এক আরব দরবেশের কথা -শাইখ হামযা বিন উসামা বিন লাদেন হাফিজাহুল্লাহ
আল হিকমাহ মিডিয়া
পরিবেশিত
এক আরব দরবেশের কথা
শাইখ হামযা বিন উসামা বিন লাদেন হাফিজাহুল্লাহ
DOC PDF
https://archive.org/details/EkArobDorbesherKotha
DOC
http://www.mediafire.com/file/9a963741tvlimjn/67.ek_arob_dorbesher_kotha.docx/file
https://archive.org/download/67.ekarobdorbesherkotha/67.ek%20arob%20dorbesher%20kotha.docx
http://www.mediafire.com/file/a7ggdv…r%20kotha.docx
http://www.mediafire.com/file/4893vlci2wn8p9l/67.ek_arob_dorbesher_kotha.pdf/file
https://archive.org/download/67.ekarobdorbesherkotha/67.ek%20arob%20dorbesher%20kotha.pdf
http://www.mediafire.com/file/lxmtg5…er%20kotha.pdf
—————————-
এক আরব দরবেশের কথা
শাইখ হামজা উসামা বিন লাদেন হাফিজাহুল্লাহ
الحمد لله رب العالمين، وأشهد ألا إله إلا الله ولي الصالحين، وأشهد أن محمدًا عبده ورسوله صلى الله عليه وعلى آله وصحبه أجمعين.
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। সমস্ত প্রশংসা মহাবিশ্বের প্রতিপালকের জন্য। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ ইবাদতের দাবিদার নেই, তিনি ন্যায়নিষ্ঠদের সাহায্যকারী। এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল। শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর উপর, তাঁর পরিবারবর্গ এবং সাথীদের উপর।
সমগ্র বিশ্বের মুসলিম ভাইদের প্রতি-
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
আপনাদের প্রতি আমার এই কথাগুলো হচ্ছে গৌরব-মর্যাদা, স্বাধীনতা ও উন্নতির কথা! এগুলো এমন একজন দরদী ব্যক্তির কথা, যিনি চেয়েছিলেন উম্মাহ অবমাননা ও দুর্বলতার শেকল ভেঙ্গে ফেলুক, আর রবের ইচ্ছামাফিক মর্যাদা ও সম্মানের সাথে জীবন যাপন করুক। গত শতাব্দীতে মুসলিম উম্মাহ দুর্বলতার দশকগুলো অতিবাহিত করার পর গৌরবের পথ হারিয়ে ফেলে, দগ্ধ হতে থাকে জাহেলিয়াতের ভস্মীভূতকারী আগুনে। অতঃপর যখন মুসলিম উম্মাহ বিশাল মরুপ্রন্তর ও উচু-নিচু দুর্গম পর্বতমালা অতিক্রম করার পর গৌরবময় ইতিহাসের পথ ধরেছে। তখন এ উম্মাহ চিন্তা-চেতনায় দুটি বিষয়ের উপর তাদের চোখ নিবদ্ধ রেখেছে। একটি হলো তাঁর গন্তব্য, আর তাঁর গন্তব্যে যাওয়ার নির্ধারিত পথকে একটি উজ্জ্বল আলো আলোকিত করেছে। এ উম্মাহর একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে। লক্ষ্যটি হলো উম্মাহর সাধারণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। যেটা অর্জনে এ উম্মাহ তার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যয় করে, যার উপর চোখগুলো লক্ষ্য স্থির করেছে এবং যা পাওয়ার জন্য হৃদয়গুলো আকাঙ্ক্ষিত। আর যার ভিত্তির উপর সংগঠন ও দলগুলো একীভূত।
কয়েক দশক যাবৎ কঠিন ধাপগুলো অতিবাহিত করার পর এবং দীর্ঘ সময় ইসলামি খেলাফতের অনুপস্থিতির পর উম্মাহ তাঁর সুনির্ধারিত পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছিল, দৃষ্টি হারিয়েছিল তাঁর সত্য লক্ষ্যের উপর থেকে, আর তাঁর গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য সুনির্ধারিত পথে চলতে পথনির্দেশনার অভাব বোধ করছিল। তাঁরা অনেক দলে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল এবং উম্মাহর একটি বৃহৎ অংশ বিদেশি দখলদারিত্বকে মেনে নিয়েছিল, পরিচালিত হচ্ছিল মানব রচিত আইন দ্বারা। উম্মাহ একটি চরম কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছিল ততদিন পর্যন্ত যতদিন না উম্মাহর শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা পার্থিব পদমর্যাদাকে ছুড়ে ফেলে বিদ্রোহে জেগে উঠেছিল। উম্মাহর জন্য তাদের জীবনগুলোকে বিলিয়ে দিয়েছিল, ত্যাগ করেছিল তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থকে। উম্মাহকে পরিপূর্ণভাবে জাগিয়ে তুলতে এবং সাধারণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চিনিয়ে দিতে তাদের সমস্ত শক্তি ব্যয় করেছিল। যেন এ উম্মাহ সঠিক দিকনির্দেশনা পেয়ে তার গন্তব্যপানে যাত্রা অব্যাহত রাখতে পারে।
এই উম্মাহর সাধারণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হল, মুসলিম ভূমিগুলোকে স্বাধীন করা, ক্রুসেডারদের কর্তৃত্ব ও প্রভাব থেকে স্বাধীনতা লাভ করা, ইসলামি শরিয়াহ প্রতিষ্ঠিত করা, আল্লাহর আইনের সুশীতল ছায়ার নিচে নিরাপদে বসবাস করা এবং লোকজনকে এর দিকে দাওয়াত দেয়া। শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. ছিলেন প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বদের মধ্যে একজন, যারা অসাধারণ অন্তর্দৃষ্টি এবং দূরদর্শিতার অধিকারী, যারা উম্মাহর হাত ধরতে সক্ষম এবং উম্মাহকে লাঞ্চনার জীবন থেকে সম্মানের জীবনে নিয়ে যেতে সক্ষম, যাতে এই উম্মাহ তাঁর প্রকৃত গন্তব্য পানে হাঁটতে পারে।
তিনি এমন একটি সময়ে বসবাস করেছেন যে সময়টাতে অধিক শক্তিশালীরা বিশ্বে শাসন করছিল, তাদের যা ইচ্ছা তাই করছিল কিন্তু তাদের বিরোধীতা করার মতো সাহস কারো ছিল না। পৃথিবী চরম ভয় এবং ত্রাসের সময় অতিক্রান্ত করছিল। নির্যাতন, আগ্রাসন এবং স্বৈরাচারী প্রভুত্বের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে সবাই ভীত ছিল। অবাধে চলছিল মিথ্যাচার। তারা ঔদ্ধত্যের সকল সীমা অতিক্রম করেছিল এবং ঘোষণা করেছিল, “আমাদের থেকে অধিক শক্তিশালী আর কে আছে?” মুনাফিক এবং যারা ঈমানে অপরিণত ছিল তাদের মনে আল্লাহর সম্পর্কে অবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছিল। আর মুসলিমদের অবস্থা হয়েছিল রাতের বেলা ঝড়ের কবলে পড়া একটি মেষ-পালের ন্যায়, যে মেষপাল জ্ঞাতসারে অথবা অজ্ঞাতসারে নেকড়ের হামলায় মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়েছিল।
এই পরিস্থিতিতে তিনি ঈমানদারদের মধ্য থেকে বাছাই করা কিছু লোক, খুবই সীমিত সম্পদ ও সামান্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পরিস্থিতির মোকাবেলায় দাঁড়িয়ে যান। খাঁটি ঈমান এবং আল্লাহর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসে তাঁরা ছিলেন এক অনন্য উদাহরণ। তিনি, তাঁর ভাইগণ এবং দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ আফগান জাতি অবিচলতা দেখিয়েছিলেন, ফলে আল্লাহর অনুগ্রহে সোভিয়েত ইউনিয়ন পরাজিত হয়েছিল; তাঁর অস্তিত্বের নিছক একটি প্রতিচ্ছায়ায় পরিণত হয়েছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আমেরিকার সময় হলো তার ঔদ্ধত্যের সীমা অতিক্রম করার। আমেরিকা স্বীয় শক্তির দ্বারা প্রতারিত হয়েছিল, জনগণ তার দৃশ্যমান ক্ষমতার মাধ্যমে সম্মোহিত হয়েছিল। যাই হোক, আমেরিকা এই বিষয়ে অচেতন ছিল যে, আল্লাহ তাকে রাশিয়ার (একটি পরাজিত সুপারপাওয়ার) স্থলাভিষিক্ত করেছেন। রাশিয়ার যে পরিণতি হয়েছে তাদেরও সে পরিণতি হতে চলেছে।
ইমাম শাইখ উসামা (রহ.) দ্বিতীয়বারের মতো ইসলামের দুর্গ আফগানিস্তানে ফিরে এসেছিলেন তাঁর প্রিয় ভাইদের মধ্য থেকে মাত্র ছয়জনকে সাথে নিয়ে; তাঁরা আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ঈমানের অধিকারী ছিলেন এবং সবকিছুর উপর তাঁর প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। মহান আল্লাহ আনুগত্যশীল বান্দা আমীরুন মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মদ উমর মুজাহিদ (রহ.) কে পরিচালিত করেছিলেন এই তরুণ অনভিজ্ঞ আহ্বায়ককে রক্ষা করতে এবং সাহায্য করতে। তিনি উদারতা এবং আনুগত্যের এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। এভাবে লোকসংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে শুরু করল এবং তাঁরা দ্বিতীয় ফেরাউনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করল। আরো একবার শাইখ উসামা (রহ.) বেসামরিক বিমান দিয়ে আমেরিকাকে কড়া জবাব দিতে সক্ষম হয়েছিলেন; আঘাত হেনেছিলেন আমেরিকার হৃদপিণ্ডে। অল্প সংখ্যক লোকের মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে সমগ্র উম্মাহর মুখোমুখি করানোর জন্য আমেরিকাকে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন ময়দানে। আর তাই আমেরিকার সেনাদেরকে ইরাক এবং আফগানিস্তানের জলাভূমিগুলোতে জোর করে টেনে-হেঁচড়ে নেওয়া হয়েছিল। আমেরিকা ইরাক থেকে পরাজিত এবং লাঞ্চিত হয়ে পলায়ন করতে বাধ্য হয়েছিল। অন্যদিকে ইসলামি ইমারতের সৈন্যবাহিনীর হাতে নিজ দেশের পরাজয়ের স্বীকারোক্তি আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা কর্তৃক দেওয়া সত্ত্বেও তারা আফগানিস্তানের জল-কাদায় তখনো আটকে ছিল।
তিনি ব্যাপকভাবে আল্লাহর পথে জিহাদের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন, যা কয়েক দশক ধরে নির্দিষ্ট কিছু লোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। জিহাদকে তিনি ‘অভিজাত শ্রেণীর জিহাদ’ থেকে উম্মাহর জিহাদে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি জিহাদের সুমিষ্ট বসন্তকে আড়াল থেকে প্রবল বেগে সম্মুখে ধাবমান করেছিলেন। আর উত্তম এই কাজটি আল্লাহর হুকুমে এখনো চলছে…
তিনি মুসলিমদের মাঝে সম্মান, স্বাধীনতা এবং গৌরবের মানসিকতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি এমন এক সময়ে জালিমদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে মানবতার একটি দরস শিক্ষা দিয়েছিলেন যখন হোয়াইট হাউজের সামনে নতজানু হতে এবং পরাভূত হতে মুসলিম উম্মাহর ইচ্ছার অভাব ছিল না। তিনি নিজে তার অবস্থা সম্পর্কে বলেছেন-
مضينا نشق الدرب شقاً ونعتلي … … صخوراً ونمضي دونها ونغامر
يعض علينا الشوك تدمى به الخطا … … وتدمى به أكبادنا والنواظر
يقود خطانا من هدى الحق ديننا … … وأفئدة تجلى به وبصائر
وعهد مع الرحمن أبلج نوره … … تدفق فانزاحت بذاك الدياجر
“আমরা বের হয়ে পড়েছি পথ পারাপারের জন্য এবং আরোহণের জন্য বাজপাখির মতো জেগে ওঠেছি এবং ঝুঁকি নিয়েছি।
পথের কাটাঁগুলো আমাদের পদক্ষেপকে রক্তাক্ত করেছে আর এতে রক্তক্ষরণ হয়েছে আমাদের হৃদয় এবং আত্মায়।
আমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছে আমাদের ধর্ম, আলোকিত করেছে আমাদের হৃদয় এবং দৃষ্টিকে।
আল্লাহর সাথে আমাদের একটি কসম, যে কসম উজ্জ্বলকে আরো উজ্জল করে আর অন্ধকারকে দূর করতে আলো বিচ্ছুরিত করে।”
তিনি দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে উম্মাহকে নেতৃত্ব দিয়ে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন যে, উম্মাহ তাঁর উদ্দেশ্যগুলো প্রত্যক্ষ করতে পারে। তিনি উম্মাহর পথকে আলোকিত করে দিয়েছেন এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের মাধ্যমে উম্মাহকে বিপজ্জনক পথ থেকে রক্ষা করেছেন। তাঁর জীবনকাহিনী সন্দেহাতীতভাবে একটি শাশ্বত স্মৃতি হিসেবে থাকবে আর তাঁর জীবনের শিক্ষাগুলো হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একেকটি গাইডলাইন। মুসলিমরা তাঁর জীবনাদর্শকে আদর্শ স্বরূপ এবং তাঁকে একজন যোগ্য নেতা হিসেবে তুলে ধরতে অধিক সমর্থ। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের কিংবদন্তীদের মধ্যে একজন। এই কারণে নয় যে, তিনি এই অধম ভৃত্যের পিতা (এজন্য আমার উপর তাঁর হক আরো অধিক) তবে এ কারণে যে, উম্মাহ নিজ স্বার্থে তাঁর হাতে নেতৃত্ব তুলে দিয়েছে। তাঁর মাধ্যমেই উম্মাহ নিজ অধিকার সম্পর্কে অবগত হয়েছে এবং তাঁর হাত ধরেই উম্মাহ আজ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনিত।
আল্লাহ তাঁর উপর দয়া করুন। তিনি ছিলেন সত্য ঘোষণায় একজন ইমাম, জালিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের একটি প্রতীক, দখলদারিত্বের প্রতিরোধে এক কীর্তিমান উদাহরণ, উম্মাহকে জাগ্রত করার জন্য নিজের জীবন বিলানোর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। একটি মোমবাতির ন্যায়, যেটা নিজেকে নিঃশেষ করে দেয় তার চারপাশ আলোকিত করার জন্য। নিপীড়িতদের বিশেষভাবে ফিলিস্তিনিদের সাহায্য করার ব্যাপারে তিনি হলেন অনুকরণীয় একটি আদর্শ। এ কারণে যে, তিনি স্থাপন করেছেন মুসলিম উম্মাহর প্রতি দয়াশীলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন এমন এক শত্রুর বিরুদ্ধে, যার শত্রুতা সম্পর্কে সকলেই অবগত। উঁচ্চ মানসিকতা এবং দৃঢ়সংকল্পে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রমী। ধৈর্যে অবিচলতা, অন্যদেরকে ধৈর্য ধারণে উদ্বুদ্ধ করা, যুদ্ধে দূরদর্শিতা এবং কঠোর সাধনায় তিনি ছিলেন ভাবগম্ভীর এবং সংযমী। আমার মনে আছে, তাঁকে দুপুর অথবা রাতের খাবারের সময় দেখেছিলাম কেবল তেল, লবণ এবং রুটির একটি টুকরো খাচ্ছিলেন।
আমার মুসলিম ভাইয়েরা! শাইখ উসামা (রহ.) মুসলিম উম্মাহকে সাহায্যের জন্য তাঁর জীবন এবং সম্পদ ব্যয় করার পর উম্মাহকে মুক্ত করতে এবং এই উম্মাহর মাঝে একটি পুণর্জাগরণ সৃষ্টি করতে তাঁর আত্মাকেও উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি তাঁর রক্ত দিয়ে তাঁর কথার সত্যতা ঘোষণা করেছিলেন। “মুসলিম জাতি তাঁর জনসাধারণ এবং পুরুষদের মাধ্যমে জালিমদের পরাজিত করতে এবং তাদেরকে উৎখাত করতে নিশ্চিতভাবে সক্ষম হবে বিইযনিল্লাহ।”
যাদের এই অঙ্গীকারের সক্ষমতা রয়েছে তাঁরা জালিমদের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে, দুর্নীতির শাসন পরিবর্তন করতে, দখলদারিত্বকে অস্বীকার করতে এবং ইসলামি মূল্যবোধে ফিরে আসতে একটি অনুপ্রেরণা হিসেবে শাইখের দৃষ্টান্তকে কাজে লাগাতে পারে।
হে মুসলিমরা! আল্লাহর বাণীকে স্মরণ করুন-
﴿ قالوا لا طاقة لنا اليوم بِجالوت وجنودِهِ قال الّذِين يظنّون أنّهم ملاقو اللّهِ كم مِن فِئة قلِيلة غلبت فِئةً كثِيرةً بِإِذنِ اللّهِ واللّه مع الصّابِرِين﴾
“তারা বলেছিল, আজকের দিনে জালুত এবং তার সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার শক্তি আমাদের নেই। যাদের ধারণা ছিল যে, আল্লাহর সামনে তাদের একদিন উপস্থিত হতে হবে তারা বার বার বলতে লাগল, সামান্য দলই বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে। আর যারা ধৈর্যশীল আল্লাহ তাদের সাথে আছেন।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৪৯)
তাঁর বাণীগুলো স্মরণ রেখো-
﴿ونرِيد أن نمنّ على الّذِين استضعِفوا فِي الأرضِ ونجعلهم أئِمّةً ونجعلهم الوارِثِين﴾
“ভূমিতে যাদেরকে দুর্বল করা হয়েছিল আমার ইচ্ছা হলো তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার, তাদেরকে নেতা বানিয়ে দেওয়ার এবং তাদেরকে দেশের উত্তরাধিকারী করার।” (সূরা কাসাস, আয়াত ০৫)
﴿فقاتِل فِي سبِيلِ اللّهِ لا تكلّف إِلّا نفسك وحرِّضِ المؤمِنِين عسى اللّه أن يكفّ بأس الّذِين كفروا واللّه أشدّ بأسًا وأشدّ تنكِيلًا﴾
“আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোনো বিষয়ের জিম্মাদার নন। আর আপনি মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন, শীঘ্রই আল্লাহ কাফেরদের শক্তি-সামর্থ খর্ব করে দেবেন। আর আল্লাহ শক্তি-সামর্থের দিক দিয়ে অত্যন্ত কঠোর এবং কঠিন শাস্তিদাতা”। (সূরা নিসা, আয়াত ৮৪)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণী স্মরণ করুন-
… واعلم أنّ الأمّة لوِ اجتمعت على أن ينفعوك بشيء لم ينفعوك إِلاّ بشيء قد كتبه اللّه لك ولوِ اجتمعوا على أن يضرّوك بشيء لم يضرّوك إِلاّ بشيء قد كتبه اللّه عليك رفِعتِ الأقلام وجفّتِ الصّحف
“জেনে রেখো! যদি সমগ্র মানবজাতি তোমাকে সাহায্য করার জন্য একত্রিত হয় তবুও আল্লাহ তা‘আলা তোমার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন তারা তা থেকে সামান্য পরিমাণ বেশি সাহায্য করতে পারবে না। আর যদি তারা তোমাকে আঘাত করার জন্য একত্রিত হয় তাহলেও আল্লাহ তা‘আলা তোমার জন্য যা নির্ধারণ করেছেন তা ব্যতীত অন্য কোনোভাবে তোমাকে আঘাত করতে পারবে না। কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং পৃষ্ঠাগুলো শুকিয়ে গেছে।” (সুনানে তিরমিযী)
তাই আপনারা রবের কিতাব এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরুন। উদ্ধত জালিমদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে জেগে উঠুন এবং আল্লাহর রাহে জিহাদের দিকে ফিরে আসুন। বিপ্লবের সফর চালিয়ে যেতে আপনাদেরকে উৎসাহিত ও উদ্দীপ্ত করে ইমাম উসামা (রহ.) এই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন।
এই সকল বিদ্রোহের সফলতা লাভের পূর্বেই সমাপ্তি অথবা পথপরিবর্তনের ব্যাপারে আপনাদেরকে সতর্ক করে গেছেন এবং যেভাবেই হোক না কেন তিনি একটি আহ্বানকে যৌক্তিকভাবে বুঝিয়ে ছিলেন এবং সুন্দর বাচনভঙ্গিতে উপস্থাপন করেছিলেন। যেটা সম্ভবত কখনোই পূর্ণতা লাভ করত না, যদি এই উম্মাহকে সুরক্ষার একটি শক্তি না থাকত। আর সেই শক্তি যেটা আমাদের উম্মাহর নির্ধারিত গন্তব্য পথে তাঁর সফরকে সুরক্ষিত করতে পারে তা আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া অন্য কিছু নয়। যদি জিহাদ না থাকত তাহলে উম্মাহকে পেছনে হটাতে শত্রুরা বারবার আক্রমণ করত; এ উম্মাহ ধুঁকে ধুঁকে মরত কিন্তু প্রতিরোধ করতে পারতো না। শেষ অবধি আমাদের ধর্মে আল্লাহর রাহে জিহাদ একটি নির্ধারিত হুকুম। এটি তাদের জন্য সম্মান এবং স্বাধীনতার অর্থ বহন করে যারা একে গ্রহণ করেছে, আর তাদের জন্য অবমাননা ও অসম্মান, যারা একে পরিত্যাগ করেছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
إِذا تبايعتم بِالعِينةِ ، وأخذتم أذناب البقرِ، ورضِيتم بِالزّرعِ، وتركتم الجِهاد، سلّط اللّه عليكم ذلًّا لا ينزِعه حتّى ترجِعوا إِلى دِينِكم
“যখন তোমরা সুদী লেনদেনে জড়িয়ে পড়বে, গরুর লেজ ধরে রাখবে (অর্থাৎ নিজেকে দুনিয়াবী কাজ কর্মে ব্যস্ত রাখা। যেমন পশুপাখি লালনপালন), কৃষিকাজ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে এবং জিহাদ পরিত্যাগ করবে তখন আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর লাঞ্চনা চাপিয়ে দেবেন, যেটা তিনি লাঘব করবেন না ততদিন পর্যন্ত যতদিন পর্যন্ত না তোমরা স্বীয় দ্বীনে (জিহাদে) ফিরে আসবে।”
আরব বসন্ত বিপ্লব-স্বাধীনতা-সম্মানের বার্তা নিয়ে এসেছিল, তবে উম্মাহ নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য একটি প্রতিরক্ষা বাহিনী রাখেনি এবং রাখেনি একটি ধারালো তরবারিও, তাই শত্রুরা প্রচণ্ড শক্তিতে আঘাত করে তাকে পথচ্যুত করে দিয়েছে।
হে নির্যাতিত মুসলিম উম্মাহ! নির্যাতন এবং অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে জেগে উঠুন। আমেরিকার এজেন্টদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করুন, তাদেরকে উৎখাত করতে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করুন এবং কল্যাণের শরিয়াহকে প্রতিষ্ঠিত করুন। কেননা তারা বুঝে না শান্তির ভাষা, আর না তাদের সাথে শান্তির ব্যবহার করা যায়। অস্ত্র ব্যতীত অন্য কোনো কিছুই তাদের বিরুদ্ধে উপযোগী নয় এবং আল্লাহর রাহে জিহাদ ছাড়া আর কোনো কিছু তাদের অন্তরে ভয়ের সঞ্চার করতে পারে না, কেননা একটি লোহাকে কেবল একটি লোহার মাধ্যমেই ভোঁতা করা যায়।
যে বিদ্রোহে আমরা উম্মাহকে আহ্বান করছি, সেটাতে সফলতার প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহ অবশ্যই থাকতে হবে। প্রথমে ভাবনা এবং সচেতনতার প্রসারে বিপ্লব ঘটাতে হবে, যেন জনসাধারণ পরবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুত থাকে। যেন তাদের জানা থাকে যে, কেন তাদের অবশ্যই বিদ্রোহ করতে হবে এবং কখন বিদ্রোহ করবে। তাদের চূড়ান্ত গন্তব্য সম্পর্কে অবশ্যই স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।
প্রথম প্রশ্নটির উত্তর হলো- মুসলিম জনসাধারণ আল্লাহর একত্ববাদে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করে বিদ্রোহ শুরু করবে এবং সম্পূর্ণ সার্বভৌমত্ব ইসলামি শরিয়তে ফিরিয়ে আনতে হবে। একে হেফাজত করবে শাসক কর্তৃপক্ষ, আর প্রত্যেক পদ্ধতি ও বিধানের জন্য দলিলের একটি পয়েন্ট স্থাপন করবে। মুসলিম জনসাধারণ বিদ্রোহ করবে শিরক বা ‘বহুইশ্বরবাদ’ ধ্বংস করার জন্য। অযৌক্তিক মানবরচিত আইনের মাধ্যমে শিরকের যে শাসন চলছে, তা উৎখাত করার জন্য। এই সকল মানবরচিত আইন দূর করবে তাওহীদের ন্যায়পরায়ণতা দিয়ে আর ইসলামি শরিয়ত পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। নিপীড়িত মুসলিম জনতা বিদ্রোহ করবে যখন তারা বুঝতে পারবে ইসলাম এবং ক্রুসেডের মাঝে দ্বন্দের বাস্তবতা এবং আরো বুঝবে যে, নির্ধারিত বিজয় কেবল তখনই অর্জিত হবে যখন অভ্যন্তরীণ শত্রু এবং তাদের ক্রুসেডার প্রভুকে পরাজিত করা সম্ভব হবে।
মুসলিম জনতা বর্তমান দুর্নীতি-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। আমাদের মহৎ এবং মহানুভব শরিয়াহ হতে তাদের বিচ্যুতির পর থেকে পশ্চিমা ক্রুসেডারদের আধিপত্য, বহুবিস্তৃত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক দুর্নীতি, সামাজিক অবিচার, অত্যাচার এবং নিপীড়ন দিনদিন বেড়েই চলছে।
মুসলিম জনতা বিদ্রোহ করবে একটি শিষ্টাচারসম্মত স্বাধীনতা এবং সম্মানের জীবনে বসবাস করতে, আসমানী বিচার-নির্ভর দয়াশীল ছায়ায় জীবনযাপন করতে, যেখাতে থাকবে না সাদা এবং কালোর প্রতি অনুগ্রহে কোনো প্রকার বৈষম্য, থাকবে না গরীবের বিরুদ্ধে ধনীর নিপীড়ন। তবে পার্থক্য থাকবে ধার্মিকতার ভিত্তিতে, যেখানে দুর্বল এবং নিপীড়িতরা হবে শক্তিশালী ও সম্মানিত, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আর শক্তিশালী জালিমরা হবে দুর্বল এবং লাঞ্চিত, যতক্ষণ পর্যন্ত না সেই অধিকার ফিরিয়ে দেবে, যা সে অন্যায়ভাবে জবরদখল করেছিল। আসমানী ন্যায়বিচারের বিধান যেটা পরামর্শকে করে মানদণ্ড, উম্মাহকে শাসক থেকে হিসাব নিতে সুযোগ দেয়, কল্যাণ ও মঙ্গলের বিস্তার ঘটায়, আর নিশ্চিত করে সাম্প্রদায়িক বন্ধনের বিশুদ্ধতা, সততা ও শক্তিমত্তার।
মুসলিম জনসাধারণ বিদ্রোহ করবে যখন তারা বুঝতে পারবে যে, তাদের বিদ্রোহ সততা, পবিত্র উদ্দেশ্য, মহৎ লক্ষ্য এবং আল্লাহর রাহে জিহাদের মর্যাদায় উন্নীত হবে, যেটা এই পৃথিবীতে সম্মান আর আখিরাতে বিশাল সফলতা।
আর দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, দুটি কল্যাণের একটি হলো এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারীদের গন্তব্য। যেমনটি মহামান্বিত রব জানিয়েছেন- “বিজয়, যা তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর ফলাফলস্বরূপ তারা উপভোগ করে এবং তাদের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন। অথবা আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণ করার মাধ্যমে উপভোগ করে”। নির্ধারিত বিজয় অর্জন করতে হলে উম্মাহকে একটি কঠিন পথ অতিক্রম করতে হবে। যখন উম্মাহর এই বীরেরা ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া ছেড়ে সবচেয়ে প্রিয় সঙ্গী ‘আল্লাহ’র কাছে চলে যাবে, যেখানে তাদের জন্য এমন কিছু অপেক্ষা করছে, যা কোনো চোখ কখনো দেখেনি, কোনো কান কখনো শোনেনি, আর না কোনো মানবহৃদয় তা কল্পনা করতে পারে।
এই জাগরণ আল্লাহর রাহে জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াকে আবশ্যক করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন-
﴿وأعِدّوا لهم ما استطعتم مِن قوّة﴾
“এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নাও যাই তোমরা পার।” (সূরা আনফাল, আয়াত ৬০)
এবং তিনি আরও বলেছেন-
﴿ولو أرادوا الخروج لأعدّوا له عدّةً﴾
“আর যদি তারা সামনে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা করত, তবে তারা কিছু না কিছু সরঞ্জাম অবশ্যই সংগ্রহ করত।” (সূরা তাওবা, আয়াত ৪৬)
কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল লোকজন এবং সাধারণ মুসলিম জনতার মাঝে বোঝাপড়া জনগণকে উদ্দীপ্ত-উৎসাহিত করতে এবং একটি গণজাগরণের জন্য তাদেরকে প্রস্তুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একটি সফল বিদ্রোহের উপায় হলো- তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের ব্যাপারে জনতার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, যা একজন মহাজ্ঞানীর শরিয়তের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।
যুবকদেরকে শারীরিকভাবে প্রস্তুত করতে সামরিক প্রশিক্ষণ এবং যুদ্ধ বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এটা হতে পারে তাদেরকে কোনো দল বা ব্যক্তিগতভাবে জিহাদের ময়দানে পাঠানোর মাধ্যমে, যেন তারা যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। আর এটি চালিয়ে যেতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয় এবং জনতা একটি বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হয়। যেন একটি বিদ্রোহের স্ফুলিঙ্গ চূড়ান্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে, এটির আগ্নেয়গিরির মতো জাগরণ যেন জালিমদেরকে অপসারিত করতে পারে; অত্যাচার, অবিচার এবং অবমাননা থেকে জনসাধারণকে মুক্ত করে আল্লাহর শরিয়াহ কায়েম করতে পারে। স্বাধীনতা অনেক মূল্যবান, এটির দাম অত্যাধিক। স্বাধীনতা একটি ব্যালট বাক্সে মূল্যহীন কাগজের কতগুলো টুকরো দিয়ে অর্জন করা যায় না, আর না বহুইশ্বরবাদী বা শিরকি পার্লামেন্টে যোগদান করে করা যায়, যেটা মানবরচিত আইন দ্বারা পরিচালিত। স্বাধীনতা অর্জিত হবে চূড়ান্ত উদারতা, নিঃস্বার্থ উৎসর্গ, জিহাদ এবং শাহাদাতের মাধ্যমে। এক জামাআত শহীদ হয়ে যায়, আর এর বিনিময়ে উম্মত আযাদ হয়ে যায়।
وقفتم بين موت أو حياة فإِن رمتم نعيم الدهرِ فاشقوا
ومن يسقي ويشرب بِالمنايا إِذا الأحرار لم يسقوا ويسقوا
ولا يبني الممالِك كالضحايا ولا يدني الحقوق ولا يحِق
ففي القتلى لِأجيال حياة وفي الأسرى فِدىً لهمو وعِتق
ولِلحريةِ الحمراءِ باب بِكل يد مضرجة يدق
“তোমরা মরণ ও জীবনের মাঝখানে দাড়িয়ে আছো! যদি তোমরা খুশি ও আনন্দের কামনাকারী হও, তাহলে খুব মেহনত কর!
কে এমন রয়েছে, যে নিজেও মৃত্যুর পেয়ালা পান করবে এবং অন্যদেরকেও পান করাবে? যখন স্বাধীন পুরুষ-ই এমন করতে অক্ষম হয়ে গেছে!
সালাতানাতের ভিত্তিসমূহ কমজোর ও অক্ষমদের উপর গড়ে তোলা হয়না! এবং অধিকার ভিক্ষার ন্যায় বণ্টন করা হয়না!
আগামী বংশধরদের জিন্দেগীর ভিত্তি সেই মৃত্যুর মাঝেই সুপ্ত রয়েছে। ইহাই বন্দীদেরকে দুঃখ ও পেরেশানি থেকে আজাদি ও মুক্তির আশা ও ভরসা।
এবং আজাদির পথ রক্তে রঞ্জিত। রক্তে প্রতিটি আঘাতেই ধ্বংস রয়েছে…”
হে সত্যবাদী আলেমগণ! সত্যকে নির্ভীকভাবে ঘোষণায় শাইখ উসামা (রহ.)-এর দৃষ্টান্তকে অনুসরণ করুন!
হে উদার ব্যবসায়ী এবং বণিকগণ! আল্লাহর পথে ব্যয় করার মাধ্যমে তাঁর (শাইখ উসামার) সমান হতে বা তাঁকে ছাড়িয়ে যেতে চেষ্টা করুন!
ওহে মর্যাদাবান যুবক! শাইখ আল্লাহর রাহে জিহাদে তাঁর যৌবন অতিবাহিত করেছেন, তাই তোমাদের যৌবনকে জিহাদে উৎসর্গ কর!
হে মহান মুজাহিদগণ! শাইখের জিহাদ এবং তাঁর পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ বার্তায় উম্মাহর সাথে সম্পর্কের বাস্তবতা খুঁজে পাবেন, তাই তাঁর পথকে অনুসরণ করুন। তাঁর বার্তাকে হেফাজত করুন বিচ্যুতি এবং ভিন্নমুখীকরণ থেকে, চরমপন্থা এবং শৈথিল্য থেকে! আর তাঁর উত্তরাধিকারীদের অন্যতম একজন হোন! যারা শাইখকে ভালবাসেন তাদের প্রতি আমি বলতে পছন্দ করব যে, ‘আপনাদের ভালবাসাকে কাজে পরিণত করুন!
পরিসমাপ্তিতে আমি সাধারণভাবে সকল মুসলিমকে আহ্বান করছি প্রতিশোধ নিতে আমেরিকানদের থেকে, শাইখ (রহ.)-এর হত্যাকারীদের থেকে; বিশেষভাবে তাদের থেকে, যারা এই জঘন্য অপরাধে অংশগ্রহণ করেছিল। আল্লাহ বীর মুজাহিদ হজরত আইয়ুব আল ওয়ার্দাকিকে (ইসলামি ইমারতের মুজাহিদ এবং সৈনিক, আমরা তাঁকে শহীদ হিসেবে মনে করি) পরিচালিত করেছিলেন এবোটাবাদের যুদ্ধের পর আমেরিকানদের কতিপয় থেকে প্রতিশোধ নিতে। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আল্লাহ যেন তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করেন এবং সর্বোচ্চ পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করেন।
পরিশেষে আমি কিছু উৎসাহমূলক কথার উল্লেখ করতে পছন্দ করব এই সকল পঙ্গক্তি দিয়ে-
قولوا لأمريكا بأن سيوفنا *** تزداد في سوح النزال مضاء
ستظل مشرعةً لقطع رقابكم *** ترجو من الرب الكريم عطاء
أظننتم روح الإمام رخيصةً *** وشبابه لا يحسنون بلاء
كلا ورب العرش إن إمامنا *** لا زال ينبض رفعةً وإباء
فدماء أصحاب النبي كفيلة *** ببناء جيل يعشق الهيجاء
يمتد من كابول نور جهاده *** وعلى ربى الأقصى يشع ضياء
والله ناصرنا ولو جمعوا لنا *** من كل مصر فرقةً ولواء
للنار يمضي من تنوش سيوفنا *** وإلى الجنان نزين الشهداء
“আমেরিকাকে বলো যে আমাদের তরবারি আছে, যুদ্ধক্ষেত্রে শুধু তাদের তিক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।
তাঁরা অবিচলিত থাকবে তোদের শিরচ্ছেদ করতে, মহিমান্বিত রবের কাছ থেকে পুরস্কারের আশায়।
তোরা কি চিন্তা করিস যে, ইমামের আত্মার মূল্য সস্তা? আর তাঁর তরুণরা বদলা নিতে সক্ষম হবে না?
না, আরশের প্রতিপালকের কসম! আমাদের ইমাম মর্যাদা এবং প্রতিরোধে জাগিয়ে তুলতে সর্বদা চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গীদের রক্তই যথেষ্ট, একটি প্রজন্মকে জাগিয়ে তুলতে, যারা যুদ্ধকে ভালবাসে।
এই জিহাদের আলো কাবুল থেকে শুরু করে সম্মুখপানের সবকিছু আলোকিত করবে, এর আলোকরশ্মী আল-আকসার পাহাড়গুলোকে করবে উজ্জ্বল এবং দীপ্তিময়।
আল্লাহ আমাদের সাহায্যকারী, এমনকি যদি তারা প্রত্যেক অঞ্চল থেকে আমাদের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়।
আমাদের তরবারি দ্বারা তাদেরকে স্পর্শ করলে তারা জাহান্নামে চলে যাবে। আর জান্নাতের বাগানগুলোর জন্য আমাদের শহীদদেরকে বিদায় দিতে আমরা আদেশ করি”।
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কাজকর্মের উপর সর্বশক্তিমান, কিন্তু অধিকাংশ লোকই তা জানে না। আর আমাদের সর্বশেষ প্রার্থনা হলো এই যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি মহাবিশ্বের প্রতিপালক।
وآخر دعوانا أن الحمد للهِ رب العالمين