আল-ফিরদাউস মিডিয়া ফাউন্ডেশনমিডিয়াশাইখ আবু আব্দির রহমান মাক্কী হাফিজাহুল্লাহশামহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

পিডিএফ/ওয়ার্ডঃ শরঈ আদালতে বিচার প্রার্থনার ব্যাপারে নসিহত || শাইখ আবু আব্দুর রহমান মাক্কি হাফিজাহুল্লাহ

শরঈ আদালতে বিচার প্রার্থনার ব্যাপারে
নসিহত
মূল- শাইখ আবু আব্দুর রহমান মাক্কি হাফিজাহুল্লাহ
অনুবাদ- সুলাইমান হাম্মাদ
অনলাইনে পড়ুন
অনলাইনে ছড়িয়ে দিন
ডাউনলোড করুন
pdf
word
***********************

fa5aae8400871c9c60bbd8390c93b699.jpg

 

শরঈ আদালতে

বিচার প্রার্থনার ব্যাপারে

নসিহত

মূল- শাইখ আবু আব্দুর রহমান মাক্কি হাফিজাহুল্লাহ

অনুবাদ- সুলাইমান হাম্মাদ

[আলিম, দাঈ ও অনুবাদক]

 

31901f7da4337f5256118985f2466070.png

********************

الحمدلله رب العالمين. والصلاة والسلام على رسوله الأمين

আল্লাহ তা’আলা বলেছেন—

ومن يسلم وجهه الى الله وهو محسن فقد التمسك بالثروة الوثقي

“যে সৎকর্মশীল হয়ে আল্লাহর দিকে পরিপূর্ণ আত্মনিবেশ করে, সে যেন এক মজবুত হাতল আঁকড়ে ধরল”।

ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন— অর্থাৎ যে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য ইবাদত করে  এবং তার আদেশ–নিষেধের  প্রতি স্বীয় মস্তক অবনত করে, এবং তার নির্দেশিত শরীয়তের অনুসরণ করে সৎকর্মশীল হয় , অর্থাৎ আল্লাহ কর্তৃক আদিষ্ট বিষয়গুলো পালনের মাধ্যমে এবং তার নিষেধাজ্ঞা থেকে বেঁচে থাকার মাধ্যমে সৎকর্মপরায়ণ হয়, সে যেন এক শক্ত হাতল  আঁকড়ে ধরলো । অর্থাৎ সে যেন আল্লাহর পক্ষ থেকে এক সুদৃঢ় চুক্তিনামা প্রাপ্ত হল যে, আল্লাহ তাকে শাস্তি থেকে নিরাপদ রাখবেন। আর সকল বিষয়ের শেষ পরিণাম আল্লাহর হাতে সমর্পিত।

আর আল্লাহর আদেশ নিষেধের প্রতি ব্যক্তির আত্মসমর্পণ যত বেশি হবে তার আঁকড়ে ধরা হাতল এর দৃঢ়তা তত শক্তিশালী হবে। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভাল যে, সেই মজবুত হাতল হল ইসলাম, ঈমান ও তাওহীদের হাতল।

আল্লাহ তাআলার আদেশগুলোর অন্যতম একটি আদশ হলো, বান্দারা নিজেদের মধ্যকার যেকোনো বাদানুবাদের ক্ষেত্রে আল্লাহর মুখাপেক্ষী হবে অর্থাৎ শরঈ আদালতে বিচার প্রার্থনা করবে ।

আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন —

فإن تنازعتم في شيء فردوه الى الله ورسوله إن كنتم تؤمنون بالله واليوم الآخر

“যখন তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদ-বিসম্বাদে লিপ্ত হবে, তখন তোমরা তা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ন্যস্ত করো”।

মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি সহ অন্যান্য একাধিক সালাফ থেকে বর্ণিত আছে যে, এখানে ‘আল্লাহ’ ও ‘রাসূল’ দ্বারা উদ্দেশ্য ‘আল্লাহর কিতাব’ ও ‘রাসূলের সুন্নাহ’।

ইমাম ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী এর অর্থ হলো, তোমাদের মধ্যকার বিবাদ-বিসম্বাদ ও অজ্ঞতার বিষয়গুলোকে তোমরা আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাহর প্রতি ন্যস্ত করো, এবং নিজেদের দ্বন্দ্ব-কলহের ব্যাপারে কিতাব ও সুন্নাহর নিকট বিচার প্রার্থনা কর। আর কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা এখানে উদ্দেশ্য হলো, কোরআন সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পরিচালনাকারী ওলামা-মাশায়েখের শরণাপন্ন হওয়া। এভাবেই সম্ভব শরঈ আহকামের সামনে আপন মস্তক অবনত করা ও ঝগড়া বিবাদের মীমাংসা করা।

এজন্য অস্ত্র সংক্রান্ত এবং অন্যান্য সাধারণ ও বিশেষ অধিকার তথা গনিমত ইত্যাদি সংক্রান্ত বিরোধ সহ অন্যান্য যে কোনো বিবাদ বিসম্বাদে যদি নিজেদের মধ্যে মীমাংসা না হয়, তাহলে শরিয়া বিশেষজ্ঞ সে সমস্ত আলেমগণের শরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক যাদের ব্যক্তিসত্তা ও বিচার ফায়সালা দ্বারা উভয় দল সন্তুষ্ট হতে পারে।

যেমন একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, সম্প্রতি সচি চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াতে পাশ কেটে যাওয়া, রাশিয়া, নুসাইরি ও তুরস্কের মত ষড়যন্ত্রকারী শত্রুদের জন্য হাইওয়ের রাস্তা ছেড়ে দেয়া এবং বৈদেশিক কৌশল রক্ষার্থে তুর্কি কর্তৃত্বের অধীনে একটি সামরিক কাউন্সিল গঠন সংক্রান্ত একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।  নিঃসন্দেহে এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্তে অবতীর্ণ হতে শরঈ আদালতের শরনাপন্ন হওয়া একান্ত আবশ্যক। কেননা উপরোক্ত বিষয়টি অনেকের মনে জিহাদী চেতনার অপমৃত্যু ঘটিয়েছে এবং যুদ্ধের ময়দানে এর দ্বিগুণ খারাপ প্রভাব পড়েছে। সুতরাং উচিৎ হলো, বিষয়টিকে সকল পদ্ধতি ও পন্থায় প্রত্যাখ্যান করা এবং আল্লাহর সাহায্যে শত্রুকে পরাস্ত করা । কেননা আল্লাহ ছাড়া আমাদের কোন সাহায্যকারী ও সহযোগিতাকারী নেই, আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পথ ছাড়া অন্য কোন পথে আমাদের মর্যাদা ও বিজয় নেই। সুতরাং লক্ষ্য রাখা উচিত আমরা আমাদের পবিত্র জিহাদে আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পথে আছি, না কি পদচ্যুত হয়েছি।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই যে, আমি মূলত দুটি বিষয়ে আলোকপাত করেছি।

এক, সব রকমের বিবাদ-বিসম্বাদে শরঈ আদালতের শরণাপন্ন হওয়া।

দুই, বিদেশি ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা যদিও বাহ্যিকভাবে তা চাকচিক্যময় হয় এবং কল্যাণ ও শুভাকাঙ্ক্ষীতার মুখোশে আবৃত থাকে

আল্লাহ সর্ব বিষয়ে অবগত এবং সঠিক পথ প্রদর্শনকারী।

হে আল্লাহ, আমাদের প্রত্যেককে কল্যাণ ও তাকওয়ার পথে পরিচালিত করুন এবং আমাদেরকে আপনার দ্বীনের বিজয়ের পথে ব্যবহার করুন এবং আমাদেরকে দৃঢ়তা ও উত্তম প্রতিদান দান করুন । সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন আপনার বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উপর।

২৭ জুমাদাল আউওয়াল, ১৪৪০ হিজরি

০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ইংরেজি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + 16 =

Back to top button