অডিও ও ভিডিওঅডিও ও ভিডিও [আল হিকমাহ]আরবআল-হিকমাহ মিডিয়াইয়েমেনইলম ও আত্মশুদ্ধিবই ও রিসালাহবাংলা প্রকাশনামিডিয়াশাইখ হারিস আন নাজ্জারী রহিমাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

উত্তম নাসিহা ৩ || ইখলাস ও সুন্নাতের অনুসরণ শায়খ আল মুজাহিদ হারিস আন-নাজারি রহিমাহুল্লাহ

উত্তম নাসিহা ৩
ইখলাস ও সুন্নাতের অনুসরণ
শায়খ আল মুজাহিদ হারিস আন-নাজারি রহিমাহুল্লাহ

উত্তম নাসিহা ৩ || ইখলাস ও সুন্নাতের অনুসরণ শায়খ আল মুজাহিদ হারিস আন-নাজারি রহিমাহুল্লাহ

https://archive.org/details/4.un3ikhlasanditteba

ভিডিও ডাউনলোড (বাংলা) – ৭৮ মেগাবাইট
https://archive.org/details/UttomNaseeha3

https://archive.org/download/4.un3ikhlasanditteba/4.UN3%20-%20Ikhlas%20and%20Itteba.mp4

http://www.mediafire.com/file/grnh0c3xo3u19ym/4.UN3_-_Ikhlas_and_Itteba.mp4/file

 

অডিও ডাউনলোড (বাংলা) – ১০ মেগাবাইট
https://archive.org/details/audioUN3

 

পিডিএফ ডাউনলোড (বাংলা) – ৬২৭ কিলোবাইট
https://archive.org/details/pdfUN3_201704
https://tinyurl.com/lxaqdzn

https://archive.org/download/4.un3ikhlasanditteba/4.UN3%20-%20Ikhlas%20and%20Itteba.pdf

http://www.mediafire.com/file/6tta1zjos7pjr66/4.UN3_-_Ikhlas_and_Itteba.pdf/file

 

ওয়ার্ড ডাউনলোড (বাংলা) – ২.৯ মেগাবাইট

https://archive.org/download/4.un3ikhlasanditteba/4.UN3%20-%20Ikhlas%20and%20Itteba.docx

http://www.mediafire.com/file/wadajcn09b2dl9g/4.UN3_-_Ikhlas_and_Itteba.docx/file

—————–

উত্তম নাসিহা

শায়খ হারিস ইবনে গাজী আন-নাযারী

তৃতীয় উপদেশ: ইখলাস ও সুন্নাহর অনুসরণ

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবারবর্গ ও তাঁর সঙ্গীসাথিদের উপর।

কোন আমল কবুল করা হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমলকারী দুটি শর্ত পূর্ণ না করবে: এক. ইখলাস। অর্থাৎ আমল একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য করা। দ্বিতীয় বিষয় হল অনুকরণ। নবী সা: এর অনুকরণ করা।

ইখলাসের সংজ্ঞার ব্যাপারে সালাফ রিদওয়ানুল্লাহি আলাইহিমের উক্তিগুলো বিভিন্ন ধরণের। এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে অনেক সংজ্ঞা এসেছে। তবে যারাই ইখলাসের সংজ্ঞা দিয়েছেন, সকলের সংজ্ঞাগুলোই পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এখানে উস্তাদ আব্দুল্লাহ আলআদহাম উল্লেখ করেছেন, তিনি ইখলাসের সংজ্ঞায় বলেন, ইখলাসের ব্যাপারে আহলে ইলমগণ যা উল্লেখ করেছেন তার সারমর্ম হল: আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইবাদত করা এবং এক্ষেত্রে আল্লাহকে একক রাখা।

ফলে সে যা আমল করবে তাতে অন্য কারো কোন অংশ বা ভাগ থাকবে না; কোন মর্যাদাবান ফেরেশতার, কোন প্রেরিত রাসূলের, কোন তাওফীকপ্রাপ্ত ওলীর, কোন মহান আমিরের বা কোন সম্মানিত দায়িত্বশীলের কোন অংশ থাকবে না;

তাতে থাকবে না কোন ভাতা প্রাপ্তির আকর্ষণ বা বঞ্চিত হওয়ার ভয়, কোন দলের নাম উজ্জল করার আগ্রহ বা কোন দলের জনবল ভারি করা ইচ্ছা বা অন্যান্য কোন উদ্দেশ্য।

তাই আল্লাহ আপনাদের প্রতি রহম করুন! আপনারা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবেন।

অনেক সময় মানুষ ধারণা করে, এই আমলটা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য হয়েছে। অথচ এতে অনেক অনুপ্রবেশকারী, অনেক খূত ও অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে। কিন্তু সে তার ইখলাস যাচাই করে দেখে না। ভাবতে থাকে, আলহামদু লিল্লাহ, সে মুক্ত, সে মুখলিসীনদের অন্তর্ভূক্ত!!

এটাই তাযকিয়ার বিষয়। এটা আত্মার জন্য খুব স্পর্শকাতর। কেউ নিজেদের ব্যাপারে এ ধারণা করা যে, আলহামদু লিল্লাহ, আমরা এ বিষয়টি অতিক্রম করে ফেলেছি। আলহামদু লিল্লাহ, আমরা মুখলিসীন।

না, বিষয়টি এমন নয়, বরং আমলটির জন্য আত্মপর্যালোচনা ও সুন্নাহর অনুসরণ দেখতে হবে। যে সমস্ত আয়াতের মধ্যে আল্লাহ সুবহানাহু ইখলাসের প্রতি আদেশ করেছেন তার সংখ্যা অনেক।

 যেমন: আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা বলেন:

وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّين

“তাদেরকে কেবল এই আদেশ করা হয়েছিল যে, তারা আল্লাহর ইবাদত করবে, আনুগত্যকে একনিষ্ঠভাবে তারই জন্য খালেস রেখে.”

এখানে ইখলাসের সাথে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার ইবাদত করার জন্য আদেশ করা হয়েছে। ইবাদত ও ইখলাস।

অন্য আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:

قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ  لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِي

“বলে দাও, নিশ্চয়ই আমার নামায, আমার ইবাদত ও আমার জীবন-মরণ সবই আল্লাহর জন্য, যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক। তার কোনও শরীক নেই। আমাকে এরই হুকুম দেওয়া হয়েছে এবং আমি তার সম্মুখে সর্বপ্রথম মাথানতকারী.”

এর প্রতি আমি আদিষ্ট হয়েছি, অর্থাৎ শুধু আল্লাহর ইবাদত করার এবং তার সাথে কাউকে শরীক না করার প্রতি, তথা ইখলাসের সাথে আল্লাহর ইবাদত করার প্রতি।

আরেক স্থানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:

“(হে রাসূল!) নিশ্চয়ই আমিই এ কিতাব তোমার প্রতি নাযিল করেছি সত্যসহ। সুতরাং তুমি আল্লাহর ইবাদত কর এভাবে যে, আনুগত্য হবে খালেস তারই জন্য”।

এখানে আদেশ করা হয়েছে।

তাই ইবাদতও কাম্য এবং তাতে ইখলাস বাস্তবায়ন করাও কাম্য। এগুলো কুরআনের স্পষ্ট আয়াতসমূহ। এব্যাপারে আরো অনেক আয়াত রয়েছে।

যাতে উত্তম নিয়ত রাখার ব্যাপারে অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহর জন্য আমল করার আদেশ করা হয়েছে; আমলের দ্বারা দুনিয়াকে উদ্দেশ্য করা বা আল্লাহকে ছাড়া অন্য কারো জন্য আমল করা থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

অনেক হাদীসও রয়েছে, যেগুলো সুপরিচিত ও সুপ্রসিদ্ধ।

তার মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হাদীসটি হল ওমর ইবনুল খাত্তাব রা: এর হাদীস, যা ইমাম বুখারী ও মুসলিম রহ: বর্ণনা করেছেন। নবী সা: বলেন:

“নিশ্চয়ই আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। প্রতিটি মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ীই ফল পাবে। তাই যার হিজরত আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের জন্য হবে, তার হিজরত পরিণামেও আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের জন্যই হবে।

আর যার হিজরত দুনিয়া অর্জনের জন্য বা কোন মহিলাকে বিবাহ করার জন্য হবে, তার হিজরত পরিণামেও সেই জন্যই হবে, সে যে জন্য হিজরত করেছে।“

আরেকটি হাদীসও সবার মাঝে প্রসিদ্ধ। সহীহ মুসলিমে রয়েছে, আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল  সা: বলেছেন:

আল্লাহ তা’আলা বলেন, আমি হলাম শরীককারীদের শিরক থেকে সর্বাপেক্ষা বেশি অমুখাপেক্ষী। সুতরাং যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করে, যাতে আমাকে ব্যতীত অন্য কাউকে শরীক করে, আমি তা থেকে মুক্ত। সেটা ঐ ব্যক্তি বা বস্তুর জন্যই হবে, যাকে সে আমার সাথে শরীক করেছে।

আরেক হাদীসে এসেছে,

‘আমি তাকেও ছেড়ে দেই এবং তার শিরককেও’।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা শিরককে গ্রহণ করেন না। শিরকযুক্ত আমল ঐ সত্তার জন্যই হবে, যার উদ্দেশ্যে এই আমল করা হয়েছে।

মোটকথা, ইখালাসের ফাযায়েল বর্ণনা করে ও আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো উদ্দেশ্য ইবাদত করা থেকে সতর্ক ও ভীতি প্রদর্শন করে অনেক আয়াত ও হাদীস এসেছে।

আর সব মানুষের চেয়ে ইখলাসের বেশি প্রয়োজন যাদের, তারা হলেন আল্লাহর পথের মুজাহিদগণ। যারা তাদের আত্মাগুলোকে হাতের তালুতে নিয়ে ঘুরেন, সকাল-সন্ধা তা আল্লাহর সামনে পেশ করেন এবং আল্লাহর নিকট কামনা করেন, যেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাদের পূরো জীবনটাকেই তার জন্য কবুল করে নেন।

সুতরাং মুজাহিদগণই স্বীয় ইখলাস যাচাই করার অধিক উপযুক্ত। সকাল-সন্ধা এবং প্রতিটি আমলের মধ্যে। নিজের আত্মার সমালোচনা করবেন, তাতে ইখলাস ছিল কি না।

কারণ এ ব্যাপারে ধমকি বড় কঠিন। সর্বপ্রথম যাদেরকে দিয়ে আগুন প্রজ্জলিত করা হবে, তারা হল তিন শ্রেণীর ব্যক্তি।

উস্তাদ আল-আদহাম বলেন,  সুতরাং জিহাদ সর্বপ্রকার নফসের চাহিদা, আলোচিত হওয়ার আগ্রহ ও খুঁত থেকে মুক্ত হতে হবে, যেমন প্রসিদ্ধি ও প্রশংসা লাভের আগ্রহ অথবা কোন দল অন্যান্য দলের  উপর বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা অথবা মর্যাদা লাভের ইচ্ছা।

আমরা শুধু এই উদ্দেশ্যে জিহাদ করবো, যে এর দ্বারা আল্লাহর কালিমা বুলন্দ হবে।

তাই অন্যান্য মানুষ যুদ্ধ করে, নিজে উচ্চ মর্যাদা লাভের জন্য বা তার দল, সংগঠন বা গোষ্ঠীকে উচু করার জন্য। আল্লাহ সুবাহানাহু বলেন:

“ওই পরকালীন নিবাস তো আমি সেই সকল লোকের জন্যই নির্ধারণ করব, যারা পৃথিবীতে বরত্ব দেখাতে ও ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে চায় না। শেষ পরিণাম তো মুত্তাকীদের অনুকূলে থাকবে।”

নিয়তের বিধি-বিধান অনেক রয়েছে। ইংশাআল্লাহ ফিকহুল হারবের আলোচনায় আমাদের সাথে থাকুন, পূর্ণ একটি আসরে তার বিষয়ে আলোচনা করবো। জিহাদের মধ্যে নিয়তের আহকাম, কোনটা সঠিক নিয়ত, কোনটা ফাসিদ নিয়ত এ বিষয়ে সেখানে আলোচনা হবে ইংশাআল্লাহ।

এখানকার আলোচ্য বিষয় হচ্ছে নিয়তের মধ্যে ইখলাস।

দ্বিতীয় বিষয়: রাসূলুল্লাহ সা: এর অনুসরণ। অনুসরণ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে রাসুলুল্লাহ সা: এর আদর্শকে আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করা ও তার অনুসরণ করা।

এটা হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সা: কে আল্লাহর রাসূল বলে সাক্ষ্যদানের অনিবার্য দাবি। ‘রাসূলুল্লাহ সা: আল্লাহর রাসূল’ এ কথার সাক্ষ্য দেওয়ার অর্থই হল, তিনি যে নীতি ও আদর্শ নিয়ে এসেছেন, আমার উপর এককভাবে তারই অনুসরণ করা ওয়াজিব।

সুতরাং একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা সেই পন্থায়, যে পন্থা রাসূল সা: নিয়ে এসেছেন। অর্থাৎ ইবাদতও একক সত্ত্বারই করা এবং অনুসরণও একক সত্তারই করা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:

“রাসূল যা তোমাদের নিকট নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যা থেকে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাক।”

আরেক স্থানে বলেন:

“না, (হে নবী!) তোমার প্রতিপালকের শপথ, তারা ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত নিজেদের পারস্পরিক ঝগড়া-বিবাদের ক্ষেত্রে তোমাকে বিচারক না মানে, তারপর তুমি যে রায় দাও সে ব্যাপারে নিজেদের অন্তরে কোনওরূপ কুণ্ঠাবোধ না করে এবং অবনত মস্তকে তা গ্রহণ করে নেয়।”

রাসূলুল্লাহ সা: যা নিয়ে এসেছেন তার অনুসরণনের জন্য নিজেকে একনিষ্ঠভাবে সঁপে দিতে হবে ও আত্মসমর্পণ করতে হবে।

রাসূল সা: থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে, বুখারী ও মুসলিম রহ: বর্ণনা করেন: নবী সা: বলেন:

“যে ব্যক্তি আমাদের এই বিষয়ের মধ্যে এমন কোন কিছু নতুন করে সৃষ্টি করবে, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত।“

উস্তাদ আল-আদম বলেন:

সুতরাং প্রত্যেক মুজাহিদের উচিত দ্বীনের ফিকহ অর্জন করা, উপযুক্ত স্থান থেকে ইলম অন্বেষণ করা এবং সালফে সালিহীনের পদাঙ্ক অনুসরণ করা, যাতে মুক্তির পথের পরিচয় লাভ করা যায়।

কারণ যে-ই পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং যে-ই বক্র পথে চলেছে সে একমাত্র রাসূলুল্লাহ সা: এর পথ বর্জন করার কারণেই পথভ্রষ্ট হয়েছে বা বক্র পথে চলেছে।

সুতরাং নিশ্চয়ই এ দল বা সে দল, তথা যারাই সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, পভ্রষ্টতার পথে চলেছে এবং অজ্ঞতার পথ মাড়িয়েছে তাদের এহেন পরিণতি একমাত্র নবী কারীম সা: এর আদর্শ থেকে সরে যাওয়ারই অনিবার্য ফল।

তাই পথভ্রষ্টতার কারণ হল ইখলাসের মধ্যে গড়মিল এবং রাসূলুল্লাহ সা: এর অনুসরণের মধ্যে গড়মিল।

আমরা আল্লাহ তা’আলার নিকট প্রার্থনা করি, তিনি আমাদেরকে তার আনুগত্য করার তাওফীক দান করুন এবং আমাদের থেকে তার অবাধ্যতার বিষয়গুলো দূরে রাখুন!

আমীন!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − six =

Back to top button