ইলম ও আত্মশুদ্ধিউসামা মিডিয়াবই ও রিসালাহবার্তা ও বিবৃতিমিডিয়াশাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

উলামায়ে দেওবন্দের প্রতি শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. এর চিঠি – মাওলানা ইউনুস আবদুল্লাহ অনুদিত

উলামায়ে দেওবন্দের প্রতি
শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. এর চিঠি

মুল
শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

অনুবাদ
মাওলানা ইউনুস আবদুল্লাহ

https://archive.org/details/UlamayeDeobonderProti

PDF – 976 KB
http://www.mediafire.com/file/0m01ku…er%20proti.pdf
https://archive.org/download/Ulamaye…er%20proti.pdf

WORD – 953 KB
http://www.mediafire.com/file/cecvqq…r%20proti.docx
https://archive.org/download/Ulamaye…r%20proti.docx

প্রচ্ছদ

https://archive.org/download/Ulamaye…er%20proti.jpg

 

Banner

http://u.cubeupload.com/usama_media/115ulamayedeobonderp.jpg

PDF
—-
http://www.mediafire.com/file/t3xg47v4130qyqj/115._ulamaye_deobonder_proti.pdf/file

https://archive.org/download/U_M_A_04/115.%20ulamaye%20deobonder%20proti.pdf

Word
—–
http://www.mediafire.com/file/yv7xaxe1cn3o7be/115._ulamaye_deobonder_proti.docx/file

https://archive.org/download/U_M_A_04/115.%20ulamaye%20deobonder%20proti.docx

 

======================

উলামায়ে দেওবন্দের প্রতি 

শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. এর চিঠি

মুল

শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ.

অনুবাদ

মাওলানা ইউনুস আবদুল্লাহ

(সর্বস্বত্ব সকল মুসলমানের জন্য সংরক্ষিত)

 

দৃষ্টিপাত

এযুগের মুজাদ্দিদ শাইখ উসামা বিন লাদেন রহ. এর এই মুল্যবান চিঠিটি পাকিস্তানের পেশোয়ারে সম্মেলনে ১৫ই মুহাররম ১৪২২ হিজরী মোতাবেক ৯ই এপ্রিল ২০০১ ইংরেজী সালে সংগঠিত দেওবন্দী সিলসিলার উলামায়ে কেরামের একটি সম্মেলনে পাঠানো হয়েছিল। উপস্থিত উলামায়ে কেরামের সামনে এই চিঠিটি পড়ে শোনানো হয়েছিল। সকল উলামায়ে কেরাম, বিশেষকরে উলামায়ে দেওবন্দের করণীয় সম্পর্কে শাইখ খুবই অত্যান্ত দরদের সাথে আলোকপাত করেছেন।

 

আলহামদুলিল্লাহ, ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। সমস্ত প্রশংসা সেই মহান সত্ত্বা আল্লাহ জাল্লা শানুহুর জন্য, যিনি পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেছেন:

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ (102) وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا

অনুবাদ: “হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে যথাথভাবে ভয় কর এবং তোমরা আত্মসমর্পণকারী না হয়ে কোন অবস্থাতেই মরিও না। তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইও না”। (সূরা আলে ইমরান-১০২-১০৩)

তিনি আরো ইরশাদ করছেন:

إِنَّ هَذِهِ أُمَّتُكُمْ أُمَّةً وَاحِدَةً وَأَنَا رَبُّكُمْ فَاعْبُدُونِ

অনুবাদ: “এই যে তোমাদের জাতি—ইহা তো একই জাতি এবং আমিই তোমাদের প্রতিপালক, অতএব আমার ইবাদত কর”। (সূরা আম্বিয়া-৯২)

দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর, যিনি পবিত্র হাদীস শরীফে ইরশাদ করেছেন:

“يد الله على الجماعة” كما رواه الترمذي عن ابن عباس

অনুবাদ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “জামাতের/দলের উপর-ই আল্লাহর সাহায্য। (তিরমিযী)

হামদ ও সালাতের পর…

হে সম্মানিত উলামায়ে কেরাম-

আমি এ কথাগুলো আপনাদের ইসলামী সমাবেশের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করছি, যেখানে আপনারা বিভিন্ন স্থান থেকে এবং অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এসে ইসলামী ঐক্যের ভিত্তিতে মিলিত হয়েছেন। যেখানে গোত্র-শ্রেণীর ভেদাভেদ নেই, সীমানা বা মানচিত্রের বাধঁ নেই। নিশ্চয় এখন আপনারা এই মহান দ্বীনের মূর্তপ্রতীক হওয়ার নিমিত্তে একত্রিত হয়েছেন, সত্য ও সত্যবাদীদের সাহায্য করার অভিলাষে মিলিত হয়েছেন। আপনারা এক কঠিন সময়ে একত্রিত হয়েছেন, কারণ বর্তমানে উম্মাহর এক বিগত জায়গাও নেই যেখানে উম্মাহ বর্শার আঘাত, তরবারীর আঘাত ও তীরের নিশান হওয়া ব্যতিরেকে রয়েছে। আপনাদের এই একত্রিত হওয়া এমন এক সময়ে হয়েছে, যখন উম্মাতে মুসলিমাহ ওই সরকারী সম্মেলনসমূহ ও তার কর্ণধারদের থেকে নিরাশ হয়ে গিয়েছে, যারা আরব ও ইসলামী দেশগুলোর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং (মানুষের) চোখগুলির উপর ছাই ছড়িয়ে দিয়েছে। আর তারা ধারণা করে যে, এই সকল সম্মেলন উম্মাহর দ্বীনের ও তাঁর হকসমূহের সুরক্ষা দান করবে! কিন্তু দশ বছর অতিক্রম হয়ে গেছে, অন্যদিকে ইসলামের পবিত্র ভূখণ্ডসমূহ কাফির ক্রুসেডার ও ইয়াহুদীদের শক্তিমত্ত্বার অধীনে তলিয়ে গেছে। ফলশ্রুতিতে উম্মাতের প্রত্যেক সদস্য এই বিশ্বাসের উপর উপনীত হয়েছে যে, এই সমস্ত সম্মেলন কোন উপকারে আসবে না এবং তারা আরো বুঝতে পেরেছে যে, এই সমস্ত রাষ্ট্র ও তার শাসক, তাদের দালাল এবং উম্মাহর দুশমনদের সাথে আতাঁতকারীদের অক্ষমতা, তাই তাঁরা বর্তমান অবস্থার উপরই সন্তুষ্ট থাকার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।

আর মিসরের শারম আশ শাইখ শহরের সে প্রথম সম্মেলনে সম্মেলনকারীরা বৈশ্বিক কাফের নেতাদের ও তাদের মিত্রদের এবং আঞ্চলিক শাসকদের মধ্য থেকে তাদের কর্মচারীদের আহবান করেছিল। আসলে সেখানে নিস্পাপ শিশুদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, কুরবানীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, মজলুমকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং জালিমকে সাহায্য করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে। আর এ কারণেই আজকে উম্মাহ গর্দানগুলি উচুঁ করে আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে, আপনাদের ফতোয়ার অপেক্ষা করছে…! যার মাধ্যমে এই ময়দান থেকে বের হওয়ার রাস্তা সুস্পষ্ট হবে।

নিশ্চয় উম্মাহ আপনাদের থেকে সুস্পষ্ট অর্থবোধক ফতোয়ার অপেক্ষা করছে…। সুস্পষ্ট দিকচিহ্ন রেখাটানা পথের সন্ধান পাবার জন্য অপেক্ষা করছে…! যাতে করে সে পথে চলে উম্মাহ নিজেদের থেকে, নিজেদের পবিত্র ভুমিসমূহ থেকে এবং নিজেদের সন্তানদের থেকে এই অত্যাচার দূর করতে পারে। আপনারা কি তা করতে প্রস্তুত আছেন?

 

হে শ্রদ্ধাভাজন উলামায়ে কেরাম…!

আমি আপনাদের প্রতি এই আহবান এমন এক সময়ে করছি, যখন উম্মাহ রক্তের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে, এমনকি নিস্পাপ শিশুদের রক্তের বন্যা বইছে। আধুনিক বিশ্ব শাসনব্যবস্থা ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অধিকাংশ স্থানে ইসলামী মর্যাদার প্রতীকসমূহ ভূলুন্ঠিত হচ্ছে। এই জাতিসংঘ মুসলমানদের বিপরীতে বিশ্ব কুফরী শাসনব্যবস্থার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি উন্মুক্ত হাতিয়ার হয়ে ওঠেছে। এই সংস্থা (মুসলিমদের) গণহত্যার তত্ত্বাবধান করে এবং লাখ লাখ মুসলমানদের অবরোধ আরোপ করে। তারপরেও তারা মানবাধিকার সম্পর্কে কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছে না !!

সহীহ বুখারীর বর্ণনায় আছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদীসে পাকে ইরশাদ করেন:

دَخَلَتْ امْرَأَةٌ النَّارَ فِي هِرَّةٍ رَبَطَتْهَا فَلَمْ تُطْعِمْهَا وَلَمْ تَدَعْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الْأَرْضِ حَتَّى مَاتَتْ

অনুবাদ: “এক মহিলা বিড়ালকে বেধেঁ রেখে কষ্ট দেওয়ার দরুন জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। সে তাকে খাবার দিত না, আবার সে জমিনের কীট-পতঙ্গ খুজেঁ খাওয়ার জন্য তাকে ছেড়েও দিত না। এক পর্যায়ে বিড়ালটি মারা যায়।”

হে আল্লাহর বান্দারা! (একটু চিন্তা করুন…) একটি বিড়ালকে কষ্ট দেওয়ার কারণে যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে সে ব্যক্তির অবস্থা কেমন হবে, যে মুসলিম জাতিকে বন্দি করে রেখেছে এবং মৃত্যু অবধি অবরোধ করে রেখেছে? হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট ক্ষমা চাচ্ছি তারা যা করছে এবং আমি আপনার নিকট ওযরখাহী করছি অবরোধকৃত ভাইদের সাহায্য করা থেকে মুসলমানদের বসে থাকার দরুন।

হে ওলামায়ে ইসলাম…!

নিশ্চয় এই ক্ষত অনেক গভীর ছিল, আর এ সঙ্কটগুলি যদিও অনেক বেশী ছিল, তথাপি আল্লাহর প্রতি আস্থা তো বিরাট ব্যাপার। আর তিঁনি তার দ্বীনের সহায়তা করার ওয়াদা করেছেন এবং সুসংবাদ দিয়েছেন যে, “মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতের মধ্যে একদল লোক সর্বদা সত্যের (দ্বীনে হকের) উপর বিজয়ী হয়ে জিহাদ করতে থাকবে। যারা তাঁদের সহায়তা ছেড়ে দিবে এবং তাঁদের বিরোধিতা করবে তারা তাঁদের কোন ক্ষতিই করতে পারবে না। আল্লাহর নির্দেশ (কিয়ামত) আসা পর্যন্ত তাঁরা এভাবেই হকের উপর অবিচল থাকবে”। (মুসলিম)

এখন আবশ্যক হল দলীলসহ তা ঘোষণা করা, যার গুরুত্ব আপনাদের নিকট গোপন নয়। তাছাড়া দলীলশুদ্ধ ঘোষণা তো এই অপেক্ষমান ব্যাপক জনগোষ্ঠীর জন্যও জরুরী, যার জন্য তাঁরা গর্দান উচিয়ে আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে….!

আপনারা তাঁদেরকে দীপ্তকন্ঠে জানিয়ে দিন- জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ ছাড়া কোন সম্মান বা সাহায্য নেই।

তাঁদেরকে আরো জানিয়ে দিন যে, জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ কোন তানযীমের একক আমীরের আনুগত্য ছাড়া সম্ভব হবে না বা পূর্ণাঙ্গ হবে না। তাছাড়া এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা বিচ্ছিন্নতার অন্তর্ভুক্ত হওয়া এবং স্বীয় অস্তিত্ব ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে রক্ষা করবেন। যেমনটা হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত হারিস আল-আশয়ারী রাযি, থেকে বর্ণিত হাদীসে বলেছেন:

“وأنا آمركم بخمس أمرني الله بهن : الجماعة والسمع والطاعة والهجرة والجهاد في سبيل الله، فإنه من فارق الجماعة قيد شبر فقد خلع ربقة الإسلام من عنقه إلا أن يراجع ومن دعا بدعوة الجاهلية فإنه من جثاء جهنم وإن صام وزعم أنه مسلم فادعوا بدعوة الله التي سماكم بها المسلمين المؤمنين عباد الله” (رواه أحمد والترمذي).

অনুবাদ: “আমি তোমাদেরকে পাচঁটি বিষয়ের আদেশ করছি, যে পাচঁটি বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা আমাকে আদেশ করেছেন। তা হচ্ছে: জামাতবদ্ধ হয়ে থাকা, শুনা ও মানা অর্থাৎ আনুগত্য করা, হিজরত করা এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। কেননা, যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ জামাআত বা দলবদ্ধতাকে পরিত্যাগ করবে, সে যেন তার গর্দান থেকে ইসলামের বেড়ি খুলে ফেলল, তবে সে যদি ফিরে আসে তাহলে ভিন্ন কথা। আর যে ব্যক্তি জাহিলিয়্যাতের আহবান করবে, সে যেন জাহান্নামের কীট, যদিও সে রোযা রাখে এবং ধারণা করে যে, সে মুসলিম। সুতরাং তোমরা আল্লাহর আহবানের মত আহবান কর, যে নামে তিনি তোমাদের নামকরণ করেছেন মুসলিম-মুমিন আল্লাহর বান্দা বলে”। (মুসনাদে আহমদ ও তিরমিযী)

এমনিভাবে হযরত হুযায়ফা রাযি. এর থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন। যখন রাসূলকে প্রশ্ন করা হয়ে ছিল: আমাকে যদি ঐ অবস্থা পেয়ে বসে তাহলে আপনি আমার ব্যাপারে কি আদেশ দান করেন? তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন:

} تَلْزَمُ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَإِمَامَهُمْ.{

অনুবাদ: “মুসলমানদের ও তাঁদের ইমামের জামাআতকে আকঁড়ে ধর”। (বুখারী-মুসলিম)

এমনিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক জামাত সাহাবীদের মজলিসে বলেছেন:

“ثلاث لا يغل عليهم قلب امرئ مسلم إخلاص العمل لله والنصح لأئمة المسلمين ولزوم جماعتهم فإن دعوتهم تحوط من ورائهم” (رواه الترمذي وغيره).

অনুবাদ: “তিনটি বিষয়ে কোন মুসলিম ব্যক্তির অন্তর যেন খিয়ানতের প্রশ্রয় না দেয়। (তা হলো-) ইখলাসের সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমল করা, মুসলিম নেতৃবৃন্দকে সদুপদেশ প্রদান করা ও তাঁদের বিশ্বাস ও নেককাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকা।”(তিরমিযী ও অন্যান্য হাদীসের কিতাব)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন:

}مَنْ مَاتَ وَلَيْسَ فِى عُنُقِهِ بَيْعَةٌ مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً{ (رواه مسلم عن ابن عمر).

অনুবাদ: হযরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত: “যে ব্যক্তি বাইয়াত ছাড়া মৃত্যুবরণ করল, সে যেন জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুবরণ করল”। (মুসলিম)

(হে সম্মানের অধিকারী উলামায়ে কেরাম!)

আপনারা তাঁদেরকে আরো জানিয়ে দিন যে, নিশ্চয় জামাআতবদ্ধতার সাথেই ইসলাম পূর্ণাঙ্গ হয় ও খেলাফতের মাধ্যমেই জামআত পরিপূর্ণতা পায় এবং আনুগত্যের মাধ্যমেই খেলাফত পূর্ণতা পায়।

আর আপনারা তো জানেন যে, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা বর্তমানের এই কঠিন সময়ে এই উম্মাহর জন্য আল্লাহর শরীয়ত মোতাবেক ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি রাষ্ট্রকে নিয়োজিত করেছেন, যার মাধ্যমে তাওহীদের কালিমা উন্নীত হবে, তা হলো- আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমর হাফিযাহুল্লাহ (বর্তমানে রাহিমাহুল্লাহ) এর নেতৃত্বে ইমারতে ইসলামিয়াহ আফগানিস্তান।

আপনাদের উপর আবশ্যক হলো- মানুষদেরকে এই ইমারতের নেতৃত্বকে মেনে নেওয়ার দিকে আহবান করা এবং জান-মাল দিয়ে সহযোগিতা করা। বিশ্ব কুফরের প্রচন্ড স্রোতের বিপরীতে তাঁদের সাথে থাকা।

আর আমরা আশা করি তা বাস্তবায়নের জন্য সম্মেলনের দিক-নির্দেশনায় নিম্নোক্ত বিষয়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার। তা হলো-

  • ইমারতে ইসলামিয়াহ আফগানিস্তানকে সামর্থানুযায়ী সকল ধরনের সহায়তা প্রদানের আহবান করা।
  • জান দিয়ে সাহায্য করা। আর তা হলো- যুবকদেরকে জিহাদের প্রতি উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে এবং আফগান জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার মাধ্যমে। যেহেতু উম্মাহর বর্তমান পরিস্থিতিতে জিহাদ অন্যতম ফরযে আইন।
  • মাল দিয়ে সাহায্য করা। আর তা হলো- সম্পদশালীদেরকে তাঁদের মাল এই ইমারতের জন্য খরচ করার জন্য আহবান করা। তাঁদের যাকাতগুলি ইমারতকে প্রদান করা এবং তাতে তাঁদের ব্যবসায়িক মূলধন বিনিয়োগ করা।
  • জবান দিয়ে সাহায্য করা। আর তা হলো- এই ইমারতের স্বপক্ষে এই মর্মে শরয়ী ফতোয়া প্রকাশ করা যে, ইমারতের সাহায্য-সহযোগিতা করা ওয়াজিব।

এই মর্মে আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আরব দ্বীপের ও দ্বীপের বাহিরের কতিপয় উলামায়ে কেরাম, বিশেষত: তাঁদের প্রধান শাইখ হামুদ বিন উকলা আশ-শুয়াইবী এই ইমারতের স্বপক্ষে এই মর্মে শরয়ী ফতোয়া প্রদান করেছেন যে, এই ইমারতের সাহায্য-সহযোগিতা করা ওয়াজিব। পাশাপাশি গুরুত্ব সহকারে বলেছেন যে, বর্তমান সময়ে আল্লাহর শরীয়ত অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করার এবং অনেক শরয়ী উদ্ধৃতিগুলি বাস্তবে কার্যকর করার একমাত্র রাষ্ট্র হলো এই ইমারতে ইসলামিয়াহ আফগানিস্তান। আর এর স্বপক্ষে পূর্বে উল্লেখকৃত হযরত হুযায়ফা রাযি. এর হাদীস পেশ করেন, যাতে বলা হয়েছে: “মুসলমানদের ও তাঁদের ইমামের জামাআতকে আকঁড়ে ধর”।  (বুখারী-মুসলিম)

এমনিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “যে ব্যক্তি বাইয়াত ছাড়া মৃত্যুবরণ করল, সে যেন জাহিলিয়্যাতের মৃত্যুবরণ করল”। (মুসলিম)

এই শরয়ী উদ্ধৃতিগুলি ও অন্যান্য উদ্ধৃতির দিকে লক্ষ্য করে আমি আপনাদেরকে খুব গুরুত্ব সহকারে আমীরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মাদ উমরের হাতে বাইয়াত হওয়াকে ওয়াজিব মনে করি। আর নিশ্চয় আমি সরাসরি তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছি, আশা করি তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্যই করেছি। কেননা, তিনি শাসক এবং শরয়ী আমীর। যিনি বর্তমান সময়ে আল্লাহর শরীয়ত দ্বারা শাসন করেন।

ইসলামী সুমহান সিদ্ধান্তগুলি তাঁর ব্যক্তি-সিদ্ধান্ত ছিল না, যা তাঁর শাসনের শেষসময়ে ঘটেছিল। যেমন, মূর্তি ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত, আফিমের চাষ নিষিদ্ধকরণ এবং বিশ্ব কুফরের আক্রমনের বিপরীতে শক্তি ও আত্মমর্যাদার সাথে অবস্থান নেয়া। তবে তার কিছু ঐতিহাসিক ইসলামী সিদ্ধান্ত রয়েছে, যা আমরা মনে করি এ পথে এটা তাঁর সততা, দৃঢ়তার প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন।

 

হে সম্মানিত উলামায়ে কেরাম

নিশ্চয় উম্মাহ আপনাদের থেকে ঐ বিষয় কামনা করছে যা আল্লাহ তায়ালা আপনাদের উপর ওয়াজিব করেছেন, আর তা হলো- সত্যের ঘোষণা প্রদান ও এর বিপরীতে তিরস্কারকারীদের তিরস্কারকে ভয় না করা। মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন:

}الَّذِينَ يُبَلِّغُونَ رِسَالَاتِ اللَّهِ وَيَخْشَوْنَهُ وَلَا يَخْشَوْنَ أَحَدًا إِلَّا اللَّهَ وَكَفَى بِاللَّهِ حَسِيبًا{

অনুবাদ: “তাঁরা আল্লাহর বাণী প্রচার করত এবং তাঁকে ভয় করত, আর আল্লাহকে ব্যতীত অন্য কাউকেও ভয় করত না। হিসাব গ্রহণে আল্লাহই যথেষ্ট”। (সূরা আহযাব-৩৯)

}وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ لَتُبَيِّنُنَّهُ لِلنَّاسِ وَلَا تَكْتُمُونَهُ{

অনুবাদ: “স্মরণ কর, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল আল্লাহ তাঁদের প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন: ‘তোমরা তা মানুষের নিকট প্রকাশ করবে এবং তা গোপন করবে না”। (সূরা আলে ইমরান-১৮৭)

পরিশেষে বলব- মহান আল্লাহ তায়ালা এই পথে আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও প্রার্থনা কবুল করে দৃঢ়তা দান করুন।

মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট কামনা করি তিঁনি আমাদেরকে ও আপনাদেরকে ঐ ব্যক্তিদের মধ্যে গণ্য করে নিন, যাদের কথা তিনি পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেছেন:

}فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذَلِكَ فَضْلُ اللَّهِ يُؤْتِيهِ مَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ.{

অনুবাদ: “নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় আনবেন যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং যারা তাঁকে ভালবাসবে; তাঁরা মুমিনদের প্রতি কোমল ও কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে; তাঁরা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দার কোন ভয় করবে না; ওটা আল্লাহর অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি দান করেন এবং আল্লাহ প্রাচুর্যময় সর্বজ্ঞ”।

সমাপ্ত

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × one =

Back to top button