ইলম ও আত্মশুদ্ধিবই ও রিসালাহশাইখ খালেদ আল হুসাইনান রহিমাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

আল্লাহ তায়ালার মুরাক্বাবাহ – শাইখ খালেদ বিন আ: রহমান আল-হুসাইনান

শাইখ খালেদ বিন আ: রহমান আল-হুসাইনান

এই বৈঠকে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করব; যা আমাদের জীবনের প্রত্যেকটা মুহুর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
প্রত্যেকটা মূহুর্তে, প্রত্যেকটা নিরবতায়, প্রত্যেকটা কথায়, কাজে ও দৃষ্টিতে আমাদের ইহা প্রয়োজন; আর তা হচ্ছে মহা পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ তায়ালার মুরাক্বাবাহ।
আল্লাহ তায়ালা বলেন:

(يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنْ وَمَا تُخْفِي الّصُدُورْ)

তিনি চোখের খেয়ানত সম্পর্কে জানেন এবং অন্তর সমূহ যা গোপন করে।

(إِنَّ اللَّهَ لا يَخْفَى عَلَيْهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلا فِي السَّمَاءِ)

নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালার কাছে আসমান এবং জমিনের কোন জিনিসই গোপন নয়।

আল্লাহ সুবাহনাহু তায়ালার কাছে কোন কিছুই গোপন নয়। তিনিই এই বিশ্বের রব ও ইলাহ। তার কাছে আসমান এবং জমিনের কোন জিনিসই গোপন নয়। এই জন্যই অনেক আলেমরা মুরাক্বাবাহ এর অর্থ করেছেন: রবের নৈকট্য সম্পর্কে অন্তর জানা থাকা।

হে প্রিয় ভাই ! আল্লাহ তায়ালার কসম ! নিশ্চয় ইহা অনেক বড় বিপদ যে, সৃষ্টিকর্তা ও মহান আল্লাহ তায়ালার মুরাক্বাবাহ ও চিন্তা করে যে পরিমান ভয় ও নৈকট্য অনুভব করবে ; মাখলুকের মুরাক্বাবাহ ও চিন্তায় তার থেকেও বেশি ভয় ও নৈকট্যের অনুভূতি হওয়া।

আপনার কি মতামত ! যদি এখন রাস্তায়, বাজার ও জনসমাগমে ক্যামেরা লাগানো হয়, এবং বলা হয় যে কোন মহিলার দিকে তাকাবে তাকে অবশ্যই বিচারের অধীনে আনা হবে ও শাস্তি দেয় হবে। তখন মানুষদেরকে দেখবে – সুবহানাল্লাহ – সবাই তাদের দৃষ্টি দেয়ার ক্ষেত্রে হাজার বার চিন্তা করবে। কেন ? তোমাকে শুধু বলা হয়েছে; এখানে ক্যামেরা আছে।

এখানে ক্যামেরাটা নিয়ে চিন্তা করুন; সে আমাকে দেখছে ও ছবি তোলছে। অত:পর আমার ভিডিও দেখে বিচার করা হবে।
সে এই মানুষের বানানো ক্যামেরা জন্য হাজার বার হিসার করে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার জন্য কোন হিসাব করে না। সর্বদ্রষ্টা রবের নজর থেকে বাচার কোনই চিন্তা করে না।
বরং সত্যিই আফসুসের বিষয় ও বাস্তবেই কষ্টের বিষয় যে, তুমি দেখবে মানুষ তার ছোট সান্তানদেরকে ভয় করছে। যদি গাড়ীতে তার ছোট সন্তান তার সাথে থাকে যাদের বয়স পাচ অথবা ছয় বছর। তাদেরকে দেখবে তারা কোন হারাম কাজ করতে পারে না যদি তাদের ছোট বাচ্চা সাথে থাকে। সে তার সন্তানকে ভয় পায় । তার বাচ্চাদের জন্য হাজার বার হিসাব করে। যাদের বয়স পাচ অথবা ছয়। সে মহান, পরাক্রমশালী, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালাকে ভয় পায় না !!!

এটা তার ঈমানের দূর্বলতার উপর প্রমান বহন করে। এই জন্য হে প্রিয় বন্ধুরা ! আমাদের সর্বদা ইহা স্বরণ থাকা প্রয়োজন যে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দেখছেন। যে কোন আমল করার পূর্বে, যে কোন কথা বলার পূর্বে, প্রত্যেকটা দৃষ্টির সময়, প্রত্যেকটা কাজ অথবা পদক্ষেপ নেয়া পূর্বেই; তুমি চিন্তা কর, আল্লাহ তায়ালা তোমাকে দেখছেন। এবং আল্লাহ তায়ালা তোমার প্রত্যেকটা বিষয়কেই লিপিবদ্ধ করছেন। বিশর হাফী বলেছিলেন: আল্লাহ তায়ালার বড়ত্ব নিয়ে মানুষ যদি চিন্তা করত তাহলে কখনোই তার নাফরমানী করতে পারত না।

বাস্তবেই, যদি মানুষ আল্লাহ তায়ালার বরত্ব নিয়ে চিন্তা করত ! কিন্তু এখন মানুষ মাখলুকের বরত্ব নিয়ে ভাবে, মাখলুকের বড়ত্ব তাদের অন্তরে অনেক এবং বেশি। সে খালেক্ব থেকে ও বেশি লজ্বা করে মাখলুককে। কিন্তু যদি সে একা থাকে, অথবা একা সফর করে, অথবা হোটেলে বা কোন রুমে একা থাকে; তুমি তাকে দেখবে আল্লাহ সুব: তায়ালার নাফরমানী করছে এবং কোন পরোয়াই করছে না।
কিন্তু যদি তার সাথে মাখলুক থাকে যদিও সে ছোটই হোক না কেন – সুবহানাল্লাহ – আল্লাহ তায়ালার অবাধ্যতা করবে না।

আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা কারছি তিনি যাতে আমাদের অন্তরসমূহকে পরিশোদ্ধ করে দেন এবং আমাদেরকে ভূল সমূহের ব্যপারে ওয়াকিফহাল করে দেন।

أقول قولي هذا وأستغفر الله لي ولكم وصلى الله وسلم وبارك على نبينا محمد وعلى آله وصحبه وسلم

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − nine =

Back to top button