আন-নাসর মিডিয়াইতিহাস- ঐতিহ্যবই ও রিসালাহবই ও রিসালাহ [আন নাসর]বার্তা ও বিবৃতিবার্তা ও বিবৃতি [আন নাসর]মিডিয়াশাইখ আইমান আয যাওয়াহিরী হাফিযাহুল্লাহহযরত উলামা ও উমারায়ে কেরাম

বিজয়ী উম্মাহর প্রতি সংক্ষিপ্ত বার্তা – পর্ব ৫ – আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো সামনে মাথা নত করি না – শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ

বিজয়ী উম্মাহর প্রতি সংক্ষিপ্ত বার্তা – পর্ব ৫

আমাদের জাতির প্রতি আমাদের বার্তাঃ আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো সামনে মাথা নত করি না

– শায়খ আইমান আয-যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ

 

ডাউনলোড করুন

ভিডিও ডাউনলোড করুন [২৬ এমবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/QzRDaApXdZmYwkG

https://archive.org/download/GairullahrSamneMathaNotoKorbona/gairullahr%20samne%20matha%20noto%20korbona.mp4
https://www.file-upload.com/miswbs1z5va8
http://www.mediafire.com/file/i2w250ajkoo2f4c/gairullahr_samne_matha_noto_korbona.mp4/file
https://ln.sync.com/dl/ba4414620/6afjz6pw-wgq9ak8c-dmhzai4k-yj8vcj7h

পিডিএফ ডাউনলোড করুন [২২৩কেবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/qKgmTQrTRgnGjaa

https://archive.org/download/GairullahrSamneMathaNotoKorbona/gairullahr%20samne%20matha%20noto%20korbo%20na.pdf
https://www.file-upload.com/cin7vnegxcyl
http://www.mediafire.com/file/joriau63vqqzdec/gairullahr_samne_matha_noto_korbo_na.pdf/file
https://ln.sync.com/dl/beae98780/hfkufy5d-9vnns3bn-pi9bgq8b-g6prbe2x

ওয়ার্ড ডাউনলোড করুন [৬৪কেবি]
https://banglafiles.net/index.php/s/RjCayNoppHWjEG9

https://archive.org/download/GairullahrSamneMathaNotoKorbona/gairullahr%20matha%20noto%20korbo%20na.docx
https://www.file-upload.com/ne51mq58ipnj
http://www.mediafire.com/file/lbma7rdusm7bnbn/gairullahr_matha_noto_korbo_na.docx/file
https://ln.sync.com/dl/dd3b725c0/kikxtznk-zjhrrjdn-cj86fxxp-85p9ib4a

====================

مع تحيّات إخوانكم
في مؤسسة النصر للإنتاج الإعلامي
قاعدة الجهاد في شبه القارة الهندية (بنغلاديش)
আপনাদের দোয়ায় মুজাহিদ ভাইদের ভুলবেন না!
আন নাসর মিডিয়া
আল কায়েদা উপমহাদেশ বাংলাদেশ শাখা
In your dua remember your brothers of
An Nasr Media
Al-Qaidah in the Subcontinent [Bangladesh]


বিজয়ী উম্মাহর প্রতি সংক্ষিপ্ত বার্তা

পঞ্চম পর্ব

আমাদের জাতির প্রতি আমাদের বার্তাঃ

আমরা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো সামনে কখনই মাথা নত করি না!

শায়েখ আইমান আয-যাওয়াহিরি হাফিজাহুল্লাহ

আস সাহাব মিডিয়া

আন নাসর মিডিয়া

অনুদিত

بسم الله والحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وآله وصحبه ومن والاه

আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করছি, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য, সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসুল, তার পরিবারবর্গ, তাঁর সাহাবায়ে কেরাম ও ওই সকল লোকদের উপর, যারা তাঁর সাথে সম্পর্ক রাখে।

হে বিশ্বের মুসলিম ভাইয়েরা! আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহ।

পরকথা হল, আল্লাহ তায়ালার অপার অনুগ্রহে আল-কায়দা ও অন্যান্য মুজাহিদগণ আজ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অপরাধীদের হুমকির আসল রূপ দেখিয়ে দিচ্ছে এবং শুধু মুসলিম জাতি নয় বরং পুরো দুনিয়ার নির্যাতিতদের জাগিয়ে তুলতে মুজাহিদদের পক্ষে এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিবাহিত হচ্ছে। যেন তারা তাদের অধিকার আদায় করতে পারে এবং যুলুম, অন্যায়, খোদাদ্রোহীতা ও শিরকের মোকাবেলা করতে পারে। আর এ কারণে আল-কায়দা ও অন্যান্য মুজাহিদদের উপর বিভিন্ন দিকে থেকে হামলা, হুমকি এবং তিরষ্কারও আসছে।

আফসোসের বিষয় হল, এ হামলায় যারা শরীক হয়েছে তাদের অন্যতম হল ইবরাহীম আল বদরী (আবু বকর আল বাগদাদী)-র মিথ্যাচারকারীরা, যারা আমাদের ব্যাপারে মিথ্যাচার করছে। তারা মনে করে, আমরা তাগুতকে অস্বীকার করি না, গণতন্ত্রের সমর্থন করি, মুহাম্মদ মুরসির প্রশংসা করি এবং আমরা নাকি দাবি করি- তিনি জাতির আশার ভরসা এবং একজন বীর সেনাপতি। তারা এখনো পর্যন্ত এ অভিযোগ করে আসছে যে, আমি খৃস্টানদেরকে ক্ষমতায় অংশীদার করতে আহবান জানিয়েছি। বস্তুত এটি একটি মিথ্যাচার ব্যতিত আর কিছু না। আমি তাদের যা বলেছি তা হল, বসবাসের ক্ষেত্রে তারা শরীকদার অর্থাৎ তারা জমি, কৃষি বাণিজ্য ও অর্থ ইত্যাদিতে অংশীদার হতে পারবে এবং আমরা তাদের জানের নিরাপত্তা দিব। তবে তা অবশ্যই শরীয়তের বিধান মোতাবেক হতে হবে।

এমনকি তারা এও অভিযোগ করছে যে, আমি শিয়াদেরকে কাফের মনে করি না। অথচ সর্বসাধারণের কাছে প্রকাশ করার এক বছর পূর্বেই আমি তাদের নিকট ‘ওছিকাহ’ (জিহাদের সাধারণ দিক নির্দেশনা) পাঠিয়েছি। কিন্তু তারা এগুলোর উত্তরে একটি শব্দও লেখেনি। আমি অনেকবার তাদের নিকট বার্তা পাঠিয়েছি যেন, তারা বাজার, মার্কেট, বিভিন্ন দর্শনস্থল এবং মসজিদে হামলা পরিচালনা না করে বরং সরকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ ও শিয়া মিলিশিয়াদের উপর আক্রমণকে যেন প্রাধান্য দেয়। কিন্তু তারা একটি কথার প্রতিও ভ্রুক্ষেপ করে নি। আর যখন আমরা তাদের অন্যায়ভাবে রক্ত প্রবাহের সীমালঙ্ঘনের বিরুদ্ধে দাঁড়ালাম, তখন তারা বলতে শুরু করল যে, আমরা শিয়াদের কাফের মনে করি না এবং তাদের হত্যা করতে বারণ করছি। অথচ আমার এক লিখিত বক্তব্যে শিয়াদের ব্যাপারে আহলে সুন্নাহ ইমামদের মতগুলো উল্লেখ করেছি। ইরাকের সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর উপর আক্রমণ করার নির্দেশও দিয়েছি- যাদের অধিকাংশই শিয়া মতাবলম্বী। এমনিভাবে শিয়া মিলিশিয়াদের উপর আক্রমণ করারও নির্দেশ দিয়েছি এবং আমি এ নির্দেশগুলোকে মোটা হরফে আন্ডারলাইন করে দিয়েছি, যাতে দুর্বল দৃষ্টিসম্পন্ন লোকরাও কোনো অজুহাত দেখাতে না পারে। কিন্তু দুর্বল অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্নদের তা কি বা উপকারে আসবে!

অনুরূপ আমাদের উপর বিভিন্ন দিক থেকে তিরষ্কারের ঝড় উঠেছে এই বলে যে, তোমরা এখন আল-কায়দার মূল মতবাদ থেকে দূরে সরে গিয়েছ, যার কারণে আমেরিকা এখন আর তোমাদের নিয়ে মাথা ঘামায় না, তাদের বিমান হামলা এখন আর তোমাদেরকে লক্ষবস্তুতে পরিণত করে না এবং তোমরা এখন আর আল-কায়দার দায়িত্বভার বহন করতে পারছ না। (তাদের কথা থেকে বুঝা যায়) যেন আমেরিকার সন্তুষ্টই এখন মুখ্য উদ্দেশ্য বা জিহাদের ময়দানে সাহায্যের আসল পথ। আল-কায়দা যেন অপরাধী হয়ে গেছে। কারণ তারা আমাদের দেশে আমেরিকা ও তার দোসরদের বিরোধিতা করছে। আল-কায়দার আবির্ভাবের পূর্বের যেন আমেরিকা মুসলমানদের কোন ক্ষতিই করেনি! অথচ যখন আমেরিকা ভিয়েতনামে আক্রমণ করে তখন তাতে ৫০ লাখ মানুষ নিহত হয়। আমেরিকা শুধুমাত্র এজেন্ট অরেঞ্জ ফেলার কারণে ৫ লাখেরও বেশি শিশুর অঙ্গ বিকৃতি ঘটে। আর এ কারণে নতুন নতুন অনেক ক্যান্সার দেখা দিয়েছে। আর এর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাদের মর্টার বোমা -পারমানবিক বোমা ছাড়াই- জাপানের প্রায় ৪ লক্ষ মানুষকে হত্যা করে। তারপর হিরোশিমা ও নাগাসাকায় তারা পারমানবিক বোমা নিক্ষেপ করে এতে আড়াই লক্ষেরও অধিক মানুষ নিহত হয়। আর একমাত্র কারণ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

হ্যামবার্গে তাদের মর্টার বোমা হামলায় এক রাতে ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়। অপর এক রাতে দারাজদানে বোমা হামলায় ১ লক্ষ ৫৩ হাজার নিরীহ জনগন নিহত হয়। আর যখন আমেরিকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাডলিন ওলব্রাইটকে ইরাকের ৫ লক্ষ শিশু হত্যা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হল, তখন সে তাদের প্রসিদ্ধ উক্তিটি উচ্চারণ করে বলেছিল, “এটাই তাদের প্রাপ্য ছিল”। এবং আমেরিকা ও তার দোসররা প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধে ইরাকে ৩২০ টন ইউরেনিয়াম বারুদ নিক্ষেপ করেছিল। দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ ও আফগান জিহাদের বেলায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল; তখন ওরা এগুলো ঠিক কি পরিমাণে নিক্ষেপ করেছিল তা কেউ জানে না। এর সবকিছুই আমেরিকার দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল- এবং এখনো ভিয়েতনামের বৌদ্ধ, কম্যুনিস্ট, এবং খৃষ্টান ধর্মালম্বী জার্মান ও সাদ্দামের জাতীয়তাবাদী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আমেরিকা এগুলো ব্যবহার করে যাচ্ছে। আল কায়েদার সঙ্গে ওদের কোন ধরণের সম্পর্ক নেই, তা সত্ত্বেও ওদের ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া হয় নাই, কেননা তারা সর্বদা তাদের আগ্রাসী ভূমিকার উপর বহাল থাকে। তাই তাদের এই গোলাবর্ষণ কেবলমাত্র আল কায়েদার বেলায় সীমাবদ্ধ না। বরং যারাই আমেরিকার আগ্রাসনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তাদের সবাইকে আমেরিকা তার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

মুহাম্মদ মুরসি ওদের সকল চাহিদার সাথে সম্মত হয়েছিল, অথচ আমেরিকার তার প্রতি কোন দয়া প্রদর্শন করেনি, তবে এটা কিভাবে হতে পারে যে, ওরা শরীয়াহ আইনের প্রতি আহবানকারী, আল কুদসের স্বাধীনতাকামী এবং মুসলিম ভূমিতে অবস্থানরত কোন মুজাহিদের উপর দয়া করবে, যদিও সে আল কায়েদা ব্যতীত অন্য কোন দলের হয়ে থাকে!

সুতরাং পুরো ব্যাপারটি একেবারে কাচের ন্যায় স্বচ্ছ যে, আমরা কিছুতেই পশ্চিমা সন্ত্রাসী প্রোপাগান্ডা ও তাদের কূট-পরিকল্পনা এবং তাদের প্রতারক দালালদের প্রবঞ্চনায় ধরা দেব না। এবং (গোপন) উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারী ওই সকল মিথ্যাবাদী যারা আল কায়েদার বিরুদ্ধে সকল ধরণের বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ আরোপ করে, তারা বলে যে, আমরা আফগানিস্তানে রাশিয়ান হামলার সময়ে আমেরিকার তৈরীকৃত দালাল। এবং আমরা সৌদি আরবের গুপ্তচর ও তাদের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি।

এবং রাওয়াফিদ, আধুনিক যুগের সাওয়াফিদরা আমাদের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও ইসরাইলের স্বপক্ষে গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগ করে। তাদের প্রচার মাধ্যমগুলোতে স্পষ্ট মিথ্যা প্রকাশ করা হয়েছে যে, ৯/১১ এর হামলা আসলে একটি ইহুদীবাদি চক্রান্ত (Zionist conspiracy) এবং এটা হচ্ছে আমেরিকার ইরান আক্রমণ করার পেছনে একটা অজুহাত মাত্র, অথচ হামলার ১৫ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও বাস্তবে এখনো তা ঘটেনি বরং তাদের পারষ্পরিক সম্পর্ক পূর্বের চেয়েও অধিকতর জোরদার হয়েছে, এবং আফগানিস্তান, আরব উপদ্বীপ ও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা পরস্পর মিত্রতার সম্পর্ক স্থাপন করেছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকান দালাল ও তাদের প্রোপাগান্ডাসমূহে বলা হয়েছে যে, আমরা ইরানের এজেন্ট, যারা তার লক্ষ্য পূরণে বদ্ধ পরিকর। এবং পরিশেষে তারা আমাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে বলেছে। কেননা আমরা আমেরিকার শত্রু এবং যারাই আমাদের সাথে থাকে, তারা আমাদের সন্ত্রাসবাদের উত্তরাধিকারী হয়ে যায়।

যখন উসামা বিন লাদেন- আল্লাহ তাঁর উপর রহম করুন- মুজাহিদিনদের মধ্যে ঐক্যের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিলেন, তখন তারা সরকার ও সেনাবাহিনীকে তাকফিরকারীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে শায়খকে কঠোর উগ্রপন্থার দায়ে অভিযুক্ত করে। তাদের বক্তব্যগুলোতে তাদের প্রশংসা এবং করজোড়ে তাদের নামগুলো উল্লেখ করার পর- বর্তমান যুগের খারেজিদের মতের বিবেচনায় – তারা নিজেরাই দ্বীন থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে এবং উসামা বিন লাদেনের আদর্শ থেকে তাদের বিচ্যুতি ঘটেছে। কারণ তাদের অপবাদ অনুযায়ী, আমরা আমাদের বিবৃতিতে শাসকদের কুফরীগুলো প্রকাশে শিথিলতা অবলম্বন করি, এবং আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠের পেছনে পড়ে আছি, আমরা শিয়াদের তাকফির করি না, এবং আমরা মুহাম্মদ মুরসিকে সমর্থন করি, আমরা বিপ্লবের পূর্বে ও পরে অত্যাচারীদের সেনাদলের মধ্যে পার্থক্য করি। এভাবেই তারা জেনেশুনে মিথ্যার পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে তাদের পূর্বসূরিদেরকেও অতিক্রম করে গেছে, এবং তাদের পূর্বসুরিরা একে কুফর হিসেবে বিবেচনা করত।

এভাবে মিথ্যার সমুদ্রে এরকম অনেক মিথ্যা আর জালিয়াতি পাওয়া যাবে যেগুলো পরস্পর সাংঘর্ষিক। যেখানে সৃষ্টির সবচেয়ে মহৎ ব্যক্তিকে (সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম) একজন কবি এবং একজন যাদুকর ও পাগল হিসেবে অভিযুক্ত ও অপদস্থ করা হয়েছিলো, যেখানে তখনকার মুনাফিক ও রাওয়াফিদরা তাঁর পবিত্র সহধর্মিণীর নামে অপবাদ দিয়েছিলো, এবং রাওয়াফিদরা যেখানে অধিকাংশ সাহাবীদেরকে কাফির আখ্যায়িত করে, খাওয়ারিজরা যেখানে সাহাবিদের তাকফির করার পর হত্যা করে, এবং যেখানে আল-হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ – যে কিনা ইবরাহীম আল বদরীর খিলাফাতকে দৃঢ় সমর্থনকারী সাদ্দামের প্রাক্তন সেনাপ্রধান ও গোয়েন্দাদের আদর্শ – যে কুফাতে তার বিরোধীদের হত্যা করতো, কেননা তারা নিজেদের কুফরীর সাক্ষ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জানিয়ে ছিল। আমরা কিভাবে মিথ্যা অপবাদ থেকে নিরাপদ থাকতে পারি যেখানে নবীগণ (আলাইহিমুস সালাম) এসব থেকে থেকে নিষ্কৃতি পান নি, যেখানে সাহাবিগণ (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) এবং তাদের অনুসারীরাও এ থেকে মুক্তি পাননি।

لئن كنت قد بلغت عني وشايةً    لمبلغك الواشي أغش وأكذب

যদি আমার ব্যাপারে আপনাদের নিকট বিশ্বাসঘাতকতার অপবাদ পৌছে থাকে

তবে অপবাদ আরোপকারী আরো বড় বিশ্বাসঘাতক ও প্রতারক।

তাই আমি এখানে খুব দ্রুত ও সংক্ষিপ্ত আকারে সমগ্র বিশ্ব ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি আল কায়েদার বার্তার মূল বিষয়বস্তুটি ব্যাখ্যা করতে চাই। তবে শুরু করার পূর্বে আমি তিনটি বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাই।

প্রথমতঃ আমরা ভুলত্রুটির উর্ধ্বে নই বরং আমরাও মানুষ, ফলে আমাদের দ্বারা যেমন কখনো কখনো কোনো কাজ সঠিকভাবে সম্পাদিত হয়, তেমনিভাবে কখনো কখনো ভুলও হতে পারে। তাই আমাদের কর্তব্য হল, সদুপদেশ-পরামর্শ মনোযোগ দিয়ে শুনা। আর আমাদের প্রতি আমাদের উম্মতের কর্তব্য হল, যথাযথ ভাবে নসীহত ও পরামর্শ দান করা। তবে শর্ত হল, তা বাস্তবসম্মত ও শরয়ী দলীল ভিত্তিক হতে হবে। ইনশাআল্লাহ অবশ্যই আমরা সর্বদাই ‘উপদেশ’ থেকে উপকৃত হব, চাই আমরা তা দ্বারা পরিতৃপ্ত হই বা না হই। বরং আমরা চাই ইসলামী বিশিষ্টজনদের নিয়ে “দ্বীনকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিশুদ্ধতম পথ ও পন্থা” সম্পর্কে একটি সংলাপ অনুষ্ঠিত করতে, যাদের প্রথম সারিতে থাকবেন মুজাহিদগণ।

দ্বিতীয়তঃ ইসলামকে সাহায্য করার জন্য আমরা যেসব কার্যকর পথ গ্রহণ করেছি, যেমন বর্তমান যুগের মিথ্যা রব আমেরিকার বিরুদ্ধে জিহাদকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং এর দিকে আহবান করা। এটা কেবলমাত্র একটি কার্যকর ইজতিহাদ, এটা আসমান থেকে নাযিলকৃত কোন ওহী নয়, কাজেই আমরা আমাদের মুজাহিদ ভাই ও মুসলিম ভাইদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে পরামর্শ, নসীহত ও নির্দেশনা গ্রহণ করব। এবং প্রায়োগিক বাস্তব বস্তু যেখানেই থাকুক না কেন আমরা এর সাথে গঠিত হব। আমরা সর্বদা শরীয়তের আদেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং শরীয়তের নিষেধকৃত বিষয় থেকে আমরা বিরত থাকব।

তৃতীয়তঃ আমাদের মানহাজ ও আমাদের রিসালা বহুবার তা বর্ণনা করেছে, ইসলামিক মাঘরিব থেকে ভারত উপমহাদেশের মুসলিম ভাইগণ এই বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছেন, বিষয়টিকে স্পষ্ট করেছেন, বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন, দলীলসমূহ কায়েম করেছেন, সন্দেহ নিরসন করেছেন, এবং তারা রেখে গেছেন বরকতময় উৎপাদন, আবেদনময় মীরাছ ও কৃতজ্ঞতাময় ইলম। আর এমনিভাবে আমি দুটি পত্রে আমাদের দাওয়াত ও আমাদের বার্তাসমূহের সারাংশ সংক্ষিপ্তাকারে সন্নিবেশিত করেছি, যেমন “ইসলামের সমর্থনে প্রামাণ্যপত্র” ও “জিহাদের সাধারণ দিক নির্দেশনা” নামক পত্রদ্বয়।

তবে সমগ্র বিশ্ব ও উম্মাহর নিকট পুনরায় এর আলোচনায় কোন অসুবিধা নেই কেননা নসিহাহ ঈমানদারদের জন্য উপকার বয়ে আনে (আল কুরআন ৫১:৫৫)।

আল্লাহর নিকট সাহায্য চেয়ে আমি বলছি

আমাদের জাতি ও সমগ্র বিশ্বের প্রতি আমাদের বার্তা হল:

প্রথমত, মহান আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি আহবান। এবং ইবাদাতের জন্য মহিমান্বিত এক আল্লাহকেই বেছে নেওয়া ও তাঁর শরীয়াহ, হুকুম ও আচার অনুষ্ঠান অনুযায়ী পরিচালিত হওয়া।

দ্বিতীয়ত, ইসলামী শরীয়াহর দিকে আহবান করা ও তার শরীয়াহ ব্যতীত অন্য সকল আইনকে, রীতি ও বিশ্বাসকে প্রত্যাখ্যান করা। তারা হতে পারে জনগণের দ্বারা গঠিত সরকার, যারা জনগণকে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রদান করে থাকে। কিংবা হতে পারে জাতিসংঘ, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তখনকার ক্ষমতাধরদের দ্বারা প্রতিষ্ঠা করেছিল।

তৃতীয়ত, উম্মাহকে আল্লাহর একত্ববাদের অধীনে জড়ো করা। কুরআন ও সুন্নাহতে এর প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা রয়েছে এবং খুলাফায়ে রাশিদা ও সাহাবাদের রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম এর জীবনী এবং পরবর্তী শ্রেষ্ঠ তিন যুগ থেকেও তা জানা যায়।

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

خير الناس قرني ثم الذين يلونهم ثم الذين يلونهم

“আমার উম্মতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল আমার যুগ, তারপর তাদের পরবর্তী যুগ, তারপর ওদের পরে যারা আসবে তারা।” (বুখারী ও মুসলিম)

চতুর্থত, মুসলিম জাতির মাঝে জিহাদের আমলকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা, যেন তারা তাদের ভূমিগুলোকে দেশীয় কুফফার ও তাদের প্রতিনিধিদের হাত থেকে মুক্ত করতে পারে এবং মুসলিম ভূমিতে কুফফারদের অনুপ্রবেশ ও জবরদখলে সহায়তাকারী সকল ধরণের চুক্তি, সম্মেলন ও আন্তর্জাতিক সমাধান বর্জন করা। যেমন ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলদারিত্ব এবং রাশিয়া কর্তৃক মধ্য এশিয়া ও ককেশাস দখল, এবং ভারতের কাশ্মীর দখল, স্পেনের সিউটা ও মিলিলিয়া দখল এবং চীন কর্তৃক পূর্ব তুর্কিস্থান জবরদখল। আমরা আমাদের মুজাহিদ জাতির প্রতি সর্বাত্মক চেষ্টা ও গুরুত্বের সাথে বর্তমান যুগের মিথ্যা প্রভু আমেরিকার ও তাদের দোসরদের প্রতি জিহাদের আহবান জানাচ্ছি। প্রত্যেক জিহাদি কর্মক্ষেত্রের পরিস্থিতি ও এর অর্জনের কথা বিবেচনায় রেখে।

পঞ্চম, মুসলিম বন্দীদের মুক্তির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা।

ষষ্ঠ, মুসলিমদের সম্পদের নিয়মতান্ত্রিক লুটপাট বন্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করা।

সপ্তম, সম্পদ, অত্যাচারী দুর্নীতিবাজ শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য মুসলিম জনগণকে সাহায্য ও সহযোগিতা করা। জনগণকে শরীয়াহ এবং ইসলামি আইন দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানানো। এবং যারা এখনো বিদ্রোহের জন্য জেগে উঠেনি তাদেরকে বিদ্রোহের জন্য উৎসাহিত করা এবং ইসলামী বিশ্বকে দালাল সরকারদের কবল থেকে মুক্তির জন্য যারা এগিয়ে আছেন তাদেরকে অনুসরণ করা।

অষ্টম, মুজাহিদিনদের ঐক্যের জন্য আহবান করা এবং তাদের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নতি সাধন করা এবং সেক্যুলার-ক্রুসেডার-সাফাভি-বৌদ্ধ-হিন্দু পরিষদের বিপক্ষে তাদের একত্রিত, সুসংগঠিত ও পরস্পর সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করা।

নবম, নবুওয়াতের আদলে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠিত হতে হবে, যা মুসলিমদের স্বীকারোক্তি ও সন্তুষ্টির ভিত্তিতে হবে, তা পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে। এবং ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে এবং অধিকারের সংরক্ষণ ও মাজলুমের সহায়তা করবে এবং এতে কোনরূপ জাতীয় অবস্থা, কিংবা জাতীয় সংস্থা, কিংবা সীমানার দিকে ভ্রুক্ষেপ করবে না। মুসলিম উম্মাহর একটাই রাষ্ট্র এবং তারা মুসলিমদের ভ্রাতৃত্ববোধে বিশ্বাসী।

দশম, মুসলিমদের ক্ষতি করা হতে বিরত থাকবে এবং শরীয়তে বর্ণিত যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা হতে বিরত থাকবে, চাই তা কলহ, বোমা হামলা, হত্যা, গুম কিংবা অর্থ ও সম্পত্তি আত্মসাৎ করার দ্বারা হোক।

এগার, মজলুম ও অসহায়, মুসলিম কিংবা কাফের যেই হোক না কেন অত্যাচারিত ও নির্যাতিত সকলকে সাহায্য করা, এবং যারা মাজলুমদের সহায়তা করে তাদের উৎসাহিত করা, যদিও সে কাফের হয়ে থাকে। এগুলো যদি সন্ত্রাস হয়ে থাকে তবে এগুলো আমাদের গর্ব ও অহংকার এবং এগুলোই আমরা কিয়ামত দিবসের জন্য জমা করি।

ألا قولوا لأمريكا   لغير الله لن نركع

نجاهد في سبيل اللـــــــــــــــــــــه لم نخضع ولن نخشع

ولن نرجع إلى الخلف   وإن يرجعه من يفزع

ومن يتسول الدنيا    ومن يسعى ومن يطمع

سنعلنها مدويةً   لمن يبصر ومن يسمع

بأنا حرب خوان   وأعوان له تجمع

ويسرق قوت أمته  يذل الشعب أو يقمع

يشرع ملة الكفر  لها يدعو لها يركع

إلى أن يحكم الشرع   له ندعو له نخضع

نحرر مسجد الأقصى   كذا الحرمين لا نرجع

وكل ديار أمتنا  وأسرانا ولن نقنع

بغير خلافة الرشد   تلم شتاتنا تجمع

ونرغم أنف أمريكا    وأتباع لها أجمع

ونسمعهم على كره   لغير الله لن نركع

আমেরিকাকে বলে দাও ** আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো প্রতি নত হই না।

আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করি ** আমাদের নেই কোন ভয়, আমরা মৃত্যুর পরোয়া করি না।

এমনকি ভয়ঙ্কর বিপদেও ** আমরা পিছু হটি না।

কেউ এই দুনিয়ার পেছনে পড়ে আছে ** আর এর জন্যই তাদের যুদ্ধ।

যারা চক্ষুষ্মান ও যারা শুনতে পাও ** আমরা তোমাদের জানাতে চাই যে,

এই যুদ্ধ হচ্ছে শয়তানের পক্ষে যুদ্ধ ** এবং এর জন্যই ওরা সাহায্য জড়ো করে।

সে উম্মাহর শক্তিকে চুরি করে নিচ্ছে ** তাদের অপমান ও অপদস্থ করছে।

এটা হল কুফফারদের দ্বীন ** এর দিকেই এরা আহবান করে ও এর প্রতিই তারা নতজানু হয়।

যতদিন না শরীয়াহ আসবে ** এর দিকেই আমাদের আহবান করে যাব ও এর জন্যই আমরা একতাবদ্ধ হই।

আমরা মসজিদ আল আকসাকে মুক্ত করবই ** সাথে দুই পবিত্র ভূমি।

এবং আমাদের সকল ভূমি ** আমাদের বন্দী, আর আমরা কখনোই থেমে যাব না।

আমাদের সঠিক খিলাফাহ ব্যতীত ** যা আমাদের সবাইকে একত্রিত করবে।

এবং আমরা আমেরিকাকে নাকে খত দেওয়াব ** আর তার সকল অনুসারীকেও।

এবং তাদের অপছন্দ সত্ত্বেও আমরা তাদের বলব ** আমরা আল্লাহ ব্যতীত আর কারো প্রতি নত হই না।

আমাদের সর্বশেষ দু’আ হল, সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। এবং শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক আমাদের শিক্ষক মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবাদের উপর।

আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five + 11 =

Back to top button