শামের মুজাহিদদের রক্ষার্থে শাহাদাহ – শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ
শামের মুজাহিদদের রক্ষার্থে শাহাদাহ
– শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ
https://banglafiles.net/index.php/s/WcjTnPRkXJJJ4Hx
https://archive.org/download/balakot_media_books/shaikh_ayman_alzawahiri_er_guruttopurno_barta.pdf http://www.mediafire.com/file/0cdcuqw37oq1fqo/29.shaikh_ayman_alzawahiri_er_guruttopurno_barta.pdf/file
WORD
https://banglafiles.net/index.php/s/J7CYG98cAbt6YWs
https://archive.org/download/shamer-mujahidder-rokkharrthe-shahadah/.docx
==================
শামের মুজাহিদীনদের জীবন হেফাজতের উদ্দেশ্যে মুজাহিদ শেইখ আইমান আল জাওয়াহিরি হাফিজুল্লাহ এর পক্ষ থেকে একটি বার্তা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম
শামের মুজাহিদীনদের মধ্যে চলমান ফিতনা প্রসংগে আমি আমার পূর্বের স্বাক্ষকেই যথেষ্ট বলে মনে করছি। কিন্তু ভাই আবু কারিম (হানি আস সিবা’ই) এর আবেদন শোনার পরে , অতঃপর এই বিষয়ে অন্য ভাইদের সাথে আলোচনা ও ইস্তিখারার সালাত আদায় করার পরে শেষ পর্যন্ত আমি এই বিষয়ে (শামের মুজাহিদীনদের মধ্যে চলমান ফিতনা) পুনঃআলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বিশেষত তিনি (হানি আস সিবা’ই) ২৫ শে জামাদিউল উলা (মার্চ) ১৪৩৫ হিজরী (২০১৪ ইংরেজী) আল মাকরিজী রেডিওর মাধ্যমে এই বিষয়ে যেই প্রশ্ন করেছেন,তার উত্তরে……………
আমি এই প্রসংগে ফিরে এসেছি দুটি কারণে। প্রথম কারণ হল আমদের এই প্রিয় ভাইটি আমাকে স্বরণ করিয়ে দিলেন যে এতে করে হয়ত বা ফিতনা দূরীভূত হবে এবং অপর কারণ ছিলো অপর এক ভাইয়ের অনুরোধ যেন এই ব্যাপারে আমার অবস্থান প্রকাশ করি।
আমি এই বক্তব্যকে প্রামাণিক স্বাক্ষ্য, নির্দেশ, আবেদন ও উপদেশ এই ক’টি শ্রেণীতে বিভক্ত করবো, ইনশা আল্লাহ।
প্রামাণিক স্বাক্ষ্য হল এই যে আই এস আই (ISI) এবং এর আমির শ্রদ্ধেয় শাইখ আবু বাক্বর আল বাগদাদী্র ( আল্লাহ তাঁকে এবং তাঁর সাথে আল কায়িদার সম্পর্ককে রক্ষা করুন ) জন্য।
আমি আল্লাহর (সুওতা) নামে শপথ করে সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, ইসলামিক স্টেইট অফ ইরাক(ISI) আল কায়িদার শাখা ও বিশেষ কাজের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিল।
আই এস আই (ISI) প্রতিষ্ঠার সময় শাইখ উসামা বিন লাদিন (রহিমুল্লাহ) এর নেতৃত্বাধীন আল কায়দার কাছে মতামত ও পরামর্শ চাওয়া হয়নি। এমনকি আমাদেরকে এই বিষয়ে কোন কিছু জানানোও হয়নি। আবু হামযাহ আল মুহাজির (আবু আইয়ুব নামেও তিনি পরিচিত এবং তিনি আবু উমর আল বাগদাদি এর সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন) তাদের ইসলামিক স্টেইট গঠন এবং আল কায়িদার প্রতি তাদের বাইয়াহ (আনুগত্যের শপথ) দিয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন এবং তাদের শুরা পরিষদের ভাইয়েরা আবু উমার আল বাগদাদীর (রাহঃ) কাছে এই মর্মে শপথ নিয়েছিলেন যে, শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ) তাঁর (আবু উমার আল বাগদাদীর) নেতা এবং আই এস আই আল কায়িদার একটি শাখা এবং ভাইয়েরা পরবর্তীতে এভাবেই কাজ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু এই ব্যাপারটি তারা জনসম্মুখে প্রকাশ করেননি কারণ ছিল কিছু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, যা তারা দেখতে পেয়েছিলেন।
আল কায়িদা ও আই এস আই এর নেতৃস্থানীয় ভাইয়েরা এই ভিত্তির উপরেই কাজ করেছেন যে আই এস আই (ISI) হল আল কায়িদার শাখা এবং এর কিছু উদাহরণ হল—
এবোটাবাদে প্রাপ্ত মেসেজ (SOCOM-2012-0000011 Orig) এবং এই মেসেজটি ছিলো শাইখ আত্তিয়া আল লিবি থেকে মুস্তাফা আবুল ইয়াজিদের প্রতি। এই মেসেজের মধ্যে শাইখ আত্তিয়া উল্লেখ করেন যে, তারা আল কারাউমির (এবং সে এটা দ্বারা আবু হামযাহ আল মুহাজিরকে বুঝিয়েছে) প্রতি সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন এজন্য যে তারা রাজনৈতিক বিভ্রান্তিতে পড়ে যেতে পারেন এই আশংকায়।
যখন আবু বাক্বর আল বাগদাদী্ আই এস আই (ISI) এর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন শাইখ আত্তিয়া আল লিবি আই এস আই (ISI) এর নেতৃত্বের প্রতি জামাদিউল আউয়াল ১৪৩১ হিজরীতে চিঠি লিখেন এই বলে যে—আমরা নেতৃত্বের ভাইদেরকে প্রস্তাব দিচ্ছি যে তারা শুরার আলোচনা শেষ হওয়া পর্যন্ত একজন অস্থায়ী নেতাকে নিয়োগ দিবেন। যতক্ষণ না আপনারা নেতৃত্বের জন্য প্রস্তাবিত নাম সমূহ, তাদের জীবনি (biography) ও যোগ্যতা সম্পর্কে আমাদের তথ্য না পাঠাচ্ছেন ততক্ষণে একজন নতুন নেতা নিয়োগ না দেয়া উত্তম হবে । আমরা এটা শাইখ উসামা বিন লাদিনের (রাহঃ) কাছে পাঠাবো।
শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ) শাইখ আত্তিয়াকে রজব ১৪৩১ হিজরীতে এই বলে চিঠি পাঠান যে—“যদি আপনারা আমাদেরকে ভাই আবু বকর আল বাগদাদী এবং তাঁর সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু সুলাইমান নাসর লিদ্বীনিল্লাহর ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য দেন তবে এটা আমাদের জন্য উত্তম হবে এবং এটা উত্তম হবে যদি আপনি তাদের ব্যাপারে (আবু বকর আল বাগদাদী এবং তাঁর সেকেন্ড ইন কমান্ড আবু সুলাইমান নাসর লিদ্বীনিল্লাহর ভাইদের) বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য নেন যারা কিনা আপনার আস্থাভাজন আর এতে করে পরিস্থিতি আমাদের নিকট পরিস্কার হবে”। এটা শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ) এর গৃহ হতে প্রাপ্ত অপর ডকুমেন্ট। (SOCOM-2012-0000019 Orig)
শাবান ১৪৩১ হিজরীতে শাইখ আত্তিয়া এই মর্মে প্রতি উত্তর দেন—“আমরা তথ্য পাওয়ার জন্য অনুরোধ করবো এবং একটি পরিস্কার চিত্র পাবার চেষ্টা করবো”।
১৪৩১ হিজরীর শাওয়াল মাসে শাইখ আত্তিয়া আই এস আই এর তথ্যবিভাগ বরাবর একটি চিঠি লিখেন এই বলে যে—
“শায়খরা [শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ) ও ডাঃ আইমান আল জাওয়াহিরী (হাঃ)] নতুন নেতৃবৃন্দ – আবু বকর আল বাগদাদী, তাঁর সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এর জীবনি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন এবং যদি তোমরা তাদের ছাড়া অন্য কোন নেতাদের চাও তাহলে তাদের ব্যাপারেও শায়খদের জানাতে পারো এবং তারা নিজেরাই তাদের জীবনী লিখতে পারে, যদি তারা চায়।”
আই এস আই (ISI) এর শুরা সদস্য যুলকাদা, ১৪৩১ হিজরীতে একটি উত্তর পাঠান এই বলে–প্রিয় ভাই, আপনার বার্তাটি এবং অনুরুপভাবে শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ) এর এখানকার স্টেইট সম্পর্কে এবং একজন নতুন নেতার নিয়োগ প্রসংগে দিক নির্দেশনাবাহী অপর একটি বার্তা পৌঁছেছে। কিন্তু আমরা একজন নতুন নেতা ঘোষণা দেবার পরেই বার্তা দুটি পেয়েছি এবং আমরা শায়িখদের বাস্তবতা ও এখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে খবরাখবর জানাতে বরাবরই যত্নশীল ছিলাম।হে আমাদের শায়খরা [ শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ) ও ডাঃ আইমান আল জাওয়াহিরী (হাঃ) ]এবং উলিলুল আমর আমরা আপনাদের জানাচ্ছি যে ইরাকে আপনাদের যে স্টেইট আছে তা সুন্দর ও সুদঢ়। আমাদের শ্রদ্ধেয় শায়েখরা! দুজন শায়েখের মৃত্যুর পর (আবু উমার আল বাগদাদী ও আবু হামযা) আপনাদের নির্দেশ সুরক্ষিত যোগাযোগের মাধ্যামে আমাদের কাছে আসার আগ পর্যন্ত শুরা পরিষদ একজন নতুন নেতা নিয়োগের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে চেষ্টা করেছেন । কিন্তু আমরা বিভিন্ন কারনে আর বিলম্ব করতে পারিনি।এর প্রধান কারণ ছিলো আমাদের ভেতরের ও বাহিরের শত্রুদের পর্যবেক্ষণ। এখানকার ভাইয়েরা, আবু বাকর আল বাগদাদী ও মজলিশে শুরার এই নেতৃত্ব (আবু বকরের) অস্থায়ী হবার ব্যাপারে কোন আপত্তি করেননি এবং যদি আপনাদের পক্ষ থেকে কেউ আসে এবং আপনারা যদি মনে করেন যে নেতৃত্ব দেবার জন্য তাঁর (যে আল কায়িদাহ-এর পক্ষ থেকে আসবেন) সুনিশ্চিত যোগ্যতা রয়েছে তাহলে তার (যা কে একিউ থেকে নেতা হিসেবে পাঠানো হবে) অনুগত সৈন্য হতে আমাদের কোন আপত্তি নেই এবং এই বিষয়ে আবু বকর আল বাগদাদী ও মজলিশে শুরা একমত।
শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ)এর মৃত্যুর পর সম্মানিত শাইখ আবু বকর বলেন— “আমি নিশ্চিত শাইখের এই শাহাদাত আমাদের দৃঢ়তা ছাড়া আর কিছুই বৃদ্ধি করবে না এবং আমি আল কায়িদার ভাইদের বলতে চাই যে তাদের সামনে শাইখ ডাঃ আইমান আল জাওয়াহিরী (হাঃ) এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ (দ্বীনি) ভাইয়েরা আল কায়িদার নেতৃত্বে রয়েছেন, আল্লাহ তাদের উত্তম প্রতিদান দিন এবং আপনারা এগিয়ে যান, আর আপনাদের জন্য সুসংবাদ যে আপনাদের সাথে রয়েছে আই এস আই এর অনুগত সৈনিকেরা, যারা কখনো দমে যাবে না এবং নরম হবে না শত্রুদের বিরুদ্ধে।
এরপর, জামাদিউল সানি, ১৪৩২ হি তে আই এস আই(ISI) এর এক জন মুখপাত্র শাইখ আত্তিয়াকে একটি চিঠি পাঠায়— ”আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের শাইখ আবু বকর আল বাগদাদী আপনাকে সুনিশ্চিত করছেন যে এখানকার পরিস্থিতি দিন দিন উন্নত হচ্ছে এবং তিনি এটাও জানাতে চেয়েছেন যে, আল কায়িদার নতুন নেতা (ডাঃ আইমান আল জাওয়াহিরি) হিসেবে আপনার চোখে কোনটি উত্তম? আমরা কি আনুগত্যের বায়াহ/শপথ জনসম্মুখে নবায়ন করব নাকি তা পূর্বের মতই গোপন থাকবে? এবং আমরা আপনাকে এটা জানাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি যে আমরা হচ্ছি আপনারই ধনুকের তীর।
শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ) পর যখন আমি [ডাঃ আইমান আল জাওয়াহিরী (হাঃ)] নেতৃত্বে আসলাম, শাইখ আবু বাকর আল বাগদাদী আমাকে তাঁর আমীর হিসেবে উল্লেখ করেছেন এমনকি জামাদিউল আওয়াল,১৪৩৪ হিজরীতে তাঁর শেষ চিঠিতেও। যা তিনি এই বলে শুরু করেছেন— “আমাদের নেতা এবং শ্রদ্ধেয় শাইখের প্রতি। এবং তিনি আরও বলেন— “আমার কাছে এই মাত্র খবর পৌছেছে যে, শায়খ জাওলানী (জাবহাত আল নুসরার আমীর) আপনার কাছে সরাসরি বায়াহ দিয়েছে, এবং এটা সে পরিকল্পিত ভাবে করেছে নিজেকে ও তাঁর সাথীদের তাঁর কৃতকর্মের ফলাফল থেকে রক্ষার জন্য। আমি এবং আমার শামের সংগীরা এটা উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, আমাদের খোরাসানের শাইখদের উচিত রক্ত প্রবাহিত হওয়ার পূর্বেই এবং আমরাআমাদের উম্মাহর জন্য আরেকটি দূঃখের কারণে পরিণত হওয়ার পূর্বেই এই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়া। আর আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, এই বিশ্বাসঘাতক (আবু মুহাম্মদ আল জাওলানী হাফিযুল্লাহ) যা করেছে তাঁর প্রতি সমর্থন কিংবা সমর্থনের আভাস ভবিষ্যতে একটি বড় ফিতনার জন্ম দেবে এবং যে মহান উদেশ্যে ( গ্লোবাল জিহাদের মাধ্যমে খিলাফাহ ) এতদিন মুসলিমরা রক্ত ঝরিয়েছে তাঁকে ব্যার্থ করে দেবে পাশাপাশি এই ব্যাপারে সঠিক অবস্থান নেয়ায় বিলম্ব করা মুজাহিদদের বিভক্ত করে দেবে এবং মুজাহিদদের জামা’আহ–এর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করবে। যার কোন সমাধান হবে না আরও রক্ত ঝরানো ছাড়া।
একই ভাবে শাইখ আবু মুহাম্মদ আল আদনানী একটি চিঠি পাঠান জমাদিউল আওয়াল, ১৪৩৪ হিজরীতে যা ছিলো আল্লাহ্র (সুওতা) প্রতি, অতঃপর উম্মাহর প্রতি এবং তারপরে তাঁর নেতাদের [ডাঃ আইমান আল জাওয়াহিরী (হাঃ) ও শাইখ আবু বাক্বর আল বাগদাদী্র(হা)]প্রতি ক্ষমা প্রার্থনা
শাইখ আবু বকর আল বাগদাদী রমযান ১৪৩৪ হিজরীতে আল কায়িদার একজন মুখপাত্রের কাছে চিঠি লিখেন এই বলে—
আমরা শাইখ জাওয়াহিরীর মেসেজ ৩টি স্তরে স্টাডি করেছি,
১)শামের আই এস আই এস (ISIS) নেতাদের সাথে আলোচনা করে
২)শামের প্রশাসনিক নেতাদের সাথে আলোচনা, যারা কিনা আমাদের শুরা পরিষদের সদস্য,
৩) আমাদের শারী’য়াহ কমিটিতে শারী’য়াহ এর দৃষ্টিকোন থেকে মেসেজটি পাঠ করা।
তাই এই বিষয়টি আমাদের নিকট পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পর যে, আমাদের আমিরদের (আল কায়িদার) এই আদেশ মান্য করা হবে আল্লাহকে (সুওতা) অমান্য করা এবং আমাদের মুজাহিদীনদের ধবংসের মুখে ঠেলে দেয়া, বিশেষ করে মুহাজিরীনদের। সুতারাং আমরা আমাদের আমিরদের (আল কায়িদার) সন্তুষ্টির চাইতে আল্লাহকে(সুওতা)সন্তুষ্টি কামনা অধিক পছন্দ করেছি।
আমার জন্য এই উদাহরণগুলোই যথেষ্ট হবে (ISI যে আল কায়দা এর অংশ ছিল সেটা প্রমাণ করতে )।
এই বিষয়ে আমার সিদ্ধান্তের প্রকৃত রূপ হল
# এটা কি একজন আমিরের কাছে তাঁর অধীনস্ত কমান্ডারের আদেশ ছিলো?? নাকি একজন বিচারকের সিদ্ধান্ত যেখানে শাওয়ালের ২৮ তারিখ ১৪৩৪ হিজরীতে আমি পরিস্কার করেছি দাওলাহ-র ভাইদের চিঠির মাধ্যমে ??
আর সেখানে আমি সুনিশ্চিতভাবেই পরিস্কার করেছি যে, একজন বিচারক হিসেবে এই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি বরং এটা ছিলো একজন আমিরের পক্ষ হতে তাঁর অধীনস্ত দুটি সেনাপক্ষের মধ্যবর্তী কোন্দলের ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত।
এবং আরেকটি প্রশ্ন এখন উত্থাপিত হতে দেখা যাচ্ছে যে কেনো আল কায়িদাহ আই এস আই (ISI) এর প্রশংসা করেছিলো এবং এর প্রতি সন্তুষ্ট ছিলো কিন্তু আই এস আই এস (ISIS) এর ব্যাপারে নয় কেন?
উত্তরটি হল যে—
যদিও আল কায়িদাহ আই এস আই এস-এর এই সিদ্ধান্তের (ইসলামিক স্টেইট অফ ইরাক এন্ড শাম ঘোষণা দেবার) ব্যাপারে কিছুই জানতো না তারপরেও আমরা এটাকে মেনে নিতাম যদি কিছু কারণ ঘটত—
যদি স্টেইটটি কোন ফিতনার উপরে ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত না হতো, আই এস আই এস (ISIS) যেমনটা পরবর্তীতে হুমকি দিয়েছিলো যে “আমরা ভয় করি আপনারা নুসরার পক্ষ নিলে মুসলিমদের রক্তপাত ঘটবে।”
আর আই এস আই (ISI) এর ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো মুজাহিদদের মজলিশে শূরার ও স্থানীয় আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ-এর কিছু তানযীমের মাধ্যমে- যা আমাদের ভাই আবু হামযাহ আল মুহাজির আমাদেরকে নিশ্চিত করেছিলেন। আর তিনি সেই ব্যাক্তি যাকে আমরা বহুদিন ধরেই আমাদের একজন বিশ্বস্ত ভাই হিসেবেই চিনি এবং তিনি চেষ্টা করেছিলেন অন্যান্য স্থানীয় দলগুলোও যেনো মুজাহিদদের এই জামা’য়াতের সাথে মিশে যায়। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আই এস আই এস শুধুমাত্র নিজেদের মাঝেই পরামর্শ করেছে আর এজন্যই জাব্বাত আল নুসরা তাদের এই পরামর্শ গন্য করেনি।
স্টেইট হিসেবে ঘোষণা দেয়া আল কায়দার এর নেতৃত্বের পূর্ববর্তী সিধান্তের পরিপূর্ণ বিরোধী একটি সিদ্ধান্ত ছিলো, কেননা আমরা চেয়েছিলাম সিরিয়াতে আল কায়দাহ-এর উপস্থিতি একান্তই গোপন রাখতে। এমনকি আল কায়দাহ- এর মৌলিক নীতিমালা হচ্ছে এই রকম একটা পরিস্থিতিতে স্টেইট/দৌওলাহ ঘোষণা না দেয়া। যেটার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় শাইখ উসামা বিন লাদিন (রাহঃ) এর নিকট থেকে পাওয়া একটি চিঠিতে যা তিনি শায়খ আত্তিয়াকে লিখেছিলেন ।SOCOM-2013-0000019 Orig
ভাই আবু ইয়াহইয়া আই এস আই এস (ISIS) স্টেইটের ভাইদের স্বরণ করিয়ে দিয়েছিলেন এবং আজ আমিও স্বরণ করিয়ে দিচ্ছি আবু বকর আল বাগদাদীর কাছে লিখা একটি চিঠির কথা। সেখানে আমি বলেছিলাম যে—তুমি যদি আমাদের এই স্টেইট ঘোষণার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আগেই জানাতে , তাহলে তোমার সাথে আমরা কখনোই একমত হতাম না। আমরা এবং আমাদের আল কায়দার ভাইয়েরা এটা পরিস্কার দেখতে পাচ্ছিলাম যে, এই ঘোষণা ক্ষতি ছাড়া ভালো কিছুই বয়ে আনবে না। স্টেইট হবার জন্য যে শর্তগুলো রয়েছে এখন পর্যন্ত সিরিয়াতে তা পূরণ করা হয়নি।
এই ঘোষণা দেবার ফলে সিরিয়াতে মুসলিম জনপদের মাঝে রাজনৈতিক সংকট তৈরী হয়েছে। যখন আমেরিকা জাবহাত আল নুসরারকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাবদ্ধ করলো তখন সেখানকার স্থানীয় মুসলিম জণসাধারণই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে রাস্তায় তাদের পক্ষে মিছিলে নেমে এলো। কিন্তু এরপরে শামের মুসলিম জণগণ এই স্টেইট হবার ঘোষণাকে বাতিল মনে করা শুরু করলো আর এতে করে বাশার আল আসাদকে আই এস আই এস (ISIS) একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরী করে দিলো। আর অন্যান্য জিহাদী তানযীমগুলো প্রচন্ড ক্রুদ্ধ হলো কেননা তারা মনে করছিলো যে আই এস আই এস (ISIS) তাদের উপরে এই সিদ্ধান্ত (আই এস আই এস এর স্টেইটের ঘোষনা) চাপিয়ে দিতে চাইছে।
এই ঘোষণা একটি দলকে পুরোপুরি টুকরো টুকরো করে ফেলে আর পরিশেষে নিজেদের মাঝে আত্নঘাতী যুদ্ধ করার পরিস্থিতি তৈরী করে দেয়।। আর “যদি নুসরাকে আপনারা সমর্থন করেন বা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে দেরী করেন” যা সে (আবু বকর আল বাগদাদী) চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিল (এটা উপলব্ধি করেছিলো যে আল কায়িদাহ জাবহাত আন নুসরাকে সমর্থন দিবে) “তাহলে এর ফলাফল একটা রক্তারক্তির পর্যায়ে চলে যাবে” যা আজ নিশ্চিতভাবেই (শামে) ঘটছে যেমনটা আবু বকর আল বাগদাদী নিজেই হুমকি দিয়েছিলো।
আর মুসলিমদের রক্তপাত এখনো বয়েই যাচ্ছে, যদি সেই মুহূর্তে তারা এই সমস্যার সমাধানের একটা উদ্যোগ নিত, যেখানে তারা শুধু ইরাকের উপরেই মনযোগ দিতো আর মুজাহিদদের রক্ত ঝড়ানো থামাতো ও এই চলমান ফিতনা বন্ধ করতো যেটা করতে তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার বেশী প্রয়োজন হতো এবং একটি শুরা থাকতো, তাদের নেতার (আল কায়িদার) প্রতি আনুগত্য থাকতো ও তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করতো তাহলে আমি মনে করি যে আজ এত বৃথা রক্তপাতের ঘটনা ঘটত না এবং তারা আজ শিয়াদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করতে পারতো ও ইরাকের আহলে সুন্নাতের অনুসারী ভাইদের দশগুণ বেশী সমর্থন লাভ করতো। আর আলহামদুলিল্লাহ এই সমর্থন তারা যে কোন ক্ষেত্রেই পেতো।
এটাই ছিলো আমার স্বাক্ষ্যপ্রমাণ।
এখন আমি তাদের (শামের সকল মুজাহিদদের) প্রতি কিছু নির্দেশ দিবো ও আবেদন জানাবো এগুলো অনুসরণের জন্য এই নির্দেশ আমি প্রথমেই দিচ্ছি জাবহাত আল নুসরার আমির শাইখ জাওলানী (হাঃ) ও তাঁর সাথী ভাইদের উদ্দেশ্যে এবং আবেদন সেই সকল মুজাহিদ ভাইদের উদ্দেশ্যে যারা সিরিয়ায় আছেন যেনো তারা দ্রুত সেই সকল যুদ্ধ থেকে বিরত থাকেন যা কেবল তাদের ভাই ও এই উম্মাহরই রক্ত ঝড়াবে যা মোটেই আমরা আশা করি না বরং তারা যেনো বাথিষ্ট, নুসাইরী ও রাফেযী শিয়াদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে মনযোগী হন। আমি আরো অনুরোধ জানাচ্ছি যে, তারা যেনো একে অন্যকে দোষারোপ বা খারাপ নামে ডাকা বন্ধ করেন এবং পরস্পরের মাঝে ঘটিত যেকোন সমস্যার জন্যে একটি স্বাধীন (যেকোন পক্ষের প্রভাবমুক্ত) শারিয়াহ আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে নেন এবং বিরত থাকার আহবান জানাচ্ছি যে, যেন তারা পরস্পরের মাঝের ফিতনাহগুলো মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযগের ওয়েবসাইট যেমন টুইটারে এই বিষয়গুলো না ছড়ান। যদিও এগুলো (মিডিয়াগুলো) কিছুটা ভালো কাজ করে কিন্তু ক্ষতিকারক কাজই বেশি করে। আর আমি শেষ করছি একটি স্বরণিকা ও উপদেশ দিয়ে
এটা শামের সকল মুজাদিদদের প্রতি আহবান যে আপনারা মুসলিমদের হারাম রক্ত ঝড়ানো বন্ধ করুন। আর নয়, যথেষ্ট হয়েছে মুজাহিদ শাইখ ও তাদের নেতাদের রক্ত ঝড়ানো। আপনাদের সবার রক্তই আমাদের কাছে প্রিয় ও পবিত্র আর আমরা আশা করি আপনারা তা শুধুমাত্র দ্বীন আল ইসলামের জন্যই খরচ করবেন।
আর সম্মানিত শায়খ আবু বকর আল বাগদাদী ও তাঁর সাথে যে সকল মুজাহিদ ভাইয়েরা আছেন তাদের জন্য একটি স্বরণিকা ও উপদেশ
আপনারা ফিরে আসুন আপনাদের আমিরের সাম’আ ওয়া তা’আহ-র (শোনা ও মানার) আনুগত্যের দিকে।
আপনারা ফিরে আসুন সেদিকে যার জন্য আপনাদের পূর্ববর্তী শাইখ ও আমিররা কঠোর পরিশ্রম করে গিয়েছেন আর আপনাদের অগ্রগামী হয়ে গিয়েছেন (শহীদ হয়ে গেছেন, ইনশা আল্লাহ)।
এই ধরণের নির্বিচার হত্যাকাণ্ড বন্ধ করুন এবং মনযোগী হোন ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে এবং ইরাকের সুন্নী ভাইদের ব্যাপারে। আপনারা ইরাকের প্রতি আপনাদের মনযোগ গভীরভাবে নিবদ্ধ করুন কেননা আপনাদের উদ্যমহীন প্রচেষ্টার আজ এর (ইরাকের) বড়ই প্রয়োজন। নিজেদের পরিপূর্ণভাবে এর (ইরাকের) জন্য আত্নত্যাগ করুন যদিও আপনারা এক্ষেত্রে কিছু ভূলও করে ফেলেন তবুও।
মুসলিম ভাইদের রক্ত ঝড়ানো বন্ধ করতে আমার আহবানে সাড়া দিন এবং মুসলিমদের একত্রিত করে জামা’য়াবদ্ধ করুন তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য, যদিও এটা আপনারা (আই এস আই এস) আমাদের পক্ষ হতে যুলুম মনে করেন।
শাইখ আবু বকর আল বাগদাদীর জন্য একটি বিশেষ স্বরণিকা ও উপদেশ
আপনার পূর্বপুরুষ হাসান (রাঃ) এর অনুসরণ করুন, যিনি মুসলিমদের রক্তপাত থেকে রক্ষা করার জন্য তাঁর খালিফা হবার সত্য দাবি থেকে নিজেকেই বঞ্চিত করেছিলেন।
যেখানে হাসান (রাঃ) এর নানা ও আপনার নানা (great gradfather) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর ব্যাপারে এই বলে সুসংবাদ দিয়ে গিয়েছিলেন যে—
আমার নাতি হল সাইয়্যিদ (নেতা) যাকে দিয়ে আল্লাহ (সুওতা) মুসলিমদের দুটি দলের মাঝে শান্তি প্রতিস্থাপন করাবেন।
এই সুসংবাদ কি আপনার জন্য যথেষ্ট নয় ??? আপনি কি এতে সন্তুষ্ট নন যে এর জন্য আল্লাহ আপনাকে দুনিয়া ও আখিরাতে উচ্চমর্যাদা দান করবেন ???
আপনি ইরাক থেকে ইসলামের শত্রুদের তাড়িয়ে দিন, এই ফিতনা থেকে বের হয়ে আসুন এবং পুনরায় ভালোবাসা ও দ্বীনি ভাতৃত্ত্বের দিকে ফিরে আসুন।
আপনি আল্লাহর (সুওতা) প্রতি ভরসা করুন এবং এই উল্লিখিত সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে ফেলুন। তাহলেই আপনি সকল মুজাহিদীন ও তাদের সমর্থকদের আপনার সাথেই পাবেন যারা আপনাকে সাহায্য করতে সদা প্রস্তুত।
হে সম্মানিত শাইখ আপনি আপনার পূর্বপুরুষের পদচিহ্ন অনুসরণ করুন এবং আপনার সফল পূর্বসূরীদের মধ্যে সবচেয়ে সফল হোন তাহলেই আপনি দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হবেন।