আত্মশুদ্ধি- পর্ব-২৪ || তাকওয়ার গুরুত্ব || মাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ
مؤسسة الفردوس
আল ফিরদাউস
Al Firdaws
تـُــقدم
পরিবেশিত
Presents
في اللغة البنغالية
বাংলা ভাষায়
In the Bengali Language
بعنوان:
শিরোনাম:
Titled:
سلسلة تزكية النفس- الحلقة ٢٤
أهمية التقوى
আত্মশুদ্ধি- পর্ব-২৪
তাকওয়ার গুরুত্ব
Self-purification- Episode-24
The importance of taqwa
لمولانا صالح محمود حفظه الله
মাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ
By Mawlana Saleh Mahmud Hafizahullah
للقرائة المباشرة والتحميل
সরাসরি পড়ুন ও ডাউনলোড করুন
For Direct Reading and Downloading
https://justpaste.it/tazkiah-porbo-24
https://archive.vn/gZ4OQ
https://mediagram.me/5fd19702c5e310b3
https://archive.vn/iMFLS
https://web.archive.org/web/20210301…d19702c5e310b3
https://web.archive.org/web/20210301…zkiah-porbo-24
روابط بي دي اب
PDF [883 KB]
পিডিএফ ডাউনলোড করুন [৮৮৩ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/cJRjM8ftP6nJkwD
https://archive.org/details/24.-takwar-gurutto
http://www.mediafire.com/file/1gdc69…rutto.pdf/file
روابط ورد
Word (555 KB)
ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৫৫৫ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/T3fQ7yFME5CoTxj
https://archive.org/details/24.-takwar-gurutto_202102
http://www.mediafire.com/file/gbmld0…utto.docx/file
روابط الغلاف- ١
book Banner [454 KB]
বুক ব্যানার ডাউনলোড করুন [৪৫৪ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/Fef8eFQgQBdibfw
https://archive.org/details/attoshoddi-shriz-24
http://www.mediafire.com/file/qeee8k…iz-24.jpg/file
روابط الغلاف- ٢
Banner [724 KB]
ব্যানার ডাউনলোড করুন [৭২৪ কিলোবাইট]
https://banglafiles.net/index.php/s/AgeG8tkQdEFikMS
https://archive.org/details/24_20210225_20210225
http://www.mediafire.com/file/ysmpgb…8y/24.jpg/file
======================
আত্মশুদ্ধি – ২৪
তাকওয়ার গুরুত্ব
মাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ
সূচিপত্র
দুই. তাকওয়া বা খোদাভীতির ফায়দা কি?. 6
তিন. তাকওয়া অর্জনের উপায় কি?. 10
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ,
আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন, ওয়াস-সালাতু ওয়াস-সালামু আলা সাইয়্যেদিল আম্বিয়া-ই ওয়াল-মুরসালিন,ওয়া আলা আলিহী, ওয়া আসহাবিহী, ওয়ামান তাবিয়াহুম বি ইহসানিন ইলা ইয়াওমিদ্দীন, মিনাল উলামা ওয়াল মুজাহিদীন, ওয়া আম্মাতিল মুসলিমীন, আমীন ইয়া রাব্বাল আ’লামীন।
আম্মা বা’দ:
মুহতারাম ভাইয়েরা! আমরা সকলেই দুরুদ শরীফ পড়ে নেই-
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ،كما صَلَّيْتَ عَلٰى إبْرَاهِيْمَ، وَعَلٰي آلِ إبراهيم، إنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ، اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ، وَعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إبْرَاهِيْمَ، وَعَلٰى آلِ إبْرَاهِيْمَ، إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ.
প্রতি সপ্তাহের ন্যায় আজকে আবারও আমরা তাযকিয়া মজলিসে হাজির হতে পেরেছি, এই জন্য মহান আল্লাহ তা‘আলার দরবারে শুকরিয়া আদায় করি- আলহামদুলিল্লাহ।
তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়
মুহতারাম ভাইয়েরা! আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে: তাকওয়া বা আল্লাহর ভয়। এ বিষয়টিকে আমি তিনটি ভাগে আলোচনা করার ইচ্ছা করেছি। বাকি আল্লাহ তা’আলা তাওফিক দাতা, তিনিই সাহায্যকারী, আল্লাহ আমার জন্য এবং সবার জন্য বিষয়টি সহজ করে দিন। আমীন। তো ভাই বিষয়টিকে আমি তিন ভাগে আলোচনা করার ইচ্ছা করেছি। যথা:
এক. তাকওয়া বা ভয় কাকে বলে?
দুই. তাকওয়া বা খোদাভীতির ফায়দা কি?
তিন. তাকওয়া অর্জনের উপায় কি?
এবার আসুন এক এক করে প্রত্যেকটি বিষয় আমরা জেনে নিই।
এক. তাকওয়া বা ভয় কাকে বলে?
তাকওয়ার শাব্দিক অর্থ ভয় করা, বেঁচে থাকা, আত্মরক্ষা করা ইত্যাদি।
তাকওয়ার পারিভাষিক সংজ্ঞায় আল্লামা ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন:
قال ابن القيم رحمه الله في التقوى في تعريفها الشرعي: حقيقتها العمل بطاعة الله إيمانًا واحتسابًا أمرًا ونهيًا، فيفعل ما أمر الله به إيمانًا بالآمر وتصديقًا بوعده، ويترك ما نهى الله عنه إيمانًا بالناهي وخوفًا من وعيده
زاد المهاجر(10/1)
অর্থ: “ঈমানের সহিত সাওয়াবের বিষয় মনে করে আল্লাহর আনুগত্যে থেকে তাঁর আদেশ ও নিষেধ অনুযায়ী আমল করা, অর্থাৎ আল্লাহ যা আদেশ করেছেন তা বাস্তবায়ন করা আদেশকারীকে বিশ্বাস করে এবং তাঁর প্রতিশ্রুতিকে সত্যায়ন করে। আর আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করা, নিষেধকারীর প্রতি বিশ্বাস রেখে এবং তাঁর ‘ওয়ায়িদ’ তথা ধমক কে ভয় করে”। [10/1 زاد المهاجر]
উলামায়ে কেরাম বলেন, তাকওয়ার মানে হলো নির্জনে গোপনে যে গুনাহের কাজ করেনা তাকে তাকওয়া বলে। আর লোক লজ্জায় গুনাহ থেকে বিরত থাকা একে তাকওয়া বলেনা। তাকওয়া মানেই হলো একাকী নির্জনে গোপনে গুনাহের কাজ না করা, হ্যাঁ, গোপনে যে গুনাহের কাজ করে না সে হলো মুত্তাকী, প্রকাশ্যে তো গুনাহের কাজ করার প্রশ্ন-ই আসে না।
তাকওয়ার তিনটি স্তর
প্রথম স্তর: শিরকমুক্ত হয়ে চিরস্থায়ী জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করা – এ অর্থের ভিত্তিতেই পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
وَأَلْزَمَهُمْ كَلِمَةَ التَّقْوَى
অর্থাৎ “এবং তাকওয়ার বাণী তাদের জন্য অপরিহার্য করলেন”। [সূরা ফাতাহ ৪৮:২৬]
দ্বিতীয় স্তর: সকল প্রকার করণীয় ও বর্জনীয় গুনাহ থকে নিরাপদ দূরে থাকা এমনকি সগীরা গুনাহ থেকেও – ইসলামি শরীয়তের পরিভাষায় তাকওয়া বলতে এ প্রকার তাকওয়াকেই উদ্দেশ্য করা হয়ে থাকে। পবিত্র কুরআনের নিম্নের আয়াতটি এ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে,
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ
অর্থ: “আর যদি জনপদসমূহের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি অবশ্যই আসমান ও জমিন থেকে বরকতসমূহ তাদের উপর খুলে দিতাম”। [সূরা আরাফ ৭:৯৬]
তৃতীয় স্তর: যে সকল কাজ আল্লাহর স্মরণ থেকে অমনোযোগী করে দেয় তা থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়ে সরাসরি আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া
এটাই হলো প্রকৃত তাকওয়া। পবিত্র কুরআনের নিম্নের আয়াতটি এ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلاَ تَمُوتُنَّ إِلاَّ وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
অর্থ: “হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যেভাবে তাঁকে ভয় করা উচিত; আর খবরদার! মুসলিম হওয়া ব্যতীত মৃত্যুবরণ করো না”। [সূরা আল-ইমরান ৩:১০২]
এবার আসুন দ্বিতীয় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাক। আর তা হচ্ছে:
দুই. তাকওয়া বা খোদাভীতির ফায়দা কি?
তাকওয়া বা আল্লাহকে ভয় করার মাঝে অনেক ফায়দা রয়েছে, এই ফায়দা গুলো আবার দুই ভাগে বিভক্ত।
এক. দুনিয়াবি ফায়দা।
দুই. পরকালীন ফায়দা।
তাকওয়ার দুনিয়াবি ফায়দা গুলো কি?
প্রথমে আমরা দুনিয়াবি ফায়দা গুলো কি? তা জেনে নিই।
১. আল্লাহকে ভয় করলে বিপদাপদ থেকে বের হওয়ার রাস্তা আল্লাহ খুলে দেন এবং তার জন্য অকল্পনীয় রিজিকের ব্যবস্থা করে দেন। দুনিয়াতে আমরা বিভিন্ন ধরণের বিপদাপদে পরে থাকি। এই জন্য আল্লাহকে ভয় করতে হবে তাহলে বিপদাপদ থেকে বের হওয়ার রাস্তা পাওয়া যাবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ
অর্থ: “আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে (বিপদাপদ থেকে) নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন। এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দেবেন”। [সূরা তালাক ৬৫:২-৩]
২. আল্লাহকে ভয় করলে তার যাবতীয় বিষয়াদি ও কাজ-কর্মকে আল্লাহ সহজ করে দিবেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مِنْ أَمْرِهِ يُسْرًا
অর্থ: “যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন”। [সূরা তালাক ৬৫:৪]
৩. যে আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তার জন্য বরকতের দরজা সমূহ খুলে দিবেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ وَلَـكِن كَذَّبُواْ فَأَخَذْنَاهُم بِمَا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
অর্থ: “আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেজগারি অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানি ও পার্থিব নেয়ামত সমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের কারণে”। [সূরা আরাফ ৭:৯৬]
৪. যে আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তাকে হক্ব-বাতিলের মাঝে পার্থক্যকারী আক্বল দান করবেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
يِا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إَن تَتَّقُواْ اللّهَ يَجْعَل لَّكُمْ فُرْقَاناً وَيُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ وَاللّهُ ذُو الْفَضْلِ الْعَظِيمِ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় করতে থাক, তবে তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন এবং তোমাদের থেকে তোমাদের পাপকে সরিয়ে দেবেন এবং তোমাদের ক্ষমা করবেন। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ অত্যন্ত মহান”। [সূরা আনফাল ৮:২৯]
৫. যে আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তার সঙ্গী হয়ে যাবেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
إِنَّ اللّهَ مَعَ الَّذِينَ اتَّقَواْ وَّالَّذِينَ هُم مُّحْسِنُونَ
অর্থ: “নিশ্চয় আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন, যারা পরহেজগার এবং যারা সৎকর্ম করে”। [সূরা নাহল ১৬:১২৮]
৬. যে আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তাকে দ্বীনি ইলম শিক্ষা দিবেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَاتَّقُواْ اللّهَ وَيُعَلِّمُكُمُ اللّهُ وَاللّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
অর্থ: “আল্লাহকে ভয় কর তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন”। [সূরা বাকারা ২:২৮২]
৭. যারা আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তাদেরকে কাফেরদের ক্ষতি ও ষড়যন্ত্র থেকে হেফাজত করবেন।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَإِن تَصْبِرُواْ وَتَتَّقُواْ لاَ يَضُرُّكُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا إِنَّ اللّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطٌ
অর্থ: “যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে তাদের প্রতারণায় তোমাদের কোনই ক্ষতি হবে না। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে সে সমস্তই আল্লাহর আয়ত্তে রয়েছে”। [সূরা ইমরান ৩:১২০]
এই তো গেল দুনিয়াবি ফায়দার কথা, এবার আসুন জেনে নিই পরকালীন ফায়দা কি?
তাকওয়ার পরকালীন ফায়দাঃ
আল্লাহকে ভয় করলে আখিরাতে কি লাভ আর কি ফায়দা? আখিরাতেও অনেক ফায়দা আছে। যথা:
১. যে আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তার পিছনের গুনাহ সমূহকে মাফ করে দিবেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُعْظِمْ لَهُ أَجْرًا
অর্থ: “যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার পাপ মোচন করেন এবং তাকে মহাপুরষ্কার দেন”। [সূরা তালাক ৬৫:৫]
২. যার মাঝে আল্লাহর ভয় আছে তার পরকালীন ঠিকানা হবে জান্নাত। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ وَنَهَى النَّفْسَ عَنِ الْهَوَى فَإِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَأْوَى
অর্থ: “পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশি থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে, তার ঠিকানা হবে জান্নাত”। [সূরা নাজিয়াত ৭৯:৪০-৪১]
৩. যে আল্লাহকে ভয় করবে আল্লাহ তাকে দু’টি জান্নাত দিবেন। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ جَنَّتَانِ
অর্থ: “যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে পেশ হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্যে রয়েছে দু’টি উদ্যান”। [সূরা আর-রহমান ৫৫:৪৬]
৪. যারা আল্লাহকে ভয় করবে তাকওয়া অর্জন করবে তাদের জন্য রয়েছে পরকালীন সফলতা. উদ্যান, আঙ্গুর, সমবয়স্কা, পূর্ণযৌবনা তরুণী, এবং পূর্ণ পানপাত্র ইত্যাদি। যার ঘোষণা আল্লাহ তা’আলা এভাবে দিয়েছেন,
إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ مَفَازًا حَدَائِقَ وَأَعْنَابًا وَكَوَاعِبَ أَتْرَابًا وَكَأْسًا دِهَاقًا
অর্থ: “পরহেজগারদের জন্যে রয়েছে সাফল্য। উদ্যান, আঙ্গুর, সমবয়স্কা, পূর্ণযৌবনা তরুণী। এবং পূর্ণ পানপাত্র”। [সূরা নাবা ৭৮ : ৩১- ৩৪]
৫. এমনিভাবে যারা আল্লাহকে ভয় করবে তাদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরণের নেয়ামতরাজি। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
مَثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ فِيهَا أَنْهَارٌ مِّن مَّاء غَيْرِ آسِنٍ وَأَنْهَارٌ مِن لَّبَنٍ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُ وَأَنْهَارٌ مِّنْ خَمْرٍ لَّذَّةٍ لِّلشَّارِبِينَ وَأَنْهَارٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى وَلَهُمْ فِيهَا مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ وَمَغْفِرَةٌ مِّن رَّبِّهِمْ كَمَنْ هُوَ خَالِدٌ فِي النَّارِ وَسُقُوا مَاء حَمِيمًا فَقَطَّعَ أَمْعَاءهُمْ
অর্থ: “পরহেজগারদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপঃ তাতে আছে পানির নহর, নির্মল দুধের নহর যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। তথায় তাদের জন্যে আছে রকমারি ফল-মূল ও তাদের পালনকর্তার ক্ষমা। পরহেজগাররা কি তাদের সমান, যারা জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে এবং যাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি অতঃপর তা তাদের নাড়িভুঁড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেবে?” [সূরা মুহাম্মাদ ৪৭:১৫]
তাহলে এবার আমরা জেনে নিব তিন নাম্বার বিষয়টি, আর তা হচ্ছে:
তিন. তাকওয়া অর্জনের উপায় কি?
অর্থাৎ তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জনের উপায় কি? এর উত্তরে বলব তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জনের উপায় কয়েকটি;
১. দোয়া,
২. সৎ ও সত্যবাদী মুত্তাকীদের সোহবত,
৩. হিম্মত
৪. আল্লাহর মোহাব্বত।
প্রথমত তাকওয়া অর্জনের জন্য দোয়া করা, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেও তাকওয়ার জন্য দোয়া করেছেন। যেমন মুসলিম শরীফের হাদিস হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত,
عن عبدلله بن مسعود رضي الله عنه : ((عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ “ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى)) رواه مسلم.
দোয়ার অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাকে হেদায়েত ও তাকওয়া দান করুন এবং সংযম, পবিত্রতা ও মুখাপেক্ষীহীনতা দান করুন”।(মুসলিম হাদিস নং ৬৭৯৭)
অতএব আমরাও এই দোয়া বেশি বেশি করব ইনশা আল্লাহ।
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে সৎ ও সত্যবাদীদের সোহবত গ্রহণ করা। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক”। [সূরা তাওবা ৯:১১৯]
তৃতীয়ত হিম্মত। যতটুকু হিম্মত আল্লাহ তা’আলা দিয়েছেন তা কাজে লাগানো এবং এভাবে আগে বাড়তে থাকা। হিম্মত এমন এক শক্তি যার মোকাবেলা করার মতো অন্য কোনো শক্তি দুনিয়াতে নেই। একটি উদাহরণের দ্বারা বিষয়টি বুঝি, এই যে দেখুন সিগারেটের অভ্যাস। কত মানুষ সিগারেটের অভ্যাস ছেড়ে দিয়েছে। নিয়ত করে, খাবে না, আবার শুরু করে। আবার নিয়ত করে, খাবে না, আবার শুরু করে। এভাবে শেষবার যখন দৃঢ়তার সাথে বলে- নাহ্, আর খাব না। তখন আর খায় না। তো এই হিম্মতটা আল্লাহর কাছে অনেক দামী। হিম্মতের সাথে আল্লাহর রহমতের খুব বেশি সম্পর্ক। হিম্মত হলে আল্লাহর রহমত আসে। গুনাহ থেকে বাঁচার, তাকওয়া হাসিল করার যত উপায় আছে এর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর হলো হিম্মত করা। আল্লাহ দেখছেন, বান্দা আমার জন্যে চেষ্টা করছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَمَنْ أَرَادَ الْآَخِرَةَ وَسَعَى لَهَا سَعْيَهَا وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَأُولَئِكَ كَانَ سَعْيُهُمْ مَشْكُورًا
অর্থ: “আর যারা পরকাল কামনা করে এবং মুমিন অবস্থায় তার জন্য যথাযথ চেষ্টা-সাধনা করে, এমন লোকদের চেষ্টা স্বীকৃত হয়ে থাকে”। [সূরা বনী-ইসরাঈল ১৭:১৯]
এ আয়াতের وَسَعَى لَهَا -এর দ্বারা হিম্মত বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা এই হিম্মতের কদর করবেন- এই ওয়াদা আল্লাহ তা’আলা আগেই দিয়েছেন। বান্দা হিম্মতকে কাজে লাগালে আল্লাহ বলেন, আমি হিম্মতের শোকর করব। এ জন্যে দেখা যায়, বান্দা যখন তার সর্বোচ্চ হিম্মতকে কাজে লাগায়, তখন সে সফল হয়ই। হিম্মতের সাথে আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا وَإِنَّ اللَّهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِينَ
অর্থ: “যে মুজাহাদা করবে আমি তাকে আমার পথে পরিচালিত করব। যারা আমার পথে সাধনায় আত্মনিয়োগ করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করব। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সাথে আছেন”। [সূরা আনকাবূত ২৯:৬৯]
এখানে ‘রাস্তা দেখাব’ দ্বারা তরজমা করার চেয়ে ‘পরিচালিত করব’ দ্বারা তরজমা করা সুন্দর। কারণ রাস্তা তো আল্লাহ কুরআন সুন্নাহর মাধ্যমে দেখিয়েছেন। এখানে অর্থ হলো, আল্লাহ তা’আলা তার পথে পরিচালিত করবেন। উলামাদের কেউ কেউ এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, এখানে বলা হয়েছে মুজাহাদা করার কথা। আর আসল মুজাহাদা হলো হিম্মত ব্যবহার করা। বান্দা তার হিম্মত ব্যবহার করলে আল্লাহর নুসরত আসবেই। এই জন্য ভাই সকল ভালো কাজ হিম্মতের সাথে করার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ।
হিম্মত বিষয়ক একটি ঘটনা
হিম্মত কাকে বলে একটি ঘটনা বললে হয়ত বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে। ঘটনাটি হচ্ছে:
জিগার মুরাদাবাদীর ঘটনা, সে ছিল একজন মদ্যপ ব্যক্তি। একবার খাজা আযীযুল হাসান মাজযুব রাহ.-এর সাথে তার দেখা। তিনি বললেন, খাজা সাহেব, থানবী রাহ.-এর কাছে যেতে ইচ্ছা হয়। কিন্তু অবস্থা তো দেখতেই পাচ্ছেন। এ চেহারা সুরত নিয়ে এমন একজন আলিমের কাছে কীভাবে যাই! খাজা সাহেবও বললেন, হ্যাঁ, এই হালতে কীভাবে যাবেন। সৌভাগ্যক্রমে খাজা সাহেব হযরত থানবী রাহ.-কে কথাগুলো বললেন- জিগার মুরাদাবাদীর সাথে দেখা হয়েছিল। সে এই এই বলেছিল, আমি এই এই বলেছিলাম। হযরত থানবী রাহ. বললেন, আহ! খাজা সাহেব, আমি তো মনে করেছিলাম, তাসাউফের সাথে আপনার মোনাসাবাত হয়ে গেছে। এখন তো দেখছি, এর হাওয়া-বাতাসও আপনার গায়ে লাগেনি। আপনার তো বলা উচিত ছিল- না, এই অবস্থার মধ্যেই আস। যে হালতে আছ, এসে যাও। জিগার মুরাদাবাদীর সাথে খাজা সাহেবের আবার যখন দেখা হলো, তখন খাজা সাহেব জিগার মুরাদাবাদীকে হযরত থানবী রহ. এর কথাগুলো বললেন। হযরতের কথা শুনে জিগার মুরাদাবাদীর কিছুটা হিম্মত হল। তিনি শরাব-পানে অভ্যস্ত ছিলেন। হযরতের কাছে যখন আসা-যাওয়া শুরু করলেন, তখন তওবা করলেন, আর শরাব পান করবেন না। শরাব পান করার পুরানো অভ্যাস তার ছাড়তে অনেক কষ্ট হল। শরাব ছেড়ে দেওয়ার কারণে যখন তার জান যায় যায় অবস্থা তখন একজন বলেছিল, এমন হালতে তো হারাম খাওয়াও জায়েজ। তিনি বললেন, না। জান বের হয়ে গেলেও আমি শরাব পান করব না। তো ভাই দেখুন এটা ছিল তার হিম্মত। ঘটনা এখানেই শেষ।
হিম্মত এটা কোনো ওয়াজের বিষয় না। এটা কাজে লাগানোর বিষয়। সুতরাং এই হিম্মতকে কাজে লাগিয়ে আমরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকব এবং নেক আমল করার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ।
তাকওয়া অর্জনের চার নাম্বার উপায় হল আল্লাহর মোহাব্বত।
দিলে আল্লাহর মোহাব্বত বাড়াতে হবে। দুনিয়াতে স্বভাবগতভাবেই মানুষের কারো না কারো প্রতি টান থাকে, দুর্বলতা থাকে। সেটার উপর কেয়াস করে (মিলিয়ে) আপনি আল্লাহর মোহাব্বতটাকে বুঝতে পারেন। কারো প্রতি আপনার দুর্বলতা থাকলে আপনি তার সাথে কেমন আচরণ করেন? অথচ সে মাখলুক। আপনার উপর তার যদি কোনো ইহসান থাকেও তাহলে তা আল্লাহর তাওফিকে হয়েছে এবং ঘুরে ফিরে তার সকল ইহসান আল্লাহর দিকেই যাবে। এরপরও তার প্রতি আপনার এত রেয়ায়েত, এত দুর্বলতা! আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নেয়ামতের মধ্যে তো সেও ডুবে আছে, আপনিও ডুবে আছেন। তার প্রতি যদি আপনার এত মোহাব্বত সৃষ্টি হয় তাহলে আল্লাহর সাথে আপনার মোহাব্বত কেমন হবে? কেমন হওয়া উচিত?
স্বভাবগতভাবেই মানুষের মধ্যে আল্লাহর মোহাব্বত সবচেয়ে বেশি থাকে। কিন্তু আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ না করার কারণে সেই মোহাব্বত চাপা পড়ে থাকে। তো ভাই আল্লাহর মোহাব্বত বাড়ানোর কিছু উপায় রয়েছে। যেমন- আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্মরণ করা। বেশি বেশি জিকির করা। কুরআন তিলাওয়াত করা। যাদের ভেতরে আল্লাহর মোহাব্বত আছে তাদের কাছে বেশি বেশি যাওয়া ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে যেটা আমার কাছে সহজ লাগে সেটা দিয়ে আমি আল্লাহর মোহাব্বত বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারি। আল্লাহর মোহাব্বত বাড়ানোর চেষ্টা করতে গেলেই মানুষ একটা ধাক্কা খায়। হয়ত কখনো গুনাহ হয়ে গেলে ধাক্কা খাবে। অথবা কখনো নেক আমল ছুটে গেলে ধাক্কা খাবে। এভাবে ধাক্কা খাবে একবার, দুইবার, তিনবার, চারবার। তারপরে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ। এটা অনেক বড় একটা কৌশল। আল্লাহর মোহাব্বত বাড়াতে হবে এবং মোহাব্বতটাকে হাজির করতে হবে। অনুশীলন করতে করতে মোহাব্বতটাকে হাজির করতে হবে। আমার আল্লাহ নারাজ হবেন- এই ভেবে গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
আমাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় এমনটা হয় যে, আমার মুরুব্বী বা উস্তাদ যদি আমাকে এই কাজটা করতে দেখেন, তাহলে তিনি কী ভাবতেন? আমি কি এই কাজটা তার সামনে করতে পারতাম? অথচ মুরুব্বী আমার চোখের আড়ালে আর আমিও তার চোখের আড়ালে। তো একজন মুরুব্বীর বা উস্তাদের বেলায় যখন এ কথা ভাবতে পারি, তাহলে আমার আল্লাহ সম্পর্কে কি এ কথা ভাবতে পারি না? আমার আল্লাহ তো আমাকে সব সময় দেখেন। তিনি আমার চোখের আড়ালে হলেও আমি তো আল্লাহর চোখের আড়ালে না। হাদিসে জিবরাঈলে বলা হয়েছে ‘তুমি যদিও তাকে দেখ না, তিনি তো তোমাকে অবশ্যই দেখেন’। তাহলে কি বুঝলাম ভাই? আমাদেরকে আল্লাহর মোহাব্বত বাড়াতেই হবে।
এ চারটা বিষয়ে আমরা ধোঁকায় থাকি, গাফিলতে থাকি, এজন্য আমাদের কাছে সবই কঠিন মনে হয়। কিন্তু যদি চিন্তা করা হয় তাহলে দেখা যাবে, এ চারটার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন হলো, হিম্মত। আবার হিম্মতের চেয়েও কঠিন হলো চেষ্টা করা। আমাদের মধ্যে নূন্যতম যে হিম্মত আছে সেটাকে কাজে লাগিয়ে আরো আগে বাড়া উচিৎ। হিম্মতকে কাজে লাগিয়ে আরেকটু আগে বাড়ার চেষ্টা করি সবাই। তো হিম্মত অনেক শক্তিশালী নেয়ামত। শুধু একটু তাওয়াজ্জুহ ও মনোযোগ দেওয়া দরকার।
বিভিন্ন দোষ-ত্রুটি ত্যাগ করার ইচ্ছা মানুষ এই ভেবে বাদ দেয় যে, অভ্যাস হয়ে গেছে। অভ্যাস ত্যাগ করা খুব কঠিন। সব কঠিনের পেছনে কারণ হলো, আমরা এই চার হাতিয়ার কাজে লাগাই না। শুধু একটাকে লাগাই আর সেটা হলো শুধু দোয়া করি। শুধু দোয়া এমন হাতিয়ার যা একা কখনো যথেষ্ট নয়। শুধু দোয়ার হাতিয়ার কাজে লাগানো মানে দোয়ার না-শোকরি করা। আসল দোয়া তো হলো, দিল হাজির রেখে আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে নেওয়া।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
أَمَّن يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ
অর্থ: “বল তো কে নিরুপায় মানুষের ডাকে সাড়া দেন ‘যখন সে ডাকে’? [সূরা নামল ২৭:৬২]
‘ইযতিরারী হালত’ বা নিরুপায় অবস্থা যখন মানুষের পয়দা হবে, দিল হাজির রেখে যখন মানুষ দোয়া করবে তখন যত বড় গুনাহগারই হোক আল্লাহ সাথে সাথে দুআ কবুল করে নেবেন। আর এই ‘ইযতিরারী হালত’ তখন পয়দা হবে, যখন অন্য সকল হাতিয়ারকে কাজে লাগানো হবে। এসকল হাতিয়ার ব্যবহার করা ছাড়া ‘ইযতিরারী হালত’ বা নিরুপায় ভাব পয়দা হওয়া কখনো সম্ভব না। সেজন্য শুধু এক হাতিয়ার ব্যবহার করা যেন কোনো হাতিয়ারই ব্যবহার না করা।
তো ভাই তাকওয়া অর্জনের চারটি হাতিয়ারের কথা বলা হয়েছিল: ১. দোয়া, ২. সৎ ও সত্যবাদী মুত্তাকীদের সোহবত, ৩. হিম্মত ৪. আল্লাহর মোহাব্বত। অতএব কেউ যদি তাকওয়া অর্জন করতে চায়, তাহলে এ চার পদ্ধতি তাকে অবলম্বন করতে হবে। আমরাও এই পদ্ধতি গুলো প্রয়োগ করার চেষ্টা করব ইনশা আল্লাহ।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সর্বক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করার তাওফিক দান করুক। আমাদের মুজাহিদ ভাইদেরকে সব জায়গায় কাফেরদের ওপর বিজয়ী হওয়ার তাওফিক দান করুন। সর্বপ্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থেকে আ’মালের উন্নতি করার তাওফিক দান করুন। জিহাদ ও শাহাদাতের পথে ইখলাসের সাথে অগ্রসর হওয়ার তাওফিক দান করুন। পরকালে আমাদেরকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন। আমীন।
প্রিয় ভাইয়েরা, আমাদের আজকের মজলিস এখানেই শেষ করছি। ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ।
আমরা সকলে মজলিস থেকে উঠার দোয়া পড়ে নিই।
سبحانك اللهم وبحمدك،أشهدأن لاإله إلا أنت،أستغفرك وأتوب إليك
وصلى الله تعالى على خير خلقه محمد وآله واصحابه اجمعين
وآخردعوانا ان الحمد لله ربالعالمين
***********
আস-সালামু আলাইকুম।
মুহতারাম আখি ফিদ্দীন!
আপনাদের প্রকাশিতঃ আত্মশুদ্ধি সিরিজ || মাওলানা সালেহ মাহমুদ হাফিজাহুল্লাহ।
আল-হামদুলিল্লাহ্ সময় সুযোগে সেগুলো অধ্যয়নের তাওফিক হয়। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আপনাদের কাজে বারাকাহ দিন ও নিরাপদে রাখেন। আমীন।
তো এ সিরিজের ২৪ পর্ব থেকে মাত্র তিনটি পর্ব (১৫, ১৯ ও ২৩ নং পর্ব) বেশ কিছু দিন যাবত যতভাবে সাধ্যছিল খোঁজার চেষ্টা করছি, কিন্তু সেগুলো আমার দৃষ্টিগোছর হয়নি! পরিশেষে ভাইদের স্মরণাপন্ন হলাম, ইনশাআল্লাহ্ যদি ভাইদের মুহলত হয় আশা করছি এ দুটোর ডক ও পিডিএফ ফাইলের সচল লিংক দিবেন।
জাঝাকুমুল্লাহু খাইরান।