অবশেষে সোমালিয়া যুদ্ধেও মুজাহিদদের নিকট পরাজয় বরণ করছে কুফ্ফার বাহিনী, ময়দান থেকে পলায়নের চিন্তায় বিভোর তারা।
গত সপ্তাহে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুতে একটি বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করে আফ্রিকান ইউনিয়ন, এতে অংশগ্রহন করে আফ্রিকান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সকল উচ্চ পদস্থ জেনারেল ও সেনা প্রধানরা। উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলো মার্কিন প্রতিনিধিরাও।
বৈঠকের মুল আলোচ্য বিষয় ছিল সোমালিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সেনারা থাকা, না থাকা নিয়ে। উক্ত বৈঠকে আফ্রিকার অধিকাংশ দেশগুলোই সেনা প্রত্যাহারের পরামর্শ দেয়, কিন্তু বিপরীত রায় দেয় কেনিয়া, ইথিউপিয়া ও মার্কিন প্রতিনিধী দলসহ আরো দু’একটি দেশ।
বিপরীত রায় দেওয়া দেশগুলোর মুল কারণ হিসাবে দেখা হচ্ছে, উক্ত দেশগুলো হচ্ছে সোমালিয়ার প্রতিবেশী দেশ। বর্তমানে আল-কায়দা সোমালিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোতেও হামলা বৃদ্ধি করছে, অন্যদিকে কেনিয়ার বিস্তীর্ণ ভূমির উপর ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে হারাকাতুশ শাবাব। আর এই পরিস্থিতিতে যদি আফ্রিকান ইউনিয়ন সোমালিয়া ছেড়ে চলে যায়, তাহলে খুব দ্রুতই প্রতিবেশী দেশগুলোতে আল-কায়দা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য জোড়ালোভাবে যুদ্ধ শুরু করবে। এসব কারণেই মূলত বিপরীত রায় দিচ্ছে সোমালিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো।
তবে আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলো সোমালিয়া যুদ্ধে নিজ সেনাদের অংশগ্রহণ আর চাচ্ছে না। কারণ প্রতি বছরই হারাতে হচ্ছে হাজার হাজার সেনাকে, পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অসংখ্য যোদ্ধাকে। এছাড়াও সামরিক খাতে তাদের যেই প্রচুর পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে একারণে অর্থনীতিতে দুর্বল হয়ে পড়ছে দেশগুলো। আর যদি সোমালিয়ায় তাদেরকে এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয় তাহলে গুণতে হবে মোটা অংকের অর্থ, কারণ বর্তমানে আফ্রিকান ইউনিয়নের অধিকাংশ যুদ্ধসরঞ্জামাদীই অচল হয়ে পড়েছে, প্রয়োজন পড়বে নতুন অনেক যুদ্ধ সরঞ্জামাদির। যার খরচ বহণ করতে অক্ষমতা প্রকাস করছে আফ্রিকান ইউনিয়ন।
এদিকে আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডিয়া ইতিমধ্যে তাদের সকল সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণাও করেছে। দীর্ঘ ১২ বছর এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে চড়ামূল্য দিতে হচ্ছে দেশটিকে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সোমালিয়ার সেন্ট্রাল শাবেলী প্রদেশ হতে শুরু হবে প্রথম ব্যাচের প্রত্যাহার। প্রায় ১০০০ হাজার সেনা আগ্রামী সপ্তাহের মধ্যেই সোমালিয়া ছাড়বে, বাকি সেনাদেরকেও ধীরে ধীরে উঠিয়ে নিবে দেশটি। এর আগে আরব আমিরাতসহ আরো ৩টি দেশ সোমালিয়া থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করেছিল। এবার সেনা প্রত্যাহারের কথা ভাবছে পুরো আফ্রিকান ইউনিয়ন
অন্যদিকে চাপের মূখে পড়তে যাচ্ছে আমেরিকা, তুরষ্ক, কেনিয়া ও ইথিউপিয়ার মত দেশগুলো। কারণ আফ্রিকান ইউনিয়ন তাদের সকল সেনা উঠিয়ে নেওয়ার পর পূর্ণ যুদ্ধের দায়িত্ব এসে পড়বে এই দেশগুলোর উপরেই। আর এজন্যই সোমালিয়া ও এই দেশগুলো আফ্রিকান ইউনিয়নের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। যাতে করে তারা সেনা প্রত্যাহার না করে। এদিকে তুরষ্ক আফ্রিকান ইউনিয়নকে এই যুদ্ধে যুদ্ধ সরঞ্জামাদি দিয়ে সহায়তা করারও প্রলোভন দেখাচ্ছে।