জিহাদের সাধারণ দিক-নির্দেশনা – শাইখ আইমান আল-জাওয়াহিরী (হাফিজাহুল্লাহ)
জিহাদের সাধারণ দিক-নির্দেশনা – শাইখ আইমান আল-জাওয়াহিরী (হাফিজাহুল্লাহ)
বালাকোট মিডিয়া অনূদিত
আর্কাইভ পেজ থেকে ডাউনলোড করুন!
পিডিএফ
https://banglafiles.net/index.php/s/S5MRp42cRMMNHaR
https://archive.org/download/sadharon-diknirdeshona/sadharon%20diknirdeshona%20balakot.pdf
https://ia800900.us.archive.org/3/items/balakot_media_books/shadharon_dik_nirdeshona.pdf
http://www.mediafire.com/file/wb10t5rngqhweex/3.shadharon_dik_nirdeshona.pdf/file
word
https://banglafiles.net/index.php/s/peDWWRX7pwc6ZC3
https://archive.org/download/sadharon-diknirdeshona/3.shadharon_dik_nirdeshona.docx
http://www.mediafire.com/file/9eohmxui526qink/3.shadharon_dik_nirdeshona.docx/file
অডিও
https://banglafiles.net/index.php/s/8AqWFzTMrGgBHdT
https://archive.org/download/sadharon-diknirdeshona/sadharon%20diknirdeshona%20balakot.mp3
https://ia601004.us.archive.org/25/items/balakot_media_audio/shadharon_dik_nirdeshona.mp3
https://archive.org/download/balakot_media_audio/shadharon_dik_nirdeshona.ogg
http://www.mediafire.com/file/fad9livjmgceilm/3.shadharon_dik_nirdeshona.mp3/file
=======================
জিহাদের সাধারণ দিক–নির্দেশনা
শাইখ আইমান আল–জাওয়াহিরী (হাফিজাহুল্লাহ)
১৪৩৪ হিঃ
উৎস: আস–সাহাব মিডিয়া
পরিবেশনায়: বালাকোট মিডিয়া
প্রথমত: ভূমিকা
১। এটা কোন গোপন বিষয় নয় যে, এ পর্যায়ে আমাদের কর্মকান্ড দু’টি ধারায় বিভক্ত: প্রথমটি হচ্ছে সামরিক এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে দাওয়াত।
২। সামরিক কর্মকান্ড: সামরিক কর্মকান্ডের প্রথম টার্গেট বা লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে কুফরের (আন্তর্জাতিক) কেন্দ্র আমেরিকা ও তার মিত্র ইসরায়েল এবং দ্বিতীয় টার্গেট হচ্ছে তাদের স্থানীয়/আঞ্চলিক মিত্র যারা মুসলমানদের দেশগুলোর শাসক।
ক. আমেরিকাকে লক্ষ্যবস্তু বানানো: আমেরিকাকে টার্গেট বা লক্ষ্যবস্তু বানানোর উদ্দেশ্য হলো, তাকে নিঃশেষ করে ধ্বংসের দুয়ারে পৌঁছে দেয়া যেন তা পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাগ্যবরণ করে এবং তার সামরিক, জনবল ও অর্থনৈতিক ক্ষতির দরুন নিজ ভারেই মুখ থুবরে পড়ে। যার ফলস্বরূপ আমাদের ভূমিসমূহে তাদের প্রভাব খর্ব হয়ে যাবে এবং তাদের মিত্রদেরও একের পর এক পতন হতে থাকবে।
সাম্প্রতিক আরব বিপ্লবে যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা আমেরিকার কুপ্রভাব পতনের ঈঙ্গিত বহন করে। আফগানিস্তান এবং ইরাকে মুজাহিদীনদের হাতে অব্যাহত নাস্তানাবুদ হবার পর এবং সেপ্টেম্বর ২০০১ এর পর থেকে তাদের জাতীয় নিরাপত্তা ক্রমাগত হুমকির মুখে পড়ায় আমেরিকা এখন মুসলিম দেশসমূহের জনগণের চাপের মুখে পশ্চাদপসরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি এখন স্ফীত হয়ে মোড় নিয়েছে তাদের তাবেদারদের দিকে। আল্লাহর অনুমতিক্রমে, আগত পর্যায়টি আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে আমেরিকার প্রভাব আরো কমে যাওয়া এবং পশ্চাদপসরণের ফলে আমেরিকার তার নিজ খোলসের ভেতরে আরো বেশী ঢুকে যাওয়ার সাক্ষী হয়ে থাকবে, যা তাদের দোসর ও তাবেদার সরকার সমূহকেও দুর্বল করে দেবে।
খ. মুসলিম দেশে আমেরিকার তাবেদার সরকারকে লক্ষ্যবস্তু বানানো: আমেরিকার তাবেদারদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর ব্যাপারে বলতে হলে, এর বাস্তবতা একেক জায়গায় একেক রকম। এক্ষেত্রে সাধারণ মূলনীতি হচ্ছে, তাদের সাথে যে কোন সংঘর্ষ এড়িয়ে যাওয়া, শুধুমাত্র সেই দেশসমূহ ব্যতীত যেখানে সম্মুখ সমরে তাদের মোকাবেলা করা অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়।
উদাহরণস্বরূপ,
আফগানিস্তানে তাদের (আমেরিকার তাবেদার সরকার বাহিনীর) মোকাবেলা করা আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধেরই অংশ।
পাকিস্তানে তাদের (তাবেদার সরকার গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে লড়াই আফগানিস্তানে মার্কিন দখলদারিত্ব হতে মুক্তির ক্ষেত্রে পরিপূরক হিসেবে কাজ করছে। এরপর এর অপর উদ্দেশ্য হলো, সেখানে পাকিস্তানের মুজাহিদীনদের জন্য একটি অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা যা পরবর্তীতে পাকিস্তানে ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েমের জন্য জিহাদের উৎক্ষেপণাঞ্চল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
ইরাকে তাদের (তাবেদার সরকার গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্য হচ্ছে সুন্নিদের অঞ্চল সমূহকে আমেরিকার উত্তরাধিকারী শিয়াদের হাত থেকে মুক্ত করা।
আলজেরিয়ায়, যেখানে মার্কিন উপস্থিতি নগণ্য এবং ক্ষীণ সেখানেও সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের লক্ষ্য হচ্ছে তাদেরকে দুর্বল করে ফেলা এবং “ইসলামিক মাগরিব”, পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চল এবং দক্ষিণ সাহারার দেশসমূহে জিহাদী চেতনা উজ্জীবিত করা ।সম্প্রতি আমেরিকা এবং এর মিত্রদের সাথে সংঘাতের সম্ভাবনা এ অঞ্চলে প্রকটভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে।
আরব উপদ্বীপসমূহে তাদের (তাবেদার সরকার গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে লড়াই করার কারণ হচ্ছেআমেরিকার তাবেদারী।
সোমালিয়ায় তাদের (তাবেদার সরকার গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে লড়াই এর কারণ হচ্ছে তারা ক্রুসেডার দখলদার বাহিনীর অগ্রবাহিনী হিসেবে কাজ করছে।
সিরিয়ায় তাদের (তাবেদার সরকার গোষ্ঠী) বিরুদ্ধে জিহাদ এই কারণে যে, এর শাসকেরা কোন মুসলমানের নূন্যতম ইসলামী সত্তাকে সহ্য করে না, আর জিহাদী চেতনার মুসলমানদের ব্যাপারে বলা বাহুল্য। এবং তাদের ইসলাম নির্মূলের প্রচেষ্টার রক্তাক্ত ইতিহাস একটা সর্বজন–বিদিত বিষয়।
জেরুজালেমের পরিবেষ্টনে, সর্বপ্রথমও প্রধান যুদ্ধ হচ্ছে ইহুদিদের বিরুদ্ধে এবং এক্ষেত্রে স্থানীয় শাসকদের সাথে অবশ্যই যথাসম্ভব ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে যারা “অসলো চুক্তির” অধীনে ক্ষমাতাপ্রাপ্ত হয়েছে।
৩। দাওয়াতী কাজ: আগ্রাসী ক্রুসেডারদের হুমকির বিষয়ে উম্মতকে সচেতন করে তোলা, তাওহীদের সঠিক ব্যাখ্যাতাদের নিকট পরিষ্কার করে দেয়া যে, বিধান প্রদান এবং সার্বভৌমত্ব কেবল একমাত্র আল্লাহরই অধিকারভুক্ত এবং ইসলামভিত্তিক ভ্রাতৃত্ববোধ ও সকল ভূমিসমূহের মুসলমানদের একতার উপর গুরুত্বারোপ করা। আল্লাহর ইচ্ছায় এটা হবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পদ্ধতি অনুসারে খিলাফত প্রতিষ্ঠার পূর্বরঙ্গ। এ পর্যায়ে দাওয়াতী কর্মকান্ডের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু অবশ্যই দুইটি ধাপে সম্পন্ন হবে:
প্রথম ধাপ: অগ্রবর্তী মুজাহিদদেরকে শিক্ষিত ও উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়া যারা ক্রুসেডার ও তাদের তাবেদারদের মোকাবেলার দায়িত্বভার বহন করছেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় খিলাফত প্রতিষ্ঠা হওয়া পর্যন্ত করবেন।
দ্বিতীয় ধাপ: জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, তাদেরকে উৎসাহিত করা এবং তাদেরকে সংঘবদ্ধ করার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করা যেন তারা তাদের শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ইসলামের পক্ষে যোগ দান করে এবং এর জন্য কাজ করে।
দ্বিতীয়ত: প্রয়োজনীয় দিক–নির্দেশনা
উপরোক্ত ভূমিকার উপর ভিত্তি করে আমরা সিয়াসাতুশ শরীআতের (ইসলামী রাজনীতি) আলোকে নিম্নোক্ত দিক–নির্দেশনা সমূহ পেশ করছি যার উদ্দেশ্য স্বার্থ (মাসলাহাত) সংরক্ষণ এবং ক্ষতি (মাফসাদাহ) এড়ানো।
(দাওয়াতের ক্ষেত্রে)
১। সাধারণ জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে মনযোগ দিন যাতে তাদের সক্রিয় ও সংঘবদ্ধ করে তোলা যায়। একইভাবে মুজাহিদ বাহিনীর মধ্যে আরো অধিক মাত্রার সচেতনতা ও বোধশক্তির উন্নয়নে অধিক মনোযোগ দিন যেন একটি সুসজ্জিত, সংঘবদ্ধ, আদর্শিক এবং সচেতন মুজাহিদ বাহিনী গঠন করা যায় যারা ইসলামী আকাঈদে দৃঢ় বিশ্বাসী, এর বিধানের প্রতি অটল এবং মুমিনদের প্রতি কোমল ও কাফেরদের প্রতি কঠোর। সেই সাথে যারা আলেম এবং বাগ্মীতার অধিকারী তারা যাতে মুজাহিদীনদের বিভিন্ন শ্রেণী থেকে সামনের কাতারে চলে
আসেন তা সুনিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা চালাতে হবে যাতে আমাদের বার্তা ও আদর্শ সুরক্ষিত হয় এবং মুসলমানদের মধ্যে জিহাদী দাওয়াতের প্রচার–প্রসার হয়।
(সামরিক ক্ষেত্রে)
২। সামরিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কুফরের কেন্দ্রকে (আমেরিকা) অব্যাহত ভাবে দুর্বল করতে মনযোগ নিবদ্ধ রাখতে হবে যে যাবৎ না তা সামরিক এবং অর্থনৈতিক উভয় খাতে দেউলিয়া হয়ে যায়, এর জনশক্তি নিঃশেষ হয়ে যায় এবং তা পশ্চাদপসরণ ও একাকীত্বের পর্যায়ে পৌঁছে নিজেকে নিজ খোলসে ফিরিয়ে নেয় (যা আল্লাহর ইচ্ছায় খুবই নিকটে)।
সকল মুজাহিদ ভাইয়েরা অবশ্যই বিশ্বের যেকোন অংশে পশ্চিমা জায়নবাদী ক্রুসেডার জোটের স্বার্থে আঘাত করাকেই অগ্রগণ্য দায়িত্বরূপে গ্রহণ করবেন। এ লক্ষ্যে তাদেরকে অবশ্যই তাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু ঢেলে দিতে হবে।
অনুরূপভাবে, মুসলিম বন্দীদের মুক্তকরণে আমাদের ভাইদের অবশ্যই যেকোন উপায়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে, যার অন্তর্ভুক্ত হবে যেখানে তাদের বন্দী করে রাখা হয়েছে তা ঘেরাও করা, অথবা মুসলিম দেশসমূহকে আক্রমণে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের নাগরিকদের জিম্মী করা যাতে তাদের বিনিময়ে আমাদের বন্দীদের মুক্ত করে আনা যায়।
এটা আমাদের কাছে পরিষ্কার থাকা উচিত যে, কাফেরদের প্রধান, আমেরিকাকে আক্রমণ করার এই নীতি মুসলমানদেরকে যারা অত্যাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে কথা কিংবা অস্ত্রের জিহাদের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। সুতরাং, ককেশাসে আমাদের মুসলমান ভাইদের অধিকার এটা যে, তারা আগ্রাসী রাশিয়া এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন। এটা আমাদের কাশ্মীরের মুসলমান ভাইদের অধিকার যে, তারা সেখানকার অপরাধী হিন্দুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন। এটা আমাদের পূর্ব তূর্কিস্তানের ভাইদেরও সমান অধিকার যে, তারা চীনা সীমালঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন। একইভাবে ফিলিপাইন, বার্মা এবং এমন প্রতিটি ভূমি যেখানে মুসলমানেরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সেখানে তারা সেখানকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনা করবেন।
(স্থানীয় প্রশাসন এর ব্যাপারে)
৩। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সশস্ত্র সংঘাত এড়িয়ে যাবেন যদি না আপনারা তা করতে বাধ্য হন, উদাহরণস্বরূপ, যদি স্থানীয় প্রশাসন আমেরিকার বাহিনীর একটা অংশ হিসেবে কাজ করে, যেমন আফগানিস্তানে হচ্ছে; অথবা যদি স্থানীয় প্রশাসন আমেরিকার পক্ষ থেকে মুজাহিদীনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, যেমন সোমালিয়া ও জাযিরাতুল আরবে হচ্ছে; অথবা যদি কোন স্থানে স্থানীয় প্রশাসন মুজাহিদীনদের উপস্থিতি মোটেও সহ্য না করে, যেমন ইসলামী মাগরিব, সিরিয়া এবং ইরাকে দেখা যাচ্ছে।
যাই হোক, এই ধরনের প্রশাসনের সাথে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে যাওয়া যখনই সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
যদি আমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বাধ্য করা হয় তাহলে আমাদেরকে এটা অবশ্যই পরিষ্কার করে দিতে হবে যে, এদের সাথে আমাদের এই সংঘাত ক্রুসেডারদের দ্বারা মুসলমানদেরকে নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলারই একটা অংশ মাত্র।
অধিকন্তু, যখনই স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সংঘাতের বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকবে তখনই তা করে ফেলা, যেন দাওয়াত ছড়িয়ে দেয়া, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির আদান প্রদান করা, ঈমানদারদেরকে জিহাদে উদ্বুদ্ধ করা ও জিহাদে শরীক করা, ফান্ড (জিহাদের জন্য অর্থ) সংগ্রহ করা এবং সমর্থক বাড়ানোর সুযোগ জারি থাকে। আমাদেরকে অবশ্যই এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা উচিত কারণ আমাদের জিহাদ অনেক দীর্ঘ এবং এই জিহাদের নিরাপদ ঘাঁটি এবং লোকবল, অর্থ ও অভিজ্ঞদের সার্বক্ষনিক সমর্থন দরকার রয়েছে।
হ্যাঁ, তবে যে সকল স্থানীয় প্রশাসন ক্রুসেডারদের হত্যাযজ্ঞের সাথী, আমাদের এই (উপরোক্ত) মূলনীতি তাদেরকে পরিষ্কারভাবে এই বার্তা পৌঁছিয়ে দেয়ার সাথে সাংঘর্ষিক হবে না যে, আমরা কোন সহজ শিকার নই এবং তাদের প্রতিটি কার্যকলাপের এক যথাযথ প্রতিউত্তর অবশ্যই দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ যদিও তা আসতে কিছুটা কালক্ষেপণ হতে পারে। এই নীতি সব ফ্রন্টে (মুসলমানদের নিজ নিজ ভূখন্ডে) বাস্তবায়ন করা উচিত সেখানকার পরিস্থিতির সাথে যা সামঞ্জস্যপূর্ণ সে অনুযায়ী।
(বিভ্রান্ত দল এর ক্ষেত্রে)
৪। বিভ্রান্ত দল যেমন: রাফেজী শিয়া, ইসমাঈলী, কাদিয়ানী এবং বিদআতী সুফীদের সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে যান যদিও তারা সাধারণত আহলে সুন্নাতের সাথে সংঘাতে লিপ্ত থাকে। যদি তারা আহলে সুন্নাতের সাথে লড়াই করতে থাকে তবে প্রতিঘাত শুধু ঐসব দলের মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে যারা সরাসরি আমাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত। একই সাথে আমাদের অবশ্যই পরিষ্কার করে দিতে হবে যে, আমরা শুধু আমাদের প্রতিরক্ষা করছি। যারা এবং যাদের পরিবার আমাদের সাথে যুদ্ধে অংশ নেয়নি তাদেরকে তাদের বাড়িঘর, ইবাদতখানা, তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় সমাবেশে লক্ষ্যবস্তু বানানো উচিত হবে না। যদিও তাদের মিথ্যা এবং তাদের বাতিল আমল ও আকীদার ভ্রান্তি অনবরত উন্মোচন করা থেকে বিরত থাকা আমাদের জন্য উচিত হবে না।
আর যেসব অঞ্চল মুজাহিদীনদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে সেসব জায়গায় এসব দলগুলোকে প্রজ্ঞার সাথে পরিচালনা করতে হবে। এই দলগুলোকে প্রথমে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে হবে, তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি, তাদের সন্দেহের অবসান করতে হবে এবং এমনভাবে সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করতে হবে যাতে তার চেয়ে বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা সৃষ্টি না হয়, যেমন: ঐসব এলাকা থেকে মুজাহিদীনদের বের করে দেয়া, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ জনতার বিদ্রোহ, অথবা অশান্তির সৃষ্টি যার সুযোগ শত্রুপক্ষ নেয়ার চেষ্টা করবে।
(মুসলিম ভূখণ্ডে বসবাসরত কাফেরদের ব্যাপারে)
৫। খ্রিষ্টান, শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের যেসকল সদস্যমুসলিম ভূখণ্ডে বসবাস করছে তাদের সাথে ঝগড়া না করা। তবে যদি তারা সীমালঙ্ঘন করে তবে সেটার যথাযথ ও আনুপাতিক প্রতিক্রিয়া যথেষ্ট। এই প্রতিক্রিয়া একটি বিবৃতিসহ আসতে পারে যে, আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ শুরু করতে চাই না যেহেতু আমরা কুফরের প্রধান আমেরিকার সাথে যুদ্ধরত আছি এবং নিকট ভবিষ্যতে আল্লাহর ইচ্ছায় ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের পরে আমরা তাদের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই।
(সরাসরি যারা যুদ্ধ করছে না এমন কাফেরদের ক্ষেত্রে)
৬। সাধারণভাবে, যারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেনি অথবা এই ধরনের শত্রুতাপূর্ণ কর্মকান্ডে জড়িত হয়নি তাদের বিরুদ্ধেযুদ্ধ করা অথবা তাদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানো পরিহার
করবেন এবং প্রাথমিক লক্ষ্য ক্রুসেডার বাহিনীর উপর আর তারপর তাদের স্থানীয়/আঞ্চলিক সহযোগীদের উপর রাখবেন।
৭। যুদ্ধে জড়িত নয় এমন নারী ও শিশুকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকুন এবং এমনকি তারা যদি যারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত তাদের পরিবারও হয় তবুও তাদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকে যতটুকু সম্ভব বিরত থাকুন।
(সতর্কতা)
৮। মুসলমানদের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকুন। অর্থাৎ, হত্যা, অপহরণ, বিস্ফোরণ অথবা তাদের সম্পদ ও মালামালের ধ্বংস সাধন ইত্যাদি সকল প্রকার ক্ষতি সাধন থেকে বিরত ও সাবধান থাকুন।
৯। শত্রুদেরকে মসজিদ, বাজার এবং এমন সমাবেশ যেখানে তারা মুসলমান অথবা যারা যুদ্ধরত নয় তাদের সাথে মিশে থাকে ইত্যাদি জায়গায় লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকে বিরত থাকুন।
(উম্মতের উলামা)
১০। ওলামায়ে কেরামদেরকে সম্মান করুন এবং তাদের সম্মান রক্ষা করুন যেহেতু তারা নবীদের (আঃ) উত্তরাধিকারী এবং এই উম্মতের নেতা। এই দায়িত্ব ঐসব আলেমদের প্রতি পালন করা আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ যারা সত্য প্রকাশ করেন এবং এর জন্য ত্যাগ স্বীকার করেন। ওলামায়ে সু’ (খারাপ আলেম) দের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ, তাদের দ্বারা সৃষ্ট সংশয় দূরীকরণ এবং তাদের মুনাফিকীর বিরুদ্ধে অকাট্য দলীল–প্রমাণ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। তাদের সাথে না যুদ্ধে জড়ানো উচিত, আর না তাদের হত্যা করা উচিত, তবে যদি তারা মুসলমান ও মুজাহিদীনদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোন সামরিক কুকর্মে জড়িত থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।
১১। অন্যান্য ইসলামী দলের ব্যাপারে করণীয়:
ক. তাদের সাথে যেসব বিষয়ে আমরা একমত সেগুলোতে সহযোগিতা করি এবং যেগুলোতে আমাদের একে অপরের মাঝে মতভেদ আছে সেগুলোতে সংশোধন করি।
খ. আমাদের মৌলিক সংঘাত হলো, ইসলামের শত্রুদের সাথে এবং যারা ইসলামের প্রতি শত্রুতা পোষণ করে তাদের সাথে। সুতরাং, অন্যান্য ইসলামী দলের সাথে আমাদের মতপার্থক্য যেন ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদের সামরিক, দাওয়াহ, আদর্শিক অথবা রাজনৈতিক সমরে ঝাঁপিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে না দাঁড়ায়।
গ. যদি কোন দল ইসলামের সাথে সম্পৃক্ততার দাবি করে এবং কখনোও আমাদের বিরুদ্ধে অবিশ্বাসী কাফের শত্রুদের পক্ষে যুদ্ধে জড়ায় তবে তা সর্বনিম্ন এমন নূন্যতম প্রতিরোধের মাধ্যমে প্রতিহত করা উচিত যার ফলে তার সীমালঙ্ঘন বন্ধ করা যায়, যেন মুসলমানদের মাঝে বিভেদের দরজা বন্ধ থাকে এবং যারা শত্রুর পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত নয় তাদের ক্ষতি না হয়।
১২। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে অত্যাচারিতের বিপ্লবের ব্যাপারে করণীয়:
সমর্থন – অংশগ্রহণ – দিকনির্দেশনা
ক.সমর্থন:মজলুমকে জালেমের বিরুদ্ধে সাহায্য করা, সে মুসলমান হোক অথবা অমুসলিম হোক, ইসলামী শরীয়তে এটি বাধ্যতামূলক।
খ.অংশগ্রহন: জালেমদের বিরুদ্ধে মজলুমদের সাহায্য সহযোগিতা করা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধের অন্তর্ভুক্ত, যা করা শরীয়তে আমাদের উপর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
গ. দিক–নির্দেশনা: বিপ্লবী কর্মকান্ডের উদ্দেশ্য তাদের কাছে ব্যাখ্যা করতে হবে যে, তাদের উচিত আল্লাহর হকুম মেনে চলার মাধ্যমে শরীয়তকে সুউচ্চে তুলে ধরে একটি ইসলামী শাসনব্যবস্থা ও একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং তাওহীদকে প্রতিষ্ঠিত করা।
১৩। এমন প্রত্যেককেই উৎসাহিত এবং সমর্থন করা উচিত যারা মুসলমান মজলুমদের অধিকারের পক্ষে থাকে এবং সে তার কথা, মতামত অথবা কাজের মাধ্যমে মুসলমানদের বিরুদ্ধেসীমালঙ্ঘনকে মোকাবেলা করে। মৌখিক অথবা শারীরিকভাবে সরাসরি এমন মানুষদের কোন ভাবে ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত তারা মুসলমানদের সমর্থক থাকে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের শত্রুতা না করে।
১৪। মুসলমানদের অধিকার রক্ষা করুন এবং তাদের পবিত্রতাকে শ্রদ্ধা করুন যেখানেই তারা থাকুক না কেন।
১৫। জুলুমের শিকার হয়েছে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে জালেমের বিরুদ্ধে সহযোগিতা করুন হোক তারা মুসলমান অথবা অমুসলিম। যারাই মজলুমের সাহায্য করে তাদেরকে উৎসাহিত করুন যদিও সে অমুসলিম হয়।
(মিথ্যা অপবাদ ও ভুলত্রুটির ব্যাপারে)
১৬। মুজাহিদীনদের অবশ্যই এমন প্রত্যেক মিথ্যা ও অন্যায় অপবাদের সংশয় নিরশন করতে হবে যা তাদের বিরুদ্ধে করা হয় এবং এই ধরনের অপবাদের ব্যাপারে প্রকৃত সত্যকে স্বচ্ছভাবে তুলে ধরতে হবে। এবং যদি কখনো মুজাহিদীনদের কাছে এটা পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে, কোন একটা নির্দিষ্ট ভুল তাদের পক্ষ থেকে হয়ে গেছে তবে তাদেরকে অবশ্যই এর জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং জনসমক্ষে সেই ব্যক্তি যেই ভুলে পতিত হয়েছে তার থেকে নিজেদেরকে পৃথক ঘোষণা করতে হবে এবং যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করতে হবে শরীয়তের দাবি অনুযায়ী এবং মুজাহিদীনদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য অনুযায়ী।
(আহবান)
১৭। পরিশেষে, আমরা কায়েদাতুল জিহাদের (আল কায়েদাহ) অধীনস্থ সংগঠনের প্রধানদের এবং আমাদের সকল সমর্থক এবং সহানুভূতিশীলদের এই মর্মে আহবান জানাচ্ছি যে, তারা যেন এই নির্দেশনাগুলো তাদের অনুসারীদের মাঝে ছড়িয়ে দেন হোক তা দায়িত্বশীল কোন অবস্থান অথবা সাধারণ ব্যক্তি বিশেষ। কারণ এই নথির মধ্যে লুকায়িত কোন গোপন বিষয় নেই, বরং এটি একটি সাধারণ নির্দেশনা। এর উদ্দেশ্য হলো, শরীয়াতের হুকুমের পরিপন্থী নয় এবং এর মূলনীতিগুলোর সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ এমন ইজতিহাদের মাধ্যমে ইসলামী জিহাদী কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতায় বর্তমান পর্যায়ে শরীয়তের বিধি বিধান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও সমর্থিত ইসলামের স্বার্থসমূহের সরক্ষণ করা এবং এগুলোকে সকল প্রকারের ক্ষয়–ক্ষতি থেকে হেফাজত করা।
আমরা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিই কামনা করি এবং তিনিই হলেন সেই একমাত্র সত্তা যিনি সঠিক পথের নির্দেশনা দেন। এবং সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নেতা, মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সাহাবাগণের প্রতি। আমাদের শেষ কথা এটাই যে, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি জগতসমূহের রব।
আল্লাহর সন্তুষ্টির কামনায় লিখিত
আপনাদের ভাই, আইমান আল–জাওয়াহিরী