আল-ফজর বাংলাইলম ও আত্মশুদ্ধিবই ও রিসালাহমিডিয়া

মুজাহিদের প্রকার শায়খ আবু আসমা আল কুবি রহঃ

মুজাহিদের প্রকার

শায়খ আবু আসমা আল কুবি রহঃ

পিডিএফ ডাউনলোড করুন

https://banglafiles.net/index.php/s/Yybieqi8Y2bSDtX

http://www.mediafire.com/file/u0i7w0uk56dcwtv/1_Types_of_Muzahid.pdf

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন

https://banglafiles.net/index.php/s/5MTyjTJY9dRy7gy

https://archive.org/download/mujahider-prokar/Mujahider%20Prokar.docx

************************************

মুজাহিদদের প্রকার

শায়খ আবু আসমা আল কুবি রহঃ

আলফজর প্রকাশনা

১২জুমাদাল আখিরাহ

জাযীরাতুল আরব

بسم الله الرحمن الرحیم

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিন সৃষ্টি করেছেন, অত:পর তাকে সুসংহত করেছেন। যিনি সব কিছু পরিমিত আকারে সৃষ্টি করেছেন, অত:পর তাকে পথপ্রদর্শন করেছেন। সমস্ত প্রশংসা ঐ আল্লাহর জন্য, যিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন।

দুরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর সকল সৃষ্টির সেরা মানবের উপর এবং তার পরিবারবর্গ ও সকল সাহাবাদের উপরও। অত:পর:

 আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা জিহাদে মুজাহিদদের বিভিন্ন অবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন,

مِنكُم مَّن يُرِيدُ ٱلدُّنْيَا وَمِنكُم مَّن يُرِيدُ ٱلْاَخِرَةَۚ

“তোমাদের মধ্যে কিছু লোক দুনিয়া চাচ্ছিল, আর কিছু চাচ্ছিল আখিরাত।”

জনৈক ব্যক্তি রাসূল ﷺ এর নিকট এসে বলল: “কেউ অহংবোধ বশত: যুদ্ধ করে, কেউ বীরত্ব প্রকাশের জন্য যুদ্ধ করে, কেউ যুদ্ধ করে লোক দেখানোর জন্য, তাহলে এগুলোর কোনটি আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ হবে? রাসূল ﷺ বললেন, “যে ‘আল্লাহর কালিমাই সর্বোচ্চ হতে হবে’, এজন্য যুদ্ধ করে, সেই আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে।” (শুআইব আল-আরনাউত বলেন, এই হাদীসটির সনদ সহীহ, এটি শায়খাইনের শর্ত মোতাবেক।)

আমি এখন এই প্রবন্ধে জিহাদের মধ্যে মানুষের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করবো। যেন এমন প্রতিটি তাওহীদবাদীর নিকট মুজাহিদদের শ্রেণীবিভাগ স্পষ্ট হয়ে যায়, যারা ময়দানে জিহাদে রত অথবা যারা জিহাদে বের হওয়ার নিয়ত করেছে এবং যেন প্রত্যেকেই নিজের জন্য নিজের পছন্দের স্তরটি বেঁছে নেয়।

জিহাদের মধ্যে মুজাহিদদের শ্রেণীবিভাগ চারটি:

প্রথম শ্রেণী (নেতা শ্রেণী)

এই প্রকার সংখ্যায় কম, কিন্তু এর আগ্রহী অনেক বেশী। নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্যাবলী হল, কতগুলো স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য, যার কিছু হল মানবার্জিত, আর কিছু আল্লাহ প্রদত্ত।

যেমন বীরত্ব, প্রজ্ঞা, সৈন্যদের সাথে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত দক্ষতা,প্রত্যেকসৈন্যকে তার উপযুক্ত পদে আসীন করার বিচক্ষণতা, শত্রুর বিরুদ্ধেদু:সাহসিকতা, আদেশ জারি করার ক্ষেত্রে দৃঢ়তা, যুদ্ধের কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করার মানবীয় ও কর্মগত সামর্থ্য, ইসলামী বিধি-বিধানের সঠিক বুঝ এবং সেগুলোকে বাস্তবতার মাঝে প্রয়োগ করার পদ্ধতি জানা ইত্যাদি।

 এরকম গুণাবলী সাধারণত: মানুষের মাঝে কম পাওয়া যায়। আর অনারবদের মাঝে আরবদের থেকে তুলনামূলক আরো কম পাওয়া যায়। এই বৈশিষ্ট্যটি আল্লাহ তা’আলা বিশেষভাবে আরবদেরকে দান করেছেন।

নেতৃত্ব দুই ধরণের:

এক. সাধারণ নেতৃত্ব। এটি হচ্ছে ইমামত, খেলাফত এবং সর্বদলীয় নেতৃত্ব। এর জন্য নির্দিষ্ট বিধি-বিধান, শর্তাবলী ও গঠন পদ্ধতি রয়েছে।

দুই. বিশেষ নেতৃত্ব: তা হচ্ছে ইমারার পক্ষ থেকে অর্পিত নির্দিষ্ট কোন দায়িত্বে বা কাজে কোন সংগঠন বা দলের নেতৃত্ব দেওয়া। বিভন্ন প্রদেশের নেতৃত্বও এর অন্তর্ভূক্ত।

নেতৃবৃন্দের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে, যার পরিমাণ শুধু আল্লাহই জানেন। সৌভাগ্যবান হল সেই ব্যক্তি, যাকে এর মাধ্যমে পরীক্ষায় ফেলা হয়নি। যে এটা চেয়ে নেয়, তাকে এটা নিজ দায়িত্বে সঁপে দেওয়া হয়। আর যাকে অন্যদের পক্ষ থেকে দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাকে এতে সাহায্য করা হয়।

 এক্ষেত্রে মানুষ বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। কেউ হয় আল্লাহ ভীরু নেতা। আল্লাহর রহমতে এদের সংখ্যা অনেক আছে। আর কেউ এর থেকে নিম্ন স্তরের। কখনো একজন ব্যক্তির মাঝে নেতৃত্বের যোগ্যতা থাকে, কিন্তু সে অনুশাসন মেনে চলতে তেমন অভ্যস্ত নয়।

কখনো কখনো তার মাঝে কোন গুনাহে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা এবং নিকৃষ্ট ব্যধিসমূহও দেখা যায়। যেমন: প্রসিদ্ধি বা কাজের সুখ্যাতি অর্জনের আগ্রহ, সকলের মাঝে উল্লেখযোগ্য হওয়ার জন্য মতবিরোধ।

এই শ্রেণীর উপস্থিতি রয়েছে, তবে কম। এদেরকে যদি নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তারা বিদ্বেষী হয়ে উঠে এবং বিশৃংখলা ছড়ায়। আর যদি এভাবেই ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে নিজের অবস্থারও অবনতি করে এবং অন্যদেরকে সমস্যায় ফেলে। এর চিকিৎসা হল, ইলম ও ঈমান।

দ্বিতীয় শ্রেণী (বিকল্প বা পরিপূরক শ্রেণী)

এই শ্রেণীটির উপস্থিতি ময়দানে সবচেয়ে কম। কারণ এর জন্য উচুহিম্মতের অধিকারী বিরাট ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন হয়, যে জিহাদের সকল কর্মসমূহ সম্পাদন করতে পারে। এই শ্রেণীটি যে কারো পরিপূরক হতে পারে।

যদি আমির না থাকে, সে আমিরের দায়িত্ব পালন করতে পারে। যদি প্রহরী না থাকে, সে প্রহরীর দায়িত্ব পালন করতে পারে। যদি রণাঙ্গণে কমান্ডার না থাকে, সে তার পরিপূরক হতে পারে। এভাবে যেই অনুপস্থিত থাকে সে তার বিকল্প হতে পারে। আপনি তাকে যেকোন কাজে প্রস্তুত পাবেন।

এই ধরণের ব্যক্তিত্বগুলো, নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সাধারণ সৈনিক পর্যন্ত সকল মুজাহিদদের নিকট প্রিয়। এই শ্রেণীটিই সাধারণ সৈনিকদের সাথে নেতৃবৃন্দের বন্ধন সৃষ্টি করে। এই ধরণের ব্যক্তিত্বগুলো খুব কমই ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হয়। একারণে তারা প্রত্যেকের নিকটই মর্যাদাবান ও সম্মানিত। তারা জিহাদের যেকোন ধরণের কাজে ব্যস্ত থাকতে পারে। ফলে সেই সৈনিক এবং সেই নেতৃত্বদানকারী।

এই ধরনের ব্যক্তিত্ব অর্জন করার জন্য একজন মুসলিম মুজাহিদকে কতগুলো বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে হয়। তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে:

সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করা,

 চিন্তাগত ও আদর্শগতভাবে জিহাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য একনিষ্ঠ হওয়া,

 ইসলাম ও মুসলমানদের সমস্যাবলী সম্পর্কে এবং জিহাদ ও মুজাহিদদের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে অবগত থাকা,

 জিহাদের বিষয়সমূহের ব্যাপারে অধিক অধ্যয়ন ও পড়াশোনা করা,

 জীবনের প্রত্যেক ক্ষেত্রে নিজেকে অল্পে তুষ্ট থাকা ও তার প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করার দীক্ষা দেওয়া,

 নিজের আত্মাকে মানুষকে ভালবাসার দীক্ষা দেওয়া, সাধ্যানুযায়ী মানুষের প্রয়োজন পূরণের মাধ্যমে মানুষের সহযোগীতা ও কল্যাণকামনা করার ইচ্ছা মনে পোষণ করা,

 সংকীর্ণতা ও ক্লান্তির সময়ও মানুষের সাথে উত্তম আচরণ করার উপর অটল থাকা।অনেক সময় মানুষ প্রশান্ত চিত্ত থাকাবস্থায় উত্তম আচরণ করে, আর ক্লান্ত-শ্রান্ত থাকলে রূঢ় আচরণ করে।

তৃতীয় শ্রেণী (আবেদ শ্রেণী)

এরাই হচ্ছে জিহাদের চেরাগ। এরা সংখ্যায় কম। কিন্তু পূর্বের শ্রেণীর ন্যায় এত কম নয়।

এদেরকে দেখবেন, এদের ঈমানই এদেরকে পরিচালিত করে। তারা দিনের বেলায় যুদ্ধের ময়দানে সবচেয়ে তীব্র এবং জিহাদে সাথী ভাইদের স্বতঃস্ফূর্ত সেবক। আর রাতের বেলায় সংসার বিরাগী ইবাদতগুজার।

তারা তাদের অধিকাংশ সময় ব্যয় করে তাদের পালনকর্তার কিতাবের সাথে। তারা তাদের সাথী ভাইদের থেকে এত কষ্ট-যাতনা সহ্য করে, যা অন্য কেউ সহ্য করে না। বিশেষ করে যখন তারা তাদের ঈমানী পরিবেশ পায় না, যা তাদের নিকট সবচেয়ে প্রিয়, যার থেকে তারা একটুও বের হতে চায় না।

তাই তাদেরকে দেখবেন, তারা এমন সহপাঠীদের সাথে থাকতে অস্বস্তিবোধ করে, যারা তাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেয় না, অথবা যারা তাদের সাথে বেশি হাসি-ঠাট্টা করে। একারণে আপনি দেখবেন, তারা তাদের নিভৃত সময়গুলোতে হয়ত সাথী ভাইদের কাপড়-চোপর ধুয়ে দিচ্ছে, অথবা খাবারের বরতনগুলো পরিস্কার করছে।

এদেরকে দিয়ে আমিরদের অনেক কাজ থাকে। আল্লাহ তা’আলার হুকুমে এদের মাধ্যমেই সেনাবাহিনী আল্লাহ তা’আলার সাহায্য লাভ করে। এই ধরণের ব্যক্তিত্ব অর্জন করতে হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ তাওফীক এবং এরূপ আত্মসাধনার প্রয়োজন হয়, যার দ্বারা একজন লোক আল্লাহর এই বাণীর স্তরে পৌঁছে যায় يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ “আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন এবং তাঁরাও আল্লাহকে ভালবাসেন”।

আল্লাহর ভালোবাসার স্তরে পৌছার পদ্ধতি সকলের নিকটই স্পষ্ট, যারা সে পথে চলতে চায়। রাসূল ﷺ বলেছেন,

“আল্লাহ তা’আলা বলেছেন: যে আমার কোন বন্ধুর সাথে শত্রুতা করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেই। বান্দা কোন জিনিসের মাধ্যমে আমার ততটুকু নৈকট্য অর্জন করতে পারে না, যতটুকু ঐ জিনিসের মাধ্যমে পারে, যা আমি তার উপর ফরজ করেছি।

 আর বান্দা নফল ইবাদতসমূহের মাধ্যমে আমার নিকটবর্তী হতে থাকে, অবশেষে আমি তাকে ভালবেসে ফেলি।

 যখন আমি তাকে ভালবেসে ফেলি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে শ্রবণ করে। আমি তার চক্ষু হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই, যার মাধ্যমে সে হাটা-চলা করে। সে যদি আমার নিকট কিছু চায়, আমি তাকে অবশ্যই তা দিয়ে দেই।

 সে যদি আমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে, আমি তাকে অবশ্যই আশ্রয় দেই। আমি কোন বিষয় করতে ইচ্ছা করলে তাতে এতটা দ্বিধা করি না, যতটা মুমিনের জানের ব্যাপারে করি। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে, আর আমি তার কষ্টকে অপছন্দ করি।”

এই পদ্ধতিতেই বান্দা আল্লাহর ভালবাসার স্তর পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। এরপর তার জন্য অন্যসব ইবাদত সহজ হয়ে যায়। কারণ সে তখন আল্লাহর নিকটবর্তী হয়ে যায়।

চতুর্থ শ্রেণী (হাসি-ঠাট্টাকারী শ্রেণী)

তারা দুই প্রকার:

এক. এমন হাসি-ঠাট্টাকারী শ্রেণী, যারা কল্যাণের অধিক নিকটবর্তী।

দুই. এমন হাসি-ঠাট্টাকারী শ্রেণী, যারা খারাপের অধিক নিকটবর্তী।

জিহাদ ইবাদতটির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে জিহাদের মধ্যে এই শ্রেণীর মানুষই বেশি থাকে। এই ইবাদতটি হজ্জের ইবাদতটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। যেখানে মুমিন-ফাসেক সকল ধরণের মুসলিমই একত্রিত হয়। প্রত্যেকেই স্ব-স্ব দ্বীনদারীর অনুপাতে কাজ করে।

আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা বদকার ব্যক্তির মাধ্যমেও এই দ্বীনের সাহায্য করেন”।

আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

“আমরা খাইবার যুদ্ধে গেলাম। একজন লোক ইসলামের দাবি করত, রাসূল ﷺ তার উদ্দেশ্যে বললেন, “এই লোকটি জাহান্নামী”। অত:পর যখন যুদ্ধ শুরু হল, লোকটি ভীষণ যুদ্ধ করল। ফলে তার শরীরের বহু স্থানে ক্ষত হল। একারণে অনেক মানুষ সন্দেহে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হল। একপর্যায়ে লোকটি ক্ষতের যন্ত্রণা অনুভব করল, তাই হাত দিয়ে তার তূণীর থেকে একটি তীর বের করে তার মাধ্যমে নিজেকে হত্যা করে ফেলল। তা দেখে একদল মুসলিম দৌঁড়ে এসে রাসূল ﷺ কে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ আপনার কথা সত্য করেছেন, লোকটি আত্মহত্যা করেছে। রাসূল ﷺ বললেন, হে অমুক, উঠ! লোকদের মাঝে ঘোষণা দাও: “মুমিন ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ফাসেক ব্যক্তির মাধ্যমেও এই দ্বীনকে সাহায্য করেন”।

এদের মধ্যে প্রথম শ্রেণীটি, এদের মনটা সার্বক্ষণিক আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া ও আল্লাহর ভয়ের কথা বলা ব্যতীত জিহাদের কষ্ট-ক্লেশ ও আমিরদের নির্দেশাবলীর প্রতি অনুগত হতে চায় না। তাদেরকে যখন এমন কোন আদেশ করা হয়, যা তাদের আসক্তির অনুকূলে নয়, তারা তার অপব্যাখ্যা করত: নিজেদের প্রবৃত্তির অনুকূল কাজ করতে থাকে। অত:পর যখন আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, তখন পুনরায় নিজেদের প্রবৃত্তি ও আসক্তি থেকে ফিরে আসে।

 এর দৃষ্টান্ত হল, যেমন: কখনো নির্দেশ দেওয়া হয়: কোন নির্দিষ্ট স্থানে বসে থাকতে হবে, আমিরের আদেশ ছাড়া সেখান থেকে নড়া যাবে না, তখন সে সেটাকে ব্যাখ্যা করে বলতে থাকে, আমিরের এটা উদ্দেশ্য নয়, ওটা উদ্দেশ্য, বা আমরা তো ভুলে গিয়েছিলাম, বা এই সেই অন্য কিছু…এভাবে সে উক্ত স্থান থেকে সরে যায় এবং আদেশ লঙ্ঘন করে।

অথবা আরেকটি উদাহরণ, যেমন: আমির তাকে যেকোন একটি পথ দিয়ে যেতে বা যেকোন নির্দিষ্ট একটি পোষাক পরিধান করতে নিষেধ করেন, সে তার ব্যাখ্যা করে বলতে থাকে, আমিরের এটা উদ্দেশ্য নয়, ওটা উদ্দেশ্য। অত:পর উক্ত পোষাক পরিধান করে এবং উক্ত পথ দিয়ে অতিক্রম করে।

 কিন্তু এদেরকে যখন আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, তখন তারা ফিরে আসে এবং নিয়ম মেনে চলে। এরপর আবার প্রথম অবস্থায়ই ফিরে যায়।

এসকল লোক তাদের এই সকল খারাপ গুণাবলীর কারণে তাদের আমিরদেরকে জিহাদের ময়দানে কষ্টে ফেলে দেয় এবং অনেক সময় তাদের কারণে তাদের ভাইদের হত্যা বা বন্দীত্বের শিকার হতে হয়। তাদের অবস্থান পরিস্কার করার জন্য আল্লাহ নির্দিষ্ট কোন নিদর্শন রাখেননি।

তবে তাদের ব্যাপারটি তাদের পরবর্তী প্রকার থেকে তুলনামূলক সহজ। এদেরকে ঘন ঘন শরয়ী কোর্স করাতে হবে এবং বিভিন্ন স্বল্প মেয়াদে কিছু কিছু সামরিক কাজ থেকে বঞ্চিত রাখতে হবে। কারণ তারা নিয়ম-শৃঙ্খলা ও দৈনন্দিন রুটিন মেনে চলতে বিরক্ত।

আর দ্বিতীয় প্রকার, এমন হাসি-ঠাট্টাকারী, যারা খারাপের অধিক নিকটবর্তী। এদেরকে উপদেশ দিলে উপদেশ কোন কাজে আসে না। আপনি উত্তম আচরণ বা সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের বোধদয় করতে পারবেন না। তারা উত্তম ব্যবহারকে মনে করে দুর্বলতা। তাদের স্বভাবটাই হঠকারীতা দিয়ে ভরা।

 নিজের খেয়ালমত কাজ করা ও নিজে যেটা ভাল মনে করে সেটাই বাস্তবায়ন করা তাদের অভ্যাস। তাদের বদ আখলাক এবং আমির ও নেতৃবৃন্দের ব্যাপারে অশালীন ভাষা ও অনিয়ন্ত্রিত কথা বার্তার কারণে তাদের অনিষ্টগুলো তাদের অন্যান্য সাথী ভাইদের পর্যন্তও ছড়ায়। এবং এটা তাদেরও কষ্টের কারণ হয়।

বিভিন্ন সংগঠনের সমস্যাবলী ও বিভিন্ন দলের মাঝে বিভক্তি সাধারণত: এই শ্রেণীর লোকের দ্বারাই হয়ে থাকে। এরাই প্রতিটি ফেৎনার ইন্ধন। কোন সংগঠনই এই শ্রেণীর লোকদের থেকে মুক্ত নয়।

 কোন সুবিন্যস্ত সংগঠনে এই শ্রেণীর লোকদের অন্তর্ভূক্তি কল্যাণজনক হয় না। বরং এরা ঐ সকল উম্মুক্ত সংগঠনসমূহের জন্য উপযুক্ত, যেগুলোতে সব ধরণের মানুষ মিশ্রিত থাকে। আর এরা, যতক্ষণ পর্যন্ত এদের অনিষ্টের মাত্রা কমে না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোন সংগঠনের মাঝে প্রথম রেখা টেনেই বের হয় না। আর এদের অনিষ্ট কখনো শেষ হয় না।

জিহাদী সংগঠনসমূহের জন্য এই ধরণের লোক বড় বেশি ভয়ংকর। এই সকল লোক খুব তাড়াতাড়ি জিহাদ থেকে ফিরে আসে। এদের বেশিরভার শিশুদের মত কথাবার্তা বলে। তারা জিহাদ সংক্রান্ত অনেক বিষয়, অনেক তথ্য জানতে চায়। জিহাদী দলের জন্য তাদের ক্ষতিটা উপকারের তুলনায় বেশি।

এই হল জিহাদের মধ্যে মানুষের বিভিন্ন প্রকারভেদ। আমাদের প্রত্যেকেই যেন নিজের অবস্থানটা জেনে নেই এবং নিজের জন্য সবচেয়ে প্রিয় শ্রেণীটিই বেঁছে নেই।

রাসূল ﷺ স্পষ্টভাবে বলেছেন:

“যুদ্ধ দুই প্রকার: এক. যে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে যুদ্ধ করে, আমিরের আনুগত্য করে, প্রিয় বস্তু ব্যয় করে, সাথীদের সাথে ভাল ব্যবহার করে এবং বিশৃঙ্খলা থেকে বেঁচে থাকে, তার ঘুম ও জাগরণ উভয়টিই প্রতিদানযোগ্য।

দুই. আর যে গর্ব, লোক দেখানো ও খ্যাতির উদ্দেশ্যে জিহাদ করে, আমিরের অবাধ্যতা করে এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে, সে সমান সমান নিয়েও ফিরতে পারে না”। (বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ, আবু দাউদ ও নাসায়ী রহ:)

এগুলো হল আল্লাহর রাসূল ﷺ এর বর্ণিত ঐ যুদ্ধের বৈশিষ্ট্যাবলী, যেটাকে আল্লাহ তা’আলা ভালবাসেন এবং কবুল করেন।

হাদীসের কয়েকটি কথার বিশ্লেষণ:

“আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে” অর্থাৎ সে আল্লাহর সন্তুষ্টি তালাশ করে এবং নিয়্যতকে বিশুদ্ধ রাখে।

“আমিরের আনুগত্য করে”, অর্থাৎ গুনাহের বিষয় ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে, যতক্ষণ পর্যন্ত গুনাহের কাজটিতে লিপ্ত হওয়ার এমন কোন আবশ্যকীয়তা দেখা না দেয়, যা নিষিদ্ধ বিষয়কে বৈধ করে দেয়। যেমন: দাড়ি মুন্ডাতে বলা অথবা কাপড় টাখনুর নীচে ঝুলিয়ে পড়া অথবা এজাতীয় কোন বিষয়, যেগুলো প্রয়োজন পরিমাণ বৈধ হয়ে যায় এবং সে ব্যাপারে আমিরের ইজতিহাদ করার অধিকার থাকে।

এই বিষয়গুলো আরো বেশি স্পষ্ট করা প্রয়োজন। তাই তার জন্য এ সংক্রান্ত কিতাবাদী ও সূত্রগুলো দেখার অনুরোধ রইল।

“প্রিয়বস্তু ব্যয় করে” এর অর্থ হল, প্রত্যেক জিনিসের দামি ও উত্তম অংশটি আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে। তার অন্তর কোন দুনিয়াবী বস্তুর সাথে আটকে থাকে না। কারণ আল্লাহ তা’আলা তার জন্য এরচেয়ে উত্তম বস্তুর ওয়াদা করেছেন।

 তা হচ্ছে এমন জান্নাত, যার প্রশস্ততা হল, আসমান-যমীন। তাতে রয়েছে এমনসব ভোগের সামগ্রী, যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কর্ণ শ্রবণ করেনি, কোন মানুষের অন্তরে উদয়ও হয়নি।

 এটা একটি আত্মার বড় সাধনা এবং তাকে উত্তম চরিত্রে উন্নীত করার বড় মাধ্যম। আল্লাহ তা’আলা বলেন,

لَن تَنَالُوا۟ ٱلْبِرَّ حَتَّىٰ تُنفِقُوا۟ مِمَّا تُحِبُّونَۚ

“তোমরা কিছুতেই পূণ্যের স্তরে উপনীত হতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের প্রিয় বস্তু হতে (আল্লাহর জন্য) ব্যয় করবে।”

“সাথীদের সাথে ভাল ব্যবহার করে” অর্থাৎ সঙ্গীদের প্রতি নম্রতা দেখায় এবং তাদের সাথে কোমল আচরণ করে। জিহাদ শব্দের ধাতুগত অর্থ হল, চেষ্টা করা, কষ্ট করা। তাই মুজাহিদগণ একজন আরেকজনের উপর কঠোরতা করবে, মুজাহিদদের মাঝে এর চেয়ে বড় জুলুমের কথা আর বলারই প্রয়োজন নেই।

রাসূল ﷺ তার এই বাণীতে বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন:

হে আল্লাহ! যে আমার উম্মতের কোন বিষয়ের দায়িত্বশীল হয়, অত:পর সে তাদের প্রতি কোমল আচরণ করে, তুমিও তার প্রতি কোমল আচরণ কর। আর যে তাদের উপর কঠোরতা করে, তুমিও তার উপর কঠোরতা কর (বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ রহ: তার মুসনাদে)

“বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকে” অর্থ হল যেকোন ফ্যাসাদকে পরিহার করে এবং তা থেকে দূরে থাকে। সবচেয়ে বড় ফ্যাসাদ হল, বিদ্রোহ করা এবং মানুষের প্রতি জুলুম করা। আর জিহাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফ্যাসাদ হল, গীবত, মিথ্যা রটনা, আল্লাহর হকসমূহের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন করা এবং গনিমতে খেয়ানত করা।

“তার ঘুম ও জাগরণ উভয়টিই প্রতিদানযোগ্য” এর অর্থ হল, যতক্ষণ সে আল্লাহর রাস্তায় যোদ্ধা হিসাবে থাকে, ততক্ষণ সে তার ঘুমের অবস্থায়ও কল্যাণের মধ্যে থাকে এবং জাগরণের অবস্থায়ও কল্যাণের মধ্যে থাকে। কারণ তার বের হওয়া থেকে ফেরা পর্যন্ত প্রত্যেকটি নড়াচড়া ও স্থীরতা কল্যাণময়।

তাই সবগুলোই তার জন্য বিনিময় প্রাপ্তির কারণ হয়। এটা ঐ ব্যক্তির বিরাট প্রতিদান লাভের প্রমাণ বহন করে, যে আল্লাহর রাস্তায় বের হয় এবং এর দ্বারা সে আল্লাহর সন্তুষ্টিই কামনা করে, আল্লাহর কালিমাকেই সুউচ্চ করতে চায়; দুনিয়া ও তার তুচ্ছ বস্তু কামনা করে না।

“আর দ্বিতীয় প্রকার যুদ্ধ, যাকে আল্লাহ ভালবাসেন না, কখনো কবুল করেন না এবং উক্ত ব্যক্তি সমান সমান অবস্থায়ও ফিরতে পারে না”। অর্থাৎ সে এমন অবস্থায়ও ফিরতে পারে না, যে তার কোন গুনাহও হবে না, সওয়াবও হবে না।

বরং সে এমন অবস্থায় ফিরবে যে তার উপর গুনাহের বোঝা চেপে বসবে। কারণ ইবাদত যখন পরিশুদ্ধ অন্তরে না হয়, তখন তা অবাধ্যতায় পরিণত হয়। আর অবাধ্যই গুনাহগার। বরং কখনো একজন মুজাহিদ তার বাড়ি থেকে এমন অবস্থায় বের হয় যে, তার সাথে পাহাড়সম নেকী ছিল। অত:পর সে তার কিছু নিয়েও ফিরতে পারে না।

কারণ সে এর গীবত করেছে, একে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, একে মেরেছে, অমুককে কষ্ট দিয়েছে, খেয়ানত করেছে, আমিরের অবাধ্যতা করেছে…। আমরা আল্লাহ তা’আলার নিকট এগুলো থেকে মুক্তি কামনা করি।

এখন আমি এমন কিছু উপদেশের মাধ্যমে আলোচনার সমাপ্তি করবো, যেগুলোর ব্যাপারে আল্লাহর নিকট আমাদের প্রার্থনা, আল্লাহ যেন এগুলোর দ্বারা আমাকে এবং যে সকল মুসলিমগণ তা পাঠ করবে তাদেরকে উপকৃত করেন।

 

প্রথমত: আল্লাহর ভয়ই হল সকল নেক ও কল্যাণের মূল। এর মাধ্যমে প্রত্যেক কাজে বরকত লাভ হয় এবং এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা বান্দার জন্য ইলম ও হিকমতের দ্বার খুলে দেন।

দ্বিতীয়ত: উত্তম চরিত্র একটি অর্জনযোগ্য বৈশিষ্ট্য। একজন মুসলিম ইলম ও আমলের মাধ্যমে তা অর্জন করতে পারে। আর এর জন্য সাধনা করার পদ্ধতি হল আত্মাকে এই ব্যাপারে পরিতুষ্ট করা যে, মুসলিমের যেকোন প্রেক্ষাপটে এটা অতি গুরুত্বপূর্ণ ও অতিপ্রয়োজনীয় বিষয়।

তৃতীয়ত: একজন আল্লাহর পথের মুজাহিদ অনেক সুউচ্চ স্তরে আরোহন করে। যেমন রাসূল ﷺ মু’আয ইবনে জাবাল রা: এর উদ্দেশ্যে বলেছেন,

“আমি কি তোমাকে সব বিষয়ের মূল, সব বিষয়ের ভিত্তি এবং সব বিষয়ের শীর্ষ চূড়া সম্পর্কে বলে দিবো না? সব বিষয়ের মূল হল, ইসলাম। যে ইসলাম গ্রহণ করল সে নিরাপদ হয়ে গেল। সব বিষয়ের ভিত্তি হল, নামায। আর সব বিষয়ের শীর্ষ চূড়া হল, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ”। (বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ রহ:)

প্রতিটি মানুষ মুজাহিদদেরকে এই দৃষ্টিতেই দেখে। মুজাহিদদের মাঝে দেখা যায় আবু বকর সিদ্দীক, ওমর ইবনুল খাত্তাব, আলী ইবনে আবি তালিব ও খালিদ ইবনুল ওয়ালীদ রাযিয়াল্লাহু আনহুমের প্রতিচ্ছবি।

 তাদের যে কোন ভুল, তা যতই ছোট হোক, তা মানুষের চোখে অনেক বড়। জিহাদের সাহায্যকারীদের চোখে তা অনেক ভয়ংকর।

কারণ জিহাদ হল একটি মর্যাদাময় ও সুউচ্চ ইবাদত। ‘তিনজনকে দিয়ে জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্জলিত করা’ সংক্রান্ত যে হাদীসটি রয়েছে, সেটাই দুনিয়াতে মুজাহিদদের সুউচ্চ মর্যাদার কথা প্রমাণ করে।

রাসূল ﷺ বলেছেন:

কিয়ামতের দিন যে মানুষটিকে দিয়ে সর্বপ্রথম বিচারকার্য শুরু করা হবে, সে হচ্ছে এমন একজন লোক, যে শহীদ হয়েছে। আল্লাহ তাআলা তাকে ডেকে এনে তার প্রতি স্বীয় অনুগ্রহরাজীর কথা স্মরণ করিয়ে দিবেন। সে তা স্বীকার করবে। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি এগুলো কি কাজে লাগিয়েছো? সে বলবে, আমি আপনার রাস্তায় যুদ্ধ করেছি, সবশেষে শহীদ হয়েছি। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছো। তুমি যুদ্ধ করছো, যাতে তোমাকে বীর বলা হয়। তা বলা হয়ে গিয়েছে। অত:পর আল্লাহ তার ব্যাপারে জাহান্নামের ফায়সালা করবেন। তাকে তার চেহারার উপর টেনে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে

চতুর্থত: একজন মুসলিমের জীবনে ঈমানের পর সবচেয়ে বড় মূল্যবান বস্তু হচ্ছে চরিত্র, যার মাধ্যমে সে সমাজে ভালবাসার পাত্র হয় এবং যেই তাকে চিনে সেই তাকে ভালবাসে। আর এটাই এই আলামত যে, আল্লাহও তাকে ভালবাসেন।

যেমন আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে: রাসূল ﷺ বলেছেন,

নিশ্চয়ই যখন আল্লাহ তাআলা কোন বান্দাকে ভালবাসেন তখন তিনি জিবরাঈলকে ডেকে বলেন: আমি অমুককে ভালবেসেছি, তুমিও তাকে ভালবাস। তখন জিবরাঈল আ: আসমানবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের প্রভু অমুককে ভালবেসেছেন, তাই তোমরাও তাকে ভালবাস।

ফলে আসমানবাসী সকলে তাকে ভালবাসে। রাসূল বলেন: এবং যমীনে সবার মাঝে তার গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করে দেওয়া হয়। আর যখন আল্লাহ কোন বান্দার প্রতি ক্রোধান্বিত হন, তখন তার সাথেও তার অনুরূপই করা হয়

(শুআইব আল-আরনাউত বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। এটি ইমাম মুসলিমের শর্ত মোতাবেক।)

হে আল্লাহ! আমাদের অন্তরসমূহকে তাকওয়া দান করুন, তাকে পরিশুদ্ধ করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বোত্তম পরিশুদ্ধকারী। আপনিই অন্তরের মালিক ও অভিভাবক।

 হে আল্লাহ! আমাদেরকে জিহাদের জন্য তাওফীক দান করুন, তাতে সাহায্য করুন এবং তার দিকে আহ্বান করার তাওফীক দিন।

হে আল্লাহ! সকল বান্দাদের মাঝে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করে দিন।

হে আল্লাহ! আমাদেরকে আপনার সাহায্যপ্রাপ্ত সৈন্যবাহিনীর অন্তর্ভূক্ত করুন, যারা আপনার সাহায্য, আপনার শক্তি ও আপনার সন্তুষ্টি দ্বারা শক্তিশালী।

হে আল্লাহ! এমন শাহাদাতের দ্বারা আমার পরিসমাপ্তি দান করুন, যা আপনাকে আমার প্রতি সন্তুষ্ট করাবে। নিশ্চয়ই আপনি সম্মানিত ও দয়াবান।

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সকল জগতের প্রতিপালক।

আপনাদের ভাই

আবু আসমা আল কুবী

১২ জুমাদাস সানী

জাযীরাতুল আরব

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × three =

Back to top button