অডিও ও ভিডিওআরবইয়েমেনদাওয়াহ আর্কাইভবাংলা প্রকাশনামিডিয়াশাইখ আনোয়ার আল আওলাকী রহিমাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

বনু ক্বুরাইদ্বার শিক্ষা- শাইখ আনওয়ার আল আওলাকী রহঃ

সম্ভবত আইনস্টাইন বলেছিল, উন্মাদনার সংজ্ঞা হল – একই কাজ বারবার করতে থেকে ভিন্ন ফলাফল আশা করা। .

৪৭ থেকে শুরু করে গত ৭০ বছরে আরব ও মুসলিমরা বিভিন্ন ভাবে ইস্রাইলি দখলদারিত্বের মোকাবেলা করার চেষ্টা করেছে। আরব রাষ্ট্রগুলো আরব জাতীয়তাবাদের উপর ভর করে ৪৭ –এ ইস্রাইলের মোকাবেলার চেষ্টা করেছে। পরাজিত হয়েছে। ৬৭ তে স্নায়ুযুদ্ধ (Cold War) কেন্দ্রিক হিসাব নিকাশের পর রাশিয়ার উপর ভরসা করে নাসেরিযমের ধোয়া তুলে ইস্রাইলের সাথে যুদ্ধে গেছে। ব্যাপকভাবে মার খেয়েছে। পরের ৫০ বছর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আর জাতিসংঘের উপর ভরসা করে ক্যাম্প ডেইভিড, টু-স্টেইট সলিউশান, শান্তি প্রক্রিয়া নামের নাটকগুলোতে অংশগ্রহণ করেছে। ইস্রাইলের মানচিত্র ক্রমাগত বড় হয়েছে। মুসলিমদের ভূমি কেবল কমেই চলেছে। ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদি যুদ্ধের মাধ্যমে PLO, ফাত্তাহ এবং গত কয়েক দশকে হামাসের মতো দলগুলো চেষ্টা করেছে – তারা নিজেরাই অধিকাংশ সময় মারামারিতে ব্যস্ত থাকে। “বিশ্ব মানবতা” জাতীয় বায়বীয় কাল্পনিক কিছু কনসেপ্টের উপর ভরসা করে নতুন সহস্রাব্দের শুরুতে অনেকে ইস্রাইলে বয়কট করার প্রক্রিয়া চালু করেছিলেন (BDS – Boycott, Divest, Sanction) – কিন্তু সেটাও মুখ থুবড়ে পড়েছে। খোদ “মুক্তচিন্তা” আর চিন্তার স্বাধীনতার “কেন্দ্র” বলে খ্যাত ইউরোপের অনেক দেশেই ইস্রাইলি পণ্য বয়কট করার ডাক – আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য হচ্ছে। পশ্চিমা মানবতার সংজ্ঞা ও ব্যাপ্তি যে সিলেক্টিভ সেটা আবারো প্রমাণিত হয়েছে। .

যেহেতু অধিকাংশ মুসলিম – সেটা চরমপন্থী, ইসলামপন্থী, মডারেট মুসলিম, কিংবা নাম মাত্র মুসলিম যাই হোক না কেন – ফিলিস্তিনের মাটিকে, বাইতিল মাক্বদিসকে মুক্ত করার কথা বলেন, তাই তাদের গত ১০০ বছরের ইতিহাসের আলোকে একটু চিন্তা করা উচিৎ যে, ঠিক কোন পদ্ধতিতে তারা এগোনোর চিন্তা করছেন। কারণ একই কাজ বারবার করতে থেকে ভিন্ন ফলাফল আশা করা উন্মাদনা। আর উন্মাদনা দিয়ে নিঃসন্দেহে ইস্রাইলের কবল থেকে আল-আক্বসাকে মুক্ত করা যাবে না। আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন – মুমিন একই গর্ত থেকে দুইবার দংশিত হয় না। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৩৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৯৯৮] . ১৯২০ সালে সিরিয়া দখল করে নেয়ার পর ফ্রেঞ্চ জেনারেল হেনরি জোসেফ ইউজিন, সুলতান সালাহ আদ-দ্বীন আইয়ুবির কবরে লাথি মেরে বলেছিল: . ‘ওঠো হে সালাহ আদ-দ্বীন! দেখো! আমরা ফিরে এসেছি। আজ এখানে আমার উপস্থিতিই সাক্ষ্য দেয়, ক্রস বিজয়ী হয়েছে, চন্দ্র পরাজিত হয়েছে।’ .

১৯১৭ সালে পবিত্র এই ভূমি দখল করার পর ব্রিটিশ ক্রুসেইডার ফিল্ড মার্শাল অ্যালেনবি বলেছিল: “আজ সমাপ্ত হল ক্রুসেইড!” . যায়োনিস্ট ইহুদিরা প্রায়ই বাইতিল মাক্বদিসের আরবদের লক্ষ্য করে একটা স্লোগান দেয়: .

‘মুহাম্মাদ মারা গেছে আর কিছু মহিলাদের রেখে গেছে।’ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম। . .

ইহুদীরা এখন নিশ্চিত হয়ে গেছে। কেউ ওদের বাধা দেবে না। তৃতীয় মন্দির বানানোর জন্য যদি ওরা আল-আক্বসা আজই ভেঙ্গে ফেলে তবুও অ্যামেরিকার অনুগত জাতিসংঘ, আর জাতিসংঘের অনুগত ‘মুসলিম’ শাসকরা গলাবাজি করা ছাড়া আর কিছুই করবে না। ইহুদীরা নিশ্চিত তাদের মাসীহর আবির্ভাব আসন্ন, আর তাই বেপরোয়া ভাবে তারা তার আগমনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। . আরব বিশ্বে একটা স্লোগান প্রচলিত আছে: .

‘খাইবার, খাইবার ইয়া ইয়াহুদ! জাইশে মুহাম্মাদ সাওফা ইয়া’উদ’ . খাইবারকে স্মরণ করো হে ইহুদিরা! মুহাম্মাদের বাহিনী আবারো আসছে। . সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম। .

আমি বলি, শাসকরা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, পশ্চিম বিশ্ব, “বিশ্ব মানবতা” মুক্তচিন্তার ঠিকাদারেরা যতোই যায়োনিস্টদের দালালি করুক না কেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুহাম্মাদের ﷺ বাহিনী আসবে। তবে খাইবার না এ বাহিনী তাদের জন্য বনু ক্বুরাইদ্বার স্মৃতি নিয়ে আসবে। .

আপনি কি জানেন বানু ক্বুরাইদ্বার স্মৃতি কী?

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 11 =

Back to top button