পিডিএফ/ওয়ার্ড || গণতন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন! – শাইখ আবু আব্দুর রহমান আস-সানহাজী হাফিজাহুল্লাহ
word
PDF
—-
http://www.mediafire.com/file/ts7j7ygtf2f0b9l/122._GonotontrerMukhosh.pdf/file
https://archive.org/download/u_m_a_5/122.%20GonotontrerMukhosh.pdf
Word
—–
http://www.mediafire.com/file/weujtphvzdmy47t/122._GonotontrerMukhosh.docx/file
https://archive.org/download/u_m_a_5/122.%20GonotontrerMukhosh.docx
======================
গণতন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন!
মূল-
শাইখ আবু আব্দুর রহমান আস-সানহাজী হাফিজাহুল্লাহ
প্রধান বিচারপতি
জামাআত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল-মুসলিমিন, মালি
অনুবাদ
মাওলানা খালিদ আবু ইবরাহীম
সমস্ত প্রসংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর, তাঁর পরিবার-পরিজন, সাহাবা, ও অনুসারীদের উপর।
মালিতে অবস্থানরত আমার মুসলিম ভাইয়েরা!
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
সম্মানিত ভাইয়েরা আমার! ফ্রান্স দখলদারদের এদেশ ত্যাগের পঞ্চাশ বছরের অধিক সময় অতিবাহিত হল।
তথাকথিত স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অতিক্রান্ত হল; কিন্তু এ ভূখণ্ডের অধিবাসীরা কঠিন সঙ্কটে জীবনযাপন করেছে। বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে। বিপদের পর বিপদ। আহ! পঞ্চাশ বছর যাবৎ …. জাতি আপন অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের দ্বীনের সাথে যুদ্ধ করা হচ্ছে। ভাল মানুষরা বঞ্চিত, লাঞ্চিত, অপদস্ত, হত্যা-গুম ও দেশান্তরের শিকার হচ্ছে। পঞ্চাশ বছর অতিবাহিত হল অথচ মুসলমানরা সুবিধাবাদী শাসকের ক্ষুদ্র দলের কর্তৃত্বের দুর্বিপাকে নিমজ্জিত আছে। তথাকথিত স্বাধীনতার পঞ্চাশটি বছর চলে গেল এখনো আমাদের সম্পদ আমাদেরই চোখের সামনে লুট করা হচ্ছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আর দখলদালরা বিগতদিনে ভোগ করে গেছে। আর এখন গনিমত ভোগ করছে। হ্যাঁ পঞ্চাশ বছরই পার হয়ে গেল অথচ আমরা দখলদার ও তাদের এজেন্টদের পদদলনে নিষ্পেষিত হয়ে জীবনযাপন করছি।
বর্তমানে আমরা বিভিন্ন দেশকে আধুনিকতার মিথ্যা প্রতারনার প্রতি ধাবিত দেখতে পাচ্ছি। তারা দাবি করছে যে, এতে তারা গণতন্ত্রের নির্বাচনের মাধ্যমে সুসজ্জিত হচ্ছে এবং তার রজ্জুকে সুদৃঢ় করছে।
ফলহীন নির্বাচন, যার অসংখ্য নমুনা পূর্বে রয়েছে, যাতে বিচার-ফয়সালা করে এমন চক্র-দল, যারা ভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ব্যপারে কোনরকম লজ্জাবোধ করে না। এবং ভ্রষ্টতা ও অবাধ্যতা দূর করার কোন পদক্ষেপ নেয় না, বরং কুফুরী ও স্বেচ্ছাচারিতার উপর দৃঢ় থাকে।
আমার মুসলিম ভাইয়েরা! তারা আপনাদের মিথ্যা সাক্ষী হওয়ার জন্য আবারো ডাকছে। আপনাদেরকে দুর্ভাগ্যপীড়িত রাষ্ট্রের শাসক ও নেতাদের ষড়যন্ত্রে ক্রমাগত লালিত পালিত হওয়ার কর্মে জড়াতে চায়। তাই আমি আপনাদেরকে বিশেষভাবে আমাদের প্রতিপালক মহান আল্লাহ তা’আলা ও তাঁর রাসূলের হুকুম মেনে চলার উপদেশ দিচ্ছি যাতে আমরা ডেমোক্রেসি ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের হাকিকত সুস্পষ্টরূপে জানতে পারি এবং এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলার হুকুম জেনে তার উপর আমল করতে পারি। আল্লাহর কাছেই তাওফিক কামনা করছি।
হে আমার মুসলিম ভাইয়েরা! নিশ্চয়ই এই নির্বাচন গণতন্ত্রের-ই একটি ফল। আর প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ইসলাম ধর্মের নেতৃত্ব ও পূর্ণাঙ্গ কর্তৃত্বের বিপরীত একটি স্বতন্ত্র ধর্ম। আর এতে বিচার ফয়সালা করা হয় অধিকাংশ মানুষের মতামতের ভিত্তিতে, দো’জাহানের প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার বিধান দ্বারা নয়।
গণতন্ত্র মানুষের বিবেককে আল্লাহর অকাট্ট বিধানের ব্যাপারে বিবেচনা করার পূর্ণ অবকাশ দেয়। তারা তা গ্রহণ ও প্রত্যাখ্যানের ব্যাপারে পরস্পর পরামর্শ করে। আর এটাই শিরকী পরামর্শ।
আর শরয়ী পরামর্শ হবে উজ্জ্বল শরীয়তের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য ও নিরঙ্কুশ আত্মসমর্পণের সাথে। সুতরাং ঐ বিষয়ে পরামর্শ করবে, যে বিষয়ে শরীয়ত পরামর্শের অবকাশ দিয়েছে, যেমন: আমাদের দেশে পরিপূর্ণরূপে ও যথাযথভাবে আল্লাহর শরীয়ত প্রতিষ্ঠার পদ্ধতির ব্যাপারে বিবেচনা এবং কে শাসক হওয়ার বেশি উপযোগী ইত্যাদি বিষয়ে রায় নেওয়া যেখানে আমাদের ধর্মীয় ও পার্থিব কল্যাণ রয়েছে।
হে মানবজাতি! নির্বাচন কমিশনারের এসব লোকজন, যারা আইন তৈরীর মাধ্যমে জনগণের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়, মুলত তারা নিজেদের রব হিসেবে সাব্যস্ত করে। এমন বিধান প্রণয়ন করে যে ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা কোন ধরণের অধিকার দেননি। তারা আল্লাহ তা’আলার সাথে তাঁর রুবুবিয়্যাত ও রাজত্বের ব্যাপারে বিবাদে লিপ্ত হয়। আল্লাহ তা’আলা যা হারাম করেছেন তারা তা হালাল করে, আর যা তিনি হালাল করেছেন তারা তা হারাম করে।
হে লোক সকল! নিশ্চয় মহান আল্লাহ তা’আলা এককভাবেই আমাদের সৃষ্টি করেছেন, সুতরাং একমাত্র তিনিই আমাদের মাঝে বিচার-ফয়সালা করতে পারেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
أَفَمَن يَخْلُقُ كَمَن لَّا يَخْلُقُ ۗ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ ] النحل: ١٦ [
“যিনি সৃষ্টি করেন, তিনি কি সে লোকের সমতুল্য যে সৃষ্টি করতে পারে না?! তোমরা কি চিন্তা করবে না?!” (সূরা: নাহল: ১৭)
হ্যাঁ, হ্যাঁ, হে জ্ঞানীরা তোমাদেরকেই বলা হচ্ছে, তোমরা কি ভেবে দেখবে না? তোমরা কি শুনবে না? তোমরা কি বুঝবে না?!!
কি ভেবেছ! আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করবেন এবং রিজিক দান করবেন অতঃপর আমরা এমন লোকদেরকে তাঁর শরীক বানাবো যারা সৃষ্টিও করেনা রিজিকও দেয়না?!
الأنعام: ١٤ [أَغَيْرَ اللَّهِ أَتَّخِذُ وَلِيًّا فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ يُطْعِمُ وَلَا يُطْعَمُ
“হে নবী! আপনি বলে দিন: আমি কি ঐ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে সাহায্যকারী স্থির করবো যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা এবং যিনি সবাইকে আহার্য দান করেন ও তাঁকে কেউ আহার্য দান করে না”। (সূরা: আনআম:১৪)
কি মনে করেছ! আমরা কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বিচার-ফয়সালা তালাশ করবো!
الأنعام: ١١٤ أَفَغَيْرَ اللَّهِ أَبْتَغِي حَكَمًا وَهُوَ الَّذِي أَنزَلَ إِلَيْكُمُ الْكِتَابَ مُفَصَّلًا ۚ
“তবে কি আমি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন বিচারক অনুসন্ধান করবো, অথচ তিনিই তোমাদের প্রতি বিস্তারিত গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন?!” (সুরা: আনআম: ১১৪)
(أَفَحُكْمَ الْجَاهِلِيَّةِ يَبْغُونَ ۚ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ حُكْمًا لِّقَوْمٍ يُوقِنُونَ) ألمائدة: ٥٠
“তারা কি জাহেলিয়াত আমলের ফয়সালা কামনা করে? বিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহ অপেক্ষা উত্তম ফয়সালাকারী আর কে?” (সুরা: মায়েদাহ: ৫০)
হে সৃষ্টিজীব! তোমরা কি সৃষ্টির বানানো বিধানের উপর সন্তুষ্ট থাকবে! আর অনুগ্রহশীল দয়াময় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা’আলার বিধান থেকে বিমুখতা প্রদর্শন করবে?! এটা কি শিরকে আকবর তথা বড় শিরক নয়!? স্পষ্ট গোমরাহী ও মহা অন্যায় নয়?! যেমন কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন:
{ْ إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ } الأعراف: ٥٤
“নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন। তিনি দিনকে আবৃত করেন রাত্রি দিয়ে, যা দ্রতগতিতে তার অনুসরণ করে। আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি তার হুকুমের আজ্ঞাধীন। শুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং বিধান দান করা। আল্লাহ বরকতময়, যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক”। (আল-আ’রাফ: ৪৫)
হ্যাঁ সৃষ্টি যেমন তাঁর, বিধানও চলবে তাঁর। সুতরাং তিনি ছাড়া কোন সৃষ্টিকর্তা নেই। এবং তিনি ছাড়া কোন বিধানদাতাও নেই। আর সৃষ্টিকে স্রষ্টার সমতুল্য সাব্যস্ত করা মহা অন্যায় ও সুস্পষ্ট শিরক।
নিশ্চয় (নির্বাচনের) এই জঘন্যতম ঘৃণ্য কাজের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে নতুন এক দাসত্বের পথে নিয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এটা গোলকধাঁধার এক অভিনব দিশেহারা প্রান্তর, পাপাচারী এই সম্প্রদায়ের সাথে যার প্রান্তসীমা খুঁজে পাওয়া সম্ভবপর নয়। এমন সময় যখন এই সব পাপাচারীদের জন্য আবশ্যক হয়ে পড়েছে যে, তারা তাদের অপরাধসমুহ ও পূর্বের ব্যর্থতার তালিকা থেকে শিক্ষা নিবে, এবং তাদের প্রতিনিয়ত বিতাড়নকারী আঘাত-প্রতিঘাত ও অভিষাপ থেকে উপদেশ গ্রহণ করবে। অথচ তাদের কাউকে কাউকে আমরা বারংবার ব্যর্থতার উপর ক্রমাগত লেগে থাকা, নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতি মনোনিবেশ করা ও স্বৈরাচারীর পথে ঝুলে থাকতে দেখছি।
মালিতে অবস্থিত আমার মুসলিম ভাইয়েরা! এই ভূখন্ডে অবস্থিত বিবেকবানদের জন্য আবশ্যক হল তারা ভেবে দেখবে যে, নির্বাচন নামক এই কৌতুহলী তামাশা বিগত দিনের এই দীর্ঘ কার্যক্রমে তাদেরকে কি দিয়েছে? এবং তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক, ও অর্থনৈতিক জীবনে কি ধরণের দুঃখজনক ফলাফল বয়ে এনেছে! সুতরাং বিবেক ও যুক্তি এটাই দাবী করে যে যেমন কার্যক্রম হবে তেমন ফলাফল বয়ে আনবে…। আমরা আর কতদিন এসব ব্যর্থ ও অকেজো রাজনীতিকদের পরীক্ষাক্ষেত্রে পড়ে থাকবো!?
হে মুসলিম জাতি….! বর্তমানে আপনাদের দায়িত্ব এই নোংরা তামাশায় অংশগ্রহণ না করা, কেননা এই তামাশার উদ্দেশ্য হল শরীয়তকে অকেজো দুর্নীতিগ্রস্ত নীতিতে প্রতিফলিত করা, যা জাতিকে আন্তর্জাতিক কুফফার চক্রদল থেকে নিজেদের স্বাধীনতা লাভ থেকে বঞ্চিত করেছে। বরং এর চেয়ে আগে বেড়ে এক দখলদারের পরিবর্তে ভাড়াটে সৈন্যবাহিনী, ও ইতর লোকজনের দশগুন দখলদারকে উপস্থিত করেছে। তারা আমাদের ভূমিতে দল-বল ও সরাঞ্জামসহ অবতরণ করেছে। আমাদের পরিবার-পরিজনের উপর কোন প্রকার হিসাব-নিকাশ ও পর্যবেক্ষন ছাড়াই অন্যায়ভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। নিশ্চয় এই শাসকগোষ্ঠীর ক্ষুদ্রদল তোমাদের ঘাড়ে বসে তোমাদের অচেতন করা ও চূড়ান্ত বিষয় থেকে মনোযোগকে ফিরানোর প্রয়াস চালাচ্ছে। তারা নিজেদের ঠাট্টা-কৌতুককে অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের ভূখন্ড থেকে দখলদারদের বিতাড়িত করা ও তাদের থেকে আমাদের অর্থ-সম্পদ উদ্ধারের পরিবর্তে এই সস্তা-তুচ্ছ নির্বাচনের খেল-তামাশায় আমাদের মাতিয়ে রাখার অপচেষ্টা শুরু করেছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছেই সাহয্য প্রার্থনা করি।
তাই আপনাদের ও আমাদের সকলের জন্য আবশ্যক হল ওই সব কলঙ্কিত, পাপিষ্ঠ, কাফের সম্প্রদায়ের হাতকে রুখে দেওয়া, যাদের হাত নিরীহ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে, যাদের পকেট ও কোষাগার দারিদ্রমানুষের ধন-সম্পদ দ্বারা পরিপূর্ণ হচ্ছে। যেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঐ বাণীর প্রতিফল আমাদের উপর বাস্তবায়ন না হয় যে, তিনি বলেন:
[إن الناس إذا رأوا الظالم فلم يأخذا عللى يديه، أوشك أن يعمهم الله بعقاب من عنده].(رواه أحمد)“নিশ্চয় যখন মানুষ জালেমকে জুলুম করতে দেখে; কিন্তু তার হাতকে রুখে না দেয় তাহলে আশঙ্কা রয়েছে যে, আল্লাহ তা’আলা স্বীয় আজাব দ্বারা তাদের সবাইকে ব্যাপকভাবে পাকড়াও করবেন”।
নিশ্চয় ফ্রান্স চায় না যে, আমাদের দেশে এমন শাসন প্রতিষ্ঠা হোক যা জনগনকে নিষ্ঠাবান শরীয়তের আলোকে প্রতিনিধিত্ব করবে। বরং তারা এমন শাসন প্রতিষ্ঠার কামনা করে যা, তাদের রাজত্বের অনুগামী হবে, তাদের আদেশের বশীভূত হবে। গণতন্ত্রকে আমাদের দেশে রপ্তানি করার পিছনে এটা তাদের একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। তারা জানে যে গণতন্ত্র স্থায়ীভাবে তাদের দখলদারিত্ব এবং আমাদের অর্থ-সম্পদের উপর অব্যাহত জুলুমী-কর্তৃত্বের অনুমোদন করবে। তাদের উদ্দেশ্য এই গণতন্ত্র সন্ত্রাস দমনের নামে জিহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। আমাদের উপর ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ চাপিয়ে দিবে। আমাদের ইসলামী আইনে বিচার ফয়সালা করা থেকে বিরত রাখবে। আমাদের শিক্ষানীতিকে বিকৃত করবে। যাতে আমরা অবশেষে দখলদার, সীমালঙ্ঘনকারী ও আক্রমনকারী কাফেরদের নীতি গ্রহণ করি।
হে আমার মুসলিম ভাইয়েরা! এটা সেই গণতন্ত্র যাকে আকড়ে ধরে তারা আনন্দিত। তার দিকে সবাইকে ডাকে। আপনারা আমাদের ভূখণ্ডে যেই আদর্শিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক বিকৃতি এবং অর্থনৈতিক দুর্নীতি ইত্যাদি অবলোকন করছেন, তার অধিকাংশ একমাত্র এই গণতন্ত্রের-ই ফল।
হ্যাঁ, হে মুসলিম ভাইয়েরা! এটা বাস্তব ঘটনা, এটা আমাদের প্রকৃত অবস্থা। দুঃখের সাথে বলতে হয় আমরা এতোটা নিচে নেমে গেছি। সুতরাং যে এই দু:খজনক বাস্তবতা ও প্রবল দুর্নীতি থেকে বের হতে চায় তার জন্য আবশ্যক হল: আমাদের শত্রুদের আমদানিকৃত আইন-কানুন ও রীতি-নীতিকে বর্জন ও অস্বীকার করা। তা মূলোৎপাটন ও দূরীকরণের প্রচেষ্টা করা। এবং তার স্থানে এমন সৎ ও ন্যায়পরায়ন নীতিকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা-প্রয়াস চালানো যা শরীয়ত অনুসারে বিচার ফয়সালা করবে। মজলিসে শুরা প্রতিষ্ঠা করবে। ন্যায়-ইনসাফ ছড়িয়ে দিবে। জাতির জন্য তাঁদের বিচারক নির্ধারণ, তাঁদের পর্যবেক্ষণ ও রাজনৈতিক বিষয়ে কার্যকরি অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করবে। জাতির অর্থ-সম্পদের সুসম বন্টন, লুটতরাজ, চুরি, চাঁদাবাজি ও ক্ষয়-ক্ষতি বন্ধ করনে কার্যকরি পদক্ষেপ নিবে। পশ্চিমা শাসনের মোকাবেলা করবে। এই উম্মতের সকল নিপিড়িত ব্যক্তিবর্গ থেকে জুলম-নির্যাতন বন্ধ করণে পূর্ণ সহযোগিতা করবে, মজলুম ইসলামী বিশ্বের যেই প্রন্তেই হোক না কেন। বরং অত্যাচারিত সকল বনী আদম থেকে জলুম দূর করণে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিবে। কেননা জুলুম হল হারাম। আল্লাহর নবী মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন:
[يا عبادي إني حرمت الظلم على نفسي وجعلته بينكم محرما فلا تظلموا]. رواه مسلم“হে আমার বান্দাগণ! আমি জুলুম করাকে নিজের উপর হারাম করেছি। আর তোমাদের পরস্পরের মাঝে জুলুম করাকেও আমি হারাম করেছি। সুতরাং তোমরা একে অপরের প্রতি জুলুম-অত্যাচার করো না”। (সহিহ মুসলিম)
হে মুসলমানগণ! যেই লক্ষ্যের দিকে আমরা তোমাদের ডাকছি তা হচ্ছে: আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন পতিষ্ঠা করা। এবং আল্লাহর কালিমাকে সমুন্নত করা, যাতে সকল রাষ্ট্র ও জাতির উপর তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। আল্লাহ তা’আলা, তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আরব-আজম, সাদা-কালো সকল মুমিনের সাথে আমাদের ভালোবাসা কায়েম হয়ে যায়।
সুতরাং বিশ্বের যে প্রান্তেই আল্লাহর নাম উচ্চারিত হবে, আমার স্বীয় মাতৃভূমির আশ্রয়স্থল বলে গণ্য হবে।
তাই আসুন হে প্রিয় ভাইয়েরা! কণ্ঠ ছেড়ে উচ্চস্বরে ইহুদি, খ্রিস্টান ও সকল মানুষের তরে ঘোষণা করি “সাবধান! শাসন চলবে কেবলমাত্র আল্লাহর। নেতৃত্ব চলবে শুধুমাত্র শরীয়তের। আমাদের কাছে ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও গণতন্ত্রের কোন স্থান নেই”।
শুনে রাখুন! আপনাদের এই মুজাহিদ ভাইয়েরা আপনাদের দিকে তাঁদের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, যাতে আমরা এই তিক্ত বাস্তবতাকে পরিবর্তন করতে পারি এবং আমাদের নিপিড়িত পরিবার-পরিজন থেকে এই অত্যাচার ও প্রবঞ্চনার মূলোৎপাটন করতে পারি। জোড়াতালি দেওয়া এই পথ ও অর্ধসমাধানের এই রাস্তা থেকে তাঁরা দূরে থেকেছেন। দিন ও বছরগুলো আপনাদেরকে এই বিষয়ে শিক্ষা দিচ্ছে যে, আনুষ্ঠানিক সমাধান ও জোড়াতালির এই সব নাটক জোরপূর্বক নিপিড়িতদের ঘাড়ে বসে কর্তৃত্বকারীদের দলের সাথে আপনাদের কোন উপকারে আসবে না। তারা একক শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে শক্তি, প্রতারনা ও মিথ্যার আশ্রয় নিবে।
তাই এদের সাথে সমাধানে পৌছার একটাই মাত্র পথ, তা হলো মহান আল্লাহ তা’আলার পথে জিহাদ ও আত্মত্যাগ। আত্মত্যাগ ও জিহাদ ছাড়া জাতি কষ্ট ও তিক্ততাকে গলাধঃকরণ করতে থাকবে। পাপিষ্ঠদের আবর্জনায় পড়ে থাকবে। তারা আমাদের পদদলিত করবে। নির্বাচনের শিকলে আবদ্ধ করে চূর্ণ-বিচূর্ণ করবে, নিঃশেষ করে দিবে। আল্লাহ-ই আমাদের একমাত্র সহায়ক।
এটা আমাদের দাওয়াত যার জন্যে আমরা বেঁচে থাকি। আল্লাহ চাহে তো এই দাওয়াতকে বাস্তবায়নের পথে মৃত্যু বরণ করবো। আর মানুষদেরকে তার সাহায্য, তাকে প্রতিরক্ষা ও আকড়ে ধরার প্রতি আহ্বান করবো। আর যারা ফরাসি ক্রুসেডার ও মুরতাদ শাসকদের অনুসারী হবে তারা সাক্ষী থেকো যে আমরা হলাম মুসলিম। ফরাসি ও তাদের মিত্রদের সাথে আমরা যুদ্ধ অব্যাহত রাখবো। তোমরা তোমাদের স্থানে কাজ চালাও, আমরাও কাজ চালাবো! অপেক্ষায় থেকো আমরাও অপেক্ষায় আছি! প্রতিক্ষায় থেকো আমরাও তোমাদের সাথে প্রতিক্ষায় আছি!
ওয়াআখিরু দা’ওয়ানা আনিল হামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন।