অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আন নাসর]আন-নাসর মিডিয়াইতিহাস- ঐতিহ্যকাশ্মীর আর্কাইভনির্বাচিতবই ও রিসালাহবই ও রিসালাহ [আন নাসর]বাংলা প্রকাশনামিডিয়াশাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

AQ || কাশ্মীরকে ভুলে যেও না! – শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ || [বাংলা ডাবিং ও সাবটাইটেল]

আলহামদু লিল্লাহ, ছুম্মা আলহামদু লিল্লাহ…
আন নাসর মিডিয়া পরিবেশিত

শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ বার্তা

কাশ্মীরকে ভুলে যেও না!

[বাংলা ডাবিং ও সাবটাইটেল]

ডাউনলোড করুন

ট্রেইলার ভিডিও
https://banglafiles.net/index.php/s/9WYETgfmKniLcZx
https://www.file-upload.com/j7hglxbmm3fq

ডাবিং ভিডিও

[১০৮০ রেজুলেশন-২২৫ এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/GRXtSNjAQ9kTnYB
https://archive.org/download/kashmir1080hdbangladubing/Kashmir_1080HD_Bangla_Dubing.mp4
https://www.file-upload.com/3lz42hagvo5e

[৭২০ রেজুলেশন-২০৩ এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/CNja5qATng8MzXN
https://archive.org/download/kashmir720bangladubing/Kashmir_720_Bangla_Dubing.mp4
https://www.file-upload.com/ytue4dtivxtw

[৪৮০ রেজুলেশন-১১৩ এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/zCaSDYfMMki9Rb7
https://archive.org/download/kashmir720bangladubing/Kashmir_480_Bangla_Dubing.mp4
https://www.file-upload.com/42uwmods80v6

[অডিও -১৭ এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/tcKXq9e9jiSSgJF
https://archive.org/download/kashmir1080hdbangladubing/Kashmir_1080HD.mp3
https://www.file-upload.com/pgf4d1cp64w0
http://www.mediafire.com/file/1zypjlilyln6im2/Kashmir_1080HD.mp3/file

সাবটাইটেল ভিডিও

[১০৮০ রেজুলেশন-১৭৩ এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/ymbp4CnSojCnDXT
https://archive.org/download/kashmir1080hdbangladubing/Kashmir_1080HD_SubTitle.mp4
https://www.file-upload.com/y3vjoubdhxoh

[৭২০ রেজুলেশন-১৪৬ এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/i8PgPNbLnegCFYL
https://archive.org/download/kashmir720bangladubing/Kashmir_720_SubTitle.mp4
https://www.file-upload.com/69xmdq18r1f9

[৪৮০ রেজুলেশন-৮২ এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/JKbcazs9DxFpLX3
https://archive.org/download/kashmir720bangladubing/Kashmir_480_SubTitle.mp4
https://www.file-upload.com/15tnhre1mx7r

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [১০১ কেবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/koGTNr9brzepeia
https://archive.org/download/kashmir720bangladubing/kashmir%20bangla.docx
https://www.file-upload.com/3owt0napknva

পিডিএফ ডাউনলোড করুন [২৫১ কেবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/3YiFmT94rPsJt8E
https://archive.org/download/kashmir720bangladubing/kashmir%20bangla.pdf
https://www.file-upload.com/3h12fgrl9i05

ব্যানার ডাউনলোড করুন [1.8এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/fXFk4C7zPswNmzG
https://www.file-upload.com/sg6mdcl9vrey

————-

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية (بنغلاديش)
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]

————————-

কাশ্মীরকে ভুলে যেও না

শাইখ আইমান আয-যাওহিরী হাফিজাহুল্লাহ

 

بسم الله  والحمد لله  والصلاة  والسلام على رسول الله  وآله وصحبه ومن والاه

বিশ্বের প্রতিটি স্থানে অবস্থানরত আমার মুসলিম ভাইগণ,

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু

আজ আমি আপনাদের সামনে ৭০ বছরের অধিক সময় ধরে চলে আসা একটি ট্র্যাজিডি নিয় কথা বলবো। এ কথা কাশ্মিরের মুসলমানদের দুঃখ ও কষ্ট নিয়ে। তারা বহুকাল ধরে হিন্দুদের অত্যাচার ও নির্যাতনের তলে নিষ্পেষিত হয়ে আসছে! তাদের এ দুঃখ-কষ্ট হিন্দুদের একার সৃষ্টি নয়। বরং একদিকে হিন্দুদের এ জুলুম-অত্যাচার অন্যদিকে সেক্যুলার পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতা; দুদিক থেকেই তারা নিষ্পেষিত হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে।

দুঃখ-কষ্টের এ এক নৃশংস সিলসিলা! আমাদের কর্তব্য, তাদের দুঃখে দুঃখিত হওয়া, তাদের কষ্টে ব্যাথাতুর হওয়া। আমাদের উপর আবশ্যক, তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। আমাদের দায়িত্ব, আমাদের যা আছে, সবটা দিয়ে তাদের কাশ্মীরের মুসলিমদের সাহায্য করা, তাদের শক্তিশালী করা।

নিশ্চয়ই তাদের ব্যাথা আমাদেরই ব্যাথা। তাদের শরীরের লাগা প্রতিটি আঘাত, আমাদের শরীরে ক্ষত তৈরি করে। তাদের উপর চলা এ জুলুম-নির্যাতন আমাদেরই উপর চলা জুলুম-নির্যাতন। তাদের মান-সম্মান ধূলিস্মাৎ হওয়ার অর্থ আমাদের মান-সম্মান ধূলিস্মাৎ হওয়া। কাশ্মীর, আমাদের হৃদয়ের জীবন্ত দগদগে একটি ক্ষতের নাম। যে ক্ষত থেকে অনবরত রক্ত ঝরে যাচ্ছে। আমাদের এ হৃদয়ে এমন কত ক্ষতই না ব্যাথা দিয়ে যাচ্ছে!

এ কথাটি স্পষ্ট করে দেয়া আমাদের উপর কর্তব্য যে, কাশ্মীরের উপর যে কোনো ধরণের জুলুম-নির্যাতন করার অর্থ আমাদের উপর জুলুম-নির্যাতন। কাশ্মীরের উপর করা প্রতিটি সীমালংঘন আমাদের উপর করা সীমালংঘন। যেমনিভাবে পৃথিবীর বুকে যে কোনো জায়গাতে মুসলিমদের উপর সীমালংঘন করা যেন কাশ্মীরের উপর সীমালংঘন করা।

­আমরা এক উম্মাহ। এসব ঠুনকো ভৌগোলিক-সীমানা আমাদের আলাদা করতে সক্ষম নয়। জাতীয়বাদী বিবাদ আমাদের মাঝে বিভেদ ঘটাতে সমর্থ্য নয়।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّ هَٰذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاعْبُدُونِ

‘এই যে তোমাদের জাতি, এটাতো একই জাতি এবং আমিই তোমাদের রাব্ব, অতএব আমার ইবাদাত কর।’ – (সুরা আম্বিয়া : ৯২)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

المُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا وَشَبَّكَ بَيْنَ أَصَابِعِهِ

‘এক মুমিন আরেক মুমিনের জন্য প্রাচীরের মত, যার এক অংশ অন্য অংশকে শক্তিশালী করে। (এ বলে রাসুল সা: তাঁর দুই হাতের আঙ্গুলগুলো একটার মধ্যে আরেকটা প্রবেশ করে মিলিয়ে দেখালেন।)’

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

الْمُسْلِمُونَ تَتَكَافَأُ دِمَاؤُهُمْ. يَسْعَى بِذِمَّتِهِمْ أَدْنَاهُمْ، وَيَرُدُّ عَلَيْهِمْ أَقْصَاهُمْ، وَهُمْ يَدٌ عَلَى مَنْ سِوَاهُمْ

“সকল মুসলমানের রক্তের পবিত্রতা সমান। একজন সাধারণ মুসলিমও যদি কোনো ব্যক্তিকে নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেয়, তবে তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করা সকলের দায়িত্বে বর্তায়। এবং তাদের মধ্যে সবচেয়ে দূরতম ব্যাক্তিটিও তাদের প্রত্যেকের ডাকে সাড়া দেয়। এবং তাঁরা তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে এক বাহুর ন্যায়।’’

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

مَثَلُ الْمُؤْمِنِينَ فِي تَوَادِّهِمْ، وَتَرَاحُمِهِمْ، وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى

“পারস্পরিক ভালবাসা, দয়ার্দ্রতা ও সহায়তার ক্ষেত্রে মুসলমানদের দৃষ্টান্ত হলো একটি দেহের ন্যায়; যদি দেহের কোন অঙ্গ ব্যাথার অভিযোগ করে, তবে পুরো দেহ রাত-জাগরণ ও জোরের মাধ্যমে সে ব্যাথায় সাড়া দেয়।’’

এই কারনেই আফগানিস্তান থেকে রাশিয়ানদের বিতাড়িত করার পর আরব মুজাহিদরা কাশ্মীরের দিকে অগ্রসর হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, পাকিস্তান সরকার এবং  আমেরিকার আজ্ঞাবহ তাদের সেনাবাহিনী মুজাহিদদের বিরুদ্ধে ওঁৎ পেতে অপেক্ষা করছিল।

রুশ ভল্লুকদের চলে যাওয়ার পর পাকিস্তানি সরকার ও সেনাবাহিনী আরব মুজাহিদদের সাথে খুবই অমর্যাদাকর ও কলঙ্কজনক আচরণ করেছে। এরপর তারা একই ধরণের কলঙ্কজনক ও বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ আচরণ করেছে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান, ও ইমরাতে ইসলামিয়ায় থাকা মুহাজির ও মুজাহিদদের সাথে। একই আচরণনীতি তারা অবলম্বন করেছে এবং করছে কাশ্মীরের মুজাহিদদের সাথে।

পাকিস্তানি সরকার ও সেনাবাহিনী নিজদের রাজনৈতিক স্বার্থ ও সুবিধা হাসিলের জন্য মুজাহিদদের ব্যবহার করতে চায়। এরপর স্বার্থ হাসিল হয়ে গেলে তাদের পরিত্যাগ করে বা তাদের বিতাড়িত করে দেয়, দিনশেষে বিশ্বাসঘাতকদের পকেট ঘুষ ও হারাম সম্পদে ভরপুর হয়ে যায় কানায় কানায়।

পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইমারাতে ইসলামিয়া ও মুজাহিদদের বিভিন্ন তথ্য ক্রুসেডারদের সরবরাহ করে তাদের সাহায্য করেছে। এরা আল-কায়েদা ও ইমারাতে ইসলামিয়ার মুজাহিদদের গ্রেফতার করে তাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, এরপর ক্রুসেডারদের হাতে তুলে দিয়েছে মুজাহিদদের। পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থাগুলো হচ্ছে তাদের জেলখানায় অনেক মুজাহিদকে হত্যা করেছে নির্মমভাবে। এসকল গোয়েন্দা সংস্থার আসল পরিচয় হচ্ছে, এরা আমেরিকানদের সেইফ হাউজ থেকে শুরু করে গোপন কারাগারে প্রবেশিধার, লজিস্টিক রুট ও সরঞ্জামসহ বিভিন্ন ধরণের সহায়তা দিয়েছে। ক্রুসেডারদের নিরাপদ রাস্তায় আফগানিস্তান পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে এ সংস্থাগুলো। আর তাদের থেকে ঘুষ নিয়ে নিজদের পকেটে পুরেছে।

এ সংস্থাগুলো ইসলামের সাহায্য-সহযোগিতা করবে, মুসলমানদের প্রতিরক্ষা অথবা মুসলিম ভূমির এক বিঘত হলেও মুক্ত করবে—এগুলো আকাশ কুসুম কল্পনা। ভারতের সাথে তাদের দ্বন্দ্বটি মূলত ভৌগলিক বর্ডারগুলো নিয়ে এবং আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি সেক্যুলারময় সংঘর্ষ।

কিছু মানুষ ধারণা করে আমেরিকান ও পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার মাঝে বেশ পার্থক্য বর্তমান। কিন্তু তাদের মধ্যে ঠিক তেমনি পার্থক্য বিদ্যমান যেমনটি এক ছিঁচকে চোর এবং চোরদের বড় সর্দারের মাঝে থাকে।

চোরদের সর্দার ছিঁচকে চোরকে বলে: আমি তোমাকে অনেক টাকা খাইয়েছি, কিন্তু তুমি এর বিনিময়ে আমার জন্য খুব কমই করেছো।

তখন ছিঁচকে চোর জবাব দেয়: তুমি আমাকে সামান্য টাকা দিয়েছো কিন্তু আমি তোমার জন্য অনেক কিছু করেছি।

তবে, চোরদের সর্দারের সাথে ছিঁচকে চোরের আনুগত্য বজায় থাকে সবসময় এবং অনবরত ছিঁচকে চোর সর্দার-চোরের জন্যই কাজ করে যায়।

পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আমেরিকাকে অভিযোগ করে: তুমি ভারত ও তাদের সংস্থাগুলোকে আমাদের উপর আগ্রাধিকার দিয়ে সীমা অতিক্রম করেছো।

আর আমেরিকানরা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা ও তাদের সেনানায়ককে উত্তর দেয়: আমরা মুসলমানদের হত্যা করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে এবং গোপনে ঘুষ দেওয়ার মাধ্যমে তোমাদের অর্থ প্রদান করেছি, কিন্তু যারা আমাদের ও আমাদের এজেন্টদের হত্যা করছে তোমরা তাদের কিছুই করছো না।

যাই হোক, দুই পক্ষের পারস্পারিক সম্পর্ক ক্রমেই উন্নতিলাভ করতে থাকে। চোরদের এই জোট মূলত মুসলিমদের রক্ত, তাদের শরীয়া, এবং তাদের ইজ্জত নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকে।

এখানে, আমি শরিয়াহের আলোকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ব্যাখ্যা করতে চাই। সেটা হচ্ছে, ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী ইসলামের শত্রুদের মধ্যে পারস্পরিক পার্থক্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে মুসলমানদের এবং মুজাহিদীনদের ফায়দা হাসিল করা জায়েজ … বড় চোর ও ছোট চোরের মাঝে যে মতপার্থক্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে, অথবা পূর্ব (রাশিয়া) এবং পশ্চিম ব্লকের (অ্যামেরিকা) মাঝে মতপার্থক্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে, এগুলো কাজে লাগাতে কোনো অসুবিধে নেই ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী।

তবে, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের হয়ে কর্মরত এ ছিঁচকে চোর গোয়েন্দাসংস্থাগুলোর কাছে আত্মসমর্পণ করা, নিজদের গোপন বিষয়, নিজেদের লক্ষ্য, নিজেদের সিদ্ধান্ত তাদের কাছে নিবেদন করা একটি নিশ্চিত দুর্যোগ থেকে কোন অংশে কম নয় এবং এটি স্পষ্টভাবে শরীয়াহর লঙ্ঘন, এটি সুস্পষ্টভাবে শরীয়াহ নিষিদ্ধ কাজ।

পাকিস্তানী সরকার এবং সেনাবাহিনী যদি দাবী করে থাকে যে তারা আমেরিকান পলিসির বিরুদ্ধে কাজ করে, এবং তারা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সরকার পরিচালনা করছে, তবে আমি তাদের কাছে দুটি সাধারণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চাই:

পাকিস্তান সরকার ও তার সেনাবাহিনী কি পারবে, পাকিস্তানের আকাশসীমায় মার্কিন ড্রোন ওড়া বন্ধ করতে?

পাকিস্তান সরকার ও তার সেনাবাহিনী কি পারবে, পাকিস্তানের ভূখণ্ড দিয়ে পরিচালিত আফগানিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন সেনাবাহিনীর নির্বিচ্ছিন্ন রসদ সরবরাহ বন্ধ করতে?

পাকিস্তান সরকার এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কাশ্মীরকে মুক্ত করার ব্যাপারে বিশ্বস্ত নয়। কারণ তাদের ইতিহাস ব্যর্থতা, পরাজয়, দুর্নীতিতে ভরা। বরং তারা তো বিশ্বাসঘাতকতা করে নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বেশির চেয়ে বেশি তারা এটা আশা করে যে, তারা বিগত ৭০ বছরের ক্ষয়ে যাওয়া পাকিস্তানের দুর্নীতি ও দুঃখ-কষ্ট তারা কাশ্মীরে রপ্তানী করতে পারবে।

বিধিপ্রণয়নগত বিশৃংখলা। রাজনৈতিক বিশৃংখলা। নৈতিক বিশৃংখলা। আর্থিক বিশৃংখলা। এসবে সম্মিলিত এক যৌথ প্যাকেজ!

মুসলমানদের প্রতিরক্ষা প্রসঙ্গে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কালো উপাখ্যানে পরিপূর্ণ। এ হলো সেই সেনাবাহিনী; যারা  আফগানিস্তানকে ধ্বংস করতে আমেরিকাকে সাহায্য করেছিল, যারা বাংলাদেশকে ভারতের কাছে সমর্পণ করেছিলো, যারা বেলুচিস্তানের মুসলিমদের গণহত্যা করেছিলো, যারা ওয়াজিরিস্তান ও সোয়াতের মুসলমানদেরকে তাদের গৃহ থেকে  বহিষ্কার করেছিল। এমন বাহিনীকে কোন জায়গায় মুসলমানদের প্রতীরক্ষা করবে এ আশ্বাস করা যায় না তাদের উপর।

অতএব, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জিহাদ নয় বরং কাশ্মীরের জিহাদকে “আল্লাহর পথের জিহাদে” পরিণত করার জন্য প্রথম জরুরী পদক্ষেপ হলো: পাকিস্তান-গোয়েন্দা সংস্থার থাবা থেকে কাশ্মীরের জিহাদকে মুক্ত করা।

এই মুক্তি অর্জনের পর, শরিয়তের নীতিমালা দ্বারা পরিচালিত  মুক্ত ও স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে মুজাহিদিনকে তাদের জিহাদের পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।

আমি মনে করি যে, কাশ্মিরে মুজাহিদীন-এ পর্যায়ে ভারতীয় সেনা ও সরকারের উপর অবিচলিত বোমা হামলার জন্য এককভাবে মনোযোগ দেওয়া উচিত। যাতে করে ভারতীয়দের হত্যা করা যায়, ভারতীয় অর্থনীতিতে ধ্বস নামানো যায়, ভারতকে তার জনশক্তি ও সরঞ্জামগুলোতে স্থায়ী ক্ষতি ভোগ করানো যায়। আর এর উপরে মুজাহিদিনকে ধৈর্য ধরে চলতে হবে। সাথে সাথে তাদের ইসলামি বিশ্বের মুসলিম ভাইদের সাথে যোগাযোগের শক্তিশালী চ্যানেল স্থাপন করতে হবে।

কাশ্মিরের মুজাহিদিনকে জিহাদের বিভিন্ন ময়দানের জিহাদী জাগরণ থেকে শিখতে হবে, উপকৃত হতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন ময়দানের মুজাহিদদের সাথে তাদের অবশ্যই যোগাযোগ করতে হবে। এবং এটা নিশ্চিত করতে হবে যেন তাদের আহবান সবার কাছে পৌঁছায়, যাতে পুরো উম্মাহর মাঝে ব্যাপকভাবে কাশ্মীরের জিহাদ বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয় এবং এর ধারাবাহিক অগ্রগতি সফলতা লাভ করে।

অবশ্যই পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ হলো, পাকিস্তানে আমেরিকার প্রধান সাহায্যকারী। তারা মুজাহিদিনকে এই পদ্ধতিতে কাজ করতে দেবে না কিছুতেই। তার চাইবে মুজাহিদরা যেন চিরতরে রাজনৈতিক দরকষাকষির হাতিয়ার হিসাবে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কাশ্মীর, পাকিস্তান, এবং বিশ্বজুড়ে সকল মুজাহিদদের অবশ্যই শরীয়াহর আলোকে তাদের জিহাদ পরিচালনা করা উচিত এবং এটা খেয়াল রাখা উচিত, যেন কখনো মুসলমানদের পবিত্রতা লঙ্ঘন না হয়ে পড়ে।

কোন ভুল সঙ্ঘটিত হয়ে গেলে অবশ্যই তা সংশোধন করতে হবে। মুসলিমদের রক্ত ও তাদের সম্মানের বিষয়টি হালকাভাবে বিবেচনা করা যাবে না। পিতা মুরতাদ হওয়ার কারণে পুত্রকে শাস্তি দেওয়া অথবা  নিছক সন্দেহের ভিত্তিতে অথবা দূর্বল সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নিরাপরাধ লোককে হত্যা কোনো ভাবেই হতে দেয়া যাবে না। মসজিদ, মুসলমানদের বাজার এবং সমাবেশের জায়গাও এলোপাতাড়ি বিস্ফোরণের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে না।

এই অপরাধগুলো মুজাহিদদের ভাবমূর্তি বিকৃত করে এবং মুসলিম জনগণের দৃষ্টিভঙ্গিকে মূল বিষয়গুলি থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং তারা স্থানীয় সরকার ও ক্রুসেডার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার প্রপাগ্যান্ডার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী, এর গোয়েন্দা সংস্থা এবং তার নিয়ন্ত্রণাধীন মিডিয়া জিহাদকে বিকৃত করতে এবং লক্ষ লক্ষ মুসলমানের বিরুদ্ধে সংঘটিত অসংখ্য অপরাধ ও নৃশংসতাকে যৌক্তিক প্রমাণ করার জন্য এই বিচ্যুতিগুলি কাজে লাগায়।

শরয়ী নির্দেশনা মেনে না চলা একটি মুজাহিদ দলকে হত্যাকারী ও মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহরণে জড়িত ডাকাত দলে পরিণত করে।

দুর্ভাগ্যবশত, এই সকল বিভ্রান্তি ও ব্যাধি কিছু মুজাহিদিনের মাঝে প্রবেশ করেছে। তাই সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের মাধ্যমে এ ব্যাপারটি মোকাবিলা করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

অন্য সবার আগে, সম্মানিত আলিমদের উপর এটি বাধ্যতামূলক। উম্মাহর কাছে সত্যকে স্পষ্ট করা, বিশৃংখলাকারীদের উত্থাপিত আপত্তির অপনোদন করা তাদের কর্তব্য। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও পাকিস্তানের রাষ্ট্রনীতি ও রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে শরিয়াহ সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত এবং পাকিস্তানের সংবিধান ও তার  বিচারব্যবস্থা শরীয়াহর সাথে স্পষ্ট সাংঘর্ষিক এ কথা মুসলিম সাধারণের কাছে ব্যাখ্যা করা আলিমদের কর্তব্য।

সম্মানিত উলামায়ে কেরাম!

উম্মাহকে স্পষ্ট জানিয়ে দিন, যেমনিভাবে তিন দশক আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জিহাদ ফরজ ছিল; অনুরূপভাবে আফগানিস্তানে আমেরিকার বিরুদ্ধেও জিহাদ আজ ফরজে আইন। এবং মুজাহিদীন বা যারা মুজাহিদিনের সাথে যুক্ত যদিও তারাও কিছু ভুল করে অথবা এমনকি অপরাধও করে- তথাপি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থা লাখ লাখ মুসলমানের বিরুদ্ধে হাজার হাজার জঘন্য অপরাধ করেছে।

 

সম্মানিত উলামায়ে কেরাম!

উম্মাহকে স্পষ্ট জানিয়ে দিন, মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে কাফেরদের সাহায্য করবে, সে তাদের মতই কাফের। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলছেন,

وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ

তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। -সুরা মায়িদা :৫১

উম্মাহকে স্পষ্ট জানিয়ে দিন যে, জিহাদ ও দাওয়াহ ব্যতীত ইসলাম কখনই বিজয়ী হবে না। মিথ্যা গণতান্ত্রিক খেল-তামাসার মাধ্যমে কখনও ইসলামের বিজয় সম্ভব নয়। এ গণতন্ত্রই উম্মাহকে দূরে ঠেলে দিয়েছে শরীয়াহ থেকে।

উম্মাহকে স্পষ্ট বলে দিন যে, আমরা এক উম্মাহ। আমাদের জিহাদ অভিন্ন জিহাদ। ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানকে সহায়তা করা প্রত্যেক আফগানীর উপর ফরজে আইন, এভাবে তাদের প্রতিবেশি এলাকার মুসলমানদের উপরও ফরজে আইন এবং এভাবে সকল মুসলিমদের উপর ফরজে আইন। অ্যামেরিকা ও তার দোসরদের পরাজিত করার মতো পর্যাপ্ত শক্তি অর্জন না হওয়া পর্যন্ত ফরজে আইন হওয়ার এ মাসআলা বৃত্তাকারে সকলের উপর বর্তিত হবে।

উম্মাহকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে হবে যে, কাশ্মির, ফিলিপাইন, চেচনিয়া, মধ্য এশিয়া, ইরাক, সিরিয়া, আরব উপদ্বীপ, সোমালিয়া, ইসলামী মাগরেব এবং তুর্কিস্তানের জিহাদ হলো সকল মুসলমানের উপর ফরজে আইন। যতক্ষণ মুসলিমদের এলাকাগুলো থেকে আগ্রাসী কাফেরদের বিতাড়িত করার মতো পর্যাপ্ত শক্তি অর্জন না হচ্ছে ততক্ষণ এ বিধান বজায় থাকবে।

কাশ্মীরে আমাদের ভাইদের বলবো, আল্লাহ এই সত্যের সাক্ষী যে, আমরা আপনাদের ভুলে যাইনি এবং আমাদের সর্বোচ্চ সাধ্য নিয়ে আমরা আপনাদের পাশে আছি। এমনকি যদি দুআই হয় আমাদের একমাত্র সাধ্য, তবে তা-ই।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রদত্ত সুসংবাদে আনন্দিত হোন,

عِصَابَتَانِ مِنْ أُمَّتِي أَحْرَزَهُمُ اللهُ مِنَ النَّارِ: عِصَابَةٌ تَغْزُو الْهِنْدَ، وَعِصَابَةٌ تَكُونُ مَعَ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ

“আল্লাহ আমার উম্মতের দুটি দলকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিয়েছেন: একটি দল হিন্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং অন্যদল ঈসা বিন মরয়িমের সাথী হবে।”

وآخر دعوانا أن الحمد لله  رب العالمين، وصلى الله على سيدنا محمد وآله وصحبه وسلم. والسلام عليكم ورحمة الله  وبركاته

 

 

মূল- আস-সাহাব মিডিয়া উপমহাদেশ

অনুবাদ- আন নাসর মিডিয়া 

জিলকদ ১৪৪০ হিজরী মোতাবেক জুলাই ২০১৯ খৃষ্টাব্দ

Related Articles

২ Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − three =

Back to top button