আরব বিশ্বনির্বাচিতশামসংবাদ

‘‘ওয়া হাররিদিল মু’মিনীন’ অপারেশন রুমের পদক্ষেপের প্রতি সমর্থনের বিষয়ে যৌথ বিবৃতি!

- আব্দুল্লাহ আল-মুহাইসিনী, মুসলিহ আল-উলওয়ানী

শামের জিহাদে চলমান ফেতনাকে আরো ভয়াবহ রূপ দিয়েছে কিছু মুজাহিদ গ্রুপের নিজেদের মাঝে যুদ্ধ শুরু করা। তারা আগ্রাসী রাশিয়া ও আসাদ বাহিনীর অন্যান্য মিত্রদের বিরুদ্ধে নমনীয়তা অবলম্বন করে পরস্পরকে হত্যা করা শুরু করেছে। তাই, পুনরায় যেন তাওহীদের পতাকা তলে এসে শামের জিহাদকে বেগবান করা যায়, সে বিষয়ে আল-কায়েদার সিরিয়ান শাখা তানযিম হুররাস আদ-দ্বীনের নেতৃত্বে পরিচালিত ‘ওয়া হাররিদিল মু’মিনীন’ অপারেশন রুমের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। শামের জিহাদে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মুজাহিদ শায়খ আব্দুল্লাহ আল-মুহাইসিনী হাফিজাহুল্লাহ এবং শায়খ মুসলিহ আল-উলইয়ানী হাফিজাহুল্লাহ  ‘ওয়া হাররিদিল মু’মিনীন’ অপারেশন কক্ষের সেই বার্তাটিকে সমর্থন করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। নিচে তাদের যৌথ বিবৃতিটির বাংলা অনুবাদ পেশ করা হলো-

 

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য, যিনি বিশ্বজাহানের প্রতিপালক। শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূল ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং সাহাবীদের ওপর।
বর্তমানে পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল গুরুতর অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। জালিম আসাদকে স্বীকৃতি দিতে রাষ্ট্রগুলোর দৌড়-ঝাঁপ, এই(জিহাদী) বিপ্লবকে নস্যাৎ করে দিতে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর চুক্তি, আর (মুজাহিদীনের মাঝে) বিভক্তির সূচনা… সবমিলিয়ে এক চরম অবস্থায় পৌঁছেছে এ অঞ্চল।
এরূপ ঘোলাটে পরিস্থিতিতে ওয়া হাররিদিল মুমিনীন অপারেশন রুমের পক্ষ থেকে একটি উত্তম পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারা আহ্বান জানিয়েছেন,  আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার আইনের সামনে সকল দল নিজেদেরকে পেশ করবে এবং শরীয়ার নীতি অনুসারে সবাই দৃঢ়ভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। এই মতটি(প্রস্তাবটি) বিশেষভাবে মুজাহিদীনের জন্য আবশ্যক। মোটকথা, আমরা তো আল্লাহর আইনকে বাস্তবায়িত করতেই যুদ্ধ করছি!
আজ আমরা নিজেদেরকে পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিবো এবং আমাদের ভাইদের মধ্য থেকে উভয় পক্ষের সামনে সুস্পষ্ট প্রমাণ, পবিত্র আয়াত পেশ করবো। যেখানে আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন-
وَإِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ إِذَا فَرِيقٌ مِّنْهُم مُّعْرِضُونَ [٢٤:٤٨]
وَإِن يَكُن لَّهُمُ الْحَقُّ يَأْتُوا إِلَيْهِ مُذْعِنِينَ [٢٤:٤٩]
أَفِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ أَمِ ارْتَابُوا أَمْ يَخَافُونَ أَن يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَرَسُولُهُ ۚ بَلْ أُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٢٤:٥٠]
إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِينَ إِذَا دُعُوا إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَن يَقُولُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ [٢٤:٥١]
وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَخْشَ اللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ [٢٤:٥٢]
‘‘তাদের মধ্যে ফায়সালা করার জন্য যখন তাদেরকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে আহবান করা হয়, তখন তাদের একদল মুখ ফিরিয়ে নেয়। সত্য তাদের স্বপক্ষে হলে তারা বিনীতভাবে রসূলের কাছে ছুটে আসে। তাদের অন্তরে কি রোগ আছে, না তারা ধোঁকায় পড়ে আছে;না তারা ভয় করে যে,আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তাদের প্রতি অবিচার করবেন? বরং তারাই তো অবিচারকারী । মুমিনদের বক্তব্য কেবল এ কথাই যখন তাদের মধ্যে ফায়সালা করার জন্যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে তাদেরকে আহবান করা হয়,তখন তারা বলেঃ আমরা শুনলাম ও আদেশ মান্য করলাম। তারাই সফলকাম। যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করে আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর শাস্তি থেকে বেঁচে থাকে,তারাই কৃতকার্য।’’[সূরা নূর, আয়াত: ৪৮-৫২]
আর এগুলো তো হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালার পক্ষ থেকে পবিত্র বাণীসমূহ যা পাহাড়সমূহকে কাঁপিয়ে তুলে! আমরা মুজাহিদগণকে এই আয়াতগুলো নিয়ে চিন্তা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
কেননা এটি একটি সুস্পষ্ট আয়াত, যা আল্লাহর আইনের মাধ্যমে ফায়সালা হবে এরূপ যেকোন আহ্বানকে মেনে নিতে মুসলিমদেরকে বাধ্য করে।  এখন পর্যন্ত আমরা ঐ বিবৃতিটিকে প্রচার করছি এবং এই প্রস্তাবনাটির উপর আমাদের সম্পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করছি।  আমরা উভয় পক্ষকে ‘‘ওয়া হাররিদিল মু’মিনীন’’ অপারেশন কক্ষের উপদেশের দিকে আহ্বান করছি, যেটা(যে উপদেশ) আল্লাহু সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা ও তাঁর রাসূল(ﷺ)-এর সন্তুষ্টির দিকে ধাবিত করে, আর যেটা রক্তকে হেফাজত করে।
তাদের উচিত হাদীসে বর্ণিত এই কঠোর হুঁশিয়ারী সম্পর্কে চিন্তা করা: “যদি আকাশ ও জমীনের সকল বাসিন্দা একজোট হয়ে একজন ঈমানদারের রক্ত প্রবাহিত করার ইচ্ছা করে, তবে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করবেন।” [সহীহ, আত-তিরমিজি।]
অবশেষে আমরা আমাদের ভাইদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, এটা কেবল সামরিক বিধিবিধানের ব্যাপার নয়। এমনকি, যদিও একটি পক্ষ একতরফাভাবে এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটায়, কিন্তু যে শত্রুতা অবশিষ্ট রয়েছে তার কী হবে? আর যে রক্ত প্রবাহিত হবে তার কী হবে? এবং যে মুজাহিদীন জিহাদ ছেড়ে দিবে, তাদের ব্যাপারে কী হবে? আর আল্লাহ তায়ালার অবাধ্য হয়ে তার রায়কে পরিত্যাগ করে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার কী হবে?
আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন সফলতা প্রদানকারী ও সঠিক পথ প্রদর্শনকারী।

 

মুসলিহ আল-উলওয়ানী                                                                   আব্দুল্লাহ আল-মুহাইসিনী

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 13 =

Back to top button