অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়াপিডিএফ ও ওয়ার্ডবই ও রিসালাহবই ও রিসালাহ [আন নাসর]বাংলা প্রকাশনাশাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহ

শতাব্দীর চুক্তি নাকি বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?- পর্ব – ০১ -শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ


مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presentsالترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translationبعنوان:
শিরোনাম:
Titled

صفقة القرن أم حملات القرون (الحلقة الأولى)
শতাব্দীর চুক্তি নাকি বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?- পর্ব – ০১
Deal of the Century or the Crusade of the Century (Episode 1)

للشيخ أيمن الظواهري – حفظه الله
শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ
By Sheikh Ayman al-Zawahiri (Hafithahullah)

للمشاهدة المباشرة والتحميل
সরাসরি দেখুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Viewing and Downloading

https://justpaste.it/sotabdir_cukti-1
https://archive.vn/BP1lX
https://mediagram.io/2bc3ef046f5f259a
https://archive.vn/0RTCB
https://web.archive.org/web/20201224…c3ef046f5f259a
https://web.archive.org/web/20201224…tabdir_cukti-1

روابط الجودة الاصلية
FULL HD 1080 (688 MB)
মূল রেজুলেশন [৬৮৮ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/afMkf2x8qMrEbfc
https://archive.org/download/sotabdi…btitle-HD-.mp4
https://www.mediafire.com/file/sbiu6…e-HD-.mp4/file

روابط الجودة العالية
HQ 1080 (240 MB)
১০৮০ রেজুলেশন [২৪০ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/XRbAa2bfTBe3Axx
https://archive.org/details/sotabdir…subtitle-1080p
https://www.mediafire.com/file/7k7m2…1080p.mp4/file


روابط الجودة المتوسطة
MQ 720 (225 MB)
৭২০ রেজুলেশন [২২৫ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/yCYr7gsqyFoZfrc
https://archive.org/details/sotabdir…-subtitle-720p
https://www.mediafire.com/file/qmtuz…-720p.mp4/file


روابط الجودة المنخفضة
LQ 360 (102 MB)
৩৬০ রেজুলেশন [১০২ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/PFkaAK7mBzM9Q2R
https://archive.org/download/sotabdi…title-360p.mp4
https://www.mediafire.com/file/u9bt2…-360p.mp4/file


روابط جودة الجوال
Mobile Qoality (99 MB)
3GP রেজুলেশন [৯৯ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/4e484BN8GtnFdz4
https://archive.org/download/sotabdi…1-subtitle.3gp
https://www.mediafire.com/file/aprvr…title.3gp/file


روابط بي دي اب
PDF (1.2 MB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [১.২ মেগাবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/kKe4PAMzBNTbmqR
https://archive.org/download/sotabdi…iri-%20pdf.pdf
https://www.mediafire.com/file/f5z3e…-+pdf.pdf/file


روابط ورد
Word (380 KB)
ওয়ার্ড [৩৮০ কিলোবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/72YGGMAT3ngMkHK
https://archive.org/download/sotabdi…lZawahiri.docx


روابط الغلاف-١
Banner [81 KB] ব্যানার ডাউনলোড করুন [৮১ কিলোবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/aC86eX3at7tPH6K
https://archive.org/download/banner-…3/Banner-1.jpg
https://www.mediafire.com/file/v1nn0…ner-1.jpg/file


روابط الغلاف- ٢
book Banner [311 KB] বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [311 কিলোবাইট]

https://banglafiles.net/index.php/s/HCQJ4Xt6ezSgDYn
https://archive.org/download/shotabd…ir-Crusade.jpg
https://www.mediafire.com/file/71fbs…cover.jpg/file


مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية (بنغلاديش)
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]

======================

শতাব্দীর চুক্তি

নাকি

বহু শতাব্দীর ক্রুসেড?

পর্ব – ০১

শাইখ আইমান আযযাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ

সূচীপত্র

Y

দাওয়াত ও সচেতনতার জিহাদ 5

সচেতনতা তৈরির জিহাদ 6

আমাদের শত্রু কারা? 6

বিভ্রান্তি ছড়ানো ও বাস্তবতা গোপন করা 9

প্রথম বিভ্রান্তি: মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদকে আলকায়দার সাথে যুক্ত করা ও আলকায়দায় তার যোগদানের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি 9

প্রথম পয়েন্ট আলজাজিরা কর্তৃক তার বক্তব্যকে সাজানো গুছানো উপস্থাপনের ক্ষেত্রে গড়মিল 10

দ্বিতীয় পয়েন্ট: মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদের সাথে তাদের আচরণ সম্পর্কে 11

তৃতীয় পয়েন্ট: আলজাজিরা কর্তৃক মুহাম্মাদ সালেহ এর আলকায়দার সাথে যুক্ত থাকার ভিত্তিহীন অভিযোগকে মিথ্যা প্রমাণ: 15

ভিডিও থেকে প্রাপ্ত সম্ভাব্য সিদ্ধান্তসমূহ 18

দ্বিতীয় বিভ্রান্তি: আবু হাফস আল বেলুচিকে আলকায়দার সাথে সম্পর্কিত করা 19

তৃতীয় বিভ্রান্তি: একজন সাবেক আমেরিকান গোয়েন্দা কর্মকর্তার অভিযোগ 21

তৃতীয় বিভ্রান্তি বিষয়ে আস সাহাব মিডিয়ার বিশ্লেষণ 22

শাইখ আইমান আযযাওয়াহিরীর পর্যবেক্ষণ 31

بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ

সকল প্রশংসা কেবল আল্লাহর জন্য দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তার পরিবার, সাহাবায়ে কেরাম এবং তার সকল অনুসারীদের উপর

সমগ্র পৃথিবীর মুসলিম ভাই ও বোনেরা!

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুওয়তের সময় থেকে এ সময় পর্যন্ত মুসলিম ও ক্রুসেডারদের মধ্যে যুদ্ধের দাবানল জ্বলে আসছে যা কখনও বন্ধ হয়নিএটি একটি ঐতিহাসিক বাস্তবতা যা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই

আজ, পশ্চিমাদের লিডার আমেরিকা নানান ধরণের নোংরা পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত ইসরাইলকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেযেমনএর দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর, গোলান মালভূমিকে ইসরাইলের অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা, মানামা চুক্তির অধীনে ফিলিস্তিনিদের ঘুষ দেয়ার চেষ্টা, যাতে তারা তাদের ভূমি বিক্রি করে দেয়

ট্রাম্প (এর উক্তি):

এই লক্ষ্যে, জেরুজালেম ইসরাইল থেকে অবিভক্ত থাকবেএটি খুবই গুরুত্বপূর্ণঅবিভক্ত রাজধানী, কিন্তু আমরা ইসরাইলকে কখনও এর নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলতে বলবো নাওটা করতে পারব নাএটা সবাই জানে আমি ইসরাইলের জন্য অনেক করেছি: যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করেছি, গোলান মালভূমিকে স্বীকৃতি দিয়েছি

নেতানিয়াহু (এর উক্তি):

একই সময়ে, জর্ডান উপত্যকা, জুডিয়া (ইয়াহুদা) ও সামারিয়ার সকল ইহুদী সম্প্রদায় এবং অন্যান্য এলাকায় যা আপনার নকশায় ইসরাইলের অংশ এবং যে সকল অংশকে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সে সকল অঞ্চলে ইসরাইল তার আইন প্রয়োগ করবে আমি এটা পছন্দ করি

আজকে আমি আমার ভাইদেরকে মুসলিম ও ক্রুসেডারদের মধ্যে চলমান এই যুদ্ধের কিছু ঐতিহাসিক কারণ সংক্ষিপ্তাকারে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইতারপর আমরা এই আগ্রাসন প্রতিরোধের উপায় নিয়ে কথা বলব

প্রথমত, এই দ্বন্দ্বের ধরণ কি রকম?

এটা এমন একটি দ্বন্দ্ব, যা ধর্মীয় দিক থেকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণএটি একটি দীর্ঘ সংগ্রাম যা ইতিহাসের ধারা হিসেবে চলে আসছে এবং আল্লাহ যতদিন চাইবেন এটা ততদিন চলতে থাকবেবর্তমানে ইয়াহুদীরা পশ্চিমাদের সাথে জোটবদ্ধ হয়েছে, যা এটিকে আরও দীর্ঘ ঘটনায় পরিণত করেছে

পশ্চিমারা সাধারণত, তাদের অনুভূতিকে গোপন করে না, কিন্তু আমাদের অনেকেই আমাদের প্রকৃত বাস্তবতা থেকে পালিয়ে থাকতে চাই

চলমান এই বিরোধ আসলে আন্তর্জাতিক বিরোধ, স্থানীয় বিরোধ নয়প্রকৃতপক্ষে স্থানীয় বিরোধও এই বৃহৎ দ্বন্দ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন নয়

যেহেতু এই বিষয়টা পরিষ্কার তাই আমরা জিজ্ঞেস করতে চাই: এই আগ্রাসন প্রতিরোধের মৌলিক উপায়গুলো কি কি?

আমি এই প্রশ্নের উত্তরটি একটু দীর্ঘাকারে দিতে চাইআর আমি প্রথম দিকের বার্তাগুলোর কিছু পুনরাবৃত্তি করতে পারিআমার মতে আমাদের যুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত মৌলিক দিকগুলো পুনরাবৃত্তি করাতে কোনো ক্ষতি নেই

হে সম্মানিত মুসলিম উম্মাহ!

আমি এই বিশাল বিষয়টিকে আয়ত্ত করার জন্য আলোচনাকে নিম্নোক্ত দুটি শিরোনামে ভাগ করব

দাওয়াত ও সচেতনতার জিহাদ

লড়াই, শক্তিপ্রদর্শন এবং রক্তপাতের জিহাদ

দাওয়াত ও সচেতনতার জিহাদ

ক্রুসেডারদের আগ্রাসন প্রতিরোধের উদ্দেশে পরিচালিত আমাদের জিহাদে এই ফ্রন্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এটা অত্যুক্তি হবে না যদি আমি বলি যে, এই জিহাদ সামরিক জিহাদের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ

এই ফ্রন্টের গুরুত্ব বুঝার জন্য আমার আলোচনা নিচের পয়েন্টগুলোর উপর ভিত্তি করে চালিয়ে যেতে চাই পয়েন্টগুলো হল

সচেতনতা তৈরির জিহাদ

উম্মাহর তরবিয়ত ঠিক করার জিহাদ

দাওয়াতের লড়াই

রাজনৈতিক জিহাদ

– (উম্মাহর) ঐক্যের গুরুত্ব

সচেতনতা তৈরির জিহাদ

এটি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ময়দানঅসচেতনতার সুযোগে সুচিন্তিত ও পরিকল্পিতভাবে উম্মাহকে ভুল পথে পরিচালিত ও প্রতারিত করা হচ্ছে এবং উম্মাহর শক্তিশালী প্রভাবকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছেজিহাদের এই গুরুত্বপূর্ণ দিকটিকে খোলাসা করার জন্য আমি নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলো তুলে ধরতে চাই

প্রথম প্রশ্ন: আমাদের শত্রু কারা?

দ্বিতীয় প্রশ্ন: জীবন পরিচালনায় আলওয়ালা ওয়াল বারা (আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও আল্লাহর জন্যই শত্রুতা) এর মাসআলাকে আমরা কীভাবে গ্রহণ করব?

তৃতীয় প্রশ্ন: আমরা কাদের থেকে দিকনির্দেশনা নিবো বা কাদের অনুসরণ করবো?

আমাদের শত্রু কারা?

নিঃসন্দেহে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে আমাদের প্রধান শত্রু হল, পশ্চিমা বিশ্বের আন্তর্জাতিক অপরাধীরা ও তাদের নেতৃত্বে থাকা আমেরিকা এবং তাদের অনুসারী শাসকগণ এছাড়া রাশিয়া, চীন, ভারত এবং ইরান

আজ আমি আপনাদের কাছে আমাদের এক জঘন্য শত্রুর সম্পর্কে আলোচনা করতে চাই এই শত্রু হচ্ছে ঐ সকল রাষ্ট্র ও তার শাসকগণ যারা আমেরিকার গোলামী করে আর দাবি করে যে তারা মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা করছে প্রকৃত বাস্তবতায় তারা মুসলিম বিশ্বে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের ক্ষতিকর চক্রান্ত বাস্তবায়নের কার্যকরী উপায়যদিও এসব রাষ্ট্র মসজিদ নির্মাণ, কোরআন হিফজ করানো, ইসলামী রাষ্ট্রের অভাবী ও অভিবাসীদের সাহায্য করে তবে তাদের এসকল বাহ্যিক কাজ দেখে প্রতারিত হওয়া যাবে না

এসব দেশের কিছু উচ্চপদস্থ ব্যক্তি এমন রয়েছে, যারা তাদের (আমেরিকা ও তার সহযোগীদের) অতিরিক্ত গুণকীর্তন করে এবং তাদের অপরাধ ও ভুলগুলোকে উপেক্ষা করেএ ধরণের অধিকাংশ রাষ্ট্রই ইসরাইলের সাথে গভীর সম্পর্কে আবদ্ধ এবং মুসলিম বিশ্বে আমেরিকা ও ইহুদীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সক্রিয় তাদের কেউ কেউ ইসরাইলের সাথে গোপন সম্পর্ক রাখে, আবার কেউ কেউ ইসরাইলের সাথে খোলাখুলি সম্পর্ক রাখে এবং অন্ধ অনুসরণ করে, যা গোটা বিশ্বের কাছেই সুস্পষ্ট

হাস্যকরভাবে, এধরণের কিছু দেশ আরব বিপ্লব ও ফিলিস্তিনকে সাহায্য ও রক্ষার দাবি করে থাকেকিন্তু বাস্তবে তারা সম্পূর্ণভাবে ইসরাইলের সাথে নিরাপত্তা ও সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ তাদের ভূমিগুলো আমেরিকান ঘাঁটি দ্বারা দখলকৃতএমনকি তারা তাদের সামরিক বাহিনীকে ‘ন্যাটো’ ও মার্কিন জোটের অধীনে আফগানিস্তান ও সোমালিয়ায় মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠায়এধরনের কিছু দেশ খোলাখুলিভাবেই ইসরাইলের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করে

এ সকল দেশগুলো নিজেদেরকে মুসলিম উম্মাহর রক্ষকহিসেবে প্রচার করতে খুবই আগ্রহীঅথচ তারা প্রতিনিয়ত উম্মাহর সম্পদকে উড়াচ্ছে, ভূমিগুলোকে ও জনগণকে দুনিয়ার অহংকারী, ক্ষমতার অধিকারী শক্তিগুলোর কাছে সমর্পণ করে দিচ্ছে এবং এই উম্মাহর বিশ্বাস ও নৈতিকতাকে ধ্বংস করার চক্রান্ত বাস্তবায়ন করছে

তারপর আরও ভয়ঙ্কর বিষয় হলো এইসব রাষ্ট্র মিডিয়া ও বুদ্ধিবৃত্তিক পদ্ধতিতে ধোঁকা দিয়ে উম্মতের সচেতনতা নষ্ট করতে চায়আমি যা বলছি বিষয়টি তার থেকেও বেশি স্পষ্টএই পয়েন্টটি ব্যাখ্যা করার জন্য, আমি একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত পেশ করে এর চুলচেরা বিশ্লেষণ করে এই প্রতারণা ও কুটিলতা নিয়ে আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ

কিছুদিন আগে আলজাজিরাআল লা’ইবুনা বিন নার(আগুন নিয়ে যারা খেলে) নামে একটি ভিডিও1 প্রকাশ করে যাতে দুইজন ব্যক্তিকে আলকায়দার সদস্য হিসেবে অভিনয় করিয়েছেএকজনকে আলকায়দার লিডার হিসেবে দেখানো হয়েছে আর অপরজনকে আলকায়দা দলের সাথে সংযোগরক্ষাকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে আর বুঝানো হয়েছে যে, তাদের দুজনই বাহরাইনের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সম্পর্ক রাখে

প্রথম ব্যক্তিটি, কিছু শিয়া লোককে হত্যা করার জন্য তার (বাহরাইনের) সাথে একমত হয়, আর দ্বিতীয় জন ইরানে গোয়েন্দাগিরি করতে সম্মত হয়এই চলচ্চিত্রে, আলজাজিরা একজন সাবেক আমেরিকান গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার যুক্ত করে দেয়, যিনি শাইখ আবু যুবায়দার (আল্লাহ তা’আলা তার মুক্তিকে ত্বরান্বিত করুন) পকেট থেকে একটি ডায়রি পাওয়ার দাবি করেন, যাতে তিনজন সৌদি যুবরাজের টেলিফোন নাম্বার ছিল

নিম্নলিখিত শিরোনামের অধীনে আমি অপবাদ ও প্রতারণাপূর্ণ দৃষ্টান্তের কারণ বিস্তারিত তুলে ধরব:

বিভ্রান্তি ছড়ানো ও বাস্তবতা গোপন করা

আলকায়দার বিরুদ্ধে আলজাজিরার মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ার ইতিহাস আছে কি?

কেন আলজাজিরা অপবাদ ছড়ানোর অভিযানে যুক্ত হল? অর্থাৎ আলজাজিরা ও আলকায়দা সংগঠনের মধ্যকার বিরোধ কী নিয়ে?

বিভ্রান্তি ছড়ানো ও বাস্তবতা গোপন করা

এই ভিডিওটি মিডিয়ার রাজনৈতিক প্রতারণার উৎকৃষ্ট উদাহরণএটি মিথ্যা ভিত্তির উপর তৈরি আর আলজাজিরা এটিকেই তার দর্শকদের কাছে বিক্রি করতে চেয়েছেএকই সঙ্গে এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা আছে, যা চ্যানেলটি ঢেকে রাখতে চায় ও উল্লেখ করতে চায় না

প্রথমত, সেই বিভ্রান্তিগুলো কী যা আলজাজিরা তার দর্শকদের কাছে বিক্রি করতে চাচ্ছিল

প্রথম বিভ্রান্তি: মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদকে আলকায়দার সাথে যুক্ত করা ও আলকায়দায় তার যোগদানের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি

দ্বিতীয় বিভ্রান্তি: আবু হাফস আল বেলুচিকে2 আলকায়দার সাথে সম্পর্কিত করা

তৃতীয় বিভ্রান্তি: একজন সাবেক আমেরিকান গোয়েন্দা কর্মকর্তার অভিযোগ

প্রথম বিভ্রান্তি: মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদকে আলকায়দার সাথে যুক্ত করা ও আলকায়দায় তার যোগদানের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি

প্রথম বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে আমাদের সহজ উত্তর, আলকায়দার সাথে মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদের কোনো সম্পর্ক নেই

তিনি তার বাহরাইনের ইন্টেলিজেন্সির সাথে সহযোগিতা বিষয়ক বক্তব্যে যা বলেছেন, যদি তিনি তার কথাতে সত্যবাদী হন এবং তাকে এসব স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা না হয়ে থাকে তাহলেও সেগুলো সম্পূর্ণভাবে আলকায়দার কর্মপদ্ধতির বিপরীতআলজাজিরার অপবাদের উত্তরে এটুকু বলাই যথেষ্টতবে আলজাজিরার অভিযোগগুলোকে আরও অধিক হাস্যকর প্রমাণিত করার জন্য আরও অন্য তিনটি পয়েন্ট রয়েছে

প্রথম পয়েন্টটি আলজাজিরা কর্তৃক তার বক্তব্যকে সাজানো গুছানো ও উপস্থাপনের সাথে সম্পৃক্ত

দ্বিতীয় পয়েন্টটি মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদের সাথে তাদের আচরণ সম্পর্কে

তৃতীয়টি ভ্রান্ত দলসমূহ ও মুসলিম বিশ্বে পশ্চিমাদের পুতুল শাসকদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থানের সাথে সম্পৃক্ত

প্রথম পয়েন্ট আলজাজিরা কর্তৃক তার বক্তব্যকে সাজানো গুছানো ও উপস্থাপনের ক্ষেত্রে গড়মিল

আলজাজিরা মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদকে এমন ভাবে দেখিয়েছে যে, তিনি আলকায়দায় যোগদান করেছেন কিন্তু তিনি কখনও বলেননি যে, আমি আলকায়দার সদস্যবরং তিনি বলেছিলেন যে বাহরাইনী ইন্টেলিজেন্স অফিসার তাকে বলেছিল যেআপনি আলকায়দার সদস্য এবং একজন মুজাহিদ

আলজাজিরা, বাহরাইনী ইন্টেলিজেন্স অফিসারের কথার উপর ক্ষান্ত হয়নিবরং আরেক ধাপ এগিয়ে মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদকে আলকায়দার একজন উচ্চপদস্থ লিডার বানিয়ে ফেলেছে!

এটা অতিরিক্ত একটি মিথ্যা অভিযোগ আলজাজিরা থেকে এমন হওয়া অস্বাভাবিক না, সামনে এটা আরো স্পষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ। ‘আলকায়দার নেতা’ বিষয়ক গল্প এখন একটি প্রকাশ্য খেলায় পরিণত হয়েছেএটা পূর্বে ইব্রাহিম আল বাদরী কর্তৃক ব্যবহৃত হয়েছিল, পরে অবশ্য তার মিথ্যা প্রকাশিত হয়েছিল

এখানে প্রশ্ন হচ্ছে বাহরাইনে আলকায়দার সদস্য থাকা স্বত্বেও কি আমেরিকা নীরব থাকবে? তাদেরকে আটক করে গুয়ান্তানামোবে কারাগারে প্রেরণ করবে না!? অথচ আলকায়দার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে গুয়ান্তানামোবে কারাগারে অনেক বাহরাইনী মানুষ আটক রয়েছে

দ্বিতীয় পয়েন্ট: মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদের সাথে তাদের আচরণ সম্পর্কে

পুরো ভিডিওতে মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে দেখা গেছে এটাও কি সম্ভব যে একজন আলকায়দার লিডারের সাথে এমন নরম আচরণ করা হবে?

সে মাত্র ৪ মাস সময় আটক ছিলএসময়ের মধ্যে তার পরিবার অনেকবার তার সাথে যোগাযোগ করেছেসে নিজে অফিসিয়াল উপদেষ্টা ও রিয়াদে অবস্থিত বাহরাইনী দূতাবাস কাউন্সিলের কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেছেঅধিকন্তু, এই ব্যক্তি তার যে বিষয়ে মনে চায় মুখ খুলেছে এবং যে বিষয়ে মনে চায় সে বিষয়ে নীরব থেকেছেতদন্তকারীদেরকে সে কোন প্রশ্নের উত্তর দিবে আর কোনটার উত্তর দিবেনা সেটা বলে দিতযেমন সে বলেছে: আমি ভাইদের সাথে কেন যোগাযোগ করেছি সে বিষয়ে কোন মন্তব্য করব না, অথবা আমি অস্ত্র কেন চেয়েছি সে বিষয়ে কোন মন্তব্য করব না, ইত্যাদি

প্রশ্নকারীরা তার সাথে খুবই ভদ্র আচরণ করেছেভিডিওতে উল্লেখিত গল্প অনুযায়ী, প্রশ্নকারীরা কয়েক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর তাকে বলল, ‘তুমি নিজেকে রক্ষা করদেখ, আমাদের সাহায্য না করলে কারাগারে তোমার সময় অনেক দীর্ঘ হবে তুমি তোমার ভাইদের সাথে কী কারণে যোগাযোগ করেছিলে”? আর তখন সে উত্তরে বলল আমার কাছে বিষয়ে কিছু তথ্য আছে যা আমি তোমাদের জানাতে দেরি করে ফেলেছি আমি এখন তোমাদেরকে এবিষয়ে কিছু বলবো”

এটাও কি সম্ভব যে, সৌদি তদন্তকারীরা একজন আলকায়দার নেতার সাথে কথা বলার জন্য আবেদন করবে, যে কিনা অন্যান্য নেতৃস্থানীয় সদস্যদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার অভিযোগে কারারুদ্ধ, আর সে উত্তর দিবে নাতারপর কয়েক মাস আটক থাকার পর সে স্বাধীনভাবে তথ্য প্রকাশ করে দিবে?

নাকি অস্বীকারের শুরুতেই তাকে ঝুলানো হবে, চাবুক মারা হবে, বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হবে, এবং পানিতে চুবানো হবে, যেমনটা তারা খালিদ শাইখ মুহাম্মাদ রহিমাহুল্লাহর সাথে করেছিল অথবা তার উরুর ভাঙ্গা হার নাড়িয়ে তাকে শাস্তি দিবে, যা তারা শাইখ আবু যুবায়দা (আল্লাহ তাকে মুক্ত করুন) এর সাথে করেছিল?

তারপর তার কথার মাঝেও বৈপরীত্য পাওয়া গেছে সৌদি তদন্ত কমিটির অফিসিয়াল ইনচার্জ তাকে বলেছিল, ‘তুমি নিজেকে সামনের কঠিন পরিস্থিতি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করোযে বিষয়টি আমরা হাতে পেয়েছি তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আর তা এই যে, আমরা জিজ্ঞাসাবাদের পর বাহরাইনের কাছে বার্তা পাঠিয়েছি যে, তোমরা ব্যক্তিটিকে এমন বিষয়ের অপবাদ দিচ্ছ যে ব্যাপারে সে নির্দোষঅথচ বাহরাইনীরা আমাদের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছিল যে, এই ব্যক্তিটি হয়তো আমেরিকান বা সৌদি টার্গেট কিংবা বাহরাইনের টার্গেটে আঘাত হানতে পারে”

একই সময়ে আলজাজিরা উল্লেখ করে যে বাহরাইনের রাজা একাধিকবার তার মুক্তির দাবিতে প্রতিনিধিদল প্রেরণ করেছিল

এই বক্তব্যের সাথে এটা কীভাবে সামঞ্জস্য হতে পারে যে, বাহরাইন তাকে আমেরিকান টার্গেটে আঘাত হানার পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযোগ করবে? এটা কি সম্ভব যে কেউ আমেরিকান টার্গেটে আঘাত হানার ছক করবে অথবা সৌদি আরবে আলকায়দার সাথে যোগাযোগ করবে আর তারা তাকে গুয়ান্তানামোবে কারাগারে নিক্ষেপ করবে না?

আর কীভাবে সৌদি ইন্টেলিজেন্স কর্মকর্তারা এমন ব্যক্তির ব্যাপারে এই কথা বলবে যে, “লোকটির বিরুদ্ধে কিছুই প্রমাণিত হয় নি সে নির্দোষ”অথচ আলজাজিরার অপবাদ অনুযায়ী, সে আলকায়দার নেতাদের একজন এবং সৌদি আরবে আলকায়দার নেতাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছিল

অধিকন্তু, আলজাজিরার তথ্য অনুযায়ী, সে যদি আলকায়দার কমান্ডারদের একজন হয়ে থাকে তবে আলজাজিরার যুক্তি অনুযায়ী বাহরাইনে আরও অন্যান্য কমান্ডারও থাকার কথা যেহেতুকিয়াদাশব্দটির বহুবচন হলকিয়াদাতকীভাবে মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদ অন্যান্য কমান্ডারদের সাথে পরামর্শ না করে তার পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগোতে পারেন? আর তিনি কেন এই ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ে আলকায়দার কেন্দ্রীয় নেতৃবর্গের সাথে যোগাযোগ করলেন না? কে তাকে বাহরাইনের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সাথে একটি চুক্তি করার অধিকার দিল?

কীভাবে সে আলকায়দার একজন কমান্ডার ও এর মানহাজের অনুসারী হতে পারে, যখন বাহরাইনের রাজার অবগতির ভিত্তিতে তার চুক্তি হয়, যেখানে আলকায়দা রাজাকে একজন মুরতাদ বিশ্বাসঘাতক ও পশ্চিমাদের দালাল বলে মনে করে?

সুতরাং মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদের বক্তব্যে সুস্পষ্ট বৈপরীত্য ও গোঁজামিল রয়েছেআর কোন অবস্থাতেই আলকায়দার সাথে সম্পর্ক রাখে বা সম্পর্ক রাখার সন্দেহ হয় এমন ব্যক্তি কখনই এই নরম আচরণ তাদের কাছে পাবেনাতাহলে আলজাজিরার ‘সে আলকায়দার নেতা’ বক্তব্যের ব্যাপারে আপনাদের কী ধারণা?

তারপর কেন বাহরাইনের রাজা আলকায়দার একজন কমান্ডারকে গ্রহণ করবেন ও তার সকল পরিস্থিতির দায়ভার নিতে চাইবেন? আলজাজিরা কি এটা উল্লেখ করতে ভুলে গেছে যে, বাহরাইনের রাজাও আলকায়দার একজন নেতা? প্রবাদ আছে যে

যদি তুমি একজন অভ্যাসগত মিথ্যাবাদী হও, তাহলে অন্তত পুরুষের ন্যায় আচরণ কর”

আলকায়দার সদস্য কিংবা এই সংগঠনের সাথে যুক্ত আছে এমন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকেও গুয়ান্তানামো কারাগারে দ্বীপান্তরিত করা হয় সেখানে তাদেরকে টর্চার করা হয়সৌদি আরবে তারা টর্চারের সম্ভাব্য সবচেয়ে নিকৃষ্টতম ও কঠিন পদ্ধতিটি দেখেছে এমনকি তাদেরকে যাবজ্জীবন কারারুদ্ধ করে রাখা হয়তারা ৪ মাস কোমল ব্যবহারের পর মুক্তি পায় নাপ্রকৃতপক্ষে, আজকের দিনে অনেক বাহরাইনী আলকায়দার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে গুয়ান্তানামো কারাগারে বন্দী রয়েছে

তারপর মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদ দাবি করে যে, সৌদি আরবে আলকায়দার সদস্যদের সাথে তার সাক্ষাৎ করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সে তাদের নাম বলেনিযদি তার এই কথা সত্য হয়ে থাকে তবে সৌদি জিজ্ঞাসাবাদকারীরা অবশ্যই তাকে নাম বলতে বাধ্য করেছে এখন প্রশ্ন হচ্ছে সেখানে যাদের নাম সে বলেছে তারাও কি তার মত আলকায়দার সদস্য হওয়ার মিথ্যা দাবি করেন?

আলকায়দা সংগঠন আরব উপদ্বীপের সৌদ পরিবারের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় শিয়াদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনিবরং তারা শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেতারা শাইখের নির্দেশ অনুযায়ী আমেরিকা এবং পশ্চিমাদের স্বার্থে আঘাত করেছে এবং তেল উত্তোলন ও চুরিতে বাধা প্রদান করেছিল

পরে যখন সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালায় তখন তারা সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীকে টার্গেট করেসুতরাং কীভাবে আলকায়দা সংগঠনটি আরব উপদ্বীপে তাদের নিজেদের মানহাজের বিরুদ্ধে যেতে পারে এবং শিয়াদেরকে হত্যা করতে সৌদিকে সাহায্য করতে পারে? অথচ এই শাসকদেরকে আলকায়দা প্রথম সারির মুরতাদ হিসেবে বিবেচনা করে

ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনে শিয়াদের সাথে আলকায়দার যুদ্ধ প্রসঙ্গটি আমি আলকায়দার মানহাজ ও স্থিতিশীল রাজনীতির ব্যাখ্যা করার সময় আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ

তাছাড়া আরেকটি আশ্চর্য বিষয় হলো মুহাম্মাদ বিন সালেহের অস্ত্র কেনার জন্য সৌদি যাওয়া সেখানে অস্ত্র ক্রয় করার পর তা বাহরাইন পাচার করার কী প্রয়োজন ছিল? অথচ সে যে কোন জায়গা থেকেই অস্ত্র ক্রয় করতে পারতবাহরাইনের গোয়েন্দারাও তাকে সরবরাহ করতে পারত অথবা সন্ধান দিতে পারত অথবা সাহায্য করতে পারতএতে তার জীবন আশংকার মুখে পড়তো না বা পরিকল্পনাও প্রকাশিত হতো না

একজন ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য একটি পিস্তলের চেয়ে বেশি কিছুর দরকার নেই

তৃতীয় পয়েন্ট: আলজাজিরা কর্তৃক মুহাম্মাদ সালেহ এর আলকায়দার সাথে যুক্ত থাকার ভিত্তিহীন অভিযোগকে মিথ্যা প্রমাণ:

এটা আলকায়দার মানহাজ ও অন্যান্য ভ্রান্ত দল ও পশ্চিমাদের পুতুল শাসকদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত এবং কয়েক দশক ধরে আমরা যে কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করি তার সাথে সম্পর্কিত

জিহাদের সাধারণ দিকনির্দেশনা3” নামক বার্তা থেকে আমি কয়েকটি উদাহরণ পেশ করছি, যা এই স্তরে আমাদের কর্মপদ্ধতিকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছে

প্রথমত: ভূমিকা

১। এটা কোন গোপন বিষয় নয় যে, এ পর্যায়ে আমাদের কর্মকাণ্ড দুটি ধারায় বিভক্ত: প্রথমটি হচ্ছে সামরিক এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে দাওয়াত।

২। সামরিক কর্মকাণ্ড: সামরিক কর্মকাণ্ডের প্রথম টার্গেট বা লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে কুফরের (আন্তর্জাতিক) কেন্দ্র আমেরিকা ও তার মিত্র ইসরায়েল এবং দ্বিতীয় টার্গেট হচ্ছে তাদের স্থানীয়/আঞ্চলিক মিত্র যারা মুসলমানদের দেশগুলোর শাসক।

সুতরাং, এটাসুস্পষ্ট যে আমরা বাহরাইনের বিশ্বাসঘাতক মুরতাদ রাজাকে আমাদের একজন শত্রু মনে করিকীভাবে এই শত্রুকে মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদ খুশি করতে চায়? এমন একটি দেশের উপকার করতে চায় যে দেশটি সম্পূর্ণভাবে রাজার (যাকে আমরা আমাদের শত্রু মনে করি) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত?

মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদ দেশে ফিরে আসার পর রাজার সাথে সাক্ষাতে গিয়েছিলেন এবং রাজা তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন একজন ব্যক্তির এই কাজগুলো আলকায়দার মানহাজের সম্পূর্ণ বিপরীত

একই ডকুমেন্ট এ উল্লেখিত আছে:

দ্বিতীয়ত: প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা

২। সামরিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কুফরের কেন্দ্রকে (আমেরিকা) অব্যাহতভাবে দুর্বল করতে মনোযোগ নিবদ্ধ রাখতে হবে যে যাবত না তা সামরিক এবং অর্থনৈতিক উভয় খাতে দেউলিয়া হয়ে যায়, এর জনশক্তি নিঃশেষ হয়ে যায় এবং তা পশ্চাদপসরণ ও একাকীত্বের পর্যায়ে পৌঁছে নিজেকে নিজ খোলসে ফিরিয়ে নেয় (যা আল্লাহর ইচ্ছায় খুবই নিকটে)

এরপর এতে উল্লেখ করা হয়:

এটা আমাদের কাছে পরিষ্কার থাকা উচিত যে, কাফেরদের প্রধান, আমেরিকাকে আক্রমণ করার এই নীতি মুসলমানদেরকে যারা অত্যাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে কথা কিংবা অস্ত্রের জিহাদের সাথে সাংঘর্ষিক নয়।

নির্দেশনাতে আরও আছে:

ফিলিপাইন, বার্মা এবং এমন প্রতিটি ভূমি যেখানে মুসলমানেরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সেখানে তারা সেখানকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনা করবেন।

৩। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সশস্ত্র সংঘাত এড়িয়ে যাবেন যদি না আপনারা তা করতে বাধ্য হন, উদাহরণস্বরূপ, যদি স্থানীয় প্রশাসন আমেরিকার বাহিনীর একটা অংশ হিসেবে কাজ করে, যেমন আফগানিস্তানে হচ্ছে; অথবা যদি স্থানীয় প্রশাসন আমেরিকার পক্ষ থেকে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, যেমন সোমালিয়া ও জাযিরাতুল আরবে হচ্ছে; অথবা যদি কোন স্থানে স্থানীয় প্রশাসন মুজাহিদদের উপস্থিতি মোটেও সহ্য না করে, যেমন ইসলামী মাগরিব, সিরিয়া এবং ইরাকে দেখা যাচ্ছে।

এরপর নির্দেশনাতে উল্লেখ রয়েছে:

৪। বিভ্রান্ত দল যেমন: রাফেজী শিয়া, ইসমাঈলী, কাদিয়ানী এবং বিদআতী সুফীদের সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে যান যদিও তারা সাধারণত আহলে সুন্নাতের সাথে সংঘাতে লিপ্ত থাকে। যদি তারা আহলে সুন্নাতের সাথে লড়াই করতে থাকে তবে প্রতিঘাত শুধু ঐসব দলের মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে যারা সরাসরি আমাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত। একই সাথে আমাদের অবশ্যই পরিষ্কার করে দিতে হবে যে, আমরা শুধু আমাদের প্রতিরক্ষা করছি। যারা এবং যাদের পরিবার আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেয়নি তাদেরকে তাদের বাড়িঘর, ইবাদতখানা, তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় সমাবেশে লক্ষ্যবস্তু বানানো উচিত হবে না। সাথে সাথে তাদের ভ্রান্তি প্রকাশ করা ও তাদের মতবাদ ও নৈতিক অবক্ষয়কে পরিশুদ্ধ করার প্রচেষ্টা সর্বদা চালিয়ে যেতে হবে

***

এটা এমন একটি নির্দেশনা, যেটা আলকায়দার সর্বোচ্চ পরিষদের সাথে পরামর্শ করার পর প্রকাশ করা হয়েছেমিডিয়া আউটলেটগুলো এটার উপর মন্তব্য করেছেএটা প্রকাশের এক বছর আগে ইব্রাহিম আল বাদরীর নিকট পাঠানো হয়েছিলযেকোনো কারণবশত তিনি এটাতে কোনো মন্তব্য করেন নিযখন এটা প্রকাশিত হয় তিনি তখনও কোনো মন্তব্য করেন নিযখন তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত পেশ করা হল, তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হল, তখন তিনি তার প্রতারণাপূর্ণ মিডিয়া যন্ত্রকে ব্যবহার করা শুরু করলেনযারা মিথ্যার প্রতি আসক্ত, তাদের জন্য কোন প্রতিষেধক আছে কি?

সুতরাং এটা পরিষ্কার যে আমাদের ভাইয়েরা শিয়া গ্রুপগুলোর সাথে ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনে যুদ্ধ করছিল কারণ এগুলো হল, এমন সশস্ত্র বাহিনী যারা আহলে সুন্নাহকে আক্রমণ করে, পশ্চিমা সম্মিলিত বাহিনীতে প্রবেশ করে ও আমেরিকার সাথে সমঝোতা করে

স্বদেশের প্রতি ভালবাসা এবং আমেরিকার দালাল ও ইসরাইলের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখা রাজার প্রতি আনুগত্যের অজুহাতে মুরতাদ সরকারের পক্ষ হয়ে একটি ভ্রান্ত দলের কাউকে হত্যা করা প্রসঙ্গে আমাদের উপর যে অপবাদ দেয়া হয়েছে সেটি মিথ্যা এসমস্ত ভুয়া ও মিথ্যা অজুহাতের বিপরীতে আমরা আল্লাহকে সাক্ষী রেখে নিজেদেরকে এগুলো থেকে মুক্ত ঘোষণা করছি

আলকায়দার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত, আমাদের মানহাজ দিবালোকের ন্যায় পরিষ্কার, তরবারির কিনারার মতই স্বচ্ছকিছু অপরিচিত ব্যক্তি ও মিডিয়া অভিযোগ করে যে, আলকায়দা একটি মুরতাদ সরকারের ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের পক্ষে কাজ করে, এটা একটি স্পষ্ট মিথ্যা ও অপবাদ

অতএব, আলজাজিরার গল্প অনুযায়ী মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদের দ্বারা সংগঠিত ভুলগুলো সম্পূর্ণভাবে আলকায়দার মানহাজের বিপরীত আমাদের মানহাজ শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. এর বার্তায়, আমার নিজ বার্তায় এবং এই সংগঠনের পাবলিক প্রকাশনাতে প্রকাশিত হয়েছে, যেমন– “জিহাদের সাধারণ দিকনির্দেশনা, “ইসলামের সমর্থনে একটি প্রামাণ্যপত্র4” ইত্যাদি

ভিডিও থেকে প্রাপ্ত সম্ভাব্য সিদ্ধান্তসমূহ

মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদ এবং তার মত অন্যান্যদের সম্পর্কে একটি শেষ মন্তব্য: যে কেউ আলজাজিরার এই স্ববিরোধী ও সন্দেহপূর্ণ ভিডিওটি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করবে সে নিচের যেকোন একটি সম্ভাব্য সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবে:

প্রথম সম্ভাব্য সিদ্ধান্তটি হল – সে(মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদ) ইচ্ছাকৃত ভাবেই এসব স্বীকারোক্তি বানিয়েছে ও সে তার দাবিতে সত্যএই প্রেক্ষিতে সে বাহরাইনী ইন্টেলিজেন্স এর একজন দালাল ও সৌদি ইন্টেলিজেন্সর হয়েও কাজ করেসে এমন কাজে লিপ্ত হয়েছে যা তার আখিরাত ধ্বংস করে দিবে

যদি বিষয়টি এমনই হয়, তাহলে তাকে অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে এবং সকল অত্যাচারীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবেতাকে অবশ্যই রাজা ও দেশের প্রতি তার আনুগত্য ও বন্ধুত্বসহ আরও যে বিচ্যুতি প্রকাশ পেয়েছে তার জন্য ইস্তেগফার করতে হবে

যারা ধর্মকে আঁকড়ে ধরে রাখে, ধার্মিকতা চর্চা করে ও জিহাদে নিযুক্ত আছে, তাদেরকে অবশ্যই এ ধরনের ব্যক্তি থেকে দূরে থাকতে হবে, যে পর্যন্ত না তারা এসকল ব্যক্তিদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্তে আসতে পারেমুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদসহ প্রত্যেকেরই জানতে হবে যে, আলকায়দা এরূপ লজ্জাজনক ভুলগুলোর প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করে এবং যারা এরূপ ভুল করে তাদেরকে সতর্ক করেআর এরূপ ভুলকারী ব্যক্তি যদি আলকায়দার পুরনো সদস্যও হয়, তাহলেও এই সংগঠনটি তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করতে ও তার ব্যাপারে অন্যদেরকে সতর্ক করতে কোনো সংকোচবোধ করবে না

দ্বিতীয় সম্ভাব্যসিদ্ধান্ত হতে পারে যে, মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদকে এসব স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছেএ ক্ষেত্রে তাকে অবশ্যই পুরো বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে, এরূপ অভিযোগ থেকে তার নামকে মুক্ত করতে হবে এবং তার সম্মান রক্ষা করতে হবেআর যে কেউ আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য রাস্তা বের করে দেন

তো এতক্ষণ আমরা আলজাজিরার প্রথম বিভ্রান্তি সম্পর্কে কথা বললামআলজাজিরা মুহাম্মাদ সালেহ আলি মুহাম্মাদের সাথে আলকায়দার মিথ্যা সম্পর্কের একটি গল্প তার দর্শকদের বিশ্বাস করাতে চেষ্টা করেছেএখন আমরা আলজাজিরার ২য় বিভ্রান্তি নিয়ে কথা বলব যেটি ছিল আবু হাফস আল বেলুচির রেকর্ডিং নিয়ে

দ্বিতীয় বিভ্রান্তি: আবু হাফস আল বেলুচিকে আলকায়দার সাথে সম্পর্কিত করা

দ্বিতীয় বিভ্রম হল: আবু হাফস বেলুচির রেকর্ডিং। অথচ আবু হাফস বেলুচি কখনো বলেননি যে: তিনি আলকায়দার সদস্য, এবং তিনি একথাও বলেননি যে: বাহরাইনের গোয়েন্দা সংস্থা তাকে আলকায়দার সদস্য হিসেবে সাব্যস্ত করে আর তিনি এটাও বলেননি যে, তিনি জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর সদস্য।

তবে আলজাজিরা চ্যানেল এক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেছিল যে: তিনি জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর একজন সদস্য সেই সাথে যুক্ত করেছে যে, জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর সৈন্যরা আলকায়দার সাথে জড়িত।

একটি মিথ্যা ধারণা প্রসূত পদ্ধতিতে আলজাজিরা চ্যানেল একটি মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, যাতে দর্শকরা মনে করে ‘জামায়াত কায়িদাতুল জিহাদ’ গ্রুপটি বাহরাইনের গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যুক্ত রয়েছে। আলজাজিরার বানোয়াট তথ্য অনুসারে আলকায়দা ও জামায়াতে জুনদুল্লাহর সৈনিকদের মাঝে যোগসাজশ রয়েছে। আর আলজাজিরার আরেকটি বানোয়াট তথ্য অনুযায়ী জামায়াতে জুনদুল্লাহর আবু হাফস বেলুচির সাথে সম্পর্ক রয়েছে এবং আবু হাফস বেলুচির সাথে বাহরাইনের গোয়েন্দা সংস্থার রয়েছে গভীর যোগাযোগ। সুতরাং আলকায়দা বাহরাইনের গোয়েন্দাদের সাথে যুক্ত রয়েছে। তাই তাদের মধ্যে রয়েছে মৌন সম্মতিআর এভাবেই আলজাজিরা মার্কিন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অধীনে দীর্ঘদিন যাবত আমেরিকার চলমান প্রোপাগান্ডা যুদ্ধের সহায়ক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

অথচ সত্য বাস্তবতা হল, জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ আলকায়দার মাঝে কোন সম্পর্ক নেই মাকড়সার জালের ন্যায় সমস্ত সন্দেহের জালকে ছিঁড়ে ফেলার জন্য এই একটি কথাই যথেষ্ট।

আমি আলজাজিরার মিথ্যা অপবাদকে ফাঁস করার জন্য বলছি: জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর মুখপাত্র একটি প্রেস সাক্ষাত্কারে উল্লেখ করেছেন যে, তার দলের সাথে তালেবান বা আলকায়দার কোন সম্পর্ক নেই তিনি বলেছিলেন যে এগুলি হল ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনগড়া বিষয়। তো দেখা যাচ্ছে ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মিডিয়া পলিসি অনুসরণ করে আলজাজিরা আলকায়দাকে জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর সাথে সম্পর্কিত করতে চায়

জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর মুখপাত্র একটি প্রেস সাক্ষাত্কারের নির্বাচিত অংশ

প্রশ্ন: ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী “শেখ মুহাম্মদী বুর” জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর মুখপাত্রকে তালেবান আন্দোলনের মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত একটি গোষ্ঠী বলে অভিযোগ করেছেন। একইভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিবআলী জনতী’ জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর মুখপাত্রকে আলকায়দারসমর্থক বলেও অভিযুক্ত করেছিলেন তিনি হুমকি দিয়েছিলেন যে আপনি (জামায়াতে জুনদুল্লাহর মুখপাত্র) যদি অপহৃত সৈন্যদের হত্যার হুমকি কার্যকর করেন তবে ইরানী সরকার শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এবিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

উত্তর: ইরানি কর্মকর্তাদের বক্তব্যে একটি স্পষ্ট বিরোধিতা রয়েছে কখনও কখনও তারা জামায়াতে জুনদুল্লাহ্ এর মুখপাত্রকে ইসলামী তালেবান আন্দোলনের সাথে, কখনও কখনও তানজীম আলকায়দার সাথে সম্পর্কিত করে অনেকসময় আমাদেরকে চোরাচালানকারী হিসাবেও উল্লেখ করেছে

আমরা পূর্ববর্তী বিবৃতিতে বলেছি যে, এই সমস্ত অভিযোগ আমরা অস্বীকার করছি তারা যা বলে তার সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল আমাদের জনগণ আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামাতের উলামায়ে কেরাম এই সত্য জানেন যে, আমরা এমন একটি ইসলামী আন্দোলন গড়ে তুলেছি যা ইরানের বেলুচ জনগণ এবং সুন্নিদের বিরুদ্ধে চলমান অবিচারের অবসান ঘটাতে সচেষ্ট।

এছাড়া আবু হাফস বেলুচি রেকর্ডিংয়ে বলেননি যে, তিনি জুনদুল্লাহর একজন সদস্য ছিলেন। বরং তিনি বলেছিলেন, বাহরাইনের গোয়েন্দা কর্মকর্তা আহমেদ আলশোরৌকি তাকে বলেছিলেন: “আমরা আপনাকে এই দলটির (জুনদুল্লাহ্) সাথে সম্পর্ক আছে বলে মনে করি এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি? এবং উক্ত দলের উদ্দেশ্য কী” তারপরে উক্ত গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাকে বলেছিলেন: “আপনি জুনদুল্লাহ্ দলের সাথে রয়েছেন।”

তবে আবু হাফস বেলুচি যখন ইরান সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি দল গঠন করেছিলেন, তখন জুনদুল্লাহ্র সাথে যোগ দেননি। বরং তিনি ‘জামায়াতে আনসারুল্লাহ্ গঠন করেছিলেন পরে এটি আলফুরকান দলের সাথে যোগ দেয় এই দলটি পরবর্তীতে ‘আনসার আল ফুরকান’ নামে পরিচিতি লাভ করে

তৃতীয় বিভ্রান্তি: একজন সাবেক আমেরিকান গোয়েন্দা কর্মকর্তার অভিযোগ

আলজাজিরা তৃতীয় যে বিভ্রান্তি ছড়াতে চেয়েছে, তা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্মকর্তার একটি উক্তিতিনি যা দাবি করেছেন তা হলো, আবু যুবায়দার কাছে (আল্লাহ তার মুক্তিকে ত্বরান্বিত করুন) সৌদি রাজপরিবারের তিনজনের ফোন নম্বর সহ একটি নোটবুক পাওয়া যায়

শুরুতে আমি আবু যুবায়দার অবস্থা তুলে ধরছি তিনি যখন বন্দি হলেন, তখন তাকে মারাত্মকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল এসকল নির্যাতনের কিছু বিষয় আমেরিকানরা স্বীকার করেছে তার মধ্যে একটি হল, তারা আবু যুবায়দার উপর চাপ বাড়ানোর জন্য তার ভাঙ্গা উরুর হাড়কে নাড়াচাড়া করত অন্যদিকে মুহাম্মাদ সালেহ আলী মুহাম্মাদের সাথে খুব নরম ব্যবহার করা হত।

তারপরে এই গল্পটি যা প্রাক্তন মার্কিন গোয়েন্দা এজেন্ট উল্লেখ করেছিল – ‘নাইন ইলেভেনের’ ঘটনা সম্পর্কিত সরকারী কংগ্রেশনাল রিপোর্টে এ ঘটনার কোন উল্লেখ নেই এটা সত্যিই বিস্ময়কর যদিও সেই রিপোর্টে ‘আবু যুবায়দা’ শব্দটি পঞ্চাশবার উল্লেখ করা হয়েছিল এছাড়া প্রাক্তন এই আমেরিকান কর্মকর্তার এই বক্তব্যের কোনও উল্লেখ না করেই (আবু যুবায়দার আরবি নাম) ‘জয়নুলআবিদীন’ নামটিও দুবার উল্লেখ করা হয়েছে এই মার্কিন কর্মকর্তার কথা বা তার দাবীকৃত গল্পের কোন উল্লেখ সে রিপোর্টে নেই

তাহলে এই তথ্যগুলি উনিশ বছর পর আলজাজিরার ভিডিওতে কেন দেখানো হলো? এটা কি এজন্য যে, আলজাজিরা এই ধরণের তথ্য ফাঁস করতে খুব উৎসাহী?

তারপরে এই প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেছেন, তার এই দাবীকৃত তথ্য নাইন ইলেভেন এর ঘটনায় সৌদি আরবের জড়িত থাকার প্রমাণ দিতে পারে।

যদি আমরা সাধারণ নিয়ম আলজাজিরার উপর প্রয়োগ করি, তবে দেখবো – এই মার্কিন কর্মকর্তা এফবিআই বা সিআইএর অনুমতি ব্যতীত কথা বলতে পারার কথা না সেক্ষেত্রে এই প্রোগ্রামটি আলজাজিরা চ্যানেল অবশ্যই এফবিআই বা সিআইএ এর সাথে সম্মতি, বোঝাপড়া এবং সামঞ্জস্য রেখে করেছিল সুতরাং এই প্রাক্তন কর্মকর্তার নিয়ম অনুসরণ করে, এটা স্পষ্ট হয় যে, ‘আলজাজিরা’ এফবিআই বা সিআইএর প্রচার সেবাপ্রদানকারী সংস্থা ব্যতীত আর কিছুই নয়।

তৃতীয় বিভ্রান্তি বিষয়ে আস সাহাব মিডিয়ার বিশ্লেষণ

আসসাহাব মিডিয়ার ধারাভাষ্যকারঃ এবিষয়ে আমরা সিআইএ এর এজেন্ট জন কিরিয়াকাউ5 (John Kiriakou) এর উপর অনুসন্ধান চালিয়েছি এবং দেখতে পেয়েছি যে, মিথ্যা বিবৃতি প্রদান সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে কারাগারে সাজা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ সালে এই সিআইএ এজেন্টের ‘The convenient Terrorist’ শিরোনামে একটি বই প্রকাশিত হয়েছিল এই বইতে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, তিনি সৌদি প্রিন্সের ফোন নাম্বার পাওয়া বিষয়ক নিম্নলিখিত গল্পটি লিখেছেন:

আবু যুবায়দার গ্রেফতারের পরে, সিআইএর জিজ্ঞাসাবাদকারীরা যখন অনুভব করলেন যে তারা আবু যুবায়দার কাছ থেকে তথ্য উদ্ধারের কোন কার্যকর ব্যবস্থা বা গ্রহণযোগ্য বুদ্ধিমত্তা পাচ্ছেন না, তখন তারা তাকে কথা বলার জন্য প্ররোচিত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। তারা তাকে বিমানের মাধ্যমে আফগানিস্তানের একটি গোপন সিআইএএর অবস্থানে নিয়ে যায় কিন্তু তারা তাকে জানিয়েছিল যে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৌদি সামরিক হেফাজতে রাখা হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে, তাকে সৌদি সৈন্যের ছদ্মবেশে আরব বংশোদ্ভূত দুটি আমেরিকান গ্রীন বেরেটস জিজ্ঞাসাবাদ করে। তদন্তকারীরা বিশ্বাস করেছিল যে আবু যুবায়দা সম্ভবত এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবে। তবুও, পরিকল্পনাটি পুরোপুরি ব্যাকফায়ার করে এবং বানচাল হয়ে যায়। আবু যুবায়দা সেখানে ভয় পাওয়ার পরিবর্তে উল্টো স্বাচ্ছন্দ্য ও খুশী ছিলেন। তিনি সৈন্যদের বলেছিলেন যে, তিনি তিন সৌদি কর্মকর্তাকে চেনেন এবং তাদের সেলফোন নম্বরগুলিও জানেন এবং সৈন্যরা যদি এই তিন ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করে তবে তারা অবশ্যই আবু যুবায়দার মুক্তির আদেশ দিবে এ কথা শুনে সৈন্যরা সে নম্বরগুলি লিখে সিআইএতে স্থানান্তর করে।

আশ্চর্যের বিষয় হল, ফোন নম্বরগুলি আসলেই সঠিক ছিল। তাদের মধ্যেকার একজন হলেন আহমেদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ, সৌদি বাদশাহ ফাহাদের ভাতিজা একজন প্রসিদ্ধ মানুষ, তিনি তার বেশিরভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রেই কাটিয়েছিলেন। দ্বিতীয় নম্বরটি প্রিন্স তুর্কি আলফয়সাল বিন আবদুল আজিজের। ১৯৯১ সালে এই ব্যক্তি উসামা বিন লাদেনের সাথে একটি জাল চুক্তি করেছিলেন চুক্তির শর্ত ছিল সাইয়াফ ক্যাম্পে আলকায়দার এক হাজার নয়শত একানব্বই জনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবেতৃতীয় নম্বরটি হলপাকিস্তানি চিপ এয়ার মার্শাল, মুসহাফ আলী মীরের। সিআইএ কর্তৃক এই নাম ও নম্বর যাচাইয়ের পরে তারা সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সেই তথ্য ভাগ করে নেয়। অতঃপর তিন ব্যক্তিই মারা যায়

২২শে জুলাই ২০০২ সালে প্রিন্স সালমান বিন আব্দুল আজিজ ৪৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর এক সপ্তাহ পরে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রিন্স তুর্কি আল ফয়সাল বিন আব্দুল আজিজ নিহত হন সবশেষে ২০০৩ সালের ২০ শে ফেব্রুয়ারি বিমান দুর্ঘটনায় পাকিস্তানী বিমানের মার্শাল মুসহাফ আলী মীর মারা যায়”

আসুন আমরা তাঁর বইয়ে উল্লেখিত এই বিবরণীকে আলজাজিরাকে দেওয়া তার (জন কিরিয়াকাউ John Kiriakou) সাক্ষাৎকারটির সাথে মিলিয়ে দেখি:

সিআইএ এজেন্ট জন কিরিয়াকাউ এর বক্তব্য–

আমরা যখন ২০০২ সালের মার্চ মাসে আবু যুবায়দাকে গ্রেপ্তার করি, তখন আমরা তাঁর কাছে একটি ডায়েরি পেয়েছিলাম। সেই রাতে আমি তার ডায়েরিগুলি পরীক্ষা করেছিলাম এবং সৌদি আরবের রাজপরিবারের তিন ব্যক্তির ফোন নম্বর পাই আমি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সদর দফতরে একটি গোপন বার্তা প্রেরণ করে জানিয়েছিলাম যে, আমি সৌদি পরিবারের তিনজনের ফোন নম্বর পেয়েছি। আপনারা কি তাদের বিষয় কোন তদন্ত করতে পারেন?

তার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মরুভূমিতে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনজনের একজন নিহত হয়, এবং দ্বিতীয়জন মরুভূমিতে শিবির বা ক্যাম্প স্থাপন করতে গিয়েছিলেন এবং সেখানেই তৃষ্ণার্তবস্থায় মারা যায় আর তৃতীয়জন হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেল এবং তার পরে আজ অবধি কেউ তাকে দেখেনি।”

আসসাহাব মিডিয়ার ধারাভাষ্যকারঃ সম্মানিত পাঠকের সামনে যে গল্প দুটি পেশ করা হয়েছে, তা পরিপূর্ণ পরস্পরবিরোধী। এজেন্ট জন কিরিয়াকাউ আলজাজিরাকে বলেছিলেন যে, গ্রেপ্তারের সময় তিনি শেখ আবু যুবায়দার পকেটে নম্বর খুঁজে পেয়েছিলেন কিন্তু নিজের লেখা বইতে সিআইএ কীভাবে নম্বর পেয়েছিল সে সম্পর্কে পুরোপুরি একটি নতুন গল্প বলেছিল

তিনি লিখেছিলেন, যে তিন জন সৌদি অধিবাসীর নাম্বার শেখ আবু যুবায়দার কাছে ছিল তাদের একজন ছিলেন সৌদি গোয়েন্দা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান প্রিন্স তুর্কি আল ফয়সাল বিন আব্দুল আজিজএবং দাবি করেছিলেন যে, যে তিনজনের নাম্বার পাওয়া গিয়েছিল তারা মারা গেছেনকিন্তু মজার বিষয় হলো, তুর্কি বিন ফয়সাল এখনও বেঁচে আছেন। তবে সৌদি গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানের পদ ছেড়ে দেওয়ার পরে তিনি আমেরিকা ও ব্রিটেনে সৌদি রাষ্ট্রদূতের পদে দায়িত্ব পালন করেন এবং এখনও দুর্নীতিবাজ সৌদ বংশের অন্যায় শাসনের অন্যতম খুঁটি এই ব্যক্তি

আলজাজিরায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে জন কিরিয়াকাউ তৃতীয় সৌদি হিসাবে যাকে উল্লেখ করেছে সে পরবর্তীতে জাদুবলে একজন পাকিস্তানি হয়ে গেছে শুধু তাই না, বর্তমানে সে চিপ এয়ার মার্শাল হয়ে গেছে।

তাই আমাদের আলজাজিরা এবং এর সাংবাদিকদের পেশাদারিত্ব এবং বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে বুঝতে হবে। এখানে হয় সাক্ষাৎকার দেয়া ব্যক্তি মিথ্যা বলছে, অথবা আলজাজিরা তাকে দিয়ে মিথ্যা বলাচ্ছে খুব সম্ভবত এরা দুজনে মিলেই এই মিথ্যা প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে এখানে আলজাজিরা খরচ করছে তাই আমেরিকান এজেন্টও যে খরচ করছে তার পক্ষে কথা বলছে উভয়েরই মৌলিক লক্ষ্য হল – জনগণের কাছে মুজাহিদদের মন্দভাবে উপস্থাপন করা এই প্রচেষ্টার বাইরে মুজাহিদদের ব্যাপারে যা তারা অন্তরে লালন করে তা আরও বেশি জঘন্য

আমি এই বিষয়টিতে মন্তব্য করার আগে বলতে চাই যেহেতু আলজাজিরা আমেরিকার একজন প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়েছিল, তাই আলজাজিরার সাথে কাজ করেছিল, এমন একজন সাংবাদিক আলজাজিরা সম্পর্কে যে সাক্ষ্য দিয়েছিল সেটা আপনাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া ভালো হবে। তিনি হলেনজামাল ইসমাইল। একবার আলজাজিরা আমার একটি সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য যোগাযোগ করেছিল সাংবাদিকদের সেই দলে জামাল ইসমাইলও ছিল সেই সাক্ষাতকারে আলজাজিরা সরাসরি সম্প্রচারের যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছিল

আসসাহাব মিডিয়ার ধারাভাষ্যকারঃ জামাল ইসমাইল স্বীয় রচিত (ابن لادن والجزيرة وأنا) বিন লাদেন, আলজাজিরা এবং আমি”(‘Bin Laden, Al Jazeera and I) বইটিতে আলজাজিরার সরাসরি সম্প্রচারের এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এভাবে

আলজাজিরা চ্যানেলটির সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে আমি জানতে পারি যে, তারা আফগানিস্তান থেকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সাক্ষাত্কার সম্প্রচার করার জন্য তাদের সাথে সম্প্রচারকারী দল ও যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছিল এটি কেবল অন্য পক্ষের অগ্রহণযোগ্যতার বিষয়ই নয় বরং প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছিল যে, এ জাতীয় ডিভাইসগুলি আনার উদ্দেশ্য এ ছাড়া আর কি হতে পারে যে, যদি ডঃ আইমান আলযাওয়াহিরী অথবা শাইখ উসামা বিন লাদেন যদি আলজাজিরার সাথে সাক্ষাত্কারে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে উক্ত সম্প্রচার পর্যবেক্ষণ করে সঠিক অবস্থান নির্ণয়ের পর তাদের উপর হামলা চালানো হবে

কেননা, চেচনিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জওহার দুদায়েভের (Johar Dudayev) এর ক্ষেত্রে আমেরিকান স্যাটেলাইট ব্যবহার করে তার অবস্থান নির্ণয় করা হয়েছিল এরপর সে তথ্য রাশিয়ানদের কাছে পাচার করা হয়েছিল তারপর রাশিয়ানরা মিসাইল হামলা করে তাকে হত্যা করে আমেরিকার তথ্য অনুযায়ী রাশিয়ানরা তার উপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হত্যা করেছিল আর রাশিয়ানদের কাছে আমেরিকানদের তথ্য ফাঁস করার ঘটনা এখনও মানুষ ভুলেনি।

তাই আমি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম যে, নিরাপত্তার বিবেচনায় এই ডিভাইসগুলির অস্তিত্ব সম্পর্কে শাইখ উসামা বিন লাদেন এবং ড. আইমান আযযাওয়াহিরী জানতে পারলে পুরো সাক্ষাত্কারটি বাতিল করতে পারে কারণ আশংকা আছে, এই সম্প্রচারটি আমেরিকার হাতে যেতে পারেতারা এই ২ জনের অবস্থান চিহ্নিত করে হামলা করতে পারেআমেরিকা দীর্ঘদিন যাবত শায়খ উসামা আইমান আযযাওয়াহিরীর অবস্থান সনাক্ত করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে”

ডিভাইস সম্পর্কে প্রশ্ন:

এ বিষয়ে আমি(জামাল ইসমাইল) তাদের বলেছিলাম যে, আপনারা সরাসরি সম্প্রচার করার সকল যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছেন এবং আফগানিস্তান থেকে সাক্ষাত্কারটি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে সরাসরি সম্প্রচার করতে চাচ্ছেন অথচ নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি অন্য পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি উপগ্রহগুলির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণকারী ডিভাইসের সাহায্যে অবস্থানটি প্রকাশ করবে এবং অন্যপক্ষ আফগানিস্তান থেকে আপনার এই সম্প্রচারক ডিভাইসগুলি ব্যবহারের অনুমতি দেবে না।

এখন প্রশ্ন হল সরাসরি সম্প্রচার করার দ্বারা আলজাজিরার উদ্দেশ্য কী ছিল”?

সুবহানাল্লাহ! অভিবাসী বীর যোদ্ধা ও বন্দী মুজাহিদদের তারা নিকৃষ্ট সৌদি সরকারের কর্মচারী বলে সাব্যস্ত করছে!! কতইনা নিকৃষ্ট তাদের বিচার! মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াসাল্লাম বলেন:

إِنَّ مِمَّا أَدْرَكَ النَّاسُ مِنْ كَلاَمِ النُّبُوَّةِ إِذَا لَمْ تَسْتَحْيِ فَاصْنَعْ مَا شِئْتَ

লোকেরা নবুওয়াতী বাণী থেকে যা বুঝতে পেরেছে, তাহলো যদি আপনি লজ্জিত না হন, তবে আপনার যা ইচ্ছে তা করতে পারেন” [বুখারী]

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াসাল্লাম আরও বলেন:

سَيَأْتِي عَلَى النَّاسِ سَنَوَاتٌ خَدَّاعَاتُ، يُصَدَّقُ فِيهَا الْكَاذِبُ، وَيُكَذَّبُ فِيهَا الصَّادِقُ، وَيُؤْتَمَنُ فِيهَا الْخَائِنُ، وَيُخَوَّنُ فِيهَا الأَمِينُ، وَيَنْطِقُ فِيهَا الرُّوَيْبِضَةُ، قِيلَ: وَمَا الرُّوَيْبِضَةُ؟ قَالَ: الرَّجُلُ التَّافِهُ فِي أَمْرِ الْعَامَّةِ

অচিরেই মানুষের উপরে এমন একটা কাল অতিবাহিত হবে, যেখানে থাকবে ধোঁকা আর ধোঁকা সেখানে মিথ্যুককে সত্যায়ন করা হবে এবং সত্যবাদীকে মিথ্যুকে পরিণত করা হবে, বিশ্বাসঘাতকদের কাছে (সম্পদ) গচ্ছিত বা আমানত রাখা হবে আর বিশ্বস্তদের সাথে করা হবে বিশ্বাসঘাতকতা সে সময়রুওয়াইবিদাহ্নেতৃত্ব দিবেরুওয়াইবিদাহ্কে বা কারা জানতে চাইলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াসাল্লাম বলেন– ‘রুওয়াইবিদাহ্হলোতুচ্ছ বা নগণ্য ব্যক্তিযে মানুষের বিষয়ে কথা বলবে(ইবনে মাজাহআহমদশুআইব আরনাউত বলেছেন হাদীসটি হাসান)

একটি আরবি প্রবাদ বাক্য আছে,

رمتني بدائِها وانسلت

সে নিজের দোষ আমার ঘাড়ে চাপিয়েছে আর পালিয়ে গেছে(উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে)

আলজাজিরার যদি সামান্যতম নিরপেক্ষতার গুণ থাকতো, তাহলে তারা শাইখ আবু যুবায়দার (আল্লাহ তাকে মুক্তি দান করুন) বিষয়টি নিয়ে তার আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করতোঅথবা তার পরিবারের কাছে জানতে চাইতো যে, “আমাদের কাছে আবু যুবাইদার ব্যাপারে কিছু অভিযোগ আছে। আপনাদের কাছে এর কোন উত্তর আছে কিনা”?

আলজাজিরা যদি আবু যুবায়দার কোন মন্তব্য সংগ্রহ করতে না পারতো, তাহলে আমানতদারী তো এটা ছিল যে, তারা বলবে, (আমরা যা প্রকাশ করেছি) সেটি মার্কিন কর্মকর্তার দাবী এ বিষয়ে আমরা আবু যুবায়দার পক্ষ থেকে কোন উত্তর পেতে সক্ষম হইনি।

তবে আলজাজিরা ইচ্ছাকৃতভাবেই ঘটনাটি এভাবে সাজিয়েছে সত্য উন্মোচনের বিষয়টি তারা এড়িয়ে গেছে কারণ তারা মুজাহিদদের বিরুদ্ধে আমেরিকান মিথ্যা প্রোপাগান্ডা প্রচার করতে বেশ আগ্রহী এবং মুজাহিদদের সত্য প্রকাশে বাঁধা দেয়াটা তার কর্মকৌশলের অংশ তবে আসল বিষয়টি এর চেয়েও বেশি জঘন্য আল্লাহ চান তো শীঘ্রই সে বিষয়ে আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ

প্রিয় স্বাধীন ও সচেতন দর্শক শ্রোতা!

আমি চাই আপনি এই উদাহরণটি দেখুন যে, আমেরিকা কীভাবে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ও প্রচার যুদ্ধ চালাচ্ছে আলজাজিরা উক্ত উদাহরণটিতে দুজন ব্যক্তিকে উপস্থাপন করেছে:

প্রথমজন হল: আবু যুবায়দা তিনি একজন ফিলিস্তিনের অভিবাসী মুজাহিদ তিনি মনে করতেন, মুসলিম উম্মাহর সমস্যা এবং ফিলিস্তিন, চেচনিয়া, আফগানিস্তান, কাশ্মীর, ফিলিপাইনের সমস্যা একই আমেরিকা, ইসরাইল ও তার মিত্ররা প্রতিনিয়ত মুসলিম উম্মাহর ধর্ম, সম্পদ এবং মানসম্মান লুটে নিচ্ছে তাই তিনি মুসলিম উম্মাহের প্রতিরক্ষা ও আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়াতে সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন পরিশেষে এই মুজাহিদকে সবচেয়ে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল তার আটক থাকার স্থানটিও গোপন রাখা হয়েছিল আর এভাবে তাঁর কণ্ঠস্বর নিস্তব্ধ করে দেয়া হয়

দ্বিতীয় ব্যক্তি: একজন প্রাক্তন মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যিনি এই পৃথিবীতে অহংকারী অপরাধীদের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি একজন পুলিশ, নির্যাতনকারী, তদন্তকারী, সাক্ষী, বিচারক, কারারক্ষী এবং সবশেষে প্রচারক সে তার বক্তব্যের মাধ্যমে আমাদের জানাতে চাইছে যে, কিছু দেশ কীভাবে এই অভিবাসী মুজাহিদদের ব্যবহার করে এবং এরপর তাদেরকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দেয়

রেড ইন্ডিয়ানদের প্রতিও আমেরিকানদের একই দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ দেখা যায় আমেরিকানরা তাদের জমি, অর্থ এবং বাড়িঘর লুট করেছিল হত্যা করে তাদেরকে নির্মূল করে দিয়েছিল এরপর আমেরিকানরা তাদের মধ্যে অন্যায়ের বীজ বপন করে, তাদের মধ্যে মদ ও অপকর্ম ছড়িয়ে দেয় তারপরে তাদেরকে স্বর্গের গ্যারান্টি দিয়ে খ্রিস্ট ধর্মের দিকে আহবান করেছিল। আমেরিকানরা নিজেরা এত কিছু করার পরেও তাদেরকেই ‘বর্বর’ হিসাবে বিবেচনা করত এবং তাদের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে বসবাস করা ছাড়া অন্য কোনও অধিকার আমেরিকানরা দেয়নি

আলজাজিরা দর্শকদের মনে যে বার্তাটি বপন করতে চায় তাহলো তেলচোর, জমি দখলকারী, ইসরাইলের নির্মাতা, জেরুজালেমকে ইহুদিদের ভূমি বানানোর চেষ্টাকারী আমেরিকা এত অপরাধ করার পরও নির্দোষ অথচ আমেরিকা আমাদের ভূমি দখল করে রেখেছে, সেখানে তাদের ঘাঁটি স্থাপন করেছে, আমাদের সমুদ্র সীমানাতে তাদের নৌবহর পাহারায় রেখেছে, আমাদের উপর বিশ্বাসঘাতক শাসক এবং তাদের এজেন্টদের প্রতিষ্ঠিত করতে বিভিন্ন ধরনের চাপ প্রয়োগ করে চলছে অপরদিকে তাদের সমস্ত দুর্নীতি, চুরি, বিশ্বাসঘাতকতা, নির্যাতন, এবং আমাদের ধর্ম, মানমর্যাদা আর সম্পদের বিরুদ্ধে চালিত আগ্রাসনের সব অপরাধকে বৈধতা দিচ্ছে

এই অপরাধী আমেরিকাই এখন মুজাহিদদের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশের কথিত বৈধ শাসকদের (আদতে তারা অত্যাচারী শাসক) রক্ষক।

একারণেই আলজাজিরার দ্বারা পরিচালিত আমেরিকান প্রোপাগান্ডা প্রচার যুদ্ধে মুজাহিদদের অপরাধী হিসেবে দেখানো হয়েছে আর খুনি আমেরিকাকে (কথিত সত্যের) প্রচারক হিসেবে দেখানো হয়েছে তবে আমরা আমেরিকানদের এবং তাদের যুদ্ধ ও প্রচার সরঞ্জামগুলিকে সুসংবাদ দিচ্ছি, যে আল্লাহর দয়ায় আমরা রেডইন্ডিয়ান নই।

বরং আমরা হলাম মুসলিম জাতি এটা এমন এক জাতি যা বিশ্ব মানবতাকে তাওহীদের প্রতি আহবান করে এ জাতি চার্চ বা গির্জার পোপদের দ্বারা নবীদের উপর নাযিল হওয়া কিতাবসমূহের বিকৃতিকে উন্মোচিত করেছে এই জাতি চার্চের পোপদের উক্ত ঘৃণিত কাজকে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে অন্তরায় তৈরি করার প্রমাণ পেশ করেছেসেইসাথে তাদের (ভণ্ড ধর্ম যাজকদের) দুর্নীতি প্রকাশ করেছে পরিশেষে আহবান করেছে সত্য ও ন্যায়বিচারের দিকে জালিম সম্রাট এবং অত্যাচারীদের নিক্ষেপ করেছে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে। তারা অনৈতিকতা ও অশ্লীলতাকে নিষিদ্ধ করেছে আর আহবান করেছে ক্ষমা ও সম্প্রীতির দিকে

এই জাতি তোমাদের সাথে অতীতে লড়াই করেছে এবং ভবিষ্যতেও লড়াই চালিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহঅচিরেই তোমাদের প্রচার মাধ্যম আমাদের সাথে লড়াইয়ে হতাশ হয়ে পড়বে এবং তোমাদের মিথ্যা দাবি ও প্রোপাগান্ডা প্রকাশিত হবে ইনশা আল্লাহ

সিআইএর ‘বিন লাদেন ইউনিটের’ একজন প্রাক্তন প্রধান মাইকেল শইয়ার (Michael Scheuer) বিশ্বাস করেন যে, আলকায়দা এমন একটি দল যা অবশ্যই সামরিক বাহিনী বা শক্তি প্রয়োগের দ্বারা নির্মূল করতে হবে। কোন আইনি উপায়ে এদেরকে প্রতিহত করা যাবে না তবে তিনি তার জাতিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন –

আপনারা যদি আলকায়দাকে পরাস্ত করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনারা নিজেরা নিজেদের সাথে প্রতারণা বন্ধ করুন প্রথমে ভালো করে বুঝতে হবে আলকায়দা আসলে কী। আপনারা (আমেরিকানরা) আপনাদের রাজনীতিবিদ এবং মিডিয়ার মিথ্যা দ্বারা পরিচালিত হবেন নাউসামা এবং আলকায়দার সদস্যরা সাধারণ কোন অপরাধী দলের সদস্য নয়, বরং তারা হচ্ছেন মহান ব্যক্তিত্ব ও শ্রদ্ধার পাত্র। উসামা একটি বৈশ্বিক ইসলামী প্রতিরোধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আপনারা যদি আপনাদের নেতাদের অন্ধ অনুসরণ করতে থাকেন তবে আপনাদের জন্য পরাজয় অপেক্ষা করছে

আসসাহাব মিডিয়ার ধারাভাষ্যকারঃ মাইকেল শইয়ার (Michael Scheuer) “শত্রুদের চোখে আমরা” (‘Through the Enemy’s Eyes’)বইতে বলেছেন: শেষ কথা হল, বিন লাদেনের’ কথাগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তার কথা শুনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে আমেরিকানরা বিশ্বের প্রকৃত অবস্থা বুঝতে পারবে আর তারা এটাও বুঝতে পারবে যে, তাদের দেশ এখন ভয়ঙ্কর হুমকির মুখোমুখি হয়ে আছে। বিন লাদেনের কথা বাদ দিয়ে আমেরিকানরা যদি তাদের নেতাদের মিথ্যাচার, গণমাধ্যমের প্রোপাগান্ডার দিকে ছুটে চলে, তাহলে তাদের দেশের চূড়ান্ত পরাজয় রোধ করার আর কোন উপায় নেইকেননা, আমেরিকানদের সুরক্ষা এবং বেঁচে থাকার বিষয়টি তাদের শত্রুদের কথা বোঝা ও সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়ার মধ্যেই রয়েছে।

***

শাইখ আইমান আযযাওয়াহিরীর পর্যবেক্ষণ

শেষ করার আগে, আমার দুটি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে স্বাধীন এবং সচেতন দর্শকদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই:

প্রথম পর্যবেক্ষণ: আলকায়দার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে অপবাদ পূর্বেও দেয়া হয়েছে, বর্তমানেও দেয়া হচ্ছেতারা অপবাদ দিয়েছে যে, আলকায়দা আমেরিকা, ইসরাইল, ইরান, সৌদি আরব, আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, রাশিয়া এবং মিশরের এজেন্ট ও তাদের পক্ষে কাজ করে। তারা আমাদের তাকফিরি, কট্টরপন্থী, চরমপন্থী, অর্থ ও ক্ষমতা লোভী এবং অথর্ব বলে গালমন্দ করেছেকখনো আমাদেরকে তারা অপমান ও বিশ্বাসঘাতকতার তোকমা দিচ্ছে। কখনো বলেছে, আমাদের লোক যারা ওয়াজিরিস্তানে মহিলা ও শিশুদের সহ তাদের বোমার আঘাতে শহীদ হয়েছে তারা হিরোইন ব্যবসায়ী ছিল। আমেরিকা নাকি কোন বেসামরিক লোক বা মুজাহিদদের হত্যা করেনি বরং হিরোইন ব্যবসায়ীদের হত্যা করেছে এসকল অপবাদের মুখে আমাদের ধৈর্য ধারণের প্রতিদান আমরা আল্লাহর কাছে পাব ইনশা আল্লাহ

তবে আমি এখানে যে বিষয়টি স্পষ্ট করতে চাই তা হল; এই বিভ্রান্তি ও প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে স্বাধীনচেতা ও উদার দর্শকদের সতর্ক করা আপনারা কোন সংশয়ের সম্মুখীন হলে প্রথমে আলকায়দার বার্তাগুলো দেখবেন এই বার্তাগুলো আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এগুলো জাতির কাছে পৌঁছে দেয়ার পর, এটিকে মুসলিম উম্মাহ গ্রহণ করলে সেটাই আমাদের সত্যিকারের বিজয়।

যদি কেউ এই বার্তাগুলোতে ভাল এবং সত্য বিষয় খুঁজে পান তবে তার উচিত হবে সে বিষয়গুলো মেনে নিয়ে তার উপর আমল করা আর যদি এর মধ্যে সত্য ছাড়া অন্য কিছু থাকে তবে সে যেন তা ছেড়ে দেয় এবং আমাদেরকে সে বিষয়টি সম্পর্কে উত্তম পরামর্শ দেয়

দ্বিতীয় পর্যবেক্ষণ: আমাদের সম্পর্কে অনেক কিছুই বলা হয়ে থাকে এবং অনেকেই দাবি করেন যে, তারা আমাদের ব্যাপারে অনেক ভাল জানেন অথচ যা বলা হয় তার অনেক কিছুই সত্য নয় অনেকক্ষেত্রে সেটা সত্য ও কল্পনার সংমিশ্রণ ছাড়া আর কিছু নয়

সুতরাং আমি সম্মানিত দর্শকের (পাঠকের) কাছে আমরা যা ঘোষণা করি সেগুলি ছাড়া ভিন্ন কিছুর সাথে আমাদের সম্পৃক্ত না করার অনুরোধ করছি যদি কেউ এসে বলে: আমি আলকায়দার সদস্য, বা কোন গোয়েন্দা সংস্থা যদি কোন ব্যক্তিকে আলকায়দার সদস্য বলে দাবি করে তবে তার জন্য আমরা দায়ী নই একইভাবে কোন ব্যক্তি যদি কোন দলের সাথে যুক্ত থাকে এবং সে দল আলকায়দার সাথে যুক্ত থাকার দাবি করে, এবং সে ব্যক্তি দলের সাথে থাকার কারণে নিজেকে আলকায়দার সদস্য বলে দাবি করে অথচ আমরা সে ব্যাপারে কোন ঘোষণা জানাইনি, এমন দল বা ব্যক্তিদের ব্যাপারেও আমরা দায়ী থাকব না হে আল্লাহ্! আপনি সাক্ষী থাকুন, আমি পৌছে দিয়েছি।

আলজাজিরা জনগণের কাছে যে মিথ্যা ধারণা প্রচারের চেষ্টা করছে সে সম্পর্কে আপনাদের জানানোর জন্য এটি একটি ছোট প্রচেষ্টা ছিল। প্রকৃতপক্ষে আলজাজিরা সত্যকে গোপন রাখতে এবং সত্য প্রকাশ না করার বিষয়ে আগ্রহী তারা মূলত যে তথ্যটি তাদের দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে চাচ্ছে সেটাকে নিচের দুইটি বাক্য দ্বারা স্পষ্ট করা যায় তাদের মূল কথা হল

المجاهدون خونةٌ فانبذوهم، وإسرائيلُ واقعٌ فتعايشوا معه

মুজাহিদীন বিশ্বাসঘাতক, সুতরাং তাদের প্রত্যাখ্যান করুন। আর ইসরাইল একটি বাস্তবতা, তাই তার সাথে সহাবস্থান করুন।

আল্লাহ তা’আলা সুযোগ দিলে আমি পরের পর্বে এ বিষয়ে কথা বলব। ইনশা আল্লাহ।

وآخرُ دعوانا أن الحمدُ للهِ ربِ العالمين، وصلى اللهُ على سيدِنا محمدٍ وآلِه وصحبه وسلم.

والسلامُ عليكم ورحمةُ اللهِ وبركاتُه.

দৃষ্টিপাত: আলজাজিরা দাবি করে যে, তাদের সংবাদ মাধ্যম পেশাদারিত্ব এবং বিশ্বাসযোগ্যতার উপর ভিত্তি করে কাজ করে তারা আরও দাবি করে থাকে যে, আলজাজিরা ভিন্ন মত প্রকাশের একটি উৎকৃষ্ট প্লাটফর্ম আমরা আমাদের এই ভিডিওতে তাদের মিথ্যাচারের যে নমুনা দেখিয়েছি সে আলোকে আমরা অপেক্ষা করব এবং দেখব, আলজাজিরা তাদের এই কেলেঙ্কারির বিষয়টি কীভাবে মোকাবেলা করে। আমরা দেখবো তাদের সাংবাদিকতা কি আসলেই স্বাধীন নাকি ক্ষেত্র বিশেষে তারা তাদের প্রয়োজনে তাদের মিডিয়া পলিসিও পরিবর্তন করে ফেলে!!

************

1 এই ভিডিওটি ২০১৯ সালের জুলাইতে প্রকাশিত হয় ভিডিও লিঙ্ক https://www.youtube.com/watch?v=0JrkC9jxan0

2 আবু হাফস আল বেলুচিবেলুচিস্তান প্রদেশটিতে আফগান, পাকিস্তান ইরানের অংশ রয়েছে এই অঞ্চলে ২০১১ সালের শেষের দিকেহারকাত আনসার ইরাননামক সুন্নি জিহাদি দলটি আত্মপ্রকাশ করে এই দলের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেনআবু হাফস আল বেলুচি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে তিনি এই দলের অনলাইন কার্যক্রমের দিকটি দেখা শুরু করেন এবং তরুণদের মাঝে বেশ সাড়া ফেলতে সক্ষম হন তার বক্তব্যগুলো আলফারুক মিডিয়া থেকে প্রকাশিত হত

২০১৩ সালের ডিসেম্বরেহারকাত আনসার ইরানবেলুচিস্তানের আরেকটি দলহিযবউলফুরকানএর সাথে মিলিত হয়েহারকাত আনসার আল ফুরকান ফি বিলাদ আল ফারসিগঠন করে

২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে ইরানের হামলায় আবু হাফস আল বেলুচি শহীদ হন

3 বালাকোট মিডিয়া থেকে এই বার্তাটি ২০১৩ সালে অনূদিত প্রকাশিত হয়েছে বার্তার লিঙ্ক http://gazwah.net/?p=11725

4 বালাকোট মিডিয়া থেকে এটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে লিংক http://gazwah.net/?p=1230

54 জন কিরিয়াকাউ (John Kiriakou) একজন প্রাক্তন সি আই এ কর্মকর্তা। তার দাবি মতে, শাইখ আবু যুবায়দাকে যখন পাকিস্তানে আমেরিকান বাহিনী গ্রেফতার করে সেই বাহিনীতে সেও ছিল। জন ২০০৭ সালে সর্বপ্রথম আমেরিকান হিসেবে জন শাইখ আবু যুবায়দার উপর নির্যাতনের কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে জানা যায় যে, শাইখ আবু যুবায়দার উপর ৮৩ বারের বেশি ওয়াটারবোর্ডিংপদ্ধতিতে নির্যাতন চালানো হয়েছিল।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × four =

Back to top button