মাদখালির পিছনে সালাত আদায়ের বিধান। — শায়খ আবু মুহাম্মাদ আসিম আল মাকদিসী (হাফেযাহুল্লাহ)
মাদখালির পিছনে সালাত আদায়ের বিধান।
— শায়খ আবু মুহাম্মাদ আসিম আল মাকদিসী (হাফেযাহুল্লাহ)
https://banglafiles.net/index.php/s/D9sbEKW8frfZAz7
https://archive.org/download/madkhalider-pichone-salat/.pdf
http://www.pdf-archive.com/2016/05/13/madkhali1/madkhali1.pdf
http://www.mediafire.com/file/r5ir62elvzohtns/40.madkhali1.pdf/file
WORD
https://banglafiles.net/index.php/s/Rr6p36rrGR57W56
https://archive.org/download/madkhalider-pichone-salat/.docx
***********************
বালাকোট মিডিয়া
শাইখ আবু মুহাম্মদ আসিম আল মাকদিসি (হাফিজাহুল্লাহ)
আমি ইচ্ছা করলে তার মর্যাদা বাড়িয়ে দিতাম সেসকল নিদর্শনসমূহের দৌলতে, কিন্তু সে যে অধঃপতিত এবং নিজের রিপুর অনুগামী হয়ে রইলো। সুতরাং তার অবস্থা হলো কুকুরের মত; যদি তাকে তাড়া কর তবুও হাঁপাবে, আর ছেড়ে দাও তবুও হাঁপাবে। এ হল সেসব লোকের উদাহরণ ; যারা মিথ্যাপ্রতিপ্নন করেছে আমার নিদর্শনসমূহকে। অতএব আপনি বিবৃত করুন এসব কাহিনী যাতে তারা চিন্তা করে।
(আল আরাফ, ১৭৬)
মাদখালির পিছনে সালাত আদায়ের বিধান
শাইখ আবু মুহাম্মদ আসিম আল মাকদিসি (হাফিজাহুল্লাহ)
বালাকোট মিডিয়া
প্রশ্নঃ রাবী আল মাদখালির অনুসারী মাদখালি সম্প্রদায়ের পেছনে সালাত আদায়ের হুকুম জানতে চাচ্ছি। আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।
প্রশ্নকর্তাঃ জিহাদ প্রেমী
উত্তরঃ
সকল প্রসংশা আল্লাহর জন্যে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক নবী( সাঃ) এ-র উপর।
আম্মাবাদ
কোন বিষয়ে রায় জানানোর পূর্বে সেই বিষয়টির বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
এই মাদখালি সম্প্রদায়ের অবস্থা হল যে, এরা তাগুতের প্রতি আনুগত্যপোষণকারী, ও তাগুতকে সহায়তাকারী একটি গোত্র। দ্বীনের পথের মুজাহিদীনদের ও দ্বীনের সাহায্যকারী হক্ব ব্যক্তিদের প্রতি তারা দুশমনি পোষণ করে। তারা বিশ্বাস করে যে, আল্লাহর দ্বীনের বিরুদ্ধাচারণকারী তাগুতের প্রতি তাদের আনুগত্য রয়েছে! তাগুতের সাথে তারা মৈত্রী স্থাপন করে, এবং মুজাহিদীনদের বিরুদ্ধে তাগুতকে সহায়তা করে থাকে। আর তাদের নিজেদের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলে তাদের সকলের প্রতিই তারা বৈরিতা পোষণ করে, এবং তাদেরকে খারেজি,তাকফিরী ও বিভ্রান্ত বলে গালিগালাজ করে।
ইবনুল কাইয়িম (রহ) বলেন:
তারা অপরকে এমন দোষে দোষী সাব্যস্ত করতে চায়, যে ব্যাপারে তারা নিজেরাই দোষী। যাতে তারা নিজের দোষকে ঢেকে নিরাপরাধ সাজতে পারে।
আমি পূর্বে “মাদখালি ও জাহমিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাবধানতা” শীর্ষক এক রিসালাহতে বলে ছিলাম যে, এরা একদল গোমরাহচরমপন্থী ছাড়া আর কিছুই না।
নিজ নিজ অঞ্চলের তাগুতের সাথে এরা জুড়ে থাকে, এবং সাধারণভাবে এরা আল সউদের প্রতি আনুগত্য পোষণ করে। তাদের মাঝে দরবারী আলেম ও দাঈ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সরকারি গোয়েন্দা ও তদন্তকারী সংস্থার লোকজন, এবং তাদের সহায়ক ব্যক্তিবর্গ।
আমাদের যমানার অনেক আলেম তাদের চরিত্র সংক্ষেপে এভাবে প্রকাশ করেছেন, “দ্বীনের দাঈদের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে তারা চরমপন্থী খাওয়ারেজ এবং তাওয়াগিতের প্রতি আচরণে এরা মুরজিয়াহ” যিন্দিক ৷
হক্ব দাঈদের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে এদের অবস্থা ঠিকি ইবনে উমার (রাঃ) এর কথার মত, “এরা সৃষ্টির নিকৃষ্টতম। যেসব আয়াত কাফেরদের প্রতি নাজিল হয়েছিলো তারা সেগুলোকে মুসলিমদের উপর প্রয়োগ করে”।
আর তাগুত শাসকের ও মদের পৃষ্ঠপোষণকারী নেতাদের ব্যাপারে এদের উক্তি মুরজিয়াহদের মত, “পাপের দ্বারা ঈমানের কমতি হয় না”।
আদি মুরজিয়াহদের অবস্থা ছিলো যে, তারা বলত ঈমান শুধু মৌখিক স্বীকারোক্তি নাম। আর আমলের সাথে এর কোন সম্পর্ক নাই। এদের ইরজার ব্যাপারে ইমাম সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ(রহ) বলেছিলেন, “ইরজা দুই ধরনের। এক প্রকার তো সেসব লোকের ইরজা যারা আলী (রাঃ) ও উসমান (রাঃ) এ-র ব্যাপারে বিলম্ব করেছিলো। এদের সবাই এখন অতীত। আর দ্বিতীয় প্রকার হলো আজকের মুরজিয়াহদের ইরজা, যারা বলে যে, ঈমান হলো শুধু মৌখিক স্বীকৃতি। এ-র সাথে আমলের সম্পর্ক নেই।” এদের মজলিশে বসবে না, এদের সাথে পানাহার করবে না, এদের পেছনে সালাত পড়বে না, এবং এদের জানাযাও পড়বে না”। [তাবারী তার তাহযীবুল আসার এ এটি বর্ননা করেছেন]
কোন সন্দেহ নেই যে এ-ই মাদখালিরা আদি মুরজিয়াহদের চেয়ে ভয়াবহ। কারণ হল ঈমানের ব্যাপারে ভুল ধারণা পোষণ করা সত্ত্বেও আদি মুরজিয়াহরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সহায়তা করতো না বা তাগুতের প্রতি আনুগত্য দেখা তো না।
এমনকি তারা আল্লাহর দ্বীনের বিরুদ্ধে আইন প্রনয়ণকারীদেরকেও সাহায্য করতো না বা দ্বীনের দুশমনদের পক্ষে সাফাই গাইত না। অথচ তাদের উত্তরসূরী আজকের এ-ই মাদখালিরা এগুলোর সবই করছে, এবং নিজেদেরকে এমন পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে যা আদি মাদখালিদের সবচেয়ে চরমপন্থী দল জাহমিয়াদের পর্যন্ত হার মানায়। জাহমিয়ারা রোমক বাহিনীকে সহায়তা করেনি, বা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেই ক্রুসেডারদের পক্ষ হয়ে লড়েনি। কিন্তু তাদেরই এই চরমভ্রান্ত উত্তরসূরীরা শুধু তাগুত শাসকদের পক্ষে সাফাই গেয়েই ক্ষান্ত হয় না, বরং তাগুতের মিত্র ক্রুসেডার বাহিনীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। হয়। এমনকি তাদের জন্য দুয়াও করে। এই ব্যাপারটি এতো ভয়াবহ পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে যে, তাদের খতিবগন মাসজিদুল হারামের মিনবার থেকেও এই দুয়া করেছে, “আল্লাহ আমাদের পক্ষ থেকে আমেরিকাকে কল্যাণ বর্ষিত করো”।
অপরপক্ষে, এদেরকে সবসময়ই তাওহীদের অনুসারীদের প্রতি আক্রমনাত্মক মনোভাব পোষণ করতে দেখা যায়। তারা সেসব দাইদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ প্রদর্শন করে যারা ক্রুসেডারদের সাথে মৈত্রী স্থাপন করা ও কুফফারদের থেকে সাহায্য প্রার্থনা করার বিরোধিতা করে। এ-ই মাদখালিরা মুজাহিদীনদের রক্তকে হালাল ঘোষণা করে, এবং তাওহীদের অনুসারীদেরকে হত্যা করতে তাগুত শাসকদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করে ও তাগুতের দলের শক্তি বৃদ্ধি করে। এই বিষয়ে আমার উপরে উল্লেখিত রিসালাহটিতে আরো বিস্তারিত বর্ননা পাওয়া যাবে।
সব শেষে বলা যায়, এই ভ্রান্ত দলের অন্তর্ভুক্ত এবং এসব জগন্য দোষে দুষ্ট ও এই বিদ্বেষপূর্ণ গোত্রের প্রতি আহবানকারী হবার ব্যাপারে যদি কারো থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় তবে তার পেছনে সালাত পড়া যাবে না, এমন লোককে সম্মান বা মর্যাদা দেয়া যাবে না।
এবার তার পাগড়ী ও দাড়ি যতই লম্বা হোক না কেনো। কারণ এসব লোক তাগুতের সমর্থকের অন্তর্ভুক্ত। ইমাম আহমদকে যখন মুরজিয়াহদের দিকে আহবানকারী কোন ব্যক্তির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, তখন তিনি বলেছিলেন যে, এমন লোককে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ও একঘরে করে রাখতে হবে।
মাদখালিদের গোত্রভুক্ত যেসব লোক আসলেই অজ্ঞতা বা সরলতার দরুন এদের ভ্রান্ত পথে পা বাড়ায় এবং এমন ভ্রান্ত দলের প্রচারক হিসেবে, যাকে ধরা যায় না। এসব লোককে সত্যের পথে দাওয়াত দিতে হবে, যাতে তার সামনে প্রকৃত হক্ব উদ্ভাসিত হয়ে যায়, এবং তার সকল বিভ্রান্তির নিরসন হয়। কিন্তু যদি সে তার এ-ই ভ্রান্তিতে অটল থাকে তবে এমন লোকের পেছনে সালাত আদায় করা যাবে না, যেমনটি উপরে বর্ননা করা হয়েছে। এরা জাহমিয়াদের চেয়েও ভয়ংকর এবং ইমাম আহমদ এ জাতীয় লোকের পেছনে সালাত পড়তে নিষেধ করেছেন। উপরে বর্নিত সকল তথ্যের বিস্তারিত দলিল আমার ‘তুহফাতুল আবরার ফী আহকাম মাসাজিদুদ দিরার’ নামক গ্রন্থে পাওয়া যাবে।