য কিছু সংখ্যক অবরুদ্ধ ঘাটিতে সময় পার করছে।

সমস্ত প্রশংসাই আল্লাহর জন্য। এখন আফগানিস্তানের অধিকাংশ অঞ্চলগুলোতেই ইমারাতে ইসলামীয়ার মুজাহিদগণ ক্ষমতাশালী এবং তারা সেখানে আল্লাহ আয্যা ওয়াজাল্লার বিধান কার্যকর করে চলেছেন।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা তাদেরকে যুদ্ধের ময়দানে লাঞ্ছিত ও পরাজিত করেছেন। কিন্তু এতদসত্ত্বেও সীমালঙ্ঘনকারী পশ্চিমারা তাদের আগ্রাসী মনোভাব থেকে ফিরে আসেনি। তাই দখলদাররা তাদের পরোক্ষ দখলদারি বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন বিকল্প পন্থা আবিস্কার করছে।

ঐ সকল পন্থাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে:

মুজাহিদদেরকে আত্মসমর্পণ ও জিহাদ থেকে ফিরে আসার প্রতি আহ্বান করার জন্য কাবুলের দালাল প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মিথ্যা ফাতওয়া প্রদান করিয়ে এবং উক্ত ফাতওয়াকে আইনী রূপ দান করে  ‘শান্তি ও সন্ধি’ নামে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প গঠন।

সীমালঙ্ঘনকারী শত্রুরা এখন চেষ্টা করছে, সন্ধি ও শান্তির নামে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর প্রচারণা, মনস্তাত্ত্বিক লড়াই, গোয়েন্দা ষড়যন্ত্র, মিথ্যা ফাতওয়া ও শীতল যুদ্ধের মাধ্যমে আফগান জনগণের জিহাদী হিম্মতকে নষ্ট করে ফেলতে।

আগ্রাসীরা পরিপূর্ণ নিয়্যত করে নিয়েছে, মুজাহিদদেরকে জিহাদ থেকে নিবৃত্ত করার এবং আত্মসমর্পণের হাত উত্তোলন করার প্রতি বাধ্য করার জন্য এবং এমন দখলদারি শাসন মেনে নেওয়ার জন্য, কোন নীতিই যার স্বীকৃতি দেয় না এবং কোন আকল-অনুভূতি সম্পন্ন মানুষই যা গ্রহণ করে না।

কাবুলের অবৈধ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শরয়ী রং প্রদানের প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারণা ও উম্মত্ত চেষ্টা-কৌশলের অংশ হিসাবে আমাদের ধর্ম, দেশ ও স্বাধীনতার শত্রুরা ইসলামী রাষ্ট্রসমূহের এবং সারা বিশ্বের সম্মানিত আলেমদেরকে প্রতারিত করে ইসলামের আলেমদের নামে সাউদী আরবের জেদ্দায় বা সাউদী আরব একমত না হলে অন্য কোন দেশে একটি উলামা পরিষদ গঠন করার চেষ্টা করছে।

ইতিমধ্যে কাবুলের দালাল প্রতিষ্ঠানের অধীনস্ত ‘সন্ধি পরামর্শ’ সভা ঘোষণা করেছে যে, অতিসত্ত্বর তাদের পক্ষ থেকে আবেদন ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে এই পরিষদ গঠিত হবে। যেন তারা উক্ত সভায় ভুল তথ্য পরিবেশন করার মাধ্যমে মুসলিম আফগানিস্তানে আগ্রাসী কাফেরদের অবস্থানকে বৈধতা দিতে এবং মুজাহিদদের হক জিহাদকে বাতিল যুদ্ধ হিসাবে প্রকাশ করতে পারে।

এই সকল কাফেররা আফগানিস্তানকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীতকারী পবিত্র জিহাদকে এমন ভ্রান্ত কলহ-বিবাদের রূপে চিত্রায়িত করার প্রয়াস পাচ্ছে, যাতে শরীয়তের বিধানাবলী ও বর্ণনাসমূহের বিপরীতে অনর্থক মানুষের রক্ত প্রবাহিত করা হয়। এভাবে তারা জিহাদের দুর্ণাম করছে।

আমরা উম্মাতে ইসলামী এর সকল সম্মানিত আলেমদের নিকট; বিশেষ করে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, হিন্দুস্তান, সাউদী আরব ও অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলোর সম্মানিত আলেমদের নিকট এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাই যে:

আপনারা ভালভাবেই জানেন, আগ্রাসী তাগুত আমেরিকাই এই যামানার সবচেয়ে বড় জালেম। আমাদের লক্ষ লক্ষ মুসলিম ভাইয়ের রক্তে তাদের হাত রঞ্জিত হয়েছে। আপনারা আরো জানেন যে, আমাদের জনগণ মুসলিম, আমাদের জনগণ দুর্দশাগ্রস্ত ও দরীদ্র। ভিনদেশী দখলদাররা এই দেশের উপর সীমালঙ্ঘন করেছে।

আপনারা আরো জানেন যে, সম্মানিত উলামায়ে দ্বীনের তত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় পরিচালিত আমাদের জনগণের জিহাদ একটি শরয়ী যুদ্ধ এবং এটি আগ্রাসী ও দখলদার জালিমের সীমালঙ্ঘন প্রতিহত করার জন্য একটি মজলুম জাতির সর্বশেষ উপায়।

আর আপনারা বর্তমানে এটাও বুঝতে পারেন যে, দখলদার ও তাদের এজেন্টদের উদ্ভোধনের মাধ্যমে ‘শান্তি ও সন্ধি’ নামের এই সভাটি অনুষ্ঠিত হওয়াই প্রমাণ করে, এটা পরিষদ কেবলমাত্র আমাদের জাতিকে ধোকা দেওয়া ও তাদের প্রতি জুলুম করার জন্যই গঠিত হচ্ছে। আর আপনারা বর্তমানে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোর এই কূটচালও জানেন যে, আপনারা সভাহলে যতই হক ও শরীয়তের কথা বলেন বা যতই পশ্চিমাদের সমালোচনা করেন না কেন, তার সব কিছু হলের অভ্যন্তরেই আটকে থাকবে। কখনো তা বহির্বিশ্বের কানে পৌঁছবে না। কেবলমাত্র যা আমেরিকার স্বার্থে এবং পবিত্র জিহাদ ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে হবে তাই প্রকাশিত হবে। কারণ এই মিডিয়াগুলোই তো পবিত্র শরীয়তের মূলনীতিসমূহের উপর প্রতিষ্ঠিত জিহাদকে সন্ত্রাসবাদ ও ভ্রান্ত যুদ্ধ বলে পরিচয় করাচ্ছে। আর অচিরেই এগুলোকে আলেমদের দিকেও সম্পৃক্ত করবে।

একারণে আমরা আপনাদেরকে দ্বিতীয়বার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, এধরণের প্রকল্পে আপনাদের অংশগ্রহণ করা, (যা আল্লাহ ক্ষমা করবেন না) এক প্রকার তাদেরকে সহযোগীতা করা এবং নিজেকে সেই ধমকি বাণীর ক্ষেত্র বানানো বলেই গণ্য হবে, যা আল্লাহ সুবহানাহু বলেন:

وَلَا تَرْكَنُوٓا۟ إِلَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُوا۟ فَتَمَسَّكُمُ ٱلنَّارُ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ مِنْ أَوْلِيَآءَ ثُمَّ لَا تُنصَرُونَ. [هود[১১৩].

আর তোমরা যালেমদের প্রতি ঝুকে পড়ো না, অন্যথায় তমাদেরকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে, আর আল্লাহ ছাড়া তোমাদের আর কোন সহায় হবে না, অতঃপর তোমাদেরকে কোন সাহায্য করা হবে না। (সূরা হুদ-১১৩)

অথবা যেমন রাসূল সা: বলেছেন:

(من مشى مع ظالم ليعينه وهو يعلم أنه ظالم فقد خرج من الإسلام.) رواه الطبراني.

“যে জালেমের পিছনে চলে তাকে সাহায্য করার জন্য, অথচ সে জানে, উক্ত ব্যক্তি জালেম, তাহলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেল।”

 

হে সম্মানিত আলেমগণ!  

আফগানিস্তানের “ইমরাতে ইসলামীয়া” আল্লাহর উপর ভরসা করে একথা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করে যে, রণাঙ্গণের যুদ্ধ কখনোই কাফেরদেরকে বিজয় এনে দিবে না। কারণ তাদের গোয়েন্দা কারসাজিসমূহ কখনো বিজয়ের মুখ দেখবে না ইংশাআল্লাহ। তাই ইসলামী ভ্রাতৃত্বের ভিত্তিতে আমরা ইসলামী রাষ্ট্রসমূহের সরকারগুলো থেকে আশা করবো, তারা যেন এই ধরণের সংঘসমূহের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে না দেয়।

আর সম্মানিত আলেমদের নিকট আমাদের বার্তা হল, তারা যেন এই প্রস্তাবিত সভায় অংশগ্রহণ না করেন, তারা যেন বিশেষ করে এই ব্যাপারটিতে আল্লাহর কিতাব ও রাসূলুল্লাহ সা: এর সুন্নাহর দাবি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং আফগানিস্তানে অবৈধ অবস্থানকারী আগ্রাসী কাফেরদেরকে আলেমদের নাম ও তাদের অংশগ্রহণকে সুযোগ বানিয়ে তাদের অশুভ লক্ষ্য বস্তাবায়ন করতে সফল হতে না দেন।

যদিও মুজাহিদদেরকে প্রকাশ্যে সহযোগীতা করা একটি কঠিন বিষয় এবং আপনারা তা পারবেন না; কিন্তু এভাবে আপনাদের তাদেরকে সহযোগীতা করা সম্ভব যে, আমরা নিজেদেরকে কাফেরদের এধরণের নীল নকশা থেকে দূরে রাখবো এবং তারা যে কৃত্রিম সভা ডেকেছে, আমরা তাতে অংশগ্রহণ করবো না।

আমরা আশা করি, আমরা আমাদের আশা ও বার্তা আপনাদের নিকট পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি, যাতে আমাদের একে অন্যের হক আদায় না করার কারণে কিয়ামতের দিন আমরা আযাব ও শাস্তির সম্মুখীন না হই।

আমাদের দায়িত্ব শুধু পৌঁছে দেওয়া। আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক। তিনি কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী!

ওয়াস-সালাম

ইমারাতে ইসলামীয়া, আফগানিস্তান।

১৩/১১/১৪৩৭ হিজরী ## ১৬/৮/২০১৬ ইংরেজী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − one =

Back to top button