আল-ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশননির্বাচিতপিডিএফ ও ওয়ার্ড

১৪৪২ হিজরির ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে আমিরুল মু’মিনিন হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হা.’র “ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা বার্তা”

مؤسسة الفردوس
আল ফিরদাউস
Al Firdaws

تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents

في اللغة البنغالية
বাংলা ভাষায়
In the Bengali Language

بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:

بيان أمیرالمؤمنین الشیخ المولوي هِبة الله آخندزاده _حفظه الله
ورعاه بمناسبة حلول عيد الفطر السعيد لعام ۱۴۴۲هـ
১৪৪২ হিজরির ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে
আমিরুল মু’মিনিন শাইখুল হাদিস হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ’র
“ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা বার্তা”
Message of Felicitation of the Esteemed
Amir-ul-Mumineen Sheikh-ul-Hadith Mawlawi Hibatullah Akhundzada (may Allah protect him)
on the occasion of Eid-ul-Fitr

 

 

 

للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading

লিংক-১ : https://justpaste.it/amirul_muminin_eid_barta_1442
লিংক-২ : https://web.archive.org/web/20210511…6165c04307a2d3
লিংক-৩ : https://web.archive.org/web/20210511…eid_barta_1442


روابط بي دي اب
PDF (407 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৪০৭ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/zEdNAyCQ5xtoBYH
লিংক-২ : https://archive.org/download/eid-barta_202105/Eid%20barta%20-%20Amirul%20Muminin%20%20-%20F.pdf
লিংক-৩ : https://drive.internxt.com/sh/file/0a4d94e5-4482-442d-ab9e-e52fd4685f6c/bd2852d58788b536dd48c8785ed3a04656d757337ce49644eef5a9aaad2f48b2
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/dohb54766f9a59e99476989e02e4186db163e
লিংক-৫ : https://f004.backblazeb2.com/file/AmirulMuminin/Eid+Barta.pdf


روابط ورد
Word (366 KB)
ওয়ার্ড [৩৬৬ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/cX4JD8r4nxgLHNg
লিংক-২ : https://archive.org/download/eid-barta_202105/Eid%20barta%20-%20Amirul%20Muminin%20%20-%20F.docx
লিংক-৩ : https://drive.internxt.com/sh/file/a17df8bf-a54c-4411-ac4b-e0bf592ad426/3768c883bf5e50de67492c42b62abe34ea5a0d61d37797487af4225397232d58
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/dohb56c461410778644699677d2aa60336b3c
লিংক-৫ : https://f004.backblazeb2.com/file/AmirulMuminin/Eid+Barta+Word.docx


روابط الغلاف- ١
book Banner [1.3 MB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [১.৩ মেগাবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/mJ3LaHqxxmKSJH4
লিংক-২ : https://archive.org/download/eid-barta_202105/Eid-Barta.jpg
লিংক-৩ : https://drive.internxt.com/sh/file/7ce9ca88-eee0-4fb2-af29-756726dcf11e/5a125749a354518e686f55879a292c444c90dc1e5c1a5402017c521ba71f89af
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/dohb59e6154eb91724f36b10dbda691c75cf8
লিংক-৫ : https://f004.backblazeb2.com/file/AmirulMuminin/Eid+Barta+Cover.jpg


روابط الغلاف- ٢
Banner [825 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৮২৫ কিলোবাইট]

লিংক-১ : https://banglafiles.net/index.php/s/EWmFMGQdn6iMGXx
লিংক-২ : https://archive.org/download/eid-barta_202105/banner.jpg
লিংক-৩ : https://drive.internxt.com/sh/file/93eaf611-14ae-425d-87c0-13eda3e31a48/0baff4e65ab25b3541d13b15f8506065c4d30f37d2469471d4fa229fdab5d8f2
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/dohb5e45b384c8df5406bb7a4e433f1c544f9
লিংক-৫ : https://f004.backblazeb2.com/file/AmirulMuminin/Eid+Barta+Banner.jpg

=================================

 

১৪৪২ হিজরির ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে

আমিরুল মু’মিনিন শাইখুল হাদিস হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ’র

“ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা বার্তা”

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার জন্য। আমরা তাঁর প্রশংসা করি এবং তাঁর কাছেই ক্ষমা ও সাহায্য প্রার্থনা করি। আমরা আমাদের অন্তরের সকল অনিষ্ঠতা হতে এবং আমাদের সকল বদ আমল হতে তাঁর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আল্লাহ তাআলা যাকে পথ প্রদর্শন করেন, তাকে পথভ্রষ্ট করার মতো কেউ নেই এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাকে আল্লাহ ব্যতীত সঠিক পথ দেখানোর কেউ নেই।

আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয় এবং তার কোনো সহযোগী নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। তাঁর উপর, তাঁর পরিবারের উপর, তাঁর সাহাবীগণের (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) উপর এবং কিয়ামত পর্যন্ত তাঁর সকল অনুসারীদের উপর আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন –

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن تَنصُرُوا اللَّهَ يَنصُرْكُمْ وَيُثَبِّتْ أَقْدَامَكُمْ

“অর্থঃ হে ইমানদারগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ়প্রতিষ্ঠ করবেন”। (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:৭)

আফগানিস্তানের মুজাহিদ জনসাধারণ, বিশ্বব্যাপী অগ্রগামী মুজাহিদিন ও সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা আমার মুসলিম ভাই ও বোনেরা –

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

ঈদুল ফিতরের এই পবিত্র উৎসব উপলক্ষে আপনাদের সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মুবারকবাদ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা আপনাদের সিয়াম, ইবাদাত ও দোয়াসমূহ কবুল করে নিন, আমিন।

– আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার অশেষ অনুগ্রহে আমরা এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে চলেছি এমন একটি সময়ে, যখন আমাদের দেশ পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের দ্বারপ্রান্তে। আল্লাহর সাহায্যে গত বিশ বছরের জিহাদে যারা শহীদ হয়েছেন, যারা এতিম হয়েছেন, যারা বিধবা হয়েছেন এবং যারা ঘরহারা হয়েছেন – তাদের সকলের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তব রূপ নিতে চলেছে ইনশা আল্লাহ।

আমি আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করি, তিনি যেন এই সুদীর্ঘ সংগ্রাম এবং এই সংগ্রামে মুজাহিদিন ও জনসাধারণের করা ত্যাগ ও কুরবানিসমূহ কবুল করেন। সেইসাথে আরও দোয়া করছি, তাদের এই কষ্ট ও কুরবানিকে একটি বিশুদ্ধ ইসলামী শাসনের অধীনে সার্বভৌম ও শান্তিপূর্ণ জীবনে যেন রূপান্তর করে দেন। যাতে করে আমরা আমাদের জন্মভূমির উন্নতি সাধন করতে পারি, যুদ্ধের বিধ্বস্ততা কাটিয়ে উঠে পুনর্বাসন করতে পারি, যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারি এবং শরিয়াহ শাসন প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে জনগণের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করতে পারি।

– আমাদের নির্যাতিত আফগান জাতি বিগত দিনগুলোতে যে অবিচলতা ও বীরত্ব দেখিয়েছে, সেইসাথে আমদের মুজাহিদিন ভাইয়েরা যে নিঃস্বার্থতা ও সাহস দেখিয়েছেন – আমাদের উচিত হবে তাদের এই কুরবানিগুলোকে সবসময় স্বাগত জানানো ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। সেইসাথে আমাদের বন্দী, যুদ্ধাহত, এতিম, ঘরহারা জনসাধারণের কুরবানিগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। আমরা সকলে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নিকট দোয়া করবো, তিনি যেন এসকল কুরবানিসমূহ কবুল করে নেন।

প্রিয় দেশবাসী!

– স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশের পুনর্গঠন এবং স্বনির্ভরতা অর্জন – আমাদের প্রধান লক্ষ্য হবে। তাই আসুন আমরা সকলে একত্রে আন্তরিকভাবে আমাদের স্বদেশের পুনর্নির্মাণে অবদান রাখার চেষ্টা করি যেন ইসলামী শাসন ব্যবস্থার অধীনে আমরা এই দেশকে একটি সমৃদ্ধশীল এবং প্রগতিশীল দেশে রূপান্তর করতে পারি।

এটা শুধুমাত্র তখনই সম্ভব হবে যখন আমরা নিজস্ব ব্যক্তিস্বার্থ ও ক্ষমতা অর্জনের প্রচলিত গণ্ডী থেকে বের হয়ে আসতে পারবো। আসুন আমরা ইসলামী মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থকে আমাদের মূলনীতি বানিয়ে নিই। সেইসাথে একে অপরের প্রতি ক্ষমা, সহমর্মিতা ও মমত্ববোধের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসাবে নিজেদের পুনর্গঠন করে নেই। আর এভাবেই আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো ইনশা আল্লাহ।

– আমরা আফগানবাসীদের আবারও আশ্বস্ত করছি যে, দখলদারিত্বের অবসান হওয়ার পর, আফগানে একটি বিশুদ্ধ ইসলামি শাসন ব্যবস্থা বলবত থাকবে যেখানে প্রত্যেকেই তাদের সক্ষমতা ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে প্রতিনিধিত্ব করবেন। কারো কোন অধিকার লঙ্ঘিত হবে না ইনশা আল্লাহ।

– আমি আবারও আফগানদের মধ্যে যারা বিরোধী শিবিরে অবস্থান করছে তাদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি – তারা যেন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সব ধরণের চেষ্টা থেকে সরে আসেন। আমাদের মনে রাখতে হবে – এই ভূমি সমস্ত আফগানদের ভূমি। আমাদের অবশ্যই ‘ইসলামী নীতিমালা’র উপর ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সমস্ত বিভেদ এবং কুসংস্কার থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হবে।

ইসলামি ইমারত সবসময় সে সমস্ত ভাইদের স্বাগত জানায় যারা পূর্বে আমাদের বিরোধী ছিল। আমরা তাদের সকলের প্রতি আমাদের ‘সাধারণ ক্ষমা’ ও ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি এবং তাদেরকে সত্যের পথে যোগ দেওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি। একগুঁয়েমি, ক্ষমতার জন্য প্রতিযোগিতা ও শত্রুতা – আখেরে নিজেদের কোন উপকারে আসবে না। অন্যদিকে পরস্পরের প্রতি সহনশীলতা, আত্ম-সংযম এবং সত্যকে মেনে নেয়ার দ্বারা একটি জাতি প্রকৃত সম্মান ও গৌরব অর্জন করতে পারে।

– আমরা আফগান ভূমি থেকে আমেরিকা এবং অন্যান্য বিদেশী দেশগুলির সেনা প্রত্যাহারকে একটি ভাল পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি। সেইসাথে আমরা তাদেরকে আহবান জানাই তারা যেন ‘দোহা চুক্তি’র পুরোটাই বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। দুর্ভাগ্যক্রমে, আমেরিকা ও তার মিত্ররা এখন পর্যন্ত দোহায় স্বাক্ষরিত চুক্তিটি বারবার লঙ্ঘন করেছে। তারা বারবার হামলা চালিয়ে বেসামরিক জনসাধারণদের হত্যা করেছে এবং তাদের সহায় সম্বলের উপর আঘাত করে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে।

– ‘দোহা চুক্তি’ অনুযায়ী – আলোচনা শুরু হওয়ার তিন মাস পর নির্বাচিত বন্দীদের মুক্তি দেয়ার কথা থাকলেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ইসলামি ইমারতের কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকের নামে নিষেধাজ্ঞা ছিল এবং তাদের তথ্য প্রাপ্তির বিষয়ে আমেরিকা ও তার সহযোগীরা পুরস্কারের ঘোষণা করে রেখেছিল। চুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা ও পুরষ্কারের তালিকা থেকে ইসলামি ইমারতের এসকল কর্মকর্তাদের নাম সরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা কার্যকর হয়নি।

সম্প্রতি আমেরিকান সেনা ও ন্যাটো সেনা সদস্যদের আফগান ভূমি থেকে প্রত্যাহারের চুক্তিও তারা ভঙ্গ করেছে। সেনা প্রত্যাহারের শেষ সময় মে মাস থেকে পিছিয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এ সব সত্ত্বেও ইসলামী ইমারত চুক্তি অনুযায়ী তার সমস্ত প্রতিশ্রুতি পালন করেছে এবং ইসলামি শরিয়াহ এর নির্দেশ অনুযায়ী চুক্তিতে করা প্রতিশ্রুতিসমূহ বাস্তবায়ন করেছে।

আমরা আরও একবার ‘দোহা চুক্তি’র সাথে সামঞ্জস্য রেখে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সমাধান করার ব্যাপারে সকলকে আহবান জানাচ্ছি। আর উস্কানিমূলক যেকোনো ধরণের কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও চুক্তির বিষয়াদি লঙ্ঘন করা থেকে আন্তরিকভাবে বিরত থাকার আহবান জানাচ্ছি। আমেরিকা যদি এবারও তার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে সারাবিশ্ব সাক্ষী থাকবে এবং পরবর্তী সকল প্রতিক্রিয়ার জন্য আমেরিকা দায়ী থাকবে। ইসলামি ইমারত যেকোনো মূল্যে তাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আর বিগত দুই দশক ধরে ইসলামি ইমারত তাদের এই দাবি প্রমাণ করতেও সক্ষম হয়েছে।

– ইসলামী ইমারত পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও ভাল আচরণের ভিত্তিতে সকল প্রতিবেশী, আঞ্চলিক দেশসমূহ ও বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির সাথে আন্তরিক এবং ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।

ইসলামি ইমারত ইসলামের নির্দেশনার মধ্যে থেকে অন্যান্য দেশের সাথে, আফগান জাতির উন্নতির সাথে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর ব্যাপারে কূটনৈতিক কার্যাবলী পরিচালনার মাধ্যমে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখতেও আগ্রহী।

ইসলামি ইমারত (অন্যান্য দেশের) সবাইকে এই নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, আফগানিস্তানের মাটি তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। অনুরূপভাবে ইসলামি ইমারত এটা আশা করে যে, তাদের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে অন্যান্যরা হস্তক্ষেপ করবে না।

– আমরা জাতিসংঘ এবং এর সদস্য অন্যান্য দেশগুলির প্রতি আহবান জানাচ্ছি – আফগানিস্তানের ইস্যুতে আপনারা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখুন। আফগানিস্তানের জনগণের জীবন, বিশ্বাস, রীতিনীতি ও আদর্শের বিরুদ্ধে কোন ধরণের প্রচেষ্টা না চালানোর অনুরোধ করছি। এরকম কোন অপচেষ্টা চালানো হলে তা আমাদের জনগণের প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে পারে।

উল্লেখ্য যে, বিগত ৪৩ বছরের অভিজ্ঞতা এটাই প্রমাণ করে যে – আফগান জাতি কারও চাপিয়ে দেয়া আদর্শ এবং বিশ্বাসকে মেনে নিবে না। এই জাতির তাদের নিজস্ব ধর্মীয়, নৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রেখে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। সুতরাং জাতিসংঘসহ বিশ্বের অন্যান্য সকল দেশকে এই অধিকারকে স্বীকৃতি ও সম্মান জানানোর আহবান জানাচ্ছি।

– আমরা আলোচনা ও পারস্পরিক সমঝোতাকে অগ্রাধিকার দেই। তাই আমরা আন্তঃ-আফগান আলোচনাকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য একটি শক্তিশালী ‘আলোচক দল’ নির্ধারণ করে এই কাজের জন্য নিযুক্ত করেছি। এরপরও ‘কাবুল প্রশাসন’ বারবার বিভিন্ন উপায়ে চলমান এই শান্তি আলোচনার রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে এবং এই ধরণে গর্হিত কাজ তারা প্রতিনিয়তই করে যাচ্ছে।

– আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামি ইমারত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা সেসকল দলের মত নই যাদের সিদ্ধান্তসমূহ অন্যত্র নেওয়া হয় ও পরে তাদের কাছে সিদ্ধান্ত পৌঁছে দিয়ে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। আফগান সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে নেয়া যে কোনো রাজনৈতিক পদক্ষেপ – যেখানে ইসলামি ইমারত এর অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করা হয়, আমরা তাদেরকে বলবো – আপনারা ইসলামি ইমারত এর উপর নির্দ্বিধায় আস্থা রাখতে পারেন। আপনারা আমাদের উপর আস্থা রেখে আপনাদের প্রস্তাবনা পেশ করুন যেন আমরা আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থের আলোকে প্রস্তাবটিকে মূল্যায়ন করতে পারি এবং একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারি। আমরা এই প্রক্রিয়াটা অনুসরণ করতে চাই এই জন্য যেন আমাদের যেকোনো সিদ্ধান্তে আমাদের জনসাধারণের সর্বাধিক সুবিধা নিশ্চিত হয়। কেননা এই উদ্দেশ্যেই বিগত দিনগুলোতে আমাদের জনসাধারণ প্রচণ্ড ত্যাগ স্বীকার করেছে।

– আমি আশা করি – আমাদের বিভিন্ন সেক্টরে থাকা সম্ভ্রান্ত বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গ, বুদ্ধিজীবীগণ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিগণ একযোগে আফগানে একটি বিশুদ্ধ ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও দেশের উন্নয়নের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন এবং জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায়, সমৃদ্ধি এবং স্বনির্ভরতা অর্জনে কাজ করবেন। ইসলামি ইমারত আপনাদের কঠোর পরিশ্রম, প্রচেষ্টা ও মতামতকে স্বাগত জানায়। একটি স্থায়ী ও শক্তিশালী সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপনাদের নিয়মিত ও আন্তরিক পরামর্শকে আমরা সবসময় নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে করি।

ইসলামি ইমারত সমগ্র আফগানবাসীকে – বিশেষ করে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদেরকে নিশ্চিত করছে যে, আমরা আপনাদের জীবন, সম্পদ ও সম্মান রক্ষার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। শুধু তাই নয়, আমরা আপনাদের কাজের জন্য প্রয়োজন হয় এমন সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ও সরঞ্জামাদি সরবরাহের সর্বাত্মক চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ।

– ইসলামি ইমারতের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে শক্তিশালী ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেখানকার জনগণ নিরাপদ এবং কেউ কারো প্রতি জুলুম করতে পারে না। সেখানে চুরি, ডাকাতি ও দুর্নীতির মত অপরাধগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এসব এলাকায় শিক্ষাক্ষেত্রে, ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যখাতে, নাগরিক সুবিধা প্রদানে ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা অব্যাহত আছে।

– ইসলামি ইমারত সকল পাবলিক প্রজেক্টগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বদ্ধ পরিকর। ইসলামি ইমারত এসকল প্রজেক্টগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে, সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে এবং এগুলোকে টেকসই ও স্থিতিশীল করে প্রজেক্টগুলোকে আরও বড় করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

ইসলামি ইমারত বিশেষভাবে সকল মুজাহিদিনদেরকে এবং সাধারণভাবে দেশবাসীকে আহবান জানায় – আপনারা সকলে সম্মিলিতভাবে এসকল স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। পাবলিক স্থাপনাগুলোকে রক্ষা করুন ও যত্নে রাখুন। কাউকেই এই প্রজেক্টগুলোকে ক্ষতি করার বা ধ্বংস করার কোন সুযোগ দিবেন না।

– ভবিষ্যৎ জাতির বিনির্মাণ ও জাতীয় উন্নয়নের জন্য শিক্ষা অত্যাবশ্যকীয়। একটি জাতি শুধু মাত্র ‘জ্ঞান’ দ্বারাই উন্নত হতে পারে। ইসলামি ইমারত সকল ধরণের শিক্ষাগত প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে এবং এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে একটি বিশেষ কমিশন গঠন করেছে যার প্রধান লক্ষ্য হল মাদ্রাসাকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা (ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান), স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন সাধনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া।

পুরো আফগান জাতিকে শিশুদের সুস্থ বিকাশ ও শিক্ষার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে এবং শিক্ষাকেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। আফগানবাসীকে তাদের এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

– চলমান যুদ্ধে সাধারণ জনসাধারণের জান ও মালের ক্ষতি হওয়াটা আমাদের জন্য সবচাইতে উদ্বেগ ও অনুশোচনার বিষয়। নাগরিক ক্ষয়ক্ষতি প্রতিরোধের জন্য ইসলামি ইমারতের একটি স্বতন্ত্র ও শক্তিশালী কমিশন রয়েছে। সকল মুজাহিদিন ও জনসাধারণ এই কমিশনকে সর্বাত্মক সাহায্য করার আহবান জানাচ্ছি। যেন কোন জিহাদি অভিযানের কারণে সাধারণ জনসাধারণের জান ও মালের ক্ষতি হলে (আল্লাহ এমন হওয়া থেকে আমাদের হেফাজত করুন), ক্ষতিগ্রস্তরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ পায়। সেইসাথে ভবিষ্যতে যেন এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেটা নিশ্চিত করার জন্য আপনারা এই কমিশনকে সকল ধরণের সাহায্য করবেন।

একইভাবে আমরা আমাদের বিরোধীদেরকে – সাধারণ নাগরিকদের হত্যা করা, ভীত-সন্ত্রস্ত করা এবং অত্যাচার করা থেকে বিরত থাকার আহবান করছি।

অত্যন্ত দুঃখের সাথে উল্লেখ করা হচ্ছে যে, এখনও শত্রুদের আকস্মিক অভিযান, বোমা হামলা, গোলা বর্ষণ ও অন্যান্য হামলায় সাধারণ জনসাধারণ নিহত ও আহত হচ্ছেন। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

মুজাহিদিন সহকর্মীদের প্রতি বার্তা – আপনারা অবশ্যই আফগানবাসীদের সাথে উত্তম আখলাক ও বিনয় প্রদর্শন করবেন। এই জাতি লাগাতার যুদ্ধে এখন বিধ্বস্ত। বিগত দিনগুলোতে তারা অপরিমেয় ভোগান্তির স্বীকার হয়েছে। তাদের প্রতি সকলকে সহানুভূতি প্রদর্শনের আহবান করছি।

আফগানের কোথাও কারো কোন অধিকার লঙ্ঘন করা যাবে না। এমনকি যদি তাদের কেউ আমাদের বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন করে, তবে আমরা সেক্ষেত্রে আল্লাহর জন্য সহনশীল হব এবং ক্ষমা করে দিব। আমাদের স্বদেশের শান্তি, নিরাপত্তা ও ঐক্যের বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের সবর শক্তি বাড়াতে হবে ও জনগণকে সম্মান করতে হবে।

আপনারা আপনাদের ব্যক্তিগত আমলের প্রতি মনোযোগ দিন। জামায়াতে সালাত আদায় করুন। প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গুনাহ থেকে নিজেকে হেফাজত করুন। বিজয় অর্জনের কারণে অযথা অহংকার ও দাম্ভিকতা আপনার দ্বারা যেন প্রকাশ না পায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। বরং এখনতো আমাদের আরও বিনীতভাবে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করা উচিত। তার ‍দিকে ফিরে যাওয়া উচিত, তার সাহায্যের জন্য তার কাছে প্রার্থনা করা উচিত এবং পরিপূর্ণভাবে তার উপরই ভরসা করা উচিত।

পরিশেষে, আমি আরেকবার সকলকে ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি আফগানের সম্পদশালী ও সচ্ছল ব্যক্তিদেরকে, রমজানের এই পবিত্র ‍দিন ও রাতগুলোতে – আফগানের গরিব, এতিম, অক্ষম ও অভাবী স্বদেশবাসীদেরকে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করছি।

বর্তমানে আফগানবাসী একটি কষ্টকর সময় অতিক্রম করছে। দেশে এখন খরা চলছে। সেইসাথে আরেকটি দুর্যোগ – ‘করোনা মহামারি’ এই কষ্টকর সময়ের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সুতরাং এই মাজলুম জাতিকে আপনার সাধ্যমত সর্বোচ্চ সাহায্য করার চেষ্টা করুন।

একইভাবে দেশীয় বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানবিক সংগঠন ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোর এখন আফগানবাসীদের সাহায্য করার দিকে আলাদাভাবে মনোযোগ দেয়া উচিত।

ইসলামি ইমারত আফগানিস্তানের প্রধান

আমিরুল মু’মিনিন শাইখুল হাদিস মৌলভি হিবাতুল্লাহ আখুন্দযাদাহ হাফিযাহুল্লাহ

২৭/০৯/১৪৪২ হিজরি চন্দ্র-বর্ষ

১৯/০২/১৪০০ হিজরি সৌর-বর্ষ

০৯/০৫/২০২১ খ্রিস্টাব্দ

 


****************************
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة الفردوس للإنتاج الإعلامي
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের স্মরণ রাখবেন!
আল ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশন
In your dua remember your brothers of
Al Firdaws Media Foundation

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 5 =

Back to top button