Bengali Translation | এই তো গাজা… | গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (১) | মূল: সালেম আশ শরীফ
مؤسسة النصر
আন নাসর মিডিয়া
An Nasr Media
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
الترجمة البنغالية
বাংলা অনুবাদ
Bengali Translation
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
هذه غزة …
حرب وجود.. لا حرب حدود-١
بقلم: سالم الشريف
এই তো গাজা…
গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয় বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (১)
মূল: সালেম আশ শরীফ
This is Gaza…
A War of Existence, Not a War of Borders
Author: Salem Al Sharif
للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading
লিংক-১ : https://justpaste.it/Ei_to_gaza_5
লিংক-২ : https://mediagram.me/72cb2011d373011b
লিংক-৩ : https://noteshare.id/6K6Vf2x
লিংক-৪ : https://web.archive.org/web/20240704092610/https://justpaste.it/Ei_to_gaza_5
লিংক-৫ : https://web.archive.org/web/20240704092723/https://mediagram.me/72cb2011d373011b
লিংক-৬ : https://web.archive.org/web/20240704093549/https://noteshare.id/6K6Vf2x
روابط بي دي اب
PDF (684 KB)
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৬৮৪ কিলোবাইট]
লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/EMrZbGWmRS8mey6
লিংক-২ : https://archive.org/download/eitogaza5/eito%20gaza%205.pdf
লিংক-৩ : https://banglafiles.net/index.php/s/XHEr4RdEFYKSs3G
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/frj43ed4d46cda6054321aa0885d805112116
লিংক-৫ : https://share.internxt.com/d/d/sh/file/5d5b9e68-a2f0-4930-b71b-4bb851d87d59/5ea479d486b59e3cbd5427acb5f34ba51d8cb84be82877baaef620256e776f46
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/5rvggjzwpt2jd4i/eito+gaza+5.pdf/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/tUBSwQCb#phCqmYR5WYwk9-b9RNU7V-LI-5XFwZ8haMbXY8sy2tc
روابط ورد
WORD (683 KB)
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৬৮৩ কিলোবাইট]
লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/4HJaJwqRxcrKPQx
লিংক-২ : https://archive.org/download/eitogaza5/eito%20gaza%205.docx
লিংক-৩ : https://banglafiles.net/index.php/s/xsoM8waGakrJLoo
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/frj435c5685fa92164ae784caf4e74537d26c
লিংক-৫ : https://share.internxt.com/d/d/sh/file/a165f5fb-1328-4e68-a519-d50c3c7fd119/2a09d852eb6d412904608ae03f7c84d08c1343cf735d5323a6b9b12fcc98cd59
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/2up1jt4ywie0wo1/eito+gaza+5.docx/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/9cIHXb6b#-sUG3FkUi1MksVz7-_rp9DI5O_LgOa697olEBQVTdLU
روابط الغلاف- ١
book cover [2.9 MB]
বুক কভার ডাউনলোড করুন [২.৯ মেগাবাইট]
লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/i7x4Q7Mw4o7Q28Z
লিংক-২ : https://archive.org/download/eitogaza5/ei-to-gaza-5.jpg
লিংক-৩ : https://banglafiles.net/index.php/s/JmJpJ3gQ3tR53ar
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/frj43a9d39d3bac9d48439d145d5ae576c2e7
লিংক-৫ : https://share.internxt.com/d/d/sh/file/856b76f5-88cc-4b5d-a38e-886e83209d0d/41ce9d53a2e9e9a19a34ac3e65c9175e8c80fc709f55751fe06127625cec864b
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/5jdhk3qp7l47jmz/ei-to-gaza-5.jpg/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/1VJ0WaZa#w_M-cGziVLi2DKygsHFW8hK2upVUMh4ge3_5O_t7HAI
روابط الغلاف-٢
banner [2.2 MB]
ব্যানার [২.২ মেগাবাইট]
লিংক-১ : https://archive.gnews.to/index.php/s/oQq4sYaS8MJwLop
লিংক-২ : https://archive.org/download/eitogaza5/ei-to-gaza-5-banner.jpg
লিংক-৩ : https://banglafiles.net/index.php/s/9aPeEwBF94cf7r9
লিংক-৪ : https://workdrive.zohopublic.eu/file/frj43f4b160525bb64847807f865166298587
লিংক-৫ : https://share.internxt.com/d/d/sh/file/914672a3-df7e-4d3c-80e6-81ed189f791a/6c90867876e73ec5dff37e032ca3e61bc71a928627c3207f9212028bafc0dd41
লিংক-৬ : https://www.mediafire.com/file/6uh3uks1q83xpog/ei-to-gaza-5-banner.jpg/file
লিংক-৭ : https://mega.nz/file/xFxWHCRJ#ScXXVpsOO7NClhEyxhthFCWkSc5ScG3o_NDlCMInCz4
*************
بسم الله الرحمن الرحيم
পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
এই তো গাজা… গাজা সংঘাত সীমান্ত নির্ধারণী সংঘাত নয়
বরং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই (১)
জায়নবাদ বর্তমানে মানবজাতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় হুমকি। তাতার গোষ্ঠী, নাৎসি বাহিনী এবং হিন্দুত্ববাদের চেয়েও মানবতার জন্য বিরাট বিপদ। সম্ভবত এই ইহুদীবাদ এক বাক্যে মানবজাতির জন্য সবচেয়ে ভয়ানক আপদ। আল্লাহ তাআলা মানুষকে যেই ফিতরত ও স্বভাব প্রবণতার উপর সৃষ্টি করেছেন, জায়নবাদ পৃথিবীর বুকে বহু আদম সন্তানের সেই বৈশিষ্ট্যকে বিনষ্ট করে দিয়েছে। আধ্যাত্মিক দৈহিক ও চিন্তাগত ভারসাম্য বিকৃত করে দিয়েছে। বহু মানুষের মনুষ্যত্ব পরিবর্তন করে তাদেরকে শয়তান ও অর্থ সম্পদের দাসে পরিণত করেছে। জায়নবাদ মানব সভ্যতার জন্য উপহার হিসেবে দিয়েছে পৌত্তলিক ক্রুসেডারদেরকে, যারা এই ক্রুসেডের জন্য ইউরোপ আমেরিকা আফ্রিকা ভারতবর্ষ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং এমনই আরো বিভিন্ন ভূখণ্ডের জাতিগোষ্ঠীকে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করেছে। ইহুদীবাদ যেখানেই অনুপ্রবেশ করেছে সেই দেশগুলোকেই তাদের ব্যাঙ্কের বিনিয়োগের স্বার্থে অন্ধ আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রবৃত্তির লালসা চরিতার্থ করার পতিতালয়ে পরিণত করেছে। এই জায়নবাদ সর্বদাই সমর্থন করে এসেছে চারিত্রিক বিকৃতি, নারীবাদ এবং আল্লাহ ও আল্লাহ তাআলার শাশ্বত দীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য মন্দ ধারণার প্রচার-প্রসারকে। তারা যেখানেই গিয়েছে সেখানেই যেন ক্ষমতা কর্তৃত্ব এবং সম্পদের ক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে, অজ্ঞতার বিস্তার ঘটাতে পারে, মিথ্যার বাণিজ্য করতে পারে এবং মানুষকে লক্ষ্য উদ্দেশ্যহীন এক প্রাণীতে পরিণত করতে পারে, সেজন্য তারা প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বিগত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে আজ পর্যন্ত আমেরিকা ও ইহুদীরা মানবজাতির এত বিরাট অংশকে হত্যা করেছে এবং এত শহর নগর ধ্বংস করেছে, যা অকল্পনীয়।
এক ব্যক্তি খুব সুন্দর লিখেছেন: “মার্কিন রাখালের পেছনে ইহুদী কুকুর।”[1] এর বিপরীত দিকটাও সঠিক। কাদের স্বার্থে আমেরিকা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে বোকা বানিয়েছে? কাদের জন্য তাদের প্রচণ্ড প্রোপাগান্ডা মেশিনে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছে? আজ অবধি, গাজায় যা কিছু ঘটেছে, তারা এখনও সবকিছুকে ভালো বলে মনে করছে। তারা বুঝতে পারছে না, ইহুদীবাদীরা গাজায় সংঘটিত সবকিছুর প্রতি পুরোপুরি সন্তুষ্ট এজন্যই যে, তাদের রাব্বীদের হাতে অহংকার ও ষড়যন্ত্র করে প্রণীত তাওরাতের মূল পাঠ্যগুলোর সঙ্গে এই হত্যাযজ্ঞ মিলে যাচ্ছে। তারা খুবই উচ্চ অবস্থানে নিজেদেরকে ধরে একটি স্পষ্ট চশমা দিয়ে বিশ্বকে দেখে। তারা মনিব এবং দাস ছাড়া পৃথিবীতে আর কিছুই দেখে না। মনিব হচ্ছে ইহুদীবাদীরা এবং তাদের যেটাই ভালো মনে হবে সেটাই করার পূর্ণ অধিকারে তারা বিশ্বাসী। আর দাস গোষ্ঠী নতুন কেউ নয়; বরাবরই তারা দাস থেকে যাবে।
অবশিষ্ট বিশ্ববাসী যাদের শীর্ষে রয়েছে হিন্দু বৌদ্ধসহ অন্যান্য পৌত্তলিক গোষ্ঠী, আপনারা ভালোভাবে জেনে রাখুন, ইহুদীরা যদি মুসলিমদেরকে নিঃশেষ করে দিতে থাকে, বৈশ্বিক রাজনৈতিক কোনো সমাধানে যাওয়ার পথ থেকে যদি মুসলিমদেরকে এভাবেই দূরে সরিয়ে রাখে, তাহলে আগামী দিনের অন্ধকার রাতে গণহত্যা কার্যক্রমের দ্বিতীয় পর্যায় যখন শুরু হবে, তখন আপনারাই তাদের টার্গেট হবেন। বিশ্বের অন্যান্য জনগোষ্ঠী এবং ইহুদীদের মধ্যে প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক যেই প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে, তা সামরিক সংঘাতের দিকেই এগোচ্ছে। এই সংঘাতে সাফল্যের পরিমাণ অনুসারে প্রত্যেক পক্ষের জন্য নিজেদের সামরিক শক্তির শ্রেষ্ঠত্বের উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হবে কার বাজার কতটা। খুব শীঘ্রই আমরা বহুমেরুর দুর্বল এক বিশ্ব দেখতে পাবো। অচিরেই আমরা এমন বিপর্যয় দেখতে পাবো যা প্রযুক্তি যুগের অবসান ঘটাবে। কারো জানা নেই কি হতে যাচ্ছে। উপসাগরীয় আরবের যে রাজ পরিবারগুলি ক্ষমতা ও সম্পদের একচেটিয়া অধিকারী, যারা আরব জনগণ ও মুসলিম উম্মাহ্ থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে, এই শাসক পরিবারগুলি আমিরাতের ইহুদীবাদী শাসক বিন জায়েদের নেতৃত্বে ইহুদীবাদের গর্তের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে। তারা এমন ব্যক্তিদের পরিণতি থেকে খুব বেশি দূরে নয়, যারা নিজেদের ঈমান-আকীদা চেতনা-মূল্যবোধ, দেশ ও জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।
এরপর ইহুদীচক্র এবং তাদের তল্পিবাহক (আমেরিকা এবং পশ্চিমা) গোষ্ঠীর ব্যাপারে কথা হলো, মানব শুদ্ধি অভিযানে তাদের পালা সবার শেষে আসবে। কারণ ইহুদীরা তাদের পবিত্র গ্রন্থগুলোর নির্দেশনা অনুসারে তারা ব্যতীত অন্য কারো অস্তিত্বে কিছুতেই বিশ্বাসী নয়। তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কোনো সীমা-পরিসীমা তারা দেখে না। পৃথিবী, ভূগর্ভ এবং পৃথিবীর বুকে যা কিছু রয়েছে, তারা সমস্ত কিছুর উপর কর্তৃত্ব বিস্তার করতে চায়। অবশিষ্ট মানব সম্প্রদায় তাদের দৃষ্টিতে গৃহপালিত অথবা হিংস্র জীবজন্তুর অন্তর্ভুক্ত। তাদের ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদী ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এটাই তো পরিচয়। অতএব আজ মানব গোষ্ঠীর সামনে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই, যার কোনো সীমা পরিসীমা নেই।
কিন্তু.. এ কথা মনে রাখতে হবে, তারা অভিশপ্ত জাতি। তারা ব্যর্থ। তাই সবকিছু তাদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী ঘটা অনেক দূরের ব্যাপার। নবীদের ভূমি— যার শীর্ষস্থানে রয়েছে গাজা, এখানেও এমন এক লড়াই চলছে যা অস্তিত্ব রক্ষার; পৃথিবীর বুকে এ লড়াইয়ের না আছে কোনো সীমা, আর না এটি সীমান্ত নির্ধারণী কোনো যুদ্ধ। যুদ্ধরত দুই পক্ষ এবং তাদের লক্ষ্যগুলির মধ্যে ব্যবধান বিশাল। এই যুদ্ধ মুসলিমদের পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীকে এই বার্তা ও নির্দেশনা প্রদান করছে যে, দুনিয়া মুসলিমদের জন্য এমন এক বাহন, যার ওপর আরোহণ করে তারা পথ চলে, এই দুনিয়াকে তারা ব্যবহার করে; নিজেদের জাগতিক স্বার্থের জন্য তারা বেঁচে থাকে না। কারণ মুসলিমদের একমাত্র লক্ষ্য ও চালিকাশক্তি হলো আল্লাহর দীন। অপরদিকে ইহুদী গোষ্ঠী এবং ইহুদীবাদী বাহিনীর দিক থেকে এটা পৃথিবী ও পৃথিবীবাসীর বিরুদ্ধে অহংকার গণহত্যা ও স্বার্থ রক্ষার যুদ্ধ। কারণ তাদের চালিকাশক্তি ও লক্ষ হলো মানব প্রবৃত্তির অসৎ উদ্দেশ্য ও লালসা চরিতার্থ করা। আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:
ٱسۡتِكۡبَارٗا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَكۡرَ ٱلسَّيِّيِٕۚ وَلَا يَحِيقُ ٱلۡمَكۡرُ ٱلسَّيِّئُ إِلَّا بِأَهۡلِهِۦۚ فَهَلۡ يَنظُرُونَ إِلَّا سُنَّتَ ٱلۡأَوَّلِينَۚ فَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ ٱللَّهِ تَبۡدِيلٗاۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّتِ ٱللَّهِ تَحۡوِيلًا
অর্থ: “জমিনে ঔদ্ধত্য প্রকাশ এবং কূট ষড়যন্ত্রের কারণে। আর কূট ষড়যন্ত্র তার উদ্যোক্তাদেরকেই পরিবেষ্টন করবে। তবে কি এরা প্রতীক্ষা করছে পূর্ববর্তীদের প্রতি প্রযুক্ত পদ্ধতির? কিন্তু আপনি আল্লাহর পদ্ধতিতে কখনো কোনো পরিবর্তন পাবেন না এবং আল্লাহর পদ্ধতির কোনো ব্যতিক্রমও লক্ষ করবেন না।” [সূরা ফাতির ৩৫:৪৩]
জিহাদ কিয়ামত পর্যন্ত চালু থাকবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:
لاَ تَزَالُ عِصَابَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى أَمْرِ اللَّهِ قَاهِرِينَ لِعَدُوِّهِمْ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ وَهُمْ عَلَى ذَلِكَ
অর্থ: “আমার উম্মাতের একটি দল আল্লাহর বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে লড়ে যাবে। তারা তাদের শত্রুদের মোকাবিলায় অত্যন্ত প্রতাপশালী হবে। যারা বিরোধিতা করবে, তারা তাদের কোনো অনিষ্ট করতে পারবে না। এভাবে চলতে চলতে তাদের নিকট কিয়ামত এসে যাবে আর তাঁরা এর উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকবে।” [ইমাম মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন]
উক্ত হাদীসের মধ্যে ইসাবা অর্থ হলো উম্মাহর সন্তানদের জামাত ও সংঘবদ্ধ দল। আমরা মুসলিমরা বিজয়ের ব্যাপারে সন্দিগ্ধ নই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন:
إِنَّا لَنَنصُرُ رُسُلَنَا وَٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَيَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡأَشۡهَٰدُ
অর্থ: “নিশ্চয় আমি আমাদের রাসূলগণকে এবং যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সাহায্য করব দুনিয়ার জীবনে, আর যেদিন সাক্ষীগণ দাঁড়াবে।” [সূরা গাফির ৪০: ৫১]
শহীদদের কাফেলা আল্লাহর প্রতিশ্রুতির প্রতি সততা, একনিষ্ঠতা, আস্থা ও বিশ্বাসের দলীল। বিভ্রান্ত দিশেহারা এবং দ্বিধান্বিত ব্যক্তিদের জন্য এটা হলো আলোর মিনার। কারণ এটাই সাফল্যের এমন পথ, যেথায় ক্ষতির নেই কোনো আশঙ্কা।
হে ইহুদীরা! অচিরেই সকলে দেখতে পাবে, তোমাদের রক্তের নেই কোনো মূল্য। যেদিন পাথর ও বৃক্ষ তোমাদের অবসানের ঘোষণা দেবে এবং তোমাদের অপবিত্রতা থেকে পৃথিবীকে পবিত্র করার সুসংবাদ দেবে, ঐদিন পর্যন্ত তোমরা ইহুদীদের জীবনের কোনো মূল্য থাকবে না।… আমরা তোমরা সকলেই এটা বিশ্বাস করি।
অপরাধ ও অপরাধী। এই দুটো শব্দ ব্যবহার করলেই বোঝা যায় না অপরাধীর প্রকৃতি কি এবং তার অপরাধের পরিমাণ কতটুকু? তাই প্রত্যেক অপরাধীকে ওই অপরাধের নামের দিকে সম্বন্ধিত করা উচিত, যেন উক্ত অপরাধের পেছনে তার আইডিওলজি ও আদর্শের বাস্তবতা প্রকাশিত হয়ে যায়। তাই অপরাধনামা এবং অপরাধীদের শুধু নাম ব্যবহার করলেই সমকালীন ব্যক্তিদের সামনে তাদের চিত্র সঠিকভাবে তুলে ধরা হয় না। তাতার নেতা চেঙ্গিস খান, নাৎসি প্রধান হিটলার, সমাজতন্ত্রের স্টালিন, হিন্দুত্ববাদী মোদি এবং সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপ— প্রত্যেকেরই একটি নির্দিষ্ট আদর্শ রয়েছে, যার জন্য সে কাজ করে। এই সকল আদর্শ ও প্রবণতার মধ্যে সর্বনিকৃষ্ট হলো পশ্চিমা ইহুদী জায়নবাদ। ইতিহাস জুড়ে সর্বনিকৃষ্ট রক্ত পিপাসু হচ্ছে ইহুদী গোষ্ঠী এবং তাদের উত্তরসূরি (মেনাখেম বেগিন – Menachem Begin, মোশে দায়ান- Moshe Dayan, এরিয়েল শ্যারন- Ariel Sharon, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু- Benjamin Netanyahu, জো বাইডেন- Joe Biden — এরা হলো বানর ও শূকরের জাত।)
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইহুদী ও জায়নবাদীর মাঝে পার্থক্য করা কি সম্ভব? সাধারণভাবে বিচার করলে দেখা যায়, ইহুদীদের এমন কিছু সম্প্রদায় আছে, যারা ফিলিস্তিনে হিজরত করে আসেনি এবং জায়নবাদ কবুল করেনি? এ থেকে কি বোঝা যায়, তারা মুসলিমদেরকে কিংবা অন্য কোনো জাতিগোষ্ঠীকে ভালোবাসে? এক কথায় উত্তর: কখনোই নয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন:
۞ لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ ٱلنَّاسِ عَدَٰوَةٗ لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱلۡيَهُودَ وَٱلَّذِينَ أَشۡرَكُواْۖ وَلَتَجِدَنَّ أَقۡرَبَهُم مَّوَدَّةٗ لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱلَّذِينَ قَالُوٓاْ إِنَّا نَصَٰرَىٰۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّ مِنۡهُمۡ قِسِّيسِينَ وَرُهۡبَانٗا وَأَنَّهُمۡ لَا يَسۡتَكۡبِرُونَ
অর্থ: “অবশ্যই মুমিনদের মধ্যে শত্রুতায় মানুষের মধ্যে ইহুদী ও মুশরিকদেরকেই আপনি সবচেয়ে উগ্র দেখবেন। আর যারা বলে, ‘আমরা নাসারা’ মানুষের মধ্যে তাদেরকেই আপনি মুমিনদের কাছাকাছি বন্ধুত্বে দেখবেন, তা এই কারণে যে, তাদের মধ্যে অনেক পণ্ডিত ও সংসারবিরাগী রয়েছে। আর এজন্যেও যে, তারা অহংকার করে না।” [সূরা মায়েদা ০৫:৮২]
অধিকৃত ফিলিস্তিনে বসবাসকারী ইহুদী মাত্রই সক্রিয় জায়নবাদী, চাই সে তাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়াশীল ও উগ্রবাদীদের যতই বিরোধিতা করুক না কেন কিংবা তাদের কাজের পাল্টা জবাব থেকে বাঁচার জন্য কিছু ফেস্টুন ও হ্যান্ড ব্যানার বিশ্ববাসীর সামনে সুন্দরভাবে তুলে ধরতে তারা যতই আগ্রহী হোক না কেন? অধিকৃত ভূমিতে শুধু তাদের অবস্থান করাটাই এ কথা বোঝায়, তারা সব কিছুর প্রতি সম্মত, সবকিছু তারা মেনে নিয়েছে এবং সরকারকে সমর্থন করে যাচ্ছে। অপজিশন পার্টি[2] রাজনৈতিক ব্যবস্থারই একটা অংশ, যা কোনো দেশের রাজনৈতিক ভারসাম্য ধরে রাখে। শুধু তাই নয়, কিছুটা অগ্রসর হয়ে আমি এ কথা বলতে চাই, ফিলিস্তিনের ইহুদী মাত্রই সিরিয়াল কিলার। কেউ যদি চায় তার নামের সঙ্গে এই শব্দযুক্ত না হোক তাহলে সে যেন ফিলিস্তিন থেকে চলে যায়। কারণ যারা ফিলিস্তিন দখল করে সেখানে বসবাস করছে, তারা স্বেচ্ছায় এ কাজটা করেছে। এ কারণেই তারা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছে। হে আগ্রাসনকারীরা! নিঃসন্দেহে গাজায় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে আজ তোমরা যা কিছু করছো, সেটাই তোমাদের ধ্বংস নিশ্চিত করে দিচ্ছে। তোমরা আজ গাজায় যা কিছু করছো, ঠিক সেরকমটাই আল্লাহর ইচ্ছায় দুনিয়া আখিরাতে তোমাদের সঙ্গে করা হবে। আল্লাহর কসম! আল্লাহর শপথ! ইনশাআল্লাহ! তোমরা অবরুদ্ধ হবে, ক্ষুধায় পিপাসায় কাতর হবে, তোমরা বিতাড়িত হবে, তোমাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হবে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন:
وَقُلۡنَا مِنۢ بَعۡدِهِۦ لِبَنِيٓ إِسۡرَٰٓءِيلَ ٱسۡكُنُواْ ٱلۡأَرۡضَ فَإِذَا جَآءَ وَعۡدُ ٱلۡأٓخِرَةِ جِئۡنَا بِكُمۡ لَفِيفٗا
“আর আমি এরপর বনি ইসরাঈলকে বললাম, ‘এখন জমিনে বসবাস কর এবং যখন আখিরাতের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হবে তখন তোমাদের সবাইকে আমি একত্র করে উপস্থিত করব।” [সূরাতুল ইসরা ১৭:১০৪]
إِنۡ أَحۡسَنتُمۡ أَحۡسَنتُمۡ لِأَنفُسِكُمۡۖ وَإِنۡ أَسَأۡتُمۡ فَلَهَاۚ فَإِذَا جَآءَ وَعۡدُ ٱلۡأٓخِرَةِ لِيَسُـُٔواْ وُجُوهَكُمۡ وَلِيَدۡخُلُواْ ٱلۡمَسۡجِدَ كَمَا دَخَلُوهُ أَوَّلَ مَرَّةٖ وَلِيُتَبِّرُواْ مَا عَلَوۡاْ تَتۡبِيرًا
“তোমরা সৎকাজ করলে সৎকাজ নিজেদের জন্য করবে এবং মন্দকাজ করলে তাও করবে নিজেদের জন্য। তারপর পরবর্তী নির্ধারিত সময় উপস্থিত হলে আমি আমার বান্দাদের পাঠালাম তোমাদের মুখমণ্ডল কালিমাচ্ছন্ন করার জন্য, প্রথমবার তারা যেভাবে মসজিদে প্রবেশ করেছিল আবার সেভাবেই তাতে প্রবেশ করার জন্য এবং তারা যা অধিকার করেছিল তা সম্পুর্ণভাবে ধ্বংস করার জন্য।” [সূরাতুল ইসরা ১৭:০৭]
আর গাজার ভাইদের ব্যাপারে আল্লাহ পাকের এই বাণী উল্লেখ করতে হয়:
قُلۡ هَلۡ تَرَبَّصُونَ بِنَآ إِلَّآ إِحۡدَى ٱلۡحُسۡنَيَيۡنِۖ وَنَحۡنُ نَتَرَبَّصُ بِكُمۡ أَن يُصِيبَكُمُ ٱللَّهُ بِعَذَابٖ مِّنۡ عِندِهِۦٓ أَوۡ بِأَيۡدِينَاۖ فَتَرَبَّصُوٓاْ إِنَّا مَعَكُم مُّتَرَبِّصُونَ
“বলুন, তোমরা আমাদের দুটি মঙ্গলের একটির প্রতীক্ষা করছ এবং আমরা প্রতীক্ষা করছি যে, আল্লাহ্ তোমাদেরকে শাস্তি দেবেন সরাসরি নিজের পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হাত দ্বারা। অতএব তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমরাও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।” [সূরাতুত তাওবা ০৯:৫২]
ইহুদীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কোনো লাভ হবে না। কারণ সময়টা এখন একে অপরকে শেষ করার। তাদের জন্য ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতির এখন কোনো সুযোগ নেই। দ্বিপাক্ষিক মতবিনিময়ের প্রচেষ্টা তাদের সামনে গণহত্যার সুযোগ আরও উন্মুক্ত করে দেবে। তাদের ঐতিহাসিক জীবনবৃত্তান্ত তাদের আগামী দিনের পরিণতির কথা জানান দিচ্ছে। আল্লাহর নবী মূসা আলাইহিস সালাম নদীর উভয় তীরে লালিত পালিত হয়েছেন। আল্লাহর চোখের সামনে তিনি বেড়ে উঠেছেন। তাঁর হাতে অনেক নিদর্শন ও অলৌকিক বিষয় প্রকাশ পেয়েছে। তিনি স্বজাতিকে ফেরাউনের হাত থেকে মুক্ত করেছেন। আপন লাঠির মাধ্যমে সমুদ্রকে বিদীর্ণ করেছেন। এত কিছু সত্ত্বেও বাছুর পূজারিরা তাঁর নাফরমানি করেছে। তাঁর অবাধ্য হয়েছে। তীহ প্রান্তরে মৃত্যুবরণ করা ছাড়া তারা নিজেদের নষ্ট চরিত্র থেকে বের হতে পারেনি। তারাই হলো বনি ইসরাঈল, যাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ। তিনি তাদের উপর গজব নাযিল করেছেন। তাদের অন্তরকে কঠোর বানিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَبِمَا نَقۡضِهِم مِّيثَٰقَهُمۡ لَعَنَّٰهُمۡ وَجَعَلۡنَا قُلُوبَهُمۡ قَٰسِيَةٗۖ يُحَرِّفُونَ ٱلۡكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِۦ وَنَسُواْ حَظّٗا مِّمَّا ذُكِّرُواْ بِهِۦۚ وَلَا تَزَالُ تَطَّلِعُ عَلَىٰ خَآئِنَةٖ مِّنۡهُمۡ إِلَّا قَلِيلٗا مِّنۡهُمۡۖ فَٱعۡفُ عَنۡهُمۡ وَٱصۡفَحۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلۡمُحۡسِنِينَ
“অতঃপর তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য আমি তাদেরকে লানত করেছি ও তাদের হৃদয় কঠিন করেছি; তারা শব্দগুলোকে আপন স্থান থেকে বিকৃত করে এবং তাদেরকে যে উপদেশ দেয়া হয়েছিল তার একাংশ তারা ভুলে গেছে। আর আপনি সবসময় তাদের অল্প সংখ্যক ছাড়া সকলকেই বিশ্বাসঘাতকতা করতে দেখতে পাবেন, কাজেই তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং উপেক্ষা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ মুহসিনদেরকে ভালোবাসেন।” [সূরা আল মায়েদা ০৫:১৩]
অন্যত্র আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন:
(ধারাবাহিকভাবে সূরা মায়েদার কয়েকটি আয়াত অর্থসহ নিম্নরূপ:)
يَسۡئلُكَ أَهۡلُ ٱلۡكِتَٰبِ أَن تُنَزِّلَ عَلَيۡهِمۡ كِتَٰبٗا مِّنَ ٱلسَّمَآءِۚ فَقَدۡ سَأَلُواْ مُوسَىٰٓ أَكۡبَرَ مِن ذَٰلِكَ فَقَالُوٓاْ أَرِنَا ٱللَّهَ جَهۡرَةٗ فَأَخَذَتۡهُمُ ٱلصَّٰعِقَةُ بِظُلۡمِهِمۡۚ ثُمَّ ٱتَّخَذُواْ ٱلۡعِجۡلَ مِنۢ بَعۡدِ مَا جَآءَتۡهُمُ ٱلۡبَيِّنَٰتُ فَعَفَوۡنَا عَن ذَٰلِكَۚ وَءَاتَيۡنَا مُوسَىٰ سُلۡطَٰنٗا مُّبِينٗا
“কিতাবীগণ আপনার কাছে তাদের জন্য আসমান হতে একটি কিতাব নাযিল করতে বলে; তারা মুসার কাছে এর চেয়েও বড় দাবি করেছিল। তারা বলেছিল, ‘আমাদেরকে প্রকাশ্যে আল্লাহকে দেখাও।’ ফলে তাদের সীমালংঘনের কারণে তাদেরকে বজ্র পাকড়াও করেছিল; তারপর স্পষ্ট প্রমাণ তাদের কাছে আসার পরও তারা বাছুরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল; অতঃপর আমি তা ক্ষমা করেছিলাম এবং আমি মুসাকে স্পষ্ট প্রমাণ প্রদান করেছিলাম।”
وَرَفَعۡنَا فَوۡقَهُمُ ٱلطُّورَ بِمِيثَٰقِهِمۡ وَقُلۡنَا لَهُمُ ٱدۡخُلُواْ ٱلۡبَابَ سُجَّدٗا وَقُلۡنَا لَهُمۡ لَا تَعۡدُواْ فِي ٱلسَّبۡتِ وَأَخَذۡنَا مِنۡهُم مِّيثَٰقًا غَلِيظٗا
“আর তাদের অঙ্গীকার গ্রহণের জন্য তূর পর্বতকে আমি তাদের উপর উত্তোলন করেছিলাম এবং তাদেরকে বলেছিলাম, ‘নত শিরে দরজা দিয়ে প্রবেশ কর’ [১] আর আমি তাদেরকে আরও বলেছিলাম, ‘শনিবারে সীমালংঘন করো না’ এবং আমি তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছিলাম।”
فَبِمَا نَقۡضِهِم مِّيثَٰقَهُمۡ وَكُفۡرِهِم بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِ وَقَتۡلِهِمُ ٱلۡأَنۢبِيَآءَ بِغَيۡرِ حَقّٖ وَقَوۡلِهِمۡ قُلُوبُنَا غُلۡفُۢۚ بَلۡ طَبَعَ ٱللَّهُ عَلَيۡهَا بِكُفۡرِهِمۡ فَلَا يُؤۡمِنُونَ إِلَّا قَلِيلٗا
“অতঃপর (তারা অভিসম্পাত পেয়েছিল) তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের জন্য, আল্লাহর আয়াতসমূহের সাথে কুফরী করার জন্য, নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার জন্য এবং ‘আমাদের হৃদয় আচ্ছাদিত’ তাদের এ উক্তির জন্য। বরং তাদের কুফরীর কারণে আল্লাহ তার উপর মোহর মেরে দিয়েছেন। সুতরাং কেবল অল্প সংখ্যক লোকই ঈমান আনবে।”
وَبِكُفۡرِهِمۡ وَقَوۡلِهِمۡ عَلَىٰ مَرۡيَمَ بُهۡتَٰنًا عَظِيمٗا
“আর তাদের কুফরীর জন্য এবং মারইয়ামের বিরুদ্ধে গুরুতর অপবাদের জন্য।”
وَقَوۡلِهِمۡ إِنَّا قَتَلۡنَا ٱلۡمَسِيحَ عِيسَى ٱبۡنَ مَرۡيَمَ رَسُولَ ٱللَّهِ وَمَا قَتَلُوهُ وَمَا صَلَبُوهُ وَلَٰكِن شُبِّهَ لَهُمۡۚ وَإِنَّ ٱلَّذِينَ ٱخۡتَلَفُواْ فِيهِ لَفِي شَكّٖ مِّنۡهُۚ مَا لَهُم بِهِۦ مِنۡ عِلۡمٍ إِلَّا ٱتِّبَاعَ ٱلظَّنِّۚ وَمَا قَتَلُوهُ يَقِينَۢا
“আর ‘আমরা আল্লাহর রাসূল মারঈয়াম তনয় ঈসা মসীহকে হত্যা করেছি’ তাদের এ উক্তির জন্য। অথচ তারা তাঁকে হত্যা করেনি এবং ক্রুশবিদ্ধও করেনি; বরং তাদের জন্য (এক লোককে) তাঁর সদৃশ করা হয়েছিল। আর নিশ্চয় যারা তার সম্বন্ধে মতভেদ করেছিল, তারা অবশ্যই এ সম্বন্ধে সংশয়যুক্ত ছিল; এ সম্পর্কে অনুমানের অনুসরণ ছাড়া তাদের কোনো জ্ঞানই ছিল না। আর এটা নিশ্চিত যে, তারা তাঁকে হত্যা করেনি।”
بَل رَّفَعَهُ ٱللَّهُ إِلَيۡهِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ عَزِيزًا حَكِيمٗا
“বরং আল্লাহ তাঁকে তাঁর নিকট তুলে নিয়েছেন এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।”
وَإِن مِّنۡ أَهۡلِ ٱلۡكِتَٰبِ إِلَّا لَيُؤۡمِنَنَّ بِهِۦ قَبۡلَ مَوۡتِهِۦۖ وَيَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ يَكُونُ عَلَيۡهِمۡ شَهِيدٗا
“কিতাবীদের মধ্য থেকে প্রত্যেকে তার মৃত্যুর পূর্বে তাঁর উপর ঈমান আনবেই। আর কিয়ামতের দিন তিনি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী হবেন।”
فَبِظُلۡمٖ مِّنَ ٱلَّذِينَ هَادُواْ حَرَّمۡنَا عَلَيۡهِمۡ طَيِّبَٰتٍ أُحِلَّتۡ لَهُمۡ وَبِصَدِّهِمۡ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ كَثِيرٗا
“সুতরাং ভালো ভালো যা ইহুদীদের জন্য হালাল ছিল আমি তা তাদের জন্য হারাম করেছিলাম তাদের জুলুমের জন্য এবং আল্লাহর পথ থেকে অনেককে বাঁধা দেয়ার জন্য।”
وَأَخۡذِهِمُ ٱلرِّبَوٰاْ وَقَدۡ نُهُواْ عَنۡهُ وَأَكۡلِهِمۡ أَمۡوَٰلَ ٱلنَّاسِ بِٱلۡبَٰطِلِۚ وَأَعۡتَدۡنَا لِلۡكَٰفِرِينَ مِنۡهُمۡ عَذَابًا أَلِيمٗا
“আর তাদের সুদ গ্রহণের কারণে, অথচ তা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিল; এবং অন্যায়ভাবে মানুষের ধন-সম্পদ গ্রাস করার কারণে। আর আমি তাদের মধ্য হতে কাফেরদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করেছি।” (সূরা আন নিসা ০৪:১৫৩-১৬১)
আসন্ন অবস্থার ভয়াবহতার মাত্রা যে বুঝতে পারে না, তার উচিত নিজের পিঠকে জায়নিস্টদের চাবুক গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করা।
আগামী দিনের রাতের ব্যাপারে আমরা এ কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, ইহুদীবাদী এবং পৌত্তলিক যারাই মুসলমানদের ধ্বংস কিংবা দুর্বল করার জন্য এবং বিশ্বের নেতৃত্ব ও পরিচালনায় মুসলিমদের ভূমিকা পালন থেকে বিরত রাখার জন্য বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে, তার কারণে মানবতা দুটি জিনিস হারাবে: জীবন এবং বিবেক।
***
ইস্টারের পৌরাণিক কাহিনী[3] এবং ইহুদী জীবনযাত্রায় এর প্রভাব:
তানাখের[4] ছোটগল্পগুলির মধ্যে একটি হলো ইস্টারের বই। এটি একটি উপন্যাস যার বৈধতা এবং ঘটনার কালানুক্রম নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। এখানে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু সেটা নয়। আমাদের মূল বিষয় হলো উক্ত ঘটনা থেকে আমরা কি বুঝতে পারি? তাই আসুন ঘটনার সারসংক্ষেপ আমরা একটু দেখে নিই:
‘মর্দেকাই’ তার চাচাতো বোনের সৌন্দর্যের সুযোগ নিয়ে তাকে পারস্যের রাজার সাথে বিয়ে দিয়েছিল; এই আশায় যে, সম্ভবত তার এই বোন একদিন তাদের কাজে আসবে। মর্দেকাই পরে রাজাকে একটি হত্যার হাত থেকে বাঁচাতে সক্ষম হন। রাজার মন্ত্রী যখন ইহুদীদের নিপীড়ন করতে এবং তাদের নির্মূল করতে চেয়েছিলেন, তখন মর্দেকাই চাচাতো বোন ইস্টারের কাছে আশ্রয় নেন এবং গণহত্যার হাত থেকে ইহুদীদেরকে বাঁচানোর জন্য রাজার মনোযোগ ও ভালোবাসা উপভোগকারী একজন সুন্দরী রাণী হিসাবে তার অবস্থানের সদ্ব্যবহার করেন। এভাবেই সম্রাজ্ঞীর অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে শত্রুর কাছ থেকে প্রতিশোধ নেয়ার এবং রাজার পর রাষ্ট্রের প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা চলমান থাকে। আর ইহুদীদের পরিত্রাণের ঐ দিনটি তাদের জন্য ঈদ তথা উৎসবের দিন হিসেবে পরিগণিত হয়, যার নাম হলো- ‘পুরিম ঈদ’।
গল্প যেদিকে ইঙ্গিত করেছে, ইহুদীদের জীবন আচার অনেকটা সেরকমই ছিল। অবিলম্বেই ইহুদীরা[5] সিদ্ধান্ত গ্রহণের উৎস মূলের কাছাকাছি থাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। তারা এটাকে নিজেদের ক্ষমতা, আত্মরক্ষা, অস্তিত্ব এবং কর্তৃত্বের নিয়ামক শক্তি হিসেবে স্ট্র্যাটেজি বানিয়ে নেয়। তাই তারা তাদের পুরো ইতিহাসে শাসকের কাছ থেকে উপযুক্ত ও অনুকূল একটি দূরত্বে অবস্থান করতে থাকে। এভাবে তারা উপযুক্ত সময়ে সমর্থন দান, ঘুষ এবং নারীদের ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে থাকে। তারা অনেক সংগঠন ও সংস্থার নকশা তৈরি করে, যেগুলোর কাজ হচ্ছে শাসক এবং উচ্চপদস্থ রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। সম্প্রতি ইহুদীরা বাকি ইহুদীদের প্রতিনিধিত্ব করে এ কাজটাই করেছে। ব্রিটেনে রথসচাইল্ড পরিবার এমনটাই করেছিল। ব্রিটেন সে সময় একটি সাম্রাজ্য ছিল। এই কৌশল কাজে লাগিয়ে তারা বেলফোর চুক্তি পাস করায়। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে আমেরিকার জায়নবাদীরা AIPAC নামে একটি সংস্থা তৈরি করে, যা রাষ্ট্রপতি প্রার্থী অথবা কংগ্রেস প্রার্থীদের নির্বাচনের প্রচারে ঘুষ এবং অর্থ প্রদান করে। এভাবেই তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণের উৎস নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়— চাই সেটা হোয়াইট হাউজ হোক কিংবা কংগ্রেস। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো: AIPAC[6] সংস্থাটির সামনে অন্য কোনো আইডিওলজি থেকে আসা কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। আমেরিকার অঙ্গনে তারাই হয় অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্লেয়ার।
সংক্ষেপে এ কথা বলতে হয়: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিমা বিশ্ব এবং বিশেষ করে প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ইহুদীবাদীদের হাতে। কোনো মুসলিম যেন এই স্বপ্ন না দেখেন যে, তাদের এই অবস্থান পরিবর্তন হয়ে যাবে— (ইল্লা মাশাআল্লাহ তথা আল্লাহ যদি অলৌকিকভাবে কিছু চান তাহলে ভিন্ন কথা) বিশেষ করে যখন মুসলিমদের অধিকাংশ শাসক[7] এবং আরবের ক্ষমতাসীন শাসকদেরকে ইহুদীবাদীরা নিজেদের দাস বানিয়ে রেখেছে। তাদেরকে দিয়ে তারা নিজেদের মিশন পরিচালনা করছে। ভেটো অধিকারটাই হলো তাদের এমন ছাতা, যার আশ্রয়ে ইহুদী খুনিদের জন্য নৃশংসতা ও নির্মমতা সহজ হয়ে উঠছে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ইরশাদ করেছেন:
كَيۡفَ وَإِن يَظۡهَرُواْ عَلَيۡكُمۡ لَا يَرۡقُبُواْ فِيكُمۡ إِلّٗا وَلَا ذِمَّةٗۚ يُرۡضُونَكُم بِأَفۡوَٰهِهِمۡ وَتَأۡبَىٰ قُلُوبُهُمۡ وَأَكۡثَرُهُمۡ فَٰسِقُونَ
“কেমন করে চুক্তি বলবৎ থাকবে? অথচ তারা যদি তোমাদের উপর জয়ী হয়, তবে তারা তোমাদের আত্মীয়তার ও অঙ্গীকারের কোনো মর্যাদা দেবে না তারা মুখে তোমাদেরকে সন্তুষ্ট রাখে; কিন্তু তাদের হৃদয় তা অস্বীকার করে; আর তাদের অধিকাংশই ফাসেক।” [সূরা বারাআত ০৯:০৮]
অতএব মনুষ্য বিবেক নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ এই মানবিক মূল্যবোধ ও বিবেক হারাবার ভয় তাদের নেই। মনুষ্যত্ব নিয়ে তারা যা কিছু প্রচার করে, সেগুলো বিশ্ববাসীকে প্রতারিত করে তাদেরকে নিয়ে তামাশা করার জন্য। তারা শুধু শক্তির ভাষাই জানে। কারণ শক্তিমানরাই ইচ্ছে মতো সবকিছু করতে পারে, এরপর বাস্তবতাকে নিজেদের স্বার্থ ও লালসার বলি বানাতে পারে। শক্তি ছাড়া অন্য কোনো কিছু দিয়ে তা সম্ভব নয়।
উপর্যুক্ত অন্ধকার অধ্যায়ের মধ্যেই আমরা দেখতে পাই ইউক্রেন এবং প্যালেস্টাইন ইস্যুতে ইহুদীবাদী স্ববিরোধিতা। فهم لا يدافعون عن أصحاب العيون الملونة والبشرة البيضاء তারা রঙিন চোখ ও সাদা চামড়ার লোকদের পক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলে না। এটাই হচ্ছে বর্ণবাদী পশ্চিমা জনমতের একমাত্র উপযুক্ত ব্যাখ্যা। এভাবেই তারা বনি আদম অন্যান্য জনগোষ্ঠীকে ছোট করে দেখে। বাস্তবতা হচ্ছে, তাদের ন্যায় ইনসাফ তাদের স্বার্থকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। কোনো ইস্যুতে তাদের স্বার্থ থাকলে তারা ইনসাফ দেখাতে চায় এবং ওই ইস্যুতে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে আত্মরক্ষার অধিকারের কথা বলে; এমনকি যদিও সেটা তাদের লিখিত রীতিনীতির বিপরীত হোক না কেন। এ কারণেই দখলদার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। কারণ ইউক্রেন হলো ইউরোপ এবং পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিরক্ষার জন্য প্রথম ফ্রন্টলাইন স্বরূপ। যদি রাশিয়া এই ফ্রন্ট অতিক্রম করে ফেলে, তাহলে হয় রাশিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে অথবা একটি নতুন বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হবে। পক্ষান্তরে যদি ফিলিস্তিনের দিকে তাকাই, তখন দেখা যায়, ফিলিস্তিন দখলকারী ইহুদীদের পক্ষে তারা আত্মরক্ষার কথা বলে; সেটাও আবার ওই ফিলিস্তিনিদের বিপক্ষে, যাদের ভূমি বেদখল হয়ে আছে। কারণ ইহুদীরাই মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পশ্চিমাদের মূল সেতুবন্ধন স্বরূপ। তারা নিজেদের স্বার্থের জন্য যেকোনো বিষয়কে বৈধতা দেয়। অত্যন্ত বাজেভাবে বাস্তবতাকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে পরিবর্তন করে এবং তখন নিজেদের তৈরি আন্তর্জাতিক নীতি ও কানুনকে তারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেয়। তখন কেউ যদি তাদের সঙ্গে তর্ক করতে আসে, তবে সে তাদের মিডিয়া প্রোপাগান্ডা, অপবাদ ও অনৈতিকতার হামলা থেকে বাঁচতে পারে না। অন্ধকারের এই কালো মেঘের নিচে আমরা নিশ্চিত যে, পশ্চিমা ইহুদীবাদী লবি (আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি এবং অন্যান্য) যারা মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তারা গাজায় শোকাহত আমাদের ভাই-বোনের উপর অবরোধ আরোপ করার জন্য খুনি (নেতানিয়াহু) থেকে যেকোনো ইঙ্গিত বা সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছে। যখনই খুনি (নেতানিয়াহু) দাবি করেছিল, UNRWA-এর কিছু কর্মচারী ৭ অক্টোবরের হামলায় অবদান রেখেছে, তখনই পশ্চিমা দেশগুলি খুনি (নেতানিয়াহু)-এর বক্তব্যের সত্যতা যাচাই না করেই UNRWA-এর জন্য তাদের তহবিল বন্ধের উদ্যোগ নেয়। শুধু তাই নয়; পশ্চিমা দেশগুলো ভালো করেই জানে, খুনি নেতানিয়াহু নিকৃষ্ট এক মিথ্যাবাদী। কিন্তু… গাজায় মুসলমানদের দুঃখ-দুর্দশা, অবরোধ ও অনাহার ট্র্যাজেডির অধ্যায়গুলো আরও দীর্ঘায়িত করা এবং ইহুদীদের খুশি করার জন্য পশ্চিমারা এই দ্রুত উদ্যোগ নেয়। এছাড়া তাদের এমন কাজের আর কোনো ব্যাখ্যা নেই। তারা (ইহুদী ও অ-ইহুদী জায়োনিস্ট) মুসলিমদেরকে নির্মূল করার জন্য একটি ফ্রন্ট তৈরি করতে চাচ্ছে। গাজা হলো সেই ফ্রন্টের সূচনা। অতএব জনগণকে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের কথা বলে তারা প্রতারিত করবে সেটা জানা কথা। সেখান থেকে কোনো লাভ আমরা আশা করতে পারি না। কারণ জনগণকে যতক্ষণ স্বায়ত্তশাসনের অধিকার না দেয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদেরকে ফিলিস্তিনে বসবাস করতে কখনোই দেয়া হবে না। শুধু আকাঙ্ক্ষা করলেই কখনো উদ্দেশ্য হাসিল হয় না। অধিকার জোর করে আদায় করে নিতে হয়।
এছাড়াও তাদের অতল বিভ্রান্তির আবর্তে আমি একটি কথা বলতে চাই; যদিও ইহুদীদের ইতিহাস অনেক ঘটনা ও অভিজ্ঞতার সম্ভারে সমৃদ্ধ, কিন্তু তবু এতসব ঘটনা ও অভিজ্ঞতা তাদের কোনো উপকারে আসেনি।[8] এগুলো তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দেয়নি। উল্টো তাদেরকে সীমালঙ্ঘনের পথে নিয়ে গিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
كَلَّآ إِنَّ ٱلۡإِنسَٰنَ لَيَطۡغَىٰٓ
أَن رَّءَاهُ ٱسۡتَغۡنَىٰٓ
“বাস্তবেই, মানুষ সীমালঙ্ঘনই করে থাকে কারণ সে নিজকে অমুখাপেক্ষী মনে করে।” [সূরা আলাক ৯৬:০৬-০৭]
তারা কখনোই এমন কোনো পদক্ষেপ নিয়ে সফল হয়নি যা তাদেরকে আল্লাহর কিংবা মানুষের নিকটবর্তী করে তুলবে। কারণ ইহুদীরা যখনই বাতিল ও অসৎ উদ্দেশ্য স্থির করেছে, সেটাকেই তারা বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়েছে। তারা নিজেদের নবীদেরকে হত্যা করেছে। আল্লাহর মানহাজ ও পথ তারা প্রত্যাখ্যান করেছে। বরাবরই তারা আল্লাহর অলি ও প্রিয় বান্দাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। সত্যপন্থীদেরকে তারা নিপীড়ন করেছে। আজও তারা সেই কাজই করে যাচ্ছ। কারো সঙ্গে তাদের মিলিত হবার প্রয়োজন নেই। তারা নিজেদের মধ্যে ভিত্তিহীন বর্ণবাদ এমনভাবে লালন করেছে, যা গোটা বিশ্ব থেকে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আল্লাহ যাদের ওপর ক্রোধান্বিত হন, তাদেরকে এভাবেই তিনি সকলের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ কারণে কখনোই তারা অবশিষ্ট মানব গোষ্ঠীর সঙ্গে সহাবস্থান করতে সক্ষম হবে না। তাদের পরিণতি খুবই কাঁটা যুক্ত। দিন দিন তাদের অশুভ পরিণাম তাদের নিকটবর্তী হচ্ছে। আমাদের অবশ্যই তাদের দিকে তাকাতে হবে, তাদের ভবিষ্যত গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে এবং তাদের সাথে লড়াই করতে হবে… আমরা নিশ্চিত যে, আজ হোক কাল হোক তারা অবশ্যই একা হয়ে যাবে। এখন তারা ক্ষমতা উপভোগ করার পর এবার যখন তাদের পতন ঘটবে[9], তখন পৃথিবী আর কখনো তাদের অস্তিত্ব দেখতে পাবে না।
তাদের অনাচার ও সীমালংঘনের অবস্থা বোঝাবার জন্য একটি উদাহরণ হলো: খুনি (নেতানিয়াহু) এবং তার ব্যাকটেরিয়া বাহিনী যেভাবে বাইডেন এবং আমেরিকাকে অপমান করেছে! এই খুনি আমেরিকাকে বাধ্য করেছে গাজার জনগণের জন্য সহায়তা সামগ্রী যেন তারা সেভাবেই পৌঁছে দেয়, যেভাবে জর্ডান আকাশ থেকে নিক্ষেপ করে সাহায্য পৌঁছিয়েছে। অথচ অপরাধী বাইডেন ইহুদীদের সমস্ত প্রয়োজনে তাদেরকে আকাশ ও নৌপথে শক্তি সরবরাহ করে আসছে। নেতানিয়াহুর ব্যাপারে বাইডেন আর ধৈর্য ধরতে পারুক কিংবা না পারুক, সে ইহুদীবাদী রাষ্ট্রকে সমর্থন করে যেতে বাধ্য— চাই নেতানিয়াহু অথবা অন্য কেউ তাকে যতই অপমান করুক। কেউ কেউ দাবি করছে যে, নেতানিয়াহু বাইডেনকে অপমান করার জন্য যা করছে তা নিছক একটা নাটক। যেকোনো কিছুরই সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এটা নির্বাচনের বছর এবং কেউই একজন দুর্বল প্রেসিডেন্টকে নির্বাচিত করতে আগ্রহী নয়, কিন্তু তবুও যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তাতে এ বিষয়টা ফুটে উঠছে যে, নেতানিয়াহু এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছে, যা গোটা পশ্চিমকে বিশ্বকে বিব্রত করছে কিংবা বলা যেতে পারে, ইহুদীরা পশ্চিমাদের ওপর তাদের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ প্রদর্শন করছে। ইহুদীরা পশ্চিমাদের দায়িত্ব ও ভূমিকা সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করেই তাদের সাথে জোট করেছে। পশ্চিমাদের কাজ হচ্ছে শুধু সমর্থন করে যাওয়া; মত প্রকাশ করা নয়।
বিশ্বাসঘাতকতার ব্যাপারে সকলেই পেশাদারিত্বের পরিচয় দিচ্ছে। জর্ডান, মিশর, আরব আমিরাত এবং তুরস্ক এসব দেশের শাসকবৃন্দ বীরত্ব ও সাহসিকতার ফাঁকা বুলি শুনিয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় দেশ দুটি গাজার অধিবাসীদের জন্য কিছু ব্যাক্স ফেলেছে, যা জীবন রক্ষার পরিবর্তে জীবনকে আরো শেষ করে দেয়। অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সমর্থনের জন্য বাণিজ্যিক কনভয়গুলো সমস্ত কিছু নিয়ে জর্ডান ও মিশরের ফটকগুলো অতিক্রম করছে। তৃতীয় দেশটির নাগরিক পরিবহনের বিমানগুলো ওই সমস্ত আহতকে স্থানান্তরিত করার কাজে নিয়োজিত আছে, যাদেরকে তাদেরই যুদ্ধবিমানগুলো অধিকৃত ফিলিস্তিনের ইহুদীদের সমর্থনে বোমা হামলা করেছে। (একদিকে যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইহুদীদের সমর্থনে বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে অপরদিকে সেই বোমার আঘাতে আহতদেরকে স্থানান্তরিত করার জন্য বেসামরিক বিমানগুলো ব্যবহার করছে)। আর চতুর্থ দেশটি বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ উত্তপ্ত বাক্যবাণ ছুঁড়ে দিচ্ছে এবং বক্তব্যের মাধ্যমে গাজার অধিবাসীদেরকে সমর্থন জানাচ্ছে, একই সময়ে এই দেশের নৌবহরগুলো অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদীদের কাছে সমস্ত রসদপত্র সরবরাহ করছে। তারা আর কত নিচে নামবে?
***
এই অঞ্চলে কেন ইসরাইলের বীজ বপন করা হলো?
অধিকৃত ফিলিস্তিনে ইহুদীবাদী ও জায়নবাদী চক্র[10] আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের জন্য মূল সেতুবন্ধন। ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদী ও ক্রুসেডারদের ঐতিহাসিক লড়াইয়ে এই দুই গোষ্ঠী জোটবদ্ধ হয়েছে। তারা নিজেদের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক লক্ষ্যগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে অর্জন করতে চাচ্ছে। এসবের সাথেই ইহুদীদের রাজার আত্মপ্রকাশের পটভূমি প্রস্তুত করা, খ্রিস্টানদের পবিত্র বিষয়গুলো রক্ষা করা এবং আল কুদস নিয়ন্ত্রণ করার সম্পর্ক। একইভাবে জায়নবাদী এই চক্র মুসলিমদের যে কোনো বাস্তবসম্মত উন্নতি-অগ্রগতির প্রচেষ্টা অথবা শক্তি অর্জনের পথে মুসলিমদের জন্য হুমকি স্বরূপ। মুসলিম নামধারী তাদের তাবেদার শাসকবর্গকে সুরক্ষা দেয়া_ বিশেষ করে মিশর জর্ডান এবং উপসাগরীয় অঞ্চলগুলোতে শাসকবর্গের গদি টিকিয়ে রাখা, এতদঞ্চলের ইতিহাসকে বিকৃত অপমিশ্রিত ও মিথ্যা প্রতিপন্ন করা, মুসলিমদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধবিগ্রহ উস্কে দেয়া, প্রকৃত শত্রুর ব্যাপারে জনগণের মনে অবহেলা ঢুকিয়ে দেয়া[11] এই অঞ্চলকে এমন ছোট ছোট রাষ্ট্র ও আমিরাতে পুনরায় বিভক্ত করে দেয়া, যারা ক্ষুধা পিপাসা নিবারণের ক্ষেত্রেও পরনির্ভরশীল হবে এবং যাদেরকে নিয়ে খুব সহজেই তামাশা করা যাবে; একইভাবে স্থল ও নৌ বাণিজ্যিক পথগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয়া, তাওহীদ ও একত্ববাদের ভূমিতে নাস্তিকতার প্রচার-প্রসার ঘটানো, এই অঞ্চলের বসবাসকারীদেরকে ভোগ-বিলাস, আমোদ ফুর্তি, অশ্লীলতা ও ব্যাভিচারে অভ্যস্ত করে তোলা, সমকামী সম্প্রদায়কে সমর্থন করা, নৈতিকতা ও প্রকৃতিবিরুদ্ধ নারীবাদীদেরকে সাহায্য করা— উপর্যুক্ত উদ্দেশ্যগুলো সহ এমনই আরো বিভিন্ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য যেই সেতুবন্ধন, পরিবহনকারী বিমান ও মজবুত কেন্দ্র দরকার, সেগুলোরই অপর নাম হলো এক বাক্যে ইহুদী ও ইহুদীবাদী অস্তিত্ব। এই অঞ্চলে ইহুদী গোষ্ঠী এবং তাদেরকে রক্ষাকারী জায়নবাদী লবি হলো ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সামগ্রিক যুদ্ধের অপর নাম। এই ইহুদীবাদীরাই প্রকৃত শত্রু। এই চক্র যে নামেই আসুক (ইহুদী-ইউরোপ-আমেরিকা-আরবের শাসক মহল… অন্য যাই হোক না কেন) — সবই এক।
উপর্যুক্ত উদ্দেশ্যসমূহের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে, যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে তাদের মিশনের কিছু ধর্মীয় কারণ রয়েছে। ইতিপূর্বে ক্রুসেড হামলাগুলো কারণগুলো ব্যক্ত করেছে। এগুলোই নিঃসন্দেহে আমেরিকায় খ্রিস্টীয়-জায়নবাদের কল্পনাকে সুড়সুড়ি দেয়, তাই আমেরিকা কোনো সীমা-পরিসীমা ছাড়াই জায়নবাদীদেরকে সাহায্য করে- যেমনটা করেছে হতভাগা ‘লিন্ডসে গ্রাহাম’ Lindsey Graham এবং তার ভাইয়েরা)। ধর্মীয় কারণগুলি সর্বদাই গণহত্যার মূল প্রণোদনা হিসেবে ইতিহাস জুড়ে চর্চিত হয়ে এসেছে এবং আজও হচ্ছে। ফিলিস্তিনের কৌশলগত অবস্থানের সাথে সম্পর্কিত ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণও রয়েছে। ফিলিস্তিন হলো পূর্ব-পশ্চিমকে সংযুক্তকারী একটি স্থল করিডোর। কারণ লেভান্ট ও মিশরের বাকি অংশগুলোর পাশাপাশি ফিলিস্তিনের উপকূল হলো লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরের মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের জন্য প্রাচ্যের প্রবেশদ্বার। উপসাগরীয় তেল নিয়ন্ত্রণ থেকে রাশিয়া ও অন্যদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রতিহত করা, আরব বাজারে চীনের অংশীদারিত্ব সীমিত করা এবং ক্ষমতা বদলের জন্য অভ্যন্তরীণ যেকোনো বিপ্লব প্রতিরোধ কিংবা বিকৃত করার মধ্য দিয়ে নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে এই অঞ্চলে তাদের আধিপত্য প্রয়োজন।
খুনি (নেতানিয়াহু) এবং তার ব্যাকটেরিয়া বাহিনী বরকতময় অক্টোবরের ৭ তারিখে গাজার জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার একটা স্বর্ণালী সুযোগ খুঁজে পায়। সংঘাতের পরিধি বিস্তৃত করার প্রয়াসে মুসলমানদের উস্কে দেয়াও তাদের প্ল্যানের অংশ। তারা নিজেদের অগ্রযাত্রাকে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং সম্ভবত এই যুদ্ধ আঞ্চলিক পরিসর অতিক্রম করবে (একটি বিশ্বযুদ্ধ দাঁড় করাবে)। তারা বর্তমান পরিস্থিতিকে কাজে লাগানোর জন্য মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের শত্রুদেরকে একাকী অবস্থায় নির্মূল করার জন্য পুরোদমে কাজ করছে। অন্য জনগোষ্ঠী প্রস্তুত হবার আগেই এবং অন্যান্য শক্তি বেড়ে ওঠার আগেই তারা এ কাজ সম্পন্ন করে নিতে চাচ্ছে। তারা চায় এই অঞ্চলকে নতুন করে বণ্টন করতে। নীলনদ থেকে ফুরাত নদী পর্যন্ত তাদের স্বপ্নের ভূমি দখল করে টেম্পল নির্মাণের পর পুরো অঞ্চলে তারা রাজ করতে চায়। তারই ভূমিকা হিসেবে তারা প্রথমে ফিলিস্তিনকে দখল করতে চাচ্ছে। খুনি নেতানিয়াহুর কত সুন্দর দিবা স্বপ্ন! আন্তর্জাতিক জায়নবাদীরা যুদ্ধের শিখা প্রজ্বলিত করতে পারদর্শী- বিশেষ করে তাদের শত্রুদের মধ্যে। যে সমস্ত বিপ্লবী আন্দোলন অথবা দুর্বল রাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে, সেগুলোকে শক্তি খর্ব করে দুর্বলভাবে টিকিয়ে রাখতে চায়। ইউক্রেনে এমনটাই ঘটেছে। কিন্তু ফলাফল তাদের ইচ্ছানুরূপ হবে না কখনোই।
গত শতাব্দীর বহু অভিজ্ঞতা এবং এই শতাব্দীর শুরুর দিকে আফগানিস্তানের বিশেষ অভিজ্ঞতার পর এ বিষয়টা সুস্পষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে, পশ্চিমা বিশ্ব অতঃপর আমেরিকা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার কৌশলগত কারণে যুদ্ধবিগ্রহে সরাসরি আর জড়াবে না। তারা মিত্রগোষ্ঠীকে শুধু সমর্থন দিয়ে, অর্থায়ন করে, সামরিকভাবে শত্রুকে নিঃশেষ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে, শক্তির বড়াই দেখিয়ে, অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিয়ে এবং রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েই ক্ষান্ত থাকবে— যেমন করে ইউরোপ-আমেরিকার ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমারা তাদের প্রতিপক্ষকে সামাজিকভাবে ছিন্নভিন্ন করার জন্য, শত্রুর অভ্যন্তরীণ সংহতিকে নষ্ট করার জন্য, আদর্শগতভাবে বিভক্ত করার জন্য শত্রুবলয়ে প্রবেশের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্যায়ে সফট পাওয়ার ব্যবহার করে। পরবর্তী পর্যায়ে শত্রুপক্ষ বেশিরভাগ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পরে সহজেই তাদেরকে নির্মূল করা যায়। এই কৌশলটি ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমকে ভয়াবহ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। কারণ আমেরিকা আফগানিস্তানে বিব্রতকর মানবিক ক্ষতি ছাড়াও দুই ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমাদের এই কৌশলের ব্যবহার পুরোপুরি দেখতে পাই। ইউক্রেন এমন একটি ফ্রন্টে পরিণত হয়েছে, যেখানে পশ্চিমারা প্রাচ্যের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার জন্য ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করেছে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে কতটা দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে সে কথা নাই বললাম। কিন্তু এই যুদ্ধগুলো সবাইকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে, কারণ আমেরিকা ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে চলেছে, যা একটি বিশ্বযুদ্ধের পথ প্রশস্ত করতে পারে—বিশেষ করে যখন রাশিয়ার পক্ষ থেকে মহাকাশযুদ্ধের প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে। অতএব আপনি যতই সাবধানতা ও বুদ্ধির সাথে কাজ করেন না কেন, রণাঙ্গনে যখন যুদ্ধের আগুন প্রজ্জ্বলিত হয়ে যায়, তখন শাসকবর্গের অহংকার দমিয়ে রাখা যায় না। সেই গর্ব অহংকারের কারণে কারো পক্ষেই বলা সম্ভব নয়, এই যুদ্ধের গতিপথ কি হবে এবং কোথায় গিয়ে যুদ্ধ শেষ হবে? কিন্তু যুদ্ধ যদি শুরু হয়ে যায় তাহলে এতোটুকু অনুমান অবশ্যই সম্ভব: বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে।… কিন্তু যারা সংঘর্ষে জড়ায় না তাদের জন্য এটা ব্যবধান কমানোর একটি পদক্ষেপ হতে পারে![12]
একইভাবে আমরা ফিলিস্তিনের ব্যাপারে পশ্চিমা স্ট্র্যাটেজিও লক্ষ্য করতে পারি। খুনি (নেতানিয়াহু)[13] যদিও একটি নতুন আঞ্চলিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমেরিকাকে মধ্যপ্রাচ্ছে একটি উন্মুক্ত যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু আমেরিকা ও ইউরোপের প্রতিক্রিয়া ও প্রতিউত্তর থেকে এতটুকু বোঝা গিয়েছে, ইউক্রেনে তারা যে ভূমিকা পালন করেছে, এখানেও তার চাইতে অতিরিক্ত কিছু তারা করছে না। এমনকি লোহিত সাগরের অভিযান, প্রথমে ইহুদী জাহাজ, তারপরে ব্রিটিশ ও আমেরিকান জাহাজের জন্য বাব এল মান্দেব বন্ধ করার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে তাদের সামুদ্রিক বাণিজ্য হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমারা স্থল অভিযানে না জড়িয়ে শুধু বিমান হামলা করে ক্ষান্ত থাকছে। তারা বিভিন্ন কারণে এমনটা করছে যার মধ্যে রয়েছে : জিবুতিতে তাদের সামরিক ঘাঁটি আক্রান্ত হবার আশঙ্কা। উক্ত ঘাঁটি ইয়েমেনি জনগণ এবং সোমালিয়ার মুজাহিদীনের নাগালের মধ্যে রয়েছে। তারা জানে যে, ইয়েমেনি জনগণ যুদ্ধবাজ ও সশস্ত্র। আরবের জায়নবাদীরা যদি ইয়েমেনে আল-কায়েদার মুজাহিদীন ও গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে অযৌক্তিক যুদ্ধ ও সীমালঙ্ঘনের মাধ্যমে তাদেরকে ব্যস্ত না রাখত, তাহলে আমরা ঈমান ও হেকমতের অধিকারী ইয়ামেনি সন্তানদের পক্ষ থেকে হৃদয় শীতলকারী উদ্যোগ অবশ্যই দেখতে পেতাম। এই অঞ্চলের জনগণ- ইহুদী, ক্রুসেডার পশ্চিমা গোষ্ঠী এবং তাদের পরিচালিত জায়নবাদী মিশনকে ঘৃণা করার উপর্যুপরি কারণ রয়েছে। জনগণের বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।
উপর্যুক্ত আলোচনার সারসংক্ষেপ হলো, ডক্টর আব্দুল ওয়াহাব আল-মাসরি বলেছেন: ইসরাঈল একটি বিমানবাহী রণতরী মাত্র। দখলদাররা ফিলিস্তিনিদের কোনো অধিকার প্রদান করবে না। প্রতিরোধই একমাত্র সমাধান। ইজরায়েলের পতন অনিবার্য। ইহুদীবাদী আমলারা আরও বেশি বিপজ্জনক।
একটি বিষয় এখানে স্পষ্ট করে দেয়া প্রয়োজন।
ইহুদীদের সমর্থনের জন্য ইসরাঈলমুখী জাহাজগুলোকে বাব এল-মান্দাবে হামলা করার প্রক্রিয়াটি ইহুদীবাদী-ক্রুসেডার পশ্চিমের সব হিসাব-নিকাশ উল্টে দিয়েছে। এই অপারেশনগুলি এমন এক দরজা খুলে দিয়েছে, যা এই অঞ্চলের বাকি জনগণের চোখ খুলে দেখিয়ে দিয়েছে, আমেরিকা ও পাশ্চাত্যের স্বার্থকে আঘাত করতে হবে—চাই সেটা এই অঞ্চলে হোক, পশ্চিমা বিশ্বের কোনো ভূমিতে হোক কিংবা তাদের স্বার্থ জড়িত বিশ্বের যেকোনো জায়গায় হোক। সর্বত্র তাদের স্বার্থ বিরোধী গোপন অপারেশন পরিচালনায় অনুপ্রাণিত করেছে উপর্যুক্ত অপারেশন। পাহাড়ের মতো অটল গাজার মুসলিমদের বিরুদ্ধে যদি গণহত্যা অব্যাহত থাকে, রমযান মাসের আবির্ভাবের সাথে সাথে গোপন অপারেশনের এই পদক্ষেপ এমন লোকদের পক্ষ থেকে যৌক্তিক উদ্যোগ হতে পারে, যারা বিলাসিতা ও অনৈতিকতায় নিমজ্জিত তাদের বিশ্বাসঘাতক শাসকদের কার্যকলাপে হতাশ। শীঘ্রই দেখা যাবে আগামী দিনে কি ঘটতে চলেছে।
খুব শীঘ্রই ইনশাআল্লাহ, জনগণকে নীরব দর্শকের অবস্থান ত্যাগ করতে হবে, উম্মাহ এবং উম্মাহর স্বার্থগুলোকে রক্ষার জন্য নেমে পড়তে হবে। উম্মাহর ভূমিগুলো স্বাধীন করা, সামরিক, রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক ঔপনিবেশিকতার যুগের অবসান ঘটানো এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য এই উম্মাহর কাছ থেকে প্রত্যাশিত ও প্রকৃত ভূমিকা পালন করার জন্য জেগে উঠতে হবে।
কথা এখনো বাকি আছে…..
কথা বলার জন্য সময় আরো বাকি আছে
-সালেম আশ শরীফ
যুদ্ধের পরের দিনের রাত
[1] দ্য ইন্টারসেপ্ট ওয়েবসাইটের (The Intercept) একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে যে, কীভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যমূলকভাবে বেসামরিক নাগরিকদের হামলা করা এবং তাদের হত্যাকে সাধারণ ব্যাপারে পরিণত করাটা জবাবদিহিতার ভয় কিংবা পরিণামের আশঙ্কা ছাড়াই জায়নবাদী সংঘের জন্য একই পথ অনুসরণ করার অনুপ্রেরণা এবং উৎস হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে এবং করে যাচ্ছে? ওই নিবন্ধের উদ্ধৃতাংশ: জাপানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৬৭টি শহর আক্রমণ করে, ১৮০ বর্গমাইল পুড়িয়ে দেয়, ৬০,০০০ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করে, ৮.৫ মিলিয়ন মানুষকে বাস্তুচ্যুত করে, হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে দুটি পারমাণবিক বোমা ফেলে এক মুহূর্তে প্রায় ২১০,০০০ মানুষকে হত্যা করে। কোরিয়ায় এয়ার ফোর্স জেনারেল কার্টিস লেমে দম্ভ করে বলেছিল যে, আমেরিকা এক মিলিয়নেরও বেশি কোরিয়ানকে হত্যা করেছে এবং কয়েক মিলিয়নকে তাদের ভূমি থেকে বাস্তুচ্যুত করেছে। ভিয়েতনামে আমেরিকা ৩০ বিলিয়ন পাউন্ড শেল ফেলেছে, যার ফলে ২১ মিলিয়ন ক্রেটার (গর্ত) হয়েছে। কম্বোডিয়ায় আমেরিকা প্রায় ১৫০,০০০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে এবং লাওসে ২ মিলিয়ন টনেরও বেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বোমা হামলা করেছে- তাহলে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা কত ছিল? সাতটি মুসলিম অঞ্চলে (আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, পাকিস্তান, সোমালিয়া, সিরিয়া এবং ইয়েমেন) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৪৮,০০০ জন পর্যন্ত মুসলমানকে হত্যা করেছে (প্রকৃত সংখ্যা থেকে এটি অনেক কম)। Airwars (এয়ারওয়ারস) নামক যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি বিমান হামলা পর্যবেক্ষণ গ্রুপের ২০২১ সালের বিশ্লেষণ অনুসারে উপর্যুক্ত পরিসংখ্যান এসেছে।
লিঙ্ক
[https://theintercept.com/2023/11/12/amer/ica-wars-bombing-killing-civilians]
[2] ‘বিরোধী দল’ শব্দটি সে অর্থ বোঝায় না, যা আমি বোঝাতে চাই। কারণ দুটি পন্থার একটি অপরটির বিরুদ্ধে লড়াই করা ছাড়া কখনোই সহাবস্থান সম্ভব নয়। বিশ্বের পার্লামেন্টগুলোতে যা ঘটছে তা হলো অভিন্ন পন্থা ও পদ্ধতির ভেতর থেকে বিভিন্নভাবে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। তাদের পন্থা ও ফর্মুলা ভ্রান্ত হওয়ার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রত্যেকে নিজের স্বার্থ এবং নিজের সমর্থকদের স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করে, কিন্তু প্রকৃত বিরোধিতার অর্থ: সামগ্রিক ও ব্যাপক পরিবর্তন। সংসদে বসে সামগ্রিক ও আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। সংসদের নিয়ম-কানুনের অধীন হওয়াও বৈধ নয়। কারণ তারা শুধু নিজেদের পন্থা চাপিয়ে দেয়ার জন্যই অপজিশন পার্টির কথা বলে।
[3] এই ঘটনার বিশদ বিবরণ এস্টারের বইতে পাওয়া যাবে।
[4] তানাখ: ইহুদীদের ঐতিহাসিক নথি। এতে রয়েছে তাওরাত, তাওরাতের পাঁচটি বই, রাজা ও নবীদের ইতিহাস, এই সম্পর্কিত ২১টি বই, মোট ৩৯টি বই। এছাড়াও আরো কিছু পুস্তক রয়েছে যেগুলোর বৈধতা নিয়ে ইহুদী সম্প্রদায়ের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
[5] ইহুদী জাতি ও ইহুদী ধর্মের ইতিহাস শুরু হয় আল্লাহর নবী মুসা আলাইহিস সালামের সিনাই পর্বত থেকে ফেরাউনের প্রাসাদে ফিরে আসার মাধ্যমে।
[6] এই সংস্থার কর্মকর্তারা এবং তাদেরকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে, তারা বিপ্লবীদের টার্গেটের অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত, যাদের শীর্ষে রয়েছে লোন উলফ্ তথা একাকী নেকড়ে দল।
[7] কারো মুনাফেকি ও লৌকিকতার প্রয়োজন আমাদের এই উম্মাহর নেই। মহত্ত্বের সমস্ত উপাদান এই উম্মাহর রয়েছে। বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করা এবং রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন ও প্রভাবশালী হওয়ার জন্য এই উম্মাহর রবের পথে ফিরে যাওয়াই যথেষ্ট। বিশ্বের অনেক জনগোষ্ঠী অচিরেই মুসলিম উম্মতের স্নেহ ভালোবাসা কামনা করবে। কিন্তু উম্মাহর শাসকরা নিজেদের প্রভুর অবাধ্যতা করেছে, নিজেদের বীরত্ব হারিয়েছে, আপন জাতিকে অপমান করেছে এবং শত্রুর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। আমাদের জনগণ যা ভোগ করেছে তা জুলুম অত্যাচারের মুখে আমাদের নীরবতার ফসল। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:
إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوۡمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُواْ مَا بِأَنفُسِهِمۡۗ
অর্থ “নিশ্চয় আল্লাহ্ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন করে।” [সূরা রাদ ১৩:১১]
[8] তবে আমি ওই সমস্ত ব্যক্তিকে ব্যতিক্রম ঘোষণা করছি, যারা নবীদের-কে অনুসরণ করেছেন এবং তাদের পথে চলেছেন।
[9] ثُمَّ رَدَدۡنَا لَكُمُ ٱلۡكَرَّةَ عَلَيۡهِمۡ وَأَمۡدَدۡنَٰكُم بِأَمۡوَٰلٖ وَبَنِينَ وَجَعَلۡنَٰكُمۡ أَكۡثَرَ نَفِيرًا
“তারপর আমরা তোমাদেরকে আবার তাদের উপর প্রতিষ্ঠিত করলাম, তোমাদেরকে ধন ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সাহায্য করলাম এবং সংখ্যায় গরিষ্ঠ করলাম।” [সূরা বনি ইসরাঈল/সুরাতুল ইসরা ১৭:০৬]
[10] কেউ কেউ মনে করেন; জায়নবাদী চিন্তাধারার সূচনা হয়েছিল ইংল্যান্ডে সপ্তদশ শতাব্দীতে কিছু চরমপন্থী প্রোটেস্ট্যান্ট মধ্যবিত্তের হাত ধরে। চরমপন্থী ওই ধারাটি পুনর্গঠনবাদী মতবাদের আহ্বান জানিয়েছিল, যার অর্থ ছিল পরিত্রাণ এবং খ্রিস্টের প্রত্যাবর্তনের জন্য ফিলিস্তিনে ইহুদীদের ফিরে আসা প্রয়োজন। কিন্তু যা ঘটেছিল তা হলো : ইংল্যান্ডের ধর্মনিরপেক্ষ ঔপনিবেশিক সার্কেলগুলো এই থিসিসগুলি গ্রহণ করে এবং সেগুলোকে সেক্যুলারাইজ করে। তারপর উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অ-ইহুদী, এমনকি ইহুদী-বিরোধী চিন্তাবিদদের মাধ্যমে ধারণাগুলো সম্পূর্ণরূপে স্বচ্ছ আকারে সামনে আসে। ইহুদীরা যাকে ‘এন্টি-সেমিটিজম (Anti-Semitism)’ (যার অর্থ দাঁড়ায় সেমিটীয় সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ) বলে, তার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ইহুদীবাদের উদ্ভব হয়েছিল এই সত্যটির দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই ইহুদীবাদী আন্দোলনের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছিল ইউরোপ মহাদেশের ইহুদীদের বাস্তবতাকে একটি জাতীয় রাষ্ট্রে পরিণত করা, যেখানে সারা বিশ্বের ইহুদীরা একত্রিত হবে।
—সূত্র: উইকিপিডিয়া।
[11] ফুটবলকে কেন্দ্র করে মিশর ও আলজেরিয়ার মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর দ্বারা বোঝা যায় শাসকদের কতটা অবনতি ঘটেছে, অথচ দশম রমযানের যুদ্ধে আলজেরিয়া মিশরের সবচেয়ে বড় সমর্থক ছিল!
[12] বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার দ্বারা দূরত্ব ও ব্যবধান যে কমে আসবে সেটা কাদের মধ্যকার দূরত্ব? কিংবা কি দিয়ে ব্যবধান কমবে? দুর্বল এবং সাবেক শক্তিশালীদের মধ্যকার ব্যবধান কমবে কি? নাকি সংঘাত সীমিত করার মতো সহাবস্থানের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির লক্ষ্যে মানবতা, মনুষ্যত্ব ও মানবিক মূল্যবোধকে পরিপক্ক করার পথের দূরত্ব কমবে? নাকি বিশ্ব নেতৃত্বে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রত্যাবর্তনের পথ কমে আসবে?
[13] খুনি (নেতানিয়াহু) এই অঞ্চলের ইহুদীদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি যেকোনো কিছু ধ্বংস করার একটি সুযোগ দেখছে, একই সাথে সাইকস-পিকট চুক্তির ভিত্তিতে এই অঞ্চল বিভক্ত হওয়ার পরে এই অঞ্চলের দেশগুলিকে পুনরায় বিভক্ত ও বণ্টন করার একটি সুযোগ দেখছে। নেতানিয়াহু কি এমন একটি বেপরোয়া সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে, যা এই অঞ্চলকে একটি উন্মুক্ত যুদ্ধে টেনে নিয়ে যাবে? তারপরে আমেরিকা ও ইউরোপকে সে যুদ্ধে টেনে আনবে? আমি এটাকে অসম্ভব মনে করি না। যদি তাই হয় তাহলে মনে রাখতে হবে, ইউক্রেন এবং ফিলিস্তিনে বিশ্বযুদ্ধের ঢোল বেজেই চলেছে? যেকোনো তুচ্ছ কারণে বিশ্বযুদ্ধের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
*************
مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent
আসসালামু আলাইকুম
https://gazwah.net/?p=44574 এ লিংক কাজ করছে না কেন ভায়েরা?
লিংক কাজ করছে পুনরায় চেক দিন।
আসসালামু আলাইকুম।
এ সাইটে আসা একটি বই পড়তে পারছি না। অর্থাৎ ওপেন হচ্ছে না বা লিংক কাজ করছে না। আশা করি, ভায়েরা বিষয়টা বিবেচনায় আনবেন। ইনশাআল্লাহুল আযীয।
বইটির নাম:- ধীরস্থিরতা অবলম্বন করো” সবেমাত্র বইটি আসলো, কিন্তু পড়তে পাচ্ছি না।
লিংক কাজ করছে পুনরায় চেক দিন।
ধীরস্থিরতা অবলম্বন করো, বইটির পেইজ লোড হচ্ছে না, আমি কয়েকবার চেষ্টা করেছি। দয়া করে পুনরায় আপলোড করুন!
পোস্টটি ঠিক করা হয়েছে, চেক দিয়ে দেখেন, আবার সমস্যায় পড়লে জানাবেন ইনশাআল্লা
আমাকে দাওয়াহিলাল্লাহ ফোরামের লিংকটি দেন
আসসালামু আলািকুম
মুহতারম ভায়েরা!
আপনারা তানজিমের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মুসলিমদের পক্ষে কোন বার্তা দিলে ভালো হয়। এ ব্যাপারে আপনাদের অবস্থান কী? আমরা জানতে চাই। এবং আমাদের জাতিরও জানা উচিৎ