কওমি মাদরাসা ও দ্বীনি সেবার পাশে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার সরকার সব সময় পাশে থাকতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
গত শুক্রবার বিকাল ৪টায় মীরসরাই উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলার কওমি মাদরাসা শিক্ষকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন। [সূত্র: যুগান্তর অনলাইন সংস্করণ, ৩১শে আগস্ট, ২০১৮]
বাহ! খুব চমক লাগানো তথ্য তো! একেবারে তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো তথ্য। দ্বীনি সেবার জন্য তাহলে শেখ হাসিনা একাই একশো। এবার তাহলে দেশে ‘দ্বীনি সেবা’ বেড়ে যাবে। কিন্তু কথা হলো ওদের নিকট ‘দ্বীনি সেবা’র মানে কী? ওরা ‘দ্বীনি সেবা’ বলে কী বুঝাতে চায়? শেখ হাসিনার সবচেয়ে বড় দ্বীনি সেবা আমি দেখেছিলাম ২০১৩ সালের ৫ ও ৬-ই মে। সেদিন শেখ হাসিনা দেশে যে ‘দ্বীনি সেবা’ শুরু করেছিলেন সে দ্বীনি সেবার কথা কি বিশ্ববাসী কখনো ভুলতে পারবে? সেদিনের দ্বীনি সেবায় কত মায়ের বুক যে খালি হয়েছে তা আর নতুন করে বলতে হবে না। ৫-ই মে রাতের দ্বীনি সেবার রক্তের দাগ এখনো মতিঝিলের রাস্তায় দেখা যায়। শেখ হাসিনার দ্বীনি সেবার আরেকটি ধাপ হলো ৫ ও ৬ মে’র পরবর্তী দিনগুলোতে প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করে দেওয়া যে- “আপনারা আপনাদের কষ্টে অর্জিত টাকা-পয়সা কোনো কওমি মাদ্রাসায় দিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না।” এই মাইকিংটি এখনো ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কানে কানে বাজে।
মাদ্রাসাশিক্ষাকে বরদাশত করতে না পেরে শেখ হাসিনার ছেলে দ্বীনি সেবার উন্নতির লক্ষে জনসমাবেশে বলেছিল, প্রতি তিনজন ছাত্রের বিপরীতে একজন মাদ্রাসার ছাত্র তৈরি হয়েছে। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন- “এটা কমিয়ে দেওয়ার আন্দোলন আমরা শুরু করে দিয়েছি।”
শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের কামরুল নামের জনৈক মন্ত্রী দ্বীনি সেবার লক্ষ্যে বলেছিল- এ দেশে কওমি মাদ্রাসা নাকি ব্যঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে। তিনি এসব মাদ্রাসাকে বন্ধ করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের ঈমান ধ্বংসকারী পদক্ষেপ সম্পর্কে মুসল্লিদেরকে সতর্ক করায় জনৈক আওয়ামী লীগ নেতা, ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও তাদের চেলাচামুণ্ডারা বক্তব্য দিয়েছিল, তাদের বিপক্ষে কোনো কথা বলা যাবে না। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় মসজিদের ইমাম সাহেবকে তারা অমুসলিম ও মুনাফেক বলে ঘোষণা দিয়েছিল। তারা স্লোগান দিয়েছিল- হুজুরের চামড়া তুলে নিব আমরা। (বক্তব্যটি শুনুন: https://www.youtube.com/watch?v=PahmVPgv6M4)
বাংলাদেশের কথিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চরম ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শানে কুটুক্তিকারী রাজিব হায়দার ওরফে থাবাবাবাকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ বলে দ্বীনের যে সেবাখানি তিনি করেছিলেন, আজও তা মনে আছে বাংলার মুসলিমদের হৃদয়রাজ্যে!
এই হলো শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের ‘দ্বীনি সেবা’র সামান্য কিছু নমুনা। এখন কথা হলো শেখ হাসিনার মন্ত্রী নতুন করে আবার কোন ‘দ্বীনি সেবার কথা বলেছেন কে জানে। হয়তো বা আরো বড় কোনো “দ্বীনি সেবা”র জন্য তারা মুখিয়ে আছে!!