পিডিএফ | মোল্লা ওমর (রহিমাহুল্লাহ) এর জীবনী। Life of Mullah Umar (Rahimahullah) PDF
সহস্রাব্দের শেষ মুহূর্ত। দীর্ঘ ১৪ বছরের যুদ্ধ শেষে রুশ ভল্লুকরা বিতাড়িত হওয়ার পরও আফগানের ভাগ্যাকাশ থেকে কালো মেঘ যেন দূর হচ্ছিল না। আফগান জনগণ যাদের নেতৃত্বে কমিউনিস্টদের তাড়িয়ে দিলেন, তাদের মাথায় যেনো ভুত চেপে বসলো।
যে মুজাহিদ কমান্ডাররা এতদিন জালেমের বিরুদ্ধে জিহাদ করে গেলেন, উম্মাহর মাঝে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা জোগালেন, আজ তাদের হাতেই রঞ্জিত হতে লাগলো মজলুমের রক্ত। পরিস্থিতি টা অনেক বেশি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মগের মুল্লুকে পরিণত হয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তান। একেক কমান্ডারের নিয়ন্ত্রণে ছিল একেকটা প্রদেশ। সবাই নিজ এলাকার রাস্তায় রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে স্থানীয় লোকজনের থেকে তুলতো অন্যায় ট্যাক্স। ট্যাক্স উসুলকারীদের চোখে কারো কোন কিছু পছন্দ হয়ে গেলে জোর করে তা রেখে দিত। এমনকি স্ত্রী কিংবা মা-বোনদের নিয়ে সফর করাও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গুম-খুন-ধর্ষণ ছিল নিত্যদিনের বিষয়।
এমন পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানকে একটা ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ খেতাব দেওয়া ছিল স্বাধীন রাষ্ট্রের অবমাননা করার নামান্তর। প্রতিটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাধারণ জনগণের সম্পদ লুটে খাওয়ার চিন্তায় থাকতো সারাক্ষণ।
পরিস্থিতি এতটাই করুণ হয়ে গিয়েছিল যে, কিছু মানুষ বলা শুরু করলো,”এর চেয়ে তো লাল ফৌজের শাসনই ভাল ছিল।” ইসলামবিদ্বেষীদের উস্কানিতে জিহাদ ও মুজাহিদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথা ছড়িয়ে পড়তে লাগলো সমাজে। এ অবস্থায় কেবল আফগান না বরং সারা বিশ্বের মুসলিমরা এমন একটা আন্দোলনের কামনা করছিল, যা বন্ধ করে দিবে এ সকল জুলুম-নির্যাতনের দরজা। রক্ষা করবে জিহাদ ও মুজাহিদীনদের ইজ্জত-সম্মান।
আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের মনের আকুতি শুনলেন। দাঁড়া করিয়ে দিলেন তাঁর এক খাছ বান্দাকে। মোল্লা মোহাম্মদ ওমর রহমাতুল্লাহি আলাইহি। মাত্র ৬ জন সঙ্গী নিয়ে দরসগাহ থেকে তাঁর আন্দোলন শুরু হয়। আল্লাহর সাহায্য আর নুসরতের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। আধুনিকতার নামে দাজ্জালী সভ্যতার এই যুগে যখন সবাই ইসলামকে কাটছাঁট করতে ব্যস্ত, তখন তিনি খেলাফতে রাশেদার আদলে রাষ্ট্র পরিচালনার মাধ্যমে দেখিয়ে দেন ইসলাম সর্বযুগের জন্য একই রকম, অপরিবর্তনীয়। ইসলাম সমাজ কে নিজের অনুগত করে। সমাজের গড্ডালিকা প্রবাহে নিজেকে বিলীন করে দেয় না।
আজ উম্মাহ চরমভাবে পরাজিত। মানসিক দাসত্বের জালে আটকা পড়ে আজ আমাদের সবাই লাঞ্ছনার জীবনকেই গ্রহণ করে নিচ্ছে পরম পাওয়া হিসাবে। ভুলে গিয়েছে নিজেদের অতীত, বীরত্ব আর শৌর্য-বীর্যের ইতিহাস। আজ আমরা চিন্তা করি তাদের একে দেয়া ছকে। তাদের সাজানো ফাঁদে পা দিয়ে আমরা মনে করি বিরাট কৌশলী কাজ করছি। নিজের অজান্তেই আমরা অবদান রেখে যাই জাহিলি ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার কর্মযজ্ঞে। আর সবচেয়ে বড় আফসোসের কথা হল, আমরা আমাদের দুরাবস্থার কথা স্বীকারও করতে চাই না।
উম্মাহর এ ক্রান্তিলগ্নে যারা উম্মাহকে নিয়ে চিন্তা করে, উম্মাহর মুক্তি ত্বরান্বিত করতে চায়, বিজয় স্বপ্ন দেখে, তাদের জন্য মোল্লা ওমরের জীবনী হতে পারে উত্তম আদর্শ। রোম-পারস্য কে পরাভূতকারী পূর্বসূরীদের অনুকরণে কিভাবে আমেরিকা-রাশিয়া কে নাকানি-চুবানি খাওয়াতে হয়, আমাদের তা জানতে হবে। আমাদেরকে বুঝতে হবে, কোন শক্তির বলে এখনো কাফেরদের চোখে চোখ রেখে হুমকি দেয়া যায়। আমাদের জীবনবিধান ইসলামের কোন অংশকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায় তারা।
ভাইজান লিঙ্ক তো কাজ করেনা
যদি নতুন করে লিঙ্ক দিতেন তাহলে খুব উপকৃত হতাম