আরবতথ্য প্রযুক্তি ও যুদ্ধকৌশলবই ও রিসালাহশাইখ ইউসুফ আল উয়াইরী রহিমাহুল্লাহসৌদী আরবহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

মুজাহিদের ফিটনেস প্রশিক্ষণ!!

শাইখ ইউসুফ আল ইউরি(আল্লাহ তার উপর রহম করুন) বলেছেনঃ

“প্রকৃতপক্ষে মুজাহিদের শারীরিক ফিটনেস, তার বিশাল দূরত্ব দৌড়ানো, ভারী ওজন বহন এবং উল্লেখযোগ্য সময়ব্যাপি শারীরিক পরিশ্রম করতে পারার দক্ষতা তার যুদ্ধময়দানে ব্যবহারোপযুগি হবার প্রধান শর্ত একজন মুজাহিদ অস্ত্রচালনার ব্যাপারে দক্ষ হতে পারে কিন্তু তার শারীরিক ফিটনেসের অভাবে সে তার অস্ত্রচালিত করার উপযুক্ত অবস্থান নির্ধারন করতে ব্যর্থ হয়, অথবা একটি দেয়াল পরিমাপ করে অস্ত্রচালিত করার একটি তুলনামূলক ভাল অবস্থান নির্ধারন করতে ব্যর্থ হয়এটা শুধুমাত্র শারীরিক ফিটনেসের অভাবেই হতে পারে অপরদিকে, উন্নত পর্যায়ের শারীরিক ফিটনেসসম্পন্ন মুজাহিদ যে কোন কাজ যা তার থেকে প্রয়োজন তা সর্বোৎকৃষ্ট উপায়ে সম্পন্ন করতে পারে যদিও সে অস্ত্রচালনার ব্যাপারে দক্ষ না হয় কারণ সে অস্ত্রচালনার জন্য সর্বোতকৃষ্ট উপায়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তন ও নির্ধারণ করে, আর সে এ সবকিছু সবচেয়ে দ্রুত এবং সহজ উপায়ে করে, যেহেতু ক্লান্তি এবং কাতরতা তাকে জয় করতে পারে না, তার চিন্তাকে আচ্ছন্ন করতে পারে না এবং তার গতিতে কোন প্রভাব ফেলতে পারে না এর ফলে আমরা এ কথা বলতে পারি যে, শারীরিক ফিটনেস মুজাহিদের একটি অপরিহার্য সম্পদ, বিশেষকরে স্ট্রীট-ফাইটিং এর ক্ষেত্রে।“

আর আমাদের সময়ে, যার মাঝে আমরা বসবাস করছি, আমরা দেখি যে পৃথিবীতে আজ সবগুলো জিহাদই চলছে গেরিলাযুদ্ধ এবং স্ট্রীট-ফাইটিং প্রক্রিয়ায়। আর এর জন্য প্রয়োজন উন্নত পর্যায়ের শারীরিক ফিটনেস। সুতরাং, হে আমার ভাই, নিজ ব্যতীত অন্যের উপর বোঝা হয়ো না, আর এখন থেকেই প্রয়োজনীয় পর্যায়ের শারীরিক ফিটনেস অর্জন শুরু কর।

হে আমার ভাই, শারীরিক ফিটনেসের এই ব্যাপারটিকে ছোট বলে মনে কর না, আর জেনে রাখ যে এর পুরস্কার অনেক বড় যদি তা অর্জনের নির্ভেজাল নিয়্যাত থাকে এবং যদি তুমি এর মাধ্যমে নিজেকে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য প্রস্তুত করার নিয়্যাত কর, আর দুর্বল ঈমানদার অপেক্ষা শক্তিশালী ঈমানদার আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়, আর শক্তির মাঝে আছে দৈহিক শক্তি এবং শারীরিক শক্তি।

শাইখ,মুজাহিদ ইউসুফ আল ইউরি বলেছেন,

“মুজাহিদের যে পর্যায়ের শারীরিক ফিটনেস প্রয়োজন তা নিম্নোক্ত বিষয়সমূহকে অন্তর্ভূক্ত করেঃ

থামা ব্যতীত ১০ কি.মি.(৬.২ মাইল) জগিং কর, আর এটা করতে সবচেয়ে খারাপ হলে ৭০মিনিট সময় লাগবে

১৩.৫ মিনিটে ৩ কি.মি (২ মাইল) দূরত্ব দৌড়াও

১২-১৫ সেকেন্ড বিরতিতে ১০০ মি. দূরত্ব দৌড়াও

কোন বিরতি ব্যতীত ১০ ঘন্টা টানা বিশাল দূরত্ব হাটো

৪ ঘন্টাব্যাপী ২০ কে.জি. ওজন বহন কর সোজা

থামা ব্যতীত একবারে ৭০টি পুসআপ দাও (একজন ১০টির মাধ্যমে শুরু করতে পারে, এভাবে প্রতিদিন ৩টি করে বাড়িয়ে যাবে ৭০টি হওয়া পর্যন্ত)

থামা ব্যতীত একবারে ১০০টি সীটআপ দাও (একজন ১০টির মাধ্যমে শুরু করতে পারে, এভাবে প্রতিদিন ৩টি করে বাড়িয়ে যাবে ১০০টি হওয়া পর্যন্ত)

সর্বোচ্চ ৭০ সেকেন্ডে আরমস এর উপর ভর দিয়ে ৫০ মি. ক্রল কর

দৌড়ানোর ন্যায় ফারাত (হাটা, দ্রুত হাটা, জগিং এবং দৌড়ানোর একটি সম্মিলিত অনুশীলন)কর, এবং এটি নিম্নরূপঃ

প্রথমে মুজাহিদ ২ মিনিট হাটে, এরপর সে ২ মিনিট দ্রুত হাটে, এরপর সে ২ মিনিট জগিং করে, এরপর সে ২ মিনিট দৌড়ায়, এরপর সে দ্রুত বেগে ১০০ মি. দৌড়ায়, এরপর সে হাটাতে ফিরে আসে এবং এভাবে চলতে থাকে যতক্ষন না সে টানা ১০ বার বিরতিহীন ভাবে এটা করে আর স্বাভাবিক হাটা ও দ্রুত হাটার মাঝে পার্থক্য আছে, দ্রুত হাটা ও জগিং এর মাঝে পার্থক্য আছে, জগিং ও দৌড়ানোর মাঝে পার্থক্য আছে, দৌড়ানো ও দ্রুত বেগে দৌড়ানোর মাঝে পার্থক্য আছে স্বাভাবিক হাটার সাথে সবাই পরিচিত, দ্রুত হাটা হল আগের চেয়ে তুলনামূলক দ্রুত বেগে হাটা যেন পা মাটি থেকে দীর্ঘ সময় উপরে না থাকে যেমন স্বাভাবিক হাটার সময় থাকে আর জগিং হল যেন একজন ১ কি.মি.(০.৬ মাইল) দূরত্ব ৫.৫ মিনিটের কম সময়ে অতিক্রম করে আর দৌড়ানো হল যেন একজন ১ কি.মি.(০.৬ মাইল) দূরত্ব ৪.৫ মিনিটের কম সময়ে অতিক্রম করে

এই পর্যায়ের শারীরিক ফিটনেস একজন মুজাহিদ দ্বারা ১ মাসের মধ্যেই অর্জিত হতে পারে যদি সে কঠোর প্রচেষ্টা চালায়, এই শর্তানুসারে, যে সে পর্যায়ক্রমে আগাবে, নিজের পেশীর ক্ষতি করবে না বা ছিড়ে ফেলবে না উদাহরনস্বরূপ, যদি একজন মাসের শুরুতে ১৫ মিনিট জগিং করে এবং প্রতিদিন ২ মিনিট করে বাড়ায় তবে তার মানে দ্বাড়ায় যে, এক মাসের মাঝে সে বিরতিহীন টানা এক ঘন্টা দৌড়ানোর সামর্থ্য রাখবে ( যদি ধরে নেই যে ২০ দিনে এক মাস অর্থাৎ, সে সপ্তাহে ৫ দিন দৌড়াবে)একইভাবে, যদি সে মাসের শুরুতে ১০টি করে পুশআপ দেয় এবং প্রতিদিন ৩টি করে বাড়ায় তবে এর মানে দ্বাড়ায় যে সে মাসের শেষে বিরতিহীন টানা ৭০ টি পুষআপ দিতে পারবে সুতরাং, ধীরে ধীরে এবং অবিচ্ছিন্ন ভাবে অনুশীলন একজনের ফিটনেসের উপর অনেক বড় প্রভাব ফেলে একজন মুজাহিদের এই শারীরিক অনুশীলনের সাথে একইসাথে শক্তিবর্ধক অনুশীলন থাকতে হবে যা তার পেশীকে শক্তিশালী করবে এবং উপযুক্ত করে তুলবে আর মুজাহিদের অবশ্যই সেই ধরনের ভারী অনুশীলনে মনযোগ দিতে হবে যা কোন প্রকারের ভারী সাজসঞ্জাম ছারাই করা যায় যেন যে কোন জায়গাতেই তার অনুশীলন চালিয়ে যেতে পারে একজনের শরীরের উপর অনুশীলনের সাজসরঞ্জামের খারাপ প্রভাব হল যে যদি সে এগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য সময় দূরে থাকে, তবে সে নিস্ক্রিয় হয়ে পরে সর্বোতকৃষ্ট অনুশীলন হল সেগুলো যেগুলো সহজেই করা যায় এবং শরীরের নিজের শক্তির উপর নির্ভর করে।“

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × five =

Back to top button