আন-নাসর মিডিয়াআল কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ (AQIS)তানজীমনির্বাচিতনির্বাচিত প্রকাশনাপিডিএফ ও ওয়ার্ডবার্তা ও বিবৃতিবার্তা ও বিবৃতি [আন নাসর]মিডিয়া

“সত্যবাদীদের সঙ্গী হোন” পবিত্র ঈদুল ফিতর ১৪৪৪ হিজরী উপলক্ষে সমস্ত মুসলিমের প্রতি, বিশেষ করে উপমহাদেশের মুসলিমদের প্রতি

اداره النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media

پیش کرتے ہیں
পরিবেশিত
Presents

بنگالی ترجمہ
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation

عنوان:
শিরোনাম:
Titled:

وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ

سچوں کا ساتھ دو! مسلمانان برصغیر کے نام عید الفطر 1444ھ کے موقع پر پیغام

“সত্যবাদীদের সঙ্গী হোন”

পবিত্র ঈদুল ফিতর ১৪৪৪ হিজরী উপলক্ষে
সমস্ত মুসলিমের প্রতি, বিশেষ করে উপমহাদেশের মুসলিমদের প্রতি

And Be With Those Who Are True:
Support the Truth! A Message to the Muslims of the Subcontinent On the Occasion of ‘Īd al-Fiṭr 1444 AH

از استاد اسامہ محمود حفظہ اللہ
উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ
Ustad Usama Mahmud Hafizahullah

 

 

 

ڈاونلوڈ کریں
সরাসরি দেখুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Viewing and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/sottobadider_songi_hon
লিংক-২ : https://mediagram.me/5750bba99d5e3e61
লিংক-৩ : https://noteshare.id/n9Am1YR
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20230426063027/https://justpaste.it/sottobadider_songi_hon
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20230426063151/https://mediagram.me/5750bba99d5e3e61
লিংক-৬ : https://web.archive.org/web/20230426063307/https://noteshare.id/n9Am1YR

پی ڈی ایف
PDF (893 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৮৯৩ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/K6RzbSH4HgxfRpg
লিংক-২ :
https://archive.org/download/sottobadider-songi-hon/SottobadiderSonggiHon%20-%20UstadUsamaMahmudHafizahullah.pdf
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/dttlu41069b24936b4ce88925a566a29f04d3
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/fdb7f8ff-0a7f-46ad-b4fa-b7b685ba5985/2f120703bafebb938739090ffe7134f5ee66b423763a7a5a22a1af095cb1d82c
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/SottobadiderSonggiHon/SottobadiderSonggiHon+-+UstadUsamaMahmudHafizahullah.pdf

ورڈ
WORD (907 KB)
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৯০৭ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/95g8PrSf79HQTzL
লিংক-২ : https://archive.org/download/sottobadider-songi-hon/SottobadiderSonggiHon%20-%20UstadUsamaMahmudHafizahullah.docx
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/dttlu92b77d58b31c47c6afbaa1d4a7fe92b0
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/8fe1f53e-8f11-4517-b781-d53680042bc6/3cc57e7a7e3290b0c6fa0abea0bc24b284b463d9b67cba2d5c46fb507280c1f2
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/SottobadiderSonggiHon/SottobadiderSonggiHon+-+UstadUsamaMahmudHafizahullah.docx

٢-غلاف
Banner [83 KB]
ব্যানার [৮৩ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/eibzFMc2yzn5rZF
লিংক-২ : https://archive.org/download/sottobadider-songi-hon/SottobadiderSonggiHon%20-%20UstadUsamaMahmudHafizahullah.jpg
লিংক-৩ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/dttlude3ece39dc044d369fe70b9efd1e4681
লিংক-৪ : https://drive.internxt.com/sh/file/78bf8c47-6543-452b-8ba4-a5d00db56969/9c6a6c9b6a3175879553cc2a0324d7404e7c16dad6142d9637bee860ab3ace6a
লিংক-৫ : https://f005.backblazeb2.com/file/SottobadiderSonggiHon/SottobadiderSonggiHon+-+UstadUsamaMahmudHafizahullah.jpg

 

******

সত্যবাদীদের সঙ্গী হোন

উস্তাদ উসামা মাহমুদ হাফিযাহুল্লাহ

পবিত্র ঈদুল ফিতর ১৪৪৪ হিজরী উপলক্ষে
সমস্ত মুসলিমের প্রতি, বিশেষ করে উপমহাদেশের মুসলিমদের প্রতি

অনুবাদ ও প্রকাশনা

 

 

كُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ

অর্থ: “তোমরা সত্যনিষ্ঠ লোকদের সঙ্গী হও” (সূরা আত-তাওবা ০৯:১১৯)

بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على حبيبنا وحبيب ربنا محمد وآله وصحبه ومن والاه

পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি।
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য! রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের প্রিয়ভাজন এবং আমাদের প্রভুর প্রিয়ভাজন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর, তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর, তাঁর সাহাবী রাযিয়াল্লাহু আনহুদের উপর এবং তাঁর ভক্ত অনুরাগী সকলের উপর!
হামদ ও সালাতের পর..!

উপমহাদেশ এবং গোটা বিশ্বে আমার ঈমানদার ভাইয়েরা!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
রমযানুল মোবারক শেষ হয়ে যাচ্ছে। ঈদুল ফিতর আসন্ন। আল্লাহর কাছে কামনা, তিনি যেন এই ঈদকে আমাদের সকলের জন্য এবং গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য বরকতময় করে দেন! তিনি যেন এই ঈদকে আমাদের হেদায়াত ও নুসরাতের মাধ্যম বানিয়ে দেন!
শ্রদ্ধেয় ঈমানদার ভাইয়েরা!
সামগ্রিকভাবে গোটা মুসলিম উম্মাহর বর্তমান অবস্থা খুবই দুঃখজনক। বরকতময় রমযান মাসেও বাইতুল মুকাদ্দাসে ইসরাইলি সেনারা মসজিদে আকসার অসম্মান করেছে। নারী পুরুষ নির্বিশেষে নামাযরত ব্যক্তিদের ওপর চড়াও হয়েছে। পরবর্তী দিনে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের উপর চড়াও হয়েছে। তাদেরকে কোণঠাসা করে রেখেছে। একই সময়ে আরবের শাসকরা ইসরাইলকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। ইসরাইল রাষ্ট্রের সঙ্গে সর্বোচ্চ সম্পর্ক স্থাপনের ঘোষণা করেছে। আমেরিকা এবং ইসরাইল এই যুদ্ধ আরও বাড়িয়ে নিয়ে সরাসরি রণাঙ্গনে অবতীর্ণ হচ্ছে।
এসবকিছু আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে, ইসলামের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ আজ কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে! এ যুদ্ধ এমনই গুরুতর ও কঠিন, যা সকল সীমা-পরিসীমা অতিক্রম করেছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি – কীভাবে এ যুদ্ধের কারণে মুসলিম উম্মাহর উপর একের পর এক বিপদের পাহাড় ভেঙে পড়ছে।
উপমহাদেশেও এ যুদ্ধ চলমান। শুধু ফ্রন্ট লাইন এবং যুদ্ধের ধরন ভিন্ন। উদ্দেশ্য অভিন্ন এবং কর্মপন্থাও এক। এ যুদ্ধের লক্ষ্যস্থল ইসলাম এবং মুসলিমরা। এ কারণেই বর্তমানে উপমহাদেশের ঈমানদারদের অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আজকের আলোচনায় আমি উপমহাদেশের মুসলিমদের বর্তমান বাস্তবতায় যে বিষয়টা খুবই খেয়াল করা প্রয়োজন, তা পাঠকদের সামনে উপদেশ হিসেবে তুলে ধরবো ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর কাছে কামনা, তিনি যেন শুধু কল্যাণের বিষয় তুলে ধরার এবং তার উপর আমল করার তাওফীক দান করেন!
মুহতারাম ভাই ও বন্ধুগণ!
এই বাস্তবতা আজ কেউ অস্বীকার করতে পারবে না যে, উপমহাদেশে মুসলিমদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এমন কি তা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাবার অবস্থা। পাকিস্তান, ভারত এবং বাংলাদেশের সর্বত্র এই শোচনীয় অবস্থা চূড়ান্ত সীমায় অবস্থান করছে। এ অঞ্চলে পূর্বেও আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্থিতিশীলতা ও শান্তি ছিলো না। কিন্তু বর্তমানে অনিশ্চয়তা, জীবনের নিরাপত্তাহীনতা, অধঃপতন এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে, যা পূর্বের সঙ্গে তুলনা করলেও ‘অস্বাভাবিক ও গুরুতর’ প্রমাণিত হয়। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে, স্পষ্ট অধঃপতন সকলের সামনে চলে এসেছে এবং কেউই আর অস্বীকার করার চেষ্টা করছে না।
উপমহাদেশের মুসলিমরা এমন বিপদের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, যা এ জাতীয় পূর্বেকার যেকোন বিপদ অপেক্ষা গুরুতর। চিন্তার বিষয় হল, এই অধঃপতনের জন্য শুধু কুফরী শক্তি দায়ী নয়। এখানে কুফরী শক্তির পাশাপাশি ওই পক্ষ সমান দায়ী, যারা মুসলিমদের কাঁধে চেপে বসে কুফরী শক্তির গোলামী করে যাচ্ছে। এমনকি মুসলিম হিসেবে আমাদের নিজেদের উপরেও এ দায় আরোপিত হয়ে যায়। কারণ আমাদের অবহেলা, অসচেতনতার কারণেই শত্রুপক্ষ সুযোগগুলো ব্যবহার করতে পারছে। নিম্নে আমি এই ভূমিকা আরও কিছুটা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি।
অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ভারতে আমাদের অস্তিত্বকে পুরোপুরিভাবে বিলীন করে দেয়ার জন্য, আমাদের শত্রুপক্ষ নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঐক্য গড়ে তুলছে। এই শত্রুরা আমাদেরকে হত্যা করার জন্য এবং আমাদের দেশ থেকে আমাদেরকেই তাড়িয়ে দেয়ার জন্য প্রকাশ্যে তরবারিতে শান দিচ্ছে। অপরদিকে সংখ্যায় আমরা কোটি কোটি হওয়া সত্ত্বেও হয়ে আছি বিভক্ত। আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি নেই। আত্মরক্ষা, প্রতিরক্ষার কোন প্রস্তুতি ছাড়াই আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের অপেক্ষায় বসে আছি।
বাংলাদেশও এই গেরুয়া অন্ধকার থেকে নিরাপদ নয়। এখানে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের মুশরিকদের কর্তৃত্ব আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এখন সামাজিক পরিমণ্ডলেও শত্রুরা আমাদের থেকে আমাদের দীন ও ঈমান ছিনিয়ে নেয়ার জন্য রীতিমতো যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে।
পাকিস্তানের অবস্থা ভারত ও বাংলাদেশের চেয়ে বেশি শোচনীয় এ কারণে যে, পাকিস্তানে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে অনেক কিছু দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ আমাদের কারণেই সেসবের কিছু অবশিষ্ট নেই। পাকিস্তান উন্নয়নের নামে নিজেদের দীনদারি, শরীয়ত, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অনেক আগেই বিসর্জন দিয়েছে। দিনশেষে বহুল চর্চিত সেই উন্নয়নের এমনই দশা যে, রাষ্ট্র আজ দেউলিয়া হতে বসেছে। রাষ্ট্রের সর্বত্র অনিশ্চয়তা, অভাব, দুর্দশা আর হাহাকার। জনসাধারণের জন্য জীবন বাঁচিয়ে রাখার বাতাসটুকু নেয়াটাও দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অবস্থা যে ‘গুরুতর’ তা সকলেই অনুভব করতে পারছি। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও পরিতাপের বিষয় হল, দুর্দশা ও অধঃপতনের মূল যে কারণ, তা দেখেও না দেখার ভান করছে সকলেই। যে পথে আমাদের দুর্দশা ও অধঃপতন ঘটেছে, সে পথেই আরও অগ্রসর হবার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিপর্যয়ের পথেই উন্নয়ন ও অগ্রগতি খোঁজা হচ্ছে। যে পন্থা অবলম্বনে আমরা অধঃপতনের শিকার হয়েছি, সে পন্থাকেই উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ বলা হচ্ছে। এভাবেই আমাদের পতনমুখী যাত্রাকে আরও সংক্ষিপ্ত করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় দয়ালু ঈমানদার ব্যক্তিদের উচিত: নিজেরা এই অবস্থাকে ভালোভাবে জানবে এবং এ সম্পর্কে সচেতন হবে। সেই সাথে জনসাধারণের অন্তরে যে পর্দা পড়েছে, তা সরিয়ে দিতে সচেষ্ট হবে। আসন্ন বিপদের ভয়াবহতা থেকে আত্মরক্ষার জন্য সকলকে সচেতন করে তুলবে। কারণ আসন্ন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এখনই উদ্যোগ গ্রহণ করা আমাদের ওপর ‘ফরযে আইন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আল্লাহর কিতাব থেকে আমরা জানতে পারি, আমাদের অধঃপতন, দুর্দশা, লাঞ্ছনা ও বিপর্যয়ের সবচেয়ে বড় কারণ হলো – আমাদের রবের নেয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা এবং আল্লাহর কিতাব থেকে বিমুখ হয়ে যাওয়া। এ সম্পর্কে আল্লাহর কিতাবে এসেছে:

وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَىٰ ‎

অর্থঃ “এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করবো”। (সূরা ত্বা-হা ২০:124)
আমাদের কাছে আল্লাহর কিতাবের দাবি হচ্ছে, আমরা নিজেরা আমাদের রবের কাছে নত হবো। তার প্রদত্ত দীন ইসলাম অনুযায়ী নিজেদের জীবনকে পরিচালনা করতে সচেষ্ট হবো। সেই সঙ্গে আমাদের কাছে আল্লাহর কিতাবের আরও একটা দাবি হচ্ছে: আল্লাহ প্রদত্ত দীন ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত ও বিজয়ী করার জন্য বাস্তব কর্মক্ষেত্রে আমরা অবতীর্ণ হব। শয়তানের মোকাবেলায় রহমানের, বাতিলের মোকাবেলায় হকের, মিথ্যের মোকাবেলায় সত্যের পতাকাকে সমুন্নত করে আল্লাহর সৈনিক হয়ে যাবো।
আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার কথা স্বীকার করা কিন্তু আল্লাহর আনুগত্যের জন্য তৈরি না হওয়া; এমনিভাবে আল্লাহ প্রদত্ত দীন ইসলাম অনুযায়ী আমল করার দাবি করা, কিন্তু সেই ইসলামের জন্য কষ্ট মুজাহাদা করতে না চাওয়া এবং আল্লাহর ডাকে সাড়া না দেওয়াটাই হলো সেই মৌলিক কারণ – যা উপমহাদেশে আমাদেরকে লাঞ্ছনা ও অধঃপতনের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। আমরা ব্যক্তিগত এবং জাতীয় উন্নতি, অগ্রগতি ও আত্মরক্ষাকে আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছি। অথচ আল্লাহ প্রদত্ত দীন ইসলামের হেফাযত ও প্রতিষ্ঠাকে জীবনের উদ্দেশ্য বানাবার ব্যাপারে আমরা কত গাফেল ও উদাসীন!
পরিণতিতে আল্লাহ প্রদত্ত দীন ইসলাম আমাদের কারণে পরাজিত হয়েছে, আবার আমরা নিজেরাও শাসিত ও শোষিত হয়ে চলেছি। মুসলিম জাতির সম্মান, গৌরব হেফাযত, আত্মরক্ষা ও বিজয় আল্লাহ রেখেছেন তার প্রদত্ত দীন ইসলামের প্রতিষ্ঠা, গৌরব ও সম্মানের মাঝে। যদি ঈমানদাররা আল্লাহর দীনের সাহায্যের জন্য উঠে দাঁড়ায়, ‘হাইয়া আলাল জিহাদ’ ডাকে সাড়া দিয়ে রণাঙ্গনে অবতীর্ণ হয়, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে কখনোই লাঞ্ছিত ও অপমানিত হতে দেন না। আল্লাহ তখন তাদেরকে স্বায়ত্তশাসন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মতো নেয়ামত দান করেন। কিন্তু মুসলিমরা যদি আল্লাহর দীন ও শরীয়তের পাহারাদারীর পরিবর্তে ব্যক্তি স্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থরক্ষার চিন্তায় বিভোর হয়ে যায়, তখন তাদের নিজেদেরও প্রাণ, সম্পদ, মান-সম্মান আর নিরাপদ থাকে না। তাদের জাতীয় স্বার্থও ভেস্তে যায়। শরীয়তের বিধি-বিধান পরিত্যাগ করে এবং আল্লাহর দীনের ব্যাপারে অবহেলা করে যদি আমরা অন্য কোন মাধ্যমে দুনিয়াতে নিজেদের সম্মান ও গৌরব বৃদ্ধি করতে চাই, তাহলে এর পরিপ্রেক্ষিতে দাসত্ব, লাঞ্ছনা, অপমান ও অধঃপতন ছাড়া আর কিছুই আমাদের কপালে জুটবে না। সাইয়েদুনা হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু কত সুন্দর করে এ বিষয়ে বলেছেন:

نحن قوم أعزنا الله بالإسلام فإذا ابتغينا العزة بغير ما أعزنا الله أذلنا الله

অর্থ: “আমরা হলাম এমন জাতি যাদেরকে আল্লাহ তাআলা ইসলামের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন। এখন আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে যে জিনিসের মাধ্যমে সম্মান দান করেছেন তা ছেড়ে অন্য কোন বিষয়ের মাধ্যমে যদি আমরা সম্মানের খোঁজ করি, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে লাঞ্ছিত করে দিবেন।”
অতএব উপমহাদেশে মুসলিমদেরকে যে অধঃপতন ও বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে, তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক কারণ হচ্ছে: জাতীয় স্বার্থ রক্ষার চিন্তা এবং সংকীর্ণ ধ্যান-ধারণা গ্রহণ করে ইসলামের দাবিগুলোকে বিসর্জন দেয়া। এ কারণে আজ আমরা নিজেরা স্বাধীন ও নিরাপদ না। আর না আমাদের জাতিগত উন্নতি অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
দ্বিতীয় বিষয় হলো: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ‘আলিম বিজাতিস সুদূর’ তথা অন্তর্যামী। তিনি সকল মানুষের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা জানেন। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থার মাঝে মিল দেখেই আল্লাহ তাআলা কোন জাতির সম্মান কিংবা অসম্মানের ফয়সালা করে থাকেন। অন্তর্যামী রব্বে কারীমকে মানব রচিত আইন ও সংবিধানের মাঝে কয়েক লাইন ইসলামী কথা লিখে ধোঁকা দেয়া যায় না। তিনি সর্বক্ষণ দেখে যাচ্ছেন, কে আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকারকে বাস্তবায়িত করার জন্য সত্যিকার অর্থে চেষ্টা করছে, আর কে কৃত ওয়াদা ও অঙ্গীকারকে শরীয়তে ইসলামী থেকে পলায়ন এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার মহান দীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও অনাচারের মাধ্যম বানিয়ে নিয়েছে?
মহান রব্বে কারীম আমাদের মতো লোকদেরকেই সতর্ক করে দিচ্ছেন যে, যদি ঐ মহান সত্তা এবং তাঁর কিতাবের প্রতি আমরা ঈমান আনয়নের দাবি করে থাকি, তাহলে আল্লাহর কিতাবের সকল বিধি-বিধান এবং আল্লাহ প্রদত্ত পূর্ণাঙ্গ দীন ইসলাম আমরা যেন জীবনের সকল ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের সদিচ্ছা দেখাই। আল্লাহ আমাদের কাছ থেকে দেখতে চাচ্ছেন যে, আমরা জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর ভালোবাসা ও আনুগত্যের ওপর অন্য কোন বিষয়ের ভালোবাসা ও আনুগত্যকে প্রাধান্য দেই কি না। আমাদের কাছে আল্লাহ চান, আমরা যেন নিজেদের কাজকর্মের মাধ্যমে এ কথা প্রমাণ করে দেই যে, আমরা আমাদের প্রবৃত্তির দাস নই, আর না অন্যদের মতো মানব গোষ্ঠীর দাসত্বে আমরা লিপ্ত। আমরা তো শুধু আল্লাহর গোলামী এবং দাসত্বকে নিজেদের জন্য মহিমা ও গৌরব মনে করি।
আর যদি আমরা এমনটা না করি, তবে দীনদার শ্রেণি এবং শ্রদ্ধেয় আলেমদেরকে কোণঠাসা করার জন্য আমরা ‘পয়গামে পাকিস্তান’ ঘোষণাপত্রকে অবলম্বন করতে পারবো ঠিক, কিন্তু আল্লাহর কাছে এই ধরনের কোন কৌশল কাজে আসবে না। আল্লাহর কাছে শুধু ঈমান, আমল, কর্মের স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠা কাজে আসবে। এটাই হলো সেই মানদণ্ড, যা দিয়ে আমাদের শাসক মহলকে মেপে দেখতে হবে। বিগত ৭৫ বছরের ইতিহাস সাক্ষী, আল্লাহর দীনের প্রতি ভালোবাসা ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তারা মিথ্যাবাদী, প্রতারক এবং অবিশ্বস্ত!
তারা একথা ঘোষণা করে যে, কুরআন হাদীসের বিরুদ্ধে কোন ধরনের আইন প্রণয়ন হবে না। আবার একই আইনে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ব্যবস্থাপত্র ‘সুদী ব্যবস্থা’কে বহাল রাখে। ‘অর্ডিন্যান্স আইন’ নামক অপ্রয়োজনীয় বিষয়কেও সংবিধানের অংশ বানিয়ে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে এমনভাবে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে যে, ৭৫ বছরে কখনও, একবারের জন্যেও এই সমস্ত বিধি-বিধানের উপর সঠিকভাবে কাজ করা যায়নি।
এই সমস্ত বিধি-বিধান আল্লাহর শরীয়তের সঙ্গে ঠাট্টার মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা এমনই ইসলামী সংবিধান, যার অধীনে কথিত নারী অধিকার রক্ষা করা হয়েছে, আবার ‘ট্রান্স জেন্ডার অ্যাক্ট’-ও পাস করা হয়েছে। এই যে বিলগুলো পাস হয়েছে, এগুলোর ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের কাছ থেকে পয়গামে পাকিস্তানের পক্ষে দস্তখত নেয়া হয়েছে এবং তাদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। এই সমস্ত বিল পাস হবার পর পাকিস্তানে স্বেচ্ছা ব্যভিচার ও সমকামিতাকে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এ সমস্ত অপরাধে যারা লিপ্ত হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কোনভাবেই আইনি পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছে না।
জি হ্যাঁ, আমরা ঐ ইসলামী সংবিধানেরই কথা বলছি যার বাস্তবতা প্রকাশিত হলে আমরা আরও দেখতে পাই যে, একদিকে আল্লাহর হাকিমিয়াত ও একচ্ছত্র শাসনতান্ত্রিক অধিকারের কথা ঘোষণা করে কালিমায় তাইয়্যেবা পাঠ করা হচ্ছে আবার অপরদিকে কুরআন-সুন্নাহ বাস্তবায়নের কার্যকরী প্রচেষ্টাকে জনপ্রতিনিধিদের সংখ্যাগরিষ্ঠের সম্মতির সঙ্গে শর্তযুক্ত করে দেয়া হচ্ছে। কেমন যেন আল্লাহ প্রদত্ত বিধি-বিধানগুলো তখনই বাস্তবায়নযোগ্য হবে যখন জনপ্রতিনিধিরা এগুলো বাস্তবায়নের ব্যাপারে সম্মত হবে! যেন তাদের অনুমতিক্রমেই আল্লাহর শরীয়ত কার্যকর হতে পারে! আল্লাহর হাকিমিয়াত ও একচ্ছত্র শাসনতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধে এ সমস্ত বিষয় যে কত বড় দুঃসাহসিকতা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই হল ইসলামী সংবিধানের ইসলামী আইনের নমুনা!
এই আইনের মাধ্যমেই আমাদের ওপর চেপে বসা পশ্চিমা সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং ধ্যান-ধারণার প্রবৃত্তি পূজারী শাসক মহল শাসনের লাঠি ঘুরিয়ে যাচ্ছে এবং পাকিস্তান থেকে ইসলামের জানাযা বের হচ্ছে। এমন নাশকতা, নারকীয় আচরণ, প্রতারণা ও মুনাফিকি করে কিছু দীনদার ধর্মপ্রাণ মানুষকে হয়তো প্রতারিত করা যাবে। কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলার বিরুদ্ধে এই সমস্ত প্রতারণা কি কোন কাজে আসবে? এই সরকার ও শাসন ব্যবস্থার ব্যাপারে আল্লাহর কি ফয়সালা? রব্বে কারীমের দৃষ্টিতে কি এই ব্যবস্থা ইসলামিক না ইসলামবিরোধী? এই ব্যবস্থার অনৈসলামিক বিষয়গুলোর কোন একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেই কি এর সদুত্তর পাওয়া যায় না? আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত পরাক্রমশালী, সর্বশক্তিমান। আবার তিনি প্রতিশোধ গ্রহণকারী জুলজালালি ওয়াল ইকরাম। তাঁর প্রদত্ত শরীয়তের বিধি-বিধান যেভাবে লাঞ্ছিত ও অবমূল্যায়নের শিকার হচ্ছে, তাঁর সাজানো প্রাকৃতিক ব্যবস্থাকেও কি সেভাবে বিকৃত করা হবে?
আল্লাহর সাজানো অমোঘ বিধির আলোকে আমাদের এই জাতির অতীতের ৭০-৮০ বছরের ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া সঠিকভাবে মেপে দেখা উচিত। আমরা একদিকে আমেরিকার গোলামী করেছি, আবার চীনের সামনেও নত হয়েছি। এসব কিছু সত্ত্বেও আল্লাহর অপরিবর্তিত প্রাকৃতিক বিধানের কারণে, কারও পদলেহন ও দাসত্ব করে আমরা লাঞ্ছনা, অপমান, অধঃপতন ও দাসত্ব থেকে মুক্ত হতে পারিনি। বরং দিন দিন সেগুলো আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ -আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলার কাছ থেকে ‘আদর্শ’ নিয়ে বাণিজ্য করার কূটচাল আমরা গোপন রাখতে পারিনি।
আল্লাহ রাব্বে কারীম ঘোষণা করেছেন, তাঁর ফয়সালা ও সিদ্ধান্ত হলো: মহান ঐ সত্তার সঙ্গে যে বা যারা প্রতারণা ও ছলচাতুরি করবে, তার কিছু বিধি-বিধান আমলে নেবে এবং অন্যগুলোকে কার্যতভাবে অস্বীকার করবে, আল্লাহ ঐ ব্যক্তি কিংবা ওই গোষ্ঠীকে কিয়ামতের দিন কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করবেন। আর আল্লাহ তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে বেখবর নন। এমন কাজের শাস্তি হিসেবে আল্লাহ দুনিয়াতেও লাঞ্ছনা ও অপমান চাপিয়ে দিবেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সে যেই দুনিয়াতে লাভবান হতে চেয়েছে, সে দুনিয়াতেও সে লাঞ্ছিত হবে। আর আখিরাতে তার জন্য এর চেয়েও কঠোর শাস্তি তো অপেক্ষা করছেই। এ সম্পর্কে কুরআনে কারীমে আল্লাহর এরশাদ নিম্নরূপ:

أَفَتُؤْمِنُونَ بِبَعْضِ الْكِتَابِ وَتَكْفُرُونَ بِبَعْضٍ ۚ فَمَا جَزَاءُ مَن يَفْعَلُ ذَٰلِكَ مِنكُمْ إِلَّا خِزْيٌ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرَدُّونَ إِلَىٰ أَشَدِّ الْعَذَابِ ۗ وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ

অর্থ: “তবে কি তোমরা কিতাবের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে হীনতা ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।” (সূরা আল বাকারা ২:৮৫)
সুবহানাল্লাহ!
প্রিয় পাঠক,
আয়াতের শেষাংশ লক্ষ্য করুন!
وَمَا اللَّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُونَ
অর্থ: “আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে বেখবর নন”।
তাই কিছুতেই মনে করা যাবে না – জাতিকে প্রতারিত করা গেছে, উলামায়ে কেরাম ও দীনদার শ্রেণিকে প্রতারিত করা গেছে বিধায় – নাউযুবিল্লাহ – আল্লাহকেও প্রতারিত করা সম্ভব হবে। আল্লাহ তাআলা বলছেন: “আল্লাহ তোমাদের কাজকর্ম সম্পর্কে বেখবর নন”।
পরের আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলা এরশাদ করেছেন:

أُولَٰئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُا الْحَيَاةَ الدُّنْيَا بِالْآخِرَةِ ۖ فَلَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ

অর্থ: “এরাই পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবন ক্রয় করেছে। অতএব এদের শাস্তি লঘু হবে না এবং এরা সাহায্যও পাবে না”। (সূরা আল বাকারা ২:৮৬)
ইবনে মাজাহ শরীফের এক হাদীসে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন গুনাহের শাস্তি সম্পর্কে আলোচনা করেন। অশ্লীল কাজকর্ম, পরিমাপে কম দেয়া, যাকাত না দেয়া ইত্যাদি গুনাহের ব্যাপক বিস্তার ঘটা এবং দুনিয়াতে সে সব গুনাহের প্রতিফল সম্পর্কে আলোচনা করার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:

ولم ينقضوا عهد الله وعهد رسوله إلا سله الله عليهم عدوا من غيرهم فأخذوا بعض ما في أيديهم وما لم تحكم أئمتهم بكتاب الله ويتخيروا مما أنزل الله إلا جعل الله بأسهم بينهم

অর্থ: “যে জাতি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের অঙ্গীকারকে ভঙ্গ করবে, সে জাতির ওপর আল্লাহ তাআলা অন্যদেরকে চাপিয়ে দিবেন – যারা ঐ জাতির সঙ্গে শত্রুতা করবে। অতঃপর তারা তাদের সম্পদ ছিনিয়ে নিবে। মুসলিম শাসকেরা যখন আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফয়সালা করবে না বরং আল্লাহ তাআলার অবতীর্ণ বিধি-বিধানের মাঝে নিজেদের পছন্দসই কিছু বিধানকে গ্রহণ করবে (অবশিষ্টগুলোকে পরিত্যাগ করবে, তখন আল্লাহ তাআলা ওই জাতির মাঝে গৃহযুদ্ধ এবং) পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-বিবাদ ছড়িয়ে দেবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ – ৪০১৯)
এই মোবারক হাদীস আমাদেরকে বলে দিচ্ছে, কেন আজ আমরা আইএমএফ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার গোলামী করে যাচ্ছি। কেন আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমগুলোকে এই সমস্ত ইহুদী সংস্থা লুট করে নিচ্ছে।
উক্ত হাদীস থেকে আমরা আরও বুঝতে পারি: কেন আজ গোটা জাতির মাঝে এত দ্বন্দ্ব-বিবাদ! কেন ঐক্য সাধন করা সম্ভব হচ্ছে না?
এই হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি: কেন শত্রুপক্ষের সামনে আমরা এতটা নিরুপায় ও দুর্বল! আসলে আমাদের এই দুর্বলতা, বিভক্তি, ঐক্যের ঘাটতি ও অস্থিরতা – আমাদের অধঃপতন ও পরাজয়ের কারণ নয়। বরং এগুলো নিজেরাই অন্য কোন বিষয়ের প্রতিফল ও প্রতিক্রিয়া।
এখন প্রশ্ন হল, কোন বিষয়ের প্রতিফল স্বরূপ আমাদের এই নিরুপায় অবস্থা? কোন বিষয়ের কারণে আমাদের এই বিভক্তি, অনৈক্য ও দুর্বলতা? এর জবাব হলো: আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা এবং আল্লাহর সংবিধানকে পূর্ণাঙ্গভাবে নিজেদের সংবিধান হিসেবে গ্রহণ না করা।
এক কথায় – বর্তমান সময়ের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, বিবাদ, শত্রুতা ও বিভক্তির বিষয়গুলোই হোক কিংবা অতীতে বাংলার মুসলিমদেরকে নিজেদের ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে না পারা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মতো একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে প্রভাবিত করার বিষয়টি – এ সবকিছুর কারণ আমাদের ওই সমস্ত অপরাধ – অর্থাৎ আমরা আল্লাহকে নিজেদের শাসক ও মালিক হিসেবে মেনে নিচ্ছি না। আমরা তাঁর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার পূরণ করছি না এবং আমরা তাঁর শরীয়তকে নিজেদের উপর বাস্তবায়ন করছি না।
উপমহাদেশে আমার প্রিয় ভাইয়েরা!
স্মরণ রাখা উচিত, উপমহাদেশের ঈমানদারদেরকে আল্লাহ তাআলা একটি মহান লক্ষ্য এবং বিশেষ দায়িত্বের জন্য প্রস্তুত করছেন। সেই লক্ষ্য উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমরা যত দ্রুত উঠে দাঁড়াবো, তত দ্রুত অধঃপতন ও লাঞ্ছনা থেকে আমরা মুক্তি পাবো। শত্রুর পক্ষ থেকে জাতিগতভাবে থাপ্পর বসিয়ে আমাদেরকে যেভাবে অপমান করা হচ্ছে, এরূপ লাঞ্ছনাকর পরীক্ষার উদ্দেশ্য সম্ভবত এটাই যে, আমরা যেন নিজেদের দায়িত্ব পালনে সচেতন হয়ে উঠি। নিজেদের কাজে লেগে পড়ি এবং হিজবুল্লাহ ও জুনদুল্লাহ (আল্লাহর সৈনিক বা সৈন্যদল) হয়ে আল্লাহর সাহায্যের জন্য কোমর বেঁধে দাঁড়িয়ে যাই।
আমাদের জেনে রাখা উচিত: এই অঞ্চলে মুসলিমদের ইজ্জত, সম্মান, উন্নতি, অগ্রগতি ও স্থায়িত্ব শুধু এই বাস্তবতার সঙ্গে জড়িত যে, আমরা আল্লাহর মাহবুব ও প্রিয় হওয়ার পথে পা বাড়াবো। এখন আল্লাহর প্রিয় পাত্র হবার পথ কোনটি এবং তার প্রিয়ভাজনদের গুণাবলী কি কি সেগুলো আমাদের জানতে হবে।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা তাঁর কুরআনে কারীমের নিম্নোক্ত আয়াতে কারীমার মাঝে খুব সুন্দর ভাবে সেসব উত্তম গুণাবলীর কথা আলোচনা করেছেন—

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْتَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ۚ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ ۚ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

অর্থ: “হে মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যে স্বীয় ধর্ম থেকে ফিরে যাবে, অচিরেই আল্লাহ এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন, যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন এবং তারা তাঁকে ভালোবাসবে। তারা মুসলিমদের প্রতি বিনয়-নম্র হবে এবং কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না। এটি আল্লাহর অনুগ্রহ-তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্য দানকারী, মহাজ্ঞানী”। (সূরা আল মায়েদা ৫:৫৪)
এই আয়াতে যেন এ কথাই বলে দেয়া হলো যে, উপমহাদেশে ইসলাম ও মুসলিমদের স্থায়িত্ব, আত্মরক্ষা, প্রতিরক্ষা, ইজ্জত সম্মান ও সম্ভ্রমের ঠিকাদার কোন বিশেষ পাক অথবা নাপাক ফৌজ নয়। বরং এসব কিছু এমন একটি ইসলামী আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত হবে, যে আন্দোলনের সদস্যদের মাঝে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো থাকবে:
(১) তাঁরা আল্লাহকে ভালোবাসবে এবং তাঁদেরকে আল্লাহ ভালোবাসবেন,
(২) মুমিনদের ব্যাপারে তাঁরা সদয় ও নমনীয় হবে,
(৩) কাফেরদের ব্যাপারে কঠোর ও বিক্রমশালী হবে,
(৪) আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী হবে,
(৫) এ সমস্ত দায়িত্ব পালনের কারণে যদি কেউ তাঁদেরকে তিরস্কার করে, তবে তাঁরা সেই সমস্ত তিরস্কার ও নিন্দার কোন পরোয়া করবে না।
এগুলো এমন সব গুণাবলী, যদি এগুলো আমরা মুসলিমরা নিজেদের মাঝে ধারণ করতে পারি, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে ইসলাম এবং মুসলিমদের হেফাযতের মহান দায়িত্বে নিয়োজিত করবেন। কিন্তু—আল্লাহ না করুন—যদি এই গুণাবলী থেকে আমরা বঞ্চিত থাকি, তাহলে আল্লাহ আমাদেরকে সরিয়ে অন্য জাতিকে নিয়ে আসবেন। কারণ রাব্বে কারীমের উদ্দেশ্য হচ্ছে – তাঁর দীন ইসলামকে বিজয়ী করা। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য শুধু ওই সমস্ত লোক এবং ওই সকল জামাত গ্রহণযোগ্যতা পাবে, যাদের মাঝে উপরযুক্ত গুণাবলী বিদ্যমান থাকবে।
আমাদের আরও স্মরণ রাখা চাই যে, আল্লাহর দীনের বিজয় এমন কোন আন্দোলনের মাধ্যমে সম্ভব নয়—এমনটা না কখনও হয়েছে আর না কখনও হবে—যেই আন্দোলন বাতিল ব্যবস্থার অধীনে বাতিল লোকদের দেখানো পথেই চলতে বাধ্য। তাগুত গোষ্ঠীর প্রতি বিশ্বস্ততা ও আনুগত্যকে এরা নিজেদের আইনি ও সাংবিধানিক দায়িত্ব বলে মনে করে।
কুফর ও জুলুমের মোকাবেলায় ইসলামকে বিজয়ী করার ‘প্রকৃত আন্দোলন’ সর্বদা মসৃণ, শান্তিপূর্ণ, নির্বিঘ্ন হওয়ার মতো বিষয়টি পূর্বে কখনও ঘটেনি, ভবিষ্যতে ঘটবেও না। বরং যে সমস্ত আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে চেষ্টা-প্রচেষ্টা করার কথা বলে, সেগুলো প্রকৃতপক্ষে জিহাদ ও কিতালকে সহায়তা ও সমর্থন করার পরিবর্তে আরও দুর্বল করে দেয়। ইসলাম বিজয়ের পরিবর্তে কুফরী ব্যবস্থা বিজয়ী করার প্রকল্পে সাহায্যকারী হিসেবে প্রমাণিত হয়।
অতএব উপমহাদেশের ঈমানদারদের আত্মরক্ষা, প্রতিরক্ষা, অপমান ও লাঞ্ছনা থেকে উত্তরণ এবং ইসলাম বিজয়ী করার সৌভাগ্য আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলা ওই সমস্ত সৌভাগ্যবান ব্যক্তিকেই দান করবেন – যাঁরা আল্লাহর প্রতি মোহাব্বত ও ভালোবাসা পোষণ করেন। নিজেদের ইখলাস, একনিষ্ঠতা, বিশুদ্ধ মন ও শুদ্ধি মানসিকতার কারণে তাঁরা আল্লাহর মোহাব্বতের পাত্র। তাদের ভালোবাসা ও ঘৃণার মানদণ্ড কোন ব্যক্তিগত অথবা গোষ্ঠীগত স্বার্থ নয়; কোন রাষ্ট্রীয় কিংবা আঞ্চলিক সুযোগ-সুবিধাও নয়। বরং আল্লাহর জন্যই তাঁরা কাউকে ভালোবাসে এবং আল্লাহর জন্যই কাউকে ঘৃণা করে। তাঁরা আল্লাহর জন্য কাউকে সমর্থন করে এবং আল্লাহর জন্যই কারও বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করে। তাঁরা আল্লাহর কালেমায়ে তাইয়্যেবা সমুন্নত করার জন্য জিহাদ-কিতালের ময়দানে অটল অবিচল থাকে। আবার তারাই আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করে যে, ‘হে আল্লাহ! আমরা দুর্বল! অতএব আমাদেরকে সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের কাতারে শামিল কর এবং আমাদের রক্ত ঘামকে তোমার দীন ইসলামের খেদমতে কবুল কর’! আমীন!
আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই যে, উপমহাদেশে আল্লাহর দীন ইসলামকে সাহায্য করার জন্য হকপন্থী উলামায়ে কেরাম ও মুজাহিদ একেবারেই অনুপস্থিত নয়। অন্ধকার রাতের এই সমস্ত মশাল নেভানোর জন্য এবং মুসলিম উম্মাহর আলো নিভিয়ে দেয়ার জন্য পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত শয়তানের গোলামরা রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এখন এরই মাঝে সাধারণ ঈমানদারদের পরীক্ষা এটাই যে, তারা হকপন্থী উলামায়ে কেরাম ও মুজাহিদদের পাশে দাঁড়ায় নাকি তাঁদের বিরুদ্ধে আইম্মাতুল কুফুরের শিবিরে অবস্থান নেয়। আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ

অর্থঃ “হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যনিষ্ঠ লোকদের সঙ্গী হও”। (সূরা আত-তাওবা ০৯:১১৯)
আল্লাহর এই বাণী যেন আমাদের দিকে তাকিয়েই নাযিল হয়েছে। এই আয়াতে আল্লাহর প্রথম নির্দেশ হলো – তাকওয়া অবলম্বন করা। অর্থাৎ আমরা নিজেদের সকল কাজকর্ম ও পরিকল্পনার ক্ষেত্রে এটাকেই উদ্দেশ্য বানিয়ে নিবো যে, আমরা আল্লাহর অসন্তুষ্টি থেকে বাঁচবো। এর মাঝে আল্লাহর দীনের সাহায্যকারী হবার বিষয়টি শামিল রয়েছে।
যাই হোক আয়াতের পরের অংশে প্রথম অংশ পালনের পন্থা ও পদ্ধতি বলে দেয়া হয়েছে।
كُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ
অর্থ: “তোমরা সত্যনিষ্ঠ লোকদের সঙ্গী হও” (সূরা আত-তাওবা ০৯:১১৯)
মুফতী মুহাম্মদ শফী রহিমাহুল্লাহ এই আয়াতের খুবই চমৎকার তাফসীর করেছেন। তিনি লিখেছেন: “এখানে উলামা ও সুলাহা (আরবী সালেহ {সৎকর্মশীল} শব্দের বহুবচন) শব্দের পরিবর্তে সাদিকীন শব্দ চয়ন করা হয়েছে। এভাবেই সত্যিকার আলেম ও সৎকর্মশীল ব্যক্তির পরিচয় বলে দেয়া হয়েছে। সত্যিকার অর্থে আলেম ও সৎকর্মশীল ব্যক্তি এমন হবে, যার বাহ্যিক অবস্থার সঙ্গে অভ্যন্তরীণ অবস্থার মিল থাকবে। নিয়ত, পরিকল্পনা ও কাজের ইচ্ছা সত্যনিষ্ঠ হবে। কথায় সত্যবাদী হবে, কাজেও।”
পাকিস্তানে আজ আবারও মুজাহিদদের বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনার ঘোষণা করা হয়েছে। তাই পাকিস্তানের সাধারণ মুসলিমদের সামনে আবারও এ পরীক্ষা এসে দাঁড়িয়েছে যে, তারা কুরআনের মানদণ্ডে বিবাদমান দুইপক্ষকে বিচার করবে। কুরআনের মানদণ্ডে বিচার করে তাদেরকে বলতে হবে: মুজাহিদ ও তাদের শত্রুদের মধ্যে কোন পক্ষ সত্যবাদী আর কোন পক্ষ মিথ্যাবাদী?
পাকিস্তানের মুসলিমদের কল্যাণকামী, ইসলামের সৈনিক এবং আল্লাহর ইবাদতের দাবিতে সত্যবাদী দল একপক্ষে আছে। অপরপক্ষে ওই সমস্ত জেনারেলগণ যারা কাফের বিশ্বের ধ্বজাধারী, ঈমানদারদের ঘাতক এবং পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেয়া বাতিল শাসন ব্যবস্থার রক্ষাকারী।
এই জেনারেলরা সত্যবাদী নাকি ওই সমস্ত মুজাহিদরা সত্যবাদী, যারা মুসলিম উম্মাহর সম্মান বুকে ধারণ করে, আল্লাহর দীন সমুন্নত করার লক্ষ্যে নিজেদের ঘর-বাড়ি এলাকা ও মাতৃভূমি ত্যাগ করে হিজরত ও জিহাদের পথকে আপন করে নিয়েছে? আত্মবিয়োগ ও সর্বস্ব বিসর্জনের অবিচ্ছিন্ন অনুপম ধারা এরাই জারি রেখেছে। আজও এই শ্রেণির অপরাধ হলো: তারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার পালনের চেষ্টা করছে এবং পাকিস্তানের মুসলিমদেরকে জুলুম, অনাচার ও লাঞ্ছনার রাজনীতি থেকে মুক্তির পন্থা দেখিয়ে দিতে চাচ্ছে। এ কারণে এই শ্রেণির ব্যাপারে মুসলিম জনসাধারণের দায়িত্ব হল: তাদের হাতে হাত রাখা, তাদেরকে সমর্থন করা, তাদের সাহায্য সহায়তার ব্যবস্থা করা, তাদের সঙ্গে যোগ দেয়া, তাদের অবস্থানে অন্যদেরকে নিয়ে আসা এবং তাদের বিরুদ্ধে বাতিল রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও অপরাধী চক্রের ষড়যন্ত্র চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেয়া।
পাকিস্তানের মুসলিম জনসাধারণের সামনে এমনই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আজ উপস্থিত। এখন তারা যদি এ দায়িত্ব পালন করে, তাহলে ইনশাআল্লাহ মিথ্যাবাদীদের বিরুদ্ধে সত্যবাদীদের এবং আমেরিকার গোলামদের বিরুদ্ধে ইসলামের সৈনিকদের পক্ষে তারা দাঁড়িয়েছেন বলে প্রমাণিত হবে।
অবশেষে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি, তিনি যেন আমাদেরকে তার মহব্বত ও ভালোবাসা দান করেন। ঐ সমস্ত লোকের ভালোবাসা দান করেন, যাদের সঙ্গে আল্লাহর মহব্বত রয়েছে। আল্লাহ যেন তার দীনের সাহায্য সহায়তাকারী শ্রেণির মহব্বত আমাদেরকে দান করেন। আর যারা আল্লাহর শরীয়াতের সঙ্গে শত্রুতা করে তাদের প্রতি ঘৃণা আমাদের অন্তরে জাগিয়ে দেন।
আল্লাহ তাআলা এই উম্মাহর যোদ্ধাদেরকে সাহায্য ও সহায়তা করুন! তাদেরকে সকল প্রকার ষড়যন্ত্র, গোপন ও প্রকাশ্য অনিষ্টতা থেকে হেফাযত করুন! মুসলিম জনসাধারণকে সঠিক দিশা দান করুন এবং তাদেরকে সঠিক পথে অটল অবিচল রাখুন! আল্লাহ যেন তাদের মাধ্যমে এই উম্মতের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, শৃঙ্খলা, ইজ্জত, সম্মান, উন্নতি ও অগ্রগতির ব্যবস্থা করে দেন! আমীন ইয়া রাব্বুল আলাীন!

وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله وصحبه أجمعين

২৭ শে রমযানুল মোবারক ১৪৪৪ হিজরী,
১৮ই এপ্রিল ২০২৩ ঈসায়ী

***

اپنی دعاؤں میں ہمیں یاد رکھيں
اداره النصر براۓ نشر و اشاعت
القاعدہ برِّ صغیر
আপনাদের দোয়ায়
আন নাসর মিডিয়ার ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 + thirteen =

Back to top button